Sunday, October 5, 2025







স্বপ্নপুরে শেষ পর্ব

স্বপ্নপুরে শেষ পর্ব
গল্পবিলাসী – নিশি

-“হাসছেন কেনো? মানুষের অভ্যাস থাকতেই পারে।তাছাড়া এখানে কোলবালিশও নেই। ” উপমার কথা শুনে আরো জোড়ে হো হো করে হেসে উঠলো ফাহাদ।
-“আশ্চর্য! এভাবে হাসার কি আছে?”
-” এভাবে জড়িয়ে ধরার অভ্যাস ছেলেদের থাকে জানতাম মেয়েদেরও হয় জানা ছিলোনা।”কথাটা শুনে মুখ বাঁকালো উপমা। হাত ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে,
-“আচ্ছা শুনো। প্রায় পাঁচটা বেজে গেছে তুমি উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও।”
-“আমার অনেক ঘুম পেয়েছে আর বাড়িই তো যাবো এখানে রেডি হওয়ার কি আছে।”ফাহাদকে জড়িয়ে ধরে আবারো চোখ বন্ধ করে ফেললো উপমা। কয়েকবার ডেকেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি তার।অগত্যা ইশাকে কল দিতে হলো তাকে।
-“গুড মর্নিং জিজুজি।
-“মর্নিং। সরি ঘুমের ডিস্টার্ব করার জন্য। ”
-“ইটস ওকে ব্রো। আমি এমনিতেও জেগেই ছিলাম। ”
-“একটু রুমের দরজাটা খুলবে আমি ওকে নিয়ে আসছি।”
-” আচ্ছা আমি খুলছি।”কোলে করে নিয়ে উপমাকে ইশার কাছে রেখে এলো।
-” তোমরা যাওয়ার সময় আমাকে কল দিও আর হ্যা এইযে উপমার মোবাইলটা।”
-” নাম্বার নিয়েছে উপো?”
-” মনেইতো ছিলোনা। আচ্ছা আমি সেভ করে দিচ্ছি।” নাম্বারটা সেভ করে দিয়ে রুমে চলে এলাম। আজকে ফাহাদ নিজেও বাড়ি ফিরে যাবে। আর খুব শীগ্রই মাকে উপমাদের বাড়িতে পাঠাতে হবে। পাঁচটা বেজে বাইশ মিনিট। সবাই সবার ব্যাগপত্র গুছাতে ব্যস্ত আর উপমা?সে ঘুমে ব্যস্ত।
-“দেখ উপো। এবার কিন্তু আমি সত্যিই পানি ঢেলে দিবো।”
-” আর পাঁচ মিনিট ইশ্যূ। ”
-“এক মিনিট ও না।আর নাহলে কিন্তু তোকে ফেলেই চলে যাবো আমরা।” চিৎকার করে বলে উঠলো সামি।
-“ওহ গড! কি অবস্থা শুরু করলি বলতো। মোবাইলের স্ক্রিনে টাইম দেখে, আরো বিশ মিনিট ঘুমাতে পারতাম।”
-“বাসে বসে ঘুমিয়ে থাকিস তুই। উঠ যা ফ্রেশ হ। “হঠাৎ করেই,
-” এই ইশ্যূ! আমি এখানে এলাম কি করে? ”
-“আসমান থেকে। আল্লাহ খুশি হইয়া আমাগোরে গিফট দিছে তোরে যা ভাগ। ”
-“আমি কিন্তু সত্যিই সিরিয়াস ইশ্যূ।”
-” দোহাই আল্লাহর! যা ফ্রেশ হ ভাগ আর একটা কথাও না।” একরকম ধাক্কিয়ে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো ইশা।
-” এই ইশা উপমা এখানে আসলো কেমনে মানে? কই ছিলো ও? ”
তাদের এক ক্লাসমেট ইমা বলে উঠলো।
-” আশ্চর্য তোরাও কি ওর মতো পাগল হয়ে গেছিস দেখিসনা ও কতো উল্টাপাল্টা বকে। তারওপর এখন ঘুম থেকে টেনে তুলেছে। তোরাও না। এই ইশ্যূ শোন আমি নিচে যাচ্ছি তোরাও আয়। “বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো সামি।
-” ওফ উপো টাও না কোথায় কি বলে যত্তসব।” ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে এসে ইশাকে কিছু বলতে যাবে তখনি
-” তোর যতো প্রশ্ন আমি সব উত্তর পরে দিবো এই নে তোর হেডফোন। এই তোর চার্জার। আর এই নে তোর মোবাইল। “মোবাইলটা হাতে নিয়েই মোবাইলের দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে রইলো। ফাহাদ?
-“গুড মর্নিং” ঠোটঁ বাকালো উপমা।
-“আরে আবার কি হলো। “চিল্লিয়ে উঠতে গেলে তার আগেই ফাহাদ বলে উঠলো
-” কুল ডাউন আশেপাশে তো দেখো।” চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে তার অনেক ক্লাসমেটই তাদের রুমে বসে আছে।
-” থাক তোমাকে বলতে হবেনা আমি বলি আর তুমি শুনো ভালো হবেনা?” মুখ তুলে ইশার দিক তাকালেই একটা মিষ্টি হাসি দিলো। এই একটা মানুষ যে আমি কিছু চাওয়ার আগেই সব বুঝে ফেলে মোবাইল হাতে নিয়েই একলাফে ইশাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
-“কি হলো আবার? কাদঁছিস কেনো? ”
-” আই লাভ ইউ সো মাচ ইশ্যূ।” হেসে জড়িয়ে ধরে,
-” লাভ ইউ টু ডিয়ার। “চোখের পানি মুছে দিয়ে,
-“চল এক্ষনি নিচে যেতে হবে।” মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে কলটা কেটে দেয় ফাহাদ। এতো ইমোশনাল কেনো মেয়েটা?
একটুতেই কান্না বন্যা বইয়ে দেয়।রেডি হয়ে নিচে এসে বসে বসে কফি খাচ্ছে ফাহাদ। এই কিছুক্ষনের মধ্যেই উপমারা বেরিয়ে যাবে। লিফট থেকে বেড়িয়েই ফাহাদের চোখে চোখ পরলো তার। তখনি ফাহাদ চোখ মেরে দেয়। রেগে ফাহাদের দিকে তাকালে ঠোঁটের ইশারায় চুমু দেখালো। অবাক হয়ে আছে উপমা। এতো আচ্ছা দুষ্টু ছেলে।সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো লাফাচ্ছে। এখান থেকে নাস্তা করেই ওরা বেরিয়ে পরবে। একদম পাশের টেবিলটাতেই গিয়ে উপমা বসে পরলো।সাথে ইশ্যূ। বসতেই ওয়েটার এসে খাবার দিয়ে গেলো।বুঝা গেলো টিচাররা আগেই অর্ডার করে রেখেছে।বসে বসে খাবার খাচ্ছিলো আর আড়চোখে ফাহাদকে দেখছিলো উপমা। হঠাৎ করেই একটা ওয়েটার এসে একটা গিফট বক্স এগিয়ে দিলো। উপমা কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই
-“থ্যাংক ইউ সো মাচ।” সবাই আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে ইশার দিকে।
-” কি সবাই এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?”
-“না মানে তোকে আবার কে কি গিফট করলো দেখি। ”
-“দেখ ইমা এটা আমার পার্সোনাল মেটার। এই উপো আমার ব্যাগে না অনেক কিছু এইটা তোর ব্যাগে রাখছি।”
এতোক্ষনে বুঝতে পারলো উপমা এটা কার গিফট ছিলো হালকা হেসে
-” ওকে ডিয়ার বাট পার্সেন্টিজ দিলে রাখতে পারি। ”
-“ইসস থাক রাখতে হবেনা হুহ।”হেসে উঠলো সবাই।
-“হ্যালো স্টুডেন্টস! ”
-“ওই দেখ পেয়ারি বানু চলে এসেছে।” উপমার পিঠে চাপড় মেরে
-“স্টুপিড। শোন আগে কি বলছে।”
-” ওকে। ”
-“আমাদের গাড়ি বাহিরে অপেক্ষা করছে খাওয়া দাওয়া শেষ করে দশমিনিটের মধ্যে চলে এসো।” যে যার মতো বেরিয়ে যেতে লাগলো। উপমা বসে আছে। প্রায় সবাই চলে গেছে। ফাহাদ তখনো বসে আছে একমনে তাকিয়ে আছে উপমার দিকে। এগিয়ে এসে আশেপাশে তাকিয়ে হুট করে ফাহাদের গালে চুমু খেয়ে দৌড়। উপমার কান্ডে পুরাই ঘোরের মধ্যে পরে গেলো ফাহাদ। হাল্কা হেসে বেরিয়ে এলো বাহিরে।ততোক্ষনে উপমা বাসে উঠে গেছে। বাসের দিকে তাকাতেই মেসেজ টোন বেজে উঠলো
“টিট ফর ট্যাট। স্বপ্নপুরের মহারানী।” মেসেজটা দেখে ঠোটঁ টিপে হাসতে লাগলো ফাহাদ।রিপ্লাই দিলো, “এমন রিভেঞ্জ নিতে হাজারবার অপেক্ষায়।” একটা লজ্জামাখা ফেইস স্টিকার পাঠিয়ে হাসতে লাগলো উপমা।
-“বাহ খুবতো প্রেম হচ্ছে। না? এখন আর আমি কে। “পাশের সিটে বসে উপমার উদ্দ্যেশে ইশা বলে উঠলো।
-“থ্যাংক ইউ সো মাচ ইশ্যূ। “বলেই জড়িয়ে ধরে।একদম কাদঁবিনা। হো হো করে হেসে উঠলো উপমা। পুরো জার্নি ফাহাদের সাথে মেসেজ করতে করতেই কাটিয়ে দিলো।বাসায় এসে ব্যাগ ঢিল মেরে ফেলে রেহেনার হাত ধরে নাচতে শুরু করলো।
-” কি হয়েছে বলতো এতো খুশি আজ।”
-“আজ আমি সবচেয়ে খুশি ফুপ্পিই।” -“আচ্ছা। তা কি এমন হলো যে এতো খুশি শুনি? “কথাটা শুনে লজ্জা কেমন ছেয়ে পরলো উপমার মুখে।তা দেখে,
-“দেখো চাচ্চি ওর মুখের দিক তাকিয়ে দেখো কি লজ্জা পাচ্ছে। আমি বলছি শুনো। ”
-“আরে কি করছিস তুই? “দৌড়েঁ এসে ইশার মুখ চেপে ধরে উপমা কিছুক্ষন পর ছাড়তেই,
-“ওহ গড একটু হলেতো মরেই যাচ্ছিলাম স্টুপিড। আমি বলেই ছাড়বো” আবারো বলতে গেলেই মুখ চেপে ধরে উপমা।উপমা হাত ছাড়িয়ে
-” চাচ্চিইই ওনি ওনার স্বপ্নের পুরুষের দেখা পেয়ে গেছে।”
-” কি? “কথা শেষ হওয়ার আগেই দৌড়েঁ চলে গেলো উপমা। তারপর রেহেনা বেগমকে সব খুলে বললো ইশা। সব শুনে।
-” ওহ।এতো খুব ভালো খবর।”
-” চাচ্চি তুমি কিন্তু কখনো না করোনা। তাছাড়া ছেলেটাও খুবই ভালো।আমার কথা হয়েছে। ”
-“আমি না করার কি আছে? ওরা সংসার করবে ওদের পছন্দ ইতো সব। আমি চাই আমার মেয়েগুলো যেনো সবসময় সুখী হয়।আমারতো নিজের গর্ভের সন্তান নেই তোরাই আমার সব।”
-” লাভ ইউ চাচ্চি “বলেই জড়িয়ে ধরে।
-“লাভ ইউ টু মাই গার্ল। আচ্ছা তোরা ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।”
-“আচ্ছা আমি আম্মুর সাথে দেখা করে আসি।”
-“একি তুই উপরে যাসনি?”
-” নাহ। তোমাকে আগে দেখতে ইচ্ছেহলো তাই এখানে চলে এসেছি।”
-“আচ্ছা যা। তাড়াতাড়ি আসিস।”
-” হ্যা এক্ষনি আসছি।” উপমা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে দুজন রেহেনার ফ্ল্যাটেই থাকে। সবকিছুতেই যেনো রেহেনা ছাড়া আর কিছু খুজেঁ পায়না দুজন।রাস্তায় বেরোলে কোন ছেলে কি বলেছে এটা না বলেও শান্তি পায়না দুজন।সব গল্প জমিয়ে রাখে তার জন্য।তারও খুব ভালো লাগে তাদের গল্প শুনতে। বিয়ের পর মাতৃত্বের স্বাদটা অনুভব করতে পারেনি। এইদুটাই যেনো আল্লাহর দেয়া অশেষ অংশবিশেষ।
-” কিরে এতো দিনে ফিরত্র ইচ্ছে হলো? তোর কি বাড়িঘর আছে?” দরজা খুলে ফাহাদকে একমনে বলে চলছে আশা।
-“কি যে বলোনা মা। “বলেই মাকে বুকে জড়িয়ে নেয়।
-“এবার কিন্তু আর কোনো বাহানা শুনছিনা আমি এবার বিয়ে দিয়েই ছাড়বো তোকে। ”
-“আচ্ছা দিও।”
-” তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি। ”
-“আচ্ছা। “ফ্রেশ হয়ে পুরো ফর্মাল ড্রেসে এসে টেবিলে বসে ফাহাদ। তাকে দেখে
-“তুই কি অফিসে যাবি এখন? ”
-“হ্যা মা। অনেক দিন যাওয়া হয়না।”
-” কিন্তু জার্নি করে মাত্রই তো এলি খারাপ লাগবে তো।”
-“মা আমি ফাহাদ। তুমি জানোনা জার্নি আমার কতো পছন্দ। এই টুকটাক জার্নি আমার জন্য তেমন কিছুই না।”
-” আচ্ছা তো জয়েন কর। আবারতো ছুটি নিতে হবে। “প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে
-“কেনো? ”
-“বিয়ে কি অফিস থেকে গিয়ে করবি নাকি? তারওপর কতো এরেঞ্জম্যান্ট আছে।শপিং আছে।”
-” মা শপিং বাসায় বসেই করা যায় অনলাইনে। আর এরেঞ্জম্যান্ট তা নিয়ে তোমার ভাবতে হবেনা।” ফাহাদ আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই কলিংবেলটা বেজে উঠলো। ফাহাদ যেতে নিলে
-“তুই বোস আমি দেখছি।” বলে এগিয়ে গেলো আশা। দরজা খুলতেই দেখতে পেলেন খুব হাশিখুশি মুখে দাঁড়িয়ে আছে ফাহিমা।তাকে দেখে মনেহচ্ছে পুরো রাজ্যজয় করে এসেছে।
-” ভাইয়া আসেনাই? ”
-“মাত্রই তো এলো।”
-” আরে ভাইয়া আমার তো আর সহ্য হচ্ছেনা কবে দেখবো আমার ভাবিকে।”
-” ভাবি মানে?”
-” আরে মা তোমাকে বলেনি কিছু ভাইয়া? কিরে ভাইয়া বলিস নি? ”
-“মাত্রই তো এলাম। ”
-“ওহ। সোফায় বসতে বসতে। আচ্ছা এই যে তোমাদের বৌমা মানে আমার ভাবি। আর এই যে তার পা দেখো একদম যেমন ভাইয়া এঁকেছে।” অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আশা। যেনো সেই ছবিটাকেই আবার ছবি তুলা হয়েছে।
-“ফাহাদ সত্যিই এই মেয়েটাই?”
-” হ্যা। “মায়ের চোখে কেমন সন্দেহ খুজেঁ পেলো ফাহাদ।
-“তুই কিভাবে বুঝলি যে এই মেয়েটাই ওইটা? ”
-“ঐযে নূপুর। “তারপর চাঁদপুরের পুরো ঘটনা মাকে খুলে বললো। মাকে কিছু বলতে না দেখে ফাহাদের একটু টেনশন লাগতে লাগলো। তবে কি উপমাকে মার পছন্দ হয়নি? সংকোচ নিয়ে জিজ্ঞাসা করেই ফেললো
-“মা তোমার পছন্দ হয়নি?”
-” আরে পছন্দ হবেনা কেনো ? আরো কয়েকটা ছবি দেখে, কি সুন্দর হাসি মেয়েটার। আর আমার পছন্দ কি? সংসার তো তোরা করবি আমি না। তোদের সুখই যে আমার সুখ।আর শোন। আল্লাহ যার সাথে জুড়িঁ বেধেঁ দিয়েছে তার সাথেই হবে। আর একটা সম্পর্ক কেমন হবে তা নির্ভর করবে সম্পর্কে থাকা প্রতিটা মানুষের উপর।”
-” একদম ঠিক। আর দেখো মা মেয়েটা একদম ইনোসেন্ট। কি মিষ্টি ভাবে হাসে দেখো। তাইতো বলি ভাইয়া এতো অপেক্ষা কার জন্য। ভাইয়া আমরা আজকেই চলে যাই কি বলো?”
অবাক হয়ে
-“আজকেই? ”
-“হ্যা। ”
-“ওদের সাথে তো কথা বলতে হবে তারপর। ”
-“কোনো তারপর নাই তুই উপমাকে কল করে বলে দে আর নয়তো ওর ফ্রেন্ডকে বলে দে ওরা মেনেজ করে নিবে।”
-“আরে এতো তাড়াহুড়োর কি আছে রিলেক্স মোডে সব কর। আচ্ছা তোরা প্ল্যান কর তবে আজকে না আগামীকাল যাবি। কারন ইশাকে আগেই বলা আছে সব কিছু। আমি শুধু বিকেলে জানাবো আমরা আগামীকাল যাচ্ছি।”
-“এমা ভাবি কে জানাবে না?”
-” নাহ। আচ্ছা আমি অফিসে যাচ্ছি তুই থাকিস আর তোর কিপ্টা জামাইরেও আসতে বলিস রাতে কথা হবে।”
-“ভাই তুই সবসময় ওকে কিপ্টা কেনো বলিস বুঝিনা আমি।”
-” ওই শালায় কিপ্টা তো কিপ্টা বলবোনা তোর এতো গায়ে লাগে কেনো? হুহ।”বলতে বলতে বেরিয়ে গেলো ফাহাদ। অনেকদিন পর অফিসে আসাতে অনেক ব্যস্ততার মধ্যেই কেটে গেলো পুরো দিনটি।মাঝখানে উপমার সাথে টুকটাক একটু কথা হয়েছে। রাতে আর কল দেয়া হয়নি। এতোদিন পূর্ণ বিশ্রামের পর কাজ করাতে যেনো ক্লান্তি পুরো ঘটা করে নেমে এসেছে শরীরে। অফিস থেকে এসেই ঘুম।
পরদিন।
বেলা এগারোটা। এই মূহুর্তে উপমা নেভিব্লু কালারের একটা শাড়ি পরে পুতুলের মতো ফাহাদের পরিবারের সামনে বসে আছে। রাগে শরীর গিজগিজ করছে। প্ল্যান ছাড়াই হুট করে চলে এসেছে। তারওপর রাত থেকে ভ্যানিস হয়ে এখন পুরো সৈন্যদল নিয়ে হাজির। ইচ্ছেতো করছে গলা চেপে ধরতে ।আস্ত হনুমান। উপমার অবস্থা টের পেয়ে আশেপাশে তাকিয়ে চোখ মেরে দেয় ফাহাদ। প্রতিউত্তরে উপমা চোখ রাঙিয়ে দিয়েছে। আশা আর রেহেনা এমন ভাবে গল্প জমিয়ে দিয়েছে যেনো পুরোনো দিনের বান্ধুবি কতকাল পর এক হয়েছে। আর মহিবউল্লাহ ( উপমার ফুপা) আর আরমান রহমান ঠিক তাদেরই মতো জমিয়ে আড্ডা। ফাহিমা ব্যস্ত উপমা আর ইশাকে নিয়ে। মাঝখানে কাবাবের হাড় হয়ে আছি আমি আর আসিফ। এখানে কি বিয়ের কথা বলতে আসছে না আড্ডা মারতে আসছে তাই বুঝে উঠতে পারছেনা ফাহাদ।
মহিবউল্লাহ বলে উঠলেন
-“আমি বলছিলাম যে যেহেতু তারা দুজন দুজনকে পছন্দ করেই নিয়েছে আক্দ টা বরং আজকেই হয়ে যাক কি বলেন? “আরমান সাহেবের উদ্দ্যেশ্য।
-” হ্যা তা কিন্তু একদম ঠিক কথা বলছেন আপনি। হায়াত মউতের কথাতো বলা যায়না।” আশা আর রেহেনাকে ডেকে পাঠালেন ইশার মাধ্যমে। হঠাৎ করে আসাতে তেমন কোনো আত্নীয়স্বজনেরা আসেনি। তারপর তারাও একই মতামত দিলেন। দেখতে দেখতে ঘরোয়া ভাবে ফাহাদ আর উপমার বিয়েটা হয়ে গেলো। পরে অনুষ্টান করে সব আত্নীয়স্বজনকে জানানো হবে। বিয়ের পর বড়দের পার্মিশন নিয়ে ইশা উপমাকে আর ফাহাদকে উপমার রুমে নিয়ে এলো।
-” সো গাইস এঞ্জয় দ্যা মোমেন্ট আমরা বাহিরটা দেখছি। কি বলেন আপু? ” ফাহিমার উদ্দ্যেশ্য।
-“হ্যা একদমই তাই। চলো। অল দ্যা বেস্ট ভাইয়া “বলেই চলে এলো। বেলকনির গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে উপমা।পেছন থেকে ফাহাদ ধরতে গেলে ছাড়িয়ে নেয় উপমা। কয়েকবার ধরতে গেলে একই রকম করে ফিরিয়ে দেয়।
-“আশ্চর্য এমন করছো কেনো?”
-” একদম ধরবেনা আমাকে। ”
-“কেনো? কি হয়েছে?”
-” রাত থেকে পুরো ভ্যানিস হয়ে আছো। না কল না মেসেজ কোনো কিছুই না। আমার টেনশনে পুরো রাতটি কিভাবে কেটেছে নিজেও বলতে পারবোনা। আর নাতো কারো নাম্বার আছে যে আমি তোমার খবর নিবো।”
-” বাবাহ এতো টেনশান?” ফাহাদের দিক ফিরে,
-“ফাহাদ আমার কেউ নেই। পৃথিবীর বুকে আমি খুবই একা। মা বাবা ছাড়া আর সবাই থাকলেও আমি নিঃশ্ব। সেই নিঃশ্বতা কাটিয়ে তুমি এলে তুমি হারিয়ে গেলে আবারো নিঃশ্ব হয়ে যাবো। শুধুমাত্র ফুপ্পি আঙ্কেল ইশা ছাড়া আমার আপন কেউ নেই। ভয় হয় আমার। চোখ বেয়ে উপচে বেয়ে বেয়ে পানি গুলো গড়িয়ে গড়িয়ে পরছে। আচমকাই বুকে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে।
-“আম সরি বাবুই।আর কখনো এমন হবেনা। আর কে বলেছে তুমি একা আমি আছিনা? আমি সবসময় তোমার পাশে থাকবো।” শার্ট খামচে ধরে বুকে মাথা রেখে কাদঁতে থাকে উপমা।মাথা তুলে তাকালে চোখের পানিগুলো মুছে দিয়ে আবারো বুকে জড়িয়ে নেয়।
-” ভালোবাসি উপমা। অনেক ভালোবাসি। “প্রতিউত্তরে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে উপমা।
সমাপ্তি।
আপনাদের সবার দাওয়াত অনুষ্টানে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ