Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-৪৪+৪৫

রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-৪৪+৪৫

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:৪৪
সকালের রৌদ্দুরটা মুখে পড়তেই মাইশা অনুভব করতে পারছে তাকে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে বেঘোরে ঘুমুচ্ছে আয়াত। জানালার কমলা পর্দাটি ভেদ করে রৌদ্দুরের তীর্যক রশ্নিটা আসার কারনে ঘরে অন্যরকম এক মহল তৈরি হয়েছে। আয়াতের ঘুমন্ত মুখটা দেখে একপ্রকার প্রশান্তি ছেয়ে যায় মাইশার মনে। হালকা ধাক্কা দিয়ে আয়াতের বাহুডোর থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতেই আয়াত আরও গভীরভাবে তার গলায় মুখ গুজে ঘুমিয়ে পড়ে।
.
ঠোঁটটি হালকা প্রসারিত করে ফেলে মাইশা। আয়াতের কিছু কিছু আচরণ আছে যা সবার কাছে অতি সাধারন হলেও মাইশার কাছে তা অনেক ভালোলাগে। মিহি কন্ঠে সে বলে ওঠে,
.
–আয়াত?
.
আয়াতের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।মাইশা আবারও বলে ওঠে,
.
–আয়াত……..আমায় উঠতে হবে !”
.
–এখন না। প্রিন্স চার্মিং আরহাম আয়াত ইজ স্লিপিং উইথ হিজ বিউটিফুল মাইশুপাখি।
.
আয়াতের ঘুমুঘুমু কন্ঠ শুনে একটু কেপে ওঠে সে।নিজের গলায় আয়াতের নরম ঠোঁযুগলের স্পর্শ পেতেই সে বিছানার চাদর খামচে ধরে।মাইশা একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে বলে যে….
–এখন যে আরহাম আয়াতের মাইশুর উঠে কাজ করতে হবে !
.
–কোনো কাজ হবে না।গতকাল হাত পুড়িয়ে ফেলেছিলে আজ আবার কি করে ফেলবে আল্লাহ জানে।
.
আয়াতের তীক্ষ্ণ কন্ঠ শুনে আর কোনো তর্কে জড়ায়না মাইশা।কিন্ত আয়াত তাকে উঠতে দিচ্ছে না এই ভেবে বিরক্তি চেপে বসে তার মাথায়।এমনিতেও আয়াতের জন্য গতরাত ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি এখন আবার সকালে দেরি করে ঘুম ভেঙ্গেছে আবার ঘুম থেকেও উঠতে দিচ্ছে না।
.
–আচ্ছা ! কোনো কাজ করবো না। কিন্ত উঠতে তো দাও।বাসায় মেহমান আসছে।
.
–দ্যান গিভ মি আ্য মর্নিং কিস।
.
চোখজোড়া বড় বড় করে ফেলে মাইশা।একটা শুকনো ঢোক গিলে বলে ওঠে,
–এখন?
.
–এখন করবা না তো মর্নিং কিস মিডনাইটে করবা?
.
বুঝাই যাচ্ছে মাইশার ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেই একথাটা বলেছে আয়াত।কিন্ত আয়াতের কথা শুনে মাইশার প্রচুর হাসি পাচ্ছে।আসলেই তো মর্নিং কিস চেয়েছে তাহলে সে বোকার মতো কেন ওমন প্রশ্ন করলো।কোনোমতে হাসি দমিয়ে সে বলে …….
.
–আরে আমি তো ওটা বলতে চাইনি।
.
মাইশার মুখের কাছে নিজের মুখ নিয়ে আসে আয়াত।সরু গলায় বলে ওঠে……….
.
–তো কি বলতে চেয়েছো?
.
আয়াতের নজরকাড়া গহীন চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছে মাইশা।গলা থেকে একটা শব্দও বের হচ্ছনা তার।আয়াত এবার দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে ,
.
–বুঝেছি ! আমারই আদায় করে নিতে হবে।
.
একথা বলেই আয়াত মাইশার ঠোঁটে আলতো করে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে উঠে যায়।মাইশার যেনো এখনও একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে।আয়াত ওয়াশরুমে যেতেই মাইশা উঠে চিল্লিয়ে বলে……….
.
–কই যাও তুমি? এতক্ষণ আমায় উঠতে দিলে না আর এখন নিজে আগে উঠে গোসলে যাচ্ছে। আমি আগে যাবো।
.
মাইশার মুখ ফুলানো দেখে একটা দুষ্টু হাসি দেয় আয়াত। নিজের উন্মুক্ত কাধে একটা টাওয়েল ঝুলিয়ে মাইশার খুব কাছে এসে বলে…….
.
–তুমি চাইলে দুজনে একসাথেই গোসল সারতে পারি। কি বলো?
.
আয়াতের ঠোঁট কামড়ানো দেখে মাইশার তো মুখ শুকিয়ে গিয়েছে।এই ছেলে চরম লেভেলের অসভ্য এটা ভাবতেই নরম গলায় বলে ওঠে…….
.
–থাক ! তুমিই আগে যাও।
.
–দ্যাটস লাইক আ্য গুড গার্ল।
.
একথা বলেই আয়াত বাথরুমে চলে যায়।মাইশা রাগে-ক্ষোভে মাইশা বলে ওঠে……..
.
–লুইচ্চার বদনা একটা। বদমাইশ কোথাকার !
.
.
.
পড়ন্ত বিকেল।বারান্দার এককোণে বসে আনমনে ফাগুনের হাওয়া উপভোগ করছে মাইশা।হাতে আছে সাদাত হোসেইনের একটি উপন্যাস ; নাম ”তোমার নামে সন্ধ্যা নামে”। বইটার প্রতিটা বাক্যে গভীরভাবে হারিয়ে ফেলেছিলো নিজেকে। আয়াত এখন অফিসে আছে বিধায় এত মনোযোগ দিয়ে বইটি পড়তে সক্ষম হয়েছে সে।
.
–ব্যাস্ত নাকি……….মাইশা?
.
বইটা দেখে নিজের মনোযোগ সরিয়ে পেছনে ফিরে সে। জেসমিন দাড়িঁয়ে আছে।আগের মতোই মুখে রয়েছে মিষ্টি হাসি।জেসমিনের হঠাৎ এভাবে রুমে আসাতে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে সে।বিনয় কন্ঠে বলে ওঠে…….
.
–না আপু। ব্যস্ত না দেখেই বই পড়ছিলাম।আপনি আসেন।
.
পাশের বেঁতের চেয়ারটিতে নীরবে বসে পড়ে জেসমিন।মাইশা একপাশে বইটি রেখে তার দিকে নজর দেয়।সাদা ফতুয়াতে এক প্রকার স্নিগ্ধতা ফুটে উঠেছে তার মুখমন্ডলে। জেসমিন হঠাৎ বলে ওঠে……
.
–আমার জানামতে আয়াত আর তোমার লাভ ম্যারিজ। আন্টি তো তাই বললো।অনেক ভালোবাসে তোমায় আয়াত তাই না?
.
জেসমিনের সরাসরি এমন প্রশ্নে একটু ঘাবড়ে যাচ্ছে সে।প্রশ্নের উত্তরটি মস্তিষ্কে সাজিয়ে মাইশা প্রতিউত্তর দেয়…….
.
–লাভ ম্যারিজ না আ্যরেন্জ ম্যারিজ এটা নিয়ে আমাদের কখনোই মাথাব্যাথা ছিলো না। সত্যিটা হলো এই আয়াত আমায় অনেক ভালোবাসে আর আমিও আয়াতকে অনেক ভালোবাসি।
.
সবশুনে একটা মলিন হাসি হাসে জেসমিন যা মাইশার চোখ এড়িয়ে যায় নি। কিছুক্ষণ নীরবতা কাটিয়ে সে বলে ওঠে…….
.
–তুমি যে আমায় দেখে আনইজি হচ্ছো এটা আমি ভালোমতোই জানি। কারন আমি ড্যাম সিউর যে আয়াত তোমায় সব বলেছে।তাই না?
.
এতক্ষণ মাইশা যতটা না অপ্রস্তুত ছিলো জেসমিনের এই কথায় আরও বেশি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে।বুঝাই যাচ্ছে তার সামনে বসা অপরূপ সুন্দরীএই প্রবাসী বাঙালী মেয়েটি সরাসরি কথা বলতে ভালোবাসে।একটা লম্বা বিরতি নিয়ে মাইশা বলে ওঠে.
.
–হুম।
.
–আমি এটাও জানি যে আয়াত তোমায় এটা বলেছে যে আমি অনেক জেদি টাইপ ব্লা ব্লা ব্লা , এন্ড আরও বলেছে যে তোমাদের মধ্যে ডিসট্যান্স করতে পারি।
.
–জ্বী বলেছে।
.
মাইশার একথাটা শুনতেই চোখজোড়া ছলছল করে ওঠে জেসমিনের। তার চোখের জল আড়াল করার জন্য অন্যপাশে মাথা ঘুরিয়ে চোখজোড়া মুছে আবার তাকায় মাইশার দিকে।
.
— সিরিয়াসলি ! আয়াতের কাছে আমি এত লো মেন্টালিটির মনে হয়? আই নো দ্যাট আই প্রোপোজড হিম বাট হি ক্যান্ট আ্যক্সেপ্ট। তারপর? আর কিছু বলেছি তাকে? সে আমায় রিজেক্ট করেছে দ্যান আমি আমার রাস্তায় আর আয়াত আয়াতের রাস্তায়।
মানে আয়াত কিভাবে ভাবতে পারলো যে আমি এমন করতে পারবো?
.
মাইশা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে জেসমিনের দিকে। এই চরিত্রটিকে দেখে যেন অবাকের ওপর অবাক হচ্ছে সে।
.
— ইউ আর টু মাচ লাকি মাইশা বিকজ ইউ ক্যান ফাইন্ড আ্য সাচ আ্য লাভলি পার্টনার। জানিনা আমি কখনো কি এমন কাউকে পাবো কি না !
.
মেয়েটি আসলেই খুব মিষ্টি প্রকৃতির। এতক্ষণ যেই চাপা সন্দেহটা মাইশা মনে আটকে রেখেছিলো জেসমিনের এভাবে ফ্র্যাংকলি কথা বলার জন্য তা অনেকটাই মিটে গিয়েছে। এখন আয়াতেরও এই ভুল ধারনাটি ভাঙাতে হবে।
.
পৃথিবীটা আসলেই অদ্ভুদ।মানুষ যা ভাবে তার অধিকাংশই সত্য হয় না।আর সম্পর্কগুলোও কেমন যেন হয় গোলমেলে; কিন্ত তার মাধুর্য অনেক। জেসমিনের বিষয়টাই দেখা যাক।আয়াত আর মাইশা যা ভেবেছিলো জেসমিন সেটাকে বাজিমাত করে এক নতুন সম্পর্কের সূত্রপাত করেছে ; চোখের সামনে হাজির করেছে নতুন অধ্যায়ের যার পরিসর খুবই অল্প । আর এই অল্প পরিসরের এই অধ্যায়টিই থাকবে আয়াত আর মাইশার অন্তিমের অপেক্ষায়।❤❤
.
~চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:৪৫ (শ্রীমঙ্গলে মাইশায়াত)
.
বাস থেকে নেমেই মাইশা অনুভব করতে পারছে চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।পূব আকাশে হালকা আলোর ঝলক দেখা যাচ্ছে আর তা খুবই সীমিত। শীতের তীব্রতা এত বেশি যে একটি ভারি সোয়েটারের ওপর পাতলা চাদরেও তা মানানো যাচ্ছে না। ফ্রেব্রুয়ারি মাসে এখানে যে এত ঠাণ্ডা পড়বে মাইশার মোটামুটি ছিলো তা ধারনার বাইরে।কোনোমতে নিজের শুষ্ক ঠোঁটযুগল হালকা নাড়িয়ে মাইশা বলে ওঠে,
.
–আয়াত! গতকাল রাতে তো হুট করে আমায় বাসে উঠিয়ে এখানে নিয়ে আসলে । এটা কোথায়?
.
–শ্রীমঙ্গল।
.
আয়াতের স্বতস্ফূর্ত উত্তরে শরীর হিমিয়ে ধরে মাইশার। গতকাল সায়েদাবাদ থেকে রাত ১০টায় বাসে উঠেছিলো আর এখন প্রায় ভোর সাড়ে পাঁচটা।আয়াতের মাথায় যে কি পরিকল্পনা চলছে এটা মাইশার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কোনমতে থমথমে গলায় মাইশা বলে ওঠে,
.
–ক..কি? শ্রীমঙ্গল? কিন্ত কেন?
.
–ঘুরবো তাই।
.
বাসটা অন্যরাস্তায় চলে গেলেও সে পথে করুন চোখে তাকিয়ে আছে মাইশা।বিয়ের আজ এতদিন হয়ে গেলো কিন্ত আয়াতের ভবঘুরে স্বভাবটা মোটেও পরিবর্তন করতে পারলো না সে। তবে আয়াতের সাথে ঘুরতে যে মন্দ লাগে ব্যাপারটি কিন্ত তা না। আজকে তাদের এই প্রেমের অধ্যায়ে নতুন একটি স্মৃতি যুক্ত হবে এটা ভাবতেই কৌতুহল চেপে বসে তার মনে।
.
এই নির্জন আবছা অন্ধকার পথে মানুষজন কম। দু চারটি দোকান খুলতে দেখা যাচ্ছে।আয়াত আর মাইশা একটি খাবারের দোকানে গিয়ে হালকা পাতলা কিছু খেয়ে নিলো।তারপর অপেক্ষা করতে লাগলো আকাশ পরিষ্কার হওয়ার।
.
আকাশ পরিষ্কার হওয়া মাত্রই একটা সি এন জি ভাড়া করে দুজনে রওনা হলো বাইক্কা বিলের উদ্দেশ্যে।শ্রীমঙ্গলের চমৎকার একটি বিল হলো বাইক্কা বিল। নামটি অনেকের কাছে অনেক রকম লাগলেও এর তাৎপর্য অনেক। শীতের সকালে অনেক অতিথি পাখির আগমন ঘটে এই বিলে।রাস্তাটি খুব একটা ভালো ছিলো না তাই যেতে অনেক সময় লেগেছে ওদের। তাছাড়া এত পরিমাণ কুয়াশা ছিলো যে দু হাত এগোলেই কিছু দেখা যায় না।তাই সি এন জি টাও চলেছে খুবই ধীরে ধীরে।
.
প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট পর তারা পৌঁছে যায় তাদের কাঙ্খিত স্থানে।বেশ সকাল হওয়ার কারনে মানুষ একেবারে নেই বললেই চলে। আয়াতের হাত ধরে টিকেট কেটে এগিয়ে যাচ্ছে মাইশা সেদিকে।
.
যতই এগোচ্ছে ততই চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে তার।কুয়াশামাখা পরিবেশে বিলের আবছা দৃশ্য চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে মাইশার চোখে। ক্ষণে ক্ষণে দেখা যাচ্ছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি যার সূত্র বেশিরভাগই দুজনের অজানা। আয়াত আনমনে বলে ওঠে,
–মাশাল্লাহ !
.
আসলেই ।সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতিকে অত্যন্ত নিপুণতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছে। গাছের প্রাণহীন পাতাগুলো ফাল্গুনের আমেজে নতুন পাতা সৃষ্টি করলেও এই কুয়াশা দেখে যে কেউই মনে করবে যে এটা পৌষ মাস। বিলের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে কিছুই দেখা যাচ্ছে না আর এটাই যেন এর সৌন্দর্যের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
.
–কেমন লাগলো মাইশা?
.
মাইশা এখনো উপভোগ করে যাচ্ছে এই দৃশ্যগুলি। মিহি কন্ঠে প্রতিউত্তরে সে বলে……..
.
–চমৎকার। বুঝাই যাচ্ছে পুরোই রিসার্চ করে এসেছো।
.
মাইশার একথা শুনে ঠোঁটে হাসির রেখা টানে আয়াত। বেশকিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে তারা বাইক্কাবিল ছেড়ে অন্য গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়।যেই রাস্তাটা এতক্ষণ কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিলো ; সকালের মিষ্টি রৌদ্দুর পড়ে তা অবলীলায় সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। দূরে দূরে দেখা যাচ্ছে দিগন্তজোড়া বিস্তৃত চক যা আরও নিপুণতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছে এই পরিবেশটিকে।মাইশা এত গভীরভাবে এই প্রকৃতিগুলো কখনোই উপভোগ করেনি।কেননা কখনো তার এমন করে ঘোরার সুযোগই হয়নি।এই আয়াত নামের মানুষটি যেই থেকে তার জীবনে এসেছে , তখন থেকেই প্রকৃতির এক সুপ্ত সৌন্দর্য অনুভব করার মতো ক্ষমতা লাভ করেছে সে। কেন…….কিভাবে ; সেটাই তার অজানা।
.
এবার তারা চলে যায় লাউয়্যাছড়া জাতীয় উদ্যানে। এই জায়গাটিতে আছে বাইক্কা বিল থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা পরিবেশ।মূলত গাছের অনন্য এক সম্মিলনের চমৎকপ্রদ প্রকাশ পেয়েছে এই স্থানটিতে।এভাবেই তারা এক এক করে গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট , চা বাগান , আরও অনেক স্থানে ঘুরে বেড়াতেই বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যে নেমে গিয়েছে।
.
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
.
বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যে নেমেছে। ঢাকার বাস রাত আটটায় ছাড়বে তাই এখন একটি ছোট্ট টিলার ওপর বসে থেকে শ্রীমঙ্গলের এক লুকায়িত দৃশ্য দেখে চোখ জুরিয়ে নিচ্ছে দুজনে। পশ্চিম আকাশের সূর্যটি যেকোনো সময়ে টুপ করে ডুবে যাবে লাল পাহাড় নামক এক ছোট টিলার অতল গহ্বরে। আয়াতের কাধে মাথা দিয়ে রেখেছে মাইশা। নিজের দুহাত দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে রেখেছে আয়াতের বাহু।
.
সত্যি ! আয়াত ওর জীবনে এসেছে পর থেকেই জীবনকে অন্যভাবে উপভোগ করা শুরু করেছে মাইশা। একসময় আদ্রাফকে ভালোবাসতো সে। মনেপ্রাণে ভালোবাসতো। কিন্ত আল্লাহ তার ভাগ্য আদ্রাফের সাথে রাখেনি তাইতো সে চলে গিয়েছিলো না ফেরার দেশে।
আর তার আধাঁরময় জীবনে যেন আলোর উৎস হয়ে আসে আয়াত। যাকে ছাড়া এখন একমুহূর্তও থাকতে পারবে না সে।
.
–আয়াত? আমায় এতো ভালোবাসো কেন?
.
আমার কথা শুনে একটা উষ্ণ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আয়াত।তারপর ডুবন্ত সূর্যের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে……..
.
–তোমার এই প্রশ্নটা যত সহজ তার উত্তর ততটাই কঠিন।এর অনেকগুলা কারন হতে পারে। এক হলো তোমায় দেখলেই কেন যেন মনে হয় তুমি শুধু আমার। দুই তোমার মায়াবী চোখ আর তিন হলো আদ্রাফের প্রতি তোমার ভালোবাসা।
.
মাইশা আর কিছু না বলে বিনিময়ে একটা মুচকি হাসি হাসে। আয়াতের সাথে নিজেকে আরও গভীরভাবে মিশিয়ে বলে ওঠে.
–অনেক ভালোবাসি তোমায় আয়াত !
.
আয়াত এবার মাইশার দিকে ফিরে নিজের খুব কাছে নিয়ে আসে ওকে। তাল সামলাতে না পেরে মাইশা আয়াতের মুখের সামনে পড়তেই থেমে যায়। আয়াত আলতো হাতে ওর মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলো কানের পেছনে গুজেঁ ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মাইশার মায়াবী মুখমণ্ডলের দিকে। আয়াতের কালচে বাদামী চোখে অন্য এক নেশা দেখতে পারছে যাতে তলিয়ে যাচ্ছে মাইশা।
মিহি গলায় আয়াত বলে ওঠে……
.
–আমিও অনেক ভালোবাসি তোমায় মাইশু । শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তোমায় ভালোবেসে যাবো।
.
একথাটা বলেই আয়াত মাইশার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দেয়।আশেপাশের প্রকৃতিটা এই পরিবেশটা আরও যেন মোহময় করে তুলেছে।বেশ কিছুক্ষণ পর মাইশার কপালের সাথে নিজের কপাল মিশিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলতে থাকে। মাইশাও চোখ বুজে আয়াতের প্রতিটা স্পর্শ অনুভব করেছে।আর এভাবেই এই শ্রীমঙ্গলে তারা জানান দিলো তাদের সুন্দর এক অনুভুতির……….❤
.
.
.
~চলবে~

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ