রোমান্টিক_অত্যাচার_৮লেখিকাঃ #Israt_Jahanধারনাঃ #Kashnir_Mahiমাহিঃ আমার এমন ফিলিং হচ্ছে কেনো মনে হচ্ছে কিছু একটা হারিয়ে ফেলছি।যেমনই লাগুক আমাকে আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে দুর্বল হলে চলবেনা। আমি আর আজকে কোনো কাজ করতে পারলামনা। কোনোভাবে সময়টা পার করে দুপুরে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে সোজা ঘরে চলে আসলাম।মাঃ মাহি তুই এমন সময় বাসায়? কোনো সমস্যা হয়েছে অফিসে? সকালেই বা কি হয়েছিল?
আমিঃ তেমন কিছুনা urgent কাজ ছিল তাই ডেকে পাঠিয়েছিল।
মাঃ তুই কিছু লুকাচ্ছিস না তো? তুই তো আমার কাছে কিছু লুকাসনা।খুলে বল আমাকে কি সমস্যা।আজ দুইদিন দেখছি তুই গভীর চিন্তায় ডুবে থাকিস।
আমিঃ সত্যি বলছি কিছু হয়নি মা। আর শোনো আজ সন্ধ্যায় স্যারের বাসায় যেতে হবে। জাপান থেকে কিছু ক্লাইন্ট আসবে অনেক বড় একটা ডিল ফাইনাল করার জন্য সেই উপলক্ষেই একটা পার্টি থ্রো করেছে উনি। সেখানে আমাকে থাকতে হবে। আর তাই বলছি ফিরতে একটু লেট হবে তুমি টেনশন করবেনা।
মাঃ জাপান?? এই জাপানেই আমার জীবনের সব থেকে সুখের স্মৃতি আর সবথেকে ভীতিকর স্মৃতি রয়েছে। (দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে)
আমিঃ কি বললে তুমি?
মাঃ না কিছুনা। তুই যা গোসল করে খেতে আয়।
আমিঃ দাড়াও মা তুমি কিছু একটা লুকাচ্ছো আমাকে সত্যি করে বলো মা কি বললে তুমি? কি হল বলো?
মাঃ হুম বলছি। আমার আর তোর বাবার বিয়ের পর তোর বাবা আমাকে দেশে রেখে জাপান চলে যায় বিজনেস এর ভিসায়। কিন্তু আমি একা থাকবো বলে একটা বেবি দিয়ে যেতে চেয়েছিল। তোর বাবা ভেবেছিল ওখানে যাওয়ার পর সুখবরটা শুনবে। কিন্তু তিনি নিরাশ হয়েছিল কারণ কনসিভ করতে পারিনি আমি। এদিকে ওখানে যাওয়ার পর অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছিলো ওর। কোনো কিছু করতে পারছিলনা কোনো কাজও খুজে পাচ্ছিলনা। তখন একজন প্রবাসীর সাথে দেখা হয় ওর।তাকে সবকিছু খলে বলে। একটা সময় তার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় তোর বাবার।উনি একটা ছোটোখাটো কাজের ব্যবস্থা করে ওকে। ওনার নাম ছিল আশরাফ চৌধুরী। আশরাফ ভাইয়ের কথা আমি আজও ভুলতে পারবোনা। সারাজীবন ঋণী হয়ে থাকবো ওনার কাছে। তারপর তোর বাবার আস্তে আস্তে কিছু পুঁজি বৃদ্ধি পায়। তখন আশরাফ ভাই ওকে প্রস্তাব দেয় দুজনে একসাথে একটা বিজনেস শুরু করবে। তোর বাবাও রাজি হয়ে যায়। একটা সময় বিজনেসটা অনেক বড় হয়।
সেখানে অনেক বাঙ্গালি কাজের সুযোগ পায়। কিছু চাইনিজ ও সেখানে জয়েন করে। এরভেতর তোর বাবা দেশে আসলো আমার জন্য। অনেক চেষ্টা করলাম আমরা কিন্তু কোনো ভাবেই বেবি নিতে পারলামনা। ডাক্তারের কাছে গেলাম ডাক্তার বললো তোর বাবাকে আমার যে সমস্যা সেটা ঠিক হবে শুধুমাত্র ওর সাথে একটানা ৬ মাস/ ১ বছর একসাথে থাকতে পারলে। তাই ও ঠিক করলো আমাকে ওখানে নিয়ে যাবে। আমি ওখানে যাওয়ার পর আশরাফ ভাইয়ের ফ্যামিলি ও আমাদের কাছে চলে আসলো। আমরা সবাই একসাথে থাকা শুরু করলাম।তার ঠিক সাড়ে সাত মাস পর তুই আমার গর্ভে এলি।অনেক খুশি হয়েছিলাম আমরা। তুই হওয়ার পর তোর বাবার বিজনেসে অনেক সাফল্য আসতে শুরু করলো। আমার নামের ১ম অক্ষর দিয়ে তোর বাবা তোর নাম রাখলো মাহি। অনেক ভালোই যাচ্ছিল সময় গুলো।আশরাফ ভাইয়ের একটা ছেলে ছিল। ভারী মিষ্টি ছিল ও সবসময় তোর কাছে থাকতো। তোদের দুজনকে আমিই দেখাশুনা করতাম। আশরাফ ভাইয়ের বৌ ও বাইরে চাকরি করতো। তাই আমাকেই দেখতে হতো ওকে। ও খুব বাদ্ধ ছিল আমার। মামনি বলে ডাকতো আমাকে।ওর যখন ১১ বছর বয়স তখন তোর আর ওর বাবা ঠিক করলো তুই বড় হলে তোকেই ওনার ছেলের বৌ করবে। আস্তে আস্তে সুখের সময় গুলো পার হয়ে যাচ্ছিল। তোর বাবার ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। অনেক রাত করে বাড়ি আসা, আমার সাথে সবসময় ঝগড়া করা এমনকি কিছু কিছু রাত বাড়িতেও আসতোনা।এদিকে ওদের বিজনেসেও অনেক প্রবলেম শুরু হলো……………
আমিঃমা প্লিজ আর ভালো লাগছেনা শুনতে। ঐ লোকটার কোনো কথাই আমার শুনতে ইচ্ছা হয়না। এবার চুপ করো। আমি আর শুনবোনা।
মাঃ আমি কি বলতে চেয়েছি তুই তো শুনতে চাইলি।
আমিঃ হ্যা। এখন আমার শোনার সাধ মিটে গেছে।আমি গোসলে গেলাম।
মাঃ কিন্তু একটা বিষয় আজও আমার কাছে অজানা। সেদিন আশরাফ ভাই কিভাবে জানতে পারলো যে আমরা বিপদে পরেছি? আর কি বলতে চেয়েছিল আমাকে? ঐ দিন রাতে আশরাফ ভাইকে উপরওয়ালা না পাঠালে আমি মাহিকে নিয়ে আর বেঁচে ফিরতে পারতামনা দেশে।( একাই কথা গুলো ভাবছিল।)
(ইসস মাহি যদি একবার পুরো কথাগুলো শুনতো তাহলে আজকে ওর কাছে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যেতো।আর বিরক্তিকর নিয়ে কথাগুলো না শুনলে এটাও ওর খেয়ালে আসতো যে আশফিও জাপান থাকতো)
মাহিঃ মা খেতে দাও খিদে পেয়েছে।
মাঃ আমি খাবার বেরেছি তুই আয়।
মাহিঃ আমি খাওয়া শেষ করে বসে একটু টিভি দেখছিলাম মুডটা ভালো করার জন্য। দেখতে দেখতে কখন যেনো সোফায় ঘুমিয়ে পরেছি। সন্ধ্যা হয়ে হয়ে গেছে মা ডাকাডাকি করছে
মাঃ তোর নাকি পার্টিতে যাওয়ার আছে তো রেডি হবি কখন আর যাবি কখন। ক’টা বাজে দেখেছিস?
মাহিঃ মা তুমি আমাকে আরও আগে ডাকবেনা? অলরেডি সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
মাঃ আমি তো তোকে কখন থেকেই ডাকছি। যা তাড়াতাড়ি যা।
মাহিঃ আমি গিয়ে তাড়াহুরো করে ফ্রেশ হয়ে একটা ড্রেস পরলাম। সাজার সময়ও নেই আর মুডও নেই তাই না সাজার মত করে সেজেই বেরিয়ে পরলাম। গিয়ে দেখলাম আজকে তো কালকের থেকেও আরো বেশি জাঁকজমক করে সাজিয়েছে। মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ি। ভেতরে ঢুকে দেখলাম অফিসের সবাই চলে এসেছে শুধু আমিই লেট। ওনাকে কোথাও দেখছিনা। উনি কোথায়?
বলতে বলতেই হঠাৎ আমার পাশে এসে দাড়ালেন। আমার পা থেকে মাথা ওবদি দেখছে। এভাবে কি দেখছে বুঝতে পারলামনা। আমি নিজেকে একবার ভালো করে দেখলাম কোনো সমস্যা আছে নাকি। কৈ কোনো সমস্যা নেই তো তাহলে উনি এভাবে রেগে তাকিয়ে আছে কেনো?
আশফিঃ এটা কিভাবে এসেছো তুমি? কোনো চয়েস নেই তোমার? এতটা unsmart কেনো তুমি? কোথায় কিভাবে আসতে হয় জানোনা?
মাহিঃ মানে কি? আমি খ্যাত??
কি সমস্যা আছে এখানে?
আশফিঃ কি?? খ্যাত মিন?
মাহিঃ উফফ উনি তো আবার ভদ্র মানুষ এগুলো বোঝেনা। খ্যাত মিন….!! খ্যাত মানে হচ্ছে…. কি বলি?? খ্যাত মানে হচ্ছে আনস্মার্ট।
আশফিঃ ওহহ…তাই বলো। কি মুখের ভাষা?? যাইহোক এখানে দাড়াও আমি আসছি।
মাহিঃ হুহ?নিজে যেনো প্রাইম মিনিস্টার!!
কিছুক্ষণ পর দুজন মহিলা আসলো।
-ম্যাম আমাদের সাথে ভেতরে আসুন
-ভেতরে যাবো মানে? কোথায় কেনো যাবো?
-স্যার আপনাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে রেডি করে দিতে বলেছে।
-রেডি মানে? আমি তো রেডিই। এই আমি কোথাও যাবোনা যাও তোমরা।
আশফিঃ এটাকে রেডি বলে? সবাইকে দেখো আর নিজেকে দেখো তাকিয়ে। একটা পার্টিতে আসার জন্য কতটুকু সাজগোজ প্রয়োজন সেটাও তোমার জানা নেই?
মাহিঃ ওনার জন্যই তো আমার সাজগোজের মুড নষ্ট হয়ে গেছে। অসহ্য।
এই শুনুন আমি যাবোনা যাবোনা যাবোনা। আমি এভাবেই অনেক কমফর্ট ফিল করছি।
আশফিঃ বাড়িতে বাইরে থেকে অনেক গেস্ট আসবে। আর তাদের সামনে তুমি আমার পি.এ হয়ে যদি এরকম তোমার ভাষায় খ্যাত হয়ে যাও তাহলে আমি সেটা মেনে নিবোনা। তাই ভালোভাবে বলছি ওদের সাথে যাও।( হাত ধরে টেনে দূরে নিয়ে গিয়ে বললো)
মাহিঃ ওনার কথাগুলো শুনে আমি অনেক ইনসাল্ট ফিল করছিলাম। আমি মোটেও খ্যাত না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে ওদের সাথে গেলাম।ওরা আমাকে একটা রুমে নিয়ে আসলো। রুমটা বেশ বড়। ওরা একটা গর্জিয়াস শাড়ি পরাতে আসলো আমাকে।
-এই এটা কি শাড়ি কেনো? আমি এসব শাড়ি টারি পরতে পারবোনা।
-ম্যাম স্যার এটা আপনাকে পরতে বলেছে। প্লিজ পরুন না হলে আমাদের এসে খুব বকবে।
আমিঃ এগুলো উনি একটু বেশি বেশি করছেনা????
বেশ কিছুক্ষন পর আয়নাই নিজেকে দেখলাম
-ইইই তোমরা এটা কি সাজিয়েছো? সাজ তো দেখে মনে হচ্ছে আজকে আমার বিয়ে।
আশফিঃ আমি ওদের এভাবে সাজিয়ে দিতে বলেছি। এ কি নেকলেস টা কোথায়? কি হলো তোমাদের কাছে একটা নেকলেস দিয়েছিলাম ওকে পরানোর জন্য সেটা কোথায়?(চিৎকার করে রেগে বললো)
-স্যার এইযে এখানেই আছে।আসলে বিছানার ওপর ছিল তো খেয়াল করিনি
shut up ? যাও এখান থেকে তোমাদের আর কিছু করতে হবেনা।
মাহিঃ উনি একটা নেকলেস বের কররো বক্স থেকে। একি
এটা তো ডায়মন্ড নেকলেস।এটা কেনো উনি আমাকে পরাবে?
উনি ওটা নিয়ে
আমার কাছে আসছে। আমাকে যখন পরাতে আসলো আমি পিছু সরে আসলাম।
-এটা আমি পরতে পারবোনা। কেরো পরাচ্ছেন এটা আমাকে?
আশফিঃ আচ্ছা তোমার কি সব বিষয় নিয়ে ঝামেলা না করলেই হয়না? পরতে বলেছি পরবা ব্যাস আর কোনো কথা শুনতে চাইনা আমি। এটা বলেই ওর হাত ধরে টেনে এনে পরিয়ে দিলাম। এটা পরে ওকে এখন পরিপূর্ণ লাগছে।
-যাও এখন বাইরে যাও।
মাহিঃ এটা কি খুব দরকার ছিল? আজব মানুষ একটা। আমি বাইরে আসলাম। সবাই অনেক ডান্স করছে। আমি ওদের নাচ দেখছি দাড়িয়ে।মুড ঠিক থাকলে এতক্ষণ আমিও গিয়ে নাচা শুরু করে দিতাম।উনি আমার পাশে এসে দাড়ালো।
আশফিঃ কি নাচতে ইচ্ছে করছে?
মাহিঃ না। আমি চলে আসলাম ওনার কাছ থেকে। উনি সামনে চলে গেলো।
– আরে মাহি তোমাকে তো অসাধারণ লাগছে। মনে হচ্ছে আজকেই বিয়ে করে ফেলি।(আসিফ)
মাহিঃ চুপ করো তো কি বলছো এসব?
-সত্যিই বলছি। আচ্ছা কমপক্ষে একটা সেলফি তো নিতে দাও।
মাহিঃ আমি হঠাৎ সামনে খেয়াল করলাম উনি আমার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে আর আসিফের দিকে যেভাব দেখছে তাতে মনে হচ্ছে বেচারাকে আজকেই গোরোস্থানে পাঠাবে। আমি ভয়ে আসিফকে বললাম,না থাক কোনো প্রয়োজন নেই ওদিকে চলো সবার সাথে গিয়ে কথা বলি। আমি সবার সাথে কথা বলছি হাসাহাসি করছি। আসিফ আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিল। ওনারদিকে চোখ পরলো। উনি এদিকেই আসছে।ভয়ে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এসে সবার সাথে একটু কুশলাদি বিনিময় করলো।
আশফিঃ মাহি আমার সাথে এসো।
-আমি গেলাম।
– অনেক হাসাহাসি করেছেন এবার চলেন আমার সাথে ওরা চলে এসেছে।
-তারপর আমরা ওদের সাথে কথা বললাম।তারপর ডিলটাও কমপ্লিট করলাম।
আমি ওদের সাথে কথা বলছি উনি চলে গেলেন।
আশফিঃ attention guys. আমার এই পার্টিতে আসার জন্য সবাইকে ম্যানি ম্যানি থ্যাংকস। আজকের এই পার্টিটা দুটে অনারে দেওয়া। একটা তো আপনারা আগে থেকেই জানেন আর একটা কারন আছে সেটা হল আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে আমার life partner এর পরিচয় করিয়ে দেবো। ইনফ্যাক্ট তার সাথে আজকে আমার engagement.
মাহিঃ ও। লাইফ পার্টনার ও খোঁজা হয়ে গেছে? আর আমার সাথে কি নাটকটাই না করলো। উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো?
আশফিঃ নিশ্চই চমকে গেছো। আরো চমকাবে। ধৈর্য্য ধরো।
মাহিঃ ছেলে মানুষ জাত টাই খারাপ। কি ব্যাপার উনি আমার দিকে এগিয়ে আসছে কেনো?
আশফিঃ আজ থেকে সবাই জানবে মাহি শুধু আশফির।আমি ওর কাছে এসে হাত ধরে সবার সামনে নিয়ে এলাম। ও আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ওকে নিয়ে সবার সামনে দাড়ালাম।
মাহিঃ আমি স্বপ্নেও ভাবিনি উনি আমার সাথে এটা করবে। এর জন্যই উনি আমাকে বলেছিল আমাকে আর অফিসে আসতে হবেনা।উনি ওনার সবটুকু লিমিট ক্রস করেছে আমাকে না জানিয়ে এতকিছু করে ফেলেছে। এর ফল কি মারাত্বক হবে সেটা ওনাকে আমি এখন বোঝাবো।
আশফিঃ মাহি হাতটা দাও। কি হলো হাতটা দাও।
……………………..…….
মাহি সবাই তাকিয়ে আছে হাত টা দাও বলছি।
মাহিঃ উনি নিজেই আমার হাতটা নিয়ে পরিয়ে দিতে চাইলো আমি হাতটা সরিয়ে নিলাম।
– যথেষ্ট হয়েছে।(চিৎকার করে) আপনি একদম আপনার সীমার বাইরে চলে এসেছেন।কি মনে ভেবেছেন কি আপনি আপনার সবকিছু আমি মুখ বুজে সহ্য করবো? আপনি কিভাবে ভাবলেন আপনাকে আমি বিয়ে করবো? সবসময় সবকিছু মেনে নিয়েছি বলে এটা ধরে নিলেন যে আমি আপনার ওপর weak হয়ে পরেছি? কি দারুণ আপনার ভাবনা।
আশফিঃ মাহি তুমি কিন্তু আমাকে সবার সামনে অপমান করছো।সবাই দেখছে।
মাহিঃ থামুন আপনি। আপনার কোনে অপমানবোধ আছে? থাকলে আজকে এটা করার সাহস পেতেননা। এটা করার আগে অন্তত ২ বার ভাবতেন।আপনাদের এই ২ দিনের প্রেম ভালোবাসা নেওয়ার জন্যই আমাদের জন্ম তাইনা? যেদিন ফুল থেকে মধু নেওয়া হয়ে যাবে সেদিন আবার ছুড়ে ফেলে দিবেন তারপর আবার হয়তো নতুন ফুল গ্রহণ করবেন। এটাই তো আপনাদের রীতি। একটা কথা ভলো করে জেনে নিন আমি আপনাদের ছেলেদের এই মিথ্যে বিয়ে,প্রেম ভালোবাসার নাটকে কখনোই ভুলবনা।কথা গুলো বলে ওনার বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম।
– কি বলে গেলো এই মেয়েটা? আশফির মতো ছেলে কে পাওয়ার জন্য সব মেয়েরা পাগল। আর এ কি সব বলে গেলো? আশফিও চুপ করে দাড়িয়ে শুনলো। ও তো চুপচাপ অপমান সহ্য করা ছেলেনা।(আশফির বন্ধুরা)
( আশফি ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিল। বাইরে থেকে শুধু ভাঙচুরের শব্দই আসছিল)
মাহিঃ অনেক আগেই ওনার জায়গা টা বোঝানো উচিত ছিল আমার। বাসায় চলে আসলাম। মা আমাকে এই পোশাকে দেখে অনেক প্রশ্ন শুরু করলো। আমি আর মায়ের থেকে কোনোকিছু গোপন রাখতে চাইনা।তাই মাকে আজকের ঘটনা সব খুলে বললাম।
মাঃ হুম। ছেলেটা তোকে কিছু না বলে কাজটা করে ঠিক করেনি। তবে তুইও সবার সামনে এভাবে অপমান করে ঠিক করিসনি।কিন্তু আজ না হয় কাল তোকে তো বিয়ে করতে হবে। সারাজীবন তো আর এভাবে থাকা সম্ভব নয় তাইনা??
মাহিঃ না মা। কোনোদিনও সেটা সম্ভব না। সম্পর্ক, বিয়ে, ভালোবাসা এগুলো আমি কোনোদিও বিশ্বাস করিনা।
মাঃ তা বললে কি হয়? পৃথিবী টা তো এগুলোর ওপরেই টিকে আছে।
মাহিঃ তাই যদি হয় তাহলে তোমার সাথে এমন হলো কেনো? কেনো তুমি সারাজীবন একা থেকে গেলে। ঐ লোকটাও তো তোমাকে ভালোবেসেছিল তাহলে সে কেনো তার স্ত্রী কন্যাকে ছেরে অন্য এক মহিলার সাথে………….
মাঃ মাহি(ধমক দিয়ে)চুপ কর।
মাহিঃ মাফ করে দিয়ো মা। কথা গুলো এভাবে বলতে চাইনি। ছোটোবেলা থেকে তোমাকে এভাবে দেখে সবার মুখে ঐ লোকটার কথা শুনে আমার সব পুরুষ জাতির ওপর ঘৃণা থরে গেছে। সেই ছোটো থেকে এখন পর্যন্ত দেখছি এমন কোনো রাত যাইনি তুমি কাদোনি। সমাজের মানুষ তোমাকে নানান রকম কথা বলেছে। এরপর আমার আর এদের ওপর কোনো বিশ্বাস নেই। আমি ঘরে চলে আসলাম। অনেক্ষন পর ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের ঘরে গেলাম। আজকে রাতে মায়ের কাছেই ঘুমোবো। মায়ের কোলে মাথা রাখলাম। আজকে অনেক কান্না করকে ইচ্ছে করছে।
মাঃ মাহি আমি জানি তোর কতটা খারাপ লাগছে। নিজেকে শান্ত কর। আয় তোকে ঘুম পারিয়ে দেই।
(পরেরদিন দুপুরে)
মাঃ মাহি আমার ওষুধ গুলো ফুরিয়ে গেছে সামনে মোড়ের দোকান থেকে একটু এনে দে মা।
মাহিঃ ওষুধ ফুরিয়ে গেছে সেটা আগে বলবে তো। যাচ্ছি। আজকে friday ভেবেছিলাম মাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। তা আর হলোনা। দোকানে ওষুধ আনতে গেলাম। রাস্তার পাশে একটা সাদা গাড়ি দাড়িয়ে আছে । গাড়িটা থেকে অনেক জোড়ে গানের আওয়াজ আসছে।পিকনিকে যাচ্ছে হয়তো।ওষুধ কিনে যখন ফিরছিলাম তখন গাড়ির ভেতর ২/১ টা ছেলে আমাকে দেখে কি যেনো বলাবলি করছিল। আমি গাড়ি টাকে ক্রস করে তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করলাম। হঠাৎ ৩ টা ছেলে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার মাঝেই সবার সামনে আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলো। একটা বাসার সামনে থেমে ছোটো একটা ঘরে নিয়ে গেলো। আমার মুখটা বেঁধে দিয়েছিল।অনেক ছাটাছাটি করছি আর মনে মনে আল্লাহ্ কে ডাকছি এত বড় সর্বনাশ যাতে না হয় আমার। রুমে নিয়ে আমাকে তালা মেরে আটকে রাখলো। পালানোর চেষ্টা করলাম পারলামনা। রাত হয়ে গেলো আমি ফ্লোরে বসে কাঁদছি। ঘরটাও খুব অন্ধকার হয়ে আছে। হঠাৎ দরজাটা কেউ খুললো ভয়ে আমার হাত পা অবস হয়ে আসছিলো। আমি উঠে দাড়ালাম। অন্ধকারে মুখটাও দেখতে পাচ্ছিলামনা।আমি দৌঁড়ে পালাতে গেলাম।আমাকে ধরে গা থেকে ওরনা টা ফেলে দিল। তারপর দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে দু হাত চেপে ধরে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁটের স্পর্শ পেলাম।অনেকক্ষণ ধরে এভাবে চুমো দিয়েই যাচ্ছিল। আমার চোখ দিয়ে শুধু পানিই পরছিল কিছু বলতে পারছিলামনা। সে আমার মুখে ঘারে গলাই এভাবেই চুমো দিয়ে যাচ্ছিল। তারপর সে নিজেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সামনে দাড়ালো। সে হাপাচ্ছিল আমি তার নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছিলাম। আমি আবারও পালানোর চেষ্টা করলাম। সে আমার হাত ধরে টেনে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। তারপর সে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে গেলো। আমি চিৎকার করে কান্না শুরু করলাম। অনেক রাত হয়ে আসছিল তার ওপর ঘর অন্কার। একা একা বসে আছি। খুব ভয় লাহছিল। হঠাৎ রুমের বাইরে থেকে কেউ বললো
-ভয় পাবেননা আমি পাশেই আছি।কথাটা শুনে অবাক হবো নাকি ভয় পাবো বুঝতে পারছিনা। কন্ঠ শুনে মনে হলো মুখে কিছু চেপে ধরে কথা বললো।আমি কাঁদতে কাঁদতে কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়লাম। মুখে আলো পরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখলাম দরজা খোলা সকালের রোদ চোখে এসে পরেছে। আমি কিছু না ভেবেই দৌঁড়ে বেরিয়ে আসলাম। আশেপাশে ও কেউ ছিলনা।বাসায় এসে পৌঁছালাম দেখলাম মা সোফায় বসে কাদছে। আমাকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে আদর করা শুরু করলো। আমিও কাদছিলাম। মা কে সব বললাম। মা কেদেই যাচ্ছে। এলাকার সবাই জেনে গেছে এই ঘটনা। নানান রকম কথা বলছে আমাকে দেখতে আসছে। সবার কথা একটাই আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।আমি শুধু ঘরের দরজা আটকিয়ে কান্না করছি।মা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। আর আমি ভাবছি এরকমটা কেনো করলো আমার সাথে আর সে কে ছিল? জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো। নিজেকে বহু কষ্টে শান্ত করলাম ভাবলাম কারো কথায় আর গায়ে মাখবোনা।কারন আমি তো জানি আমার সাথে কি হয়েছে। পরেরদিন সকার ৯ টায় ম্যানেজার ফোন করলো।
-মাহি তুমি যে কাজ গুলো পেনডিং রেখেছো সেগুলো স্যারকে ইনর্ফম করতে বলেছে। আর রেজিগলেশন টা নিয়ে আসতে বলেছে।
মাহিঃ ঠিক আছে আসছি। ওনার দেওয়া শাড়ি গয়না গুলোও ফেরত দিব। তাই মাকে বলে অফিসে গেলাম। এখানে এসেও সমালোচনার পাত্রি হলাম। এখানেও কারোর বাকি নেই জানতে। খুব কান্না পাচ্ছে নিজেকে সামলাতে পারছিনা। উনি ওনার চেম্বার থেকে বেরিয়ে এলো।
আশফিঃ কি হয়েছে এখানে এত শব্দ কেনো? যে যার কাজে যান।(ধমকিয়ে)
মাহিঃ আমার দিকে একবার তাকালো। তারপর চলে গেল। আমি ওনার চেম্বারে গেলাম।
-এই কাজগুলো বাকি আছে দেখিয়ে বললাম। উনি শুধু হুম হুম বলছে। তারপর রেজিগলেশন দিলাম। উনি সেটাতে সাইন করে একসেপ্ট করলো। সবশেষে শাড়ি গয়না গুলো ফেরত দিলাম।তখন আমার দিকে রেগে তাকালো। ওনার রাগে এখন আমার ভয় লাগছেনা।
আশফিঃ কাউকে কিছু দিলে আমি সেটা আমি কখনো ফেরত নিইনা। না নিলে কোথাও ফেলে দাও।
মাহি চলে গেলো।
-এবার নিশ্চই বুঝতে পেরেছো মাহি? অপমান জিনিসটা কেমন লাগে। আমি তোমাকে যতই ভালোবাসি মাহি কিন্তু তোমার অপমান আমি হজম করতে পারিনি। সবার সামনে তুমি আমাকে refeused করেছো অপমান করেছো। আমি সেটা মেনে নিতে পারিনি।সেদিন রাতেই আমি প্রমিস করেছিলাম এর কি শাস্তি আমি তোমাকে দিব। অপমানটা আমি করছি এর সমাধান ও আমিই করবো।বেশিদিন এই অপমান তোমাকে সহ্য করতে হবেনা।অবশ্য এর পেছনের মূল উদ্দেশ্য ছিল তুমি যাতে আমাকেই বিয়ে করতে বাদ্ধ্য হও। I’m sorry dear.(মাহির দিকে তাকিয়ে)
মাহিঃ আমি চলে আসলাম আমার চেম্বারে। জিনিস গুলো ওখানেই ফেলে বাসায় চলে আসলাম। মা এখন সারাদিন গম্ভীর হয়ে থাকে। এত দ্রুত আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে ভাবিনি। সন্ধ্যায় কে একজন বাসায় আসলো। মায়ের সাথে কথা বলছে
মাঃ জি বসুন। আপনাকে তো চিনতে পারলামনা।
-আমি আরমান চৌধুরী। আশফি চৌধুরীর চাচা।
মাঃ ওহ আচ্ছা।
-আমি আশফির কাছে মাহির ব্যাপারে সবটাই শুনেছি। আর আপনিও নিশ্চই জানেন আমার ভাতিজা ওকে পছন্দ করে। আর এত কিছুর পরও আশফি ওকে বিয়ে করতে চাই। আশফির ব্যাপারে আমি আপনাকে সবকিছু বলছি।
মাঃ হুম। বুঝতে পারছি ও অনেক ভালো ছেলে। আমার কোনো আপত্তি নেই এই বিয়েতে।
মাহিঃ আমি তাদের কথাগুলো শুনে আর ঘরে থাকতে পারলামনা।বেরিয়ে এলাম।
-মা তুমি কিভাবে এই বিয়েতে রাজি হলে। তুমি তো সবকিছুই জানো আমি কেনো বিয়েটা করতে চাইনা। তারপরেও…..
মাঃ চুপ কর তুই। তুই যা ভাবিস তা একদমই অযৌক্তিক। আর আমি চাই তুই এই বিয়েটা কর এটাই আমার শেষ কথা।
-মা তুমি আমার আশফিকে যা ভাবছো ও একদমই সেরকম না। ওর মত ছেলে লাখে একটা মিলো। নিজের ভাতিজা বলে বলছিনা।
মাহিঃ এটাই তোমার শেষ ইচ্ছে তাইনা মা। আমার জন্য তুমি মুখ দেখাতে পারছোনা সমাজে তাইনা? ঠিক আছে আমি তোমার সিদ্ধান্ত মেনে নিলাম। আর কিচ্ছু বলবোনা আমি। বলেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসলাম রেগে।
মাঃমাহি কোথাই যাচ্ছিস। দাড়া।
-হ্যালো,আশফি মাহি রেগে বাইরে বেরিয়ে গেছে।
আশফিঃ কি? ঠিক আছে আমি দেখছি।
-ভাবি আপনি চিন্তা করবেন না। আশফি ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে।
মাহিঃ আত্মহত্যা পাপ না হলে এতক্ষণ জীবনটা শেষ করে দিতাম। মা ই যখন আমাকে বুঝলোনা তখন আর এখানে থেকে কি করবো?
-আহ্………চারপাশ অন্ধকার লাগছে আমার কেউ মনে হচ্ছে মাথার পেছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করলো।
আশফিঃ এতো রাতে মেয়েটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো? এত সাহস? কিসের এত রাগ তোমার? মেয়ে মানুষ এত জেদ কিভাবে করো সেটাই আমি দেখবো।(গাড়ি চালাতে চালাতে বলছে)
রাস্তার মাঝখানে এত ভীড় কেনো? উফফ অসহ্য লাগছে আমার। ওকে খুঁজতে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। না পেরে গাড়ি থেকে নামলাম। সামনে এগিয়ে ভীড় ঠেলে ভেতরে ঢ়ুকলাম। কাছে গিয়ে যা দেখলাম,
-মাহি!!!(চিৎকার করে) ওর দেহটা নিচে পড়ে আছে। আর চারপাশে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।মনে হচ্ছে এখনি পড়ে যাবো। খুব কষ্টে নিজেকে সামলে ওকে কোলে করে গাড়িতে আনলাম। কাঁদতে কাঁদতে চাচ্চুকে ফোন দিয়ে জানালাম। আমি ওকে তাড়াতাড়ি Hospital এ আনলাম। O.T নিয়ে গেলো ওকে। আমি বসে বসে কাঁদছি। চাচ্চু ওর মা কে সাথে নিয়ে আসলো। নিজেকে সামলাতে পারছিনা এর মধ্যে ওর মা বারবার senseless হচ্ছে। ওনাকে সামলানোর জন্য কাছে গেলাম। আজ নিজেকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি এতকিছু না করলে ওর আজকে এতবড় ক্ষতি হতোনা। ওর কিছু হয়ে গেলে আমি থাকতে পারবোনা,মরেই যাবো। মিনিমাম সাড়ে তিন ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে এলো আমরা দৌঁড়ে গেলাম ওনার কাছে।
-ও কেমন আছে? ও ঠিক আছে তো? কি হলো কথা বলুন।
-আসলে ওর যা অবস্থা তাতে ওর ৮৫% বাঁচার আশংকা নেই। অনেক ভারী জাতিয় মানে রড বা লোহা জাতিয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। আর এমন জায়গায় আঘাতটা করেছে যেখানে ওর এর আগেও অনেক বড় একটা অপারেশন হয়েছে। আর সেটাও অনেক বড় একটা আঘাত ছিল।
আশফিঃ কথা গুলো শুনেই আমি পাথরের মত হয়ে গেলাম।
চলবে…….
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.