Sunday, October 5, 2025







আমার শহরে তুমি পর্ব-১৪

#গল্পের_নাম_আমার_শহরে_তুমি
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১৪
,,,,,,,
,,,,,,,
আমি চোখ পিটপিট করে খুলে দেখি পুরো রেস্টুরেন্ট খুব সুন্দর করে সাজানো।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি রেস্টুরেন্টে আমি আর রক্তিম ছাড়া কেউ নেই।রক্তিম আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~কেমন লাগলো আমার সারপ্রাইজ?
আমি বললাম,
~খুব সুন্দর।
রক্তিম মুখটা মলিন করে বললো,
~আমি জানি বেশি একটা ভালো হয়নি।আসলে আমার বাজেটে যা ছিল তাতে এতটুকুই হতো।
আমি তার মুখে আঙ্গুল দিয়ে রক্তিমকে থামিয়ে দিয়ে বললাম,
~আপনি এগুলো আমার জন্য করেছেন।এখানে বাজেট বেশি হোক বা কম হোক এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।
কথা শেষ করতেই আমি আঙ্গুল সরিয়ে নিলাম।রক্তিম হালকা হেসে বললো,
~তুমি খুশি তো আমিও খুশি।
রক্তিম টেবিলের সামনে গিয়ে চেয়ার টেনে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
~মিসেস অধরা আপনি এই চেয়ারে বসে এই চেয়ারটিকে ধন্য করুন।
রক্তিমের কথায় আমি হেসে উঠলাম। সেই চেয়ারে বসে পরলাম রক্তিম আমার ঠিক সামনের চেয়ারে বসে পরলেন।রক্তিম বসতেই আমাকে বললেন,
~মহারাণী আপনার সবচেয়ে প্রিয় খাবার আপনার সামনে পেশ করা হলো।
রক্তিমের কথা শেষ হতেই একজন ওয়েটার তার হাতে দু প্লেট ফুচকা নিয়ে আসলেন।আর আমার সামনে রেখে সে চলে গেলেন আমি অবাক হয়ে বললাম,
~ফুচকা তাও আবার চাইনিজ রেস্টুরেন্টে কীভাবে?
রক্তিম বললো,
~রক্তিমের দ্বারা সব সম্ভব। তুমি এতো কথা বলো নাতো খাওয়া শুরু করো।
আমি ফুচকার প্লেট সামনে টেনে খাওয়া শুরু করলাম আর রক্তিম আমার দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছেন।আমি ফুচকা মুখে দিয়ে বললাম,
~কী দেখছেন এভাবে?
রক্তিম বললো,
~আমার বউকে।
আমি তার কথা পাত্তা না দিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম।ফুচকা খাওয়া শেষ হতেই রক্তিম বললো,
~মন ভরেছে আপনার।
আমি ৩২টা দাঁত বের করে বললাম,
~ফুচকা এমন একটা খাবার পেট ভরে যায় কিন্তু মন ভরে না।
রক্তিম বললো,
~এতো তাড়াতাড়ি মন ভরলে চলবেও না।কারণ আরো সারপ্রাইজ বাকি আছে।
আমি বললাম,
~আবার কী সারপ্রাইজ?
রক্তিম কিছু না বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালেন তারপর কোথায় যেন চলে গেলেন। ফিরে আসলেন হাতে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে আমার দিকে শপিং ব্যাগটা এগিয়ে দিয়ে বললেন,
~দেখো তো তোমার পছন্দ হয় নাকি?
আমি শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে সেটার ভিতরে হাত দিয়ে কিছু একটা বের হয়ে আসলো সেটা হচ্ছে ফটোফ্রেম।আমার ছবি রংতুলি দিয়ে আঁকা। এই স্কেচটা দেখে আমি অবাক হয়ে রক্তিমের দিকে তাকালাম।রক্তিম আমার তাকানো দেখে বললো,
~আমিই এঁকেছি কেমন হয়েছে?
আমি ফ্রেমটা হাতে নিয়ে ভালো মতো দেখতে লাগলাম আমি একটা শাড়ি পরে আছি চুল গুলো খোলা আর ঠোঁটে মুচকি হাসি।আমার জবাব না পেয়ে রক্তিম হতাশ হয়ে বললেন,
~আসলে আমেরিকা থাকতে আমি একটা আর্ট ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখান থেকেই শিখেছি।হয়তো ভালো হয়নি আমার কল্পনায় তুমি এরকম ভাবেই এসো থাকো।
আমি কপট রাগ দেখিয়ে বললাম,
~খবরদার আমার স্বামীর এতো সুন্দর ট্যালেন্টকে যদি খারাপ বলেছেন।
রক্তিমের ঠোঁটের কোণে একটা প্রাপ্তির হাসির রেখা ফুটে উঠেছে।তার এই অমায়িক হাসিটা দেখে আমার অনেক ভালে লাগছে আমি বললাম,
~শুধু কী আমারই ছবি এঁকেছেন নাকি অন্য কোনো মেয়েরও ছবি এঁকেছেন?
আমার এহেন প্রশ্নে সে একটু ইতস্তত বোধ করছেন।রক্তিম আমতা আমতা করে বললেন,
~একজনের একেঁছি।
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম,
~কে সেই মেয়ে?
রক্তিম বললো,
~আমার বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডের।
আমি হতবাক হয়ে বললাম,
~আপনার বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডের ছবি আপনি একেঁছেন কেন?
রক্তি বললো,
~আমার বন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডকে ইমপ্রেস করার জন্য আমাকে বলে একটা ছবি একেঁ দিতে।
আমি বললাম,
~আপনি একেঁ দিলেন ছবি?
রক্তিম বললো,
~বিশ্বাস করো আমি নিজ ইচ্ছায় করিনি।
এতটুকু বলে রক্তিম মাথা নিচু করে তার বন্ধুর গোষ্ঠী উদ্ধার করছে।তার অবস্থা দেখে আমি মিটমিট করে হাসছি কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে জোরেই হেসে উঠলাম।রক্তিম আমার হাসির শব্দ শুনে মাথা তুলে আমার দিকে তাকালেন আর অবাক হয়ে বললেন,
~তুমি হাসছে কেন?
আমি হাসি বন্ধ করে বললাম,
~এই যে আপনাকে জব্দ করতে পেরে।
বলেই আবার হেসে উঠলাম।রক্তিম এবার একটু রেগে বললেন,
~আমায় নিয়ে মজা করা হচ্ছে।
আমি বললাম,
~হ্যাঁ কোনো সমস্যা?
রক্তিম বললো,
~অনেক সমস্যা তুমি এভাবে হাসলে অনেক সুন্দর দেখা যায়।আর আমি যদি এই সৌন্দর্য দেখে উল্টা-পাল্টা কিছু করে ফেলি তখন আমায় বলতে পারবে না।
রক্তিমের কথায় হাসি বন্ধ করে বললাম,

,,,,,
,,,,,
~অসভ্যলোক সবসময় বাজে কথা।আর রাহিরা কখন আসবে?
রক্তিম বললো,
~রাহিরা আজ দেখা করতে পারবে না কারণ অভির অনেক জরুরি কাজ আছে।আগামীকাল আমাদের বাসায় আসবে তারা।
আমি বললাম,
~তাহলে চলেন বাসায় যাওয়া যাক।
রক্তিম বললো,
~এতো তাড়া কেন আপনার আরো তো সারপ্রাইজ বাকি আছে।
আমি বললাম,
~আর কী বাকি আছে?
রক্তিম মুচকি হেসে বললেন,
~ওয়েটার ম্যাডামের ফেভরেট চকলেট আইসক্রিম পেশ করা হোক।
সাথে সাথে ওয়েটার আইসক্রিম নিয়ে হাজির সে টেবিলে সেটা রেখে চলে গেলো।আমি রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
~সবই জানা আছে তাহলে।
রক্তিম বললেন,
~নিজের প্রিয় মানুষের সব কিছু জানা উচিত।কারণ সেই প্রিয় মানুষটিকে আগলে রাখার দায়িত্ব আমাদের থাকে।আর আমি আমার প্রিয় মানুষটিকে অনেক খুশি দেখতে চাই এইযে এগুলো দেখে তোমার মুখে যে হাসি ফুটেছে এটাই আমার জন্য অনেক।
রক্তিমের প্রতিটি কথায় আমি নিজেকে খুজে পেয়েছি।মানুষটি আমায় অনেক ভালোবাসে হয়তো নিজের থেকেও বেশি আমায় ভালোবাসে।তার কথা গুলো একদম তীরের মতো এসে আমার মনে বিঁধেছে। এরকম একজনকেই তো আমি আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে চেয়েছিলাম।হঠাৎ আমার ধ্যান ভাঙ্গলো রক্তিমের কথায় সে বলছে,
~অধরা চলো তোমার জন্য বাহিরে একটা সারপ্রাইজ ওয়েট করছে।
আমি বললাম,
~ আরো সারপ্রাইজ আছে।
রক্তিম বললো,
~হ্যাঁ।আজ আমরা সারাদিন ঘুরবো প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে।
রক্তিমের কথা শুনে আমি লজ্জা পেয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালাম। রক্তিম আমার হাত ধরে রেস্টুরেন্টের বাহিরে এনে দাড় করালেন হঠাৎ একটা নতুন রিকশা আমার সামনে এসে দাড়ালো।রক্তিম হেসে সেই রিকশাচালক কে বললেন,
~মামা,সব ঠিক তো?
রিকশাচালক বললেন,
~জে বাবা,সব ঠিক আসে।
রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
~অধরা আজ আমরা রিক্সায় চড়ে ঘুরবো।
বলেই রক্তিম রিকশায় উঠে বসলেন তারপর আমার দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন,
~অধরা আসো।
আমি তার হাত ধরে রিকশায় উঠে বসলাম।রক্তিম আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বললেন,
~মামা আগে বাড়ান।
রিকশা চলতে শুরু করলো আমি বললাম,
~আপনার গাড়ি?
রক্তিম বললো,
~ড্রাইভার চাচাকে দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।
আমি বললাম,
~ওওও।
রক্তিম বললো,
~অধরা,দেখো আজকের ওয়েদারটাও কতো সুন্দর।
আমি চারপাশ দেখে বললাম,
~আসলে অনেক সুন্দর।
শীতল হালকা বাতাস বইছে।আমার শরীরে এক আলাদা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে রক্তিম আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।আমি তার কাঁধে মাথা এলিয়ে দিলাম আর পরম আবেশে আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম।এতো ভালো কেন লাগছে আমার মনের ভিতর অজানা একটা অনুভূতি বয়ে যাচ্ছে।বুকটা ঢিপঢিপ করছে।রক্তিম আমাকে বললো,
~ভালো লাগছে অধরা?
আমি মুখে হাসির রেখা টেনে বললাম,
~অনেক ভালো লাগছে।আপনি এতো কিছু প্ল্যান করেছেন তাও এতো নিখুঁতভাবে ভালো না লেগে কী থাকা যায়।
রক্তিম হালকা হেসে বললো,
~চা খাবে অধরা?লেবু চা?
আমি বললাম,
~মন্দ হয় না খাওয়া যায়।
রক্তিম রিকশাচালককে বললেন,
~মামা,চায়ের দোকান দেখলে থামিয়েন কেমন?
মামা বললেন,
~সামনেই আছে। এক্কেবারে কড়া চা বানায় খাইয়া দেহেন।
রক্তিম বললো,
~ঠিক আছে
কিছুক্ষন পর রিকশা থামলো একটা চায়ের দোকানের সামনে রক্তিম রিকশা থেকে নেমে চায়ের দোকানের দিকে চলে গেলেন।তিনকাপ চা হাতে নিয়ে সে ফিরে আসলেন এককাপ চা মামাকে দিলেন।মামা চা হাতে নিয়ে অন্যদিকে চলে যেতে নিলে রক্তিম বললো,
~মামা কোথায় যান?
মামা বললেন,
~আরে বাবা এইহানেই আছি।আসলে চায়ের লগে আড্ডা না দিলে হয় না।
এই বলে সে চলে গেলেন রক্তিম আমার হাতে চায়ের কাপ দিয়ে বললেন,
~নেও তোমার চা।
আমি চা একটু একটু ফু দিয়ে খাচ্ছি।রক্তিম আমাকে বললেন,
~চা খাওয়া শেষ করে আমরা এক জায়গায় যাবো।
আমি বললাম,
~আচ্ছা।
চা শেষ করে আমরা আবার চলতে শুরু করলাম এখন আমার হাতে আছে বুট আমি একটু করে মুখে দিচ্ছি আবার রক্তিমের হাতেও দিচ্ছি।রিকশা থেমে গেলো আমি আশেপাশপ তাকিয়ে দেখি জায়গাটা অনেক সুন্দর একদম গাছ-পালায় পরিপূর্ণ একদম শান্তশিষ্ট পরিবেশ।রক্তিম আমার দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন,
~আসো যাওয়া যাক।
আমি রক্তিমের হাত ধরে রিকশা থেকে নেমে পরলাম তার হাত ধরেই হাটা শুরু করলাম।একটু এগিয়ে গিয়েই দেখতে পেলাম বাচ্চারা খেলছে কেউ কেউ গল্প করছে।আমরা একটা খালি জায়গায় বসে পরলাম।রক্তিম আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
~দেখেছো আকাশটা কতো সুন্দর একদম তোমার মতো।
আমি বললাম,
~হ্যাঁ আকাশটা অনেক বড়ও একদম আপনার মনে মতো।
রক্তিম হাসলেন তারপর বললেন,
~অধরা,তুমি পিচ্চি থেকে বড় হয়েছো।কিন্তু এখনো সেই পিচ্চি অধরার মতোই কথা বলো।
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,
~আমি পিচ্চির মতো কথা বলি?
রক্তিম আমার গাল দুটো টেনে বললেন,
~হ্যাঁ
আমি রেগে গিয়ে রক্তিমের বুকে ঘুষি দিতে থাকি।রক্তিম হাসতে হাসতে আমার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে বললেন,
~রাগ করে না আমার ময়না পাখি।
রক্তিমের কথায় আমি মুখ অন্যদিকে করে ফেললাম।রক্তিম আমাকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন আমি সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললাম,
~করছেন টাকি এটা পাবলিক প্লেস।
রক্তিম আমাকে বললেন,
~৫মিনিটে কেউ দেখবেনা।অধরা আজকে আমার জীবনের সবচেয়ে খুশীর দিন।

,,,,,,,,
,,,,,,,,,

সারাদিন ঘুরে বাসায় আসতে আসতে আমাদের সন্ধ্যা পার হয়ে রাত হলো।বাসার ভিতরে ঢুকতেই একটা নিরবতা গ্রাস করলো সারাদিনের ক্লান্তি এসে ভর করলো আমরা শরীরে রুমে গিয়ে শাওয়ার নিতে চলে গেলাম। রক্তিম আমাকে বাসায় দিয়ে একটা কাজে জন্য বের হয়েছেন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে নাকে ভূনা খিচুরি আর ইলিশ মাছ ভাজার সুগন্ধ চলে আসলো আমি সামনে তাকিয়ে দেখি রক্তিম টি-টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখছে।আমি রক্তিমের কাছে গিয়ে বললাম,
~সবার সাথেই তো ডিনার করতে পারতাম?
রক্তিম বললো,
~বাসায় কেউ নেই।বাবা ঢাকার বাহিরে,মা কিটি পার্টিতে,দাদীমা ফুপির বাসায় আর রাত কোথায় আমি তা জানি না।ফোন ট্রাই করেছি ফোন রিসিভ করে নি
আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,
~ওওও।
রক্তিম আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
~রাত ১০টা বাজে খাবার খেয়ে নেও।
আমি বললাম,
~ফ্রেশ হয়ে আসেন একসাথে খাই।
রক্তিম কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলেন কিছুক্ষন পর শাওয়ার নিয়ে বের হলেন মাথা মুছতে মুছতে সে আমার পাশে বসে পরে আমি প্লেটে খাবার তুলে রক্তিমের সামনে দিলাম।রক্তিম বললো,
~সারাদিন আমি এতো কাজ করেছি এখন আমার হাত ব্যাথা করছে একটু খাইয়ে দিবে।
আমি ইতস্তত করে বললাম,
~ঠিক আছে খাইয়ে দিচ্ছে।
আমি প্লেট হাতে তুলে খাবার রক্তিমের মুখের সামনে তুলে ধরলাম।রক্তিম আমার হাত থেকে খাবার মুখে তুলে নিয়ে পরম তৃপ্তিতে খাবার চিবুচ্ছে। আমিও সেই একই প্লেট থেকে খাবার খেয়ে নিলাম খাবার খাওয়া শেষ করে সব গুছিয়ে বিছানার কাছে এসে দেখলাম রক্তিম মোবাইলে কি যেন দেখছে আর মিটমিট করে হাসছে।আমি ভ্রুকুচকে রক্তিমকে জিজ্ঞেস করলাম,
~কী দেখে হাসছেন?
রক্তিম মোবাইল আমার দিকে ঘুরিয়ে দেখালেন।আজকের তোলা কিছু ছবি আমি একটু এগিয়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে রক্তিমের পাশে বসে পরলাম।ছবি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।আজকের দিনটি আসলেই অনেক স্মরনীয় হয়ে থাকবে মনে রাখার মতে একটা দিন ছিল আজ।রক্তিম আমাকে বললো,
~পা ব্যাথা করছে?
আমি বললাম,
~না।কিন্তু ঘুম অনেক আসছে।
রক্তিম আমাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
~ঘুমাও।
আমি বললাম,
~রোজ রাতে এভাবে জড়িয়ে কী মজা পান?
রক্তিম হালকা হেসে বললেন,
~শান্তি লাগে।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে তার বুকে মুখ গুজে চোখ বন্ধ করে নিলাম।চলে গেলাম স্বপ্নের রাজ্যে যেখানে এখন রক্তিমের বসবাস

,,,,,,,,
,,,,,,,,,
সকালের রোদ চারপাশ আলোকিত করে তুলছে।
সকল মানুষরা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত তেমনি অধরাও রান্নাঘরে সকলের জন্য নাস্তা বানাতে ব্যস্ত আজ রাহি আর অভিও এখানে আসবেন নাস্তা করেই তারা বেরিয়ে পরবেন শপিংয়ের জন্য। তাই অধরা নিজেই নাস্তাটা তৈরি করছে সব কাজ শেষ করে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল ৯.২০।
আমি সকালের নাস্তা টেবিলে সাজিয়ে সোজা চলে গেলাম রুমে।সেখানে গিয়ে দেখি রক্তিম মটকা মেরে ঘুম আসছে রক্তিমের সামনে গিয়ে তার কানের কাছে গিয়ে চিল্লিয়ে বললাম,
~ঘরে চোর এসেছে ঘরে চোর এসেছে।
তাও রক্তিম উঠলোনা বরং সে আরমোড়া ভেঙ্গে আবার ওদিক ফিরে শুয়ে পরলো।এবার আমি জগের সব পানি তার মাথায় ঢেলে দিলাম রক্তিম ধরপরিয়ে উঠে বসলেন।আমার দিকে সে রাগে কটমট করে তাকিয়ে আছেন আমি ক্যাবলা কান্তের মতো হেসে বললাম,
~উঠে পরেছেন যাক ভালো হলো যান ফ্রেশ হয়ে আসেন।
আমার কথা শুনে রক্তিমের রাগ মনে হয় সাত আসমানে চড়ে বসলো সে রাগে চিল্লিয়ে বললো,
~স্টুপিড মেয়ে আমাকে ভিজালে কেন?
আমি বললাম,
~আরে ঘরে মনে হয় ফুটো হয়েছে তাই পানি পরছে।
রক্তিম বললো,
~আমরা কী টিনের ঘরে থাকি যে ফুটো হবে?
আমি শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
~আমার মনে হয় লিকেজ হয়েছে।
বলেই দেই এক ভো দৌড় আমার পিছে রক্তিমও দৌড় দেয় আমরা রুম থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসি।রক্তিম আমার পিছে দৌড়াচ্ছে আর বলছে,
~দেখো অধরা চুপচাপ নিজেকে সারেন্ডার করো নাহলে খবর আছে।
আমি বললাম,
~কোনো দিন ও না।
যেই না অন্যদিকে যেতে নিবো তখনই রক্তিম আমাকে ধরে বললেন,
~এখন কই যাবে?
আমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই পিছন থেকে বলে উঠে,
~লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছো তোমরা?
রক্তিম আমাকে ছেড়ে দিলো আমি পিছনে ঘুরে দেখি রাত দাড়িয়ে আছে।রাতের চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট আমি সেখান থেকে চলে আসতে নিবো তখনই রক্তিম আমার হাত ধরে বললো,
~রাত, আমি আমার বউকে জড়িয়ে ধরেছি এতে লজ্জার কী আছে আর এখানে কেউ ছিলো না। so don’t create a scene.
রক্তিমের কথায় রাত আরো রেগে গেলো সে কিছু বলতে যাবে তখনই ডোর বেলের আওয়াজ আসে।আমি বললাম,
~রাহি আর অভি এসেছে মনে হয়।
বলেই দরজার সামনে এসে তা খুলে দিলাম সত্যিই রাহি আর অভি এসেছে। রাহি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~কেমন আছো?
আমি বললাম,
~ভালো।
রাহি আর অভি ভিতরে আসলেন রক্তিম তাদের সাথে কুশলাদি করে ফ্রেশ হতে চলে গেলেন।
সকাল ১০.২০ আমরা সবাই শপিং মলের জন্য রওনা দিলাম।সবাই বলতে আমরা চারজন রাহি,অভি,রক্তিম,আমি।
শপিং মলে পৌছেই রাহি আর আমি নেমে পরলাম যুদ্ধ করতে।প্রত্যেকটা দোকান ঘুরে দেখছি অবশেষে আমার আর রাহির পছন্দ সই একটা ব্রাইডাল লেহেঙ্গার দেখা পেলাম।

চলবে।।।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো 🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ