সত্যি ভালোবাসো পর্ব-২২+২৩ (বোনাস পর্ব)

0
1213

#সত্যি_ভালোবাসো
#part_22 (তোমাতে_আসক্ত)
#writer_Fatema_Khan

সারাদিনের কাজ শেষ করে গোসল সেরে খেয়ে নিলাম।আরিশ এখনো বাসায় ফিরেনি।এই ছোট্ট বউটিকে তার বুঝি অপেক্ষা করাতেই ভালো লাগে।আমার আর আরিশের একটা ছবি হাতে নিয়ে দেখছিলাম।এটা আমার আর আরিশের বউভাতের ছবি।দেখো এখানেও আমার দিকে তাকাচ্ছে না আর আমি বেহায়ার মত তার দিকেই তাকিয়ে আছি।না তাকিয়ে উপায় আছে আমার বরটাকে যে সেদিন খুব সুন্দর লাগছিলো।শ্যামবর্ণের গায়ের রঙটা যেনো তার জন্যই।তার সবকিছুই আমাকে তার প্রতি আরো আকর্ষিত করে তুলে।সে যেনো আমার কাছে এক নেশার মত।আমি যেনো ‘তোমাতে আসক্ত’ হয়ে পড়ছি।আমার ভাবনার মাঝেই আরিশ রুমে প্রবেশ করে।তার পুরো শরীর ঘেমে আছে।চুলগুলো ঘামে কপালে লেপ্টে আছে।

তাহিয়াঃআরে তুমি কোত্থেকে এলে,আর এতো ঘেমে আছো কেনো,তুমি তো গাড়ি নিয়ে গেছিলে?

আরিশঃআরে আরে থামো বলছি,শ্বাস তো নেও।কত কথা বলো তুমি?এই নাও এটা।

তাহিয়াঃএটা কি?(তার হাতে যে একটা প্যাকেট আছে খেয়ালই করি নি)

আরিশঃদেখো কি আছে(বলেই টাওয়েল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো)

আমি প্যাকেট হাতে নিয়ে বিছানায় বসে আছি।কিছুক্ষণ পর আরিশ বের হয়ে বলে-

আরিশঃ এখনো বের করেও দেখোনি কি আছে।আচ্ছা এক কাজ করো ফ্রেশ হয়ে আসে আগে।

তাহিয়াঃকেনো আমি তো ঠিক আছি

আরিশঃআমি বলেছি তাই যাবে।এখন যাও।

(আমিও চলে গেলাম ওয়াশরুমে।বের হয়ে দেখি আরিশ রুমে নেই।কিন্তু প্যাকেটের উপর একটা চিরকুট আছে।তাতে লেখা আছে তারাতাড়ি করো আমি নিচে গাড়িতে ওয়েট করছি।আমি প্যাকেটটা খুলে দেখি একটা কালো রঙের শাড়ি সাথে ম্যাচিং অর্নামেন্টস।এই মিস্টার অসভ্য নামক লোকটার কালো রং এতো পছন্দ কেনো যেখানে আমার নীল খুব পছন্দ।সবকিছু পরে নিলাম সাথে লিপস্টিক ও চোখে কাজল।ভালোই লাগছে আরিশের ভালো লাগবে তো?তখনই মোবাইলে মেসেজ আসলো।সিন করে দেখি আরিশের মেসেজ।আর কতক্ষণ লাগবে বউ।আরিশের এই বউ ডাকটি যেনো মন ছুয়ে যায়।)

“নিচে এসে দেখি আরিশ গাড়ির সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার পরনে কালো কালারের শার্ট কালো জিন্স হাতে ঘড়ি,আর হাতে আছে রোদচশমা।আমি তো পুরাই ফিদা আরিশের উপর।আর কতভাবে নিজের প্রেমে পরাবে আমাকে।”

আরিশঃএতোক্ষণ লাগে তৈরি হতে,তারাতাড়ি চলো।

(দুইজন গাড়িতে উঠলাম,আরিশ বরাবরের মতই আমার সিটবেল্ট বেধে দিলো।আমি বারবার আরিশকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা কই যাচ্ছি কিন্তু আরিশ বললো না গেলেই নাকি দেখতে পাবো।আমিও মন খারাপ করে বসে আছি।)

__________________________________❤️

জারাকে তাহসিন অনেকক্ষণ যাবত কল দিচ্ছে কিন্তু জারা রিসিভ করছে না।

তাহসিনঃএই মেয়ে নিজেকে ভাবে কি এতোগুলা কল দিলাম রিসিভ করছে না কেনো?

এইদিকে জারা তার কাজিনদের সাথে আড্ডা দিয়ে সবে মাত্র রুমে আসে।রুমে এসেই দেখে তার মোবাইল বেজে চলছে।সে কল রিসিভ করতেই তাহসিন কড়া গলায় বলে উঠলো-

তাহসিনঃএতোক্ষণ লাগে কল রিসিভ করতে,কতগুলো কল দিছি সেই খেয়াল আছে।

জারাঃওহ হ্যালো কে আপনি আবার কল দিয়ে এমনভাবে কথা বলছেন কেনো?(ইচ্ছে করে তাহসিনকে রাগানোর জন্য)

তাহসিনঃআমি তাহসিন।ওইদিন তো জোর করে মোবাইল নাম্বার নিলেন আর আজ বলছেন কে আমি।

জারাঃআচ্ছা আচ্ছা আসলে আমি ইম্পর্ট্যান্ট কারো ছাড়া নাম্বার সেইভ করি না।

তাহসিনঃভালো।

জারাঃতা কল করেছেন কেনো?

তাহসিনঃআপনার সাথে দেখা করতে চাই।আসতে পারবেন?

জারাঃঠিক আছে।

তাহসিনঃআপনি তৈরি থাকুন আমি গাড়ি নিয়ে গেইটের বাইরে থাকব।

জারাঃআচ্ছা।

কল কেটে দিয়ে জারা খাটের উপর উঠে উরাধুরা নাচ শুরু করলো।

_________________________________❤️

রেস্টুরেন্টে সামনা সামনি বসে আছে জারা আর তাহসিন।জারা তো নিজের মত কথা বলেই যাচ্ছে আর তাহসিন তাকে দেখতে ব্যাস্ত।তাহসিন যে তাকে কিছু বলার জন্য ডেকেছে সেটা নিয়ে তার মাথা ব্যাথা নেই সে কথা বলেই যাচ্ছে।

তাহসিনঃ(এই মেয়ে আমাকে কিছু বলতে দিবে নাকি নিজেই বকবক করতে থাকবে)আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করার জন্য ডেকেছি তো।

জারাঃতো বলুন না আমি কি আপনার মুখে স্কসটেপ লাগিয়ে দিয়েছি নাকি।

তাহসিনঃনাহ তা কেনো হবে।আপনি বিয়েতে রাজি হলেন কেনো?

জারাঃসবাই প্রশ্ন করছিলো আমার আপনাকে পছন্দ হয়েছে কিনা,বিয়ে করতে চাই কিনা।তাই আমার মনে যা ছিলো তাই বলে দিলাম।

তাহসিনঃআমি তো মানা করেছিলাম তাই না

জারাঃআমি আপনার মত নই যে নিজের মনের কথা বলতে পারেন না।আমার মনে ছিলো আমি আপনাকে বিয়ে করবো তাহলে মানা করার কথা কোথায় আসে।

তাহসিনঃআমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না।

জারাঃকেনো,আমার জানামতে আপনার জীবনে অন্য কেউ নেই।যাকে পছন্দ করতেন তার বিয়ে হয়ে গেছে।

তাহসিনঃআপনি এতো কিছু কি করে জানেন?

জারাঃএসব বাদদিন এখন ফাইনাল কথা হলো আমরা বিয়ে করছি বুঝলেন।

তাহসিনঃআচ্ছা চলেন আপনাকে বুঝিয়ে লাভ নেই।

জারাঃযাবো মানে আজ ঘুরবো আমি আর আপনি।

তাহসিনঃমানে কি,রাত হয়ে গেছে।৭ঃ০০ টা বাজতে চললো।

জারাঃআপনি সাথে আছেন তো।তবে গাড়ি করে না হেটে হেটেই সময় পার করতে চাই আমি আপনার সাথে।(আপনি আমার থেকে যতই দূরে যেতে চাইবেন আমি ততই কাছে যাবো আপনার।আমি যে দিন দিন ‘তোমাতে আসক্ত’ হয়ে পড়ছি।একটা মানুষ কি করে একজনকে এতো ভালোবাসতে পারে।তাকে যে আমি খুব করে ভালোবাসতে চাই।আমার ভালোবাসায় আমি আপনার হৃদয়ে আমার জন্য ভালোবাসা গড়ে তুলবো।)

তাহসিনঃআচ্ছা চলুন।(জারা আপনি তো আমার মনের মত।ঠিক আমি যেমন চেয়েছিলাম তাহিয়াকে। কিন্তু আমি যে তাহিয়াকে খুব বেশি ভালোবাসি আমার সাথে থাকলে আপনি কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবেন না)

__________________________________❤️

হঠাৎ ব্রেক কষে আরিশ একটা জায়গায় এনে গাড়ি থামালো।

তাহিয়াঃএকি আরিশ গাড়ি থামালে যে আমরা কি এই মাঝ রাস্তায় নেমে যাবো।

আরিশঃনা বউ আরেকটু বাকি আছে।

তাহিয়াঃতাহলে এখানে থামালে কেনো?

আরিশঃতুমি বেশি কথা বলো(বলেই আমার চোখ একটা কালো কাপড় দিয়ে বেধে দিলো)

তাহিয়াঃএকি চোখ বাধলে কেনো?

আরিশঃবললাম না সারপ্রাইজ আছে।

আরোও কিছুক্ষন গাড়ি চলার পর আরিশ গাড়ি থামালো।তারপর আরিশ গাড়ি থেকে নেমে আমাকে ধরে নামালো।কিছুক্ষণ ধরে নিয়ে গেলো।তারপর আমাকে কোলে উঠিয়ে নিলো।অনেকটুক রাস্তা হাটার পর আরিশ আমাকে নামিয়ে দিলো।আর বললো-

আরিশঃ এবার চোখের কাপড় সরাও।

আমি চোখের কাপড় সরাতেই দেখি……

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,

#সত্যি_ভালোবাসো
#part_23 #সারপ্রাইজ
#writer_Fatema_Khan

চোখের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে নিতেই দেখি চারপাশ অন্ধকার হয়ে আছে।আরিশকে ডাকছি কিন্তু আরিশের কোনো সারাশব্দ নেই।হঠাৎ আমার চারদিকে আলো জ্বলে উঠলো।হুট করে চারপাশ আলোকিত হওয়ায় চোখ বুজে ফেললাম আমি।আস্তে আস্তে চোখ খুলে তো আমার চোখ ছানাবড়া, যেনো চোখ কোটর থেকে বেড়িয়ে পরবে।এতো সুন্দর করে সাজানো।চারদিকে গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে,লাভ শেপের বেলুন দিয়ে সাজানো আর আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেটাও গোলাপের পাপরি দিয়ে সাজানো আমি মাঝ বরাবর।সামনে তাকিয়ে দেখি আরিশ এক হাটুর উপর ভর করে বসে আছে হাতে তার একটা লাল গোলাপ।আমি তো পুরাই অবাক,বিয়ের এতোদিন পর আরিশ আমার জন্য এগুলো করছে।যা সবসময় আমি চাইতাম।

আরিশঃতোমাকে সেদিন থেকে ভালোবাসি যেদিন থেকে ভালোবাসা কি বুঝতে শিখেছি।কিন্তু বলতে পারি নি বয়সে আমার থেকে অনেক ছোট তুমি।কিন্তু ফাইনালি তুমি আমার হলে।সেটা যেভাবেই হোক না কেনো।নিজের ফিলিংস প্রকাশ করতে পারি না আমি।তুমি আমার জীবনের সেই গোলাপ যার সুবাসে আমি প্রতিদিন তোমার প্রেমে পরি।তোমাকে হারানোর ভয়ও ছিলো মনে।কিন্তু তুমি আমার পাশে ছিলে সবসময়।স্ত্রীর সুখ তোমায় দেইনি আমি নিজেকে সবসময় তোমার থেকে দূরে রেখেছি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি শুধু আজকের দিনের জন্য।খুব ভালোবাসি তোমায় তুমিও কি আমায় #সত্যি_ভালোবাসো? যদি ভালোবাসো তাহলে এই ফুলটি গ্রহণ করো।

তাহিয়াঃতোমাকে অনেক ভালোবাসি আমি।(গোলাপটি আরিশের হাত থেকে নিয়ে)

আরিশ তার পকেট থেকে ছোট একটি বক্স বের করলো,বক্সটি থেকে একটি ডায়মন্ডের আংটি নিয়ে আমার সামনে ধরলো আর বললো-

আরিশঃতোমাকে আজ আমি আমার করে নিতে চাই।হবে কি আমার?

তাহিয়াঃআমি তো তোমারই।(নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে)

“আরিশ আমাকে আংটি পড়িয়ে দিলো।তারপর উঠে দাড়ালো।”

আরিশঃএকি তুমি কান্না করছো কেনো?(আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে)

তাহিয়াঃআমি তো খুশিতে কান্না করছি।এতো ভালোবাসো কিভাবে আমাকেও একটু শিখিয়ে দিও।

আরিশ হাসতে হাসতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আর বললো চলো ওইদিকে যাই।তারপর আমার হাত ধরে একটা নৌকার সামবে দাড় করালো।নৌকাটি খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো।আমি তো একটার পর একটা ঝাটকা খাচ্ছি।সে আমার হাত ধরে নৌকায় উঠালো।আমি আর আরিশ নৌকার একপাশে বসেছি অন্যদিকে মাঝি।আরিশ আমায় পিছন দিক দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।আর গান গাইছেন।

_________________________________

তাহসিন আর জারা পাশাপাশি হাত ধরে হাটছে।তাহসিন বারবার হাত ছেড়ে দিচ্ছিলো,কিন্তু জারা বারবার হাত ধরছিলো তাই এখন আর মানা করছে না।অনেকদূর যাওয়ার পর একটা আইসক্রিমের গাড়ি দেখে জারা তাহসিনের হাত আরও চেপে ধরে বলতে লাগলো আমি আইসক্রিম খাবো।তাহসিন তাতে বিরক্ত হলো না বরং হাসলো।

তাহসিনঃচলেন।(মেয়েটা পুরো বাচ্চাদের মত করে।)

(তাহসিন জারাকে আইসক্রিম নিতে বললো।জারা ৩টি আইসক্রিম নিলো।আর খাওয়া শুরু করলো।খাওয়ার সময় তার পুরো মুখে লাগিয়ে ফেলছে।তাহসিন নিজের অজান্তেই জারার ঠোঁটে থাকা আইসক্রিম হাত দিয়ে মুছে দিলো।তারপর একটা টিস্যু দিয়ে পুরো মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে দিলো।জারা লজ্জায় দূরে সরে এলো।তাহসিন বুঝতে পেরে ভাবলো সে করছিলো কি,তার ঠোঁটের কোণে হাসি বজায় রেখে জারার দিকে এগিয়ে গেলো।)

তাহসিনঃবাসায় যাবেন না,চলুন আপনাকে দিয়ে আসি।

জারাঃ হুম চলুন।

তারপর আবার হাটা শুরু করলো দুইজনে তবে এবার জারা হাত ধরে নি কেমন লজ্জা লাগছিলো তার।হটাৎ বৃষ্টি শুরু হলো।তাহসিন জারার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকলো।একটা ছাউনির নিচে দুইজন দাঁড়ায়।তাহসিন নিজের চুল ঝাড়তে ঝাড়তে দেখে জারা তার পাশে নেই।জারা দুই হাত মেলে বৃষ্টি উপভোগ করছে।তাহসিন জারার দিকে তাকিয়ে আছে।তার দিকে তাকিয়ে তাহসিন হেসে দিলো আর বললো পুরাই বাচ্চা একটা মেয়ে।জারার জামা ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে আছে যার দরুন জারার শরীরের প্রতিটি ভাজ দৃশ্যমান।জারার ওরনাও অনেকটা সরে গেছে বুকের উপর থেকে সেইদিকে জারার কোনো খেয়াল নেই সে তো বৃষ্টিবিলাশ করতে ব্যাস্ত।তাহসিন জারার মেয়েলি দেহের গরনের প্রতিটি ভাজের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।তাহসিন কিছুক্ষণ পরেই নিজের চোখ নিচে নামিয়ে নেয়।সে জারার দিকে এগিয়ে যায় আর জারার কাছে গিয়ে জারার হাত ধরে বলে বাসায় যেতে হবে দেরি হচ্ছে তো।জারা তার দিকে তাকিয়ে তাহসিনকে জড়িয়ে ধরলো।তাহসিন তাল সামলাতে না পেরে জারাকে নিয়েই হালকা পিছিয়ে যায়,সে জারার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললো

তাহসিনঃ কি হয়েছে?

জারাঃকিছুনা

তাহসিনঃতাহলে চলুন যাওয়া যাক

জারাঃথাকি না কিছু সময় এভাবে ভালোই তো লাগছে আমার।আপনার ভালো লাগছে না?

তাহসিনঃজ্বর আসবে তো

জারাঃআপনি আছেন তো আসলে আসবে আমার জ্বর। আপনার উষ্ণতায় আমার জ্বর সারিয়ে দিবেন।

তাহসিনঃ……….(জারাকে জড়িয়ে ধরে)

___________________________________

আরিশ আর তাহিয়া নৌকা থেকে নামার কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হলো।আরিশ তাহিয়াকে নিয়ে পাশে থাকা ছোট ঘরটার কাছে দৌড়ে গেলো।ঘরটাতে ঢুকে তাহিয়া আরও অবাক।ঘরটা পুরো গোলাপ রজনীগন্ধা দিয়ে সাজানো।তাহিয়া লজ্জায় এককোনায় চুপ করে বসে আছে।

আরিশঃকি গো বউ এতো লজ্জা পেও না।একটু পর সব লজ্জা যে বিসর্যন দিতে হবে।এর আগেও একবার তোমার কাছে এসেছি তবে তখন হয়তো অনুমতি নেই নি।কিন্তু আজ যে আমার তোমায় ভালোবাসতে তোমার অনুমতি চাই।দিবে কি আমাকে সেই অধিকার।খুব করে ভালোবাসতে চাই তোমাকে।

তাহিয়া আরিশের বুকে মাথা ঠেকিয়ে বলে-

তাহিয়াঃভালোবাসতে চাই তোমাকে।তোমার ভালোবাসায় নিজেকে রাঙাতে চাই।আমাকে নিজের করে নাও।এই জীবনে আমি শুধু তোমার হতে চাই।

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,

#সত্যি_ভালোবাসো
#বোনাস_পার্ট
#writer_Fatema_Khan

আরিশ তাহিয়ার কপালে নিজের ঠোঁটের ছোয়া দিয়ে কোলে তুলে নেয়।তাহিয়াকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলো।তাহিয়া তার চোখজোড়া বন্ধ করে ফেললো।তখনই আরিশের মোবাইলে কল আসলো।আরিশ বিরক্ত হয়ে বললো সব আমার শত্রু।তাহিয়া হেসে দিলো আর বললো রিসিভ করতে।আরিশ পকেট থেকে মোবাইল বের করে নাম্বার দেখে তার চেহারার রঙ পালটে গেলো।

তাহিয়াঃকি হলো,কে কল করেছে?

আরিশঃতুমি বসো,আমি কথা বলে আসছি

তাহিয়াঃবাইরে তো বৃষ্টি

আরিশঃআমি আসছি(আরিশ বাইরে বের হয়ে যায়।)

তাহিয়াঃকার এমন কল এলো যে চলে গেলো? সত্যি আমাদের ভালোবাসায় সব শত্রু(বলেই হেসে দিলো)

আরিশ ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো-

আরিশঃচলো আমাদের এখন বাসায় যেতে হবে।

তাহিয়াঃকেনো?

আরিশঃতোমাকে বাসায় দিয়ে আমার একটু কাজে বের হতে হবে।

তাহিয়াঃকি কাজ?

আরিশঃএতো কথা জেনে কি করবা চলো তো।

__________________________________

তাহসিনঃআপনার বাড়ি এসে গেছে।(গাড়িতে ব্রেক কষে)

জারাঃ হুম।ভিতরে আসুন

তাহসিনঃনা আজ না,দেরি হয়ে গেছে এমনিতেই।

জারাঃআচ্ছা।

(জারা ও তাহসিন গাড়ি থেকে নেমে।জারা ভিতরে ঢুকতে যাবে তাহসিন তাকে ডাক দেয়।)

তাহসিনঃতারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিবেন না হয় জ্বর আসতে পারে রাতে।

জারাঃঠিক আছে,আর আপনিও তারাতাড়ি যান না হলে আপনারও জ্বর আসবে।

(তাহসিন জারাকে বিদায় দিয়ে চলে গেলো)

________________________________

(আরিশ কোথায় যাবে আর কে কল করলো,আমাকেই বা কিছু বলতে চায় না কেনো কিছুই মাথায় আসছে না।আর কল আসার পর থেকেই কেমন অস্থির হয়ে গেছে সেখানে যাবার জন্য।)

আরিশঃকি ভাবছো?গাড়ি থেকে নামো আমরা এসে গেছি।

তাহিয়াঃতুমি ভিতরে আসবে না?

আরিশঃনা আমার কাজ আছে। (বলেই তাহিয়াকে নামিয়ে চলে গেলো)

তাহিয়াঃমা,বাবা কেউ যানে না আমাকে আরিশ বাসায় দিয়ে গেছে,তাহলে আমি আরিশের পিছনে যাবো আজ আমাকে যে জানতেই হবে আরিশ কি এমন লুকানোর চেষ্টা করছে আমার থেকে।

(একটা সি.এন.জি. তে উঠে যায় তাহিয়া,তারপর আরিশের গাড়ির পিছনে।অনেক দূরেই আরিশের গাড়ি তবু্ও রাস্তা ফাকা হওয়ায় আরিশের গাড়ি তাহিয়া ঠিক চিনতে পারছে।তাহিয়া যেদিকে বলছে সি.এন.জি. চালকও সেদিকেই নিচ্ছে।)

__________________________________

তাহসিন ফ্রেশ হয়ে মাত্র রুমে আসলো।আয়নার সামনে চুল ঠিক করছে আর জারার করা বাচ্চামোর কথা ভাবছিলো আর আনমনে হাসছিলো-

তাহসিনঃপাগলী একটা।কিন্তু মনটা অনেক ভালো।আমি চেষ্টা করবো ওর মুখে সবসময় হাসি ফুটিয়ে রাখার।

(এদিকে জারাও তাহসিনের কথা ভেবে লজ্জায় লাল হয়ে আছে।)

জারাঃছিঃ কি করে পারলাম তাকে জড়িয়ে ধরতে,আর কিসব বলছিলাম।কি ভাববে আমাকে নিয়ে কে জানে।আবার দেখা হলে তো আমাকে নিয়ে অনেক মজা করবে।না না আমি আর তাহসিনের সামনেই যাবো না।

__________________________________

তাহিয়া একটা বড় বিল্ডিং এর সামনে আরিশের গাড়ি দাড় করানো দেখলো।সে টাকা দিয়ে সি.এন.জি. বিদায় করলো।

তাহিয়াঃআরিশের এখানে কি এমন কাজ,আর বিল্ডিং এর কাজও অসম্পূর্ণ।

তখনি গুলির আওয়াজ কানে আসে।তাহিয়া গুলির আওয়াজ শুনে একমুহূর্তও ব্যয় না করে উপরে ছুটে গেলো।

তাহিয়াঃআমার আরিশ ঠিক আছে তো, কে গুলি চালালো,আর আরিশের এখানে কেনো আসা লাগলো।

তাহিয়া গিয়ে দেখে দুইজন লোক সেখানে আছে।একজন নিচে বসে আছে একহাত দিয়ে অন্য হাত চেপে ধরে, আরেকজন একটা পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছে।তাহিয়া আরেকটু এগিয়ে গিয়ে যা দেখলো সে পুরাই অবাক।সে বলে উঠলো-

তাহিয়াঃতূর্য ভাইয়া তুমি এখানে!(বলেই বসে পড়লো।তার চোখের সামনে যা দেখছে তা যেনো সে বিশ্বাস করতে পারছে না)

তূর্য একহাত দিয়ে যেখানে রক্ত পড়ছে সেখানে চেপে ধরে আছে আর আরিশ তার সামনে পিস্তল নিয়ে দাড়িয়ে আছে

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,

(সবার জন্য বোনাস পার্ট দিলাম এখন সবাই গঠনমূলক মন্তব্য না করলে কিন্তু রাগ করবো।ধামাকা টা কেমন হলো সবাই কমেন্ট করে জানাবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে