কলঙ্কের দাগ পর্ব-০২

0
7

গল্প #কলঙ্কের_দাগ
পর্ব=২
লেখক #জয়ন্ত_কুমার_জয়

মহুয়া বিছানার নিচ থেকে লুকায়িত ছু”রিটা বের করলো।টুকু আজ বাবার র”ক্তে র”ক্তস্নান করবে।

রাত বাজে দুইটা।গ্রামের সবাই নিশুতি।টুকু ঘুমাচ্ছে,আজকের পর থেকে সে সারাজীবন আরামের ঘুম ঘুমাতে পারবে।ঘুমের মাঝে কেউ তার শরীর স্পর্শ করবে না।লজ্জাকাতর স্থানে হাত বুলাবে না।

খু”ন করার এটাই উপযুক্ত সময়।ঘুমের ট্যাবলেটের প্রভাব বেশ ভালোভাবেই কাজ করেছে।সমীর মুখ হা করে গভীর ঘুমে নিমজ্জিত।

মহুয়া কলপাড়ে গেলো।হাড়ির কালি তোলার জন্য একটা ঝষা পাথর আছে,সেটা দিয়ে ছু”রিটার ধার তিক্ষ্ণ করলো।ভয় লাগছে,জীবনের প্রথম মানুষ খু”ন করবে সে।ঘুমের ঘোরে গ”লায় ছু!রি বসিয়ে দিলে কি সে জেগে উঠবে?নাকি চেঁচিয়ে উঠবে? চেঁচালে সমস্যা।আশেপাশের লোকজন চলো আসবে।গ্রামের মানুষের খুব কানখাড়া।সামান্য শব্দে এরা জেগে ওঠে।শুধু জেগে উঠেই এরা শান্ত হয়না।খুঁজে বেড় করে শব্দের উৎস কি।মহুয়া রান্নাঘরে গেলো।কড়া লিকারে এককাপ চা খেয়ে আগে নিজেকে শান্ত করতে হবে।

আড়াইটা বাজে।সমীর ম”রার মতো ঘুমাচ্ছে।মহুয়া শাড়ির পার ছিঁড়লো।শক্ত করে সমীরের হাত,পা বাঁধলো।গ”লায় ছু”রি চালানোর সময় দাপাদাপি করবে,হাত পা বাঁধা থাকলে সুবিধা।

ঘরে মা”রা যাবে না।র”ক্তে ভেসে যাবে।তাছাড়া লা”শ নিয়ে সমস্যায় পরতে হবে৷খু”নের থেকেও বেশি কঠিন লা”শ লুকানো।মাটির মেঝেতে মহুয়া জগের জল ফেলে মাটি পিচ্ছিল করলো।ঠিক করলো বাড়ির পেছনে টয়লেটের মল জমা হওয়ার জন্য যে খাদ আছে,লা”শ সেখানে ফেলে রাখবে।পঁচে গেলেও গন্ধ বাইরে বের হবে না।

পেছনের খাদ পর্যন্ত যাওয়ার পুরো যায়গাটা মহুয়া জল ফেলে পিচ্ছিল করলো।এঁটেল মাটি হওয়ায় বেশ পিচ্ছিল হলো।এরপর একটা প্লাস্টিকের বস্তা ঘরের মেঝেতে ফেলে সমীরের ঘুমকাতুরে শরীরকে টেনে নিচে ফেললো।

সমীর চোখ কিঞ্চিৎ মেলে উু জাতীয় শব্দ করলো।কিন্তু জেগে উঠলো না।মহুয়া হাফ ছেড়ে বাঁচলো।তারপর পিচ্চিল অংশ দিয়ে টেনে নিয়ে গেলো খাদের কাছে।সেখানে যাওয়ার পর খু”নের প্লান বদলালো।যথেষ্ট গভীর এই খাদ।হাত পা বাঁধা কাউকে ফেললে সে এমনেও বাঁচবে না।তার উপর সমীর ঘুমের ওষুধ খেয়ে অর্ধমৃত অবস্থায় আছে৷গ”লায় ছু”রিঘাতের সিদ্ধান্ত পাল্টালো।

খাদের উপর কংক্রিটের ঢাকনা।চারপাশে সিমেন্টের পাতলা আস্তরণ দিয়ে ঢাকা।মহুয়া ছু”রির মাথা দিয়ে খুঁচিয়ে প্লাস্টার তুললো।অতঃপর ঢাকনা খুলতেই মলের গন্ধ হঠাৎ মহুয়ার নাকে লাগতেই শরীর গুলিয়ে উঠলো।হরহর করে বমি করলো খাদের ঢাকনার উপর।

কলপাড়ে গিয়ে চোখে মুখে জলের ছিঁটে দিলো। একটা কাপড়ে সমীরের মুখ শক্ত করে বাঁধলো।প্রথমে কোম”ড় থেকে পায়ের অংশটা খাদের দিকে ঠেলে দিলে,অতঃপর হাত টেনে দিতেই ধপ করে শব্দ হলো।সমীর মলমূত্রের খাদে!

মহুয়া দ্রুত ঢাকনা লাগিয়ে দিলো।কান পেতে রইলো।ভেতর থেকে তোলপাড় শব্দ ভেসে আসছে৷মিনিট খানেক এরকম শব্দ করে সব শান্ত হয়ে গেলো।

মহুয়ার সারা শরীর কাঁপছে।ঘামে গা মাখামাখি।বড় একটা শ্বাস ফেলে পেছনে তাকালো।চাদর মুড়ি দেওয়া দুজন মানুষ দাঁড়িয়ে।মহুয়ার পায়ের তল থেকে মাটি সরে গেলো।এরা কখন থেকে তার উপর নজর রাখছিলো? ওরা কি দেখেছে মহুয়া সমীরের হাত পা বেঁধে খাদে ফেলেছে?

মহুয়া আতঙ্কে পাথর হয়ে রইলো।চাদর মুড়ি দেওয়া একজন বলে উঠলো ” মানুষটারে মা”ইরা ফালাইলেন? ”

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে