অনুভবে_তুমি পর্ব-((১))

0
6177

অনুভবে_তুমি পর্ব-((১))
#সাইমা_ইসলাম_প্রীতি

.
.
খুব বেশিই টেনশন এ পড়ে গেছেন মি. আফজাল রহমান।এমন বিপদে ওনার এর আগে বোধ হয় কক্ষনো পড়তে হয়নি।
শুধু ওনি কেন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির যারা এই কনসার্টটা প্সনসার করছে তাদের সবার দৃষ্টি এখন ঘড়িতে স্থির ।
মি. আফজাল অনেকটা রেগেই রুমের এপাশ থেকে ওপাশে পাইচারি করেছেন।রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে ওনার।কেউ এতোটা কেয়ার লেছ কিভাবে হতে পারে???
দ্রুত রোমানকে ঢেকে পাঠালেন ওনি,,,
.
“কি!! আজ কি আর মি.আরিয়ান এহরাজ রূপের দেখা মিলবে না? এমনটা করার মানে কি?সেই কখন থেকে বসে আছি আমরা।আর দুমিনিট বাদে ওর নাম এনাউন্স করা হবে।।আর ও কিনা উধাও”(আফজাল রহমান)
“স্যার ওর নাম এনাউন্স করা হয়েছে মাত্র”(রোহান)
“কল করো ওকে আবার”
“করে ছিলাম কিন্তু ফোন সুইচ অফ বলছে”
হাত জোরে টেবিলে আঘাত করে,,,,,
“হোয়াট!!এতোটা কেয়ার লেছ কিভাবে কেউ হতে পারে।আমার মাথায় কিছু কাজ করছেনা”
.
এদিকে সবাই খুঁজছে রূপকে।কিন্তু ওর কোনো খোঁজই নেই।ওর নাম এনাউন্স করা হয়েছে প্রায় বিশ মিনিটের উপর।
সবাই যখন ধরেই নিয়েছে রূপ আসছে না তখনই ওর আগমন।
রূপ এসেই ডাইরেক্ট স্টেজে ওঠে গান স্টার্ট করল,,,,,
.
মঞ্চ কাপানো,মানুষের হৃদয় ছুয়ে যাওয়া নামকরা সিঙ্গার হলো আরিয়ান এহরাজ রূপ।রূপ,এই একডাকেই সবাই চিনে ওকে।হাজার হাজার মেয়ের ক্রাশ আর সকল মানুষের মডেল।
তবে এসব বিষয়ে একদম গাঁ ছাড়া ভাব ওর।নিজের ইচ্ছে ছাড়া কাউকে তোয়াক্কা করতে একদমই পছন্দ করেনা।
গান শেষ করে স্টেজ থেকে নামতেই সকল মানুষ ঝাপিয়ে পরে রূপের উপর।যদিও ওর ওটোগ্রাফ দেয়া একদমই পছন্দ না তাও দিতে হয় বাধ্য হয়ে।নাহলে যে সবাই একদম গিলে খাবে ওকে।ওর বডিগার্ড আর রোমান সবাইকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে দ্রুত নিয়ে যাচ্ছে ওকে।
হঠাৎ একটা বাচ্চা মেয়ে দৌড়ে একদম সামনে চলে আসে ওর।ওটোগ্রাফ চাইছে।রোমান ওকে সরিয়ে দিতে চাইলেও রূপ থামিয়ে দেয়।
বাচ্চাটাকে খুব বেশি চিনা চিনা মনে হচ্ছে ওর। বারবার মনে হচ্ছে কোথায় যেন দেখেছে এর আগে।দেখলেই বা কি!ইদানিং তো অনেক কিছুই মনে করতে যেও পারে না।
সে যাই হোক বাচ্চার বয়স এই সাত-আট হবে হয়ত।আদর করে কোলে তুলে নিয়ে দিয়ে দিল ওটোগ্রাফ।
স্টেজের পেছনের দিকের রুমে বসে আফজার রহমান রূপের কন্সার্টের রিভিও দেখছিলেন।রূপ আসতেই ওনি ওনার কথার রাজ্য নিয়ে বসেন।মেজাজটা আরো বেশি গরম হয়ে যায় রূপের।
.
“আচ্ছা আরেকটু কি পানচুয়াল হওয়া যায় না।কতো বড় লস হতে চলেছিল আর একটু হলে হিসাব আছে তোমার?”(আফজাল)
“রোমান ভাই দেখনা মাথাটা খুব ধরেছে এক কাপ কফি দিতে বলত এক্ষুনি”(রূপ)
“আমি তোমাকে কিছু বলছি শুনতে পাচ্ছো তুমি!!”(কিছুটা রেগে গিয়ে)
“রাস্তায় ট্রাফিক ছিল যে তাই।আর মামা এই সামান্য জিনিসে কেনো এতটা রাগ হচ্ছো তুমি বলতো”
“এটা মোটেও সামান্য না রূপ!তোর কোন ধারণাই………”(কিছু একটা বলতে গিয়েও স্কিনের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেলেন)
“কি হলো”
“এই মেয়েটাকে চিনিস তুই”(কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বলেন)
“নাহ।তবে খুব চেনা চেনা লাগছিল।”
“ওহ।সেসব ছাড়।আর একটু পানচুয়ালিটি শিখ। এতটা লেট কেনো হবে??””ওহ কাম অন মামা।তুমি আবার কি শুরু করলে।ধ্যাত আমি বাড়ি যাচ্ছি”
মি.আফজাল রূপের কান্ড দেখে একটা বড় নিঃশ্বাস ফেললেন।এ যাত্রায় বেচে গেলেন বোধ হয় রূপের প্রশ্ন থেকে।ভাগ্যিস মেয়েটাকে চিনতে পারেনি।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


রূপ বাসায় ফিরেই ভাবতে লাগল মেয়েটাকে কেন এতটা চেনা চেনা লাগছিল,,,,,
তাছাড়া বাচ্চাটাকে ছেড়ে আসার সময়ও একটা খুব সুন্দর স্মেল পাচ্ছিল।সম্ভবত বাচ্চাটার সাথের ঐ মেয়েটার হবে।
কিন্তু ঐ স্মেলটা যে কিছুতেই ভুলতে পারছেনা রূপ,,,,,
বারবার শুধু মনে হচ্ছে ঐ স্মেলটা ও এর আগেও অনেকবার পেয়েছে।নিয়ে গেছে এক অজানা ঘোরে।
কেন পেছনে গিয়ে দেখে এলোনা মেয়েটাকে।।
যতোই সেসব চিন্তা ঝেরে ফেলতে চাইছে ততই যেন চেপে বসছে ওকে।
মাথাটা প্রচন্ড রকম যন্ত্রনা করছে।নিজের চুল সব নিজেই টেনে ছিড়তে ইচ্ছে করছে।
ব্যথাটা মাথার বাম পাশ থেকে শুরু করে এখন চোখগুলো পযর্ন্ত ধরে গেছে।বুকের মাঝখানটাতেও ব্যাথা করছে খুব।
এই ব্যাথার সাথে অনেক আগে থেকেই পরিচিত রূপ।কোন কিছু ভাবতে মাথায় আর জোরই দিতে পারছেনা ও।
লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে এলো গিয়ে।এখন কিছুটা ফ্রেশ মনে হচ্ছে নিজেকে।কিন্তু বুকের মাঝখানের চিনচিন ব্যাথাটা যায়নি এখনো।
গিটারটা নিয়ে ছাদে চলে এলো।মোমেন্টটা অনেকটা ধোয়াশার মতো।চারদিকে নেমে এসছে ঝুম কুয়াশা কিন্তু তার মাঝেও চাঁদটা ঠিকই র্নিলজ্জের মতো উকি দিচ্ছে।চট করে একটা গান করে ফেললে মন আর মেজাযটা মে বি একদম ফ্রেশ হয়ে যাবে।
রেলিং এ বসে গান ধরল রূপ,,,,,
.
“””একাদিন ফাকা রাত নিভেছে আলো
তুই নেই কেউ নেই লাগছে না ভালো
তোর নাম না জানা অভিমানে কত দূর ভাসা যায়
আমি চাইছি তবু পার…..”””(টুং করে গিটারের একটা স্ট্রিং ছিড়ে গেল)
.
“শিট,,,ড্যাম ইট,,,
ছিড়ার আর সময় পেলনা,,,
স্টুপিড,,,”(গিটারটা জোরে বারি মেরে)
রাগে ফুসাচ্ছে রূপ।
নিজেই উঠে গিটারটা নিয়ে গেল স্টোর রুমে রেখে আসতে।স্টোর রুমে যাওয়া রূপের বারন।ওর মা মিরা এহরাজই সব সময় চোখে চোখে রাখেন ওকে যাতে ওই দিকটাতে বেশি একটা না যায়।
রূপের অবশ্য সেদিকে অনেক আগ্রহ।আজ পযর্ন্ত যেতে পারেনি কখনো তবে আজ যাবেই।মিরা এহরাজ যে বাড়িতে নেই।
.
এমনেতেই মেজায বিগরে ছিল রূপের স্টোর রুমের দরজাতে তালা দেখে মাথা এতটাই গরম হলো যে সজোরে একলাথি মারে দরজায়।তালাটা বেশ পুরনো হওয়ায় একলাথিতেই ভেঙ্গে যায়।
ভেতরে ভায়নক রকমের ধুলো।রূপের এতোক্ষন যা আগ্রহ ছিল নিমিষেই তা শেষ হয়ে গেল।কোনোরকমে গিটারটা ভিতরে রেখেই চলেই আসছিল রূপ কিন্তু কিছু ধপাস করে পরর এক আওয়াজে পিছনে ফিরে দেখেএকটা পুরনো সেল্ফ থেকে কিছু পুরনো কাগজ আর ফাইল নিচে পরে গেছে।সাথে একটা নীল রং এর ডাইরিও আছে ।কিছুটা বিব্রতবোধ করে রূপ নিজেই গিয়ে তুলে রাখছিল সেগুলো।
হঠাৎ ডাইরিটা থেকে কিছু একটা নিচে পরতেই তুলে নেয় রূপ।
একটা ছবি!!!তবে কেমন যেন।শুধু দুটু হাত।ছেলেটা মেয়েটার হাতটাকে আশটে-পিশটে শক্ত করে ধরে রেখেছে।তবে হাত দুটই খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে।
রূপ ভালো মতো খেয়াল করে দেখল ওর হাতে যে ব্রেসলাইট টা পরা সেটারই কিছু অংশ ছবির ছেলেটার হাতে দেখা যাচ্ছে।
তাহলে কি হাতটা ওরই?
নাহ।কি সব ভাবছে ও।এটা কিভাবে সম্ভব!!যদি ওরই হয়ে থাকতো তাহলে ওর মনে থাকতো নিশ্চয়ই।
আর তাছাড়া ও ওর জীবনে কোনো দিনও কোনো মেয়ের হাত এভাবে ধরেনি।
কিন্তু হাতটা যে ওর সেটা ও শিওর।তাহলে এই মেয়েটাই বা কে???
কিচ্ছু মাথায় ডুকছেনা রূপের।কেনই বা মেয়েটার হাত এতো চিনা চিনা লাগছে।
পরক্ষনেই মনে হলো ওরই হয়ত কোনো ভুল হচ্ছে।নয়ত যাকে দেখে তাকেই কেনো মনে হবে যে চিনে।
ডাইরিটার দিকে তাকিয়ে দেখে বাজেভাবে ধূল জমে গেছে তার উপর।অনেক কষ্টে পরিষ্কার করে নেয় সেটা।
সব কিছু ঠিকঠাক করে রেখে দেয় শুধু ডায়রিটা ছাড়া।যাতে মিসেস মিরা কিছু টের না পায়।
রুমে এসেই ডাইরিটা খাটে দপ করে ফালিয়ে আবার ছবিতে নজর দেয়।
নাহ,,,এটা ওরই হাত।
আর পাশের হাত অদ্ভুদ ভাবে অস্বস্তিতে ফেলছে ওকে।বুকের চিনচিন ব্যাথাটাও যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মনে হচ্ছে,,,,,মনে হচ্ছে যে ওর অনুভূতি গুলো সব জাগিয়ে তুলছে।অনুভব করাচ্ছে ওর মাঝেই অন্য কাউকে।
কে ও???
নিশ্চয়ই এই ডাইরিতেই কোনো ক্লু পেলে পেতেও পারে।ছবিটা যত্ন করে রেখে দিল ডয়ারে।
.
অনেকটা অনিচ্ছা স্বত্যেও খুলে নিল ডাইরিটা।।।
.
.
.
চলবে
(ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে