Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"রক্তিম চোখরক্তিম চোখ (পর্বঃ৪, ৫ ও ৬)

রক্তিম চোখ (পর্বঃ৪, ৫ ও ৬)

কারণ সামনে ইহরাম। ইহরাম হলো ইজহারের ভাইয়ের কলিজার বন্ধু নুরের ৭ বছরের বড় বয়সে। ইজহারের কাছে ভয়ের আরেক নাম ইহরাম। ছোটবেলা থেকে ইরহাম নুরের কোনো ছেলের সাথে মিশা পছন্দ করে না। যতবারই কোনো ছেলের সাথে মিশেছে ততবারই এই ছেলেটা তাকে বকাঝকা দিয়েছে এমনকি চড়ও মেরেছে। আর আজকে তো অভ্রকে জড়িয়ে ধরেছে সেই ভয়েই কাপছে।

কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে ইরহাম বলে,
এখনই চুপচাপ বাসায় যাবি। আর তোমাকে
আমি পরে দেখে নিব। আমার এখন ভার্সিটিতে
ইমারজেন্সি যাওয়া লাগবে তাই বেঁচে গেলি।

ইরহাম রেগে গেলে তুই-তুমি মিক্স বলে,,,
ইজহার মনে মনে আল্লাহর শুকরিয়া করে অভ্রকে নিয়ে বের হয়ে পড়লো। কিন্ত গাড়িতে উঠার পর অভ্রের একটা কল তার একটি কাজ পড়ে গেছে বলে সে নেমে চলে যায়। ইজহারও ড্রাইভারের সাথে বাসায় চলে যায়। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে যায়।

ঘুম ভাঙে ভাইয়ের চেচামেচির আওয়াজে। হল রুমে যেয়ে দেখে অভ্রের দু হাতে ব্যান্ডেজ এবং ভাইয়া ফোনে কার সাথে চেচামেচি করছে। অভ্রের এ অবস্থা দেখে নুর দৌড়ে অভ্রের কাছে গেল। জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো কে জানি অভ্রকে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মেরেছে আর ভাইয়া সে ব্যপারেই কমিশনারের সাথে কথা বলছিলো।

তারপর সারভেন্টস্ অভ্রকে রুমে নিয়ে গেল। ঠিক তখনই বেল বেজে উঠলো। খুলে দেখলো কুরিয়ার বয় সে বলল নুরের নামে একটা বক্স এসেছে। নুর বক্স নিয়ে সোফায় বসে বক্স খুলল। দেখলো ৫ টা কেডবেরি সেলিব্রেশন। কিন্ত বক্সের গায়ে সেন্ডারের নাম নেই। হঠাৎ খেয়াল করলো বক্সের ভিতরে ছোট একটা আরটিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার বুকেট তার নিচে একটা ছোট্ট চিঠি।
চিঠিতে লিখাছিল,

চলবে

#রক্তিম_চোখ
#পর্বঃ_৫
#Ipshita_Shikdar

চিঠিতে লিখাছিল,

মায়াপরী,

তোমার উপর বড্ড রাগ হয়েছিল আজ। কিন্তু তোমাকে তো কিছু করতে পারবো না তাই ছেলেটাকেই শাস্তি দিলাম।
সুতরাং আমার কথা নিজের অন্তরে গেঁথে নেও আর কখনো যাতে কোনো ছেলের কাছাকাছি না দেখি কারণ কথা
তুমি শুনবেনা শাস্তি সে পাবে।

ইতি,
রক্তিম চোখ

এভাবেই শুরু হয়েছিল ইজহারের জীবনে রক্তিম চোখের অস্তিত্ব।

বর্তমানে___

ইজহারের আজ আঠারো তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান। বৃষ্টি বিলাশ ভবনও আজ এই আনন্দ পালন করছে।
( ওহ বলা হয়নি এ বাড়ির নাম রাখা হয়েছিল ইজহারের নামে। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কি করে? ইজহারের পুরো নাম ইজহার নূর বৃষ্টি। নামটা তার বাবা রেখে ছিল কিন্তু কিছু কারণ বসত নামটা মুছে ফেলে অয়ন বোনের জীবন থেকে। কারণটা সামনে জানবেন)

সম্পূর্ণ ভবনটি তাজা কালো গোলাপ, বেলি, ডেইজি ও টিউলিপ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
( অবাক লাগছে না এ ধরনের ফুল তাও তাজা দিয়ে ঘর সাজানো তে। আসলে ইজহারের এই ফুল অত্যন্ত প্রিয় তাই অয়ন শুধু এই ফুলগুলোর একটা বাগানই করে রেখেছে বাড়ির পিছনের খালি জমিটা কিনে।)

অয়ন সারাদিন অনুষ্ঠানের কাজে দৌড়াদৌড়ি করছে। সবশেষে রেডি হয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে ভাবনার সাগরে ডুব দেয়।

অয়নঃ ভাবা যায় আমার পিচ্ছি সোনার আজ ১৮ই জন্মদিন। বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আমার পিচ্ছিটা আর পিচ্ছি নেই। আচ্ছা ওর তো নিজের জীবন নতুন করে সাজানোর সময় চলে এসেছে। কিন্তু ও চলে গেলে আমি কী করে থাকবো….. (মনে মনে এসব ভাবতে ভাবতেই চোখে জল চলে এলো)

এইদিকে ইজহার যায় ভাইয়ের কাছে। সে বুঝতে পারছেনা কোন ড্রেসটা পড়বে। ব্লাক নাকি হোয়াইট? ৩টা বছর ধরে রক্তিম চোখের অত্যাচারে সবসময় আতঙ্কিত থাকলেও এই দিনটায় শুধুই আনন্দ আর উত্তেজনা কাজ করে।

অয়নকে বারান্দায় গভীর ভাবনায় ডুবে থাকতে দেখে ও নিঃশব্দে বারান্দায় যেয়ে অয়নের পিছনে দাড়ায়।

ইজহারঃ ভাইয়া!
( কাধে হাত রেখে)

অয়নঃ হুম!
(হঠাৎ ডাক পড়ায় নিজের অশ্রু গুলো লুকানোর চেষ্টা করে)

ইজহারঃ ভাইয়া তুমি কান্নু কর কেন? তোমাকে কান্না করলে একদম ভালো লাগে না। তুমি না আমার সুপার হিরো। তারা কি কাদে বলো!
(অয়নের চোখের পানি মুছে বাচ্চাদের মতো নাক টেনে টেনে)

অয়নঃ নারে পিচ্ছি কাদি নারে ভাবছিলাম তুই তো বড় হচ্ছিস কয়েক দিন পর তোর সংসার হবে। তখন তোকে ছাড়া আমি কি করে থাকবো সোনা!
(ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে আবেগাপ্লুত হয়ে)

ইজহারঃ নাহ ভাইয়া আমি কোথাও যাবো না তোমাকে ছেড়ে। তুমি বলো আমাকে দূরে তোমাকে ছেড়ে। তুমি বলো আমাকে দূরে যেতে দেবে না কখনো!
(জোরে জোরে কাদতে কাদতে)

অয়নঃ আরে পিচ্ছি কাদছিস কেন? আমি তো এমনেই বললাম। তুই কোথায় যাবি আমাকে ছেড়ে, আমি কি তোকে ছাড়া থাকতে পারি! কান্না থামা তাড়াতাড়ি!
(বোনকে কাদতে দেখে কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে)

ইজহারঃ সত্যি তো!
(কান্না থামিয়ে ভাঙা কণ্ঠে)

অয়নঃ হুম! এবার বল কি জন্য এসেছিলি?

ইজহারঃ ও হ্যাঁ ভুলেই তো গিয়েছিলাম! ভাইয়া আমি অনেক ক্যনফিউজ, কোনটা পড়বো ব্লাক নাকি হোয়াইট?

অয়নঃ উফ পিচ্ছি! কবে যে বড় হবি! ব্লাক পড় তাহলে। (কি সব ভাবছিলাম আমি! আমার পিচ্ছি তো ছোটই আছে। সেই আগের পিচ্ছি যার কিনা একটা ব্যাগ কিন্তু ভাইয়ার মতামত লাগে- মনে মনে)

ইজহারঃ ওকে ভাইয়া! তাহলে আমি রেডি হয়ে আসি।

অয়নঃ যা! যা! তাড়াতাড়ি যা! দেরি হয়ে যাবে অলরেডি ৭টা বাজে।

তারপর আর কি ইজহার দিল এল দৌড়।

ইজহারের এক্সাইটমেন্টের ১২টা না না ১৫টা বাজাতে আসছে কেউ!

চলবে,,,

#রক্তিম_চোখ
#পর্বঃ৬
#Ipshita_Shikdar(samia)

পার্টিতেঃ

সব গেস্ট এসে পড়েছে। অয়ন সব গেস্টদের ওয়েলকাম করছে। তার বোনের আঠারো তম জন্মদিন সে চায় না কোনো কমতি রাখতে।
অন্যদিকে সবাই এসে পড়লেও ইজহারের খবর নাই। বলে না যার বিয়ে তার হুশ নাই পাড়া-পরশির ঘুম নাই। কিছুটা সেই অবস্থাই।
৮টা বাজে কিন্তু ইজহারের খবর নেই। প্রত্যেকটা গেস্ট নূরের অপেক্ষায় কারণ ঠিক ৮টা ৩০ এই প্রতি বছর নূর কেক কাটে।
(নূরের জন্ম হয় ৮টা ৩০ এ যে কারণে এই সময়েই সে কেক কাটে)

অবশেষে সকলের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এসেছে ইজহার। ইজহার আসতেই বাড়ির সব লাইট অফ করে দেয়া হয় শুধু স্পট লাইটটিই থাকে। সেই স্পট লাইটটি ফেলা হয় ইজহারের উপর।

ইজহার কে নামতে দেখে সবাই হা করে তাকিয়ে থাকে। একজনের হাত থেকে জুসের গ্লাস পড়ে যায় তো একজনের হাত থেকে খাবার সহ স্পুন পড়ে যায়। আসলে ইজহারকে লাগছেই এতোটা হৃদমোহিনী।

ইজহারের গায়ের রং শ্যামা হলেও হলদেটে। হলদে গায়ে কালো রঙের বারবি গাউনটি ফুটা উঠেছে। কিন্তু সবচেয়ে বেস্ট বেপার হলো ইজহার উশৃঙ্খল কিছু করেনি এখনকার কিছু আলট্রা মডার্ন মেয়েদের মতো। গাউনের সাথেও ওরনা নিয়েছে। যার ফলে কিছুটা ট্রেডিশনাল লুকও আসছে ওয়েস্টার্ন ড্রেসাপে যার কারণে আরও ইউনিক লাগছে তাকে।
তার সাথে কালো পাথরের দুল ও ব্রেসলেট। ডার্ক ব্লেক চুলগুলো সোজা সিথি করে হাফ কার্ল করা। আর ম্যাট মেকআপের সাথে সফট স্মোকি আইস এন্ড লাল টকটকে ম্যাট লিপস্টিক। অসাধারন লাগছে এক কথায়।

ইজহারের কাছে গিয়ে দাড়িয়ে হালকা হাগ করে অয়ন।

অয়নঃ ওয়েলকাম কাম মাই প্রিন্সেস। কেমন লেগেছে ডেকোরেশন?

ইজহারঃ অনেক ভালো। জাস্ট ওয়াও। থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাইয়া।
(মাইক হাতে হালকা হাগ করে)

অয়নঃ হে প্রিন্সেস! ডোন্ট সে থ্যাংক ইউ। ইউ আর মাই হার্ট মাই ডারলিং সো ইটস মাই রেসপনসিবিলিটি টু কিপ ইউ হ্যাপি। এম আই রাইট অর এম আই রাইট জেন্টাল ম্যান এন্ড অম্যান?

গেস্টঃ অফ কোর্স রাইট।
(সবাই চিৎকার করে জবাব দেয়)

অয়নঃ এজ ইউ অল নো দেট টুডে ইজ ভেরি স্পেশাল টু মি সো আই ওয়ান্ট টু শেয়ার সাম অফ মাই বিউটিফুল মেমরি উইথ ইউ। আজ থেকে আঠারো বছর আগে এই দিনে আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার পিচ্ছি এই দুনিয়ার মুখ দেখেছিল।
(একটা স্লাইড শো শুরু হয় স্ক্রিনে)
তখন ৬ বছরের আমি। হঠাৎ আম্মির ঘর থেকে এক বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। এক আন্টি আম্মির ঘর থেকে একটা জীবন্ত পুতুল নিয়ে আসে। আমার কোলে দিয়ে বলে তোর বোন।
(সেই মুহূর্তের ছবি দেখায় স্ক্রিনে)
তুই হাত-পা গুলো নাড়াচাড়া করছিল। মনে হচ্ছিলো একটা ছোট্ট পরী নাচছে। তুই চুপচাপ থাকলেও কিছুক্ষণ পরই আবার শুরু হয়ে গেলি ভ্যা ভ্যা করে। আন্টি তখন আমার কোল থেকে নিয়ে থামানোর চেষ্টা করলো কিন্তু তুই থামবি কি আরও কান্না জুড়ে দিলি।
জানি না ৬ বছরের ছোট্ট শিশু মনে কি ভাবনা আসলো আন্টির থেকে তোকে জোর করে নিয়ে কোলে নিয়ে হাটতে লাগলাম। তুইও কি সুন্দর করে আমার কোলে ঘুমিয়ে পড়লি।
(সেই মুহূর্তের ছবি শো করলো)
সবাই তো অবাক। আম্মি অসুস্থ থাকায় সেদিন রাত খাওয়ানো বাদে তুই আমার কাছেই থাকলি। পরের দিন সকালে আম্মি সুস্থ হলে আমাদের তার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। আম্মি আমাকে তুই কোলে থাকা অবস্থায় কোল নিলো। (সেই মুহূর্তের ভিডিও)
আম্মিঃ জানিস ও কে অয়ু?
অয়নঃ ও আমার পিচ্ছি সোনা বোন। দেখানো আম্মি পুতুল না পুরো?
আম্মিঃ দেখতে হবে না চৌধুরী বাড়ির মেয়ে। তোর দাদির চেহারার তেজটাই পেয়েছে। শুন অয়ু তোকে আজকে অনেক জরুরি কথাগুলো বলবো। জানি তোর এখনো এসব বুঝার সময় হয়নি তবে করার কিছুই নেই তুই এখন বড় ভাই হয়েছিস তোর অনেক দায়িত্ব বুঝলি?
অয়নঃ কি দায়িত্ব আম্মি?
আম্মিঃ এই যে তোর পুতুল টা সে তোর ছোট্ট বোন। আজ থেকে তার সব দায়-দায়িত্ব তোর। তার হাসি রক্ষা, তার কান্নার দায় তোর, তার সকল ইচ্ছা পূরণের দায়িত্ব তোর। তোরা চৌধুরী কিংডমের একমাত্র প্রিন্স-প্রিন্সেস। তাই তোর ওকে সামলাতে হবে কখনো শাসন কখনো ভালোবাসা-আদর-যত্ন দ্বারা।
অয়নঃ তার কিছুদিন পরই আম্মির মৃত্যু। তখন নূর ৩ মাসের মাত্র। মায়ের সব কথাগুলো তখন ছোট্ট মস্তিষ্ক বুঝতে পারেনি। তবে একটা কথা বুঝেছিলাম যে এই পিচ্ছুটাই আমার কিংডমে প্রিন্সেস। মায়ের একটা কথা আমি রাখতে পারিনি হয়তো পারবোও না কখনো তা হলো শাসন। বলেন প্রিন্সেস কি কখনো শাসন করা যায়?
একজন গেস্টঃ কি করে করবেন নূর তো ছোটবেলা থেকেই মনে হয় শান্ত-শিষ্ট।
ইজহারঃ না না আঙ্কেল! আমি মোটেও তেমন না। ভাইয়াকে আমার জন্য কম হেনস্থা হতে হয়নি। তাই না ভাইয়া?
অয়নঃ হুম ও যা দুষ্টু ছিল। একবার তো স্যারের মাথায় গোবর ঢেলে দিয়েছিল। এই জন্য আমি অনুতপ্ত ছিলাম তবে সে নূরের গায়ে হাত দিয়েছিল যা বেআইনিও ছিলো তাই ওই টিচারের লাইসেন্স ৪ বছরের জন্য বাতিল করে দেই। এছাড়া পড়া চোরও ছিল বটে। প্রতিবার রেজাল্টের দিন কথা শুনতে হতো। বকবো ভেবেও বকিনি কখনও। ওই মায়াবী মুখ সব ভুলিয়ে দিত।
ইজহারঃ মুখে হাসি চোখে কান্না।
অয়নঃ জানিস আমার সবচেয়ে খুশির দিন কোনটা ছিল? তুই ক্লাস 2 তে পড়িস তোদের স্কুলে উপস্থিত বক্তৃতায় তোর বিষয় ছিল প্যারেন্টস্! বাবা-মা? ভাগ্যের পরিহাসে যার ছোঁয়াও তুই পাসনি। কিন্তু তুই বলেছিলি আমার প্যারেন্টস্ বাবা-মা আমার ভাইয়া। মাও ভাইয়া! বাবাও ভাইয়া! সে বছর থেকে আজও পযর্ন্ত প্রতি বাবা দিবসে মা দিবসে আমাকেই উইশ করে। সেদিন যে আমার কত্ত খুশি লেগেছিল তা বলার নয়।

(আচ্ছা আপনাদের কি ব্যপারটা আশ্চর্যজনক লাগলো না অয়নের সব কথায় শুধু অয়ন, ইজহার ও তার মায়েরই কথা বলেছে বাবার কথা বলে নি কেনো? সিকরেট সিকরেট টুইস্ট কি এখনই সব বলে দিব? আস্তে আস্তে জানবেন স্টোরিতে)

ইশানাঃ হয়েছে হয়েছে অনেক ইমোশনাল কথা হয়ে গেছে। ইটস্ ইজহারস্ বার্থডে। সো লেটস্ কাট দ্য কেক ইটস্ এইট থার্টি।

(ইশানা ইজহারের কাজিন, বয়সে ২ বছরের বড় এন্ড অয়নের লাভার। তবে অয়ন তা জানে না।)

ইজহার, অয়ন, ইশানা ও তাদের বাকি কাজিনস্-বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে কেকে ফু দিয়ে যখনই ছুড়ি দিয়ে কেক কাটতে নিবে ঠিক তখনই সারা বাড়ির ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো।

☆ দ্য রোমান্স অফ দ্য স্টোরি স্টার্টস???

ঠিক ওই সময় কেউ ইজহারের কানে কেউ ঠোঁট ছোঁয়ালো কেউ। ইজহার শিউরে উঠে স্তব্ধ হয়ে গেলো। ইজহারের কানে ঠোঁট লাগিয়ে ব্যক্তিটি বলল,
রক্তিম চোখঃ হ্যাপি বার্থডে টু ইউ…. হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার ব্লাক কুইন।
(ধির কণ্ঠে গেয়ে কানে চুমু খেলো আর আমাদের ইজহার তো যেন একটা ঘোরে আছে)
রক্তিম চোখঃ ডিয়ার প্রিন্সেস ইটস ইউর গিফট ফ্রম রক্তিম চোখ এন্ড মায়াপরী ভুলেও হাত থেকে খুলবে না।
(বলতে বলতে ইজহারে হাতে একটা ব্রেসলেট পড়িয়ে দিয়ে কাধে চুমু খেয়ে চলে গেলো)

তারপর মাইকের সাউন্ড শুনা গেলে ইজহার ঘোর থেকে বের হলো। দুজন মাইকে গান গেতে লাগলো,
(দু’জন কারণ দুই রকমের কণ্ঠ শুনা যাচ্ছিল)

হ্যাপি বার্থডে ডারলিং
ইউ আর মাই আল্লাহ্’স প্রিশিয়াস ব্লেসিংস
আই প্রমিস ইউ টু বি উইথ ইউ ফর দ্য রেস্ট অব লাইফ
আই উইশ ফর ইউ লাভ এন্ড হ্যপিনেস
উইথ মাই হার্ট ফিল্ড উইথ গ্ল্যাডনেস
আই ওয়ান্না উইশ হ্যাপি বার্থডে মাই প্রিন্সেস।।

গাওয়া শেষ হতেই স্পট লাইট গিয়ে পড়লো ব্যক্তিটির উপর। সামনে থাকা ব্যক্তিটি আর কেউ নয় ইরহাম। আর ইরহামের পাশেই দাড়িয়ে আছে ইমাম। ইমাম জামান হলো ইজহারের খালামণির একমাত্র ছেলে। অনেক জেদি আর সুদর্শন, বাবার বিজনেস জামান’স গ্রুপের বতর্মান ওনার। সুদর্শন হলেও ইরহাম বিন রায়ান কমই। ইরহাম যেমন সুদর্শন তেমন তার জেদ। ইরহাম রায়ান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি সহ নিজের প্রতিষ্ঠিত ইরনূর ব্র্যান্ডের ওনার তবে তার রাগ এখনও কেউ দেখেনি।

পার্টিতে আসা সব মেয়েরা ইমাম আর ইরহাম কে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে। তাদের লাগছেই এতো ম্যানলি এন্ড হ্যান্ডসাম। ইরহাম আজ গ্লোসি ব্লাক ব্লেজারের সাথে নেভি ব্লু শার্ট সাথে ব্লাক প্যান্ট। আর ইমাম ব্লু টিশার্ট এন্ড প্যান্ট আর ব্লাক জ্যাকেট। তবে সে তাদের দিকে একবার তাকিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে করতে একটার পর একটা চকোলেট খেয়েই যাচ্ছে।

ইজহারঃ হায় আল্লাহ্! এই দুইটা একসাথে হলো কিভাবে? এরা একসাথে হলে তো আমার জান নিয়ে ছাড়বে। শালাগুলো যেই জ্বালায়। মন চায় দুইটারে ধইরা তেলাপোকার ভর্তা খাওয়ায় দেই।

(আসলে ইমাম আর ইরহাম একে অপরকে সহ্য করতে পারে না। যখনই তারা একসাথে হয় ইজহারদের বাসায় তখনই ইজহারকে নিয়ে টানাটানি লেগে যায়। আর দুই পক্ষের বকাই শুনতে হয়। যদিও ইমাম শুধু ইমোশনালি ব্লাকমেইল করে আর একটু বকা দেয় যাকে ইজহার তেমন ভয় পায় না। কিন্তু ইরহাম তো পারে না ওকে চাটনি বানিয়ে খায়। তবে তা সকলের অজান্তে।)

হঠাৎ ইশানা মাইক হাতে বলে উঠলো,
ইশানাঃ হে গাইস্! কেক তো কাটা শেষ নাউ লেটস্ স্টার্ট দ্য পার্টি। সো মিউজিক প্লিজ!

অয়ন ও ইরহাম কথা বলছিল তখনই ইশানার কথা শুনে অয়ন ইরহামের দিকে তাকায়।
অয়নঃ দোস্ত বাচা আমাকে এই চিপকু থেকে! সারাদিন আমার পিছনে পড়ে থাকে ভদ্রতার খাতিরে কিছু বলতেও পারি না। মন চায় ধরে তেলাপোকার ভর্তা খাওয়ায় দিই।
ইরহামঃ (শেষ বাক্য শুনে ইরহামের কাশি শুরু হয়ে যায় তাই তাড়াতাড়ি পানি পান করে)
অয়নঃ তোর আবার কি হলো?
ইরহামঃ ইরুর (ইজহারকে ইরু বলে ইজহারের সামনে নয়) সাথে থাকতে থাকতে তোর মাথাও গেছে। কি সব আজগুবি কথা বলিস! তেলাপোকার ভর্তা! সিরিয়াসলি!

এর মধ্যেই ইশানা এসে পড়ে আর অয়ন আবারও ইরহামের দিকে অসহায়ের মতো তাকায়। ইরহাম দুষ্টুমি মিশ্রিত মুচকি হাসি দেয়।

ইশানাঃ অয়ন লেটস ডান্স টুগেদার প্লিজ!
অয়নঃ আমি তোর বড় না ছোট নাম ধরে ডাকিস কেন?
ইশানাঃ উফফ! চলো তো!
( বলে টানতে টানতে অয়নকে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে যায়)

ইরহাম, ইমাম ও ইজহার তো এসব দেখে হাসতে হাসতে খুণ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ইরহাম ও ইমাম ইজহারের সামনে এসে হাত বাড়ায় ডান্সের জন্য। ইজহার এখন মহা কনফিউস কি করবে?

চলবে,,,

এনি গেসেস্ কার বাড়ানো হাতে ইজহার হাত রাখবে?

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ