অচেনা শহর পর্ব-৩০+৩১

0
3648

#অচেনা_শহর💖
#লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:— ৩০

স্নেহা অন্য দিকে চলে গেছে। আদ্রকে খুঁজছে এদিকে ওদিকে। আর ভুল করেও কিছু তেই হাত দেয় নাই স্নেহা।
আদ্রকে না পেয়ে গোমরামুখো করে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা‌।
মন প্রচন্ড খারাপ হয়ে আছে।এতো ক্ষন খুশি ছিলো এতো বড় শপিং মলে এসে কিন্তু এখন আর সেই খুশি ওর মাঝে নেই। মুখ কালো করে দূরের এক ছোট বাচ্চার দিকে তাকিয়ে আছে স্নেহা। বাচ্চা টাকে তার বাবা ও মা জামা দেখাচ্ছে একটার পর একটা কিন্তু মেয়েটা সব ড্রেস দেখেই না দেখাচ্ছে। মানে তার পছন্দ হয় নাই।
বাবা মা দুজনেই ক্লান্ত হয়ে দুজনেই দুজনের দিকে তাকালো অসহায় মুখ করে।এটা দেখে মেয়েটা খিল খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো। তার একটা ড্রেস হাতে নিয়ে বুঝানো এইটা তার পছন্দ অথচ আগেই এই ড্রেসটা ওকে দেখানো হয়েছিল ও না করছিল।
কাজ দেখে আমি নিজেও হেসে উঠলাম।
কি দুষ্টু মেয়ে টা? এতোক্ষণ সবাইকে হয়রানি করলো।

“কি ব্যাপার এমন পাগলের মত একা একা হাসতো কেন?”

আদ্রর মুখে পাগলের মত হাসছি শুনে রেগে তাকালাম ওনার দিকে। আদ্র বিস্ময় চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, আমি তাকাতেই ভ্রু কুঁচকালো,,,

চোখ দুটো বড় বড় করে রেগে বললাম,,,
“কি বললেন আমি পাগলের মত হাসছি।আপনি আমাকে পাগল বললেন।”

“তুমি তো পাগল ই।অকারণে যেভাবে একা একা হাসছিলে যে কেউ তোমাকে পাগল ই ভাববে‌। ”

“দেখুন মুখ সামলে কথা বলুন।না জেনে একদম ফালতু কথা বলবেন না। আমি অকারণে হাসছিলাম আপনাকে বললো কে?”

“বলার কি আছে তুমি তো অযথাই হাসছি সেটা আমি জানি।”

“আপনি কি করে বুঝলেন আমি করছি হাসছিলাম।”

“তোমাকে দেখো।”

স্নেহা ভ্রু কুঁচকে বলল,,
” আমাকে দেখে?”

“হ্যা।”

“দূর আপনার সাথে কথা বলাই বেকার। চলুন তো আপনার জন্য আমার ক্লাস মিস হলো। আবার এখন আমাকে পাগল বলছেন। নিজে পাগল সেটা না বলে আমাকে বলা হচ্ছে যতসব ফালতু।”

” তা কি জন্য হাসছিলে শুনি।”

“বলতাম না।চলুন।”

যেতে গিয়ে ও থেমে যায় স্নেহা পেছনে ফিরে আদ্রর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। বিস্ময় চোখে আদ্রর মায়ের শাড়ি তো আমার হাতে তাহলে আদ্রর হাতে কি?

“আপনার হাতে?”

স্নেহার কথায় কিছু টা থতমত খেয়ে যায় আদ্র।
স্নেহা ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

“কি হলো বলছেন না কেন? আন্টির শাড়ি তো আমার হাতে তাহলে আপনার হাতে কি?”

“কিছু না।”

‘কিছু না মানে কি? আমাকে কি অন্ধ মনে হয় আপনার।”

“উফ স্নেহা চলো তো আর এটাতে আমার একজন আপন জনের জিনিস আছে। তোমাকে বলা যাবে না চলো‌।”

“আপন জন। সেটা আবার কে?”

“আমার ভালোবাসা মানুষের জন্য স্পেশাল জিনিস আছে।”

চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে সামনে এগিয়ে গেলো স্নেহা।
বুকটা ধ্বক করে উঠলো যখন আদ্রর মুখে আমার ভালোবাসা কথা শুনেছি।
আদ্র ভালোবাসা কথা বলার সময় ওর মুখ টা খুব খুশি দেখাচ্ছিল। হয়তো তাকে খুব ভালোবাসে।কে সে মারিয়া।
দূর তাকে নিয়ে আমি ভাবছি কেন?
সারা রাস্তা স্নেহা আর আদ্রর সাথে ঝগড়া করলো না আদ্র খোঁচা দিলে ও স্নেহা নিরব‌ই থেকেছে।

.

রাত ৯টা বাজে।

স্নেহা গ্রিল এ হাত দিয়ে কুয়াশায় ডাকা রাস্তা দিকে তাকিয়ে আছে। কেন যেন মনটা বিষন্ন হয়ে আছে কি কারণ তা জানা নেই।
কিন্তু মনটা আজ খুব খারাপ হয়ে আছে ভেতরটা চাপা কষ্ট হচ্ছে।কিসের জন্য বুঝতে পারছে না।
আদ্রর মুখে ভালোবাসা মানুষের কথা শুনার পর থেকেই এমন লাগছে। অভিমান হচ্ছে কেন হচ্ছে কার উপর হচ্ছে আদ্রর উপর। কিন্তু কেন ও কে আমার? আর আমি তো আগে থেকেই জানতাম জনির গার্লফ্রেন্ড আছে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটা শুনে আমার কে খারাপ লাগছে। আমি কি ছিঃ কি সব ভাবছি ওনাকে আমি সহ্য‌ই করতে পারি না। অসভ্য একটা ছেলে হব সময় আমাকে ডিস্টার্ব করে। আমাকে জ্বালিয়ে নিজের আনন্দ পায়।

নিজে নিজে আদ্রকে হাজার টা গালি দিলো।

.
ছাদের দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা।
এটা কিন্তু বাসায় ছাদ না এটা ভার্সিটির ছাদ একটু আগে এখানে এসেছে স্নেহা। আজ কেন জানি আসতে ইচ্ছে হলো এতো দিন একবার ও আশা হয় নাই‌।

তাই ইচ্ছে টাকে দমাতে পারেনি।চলে এসেছে ছাদ ফাঁকাই তাই আর ও বেশী ভালো লাগছে স্নেহার। অন্তরা আসে নাই কয়দিন আসবে ও না। নানুবাড়ি গেছে যে।
ছাদের কিনারে দাঁড়িয়ে নিচে তাকিয়ে মাঠের সবাইকে স্কান করছে। হঠাৎ আদ্রর দিকে চোখ পরলো বাইকের উপর বসে এদিকেই তাকিয়ে আছে। স্নেহা আদ্রর দিকে তাকালো আদ্রর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে । এভাবে তাকিয়ে থাকাতে দেখে স্নেহার ভ্রু কুঁচকে উঠলো,,,

এভাবে তাকিয়ে আছে কেন? আমার উপর নজর রাখছে নাকি।
চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে র‌ইল। আবার আদ্রর দিকে চোখ তুলে তাকালো এখন এক‌ই ভাবে তাকিয়ে আছে। দূর এখানে থাকবো‌ই এভাবে তাকিয়ে আছে কেন জানতে হবে আমার উপর নজর রাখছে কেন?

রাগে গজগজ করতে করতে স্নেহা নিচে নেমে এলো।
দুতালায় এসে থামি ক্লাস রুমে ঢুকার আগে আর একবার আদ্রর দিকে তাকায় নিচু হয়ে।
এখন আদ্র ওর ফ্রেন্ডদের সাথে হাসাহাসি করছে।

কি হাসি? খাটাশ একটা কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিলো যেন চোখ দিয়েই ভষ্স করবে।সব সময় আমার পিছনে লাগা। লুকিয়ে দেখছিলাম। আদ্রর দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম হঠাৎ আদ্রর দুতালায় তাকায় আর আমার সাথে চোখাচোখি হয়ে যায়। ওফফ কি লজ্জ্বা টাই না পেলাম।
মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি। আদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে ঠোট কামড়ে হেঁসে ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি?

এটা দেখেই স্নেহা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে যায়। তারপর দ্রুত পায়ে হেঁটে ক্লাসে ঢুকে যায় ‌।
আদ্র কি ভাবছে আমি ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম তাও লুকিয়ে।

.
“তুমি আমার দিকে ওইভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে তাকিয়ে ছিলে কেন??”
দুষ্টু হাসি মুখে এনে কথাটা বলল আদ্র,,,

স্নেহা কটমট চোখ করে তাকিয়ে বলল,,
” কি বলতে চান আপনি? আমি লুকিয়ে কোথায় আর আপনার দিকে কে তাকিয়েছিল আমি। একদম না আমি তো ওই যে ওইদিকে তাকিয়ে ছিলাম।”

আদ্র পাশে দাঁড়িয়ে সেদিকে তাকালো আদ্রর অপর দিকে দেখিয়ে বলেছে স্নেহা।

আদ্র অবাক মুখ করে বলল,,,
” ও মাই গড বলো কি তুমি ওইদিকে তাকিয়ে ছিলে।রিয়েলি!”

চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আদ্র স্নেহার দিকে আর বলছে।
স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে আদ্রর দিকে আদ্র এমন বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে অবাক ভঙ্গিতে কথা বলার কারণ বুঝতে পারছে না।

“মানে।”

“তোমার চোখ টেরা। দেখি এদিকে তাকাও তো রিয়েলি এতো দিন ধরে তোমাকে দেখছি কখনো টেরা মনে হয়নি।”

বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আদ্রর দিকে।আদ্র ওকে টেরা চোখা বলছে রাগে ওর আদ্রর চুল টেনে ছিলে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে।

“এই যে এমন করে তাকিয়ে আছো কেন মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে জ্বালিয়ে দেবে আমাকে।”

“পারলে সেইটাও করতাম আপনাকে আমার মেরে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে। আপনি আমাকে টেরা বললেন ছিঃ।”

“তুমি না বললে।”

“আমি, আমি কখন বললাম। একদম ফাজলামি করবেন না দেখুন ভালো করে আমি কোন দিক দিয়ে আমার চোখ টেরা।”

“মনে হচ্ছে না কিন্তু তুমি যদি তখন আমার দিকে তাকিয়ে না থাক বুঝবো টেরা কারণ তখন তোমার চোখ আমার দিকে ছিলো।”

“হুম ছিলাম তো কি হয়েছে আমি ছাদে থাকতে ও তো আপনি আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। তখন কেন তাকিয়ে ছিলেন বলেন।”

“আমি তাকিয়ে ছিলাম তুমি জানলে কি করে তার মানে তুমি আমার দিকে ছিলে?”

কথাটা শুনে স্নেহা আমতা আমতা করতে থাকে।

“আমি তাকাই নি আমি তো দেখছিলাম আপনি তাকাচ্ছেন নাকি আমার দিকে।”

“ওহ ভালো আমি কোন দিকে তাকায় সেদিকে ও লক্ষ্য রাখো।”

স্নেহা বলল,,, না

আদ্র চলে গেল।
স্নেহা নিজে ও টিউশনি তবে চলে গেল।

.
দুইদিন পর
অন্তরা আর আমি লাইব্রেরীতে বসে আছি।
দুজনে এক্সাম নিয়ে টেনশন এ আছি । আজ‌ই জানিয়েছে এমাসের এক্সাম শুরু হবে।

আমার থেকে অন্তরা বেশি চিন্তিত।
শুনার পর থেকে গোমড়া মুখে বসে আছে।

“স্নেহা রে আমার কি হবে? কিছু তো পারিনা।”

“চুপচাপ বাসায় গিয়ে প্রেম বাদ দিয়ে পড়া শুরু কর। আমি ও তো তেমন কিছু পারিনা।”

“চুপ কর আসলে তো ব‌ই নিয়ে ‌ই বসে থাকিস তোর এক্সায় ভালো হবে জানি। আর আমি তো সব বাদ দিয়ে প্রেম শুরু করেছি।”

“সেটা তো তোমার ইচ্ছে তেই।”

“হ্যা হৃদয় খুব ভালো রে। আমাকে অনেক ভালোবাসে।”

“এতো তারাতাড়ি কাউকে বিশ্বাস করা কি ঠিক।”

‘না কিন্তু ওকে করা যায় ও আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি ছাড়া কিছুই বুঝে না।পাগল একটা।”

“আচ্ছা এসব বাদ পরতে দে।”

স্নেহা পরতে লাগলো আর ভাবছে অন্তরা হৃদয়ের জন্য পাগল হয়ে গেছে জিতে এখন নাম উঠাতেই একা একাই হাসছে।
এর নাকি পরিক্ষা নিয়ে চিন্তা কে বলবে।
ফোন টিপছে তারমানে কল করবে এখন।ওর জন্য পাগল কিনা জানিনা ও মে তার জন্য একদম পাগল হয়ে গেছে সেটা স্পস্ট।

.
রায়াকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি গেটের সামনে।আজকে আমি রুনা আপু রানী রায়াকে নিয়ে পার্কে যাব।
আমার যাওয়ার একটু ও ইচ্ছে ছিলো না আপু‌ই জোর করে নিয়ে এলো।ছারলো‌ই না।

বাসায় কাছেই একা পার্ক আছে সেখানটাই ই যাচ্ছি আজ তো শক্রবার কলেজ টিউশনি অফ।
একটু পর অটো চলে এলো সবাই উঠে বসলাম আপু রায়াকে নিতে চাইলো দিলাম না।
বাচ্চা আমার বরাবরই পছন্দ সবসময় কোলে রাখতে মন চায়।

রায়াকে কাছে পেলেই কোলে রাখাটা মিস করিনা।
রায়ান গলা জরিয়ে ধরে থাকে সুন্দর করে “মিষ্টি আন্টি” বলে গালে চুমু খায়। ওকে আমার এতো ভালো লাগে বলে বুঝাতে পারব না।

আমাকে ভাড়া দিতে দিলো না আপু‌ই দিলো।
পার্কে এসেই রানী রায়া সেকি খুশি লাফিয়ে লাফিয়ে ছুটাছুটি করছে। দুজনে যে খুব খুশি ওদের লাফালাফি দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

আমার ও ভালো লাগছে আগে কখনো পার্ক নামক জায়গায় আশা হয় নাই‌।নাম শুনি নাই এমন না তা শুনেছি কিন্তু যাই নাই।
অসম্ভব সুন্দর ফুলের বাগানে চলে এসেছি ।
আর একটু এগিয়ে বিল পেয়ে গেলাম অনেক মানুষ আছে আপুদের রেখেই চলে এসেছি সে খেয়াল নাই‌।
হঠাৎ একটু ঝোপের দিকে চলে এলাম ঘুরতে ঘুরতে। তারপর একটা আপত্তিকর জিনিস দেখতে পেলাম।
সঙ্গে সঙ্গে আমার চোখ দুটো ইয়া বড় হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে চোখ হাত দিয়ে চিৎকার করে উঠলাম আসলে করতে চাই নাই হয়ে গেছে।

চিৎকার করে নিজেই বোকা বনে গেলাম তারাতাড়ি চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখি ছেলে মেয়ে দুজনে হাওয়া আর একটু দূরে চোখ দিয়ে দেখি দুজনে দৌড়ে পালাচ্ছে।

ছিঃ কি দেখলাম ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
ছেলে মেয়েটাকে ইচ্ছামত বকতে লাগলাম বিড়বিড় করে। এরা এসব করতে এখানে আসে‌।এবার সব কোনায় ঝোপের আড়ালে আমার চোখ গেল আম্র কতো কাপেল আছে যারা আর ও বেশি কিছু করছে।
লজ্জায় ঘৃণায় মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল আমার।

এতোক্ষণের সমস্ত ভালো লাগা ধংস হয়ে গেল।
আর ঘুরবো‌ই না।আপুদের কাছে যাই।
নিচের দিকে তাকিয়ে তবুও বকেই যাচ্ছি। হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগল মাথায়। রেগে মাথাটা উঁচু করে তাকালাম,,,
চলবে❤️

#অচেনা_শহর💖
#লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:— ৩১

বকার জন্য মুখ করে মাথা উঁচু করে রুনা আপুর মুখ দেখলাম।তাকে দেখে রাগ সংযত করলাম। আপু আমার মুখ দেখে হয়তো কি আন্দাজ করতে পারছে।

তাই জিজ্ঞেস করলো,,
“কি হয়েছে রে স্নেহা এমন রেগে আছিস কেন?”

“কিছু না আপু চলো। রায়া রা কোথায়?”

“ওরা ওই পাশে তোকে খুঁজতে এলাম চল।”

“চলো।”

আপুর সাথে রায়াদের কাছে গেলাম।
সবাই বাইরে হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। তারপর বাসায় ফিরে এলাম তখন ই ফোনে আদ্রর কল এলো।
বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে রইলাম না চাইতে ও রিসিভ করতে হলো ফোনটা‌,,,

“হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম। কোথায় গিয়েছিলে?”

“কেন আমি কোথায় গিয়েছি না গিয়েছি আপনাকে কেন বলবো?”
লোকটা সব বুঝে যায় কেমনে কে জানে?সব সময় আমাকে ফলো করে নাকি।

‘তুমি পার্কে এসেছিলে কার সাথে?”

“দেখুন একদম অধিকার দেখাতে আসবেন না যতসব। আমার যেখানে খুশি সেখানে যাব তার সাথে ইচ্ছা। এসব আপনি বলতে পারেন না।বাই।”

বলে কেটে দিলাম।
আমার পেছনে গোয়েন্দা গিড়ি করা শুরু করেছে অসহ্য কর লোক একটা‌। রুমে এসে ব্যাগ রেখে দিলাম। তারপর বাবাকে খাবার খাইয়ে দিলাম গরম করে। সাথে ওষুধ।
মাগরিবের আজান পরতেই ওযু করে নামাজ আদায় করে নিলাম।

রাতের জন্য রান্না করতে এলাম মাসের শেষ আর ফিশ দিয়ে হাত ফাঁকা হয়ে গেছে।আড়াইশ টাকা আছে এটা দিয়ে বাবার জন্য ওষুধ আনতে হবে কাল। ওষুধ ও শেষ হয়ে এসেছে। আবার এদিকে চাল ও শেষ আজ রাত চলবে কোন রকম। শুধু বাবার জন্য রান্না করে নিলাম আজ খাব‌ই না। বাইরে থেকে চটপটি হালিম খাইয়ে ছিলো আপু সমস্যা হবে না।
এদিকে মাসের আর ও আট দিন আছে।
চলবে কি করে চাল তো কিনতেই হবে তেল ও শেষ। তেল ছাড়াই না হয় খাব কিন্তু গাড়ি ভাড়া তো হবে না‌। ধুর গাড়ি ভাড়া লাগবে না‌। আগে বাবার ওষুধ আর চালটা আনতে হবে। বাবার শরীর টা ইদানিং বেশিই খারাপ দেখা যায় এবার টাকা হাতে এলে আগে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাব।

অন্য মনস্ক হয়ে আলু কাটছিলাম ফট করে হাতটা কেটে ফেললাম। চাকু রেখে আংগুল চেপে ধরলাম।
প্রচন্ড জ্বালা করছে।
দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হলো ওইভাবে আলু কাটতে লাগলাম কষ্ট হলে ও করতে হলো।
রান্নাঘরে কাজ শেষ করে রুমে এসে হাত মুখ ধুয়ে ব‌ই নিয়ে বাবার কাছে চলে এলাম।

আজকে বাবার পাশে বসতে ইচ্ছে করছে এসে দেখি বাবা কালেন্ডার এর দিকে তাকিয়ে আছে তার চোখে পানি‌। আমি তারাতাড়ি বাবার কিচেন গিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম কি জন্য কাঁদছে বাবা।
আমি ও কালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আজকে বারো তারিখ সাথে সাথে মনে পরে গেল আজ ভাইয়ার জন্মদিন ছিলো। এসব মনে করেই কি কাঁদছে বাবাকে এখন ও ভাইয়ার জন্য কাঁদে ভাবতেই আমার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো।

শেষ বার ভাইয়ার জন্য দিনে আমি টাকা জমিয়ে একটা শার্ট গিফট করেছিলাম কতো খুশি হয়েছিলো ভাইয়া। মা সারাদিন ভরে ভাইয়ার পছন্দের খাবার রান্না করেছিলো।
তারপর সবাই মিলে তৃপ্তি করে খেয়েছিলাম মার রান্না বরাবর খুব ভালো। কতোদিন সেই রান্নার স্বাদ নেওয়া হয় না আর কখনো নিতে ও পারবো না। কখনো না গাল বেয়ে টপ টপ করে ঝল গরিয়ে পরলো কতো আনন্দে ছিলাম বাবা মা ভাই আর আমি একটা হ্যাপি ফ্যামিলি সব নষ্ট করে দিলি তুই ভাই।
আমি তোকে কখনো ক্ষমা করবো না কখনো না।

বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম।

-সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে বাবা তুমি আছো তুমি কখন যেও না প্লিজ তাহলে আমি বাঁচতে পারবো না।
তুমি আমার একমাত্র অবলম্বন।

চোখ বন্ধ করে ওইভাবেই র‌ইলাম কিছু সময়। ফোন বেজে উঠল,, জানি ওই অসভ্যটাই কল করেছে মাথা উঁচু করে দেখলাম সত্যি ফোন কেটে বায়ভিশন করে রাখলাম।

পরদিন।
সকালেই দোকানে চলে এলাম। ওষুধ কিনতে কিন্তু একটা ওষুধ পেলাম না।আর বাকি গুলো কিনে নিয়ে এলাম।তারপর চাল, ফুল কপি কিনলাম দুইটা পনেরো টাকায়।
পঞ্চাশ টাকা র‌ইল।

অনেক সকালে উঠেছিলাম আজ। বাসায় সামনে সবজির ভ্যান আসে সেখানে থেকে সবজি কিনছি। সব কেনা শেষে ভেতরে ঢুকে গেলাম। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছি হঠাৎ কাউকে দেখে থেমে গেলাম। সেও মনে হয় আমাকে চিনতে পেরেছে হালকা।

“আপনি এখানে! আপনি কি এখানে থাকেন?”

কৌশিক স্নেহাকে এখানে দেখে কিছু টা অবাক হয়েছে সাথে ভয় ও পাচ্ছে। পেছনে রুনা আসছে। মেয়েটা তো ওকে ঐশীর সাথে দেখেছিল এখন আবারও রুনার সাথে দেখবে।
কৌশিক কথা বলছেনা দেখে স্নেহা ভাবছে হয়তো ওকে চিনতে পারে নি।

“আপনি কি আমাকে চিনতে পারছেন না নাকী। ওই যে শপিং মলে আমার ব‌উ শাড়ি…

স্নেহা থেমে গেল পেছন থেকে রুনা আপুকে দেখে।
কোলে রায়া চোখ বন্ধ করে আছে সাত সকালে আপু রায়াকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে। সাথে তো রানীর নাই‌।

“আরে আপু তুমি এই এতো সকালে কোথায় যাচ্ছ।”

রুনা আপু বলল,,, ” স্নেহা তোকেই তো খুঁজে এলাম রানীকে তোর কাছে রাখিস কিছু ক্ষন আমরা একটু ডাক্তার এর কাছে যাচ্ছি।

“কেন কার কি হয়েছে আর তুমি কি একা যাবে ভাইয়া ক‌ই।”

“রায়ার কাল থেকে জ্বর আর একা না এই যে তোর ভাইয়া রায়ার আব্বু।”

কৌশিক কে দেখিয়ে বলল। স্নেহা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে আছে কৌশিকের দিকে। কৌশিকের চোখে মুখে আতঙ্ক এই বুঝি সব বলে দিবে স্নেহা।

“ইনি।”

“হুম এবার যাই এসে কথায় বলবো।”

বলেই রুনা আপু এগিয়ে গেল। আমি সেখানে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে র‌ইলাম তাদের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে। কৌশিক ভাইয়া বারবার করে ঢোক গিলে আমার দিকে তাকাচ্ছিল।

হতদম্ব হয়ে গেছি একদম উনি যদি আপুর বর হয় তাহলে ওইদিনের শপিং এর মেয়েটা কে। চিন্তা ভাবনা করতে করতে রুমে আসলাম রানী সেখানেই ছিলো ওকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। আপুকে কি জিজ্ঞেস করবো ওইটা কে হয়তো আত্মীয় কেউ। কিন্তু কথা শুনে তা মনে হয় নাই।

ফ্রেশ হয়ে এসে রান্নাঘরে গেলাম।
মাথা থেকে রুনা আপুর হাজবেন্ড কে নিয়ে টেনশন যাচ্ছে না। কোন একটা ঘাপলা তো আছেই সেটা কি এমনিতেই এই মানুষটা কে আমার দেখার ইচ্ছা ছিলো যেদিন আমার গালের মারের দাগ দেখেছিলাম। আচ্ছা ওনি কি আপুকে পছন্দ করে না।

রান্না শেষ করে বাবাকে খাইয়ে রানীকে নিয়ে আমি ও খেয়ে নিলাম। রুমে এসে ফোন হাতে নিলাম আর ফোন হাতে নিয়েই আমার চোখ চরকগাছ। ১০০মিসকলড এতো গুলো ফোন কে দিলো কল লিস্টে শুধু আদ্রর নাম্বার তারমানে আদ্র এতো গুলো কল দিয়েছে।

মাই গড এতো কল কেউ দেয়। সাইলেন্ট ছিলো বলে বুঝতে পারিনাই‌। সাথে সাথে আবার কল এলো রিসিভ করলাম।

“আপনি কি পাগল এতো কল দিছেন কেন?”

“আর ইউ ওকে। ”

“আমার আবার কি হবে?”

‘কিছু হয় নাই তো কল রিসিভ করো নাই কেন? ”
চিৎকার করে উঠল,,

“আমি বিজি ছিলাম আর আপনি যেহেতু দেখেছেন আমি রিসিভ করছি না তাহলে কল দিয়েছেন কেন?”

“আমি আগেও বলেছি আমার ইচ্ছে তাই আমি কল দেবো। আর তুমি রিসিভ করতে বাধ্য।”

“আমি কারো অনুসারে চলবো না। আপনি অনেক জ্বালিয়েছেন আর না আজকে আপনার নাম্বার আমি ব্লক করবো। তা খুশি করেন।”

বলেই ফোন কেটে দিলাম। এমনি তেই রুনা আপুর চিন্তায় আছী তার উপর এসব পাগল হয়ে যাব আমি।

একটু পরে কলিং বেল বেজে উঠল,, উঠে গিয়ে দরজা খুলে শক খেলাম সামনে দাঁড়িয়ে আছে কৌশিক ভাইয়া‌।

“আপনি,,

“তোমার সাথে কিছু জরুরী কথা আছে একটু ভেতরে আশা যাবে।”

জরুরী কথা কি ভেবে ভ্রু কুঁচকালাম। তাঁর দরজা থেকে সরে আসলাম আর বললাম,,,,
“আসেন।”

ভেতরে এসে বলে উঠলো,,, ” ওইদিন আমাকে একটা মেয়ের সাথে দেখেছিলে ওইটা প্লিজ রুনাকে বলো না‌।”

তার কথা শুনে ই বিস্মিত হয়ে আছি এমনটা হবে ভেবেছিলাম তার মানে সত্যি মেয়েটার সাথে তার সম্পর্ক আছে। সাথে ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে র‌ইলাম আপুর মতো এতো ভালো মানুষ কে উনি ঠকাচ্ছেন ছিঃ সেটা থাকতে আবার আমার কাছে এসেছে।
লজ্জা ও নাই একটু ও ওনার কথা শুনবো না সব বলে দেবো আমি।

রেগে বললাম,,,”আপনি ভাবলেন কি করে আমি এসব লুকিয়ে যাব। সব বলবে আমি আপুর মতো এতো ভালো একজন কে ঠকিয়ে আপনি অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে দেন ছিঃ। আবার সেটা ডাকতে আমার কাছে এসেছেন। লজ্জা করে না ব‌উ বাচ্চা রেখে পর নারীতে নজর দিতে। আপু আপনাকে কতো ভালোবাসে আর তার এই প্রতিদান দিলেন। আপুর গায়ে মারের চিন্হ দেখেই আমার আপনাকে নিয়ে সন্দেহ হচ্ছিল এক নজর দেখতে ও চাইছিলাম। আর সেই দেখা হলো কিন্তু আরেক সত্যির সাক্ষী হয়ে কি কপাল আমার দেখুন।”

কৌশিক ভয়ে আছে স্নেহাকে নিয়ে এই মেয়ে তো ওকে একদম উল্টো বুঝছে। এসব বললে রুনা জীবনের মতো মুখ ফিরিয়ে নেবে ওর থেকে।

“প্লিজ বোন তুমি উপরে দেখে ভেতরে টা মাপতে যেও না। চোখের সামনে সব কিছু সঠিক নয়।”

“কি বলতে চাইছেন আমি যা দেখেছি সব ভুল। আমি তাও এতোক্ষণ ভেবেছি ভুল হতে ও পারে কিন্তু আপনার এভাবে ভয়ে ছুটে আসা টা দেখে আমার ভাবনা ভুল হয়েছে। কিছু তো ঘাপলা আছে আমার বিশ্বাস সেইটা কি বলেন ওই মেয়েটা কে আপনার ব‌উ আপনি কি আপুকে ঠকিয়ে আবারও বিয়ে করেছেন!!”

“কি সব বলছো ?এটা আমি কল্পনা ও করতে পারি না। রুনাকে আমি খুব ভালোবাসি।”

ভালোবাসি শুনে থমকে গেলাম কথাটা বলার সময় তার মুখটা উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল মনে হয় নাই মিথ্যা বলছে। কিন্তু তাহলে ওইসব কি?

“তাহলে ওই মেয়েটা কে?”

চুপ করে আছে কিন্তু আমি এতো সহজে ছারার পাত্রী না।চেপে ধরলাম প্রশ্ন করে বাঁধ্য হয়ে সব বলল আমাকে।
সব শুনে আমি হতদম্ব হয়ে গেলাম কি ডেন্জারেস মেয়ে রে বাবা। এত খারাপ ও কেউ হয়। এভাবে লোকটার উপর বসে আছে। বেচারা এতোক্ষণ তীব্র রাগ নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম আর এখন দৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে গেছে।

.
ফোন কেটে দিতেই আদ্র রেগে বোম হয়ে গেল। এখন স্নেহা কে সামনে পেলে কি করতো নিজেও জানে কিন্তু আজকে সামনে পাওয়া যাবে না।আজ ভার্সিটি অফ আর ওর প্রাইভেট ও ।

বেড ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হতে গেল আদ্র। এখনি ও স্নেহার বাসায় যাবে ও এতো সাহস আমার কথা অমান্য করে।
আর আমার সাথে এভাবে কথা বলে কি বললো আমার নাম্বার ব্লক করবে ওকে দেখে নেব আমার অধিকার নিয়ে কথা বলে।
ওর উপর সমস্ত অধিকার শুধু মাত্র আমার।

আদ্র ফ্রেশ হয়ে এসে গাড়ির চাবি হাতে নিলো।বাইক ওর ফ্রেন্ড আশিক নিয়েছে ও এখন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে।

বাসার সবাই খেতে ডাকলেও শুনে নি আদ্র।সোজা বেরিয়ে গাড়ি তে উঠে বসে। ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করতে লাগে।উদ্দেশ্য স্নেহার বাসা।

বাসায় সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে নেমে স্নেহার নাম্বার এ কল করে নাম্বার বিজি তার মানে সত্যি ব্লক করেছে রাগে ওর কপালের রগ ফুলে উঠে।
গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে ঢুকে যায় দারোয়ান এর সাথে পরিচিত আগে থেকে তাই সমস্যা হয় না‌।
.
স্নেহা কেবল দরজা অফ করে ভেতর রুমে যেতে থাকে রানীকে নিয়ে কৌশিক ভাইয়া গেল। আর আমার মনে ঐশীকে নিয়ে আকাশ সোমান রাগ ক্ষবের জন্ম দিলাম ছিঃ এতো বাজে কি করে হয় ভাইয়ার একটা পূর্ন পরিবার আছে এসব জেনেও মেয়েটা এমন জগন্য কাজ করছে ঘৃনা হচ্ছে খুব। সেদিনের ব্যবহার এই বুঝেছিলাম মেয়েটা খুব দূরবাজ আজ সত্যি তার থেকে ও খারাপ মনে হচ্ছে।
ভাইয়া কে এই ভাবে ট্রাপে ফেলে ছিঃ। ওই মেয়েটার জ্বালায় আপুর সাথে ভাইয়া খারাপ ব্যবহার করে। এটা শুনে আমি রেগে যাই আর বলি অআপুর সাথে খারাপ ব্যবহার না করে বুঝিয়ে কিছু টা বলা উচিত আপু ভুল না বুঝে সঠিক পরামর্শ ও দিতে পারে । ভাইয়া রাজি হয়েছে।

রুমে ঢুকে খাটে বসবো এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো,, ওফ আবার কে এলো আপুরা ছাড়া তো আর কেউ আসে না তাহলে কি ভাইয়া এলো আবার ছুটে এসে দরজা খুললাম।

দরজা খুলে বিস্ময়ে আমার চোখ দুটো মার্বেলের মতো গোল গোল হয়ে গেল। সামনে আদ্র দাঁড়িয়ে আমি কি ঠিক দেখছি নাকি ভুল হাত দিয়ে চোখ ঢলে আবার তাকাচ্ছি কিন্তু আদ্র তো সেই ভাবেই রেগে আগুন হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।

তোতলাতে তোতলাতে বললাম,,,” আ–আপনি

আর কিছু বলতে পারলাম না আদ্র আমার হাতের কবজি ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে এলো।
আতঙ্কে ভয়ে কাঁপতে লাগলাম।
চলবে♥️

® তানজিনা আক্তার মিষ্টি

(ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে