অনুভবে_তুমি পর্ব-২৭/২৮/২৯

0
2232

অনুভবে_তুমি পর্ব-২৭/২৮/২৯
#সাইমা_ইসলাম_প্রীতি
.
.
মেঘের আড়ালে মায়ানগরীর মায়ার ভেসে যাচ্ছি আমি।হারিয়ে যাচ্ছি মেঘের ধোঁয়াশায়।চারদিকে শুধু মেঘের হাতছানি।নিলগিড়ির একদম চূঁড়ায় দু’হাত ছড়িয়ে দাড়িয়ে আছি আমি।মেঘগুলো ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে আমার প্রত্যেকটা অংশ।ভিজিয়ে দিচ্ছে আমায়।।
পেটে কারো আলতো স্পর্শে চোখগুলো খিচে বন্ধ করে নিলাম।রূপ আলতো করে আমার কানে একটা কামড় দিয়ে হাত বুলাচ্ছেন আমার পেটে।আরে হাত আমার গলা কাধ বাহু ছাড়িয়ে নিচে এনে কমড়ে টান দিয়ে একেবারে মিশিয়ে নিলেন ওনার সাথে।ঠোঁট বুলাচ্ছেন আমার গলায়।
আমিও আস্তে করে মাথা ঠেকিয়ে নিলাম রূপের বুকে।
আর নিতে পারছিনা আমি।রূপের স্পর্শ গুলো হজম করতে কষ্ট হচ্ছে।মরে যাচ্ছি আমি।ওনি কি বুঝেন না ওনার স্পর্শগুলো মাতাল করে দেয় আমায়।নিজেকে তখন আর খুঁজে পাই না নিজের মাঝে আমি।
অনেক কষ্ট কাঁপুনি ধরানো গলায় বল্লাম রূপকে,,,,,,,,,
-রূ….রূপ….।কি…­….কি করছেন আপ…….।
-উমমম।ডোন্ট ডিস্টার্ব।
একটা নেশাজরানো কন্ঠে বললেন রূপ।
হঠাৎ করেই নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন আমায়।তাকিয়ে আছেন আমার ঠোঁটের দিকে।অদ্ভুত সে চাহনি।যেনো ওনার চোখের সব নেশার কারন আমার এই ঠোঁট দুটি।
-মিহিন আজ যদি কিছু চাই দিবে আমায়?

আমি হা হয়েই তাকিয়ে আছি রূপের দিকে।
-দিবে একটু ভালোবাসতে আমায়?দেবে তোমার মাদকতায় হারাতে?কথা দিচ্ছি রূপের অস্থিত্ব লিখে দিব তোমার নামে।
দিবে আজ এই ঠোঁট দুটোর অধিকার?
.
লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছিল আমার তখন আমার।যার নামে নিজের সবটা লিখে দিয়েছি তাকে নতুন করে আর…………..
চোখ দুটো বন্ধ করে নিলাম নিমিষেই।রূপও পেয়ে গেছেন নিজের অ্যান্সার।রূপের হাত দুটো আমার পিঠে স্লাইড করতে করতে গলায় এসে থেমে গেলো।
আস্তে করে আমার কাছে এসে নিজের অধিকারে নিয়ে নিলেন আমার ঠোঁটজোরা।আমিও নিজেকে হারিয়েছি রূপের ঠোঁটের ভাজে।গভীরভাবে ভালোবেসে যাচ্ছেন আমায়।।আমি এক হাতে রূপের শার্ট খামচে ধরেছি আর আরেক হাতে ওনার চুল গুলো।এই প্রথম এতো ভালোবাসছেন রূপ আমায়।মেঘগুলোতেও যেনো লজ্জা পেয়ে আড়াল করে নিলো আমাদের।রূপ যে আমাকে এতো সুন্দর একটা মুহূর্ত উপহার দিবে সত্যিই ভাবিনি।
ছাড়ার সময় আমার নিচের ঠোঁটের বাম পাশে জোরে একটা কামড় বসিয়ে দিলেন।
-আহহ্।আচ্ছা খারাপে লোক তো আপনি এভাবে কেউ কামড় দেয়?
-অভ্যাস করে নাও বুঝলে,,,,,বিয়ের পর তোমার আর কোথায় কোথায় কি কি হবে জানি না তবে তোমার এই ঠোঁট দুটোকে আর কাধের লাল তিলটাকে আমার অসম্ভবরকম অত্যাচার সহ্য করতে হবে বলে দিলাম।
ছিছি কি বলছেটা কি এই ছেলে মুখে কি কিছু আটকায় না নাকি এনার?
-দেখা যাবে।
-দেখার টাইম দিলে তো না দেখবা!( ঠোঁটে দুষ্ট হাসির রেখাটেনে বল্লেন রূপে)
বায় দা ওয়ে,আজ যেটা দিলেনা অসাম ছিলো।রিয়েলি আমি লাইফে এতো মিষ্টি জিনিস কোনো দিনও খাইনি।
-ইডিয়েট লোক কোথাকার,
-(রূপ ব্লাসিং)
আস্তে আস্তে সূর্যটাও ওঠতে শুরু করেছে। রূপ আমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিয়ে সূর্যদয় দেখলেন।এক কথায় অসাধারন।আমার মাথায় চুলে লামমম্বা একটা কিস করে বললেন,,,,
-ওকে এখন কি যাবে নাকি আরেকটা কিস দিব?(আঙ্গুল দিয়ে নিজের ঠোঁট ইশারা করে বললেন)
এমা বলে কি?আমি একদৌড়ে চলে আসলাম সি.এন.জির কাছে।রূপ আমার কান্ড দেখে হাসতে হাসতে পাগল হচ্ছেন।
প্রায় এক ঘন্টারও কম সময়ে আমরা পৌঁছে গেলাম মিলনছড়ি রিসোর্টে।
.
রিসোর্টের ভিতর গিয়ে যা দেখি তাতে আমার ছোটখাটো একটা হার্ট-অ্যাটাক হবার উপক্রম।সবাই আরো দেড়ঘন্টা আগে এসে আমাকে খুঁজছিল। পায়নি বলে এখনি পুলিশকে ইনফর্ম করতে যাচ্ছি।ওফ বাবা একদম ঠিক সময় পৌঁছেছি।সবাই যার যার রুমে চলে এলাম।
.
রাত প্রায় এগারটা।এখানে তো দশটার পরই গভীর রাত।গাছ-পালা আর পাহাড়ে গন্ধে ছেয়ে যায় প্রকৃতি।
সত্যিই পাহাড়ের গন্ধ এত মনভোলানো রূপের সাথে না থাকলে বুঝতেই পারতাম না।রূপ তো আসার পর থেকেই পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছেন।জ্বালা যত সব আমার।ইশুকে নিয়ে করিডোরে বসে এই চারদিনের সব গল্প বলিছি।
-মিহু মিহু মিহু।ও মাই গড ভাইয়া এত্তো রোমান্টিক।গ্রেট!এর চেয়ে সুন্দর কোনো মোমেন্ট আছে আর?
-কি শুরু করছিস তুই।ওফ আমারই বলা উচিত হয়নি তোকে।
-আহা মিহুহুহু,,,,আমি মিস করে গেলাম না নিলগিড়ি?
-আমি ইশুর দিকে চোখ গরম করে তাকালাম।
-ওফ মিহু।কি রোমান্টিক না চারদিকের পাহাড়ের বিশালতা,মেঘের ঠিক মাঝখানটাতে দাড়িয়ে আছিস তুই।তুলোর মতো মেঘ ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তোর সব অনুভূতি।তার মাঝে ভাইয়ার এই রোমান্টিক অত্যাচার,,,,হিহি।
-তোর সাথে কথা বলাই ভুল হইছে।মাফ কররে বোইন।আমি গিয়া ঘুমাই।
-আল্লাহ্ই জানে কি কি করছস তোরা দুইটায় মিল্লা।জিজুতো মরার মতো ঘুমাইতেই আছে কোনো হুশ না আর তুই ও ঘুমে ডুব্বুস হয়ে গেছোস।
-ইশুশুশু,,,,,(চোখ রাঙ্গিয়ে)
-ওরে বাপরে।বাচাও।এই চুপ গেলাম।ঘুমা তুই,খাটাশ।
-তোর চৌদ্দ না না আটাশগুষ্টি খাটাশ,বান্দর।
-এই দেখ আমারে যা বলস বল।জামাইরে কিছু কবি না কইয়া দিলাম।?
-???
-রিদ্দি সত্যিই খাটাশ।।।আন-রোমান্টিক­ পারছন। রূপ ভাইয়া কত্তো ভালোবাসে তোরে আর রিদ্দি??? ওর তো খবরই নাই আমার।।
-আহা ওনি বিজি আছে তাই ।মন খারাপ করিস না তো তুই। ঢাকা গিয়ে ইচ্ছে মতো বকে দিস এখন ঘুমা তো।
-হুহ…..
.
এই ইশুটাও না একদম পাগল একটা মেয়ে।রিদ্দি ভাইয়া ওকে ইমপ্রেস করার জন্য কতো কিছু করেন তাও ওর একদম ফিল্মি স্টাইল চাই।
সকালে ঘুম থেকে ওঠে ইশু জোর করে আমাকে নিয়ে গেল রিসোর্টের পেছন দিকটাতে।
-বাবারে কি ঠান্ডাটাইনা পরেছে।কাল অবদি কিন্তু এত ঠান্ডা ছিল না।তুই এত ঠান্ডায় না আনলেও পারতি।
-আমি?কই আমি আনিনি তো?তোর জামাইয়ের জ্বালায় আমারে এতো সকালে ওঠতে হইছে।
-মানে?
-ওইযে দেখ।
সামনে তাকিয়ে দেখি রূপ দাড়িয়ে আছেন।ঠান্ডায় একদম কাচুমাচু হয়ে গেছেন।আমি তাড়াতাড়ি ওদিকে গিয়ে আমার গায়ের চাদরটা জড়িয়ে দিলাম ওনাকে।রূপ একটু চমকেই আমাকে দেখে এক পশলা হাসলেন।
আমাকেও একটানে পেছন থেকে জড়িয়ে নিলেন চাদরের মাঝে।
-এত সকালে এখানে আনার মতলবটা কি মশাই?
-উমমম……………­……তুমি।
আমার চুলে নাক ঘষতে ঘষতে বললেন।
-দিনে দিনে দেখি আরো বেশি রোমান্টিক হয়ে যাচ্ছেন।
-কি করব বল তোমাকে দেখলে আর মাথা ঠিক থাকেনা।মাথা আর মনের মধ্যে যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়ে যায়।
-আমিও রূপের বুকে মাথা ঠেকিয়ে নিলাম।
-মিহিন…………
-হুম
-I have something for you
-কি…..?
রূপ আমার সামনে হাটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়লেন।আমার সামনে একটা রিং ধরে বললেন,,,,,,,,,
– Mihin will you marry me…
Now I can’t stay a second without you….
every moment your absence are killing me,,I can’t Mihin I can’t…..
Plz Mihin will you marry me right now………?
.
.
To be continue ?

 

#অনুভবে_তুমি
পর্ব-((২৮))
#সাইমা_ইসলাম(প্রীতি)
.
.

-What??কি বলছেন আপনি এসব?এখন বিয়ে মানে?আমি আপনাকে বিয়ে করব ঠিকই কিন্তু এখন…………
-ইয়াহ।এখন
-পাগল হইছেন আপনি?
-হাত দাও।
-মানে?
-হাতটা দাও।
.
আমি হাত ওনাকে দেয়ার সাথেই ওনি ডায়মন্ড রিংটা আমার হাতে পড়িয়ে দিলেন……….
.
-এই মুহূর্ত থেকে আমি শুধু তোমার মিহিন।কথা দিচ্ছি পৃথিবীর সব ভালোবাসার অনুভূতি গুলো তোমার পায়ে এনে ঢালব।ভালোবাসার স্পর্শে ভরিয়ে দিব তোমার মনের প্রত্যেকটা বিন্দু পর্যন্ত।
কথা দিচ্ছি আজ থেকে প্রতিটা সকাল লিখে দিব তোমার নামে,তোমার প্রত্যেকটা পদ-ধ্বনিতে আটকে রাখব আমার হৃদস্পন্দন।কখনো তোমার এই চোখ দুটিতে জলের চিহৃও দেখতে দেবনা কাউকে।আজ এই মুহূর্ত থেকে আমি তোমাকে আমার স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করলাম।আমার সবকিছুতে ইনফ্যাক্ট আমার জীবনে আমার থেকো বেশি অধিকার তোমায় দিলাম।কবুল কবুল কবুল।
আর তুমি শুধু আমায় ভালোবাসবে।আমার জন্য হবে তোমার প্রত্যেকটা নিশ্বাস-প্রশ্বাস।
-কবুল কবুল কবুল।আজ থেকে আমার উপর শুধুই আপনার অধিকার।রূপ ছাড়া মিহিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করছি আমি।
.
রূপ এক নিমিষেই জড়িয়ে ধরলেন আমায়।যেন দুটি আত্তা আজ এক হয়ে গেছে।একে অপরের ভালোবাসায় পূর্ণ আজ দু’জনা।
.
এদিকে এই শয়তান ইশুটা সবগুলো মেন্টের ছবি তুলে রেখেছে।রূপকেও দিয়েছে ছবিগুলো।ওফ এগুলো দেখতেই তো লজ্জা লাগছে আমার।রূপের সাথে পাঁচটা দিন সত্যিই আমার জীবনের বেস্ট মোমেন্ট ছিল।
।সেদিন সকালেই বান্দরবন থেকে ঢাকা রওনা হই আমরা।আসতে রাত একটার বেশি লেগে যায়।
.
.
.
চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে আরিয়ান এহরাজ রূপ।চোখের চাহনি খুবই শ্রান্ত।এক কোনায় জমে আছে বুকের মাঝে জমানো কষ্টগুলো।
চারদিকে আলো ফুটতে শুরু করেছে একটু একটু করে।লাল আভায় পরিপূর্ণ আকাশ।
ইজি চেয়ার থেকে আস্তে করে ওঠে বারান্দায় এসে দাড়ালো রূপ।বাতাসের হালকা ঝাপটায় কয়েকটি পাতা ওল্টে গেল টেবিলে রাখা ডায়েরিটার।
ওকে জেগে থাকতে দেখে কফি দিয়ে গেছেন ইজাজ চাচা।
ভোরের ঠান্ডা শীতল বাতাসের স্পর্শে সারা শরীরে শিহরণ বয়ে গেল রূপের।এমন এর আগে হয়নি।হয়ত হয়েছে যখন মিহিন ওর ছিল।যখন মিহিনের ভালোবাসায় উম্মাদ ছিল ও।
পৃথিবীটা কতো অদ্ভুত না?এখানে আল্লাহ্-র সৃষ্টি প্রত্যেকটা জিনিসই অদ্ভুত।প্রত্যেকটা মানুষের জীবনই নিজস্ব গতিতে প্রবাহমান।
Life is like a circle.
জীবনে তুমি যেখানে ছেড়ে যাবে,জীবনও সময়ের বহমানতায় তোমায় ঠিক সেই জায়গায় এনেই ছেড়ে দেবে।তবে একা।একদম একা।
মিহিন নামের এই মেয়েটার চেহারা মনে নেই ওর।জানেনা এই ডায়েরির সত্যতা।জানেনা এগুলো কি আদো ওর লাইফে ঘটছে নাকি না।তবে এক মুহূর্তের জন্য হলেও খুব করে ভালোবাসতে ইচ্ছা করে রূপের এই মেয়েটাকে।
ইচ্ছে করছেনা ডায়েরিটা আর পরতে।জানতে ইচ্ছা করছেনা কেন এই মিহিনের আঁচলের ভাঁজে ও নেই।
.
জানতে ইচ্ছা করছে না কেন নেই মিহিন ওর কাছে।
ভালোবাসতে………..­বাছ শুধু ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে।
আজও কি মিহিন আছে এই পৃথিবীতে?নাকি ছেড়ে গেছে ওকে পরলোকে।সব আনছার তো এই ডায়েরিতেই।
টায়ার্ড লাগছে খুব।বিছানাতে এসে গা এলিয়ে দিলো রূপ।ডায়েরিটা আগেই তালাবদ্ধ করে রেখেছে যাতে হাত না পরে কারোর।গা এলিয়ে দিতেই ঘুমের রাজ্যে হারালো নিজেকে রূপ।
.
.
To be continue ?

#অনুভবে_তুমি
পর্ব-((২৯))
#সাইমা_ইসলাম(প্রীতি)
.
.
খুব নরম একটা হাতের পরশ অনবরত চুলের মধ্যে বুলিয়ে যাচ্ছে কেউ।রূপের খুব চেনা এই পরশগুলো।ঘুমের মধ্যেই হাসির রেখা ফুটে ওঠেছে রূপের ঠোঁটে।
-মামনি।
সীমান্তি এহরাজ রূপের চুলে হাত বুলিয়ে কপালে একটা চুমো দিয়ে বললেন,,,,,,,,,,,,,
-খুব কষ্ট হচ্ছিল বুঝি আমার ছেলেটার মামনিকে ছাড়া থাকতে?
-হবেনা?খুব করে হয়েছে তো।
রূপ শোয়া থেকে ওঠে খাটের হেড-বোর্ডে হেলিয়ে বসলো।
-হুম আমি তো আমার ছেলেটা আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা।তার উপর চারমাস তোকে পাইনি বাবা।আজ সারাদিন তুই আমার সাথে থাকবি।
-হুম।
-এখন যা ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় তো দ্রুত আমি নিজ তোর পছন্দের খাবার সব রান্না করেছি।
.
ফোনটা বাজতে বাজতে থেমে যাচ্ছে বারবার।এই পাঁচ বারের মতো বাজলেই সাথে সাথে রিসিভ করলো মিহিন।ইশুর সাথে সেই সকাল থেকে কথা হয়নি আজ।এজন্য ফোন দিয়ে দিয়ে মাথা হ্যাং করে দিচ্ছে শয়তানটায়।সে যাই হোক তাড়াতাড়ি ফোন তুলল মিহিন।
-হ্যালো মিহিন।তু,,,,,,তুই ঠিক আছিস তো?
-ইয়াহ আ’ম ফাইন।কেনো?
-এতক্ষণ ফোন দিচ্ছি তুই রিসিভ করছিলি না তাই আর কি।
-ওহ।তো কেমন আছিস,রিদ্দি ভাইয়া কেমন আছেন?
-ভালো।ইশাদ ভাইয়া কালকে যাচ্ছে কিন্তু কক্সবাজার।এবার কিন্তু আমি কোনো গন্ডগোল চাই না মিহু।
-তোরা কেনো বুঝতে পারছিস না এভাবে……..
-বুঝতে তুই পারছিস না মিহু।এভাবে জীবন চলে না।তুই আর কতদিন থাকবি একা একা।
-কত মেয়ে জীবন কাটাচ্ছে একা আমি কি প্রথম নাকি?আর প্রথম হলেও আমি পারব।জোর করে কাউকে আমার লাইফে এন্টার করিয়ে তার লাইফটাও নষ্ট করিস না প্লিজ।আমি বেশ আছি রাহিকে নিয়ে।
-না নেই।আর ইশাদ ভালোবাসে তোকে।অন্তত পক্ষে তোর ওই ফেক রূপের থেকে বেশি।
-ইশুওওও…….।ঠিকভা­বে কথা বল।রূপ ইজ নট ফেক।
-আর কত গুন গাইবি তার?আর কত রাত জেগে থাকবি তার জন্য?আর কত শেষ করবি নিজেকে তিলে তিলে?রূপ তো বেশ আছে।তোকে ভুলে গিয়ে থেমে যায়নি।আজ সিঙ্গার।ওর লাইফের কোথাও তুই নেই মিহিন…………..
– (দু’চোখ বেয়ে শুধু নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে)
-ওই ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো,অনুভূতি গুলো সব শুধু ধোঁকা ছিল।
-আমি রাখছি।
-যা খুশি কর।কিন্তু তোর লাইফ আমি এখানে থামতে দেব না। মাইন্ড ইট।
ইশা ফোন কেটে দিল।খুব কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা।কিন্তু করার ছিল না কিছুই।আমার পক্ষে সম্ভব না ইশাদ ভাইয়াকে বিয়ে করা।
সীমান্তি এহরাজ নিজ হাতে খাইয়ে দিলেন রূপকে।রূপ খাওয়া শেষেই ডায়েরিটা নিয়ে চলে এলো প্রেকটিস রুমে।
.
বুকের ভেতর একটা চিনচিন ব্যাথা হচ্ছে।যে মেয়েটাকে এখন ও চিনেই না,যার উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারেনা তার জন্য তাকে এক মুহূর্ত কাছে পাওয়ার জন্য খা খা করছে ভেতরটা।খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।

ডায়েরিটা পড়ে আছে সামনের বড় পিয়ানোটার উপর।

ডায়েরিটাকে দেখতে যে কেউ বলবে খুব সৌখিন কোনো মানুষের,উপরের কভারটা চকলেট কার্লারের অনেকদিন স্টোর রুমে পড়ে আছে তাই একটু কালচেটে ভাব। লেখা গুলোও খুব সুন্দর।যে হাতের ছবিটা পেয়েছিল তাতেও খুব সুন্দর লাগছিল পাশাপাশি দুজনকে।

তাহলে ওর মিহিনও দেখতে খুব সুন্দর না!

ধ্যাত সুন্দর হোক আর যেমনি মিহিন শুধু ওর।মিহিনের সব কিছুই শুধু ওর।

অদ্ভুত লাগে না যখন অচেনা কোন মানুষের উপর নিজের এতটা অধিকার বোধ হয়?

.

আস্তে করে পাতা গুলো উল্টে নিল ডায়েরির।ফিরে গেল আবার সেই সময়।

প্রেকটিস রুমে দরজাটা যে খোলা সেদিকে কোন বোধই নেই ওর!
.
.
To be continue ?

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে