Monday, October 6, 2025







মেঘ বিয়োগের মৌসুম পর্ব-১৩

#মেঘ_বিয়োগের_মৌসুম
#তানিয়া_মাহি(নীরু)
#পর্ব_১৩

রাতে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়া লা*শ দেখে ওয়াজিহার অবস্থা খুব খারাপ। ফারাজ নাকে হাত দিয়ে চেক করতেই দেখে শ্বাস চলছে। রাস্তায় থাকতেই ফারাজ পুলিশকে কল করেছিল। পুলিশের কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে সাথে সাথে ওয়াজিহা আর ফারাজ মিলে মেয়েটাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। থানা কাছে থাকায় পুলিশের আসতে দেরি হয়নি। ওয়াজিহা নিজেও তার ভাইকে কল করে হাসপাতালে আসতে বলেছে।

ওয়াজিহাকে বাহিরে বসিয়ে রেখে ফারাজ রোগীর কাছে চলে যায়। তার এখন ইমিডিয়েট চিকিৎসার প্রয়োজন।

ওয়াজিহা বাহিরে বসে মনে মনে কিছু আওড়াচ্ছিল। স্পষ্ট মনে হতেই পুলিশকে জানিয়ে সে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে। ততক্ষণে ওয়াহাজও চলে এসেছে। হাসপাতাল থেকে বের হয়েই ভাইকে দেখে ওয়াজিহা এক প্রকার দৌঁড়ে ভাইয়ের কাছে আসে।

ওয়াহাজের দুই বাহু ধরে ওয়াজিহা বলে ওঠে,” ভাইয়া আমাদের এখনই বের হতে হবে৷ আমি তোমাকে একটা গাড়ির নম্বর বলছি, তুমি প্লিজ খবর নিয়ে দেখো গাড়িটা কার?”
” শান্ত হও তুমি। এত রাতে আমরা কোথায় যাব? সময় দেখেছ তুমি? কোনোকিছুতে তাড়াহুড়ো করতে নেই। তুমি দেখেছ গাড়িতে কতজন ছিল?”
” যখন মেয়েটাকে ফেলে দিয়েছিল তখন দুজনকে দেখা গিয়েছিল আর একজন ড্রাইভার ছিল। ”
” তোমাকে দেখেও সেখানে ফেলল মেয়েটাকে?”
” আমি গেইটের ভেতরে গিয়েছিলাম, বাহিরে বের হতে হতেই গাড়িটা চলে গেল। আমি তখন গাড়ির নম্বর দেখেছি।”

ওয়াজিহা গাড়ির নম্বর জানালে ওয়াহাজ সাথে সাথে গাড়ির ডিটেইলস জানার জন্য কাউকে কল করে। ওপাশ থেকে জানায় আগামীকাল সকালের মধ্যে জানিয়ে দেবে। ওয়াহাজও সম্মতি জানিয়ে কলটা কাটে৷

ওয়াহাজ বেলাকে উদ্দেশ্য করে বলে,” শোনো একটা কথা বলি৷ এই সমস্যাটা পারিবারিক কোনো সমস্যা না৷ ফারাজ আমাকে কল দিয়েছিল, সে জানিয়েছে এটা ধর্ষ*ণের কেস। আমি জানি আমার বোন প্রতিবাদী কিন্তু তুমি আগে সমস্ত অন্যা*য়ের প্রতিবাদ সাথে সাথে করলেও এখন তোমাকে সময় নিতে হবে। সময় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করে পদক্ষেপ নিতে হবে। আর হ্যাঁ শোনো তুমি পুলিশকে সর্বোচ্চ সাহায্য করবে। তবে একটা কথা কি জানো তুমি যাদের দেখেছ তারা যদি ধনী পরিবারের বিগড়ে যাওয়া জানো*য়ার হয় তাহলে তারা বেঁচে যাবে। ”

দুজন হাসপাতালের ভেতরে চলে আসে। মেয়েটার সাথে তার ব্যাগ ছিল সেখান থেকে যে ফোনটা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে বাড়িতে জানানো হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে মেয়েটার বাবা-মা কান্না করতে করতে সেখানে উপস্থিত হয়। ফারাজ তখনো বের হয়নি ভেতর থেকে। সেখানে আরও কয়েকজন নার্স এবং ডাক্তার রয়েছে।

ওয়াহাজের কাধে মাথা দিয়ে বেলা বসে আছে। ওয়াহাজ, বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

রাত বারোটার দিকে ফারাজ বাহিরে আসে। মুখটা তার মলিন৷ ফারাজ এগিয়ে আসতেই মেয়েটার বাবা-মা ফারাজের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।

মেয়েটার বাবা ভারীস্বরে বলে,” কী হয়েছে আমার মেয়ের? ঠিক আছে তো?”

ফারাজ দুজনের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। বলে,” হয়তো এই যাত্রায় আল্লাহ বাঁচিয়ে নিবেন। তবে আজ হয়তো জ্ঞান ফিরবে না। সকালের আশায় আছি, জ্ঞান ফিরলেও ফিরতে পারে।”
” আমার মেয়ে বেঁচে যাবে তো, ডাক্তার?”
” আল্লাহ ভরসা। মেয়ের জন্য দোয়া করুন৷ মা-বাবার দোয়া তো আল্লাহ কবুল করে নেয়।”

দুজন দরজার বাহিরে থেকে মেয়েকে দেখতে থাকে। মা তখনো কান্না করে যাচ্ছে। কান্না করতে করতে বলে,” আমি বলেছিলাম মেয়েকে এত প্রশ্র‍য় দিও না। ছেলেটা বিরক্ত করছে, কয়েকদিন মেয়েটা ঘরে থাকলে কী এমন হতো? এখন আমার মেয়েটার কী হবে?”

কথাটা শুনে ওয়াজিহা বলে ওঠে,” ভাইয়া, তুমি মেয়েটার বাবার নম্বরটা নাও কোনোভাবে। তারা জানে, এই অবস্থার জন্য কে দায়ী।”

ওয়াহাজ বলে ওঠে,” আমারও সেটাই মনে হচ্ছে। আমি নম্বর নিয়ে আসছি, অপেক্ষা কর।”

ওয়াহাজ দুই মিনিটের মধ্যে ওয়াজিহার কাছে আবার ফিরে আসে। মোবাইলের স্ক্রিনে নম্বরটা দেখিয়ে বলে,” কাজ হয়ে গেছে।”

ওয়াজিহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কঠোরকণ্ঠে বলে ওঠে,” ভাইয়া আমি যদি তোমার অফারে রাজি হই? আমি আবার পুরোনো সেই দমে না যাওয়া ‘আমি’টাকে জাগিয়ে তুলি?”
” আমি খুশি হব। সবরকম সাহায্য তুমি পাবে।”

ফারাজ পুলিশের সাথে কথা শেষ করে, বলে-কয়ে ওয়াহাজ আর ওয়াজিহাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। আজ তার বাড়ি ফেরা হবে না। মেয়েটার অবস্থা খুব খারাপ, কখন কী হয়ে যায় বলা যায় না। ফারাজ নিজের কক্ষে চলে যায়। দুজন নার্স পাহাড়ারত আছে। কোনোকিছু হলেই ফারাজকে জানাবে।
**
হাসপাতালে নিজের সাথে বেঁচে থাকার যুদ্ধে খানিকটা জয়ী হয়ে মেয়েটার জ্ঞান ফিরতে ফিরতে পরেরদিন বিকেল পাঁচটা বেজে যায়। শরীরের অবস্থা প্রচন্ড খারাপ ছিল গতকাল, আজ কিছুটা উন্নত হয়েছে।

ফারাজ চেকাপ করে জানায় সে এখন আগের তুলনায় অনেকটা ভালো আছে। মেয়েটার নাম জিজ্ঞেস করায় মেয়েটার বাবা জানায় তার মেয়ের নাম ‘নুসরাত’।

ওয়াজিহা সন্ধ্যার আগে মেয়েটার সাথে দেখা করতে এসে সবকিছু জেনে নেয়। তখনই বাহিরে থেকে একজন এসে জানায় গতকাল রাতে মেয়েটার সাথে যে তিনজন ছিল তারা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।

ওয়াজিহাও সেটা তার ভাইকে জানানোর জন্য কল দিতেই ওয়াহাজ জানিয়ে দিল সে এই বিষয়ে কিছুক্ষণ আগেই জেনেছে। তারা তিনজন সব স্বীকার করে নিলে আগামী সোমবারে আদালত রায় দিয়ে দিবে।
**
সময় পানির প্রবাহের মতো অতি দ্রুত প্রবাহিত হলো। সকাল সকাল ওয়াহাজ বেরিয়ে গিয়েছে আদালতের উদ্দেশ্যে। ওয়াজিহার যাওয়ার কথা ছিল না মাঝখানে তার মনে হলো বিচারটা নিজ চোখে একবার দেখা উচিৎ।

ওয়াজিহা তৈরি হয়ে বের হয়ে দরজা লক করার সময় মৌ-এর সাথে দেখা হয়ে যায়।

ওয়াজিহা দরজা লক করে মৌকে দেখে বলে,” কোথাও যাচ্ছ আপু?”
” হ্যাঁ, হাসপাতালে যাচ্ছিলাম একটু। তুমি কোথায় যাচ্ছ?”
” আমার একটু প্রয়োজন আছে তাই বের হচ্ছি। আঙ্কেল-আন্টি ভালো আছে?”
” হ্যাঁ সবাই ভালো আছে। তুমি তো নুসরাত নামের মেয়েটার কেসের ব্যাপারে জানো তাই না? ভাইয়া বলছিল মেয়েটা নাকি সঠিক বিচার পাবে না।”
” দেশে আর কি সঠিক হচ্ছে বলো তো! এক একটা সুপারহিরো কেন আসে না সবকিছু সঠিক করতে!”

নিচে নামতে নামতে ওয়াজিহা মৌ-এর কাছে থেকে বিদায় নিয়ে তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পড়ে। বাহিরে এসে একটা রিকশা নিয়ে বাসস্টপেজে চলে আসে।

বাস সাড়ে দশটায় ছাড়ার কথা কিন্তু এগারোটা বেজে গেলেও বাস ছাড়ছে না দেখে কয়েকজন খুব ঝামেলা করতে শুরু করে। এদিকে দেরি হয়ে যাচ্ছে জন্য অস্বস্তি শুরু হয়েছে ওয়াজিহার। এতক্ষণে হয়তো বিচারকার্য শুরু হয়ে গিয়েছে। বাসের সিটে আর বসে থাকতেই মন চাইছিল না ওয়াজিহার।

বাস ছাড়তে দেরি হচ্ছে দেখে পিছনের সিটে বসা মধ্যবয়স্ক এক মহিলাকে ওয়াজিহা জিজ্ঞেস করে,” আন্টি বাস ছাড়তে এতো দেরি করছে কেন?”
” এখানে কোন যেন নেতার ছোটো ভাই নাকি বাসে যাবে, তার আসতে দেরি হচ্ছে জন্য বাসও ছাড়ছে না। ”

বিষয়টা একদমই ভালো লাগে না জন্য সিট থেকে উঠে ড্রাইভারকে নিজের সমস্যার কথা বলতে যাবে তখনই বাহিরে থেকে জানায় যার আসার কথা ছিল সে পৌঁছে গেছে। ওয়াজিহা চুপচাপ নিজের সিটে বসে যায়। দুই মিনিটের মাথায় কেউ এসে তার পাশে বসে৷ সাথের আরেকজন লোক আরেকসারির এক সিট পিছনে গিয়ে বসে।

বাস ছেড়েছে প্রায় আধাঘণ্টা। ওয়াজিহার পাশে বসা লোকটা বারবার তার কাধে মাথা রাখছে। সে বারবার সরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও লোকটা বারবার সেটা করেই যাচ্ছে৷ ওয়াজিহা বেশ বুঝতে পারছে লোকটা ইচ্ছে করে এমন করছে কারণ তার পাশে বসার পর থেকেই অন্যরকম করে আড়চোখে দেখছিল তাকে। এখন ঘুমোনোর অভিনয় করে বারবার ওয়াজিহাকে স্পর্শ করছে।

ওয়াজিহা ব্যাগ থেকে সেফটিপিন বের করে বাম হাতে রেখে ডান হাত দিয়ে আবারও লোকটার মাথা উঠিয়ে দেয়। সেফটিপিনটা কাধে লাগিয়ে সেটা না আটকে ওভাবেই খুলে রাখে।

মিনিট দুয়েকের মধ্যে লোকটা আবারও ওয়াজিহার কাধে মাথা রাখতেই চিৎকার দিয়ে ওঠে। বাসের সবাই তৎক্ষনাৎ সেদিকে তাকায়। ওয়াজিহা তখনো নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। লোকটা নিজের কপালের পাশে থেকে ধীরে ধীরে সেটা খুলে রাগীচোখে ওয়াজিহার দিকে তাকায়।

” আপনি এটা ইচ্ছে করে করেছেন তাই না?”
” কী ইচ্ছে করে করেছি?”
” সেফটিপিন তো আগে ছিল না এখানে, আপনি মাত্র এখানে রেখেছেন?”

লোকটার কথায় ওয়াজিহা নিশ্চিত হয়ে যায় তার মানে সে এতক্ষণ ঘুমের ভান ধরে নারীশরীর স্পর্শ করছিল। ওয়াজিহা তার দিকে ফিরে চোয়াল শক্ত করে বামগালে চড় বসিয়ে দেয়। আশেপাশের মানুষ সার্কাস দেখার মতো সেদিকে দেখছে।

বেলার পাশে বসা লোকটা গালে হাত দিয়ে রক্তবর্ণ চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। এক পর্যায়ে সে বেলার দিকে চড় দেওয়ার জন্য হাত এগুতেই বেলা দ্বিতীয়বারের মতো চড় দেয়। আশেপাশের কয়েকজন সেদিকে এগিয়ে এসে দুজনের বিবাদ থামাতে চায়।

কী হয়েছে জানতে চাইলে বেলা বলে,” বাস ছেড়েছে আধাঘণ্টার একটু বেশি সময় ধরে। উনি পনেরো মিনিট ধরে ঘুমের নাটক করে আমার কাধে মাথা রেখেই যাচ্ছেন। বারেবারে আমার হাটুর ওপর হাত রাখছে।

পাশে থেকে একজন বলে ওঠে,” বয়স হয়েছে এমনও তো না। এত তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে কীভাবে মানুষ? বাসে উঠলেই কিছু মানুষ বংশের পরিচয় দিতে শুরু করে।”

আরেকজন সেই লোকের পক্ষ নিয়ে বলে,” বাসে উঠে অনেকের ঘুমানোর অভ্যেস আছে। উনি হয়তো তাই ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুমালে মাথা ঘড়িয়ে কাধে যেতেই পারে তাই বলে এরকম সিনক্রিয়েট করবেন নাকি? এত সমস্যা থাকলে বাসে কেন উঠেছেন? নিজস্ব গাড়ি কিনে নিন।”

বেলা এবার লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলে,” বাসে আপনি যেমন টিকেট কেটে উঠেছেন সেরকম আমিও৷ আপনাদের যদি মেয়েদের কাধে মাথা রেখে এতই ঘুমানোর শখ তাহলে বাড়ি থেকে বউ নিয়ে বের হলেই তো পারেন৷ আর এই লোক মোটেও ঘুমাচ্ছিল না৷ সে অস্বাভাবিকভাবে আমাকে স্পর্শ করছিল। বারবার ইচ্ছে করে কাধে মাথা রাখছিল, শরীর স্পর্শ করছিল। কোনটা ইচ্ছেতে হয় আর কোনটা এমনিতেই হয় সেটা বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। ”

বেলা নিজের ব্যাগটা কোলের ওপর নিয়ে বলে,” উনি বারবার ইচ্ছে করে এমন করছিল দেখে আমি সেফটিপিন দিয়ে রেখেছি, কপালে লাগার সাথে ঘুম ভেঙে গেছে তাই না? উনি যদি ঘুমেই থাকতেন তাহলে বুঝতেন কীভাবে যে এই সেফটিপিন আগে লাগানো ছিল না, মাত্র লাগিয়েছি?”

কারো মুখে আর কোনো কথা নেই৷ বেলার পাশে বসা লোকটা তবুও নিজের ইচ্ছেমতো বলেই যাচ্ছে।

বেলা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,” আপনাদের মতো পুরুষদের জাস্ট মে*রে ফেলে রাখা উচিৎ। হাত দিয়ে বাজে স্পর্শ করলে হাত, পা দিয়ে স্পর্শ করলে পা কে*টে দেওয়া উচিৎ। চোখ দিয়ে খারাপ নজর দিলে চোখ তু*লে নেওয়া উচিৎ আর আপনার মতো ঘুমের নাটক করা অভিনেতা হলে মাথা আলাদা করে দেওয়া উচিৎ। ”

বেলা বাসের দায়িত্বে থাকা লোককে বলে লোকটাকে তার পাশে থেকে তুলে দেয়৷ লোকটার সম্মানহানি হওয়ায় বাস থেকেই নেমে যায় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে।

কিছু লোক বেলার কাজের প্রশংসা করতে থাকে। বেলার পাশে এসে বসা মহিলাটি বেলার গালে হাত দিয়ে মৃদু হেসে বলে,” ওয়েল-ডান বেটি।”

***
বেলা আদালতে পৌঁছে ওয়াহাজকে কল করে কলে পাচ্ছিল না। বাহিরে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বারবার কল দিচ্ছিল বেলা। ওয়াহাজ তবুও কল রিসিভ করেনি। উপায় না পেয়ে বেলা ফারাজকে কল দেয়। রিং হতেই ওপাশ থেকে কল রিসিভ হয়ে যায়।

” ফারাজ বলছেন? ”
” হ্যাঁ বলছি।”
” রায় কতদূর?”
” রায় শেষ। ”
” মানে? এত তাড়াতাড়ি? ”
” হ্যাঁ। ”
” কোথায় আছেন? আমার ভাইয়া কোথায়?”
” আপনার ভাইয়া রেগে এখান থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। বাহিরে কোথাও আছে হয়তো।”
” কলে পাচ্ছি না ভাইয়াকে। আচ্ছা, কী হলো বিচারে?”
” সবাই ছাড়া পেয়ে গেছে।”
” কীহ! কী বলছেন আপনি?”
” হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট চেঞ্জ করে দিয়েছে। এটা অ্যাক্সিডেন্ট কেস বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাকাওয়ালার কোনো বিচার হয় না।”
” হাসপাতাল থেকে কীভাবে রিপোর্ট চেঞ্জ করে দেওয়া হয়? আর নুসরাতের বাবা-মা?”
” উনারা কারো সাথে কোনো কথা বলছেন না। হয়তো ভয় দেখানো হয়েছে। কোথায় আপনি?”
” আমি এইতো মেইন গেইটের পাশের আমতলায় দাঁড়িয়ে। ”
” ওখানে দাঁড়ান আমি আসছি।”

বেলা পাঁচ মিনিট ধরে এক জায়গাতেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। এতো বড়ো একটা অবিচার কীভাবে হতে পারে সেটাই ভাবছে সে। পাশেই ফারাজ দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর নুসরাত বাবা-মা তাদের সামনে দিয়ে বেরিয়ে চলে গেল। একবার শুধু বেলার দিকে করুণচোখে নুসরাতের বাবা তাকিয়েছিল।

বেলা একটা চেয়ারে বসে পড়ে। একে একে সবাই বাহিরে চলে আসছে। নুসরাতকে ধর্ষ*ণ করা তিনজন ছেলেকে একসাথে দেখতে পায় বেলা। চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যায় সে। তিনজন ছেলের সাথে আরও কিছু লোক রয়েছে। পাশে থেকে একজন তিনজনের মধ্যে একজনকে বেলাকে দেখিয়ে বলে,” ভাই, এই মেয়ে।”

সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যায় ছেলেটা। বেলার দিকে এগিয়ে গিয়ে গাল চুলকে হেসে বলে,” তাহলে মিস, আমাদের আবার দেখা হচ্ছে। সেবারও আমিই জিতব।”

#চলবে…….

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ