Monday, October 6, 2025







মন বিনিময় পর্ব-৪৫

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ৪৫ (১ম অংশ)
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

ত্রস্ত পায়ে রাহিতা ছুটে এসে স্বপ্নিলের বাহু ধরে ফাহিমের কাছে থেকে টেনে সরিয়ে নেয়। অবশ্য সরিয়ে নেয় বললে ভুল হবে। হৃষ্টপুষ্ট স্বপ্নিলকে টেনে সরানোর মতো জোর ওর নেই, বরঞ্চ ওকে কাছে আসতে দেখে স্বপ্নিল নিজ হতেই সরে গেছে। বাহুতে প্রেয়সীর ছোয়া পেয়ে পুরুষালি দেহের ভাজে লুকোনো কোমল সত্ত্বা বেড়িয়ে এসেছে নিজ হতেই। এদিকে স্বপ্নিলকে ছাড়ানো শেষে লজ্জিত রাহিতা ব্যস্ত কণ্ঠে ফাহিমের উদ্দেশ্যে বলে,

—ফাহিম, আই এম রিয়েলি সরি। উনার পক্ষ থেকে আমি মাফ চাইছি। প্লিজ তুমি ভুল কিছু ভেবোনা। এখানে বড় একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে!

রাহিতার কথা শুনে ফাহিম শ্বাস ফেলে। তার মানে সে যা ভেবেছিলো তাই হয়েছে। এটা নিশ্চয় রাহিতার স্বামী। তাই মনের প্রশ্ন সরাসরি করে বসে,

—উম, ইটস ওকে। আমি নিজেও বুঝেছিলাম কিছু একটা ভুল বুঝাবুঝি অবশ্যই হয়েছে। নয়তো অচেনা মানুষের সাথে এমন কেউ করেনা।

ফাহিমের কথায় রাহিতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে! যাক ছেলেটা উল্টাপাল্টা কিছু ভাবেনি এতেই শান্তি। এরই মাঝে ফাহিম আবারো বলে,

—বাই দ্যা ওয়ে রাহিতা, ইনি কি আপনার হাসবেন্ড?

—জি। এজন্যই ভুল ভেবেছিলেন। আপনি কিছু মনে করবেন না প্লিজ। অলরেডি অনেক সময় ওয়েস্ট হয়ে গেছে। গাড়িতে আপনার বাবা-মা অপেক্ষা করছে নিশ্চয়ই? গাড়ি কোথায়? দেখছিনা যে?

—ওহ, তাই তো! আমি তো এসবের মাঝে ওটা ভুলেই গিয়েছিলাম। গাড়ি গলির শুরুতে রেখে আমি এসেছিলাম দিক চিনে নিতে, কিন্তু এসবের মাঝে আর খেয়াল ছিলোনা। এখন যাই কেমন? বাবা-মা নিশ্চয়ই ভাবছে ঠিকানা খুজতে যেয়ে আমি কই নিখোজ হয়ে গেছি!

ফাহিমের মশকরায় হেসে ফেলে রাহিতা। ফাহিমকে ওদের বাসার দিক-নির্দেশনা দেখিয়ে দিয়ে, একিসাথে অনুরোধ করে ওর বাবা-মাকে মাত্র ঘটে যাওয়া বিষয়ে কিছু না বলতে! পরে সব ঘটনা শুনবে এ আশ্বাস নিয়ে ফাহিম নিজের গাড়ির দিক ফেরত চলে যায়। ফাহিম যেতেই স্বপ্নিলের বাহু ছেড়ে দেয় রাহিতা। একিসাথে কড়া চোখে তাকায় ওর দিকে। স্বপ্নিল শুধু চুপচাপ শুনছিলো দুজনের কথাবার্তা। এতক্ষণে সে নিজেও বুঝেছে তার কোনো একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। কিন্তু সেটা কি তা এ মুহুর্তে একদমই মাথায় আসছেনা! স্বপ্নিলের দিকে কিছুক্ষণ সেভাবেই তীক্ষ্ণ চাহনি নিক্ষে’প করে রাহিতা হেটে চলতে ধরে বাড়ির দিকে। কিন্তু এখানেও বাধ সাধে স্বপ্নিল। ওর হাত ধরে মুহুর্তে থামায় ওকে। বিরক্ত চোখে রাহিতা পেছন ফিরতেই স্বপ্নিল বলে,

—হেটে যাচ্ছো কেন? আমি তো গাড়ি নিয়েই এসেছি। তোমাদের বাসাতেই যাচ্ছি। গাড়িতে এসো।

বলেই পাশে দাঁড়ানো নিজের গাড়ির কাছে এগিয়ে গিয়ে রাহিতার জন্য দরজা খুলে দেয় স্বপ্নিল। অগত্যা এ মুহুর্তে আর কথা বলতে অনাগ্রহী রাহিতা চুপচাপ গাড়িতে চেপে বসে। তা দেখে স্বপ্নিলও আর দেরি না করে উঠে বসে গাড়িতে। দুজনের মাঝে আর কথা হয়না। দেখতে দেখতেই মিনিট দুয়েকের মাঝে রাহিতাদের বাসায় পৌছে যায় ওরা দুজনে!

_______________

ছেলেপক্ষদের মাত্রই ড্রয়িংরুমে বসিয়ে আপ্যায়ন করা শুরু করছিলেন রাহিতার মা-খালারা। রাহিতার মা খাবার নিতে রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছিলেন এমন সময় বাড়ির ভেতরে রাহিতা ও স্বপ্নিল প্রবেশ করে। স্বপ্নিলকে দেখে বেশ অবাক হয়ে যান রাহিতার মা। বলাবাহুল্য, বড় মেয়েজামাই সচারাচর তাদের বাসায় আসেনা। বিয়ের পর এক-দুই বারই এসেছে। সেই ছেলে আজ হঠাৎ এই সময় বিনা নিমন্ত্রণে হাজির হওয়ায় বিস্মিত হওয়ারই কথা। তাইতো স্বপ্নিলের কাছে এগিয়ে গিয়ে তিনি বলেন,

—আরে বাবা, তুমি হঠাৎ এলে যে? তোমার শরীর এখন ভালো আছে? রাহিতা যে বললো তোমার জ্বর এসেছে।
অতঃপর রাহিতার দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে বললেন,

—জামাই আসবে তুই আমায় বলিসনি কেন? ছেলেটা আসছে আগে থেকে জানালিও না!

মায়ের ধ’মকে এতক্ষণের বিরক্ত মুখ আরেকটু কুচকে যায় রাহিতার। মায়ের কাছেও স্বপ্নিলের জন্য ধমক শুনতে হচ্ছে ওকে! সেভাবেই উত্তর দেয়,

—উনি যে আসবেন তা আমি নিজেও জানতাম না, মা। তাই আমাকে কিছু বলোনা।

রাহিতার কথা শেষ না হতেই স্বপ্নিল শাশুড়ির উদ্দেশ্যে জবাব দেয়,

—এখন বেটার ফিল করছি, মা। ভাবলাম বাসায় যেহেতু আছি, অনেকদিন দেখা হয়নি আপনাদের সাথে তাই দেখা করে আসি।

স্বপ্নিলের কথায় খুশিতে গদগদ হয়ে গেলেন রাহিতার মা। মেয়েজামাই শখ করে দেখতে এসেছে শুনেই তার মন জুড়িয়ে এলো। স্বপ্নিলকে ড্রয়িংরুমের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বললেন,

—তুমি এসেছো বলে অনেক খুশি হয়েছে, বাবা। আসলে আজ রিদিতাকে দেখতে ছেলেপক্ষ আসবে। তাই রাহিতাকে ডেকেছিলাম বাসায়। তোমাকেও আনতে বলেছিলাম পরে শুনি তুমি নাকি অসুস্থ। রাহিতাও কাল পর্যন্ত আসতে চেয়েছিলোনা। পরে কি মনে করে যেন আজ সকালে চলে এলো। যাক! এখন তোমাদের দুজনকে পেয়ে আমরা খুব খুশি। ড্রয়িংরুমে সবাই বসে আসে। ওখানেই বসো। তোমার শশুড়ও আছেন সেখানে।

ড্রয়িংরুমে বসে সবার সাথে পরিচয় হয় স্বপ্নিলের। সবার সাথে কথাবার্তা বলার মাঝে ওর মাথায় সবটা ঢোকে। তার মা যে তাকে বোকা বানিয়ে এখানে পাঠিয়েছে রাহিতার বাড়ি ছাড়ার কথা বলে, সেটাও এখন বুঝে সে। আর এতক্ষণ কিসব পাগলামি করেছে রাহিতাকে হারানোর ভয়ে ওসব মনে করে নিজ মনেই বেশকিছুক্ষণ হাসে স্বপ্নিল। অবশেষে সবকিছু জেনে শান্তিতে শ্বাস নিতে পারছে সে! যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে সেভাবেই তাকায় অদূরে বসে থাকা রাহিতার দিকে।

ছেলেপক্ষের সাথে কথাবার্তা শেষে ফাহিম ও রিদিতার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয় এ মাসের শেষের দিকে। সবকিছু শেষে বিকেলের শেষপ্রান্তে চলে যায় পাত্রপক্ষ। ক্লান্ত রাহিতা সবার আড়ালে একা একা ছাদে চলে আসে। তবে বাকিদের চোখের আড়াল হলেও স্বপ্নিল ঠিকি খেয়াল করে, একিসাথে ওর পিছে যেতে ধরে কিন্তু বাধ সাধে শ্বশুর মশাই। জামাইকে এতদিন পর পেয়ে সৌজন্যতার খাতিরে এটা-সেটা নানান কথা বললেন তার সাথে। ভদ্রতার খাতিরে স্বপ্নিলও উঠতে পারলোনা। শ্বশুড়ের সাথে আলাপ চললো কিছুক্ষণ। অতঃপর সবাই ক্লান্ত হয়ে রুমে চলে গেলো রেস্ট নিতে৷ রাহিতার মা বড় জামাইয়ের জন্য নিজ হাতে রান্না করবেন বলে চললেন রসুইঘরে, সাথে স্বপ্নিলকে যেতে বললেন রাহিতার রুমে। সবাই চলে যাওয়ায়, সুযোগ বুঝে স্বপ্নিল উঠে গেলো ছাদে। রাহিতার সাথে অনেককিছুই সরাসরি কথা বলার দরকার তার আজকে!

______________

সন্ধ্যার আকাশ গাঢ় লাল। সূয্যিমামাও অস্ত যেতে কোমড় বেধে প্রস্তুত। ছাদের কোণঘেঁষে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে রাহিতা। চুলগুলো এলোমেলো উড়ছে। সেদিকে তার খেয়াল নেই, তার মনোযোগ ওই দূরের আকাশে নীড়ে ফেরা পাখিদের দিকে মত্ত! স্বপ্নিল যে কখন এসে পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়েছে তা টেরই পায়নি সে। আনমনে পাশ ফিরতেই ওর দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থাকা স্বপ্নিলের দিকে চোখ পড়ে তার। এ চোখের দৃষ্টি রাহিতার অচেনা নয়। যবে থেকে স্বপ্নিলের চোখ পড়তে শিখেছে সে, তবে থেকেই রাহিতা জানে এ মানুষটা আনমনেই তার মায়ায় বাধা পড়েছে। তার মতোই প্রেমের সাগরে পাড়ি জমিয়েছে। তবু কখনো মুখে না বলায় রাহিতার অভিমান হয়। মূলত সে অভিমানের রেশ ধরেই ওর আজ এ বাড়িতে চলে আসা।

একটি নিঃশ্বাস ফেলে রাহিতা মনোযোগ দিয়ে তাকায় এবার স্বপ্নিলের পানে। ওর হলদেটে ফর্সা মুখে সূর্যের লালিমা এসে পুরুষালি সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ মানুষটাকে বিগত কত বছর ধরেই তো চিনে রাহিতা! অথচ সত্যি বলতে, সে কখনো ভাবেইনি এ মানুষটা একদিন ওর হবে! স্বপ্নিলকে ও ভালোবেসেছিলো ভালোবাসা বুঝতে শুরু করার আগে থেকেই। কিশোরী বয়সে মনে যখন প্রথম প্রণয় হাওয়া লেগেছিলো ঠিক তখনি তার জীবনে আগমন ঘটে স্বপ্নিল নামক এই স্বপ্নপুরুষের। সেদিনের কথা মনে হতেই সূক্ষ্ম হাসির রেখা খেলে যায় রাহিতার ঠোঁটে। খানিকবাদে স্বপ্নিলের স্পর্শে ধ্যান ফিরে আসে ওর। ওর মুখে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে খেলতে থাকা অবাধ্য চুলগুলোকে আলতোহাতে ঠিক করে দিতে দিতে স্বপ্নিল প্রশ্ন করে,

—হাসছো কেন?

রাহিতা থমকায়। কাল্পনিক জগত ছেড়ে বাস্তবে ফিরে আসে। এতক্ষণ আবেগঘন চোখে স্বপ্নিলকে দেখছিলো ভেবে লাজুকলতায় ছেয়ে যায় তন। সে তো অভিমান করেছে স্বপ্নিলের উপর! তবে কেন নরম হচ্ছে? না, ওর নরম হওয়া যাবেনা। স্বপ্নিল মনের কথা প্রকাশ না করা পর্যন্ত অভিমানের আড়ালে নিজের প্রেমিকা সত্ত্বাকে লুকিয়ে রাখতে হবে।। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় রাহিতা।
স্বপ্নিল পুনরায় বলে,

—এভাবে আমায় না বলে এলে কেন? আমি কত টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম তুমি জানো?

স্বপ্নিলের প্রশ্নে রাহিতা আড়চোখে তাকায়। গলার স্বর যথেষ্ট রুক্ষ করে বলে,

—বলে এলেও বা কি হতো? আমার থাকা, না থাকায় আপনার কি কোনো যায় আসে?

স্বপ্নিল মুহুর্তে রুষ্ট হয়। অন্তত ওর কুচকে যাওয়া ভ্রুযুগল তো তাই বলছে! দাতে দাত চেপে বলে,

—যায় আসে। অনেক বেশিই যায় আসে।

—কেন আসবে? আমি আপনার জীবন থেকে চলে গেলেও কিচ্ছু হবেনা। আপনি আবার আমায় ভালোবাসেন নাকি!

ঠাট্টার সুরে বলে রাহিতা। অতঃপর হাসে, যেন খুব বেশি মজার কোনো কৌতুক বলে ফেলেছে। ওর এমন আচরণে স্বপ্নিলের রা’গ হয়। মুহুর্তেই কদম এগোয়, শরীর ছুইছুই হয় দুজনের। রাহিতা কিছু বুঝে উঠার আগেই কোমড় জড়িয়ে টেনে নেয় নিজের কাছে। বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করতেই হাসি থেমে যায় ওর। দু চোখে ভর করে বিস্ময়। সে মায়াভরা চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নোয়ায় রাহিতার মুখের কাছে। দুজনের নিঃশ্বাস একে-অপরের গায়ে আ’ছড়ে পড়ে। অস্তমিত সূর্যের লালিমাকে সাক্ষী রেখে স্বপ্নিল প্রেয়সীর চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট কণ্ঠে ভালোবাসার স্বীকৃতি দেয়। স্বাগতিক কণ্ঠে বলে,

—ভালোবাসি! যতটা তুমি জেনেছো, তার চেয়েও বেশি। যতটা তুমি চেয়েছো, তার চেয়েও অনেক বেশি। তুমি আমার আধার রাতের পূর্ণিমা, রাহি। আমার জীবন থেকে হারিয়ে যেয়োনা কখনো৷ আমি তোমায় হারাতে চাইনা। একটু ভরসা করে মন বিনিময় করবে আমার সাথে? কথা দিচ্ছি, খুব যত্নে আগলে রাখবো তোমার মনকে নিজের বক্ষপিঞ্জরে!

#চলবে

#মন_বিনিময়
#পর্বঃ৪৫ (২য় অংশ)
#লেখনীতে- তাসফিয়া হাসান তুরফা

স্বপ্নিলের কথায় রাহিতা অবাক হয়। বেশ অনেকক্ষণ বিস্মিত নজরে চেয়ে রয়। কিছুক্ষণের মাঝে অনুভব করে নয়ন বেয়ে গড়িয়ে পড়া দু’ফোটা নোনা অশ্রুজল! কিন্তু সে কাদছে কেন? সে তো এ মুহুর্তেরই অপেক্ষায় ছিলো এতগুলো দিন, বিগত কয় মাস! অথচ আজ প্রাপ্তির পর সুখগুলো দু’চোখের অশ্রু হয়ে ঝরে পড়ছে কেন! রাহিতা ভেবে পায়না। এর মাঝে অনুভব করে স্বপ্নিলের ওষ্ঠপুট নিজ দায়িত্বে শুষে নিয়েছে সে জল। আবেগে মত্ত রাহিতা মায়াভরা চোখে স্বপ্নিলের দিকে তাকাতেই দুই ভ্রু নাচিয়ে ঠাট্টার ছলে স্বপ্নিল বলে,

—কি হলো, তুমি কাদছো কেন? আমি তো মজা করছিলাম। আমি তোমায় আবার ভালোবাসি নাকি?

এবার স্বপ্নিলের কথায় রাহিতা হেসে ফেলে। মেকি রাগ দেখিয়ে চিম’টি কা’টে পেটে। তৎক্ষণাৎ ওকে ছে’ড়ে দেয় স্বপ্নিল। রাহিতা ভ্রু কুচকে বলে,

—সবকিছুতে শুধু ফাজলামি, তাইনা? আপনি আর ভালো হবেন না?

স্বপ্নিল বুকে দুই হাত গুজে দাঁড়ায়। রাহিতার পানে চেয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বলে,

—কি হবে ভালো হয়ে? তুমি কি আমায় ভালো থাকতে দাও কখনো? আসলে তোমাকে না এ কথাটা বলাই উচিত ছিলোনা আমার!

স্বপ্নিলের কথায় রাহিতা প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকায়। সে কি বলছে বুঝার চেস্টা করে জিজ্ঞেস করে,

—এভাবে বলছেন কেন? আমি কি করেছি?

এবার যেন স্বপ্নিল সুযোগ পায় এতদিনের মনের মাঝে পুষে রাখা রা’গ কমানোর। এতদিন মনের মাঝে চেপে রাখা ক্রো’ধ যেন হুট করেই জ্ব’লে উঠে বুকে। দু’চোখে আগু’নের ফুল্কি জ্বা’লিয়ে সে হঠাৎ দ্রুতপায়ে এগিয়ে আসে রাহিতার দিকে। এভাবে হুট করে স্বপ্নিল রে’গে যাওয়ায় রাহিতা ভড়কায়! কিন্তু কিছু বলার আগেই স্বপ্নিল দু’হাতে শক্ত করে চেপে ধরে ওর বাহু। তে’জী কণ্ঠে বলে,

—কি করেছো বুঝোনি? নাকি এটাও আবার আমাকেই বুঝিয়ে বলতে হবে?

—আপনি হঠাৎ এভাবে রে’গে যাচ্ছেন কেন? এতক্ষণ তো ঠিকি ছিলেন! কি হয়েছে বলুন? আমি আসলেও বুঝতে পারছিনা।

চিন্তিত কণ্ঠে প্রশ্ন করে রাহিতা। ওর কথায় স্বপ্নিল ক্ষণিকের জন্য থামে। বারকয়েক শ্বাস নিয়ে নিজেকে কিছুটা শান্ত করে ঠান্ডা গলায় বলে,

—বেশ! তবে বলছি শুনো। রাহিতা, তুমি তো একটা ম্যাচিউর মেয়ে৷ নিশ্চয়ই তুমি এতটাও অবুঝ নয় যে আমার মনে এখন তোমার জন্য কি অনুভুতি চলে সেটা এতদিন বুঝতে পারোনি? আমি জানি ঠিকি বুঝেছো এবং হয়তো অনেক আগে থেকেই বুঝতে পেরেছো। তবে কেন তুমি আমার সাথে এরকম করো? এই যেমন ধরো, যেদিন আমি বিদেশ চলে যাই। যাওয়ার আগে আমি তোমায় ইনডাইরেক্টলি বুঝিয়ে দিয়ে গেছি আমি তোমার জন্য কি ফিল করি। তুমি কি সেদিন আমার ভালোবাসা বুঝোনি? ভালোবাসা ব্যতীত তোমায় ছোঁয়ার অধিকার কি আমি দেখিয়েছি আগে কখনো?

রাহিতা মাথা নাড়ে। সেদিন ফ্লাইটে উঠার আগে ওটাই প্রথমবার স্বপ্নিলের তরফ থেকে ভালোবাসার ঘনিষ্ঠ স্পর্শ ছিলো ওদের মাঝে। এর আগে সে কখনো এভাবে নিজের অধিকার দেয়নি ওর উপর।
রাহিতা কিছু বলবে তার আগে স্বপ্নিল আবারো বলতে শুরু করে,

—তবুও তুমি কি করলে? এই যে আমি এতদিন নিজের মনের সাথে লড়াই করে, নিজের অনুভুতিদের স্বীকার করে প্রথমবার যেই না তোমার দিকে কদম বাড়ালাম, ওমনি তুমি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে? দু-দুটো সপ্তাহ ধরে কোনোরুপ যোগাযোগই করলেনা আমার সাথে! এটা কি বেশি বেশি ছিলো না? আমি চলে আসার আগে তোমায় কতবার বলেছিলাম, আমাদের মধ্যে যেন কোনোকিছু না বদলায়। অথচ তুমি কি করলে? আমার ভয়কে সত্যে রুপান্তর করে আমার থেকে দূরত্ব বাড়ালে! এ ক’দিন একা একা বিদেশের মাটিতে আমি কিভাবে ছিলাম, একটাবারও ফোন দিয়ে খোজ অব্দি নিলেনা আমার!

—আমি প্রতিদিন আপনার খোজ নিয়েছি, বিশ্বাস করুন! মা যখনি আপনার সাথে কথা বলতো ফোনে আমি সবসময় তার পাশেই ছিলাম, আপনার ব্যাপারে না জেনে, আপনার কণ্ঠ না শুনে আমি কোনোদিন ঘুমোতে যাইনি!

স্বপ্নিলের কথা শেষ না হতেই ওকে বাধা দিয়ে এসব বলে উঠে রাহিতা। এতক্ষণ স্বপ্নিলের কথা শুনে ভেতরে ভেতরে সে অপরাধবোধে দ’গ্ধ হচ্ছে ভীষণভাবে! আসলেই তো। সে তো এভাবে কখনো ভেবেই দেখেনি! নিজের কস্টটা ভাবছিলো শুধু কিন্তু স্বপ্নিলের অনুভুতি নিয়ে ওভাবে মাথা ঘামায়নি!
নিশ্চয়ই মানুষটা কস্ট পেয়েছিলো ভীষণ? ইশ! কেন যে সে এসব ছেলেমানুষী করতে গেলো! রাহিতার বড্ড রা’গ হয় নিজের উপর। বিচলিত রাহিতার দুঃখের মাঝেই স্বপ্নিল উদাস কণ্ঠে বলে,

—অন্য কারও থেকে খোজ নেওয়া আর নিজে থেকে খোজ নেওয়ার মাঝে বিস্তর পার্থক্য আছে, রাহিতা। আমার বউয়ের অভাব অন্য কেউ পূরণ করতে পারবেনা। তুমি ও মা মিলে এ ক’দিনে আমার সাথে যা কিছু করেছো আমি তা ভুলতে পারবোনা। আজকে তুমি আমায় কোনোকিছু না বলে এখানে চলে এসেছো, ফোনটাও ধরছিলেনা আমার। কাল রাতেও ঠিকমতো কথা বলোনি আমার সাথে। একদিকে এই টেনশন। আবার অন্যদিকে যখন মা-কে জিজ্ঞেস করলাম যে তুমি কই গেছো, তখন মা আমায় কি বললো তুমি জানো?

স্বপ্নিলের প্রশ্নে রাহিতা মাথা নাড়ে। অর্থাৎ, সে জানেনা৷ স্বপ্নিল তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে রয় কিছুক্ষণ৷ শক্ত চোয়ালে বলে,

—মা বলেছে, তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেছো। আমার কাছে আর ফিরবেনা কখনো।

রাহিতা প্রকটভাবে চমকায়! দিলারা বেগম যে স্বপ্নিলকে এটা বলবেন, সে কস্মিনকালেও ভাবতে পারেনি৷ কিন্তু, তিনি হঠাৎ এভাবে বললেন কেন? রাহিতা ভাবে আনমনে৷ ওর ভাবনার মাঝেই স্বপ্নিল আবারো মেঘমন্দ্র কণ্ঠে গ’র্জে উঠে বলে,

—কি হয়েছে? এটুকুতেই শ’ক খেলে নাকি? পুরোটুকু তো বলিই নি এখনো৷ সেটুকুও শুনো।

অতঃপর স্বপ্নিল সবকিছু খুলে বলতে শুরু করে। সকালে উঠার পর থেকে সে কি কি ধা’ক্কার সম্মুখীন হয়েছে, কতটা মানসিক চাপে পড়েছে তার সবটুকুই বিস্তারিত বিবরণ দেয়, কোনোকিছুই লুকোয়না রাহিতার নিকট৷ একে একে এতকিছু স্বপ্নিলের মুখে শুনে রাহিতার মাথা ঘুরায়। সে উপলব্ধি করে স্বপ্নিল কেন তখন ফাহিমের সাথে ওরকম আচরণ করেছে। আর কেনই বা এভাবে বিনা নোটিশে ব্যধি’গ্র’স্থের মতো দ্বিকবিদিক ভুলে ছুটে চলে এসেছে ওর দোরগোড়ায়! সবটাই যেন এখন স্বচ্ছ জলের ন্যায় ঝকঝকে পরিষ্কার। ব’জ্রা’হত রাহিতার গলা শুকায়, স্বপ্নিলের চোখে চোখ রাখতেও যেন লজ্জা পায়। জিব দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে স্বপ্নিলকে বুঝানোর জন্য বলে,

—সত্যি বলছি স্বপ্নিল, আপনাকে ছেড়ে আসার কোনো ইচ্ছেই আমার ছিলোনা। যেদিন মা আমায় ডিভোর্সের কথা বলে আমি সেদিনই স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি আপনাকে ছাড়ার হলে আমি সেদিনই ছাড়তাম যেদিন আপনার অতীতের কথা জেনেছি, যখন আপনি আমায় ভালোবাসতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর যেদিন বিদেশ থেকে এলেন ওদিন রাতেই মা আমায় ফোন করে বলে রিদিকে দেখতে ছেলেপক্ষ আসবে, আমি যেন সকাল সকাল চলে আসি। তারপর তো বৃষ্টিতে ভিজে আপনার জ্বর হলো, তাই সকালে ডাকিনি আর ইচ্ছে করে। পরে মা-কে জানিয়ে চলে এসেছি। কিন্তু মা যে আপনাকে এসব বলবে আমি ভাবতেও পারিনি। কেন যে উনি বললেন বুঝলাম না! আমার মনে হয় উনি হয়তো দেখতে চাইছিলেন আমার চলে যাওয়ার কথা শুনে আপনার উপর কিরকম প্রভাব পড়ে…

—জাস্ট শাট আপ, রাহি! কি শুরু করেছো তোমরা আমায় বলবে? আই থিংক তোমাদের কারও কাছেই আমার ফিলিংস এর কোনো মূল্যই নেই আসলে। যার যখন মন চায় সেভাবেই আমার অনুভূতি নিয়ে খেলো তোমরা। অবশ্য এটা নতুন নয়। আমি যাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি, তারাই আমার সাথে সবসময় এরকম করে। মায়ের কথা আর না-ই বলি। বাবা হারানোর পর থেকে আমি কখনোই মায়ের অবাধ্য হইনি। তার কস্টগুলো চোখের সামনে দেখেছি বলে কখনোই মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করা তো দূর, তার কোনো কথায় না বলিনা। অথচ আমার মা কি করে? সবসময় আমার সাথে এরকম করে। অবশ্যই এগুলো আমার খুশির জন্য করেন কিন্তু শুরুতে কস্টটা তো আমিই পাই। ঠিক আছে, তাও না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু তুমি?
তুমি তো জানতে আমায় তাইনা? যেদিন থেকে তোমায় আপন মেনে আমাদের সম্পর্ককে সুযোগ দিয়েছি, সেদিন থেকে আর কোনো কিছুই লুকোইনি তোমার থেকে। বন্ধুত্ব থেকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমরা কতদূর এগিয়েছি এটা আমাদের চেয়ে ভালো অন্য কেউ তো জানেনা, তাইনা? আমি বারবার তোমায় বলছিলাম, রাহিতা আমায় একটু সময় দাও। তোমরা সবাই জানো আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি, পাগলের মতো ভালোবাসি কিন্তু তোমাদের কারও সম্ভবত ধৈর্য হচ্ছিলোনা এজন্যই আজ আমার সাথে এমন করলে। তাই আমিও এভাবে তাড়াহুড়ায় নিজের অনুভুতি ব্যক্ত করতে একপ্রকার বাধ্য হলা…

স্বপ্নিল কথা শেষ করার আগেই থেমে যায়। হঠাৎই ওর পুরুষালি ওষ্ঠে রাহিতার উষ্ণ ছোয়া পড়তেই কথা আপনাআপনিই বন্ধ হয়ে যায়! স্বপ্নিল কিছুক্ষণের জন্য থমকে যেতেই রাহিতা লাজুক ভংগিতে সরে আসতে ধরে, তবে স্বপ্নিলের জন্য তা সম্ভব হয়না। দৃঢ় হস্তে টেনে নেয় রাহিতাকে নিজের কাছে। গোধূলির অস্তমিত সূর্যের সাথে তাল মিলিয়ে ওদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দুজনের অনুভূতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। পরম এ ভালোবাসার মুহুর্ত শেষ হয় রাহিতার মৃদু ধাক্কায়। বাধা পেয়ে স্বপ্নিল সরে যায়। দুজনে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেয়। রাহিতা কিছুক্ষণ হাসফাস করলেও স্বপ্নিল নির্বিকার।
খানিকক্ষণ ওর দিকে চেয়ে থাকে রাহিতা। অতঃপর আলগোছে এগিয়ে এসে স্বপ্নিলের গালে হাত রাখে। মায়াভরা চোখে ওর চোখের দিক চেয়ে বলে,

—অনেক বলেছেন, এবার তো থামুন! আপনার সব কথা শুনেছি আমি, সবকিছুই বুঝেছি। সব প্রশ্নের উত্তরও দেবো। এখন দেখুন অন্ধকার হয়ে গেছে। মা বলে, মাগরিবের পর ছাদে থাকতে নেই। এছাড়াও সবাই জানে আমরা রুমে। ওখানে না পেলে দেখা গেলো পরে আবার এখানেই খুজতে চলে আসবে! এখন নিচে যাই প্লিজ?

স্বপ্নিল জবাব দেয়না। চুপচাপ তাকিয়ে রয়। অতঃপর সেই মোহগ্রস্থ স্বপ্নিলের হাত ধরে নিচে নামে রাহিতা। মেয়েটার চোখেমুখে লেগে আছে স্পষ্ট লাজুকতার আভাস৷ আর স্বপ্নিল? সে তো চোখভরা মুগ্ধতা নিয়ে ঘোর লাগানো দৃষ্টিতে একধ্যানে চেয়ে আছে রাহিতার দিকে! এ প্রথম লাজলজ্জা ভুলে রাহিতাও নিজ থেকে কদম বাড়িয়েছে ওর দিকে।
দুজন নিচে নেমে গেলো। রাতের আকাশ প্রজ্জ্বলিত হয়ে দ্যুতি ছড়ালো চন্দ্রিমা। মনে হলো যেন আঁধার দুনিয়াকে আলোকিত করে সে নিজেও হাসছে এই কপোত-কপোতীর মন বিনিময় এর সাক্ষী হতে পেরে!

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ