Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-১৮+১৯+২০

রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-১৮+১৯+২০

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:১৮+১৯ [আদ্রাফের অন্তিম অধ্যায়]
.
মাইশার ঘনঘন নিঃশ্বাসের শব্দটি আয়াতের বুকে তোলপাড় শুরু করছে। সারাঘরে পিনপন নিস্তব্ধতা। আয়াতের হৃদয়ের ধুকধুক শব্দ আর মাইশার ঘনঘন নিঃশ্বাসে ছেয়ে যাচ্ছে পুরোনো প্রেমের অধ্যায়ের অব্যক্ত আভাস।
আয়াতের কানে মাইশার একটা কথাই শুধু ভেসে আসছে,
.
”আদ্রাফ আর নেই ! ”
আয়াতের মনে খেলা করছে একরাশ প্রশ্নের সমাহার। এমন কি হয়েছে আদ্রাফের ; যার জন্য আজও মাইশার মনে আজও অনুভূতি রয়েছে। নিজের শুষ্ক ঠোঁটটি একটু জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নেয় আয়াত। কাঁপাকাঁপা গলায় সে বলে ওঠে ,
.
” আ-আদ্রাফ কো-কোথায়? মাইশা !”
.
মাইশা ঠোঁটচেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে। চোখ-নাক তার টুকটুকে লাল হয়ে আছে। মাইশার এরূপ দেখে আয়াতের হৃদয়ে যেনো বড় কোনো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কোনোমতে কান্না চেপে মাইশা বলে ওঠে…
.
” একটু বাহিরে যাই না? ওখানে গিয়ে বলি…আ-আমার না দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ! ”
” আচ্ছা। ”
.
.
সন্ধ্যা নেমেছে। পশ্চিম আকাশে হালকা লাল আভা দেখা যাচ্ছে। আশেপাশে ঠান্ডা হাওয়া বহমান।কলকলে নদীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে আয়াত আর মাইশা। মাইশা হাত ভাঁজ করে গোধূলী আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আয়াতের কালচে বাদামী চোখের দৃষ্টি সরাসরি মাইশার দিকে। মাইশার মুখে কিঞ্চিত হাসি থাকলেও চোখ দিয়ে অশ্রুর ধারা বয়ে যাচ্ছে।
.
” শুনতে চাও না আয়াত আদ্রাফের কি হয়েছিলো?”
.
” হুম….”
.
একটা লম্বা শ্বাস নেয় মাইশা।আবার হারিয়ে যায় অতীতের স্মৃতিতে।
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
অতীত
.
সময় যে কত দ্রুত পেরিয়ে যায় তা ধারনার বাইরে। আমার আর আদ্রাফের সম্পর্কটাও ঠিক তেমন হয়ে গিয়েছিলো। আমাদের প্রমে ছিলো যেমন খুঁনসুটি; তেমনি ছিলো পরিপূর্ণ ভালোবাসা। এইতো কদিন আগে আমার এইচ.এস.সির রেজাল্ট দেওয়ার সাথে সাথে আমাদের সম্পর্কের তিন বছর পূর্ণ হলো।
আমাদের ভালোবাসা না নব্বই দশকের ভালোবাসার মতো ছিলো যেখানে কোনো অশ্লীলতা ছিল না ; যেখানে নিজের অনুভূতির প্রমান দেওয়ার জন্য শরীর বিলিয়ে দিতে হতো না। আদ্রাফ অনেকবার পাগলামি করে রাতে আমার জন্য ছাদে অপেক্ষা করেছে , কখনো বারান্দায় মিহি কন্ঠে আমার জন্য গিটারের সুর তুলে গান গেয়েছে। আমি তার কান্ড দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যেতাম।
,
আমার খুব ইচ্ছে ছিলো আদ্রাফের সাথে এই রাতের শহর ঘোরার..কিন্ত আদ্রাফ সাফ মানা করে দিতো। সে বলতো…” তুমি এখনো অনেক ছোট। আমি চাই না আবেগের বশে আমরা কোনো ভূল করে ফেলি।” এভাবেই চলছিলো আমাদের ভালোবাসা।
.
আদ্রাফ অনার্স কমপ্লিট করে যেদিন চাকরি পেয়েছিলো না সেদিন বোধহয় আমার থেকে খুশি কেউ ছিলো না। আমি তখন তোরজোর করে ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
একদিন আদ্রাফ আমায় কল দেয়। সে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছে তার বাবা-মা কে নিয়ে আসতে। আমি জানি সে তার বাবা-মাকে কেন নিয়ে আসতে চাচ্ছে। তাই আমি বিনিময়ে চুপ থাকি।কিন্ত আমার সেই সিদ্ধান্ত যে আমার ভাগ্যের চক্র পাল্টে দিবে তা আমার ধারনাই ছিলো না।
,
সেদিন ছিলো বৃষ্টির রাত। বাইরে অঝোরে ধারায় বৃষ্টি পড়ছে। আব্বু-আম্মু এক দাওয়াতে গিয়েছিলো। বাড়িতে ছিলাম আমি আর নুহাশ ভাইয়া। আমি আমার রুমে পড়ছি তখন আমার ফোনে একটি কল এলো। আমি দেখি স্ক্রিনে আদ্রাফের নাম্বার ভেসে উঠছে। রাত বাজে সাড়ে আটটা এখন তো ওর বাসে থাকার কথা। আমি কলটি ধরলেই কানে অপরিচিত এক পুরুষের কণ্ঠ ভেসে আসে….
.
” আসসালামু আলাইকুম…”(অপরপাশে)
.
” ওয়ালাইকুম আসসালাম…জ্বী কে আপনি?”
.
”আপু ঢাকা টু ময়মনসিংহ রোডে একটা বাস এক্সিডেন্ট হয়েছে। এই মোবাইলের মালিকের অবস্থা অনেক খারাপ। আপনি ইমিডিয়েটলি উত্তরা এয়ারপোর্টের সামনে হাসপাতালে আসুন।লাস্ট নম্বর আপনার ছিলো তাই আপনাকে কল করলাম”
.
সাথে সাথে আমার হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায়। ফোন থেকে হ্যালো হ্যালো শব্দ এসেই যাচ্ছে কিন্ত আমি নিস্তব্ধ। এই পরিস্থিততে আমার স্নায়ু কাজ করা যেন বন্ধ করে দিয়েছে। তড়িঘড়ি করে আমি নুহাশ ভাইয়ের কাছে যাই। আমার অবস্থা দেখে সেও একটু ঘাবড়ে গিয়েছে। আতঙ্কিত কন্ঠে বলতে থাকে….
.
” কি হয়েছে মাইশা? তোমার এ অবস্থা কেন?”
ভাইয়া আমার আর আদ্রাফের সম্পর্কের কথা জানে না। কোনোমতে ভাইয়াকে বলি…
” ভা-ভাইয়া প্লিজ আমাকে ……হাসপাতালে নিয়ে চলো; প্লিজ ! আস্তে আস্তে সব তুমি জানতে পারবে।”
.
ভাইয়া আমাকে আর কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় উত্তরার উদ্দেশ্যে।
হাসপাতালের সামনে আসতেই এম্বুলেন্স আর নিউজ রিপোর্টারদের সমাগম দেখতে পারছি। আশেপাশে শুনতে পারছি হাজারো প্রিয় মানুষদেরকে হারানোর আর্তনাদ।নুহাশ ভাইয়াও তেমন কিছু বুঝতে পারছে না। এদিকে আমার অবস্থা করুন। বুকের ধুকধুকানির গতিটাও যেন চক্রবৃদ্ধিহারে বেড়েই চলছে। পা দুটোও দুর্বল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
.
হসপিটালের করিডোরে অসংখ্য রক্তাক্ত দেহ দেখতে পারছি । জানিনা এদের মধ্যে কয়জন না ফেরার দেশে চলে গেছে। হাজারো মানুষের হাহাকার আর আর্তনাদের শব্দে বারবার কেঁপে উঠছি আমি। ভয় হচ্ছে আমার আদ্রাফের জন্য। করুন চোখে নুহাশ ভাইয়ার দিকে তাকাই। দেখেই বুঝতে পারছি তার কাছে সবকিছু অস্পষ্ট লাগছে।
,
একবুক সাহস নিয়ে আবার কল দেই আদ্রাফের ফোনে। একবার রিং হতেই অচেনা ব্যাক্তিটি কল রিসিভ করে।
.
”হ্যালো আপু এসে পড়েছেন? প্লিজ চারতলার ওটির সামনে আসেন।”
আমি ভাইয়াকে নিয়ে সাথে সাথে সেখানে যাই। ওটির দরজা বন্ধ করা। দরজার গ্লাস দিয়ে আদ্রাফকে দেখতেই ভাইয়ার কাছে সবকিছু স্পষ্ট হতে শুরু করে। পাশেই দাঁড়িয়ে আছে সেই ভাইয়া যে আমায় কল করেছিলো।ডাক্তার এখনো বের হয়নি।
.
” লাইফ সাপোর্টে আছে আপু। বাঁচার চান্স কম।”
.
আমি অশ্রুসিক্ত চোখে তাকাই ওই ভাইয়াটার দিকে। মনে একরাশ ভয় বিরাজ করেছে আমার। আমার চোখে বারবার আদ্রাফের মিষ্টি হাসিটা ভেসে উঠেছে। মনে মনে আল্লাহ তায়ালাকে ডেকে চলছি আমি। এভাবে আশা হারালে চলবে না আমার।
.
প্রায় ১ ঘন্টা পর একজন নার্স বেরিয়ে আসে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে থাকি….
.
” ম্যাম…আ-আদ্রাফের কি অবস্থা? এ-এখন কেমন আছে? প্লিজ ব-বলেন।”
.
নার্স তেমন কিছু বললো না। শুধু মিহি কন্ঠে ঠোঁট নাড়িয়ে চেষ্টা করে বলে…
”আপু , পেশেন্ট এর সময় বেশি নেই। আপনাদেরকে ডাক্তার ভিতরে আসতে বলেছে।”
,
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি নার্স এর কথা শুনে । ভয়ে নুহাশ ভাইয়ার হাত খামচে ধরি। কাদতে কাদতে ভাইয়াকে বলি…
” ভাইয়া দেখো না এই নার্স কি আবোল-তাবোল বলছে। আদ্রাফ বলেছে ও আমাকে ছেড়ে যাবে না…..ও ঠিক হয়ে যাবে না?”
.
নুহাশ ভাইয়া নিস্তব্ধ। সে না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে কিছু করতে। এক পা এক পা করে এগোতে থাকি ভেতরের দিকে। বুকে কেউ যেন আমার হাতুড়ি পেটাচ্ছে। আমি আদ্রাফকে এ অবস্থায় দেখে থমকে যাই। ওর বুক-কপাল-নাকে রক্ত যেন লেপ্টে আছে। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে। কিছুক্ষণ আগেই তার জ্ঞান ফিরেছিলো। হয়তো ওর কাছে সময় আর বেশি নেই।
আমি কাপাঁকাপাঁ কন্ঠে বলে উঠি…
” আ-আদ্রাফ !”
পিটপিট করে চোখ খুলে আদ্রাফ। আমাকে দেখে ঠোঁটটা মলিনভাবে প্রসারিত করে ফেলে সে। চোখে খেলা করছে অনুভূতির মৃত্যু খেলা।দুর্বল কন্ঠে বলে উঠে,
.
” মা-মাইশা?”
.
আমি এবার সশব্দে কেঁদে দেই। আর পারছি না আমি এ বিষাক্ত সময়টাকে অতিবাহিত করতে। আমাকে এভাবে কাঁদতে দেখে আদ্রাফের চোখের থেকেও জলের ধারা বেরিয়ে আসতে থাকে। ঠোঁট চেপে কান্না আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে আমি বলে উঠি,
,
” আদ্রাফ তুমি না বলেছিলে আমার ছেড়ে যাবে না ; নিয়তি কেন আমাদের সাথে এমন করলো?”(কাদতে কাদতে)
.
আদ্রাফের চোখেও দেখতে পারছি একরাশ হাহাকার। মলিন কন্ঠে সে বলে ওঠে…..
.
” আল্লাহ তায়ালা চায়নি মাইশা যে আমরা এক হই। হয়তো সে তোমার জন্য অন্য কাউকে রেখেছে।”
,
” আমার চাই না কাউকে…..আমার শুধু তুমি হলেই চলবে। আমাদের টোনাটুনির সংসার তবে কি আর করা হবে না?”
.
আদ্রাফ চোখের কোণ দিয়ে একফোটা অশ্রু বেরিয়ে আসে। ঘনঘন নিঃশ্বাস নেওয়ার চেস্টা করছে সে। তার নজরকাড়া কালো চোখযুগল মলিন হয়ে গেছে। ঠোঁটের ম্লান হাসিটাও তোলপাড় করে তুলছে আমার বুক। কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলে সে,
.
” আল্লাহর কসম করো মাইশা ভুলেও নিজের কোনো ক্ষতি করবে না। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম ; কিন্ত আল্লাহ বোধহয় তা চান না। যদি এমন কাউকে পাও যে তোমায় সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসবে তাকে তুমি সবসময় আগলে লাগবে।(শ্বাস নিয়ে) আমার মিহির আপুকেও সামলে নিও। ভা-ভালোবাসি মাইশা ! অ-অনেক ভা-ভালোবাসি !”
.
আস্তে করে চোখ বুজে ফেলে আদ্রাফ। তার ভারী নিঃশ্বাসও এখন মিলিয়ে যায় হাওয়ার তালে। ডাক্তার একপাশে করুন কন্ঠে বলে ওঠে…
.
”He is Dead ! ”
,
বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি। আদ্রাফের বুকে মাথা দিয়ে নিঃশব্দে কেদে উঠি। ডাক্তার নার্সরাও এ দৃশ্য দেখে চোখের পানি ফেলছেন।আমি সেসব কিছু পরোয়া না করে আদ্রাফের ঠোঁটে গভীরভাবে একটা চুমু খাই। আমাদের অসীম ভালোবাসার এতটুকু হলেও সে প্রাপ্য ছিলো।
.
বাহিরে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ বৃষ্টির সাথে আমার ভালোবাসাটাও শুধু অতীতের এক অধ্যায় হয়ে গেলো। রয়ে গেলো হৃদয়ের এক বদ্ধ কোণায়।আদ্রাফ আমার জীবনের এক মধুময় স্মৃতি যাকে নিয়তি আমার কাছে আগলে রাখতে দেয়নি। কিন্ত এর মানে এই নয় আদ্রাফের প্রতি আমার ভালোবাসা কমে গিয়েছিলো। আর এটাই ছিলো আমার আর আদ্রাফের অন্তিম পরিণতি। আমাদের অসমাপ্ত গল্প।
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
.
টুপ করে এক ফোটা জল গরিয়ে পড়ে আয়াতের। এতক্ষণ অতীতে ডুবে গিয়েছিলো সে। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়েছে। জোছনা আকাশ অপরূপ রূপ ধারন করেছে। আর আয়াত সেই আলোতে দেখতে পারছে মাইশার অশ্রুসিক্ত চোখ।
মাইশা বলে ওঠে…..
.
” আজ চারবছর হয়ে গেলো আদ্রাফের স্মৃতি নিয়ে কাটিয়ে যাচ্ছি আমি।”
.
একথাটা বলে আয়াতের কাছে এসে ওর বুকে আস্তে করে মাথাটা নেতিয়ে দেয় সে। আয়াত নিশ্চুপ। আদ্রাফের এই পরিণতি যেখানে সে নিজেই মানতে পারছে না সেখানে মাইশা কিভাবে ছিলো চার বছর ধরে?
.
” এই কে এখানে?”
.
আয়াত আর মাইশা সেদিকে তাকায়। তিন-চারজন সুঠামদেহী গ্রাম্য পুরুষ টর্চ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে একজন বলে উঠে।
.
” তোমরা ইকবাল হোসেনের নাতি-নাতনি না? এতরাতে এখানে কি করছো?”
,
‘আয়াত আর মাইশা দুজনেই নিশ্চুপ।
.
” কি মনে করো তোমরা আমরা কিছু বুঝি না? এটা তোমাদের শহর না গ্রাম। তোমরা অবিবাহিত ছেলেমেয়ে রাত-বিরাতে আকাম কুকাম করে বেড়াবা তা কি হবে? খুব শীঘ্রই তোমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করবো।”
.
আয়াত আর মাইশা দুজনেই উচ্চস্বরে বলে ওঠে….
.
” বিয়ে? ”
.
.
#চলবে

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:২০
বড় ঘরটিতে পিনপন নীরবতা। মাইশা আর আয়াতকে কেন্দ্র করে রুমটিতে বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা। কেউ ওদের দিকে ক্ষীপ্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তো কেউ তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে।
.
মাইশার খুব অস্বস্তি হচ্ছে সবার এভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকার কারনে। কিন্ত আয়াতের মধ্যে অস্বস্তির বিন্দুমাত্র রেশ দেখা যাচ্ছে না। যেন বিষয়টা ভালোভাবেই উপভোগ করছে সে। নীরবতা কাটিয়ে গ্রামের একজন মাইশার নানুকে বলে ওঠেন….
.
” আম্মা আমাদের ক্ষমা করবেন আপনাদের না জানিয়ে ওদের এভাবে বিয়ে দেওয়ার কারনে। আসলে মোড়ল সাহেব ওদের অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলো। আর উনি এসব প্রেম-ভালোবাসা পছন্দ না করার কারনে এভাবে বিয়ে দিতে হলো।”
.
মাইশা এবার চেঁচিয়ে বলে ওঠে…
.
” কারো বুকে হালকা করে মাথা লাগানো কি আপনাদের কাছে অপ্রীতিকর মনে হয়? ”
.
” একটা চড় দিবো বেয়াদপ কোথাকার….একে তো ঝামেলা পাকিয়ে এসেছো আবার বড়দের মাঝখানে চেঁচিয়ে কথা বলছো ।” [ মাইশার আম্মু]
.
মাইশা আবার নিজেকে গুটিয়ে ফেলে। নায়িকা সাবানার মতো কাদঁতে মন চাচ্ছে তার। কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এরা। কি না কি বুঝেছিলো তার উপর ভিত্তি করে আয়াতের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলো। মাইশার নানি এবার বলে ওঠে……
.
” থাক যা হবার হয়েছে। ওরা শহরের ছেলেমেয়ে তো ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি। আর তোমরাও কাজটা ঠিক করো নাই। কত ইচ্ছা ছিলো আমার,ধুমধাম করে আমার নাতি-নাতনিদের বিয়ে দেবো কিন্ত ওরা যে নিজেরাই প্রেম-পিরিত করে বসবে তা কি আমি জানতাম?”
.
মাইশা আবারও চেঁচিয়ে ওঠে…..
.
” নানু এমন কিছুই না !”
.
” তোকে না মাত্র চুপ থাকতে বললাম? আর একটা কথাও বলবি না !”
মাইশার আম্মু রাগী কন্ঠে মাইশাকে এ কথা বলতেই সে আবার চুপ হয়ে যায়। এই কোন জ্বালায় পড়েছে সে?
.
” আচ্ছা তোমরা এখন যাও। যা হবার তা তো হয়েই গিয়েছে…..” [ নানু]
.
” ঠিক আছে আম্মা।”[বলেই চলে যায় তারা]
.
.
এবার পরিবারের সবাই ওদের দিকে কড়া চোখে তাকায়।
.
” আয়াত ? তুই বল্….কবে থেকে তোদের চলছিলো?”[ আরিয়াপু]
মাইশা গোল গোল চোখ করে কিছুক্ষণ আরিয়াপুর দিকে তাকিয়ে আয়াতের উত্তর জানার জন্য সেদিকে দৃষ্টি দেয়। আয়াত নিষ্পাপ শিশুর মতো বলে ওঠে….
.
” নাউযুবিল্লাহ আপু ! তোমার আদরের ভাই কি কখনো এমন করতে পারে? এইসব প্রেম-ট্রেম যদি আমারে দিয়ে হতো তবে কবে বিয়ে করে তোমারে ফুপির ডাক শুনিয়ে ফেলতাম।”
.
” আস্ত একটা বেশশরম হইছস তুই ! আমি জানি তোরে দিয়ে সব কিছুই সম্ভব।”
.
আয়াত বিনিময়ে কিছু বলে না। মাইশার এবার রাগে দুঃখে আয়াতের মাথা ফাটাতে মন চাচ্ছে। সবাই তো এটাই মনে করছে যে ওরা দুজন একে অপরকে ভালোবাসে। কিন্ত আসলেই কি তাই?
.
”আচ্ছা এখন এসব কথা বাদ দাও। যেহেতু আনএক্সপেকটেডলি হোক ; ওদের বিয়ে হয়েই গিয়েছে। তাই এসব কথা বাদ দিয়ে ওদের রাতের ব্যবস্থা করো।”[ আয়াতের বাবা]
.
মাইশা ওর খালুর কথার মানে বুঝতে পেরে আবার চিল্লিয়ে ওঠে…..
.
” না ! আমি আয়াতের সাথে শুবো না।”
.
” কেন গো? প্রেম তো করেছিস ঠিকই তবে ওর সাথে শুবি না কেন?” [আরিয়াপু]
মাইশা এবার আয়াতের দিকে তাকায় । আয়াত সাথে সাথেই ওকে বাকা হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারে। মাইশার তো বুক ধকধক করছে। এই ছেলে এক নাম্বার লুচুবাঘ। আর এই লুচুবাঘটাই ওর কপালে জুটলো। কোনোমতে ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলে…..
.
” আ-আসলে…আ-আপু। আমি এখনো মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড না। প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো। আই নিড সাম টাইম !”
.
মাইশার এ কথাটি সবার কাছেই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে। তারপর নুহাশ ভাইয়া বলে ওঠে……
.
” মাইশা ঠিক বলেছে। বিয়েটা তো ওদের ওই পাগলা মোড়লে হুট করেই করিয়ে দিলো। ওদের কিছু টাইম দেয়া উচিত। মাইশা ! তুমি পৃথার সাথে শুয়ে পড়ো।”
.
পৃথার কথা মনে হতেই মাইশা ওর দিকে তাকায়। পৃথা ঠোঁট উল্টে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। মাইশার খুব খারাপ লাগছে ওর জন্য। কেননা পৃথা আয়াতকে পছন্দ করতো। মাইশা সেদিকে যাবে তখনই আয়াত মাইশার কানে ফিসফিসিয়ে বলে দিলো ,
.
” মাইশুপাখি যা হয়েছে মেনে নাও। অতীতকে এককোণে বদ্ধ করে আমাকে জায়গা দিও কেমন? আজ বাসর হলো না তো কি হয়েছে……পরবর্তীতে তোমায় ছাড়ছি না।”
মাইশা জমে পাথর হয়ে গিয়েছে। আয়াত সেদিকে পরোয়া না করে সিটি বাজাতে বাজাতে আস্তে করে চলে যায়। মাইশার মনে চলছে প্রশ্নের খেলা। আয়াত কি তবে তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে শুরু করেছে?
.
মাইশা আর তেমন কিছু না ভেবে পৃথা আর ওর বন্ধুদের নিয়ে নিজের ঘরে যায়। পৃথাকে খাটে বসিয়ে মাইশা ওর মুখোমুখি হয়ে বসে। ধীরকন্ঠে বলে
.
” পৃথা?”
.
পৃথা এবার ঠোঁট উল্টিয়ে কাঁদা শুরু করে দেয়। হেঁচকি তুলতে তুলতে বলতে থাকে….
.
” দোস্তোওওও…..তুই এটা করতে পারলি? আয়াত ভাইয়াকে আমি তোর দুলাভাই বানাতে চেয়াছিলাম আর তুই তাকে আমার দুলাভাই বানিয়ে দিলি😭😭😭….”
.
পৃথার কথা শুনে ইনায়া, আনান , সামাদ সবাই কপালে হাত দিয়ে বসে আছে । পৃথা আবার বলতে থাকে……..
.
” আয়াত ভাইয়া আমার ১০২ নম্বর ক্রাশ ছিলো। ভেবেছিলাম তাকেই আমার লাস্ট ক্রাশ বানাবো…….তবে আমি এত খারাপ না যে নিজের কলিজার থেকে তার জামাই কেড়ে নিবো। আমি আয়াতকে দুলাভাই বলেই ডাকবো।”
.
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সবাই। বন্ধুত্ব বিষয়টাই এমন যেখানে ট্রেজেডি , কমেডি , লাভ , ইউনিটি সবই থাকে। এটাই বন্ধুত্বের সারমর্ম যার গুরুত্ব হয়তো সবাই বুঝে না।
.
🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂🍂
.
সকালের মিষ্টি রোদ উঠোনে বসে উপভোগ করছে মাইশা। এলোমেলো রশ্মিগুলোর সাথে অবাধে খেলতে ব্যাস্ত মাইশার খোলা চুল। শীতের সকালে এক কাপ দুধ চা খুব ইচ্ছে করছিলো তার খেতে। কিন্ত বড্ড আরামপ্রিয় মানুষ সে। দরকার পড়লে সে চা খাওয়া বন্ধ করবে কিন্ত রান্নাঘরে সে কিয়ামত হলেও চা বানাতে যাবে না। তখনই তার কানে ভেসে আসলো কিছু উচ্চধ্ধনি…..
.
” মাইশা……তাড়াতাড়ি এদিকে আয় !”
.
আম্মু কন্ঠ এখন মাইশার কাছে বাজখাই গলার মতো লাগছে। কত আরামসে উঠোনে বসে আরাম করছিলো সে। আম্মু বকবে বলে সে উঠে রান্নাঘরের দিকে গেলো….
.
” কি হয়েছে?”
.
[মাইশার হাতে এককাপ কফি দিয়ে] ” যা এই কফিটা আয়াতকে দিয়ে আয় ….এখনো ঘুমাচ্ছে ও ।”
.
” আমাকে তো জীবনে এমনে কফি দাও নাই তাহলে ওই হুতুমপেচাঁরে দিতাসো কেন? আর আমি ছাড়া আর কোনো মানুষ নাই ওকে কফি দিয়ে আসবে?”
.
বিরক্তি ভাব নিয়ে কপালে হাত দেয় রাহেলা বেগম।
.
” হায় ! হায় ! কি করবো এই মেয়েকে নিয়ে আমি? নামেই বিয়ে হয়ে গেছে এই মেয়ের ; হাতে-পায়ে বিন্দুমাত্র বড় হয়নি। আ্যই ; তুই কি আজীবনই এমন থাকবি? বিয়ের পরেও যদি মায়ের হাতে মাইর খেতে না চাস তবে এক্ষুনি এই কফি নিয়ে দূর হো।”
.
মাইশা তড়িঘড়ি করে কফি নিয়ে চলে যায় ওর মায়ের চোখের সামনে থেকে। এখন ওর উদ্দেশ্য হলো আয়াতের রুম।
আয়াতের রুমের দরজার সামনে ১ মিনিট প্রায় হয়ে এলো মাইশা দাঁড়িয়ে আছে। কেন যেন বেশ লজ্জা আর ভয় বিরাজ করছে তার মনে। একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে সে বিড়বিড়িয়ে বলে…
.
” কূল মাইশু….আয়াতকে এত ভয় পেলে চলবে না !”এই বলে আস্তে করে দরজা খুলে রুমে ঢুকে যায়।
.
রুমটা মোটামুটি পরিপাটি। কারন বেশিরভাগ ছেলেরাই অগোছালো থাকে; তবে আয়াত তেমন না। উত্তরের জানালাটি খুলে থাকার কারনে রুমটি বেশ ঠান্ডা হয়ে আছে। ক্ষণে ক্ষণে হাওয়ার তালে উড়ে বেড়াচ্ছে জানালার লালচে কমলা পর্দা। আর আয়াত তার খাটে আপাদমস্তক কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন।
.
একপাশে কফির কাপটি রেখে কাপাঁকাপাঁ হাত দিয়ে ডাকতে থাকে,
” আয়াত ?”
.
আয়াত কোনো সাড়া দেয় না । আড়মুড়িয়ে মাইশার দিকে ফিরে কম্বল মুড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
.
” আয়াত? উঠো । আম্মু তোমায় উঠতে বলেছে।”
আয়াতের আবারো কোনো সাড়াশব্দ নেই। মাইশা বিরক্তি নিয়ে চলে যেতে নিলেই আচমকা তার হাত টান দিয়ে আয়াত মাইশাকে কম্বলের মধ্যে নিজের সাথে আবদ্ধ করে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।
উত্তুরে হাওয়ায় ঘরের পর্দাগুলো খেলা করছে। সাথে ধুকধুকানিটাও ক্রমশ বেড়ে উঠেছে মাইশার।হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেলো তা বুঝে উঠতে বেশ সময় লেগেছে তার। আয়াত আস্তে করে তার নাক দিয়ে মাইশার গলায় ও ঘাড়ে স্লাইড করে যাচ্ছে।
.
খাটের পাশে থাকা জানালাটি দিয়ে তীর্যকভাবে রৌদ্দুর আছড়ে পড়ছে আয়াত আর মাইশার শরীরে। আয়াত ঘোর লাগা কন্ঠে বলে উঠে……
.
” মাইশুপাখি ! তোমার গলার নিচে এই লাল তিলটা সত্যি আমার পাগল করে দেয়। তুমি তো এখন আমার অর্ধাঙ্গীনি ; তোমার তিলটাতে নিজের ভালোবাসার স্পর্শে ভরিয়ে দিলে খুব কি ক্ষতি হয়ে যাবে?”
.
এই ঠান্ডা পরিবেশে আয়াতের উষ্ণ নিঃশ্বাস আর নেশামাখানো কন্ঠে অদ্ভুদ অনুভূতি জেগে উঠছে মাইশার। আচ্ছা আগে তো তার বেশ অস্বস্তি লাগতো কিন্ত এখন এমন কেন অনুভূত হচ্ছে তার? এটাই কি তবে কবুল বলার ক্ষমতা?❤
.
মাইশার লাল তিলটার আশেপাশে আস্তে করে ঠোঁট স্লাইড করতে থাকে সে। তার খোঁচা খোঁচা দাঁড়িগুলো বারবার মাইশার গলায় ঘাড়ে বিধছে।আয়াত মিহি কন্ঠে বলে ওঠে….
.
” আদ্রাফের জায়গা আমি চাই না মাইশা ; আমি আমার জায়গাটা চাই। আমি বলবো না তোমায় আদ্রাফকে ভুলে যেতে ; আমি বলবো তোমার হৃদয়ে আমার জায়গা দিতে। আদ্রাফ চলে যাওয়ার পর তোমার জীবনে যে আঁধার নেমে এসেছিলো আমি চাই সেখানে তোমার রৌদ্দুর হয়ে থাকতে।রৌদ্দুরটা কি আমার নামে দিবে মাইশুপাখি🍂?”
.
.
#চলবে

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ