মন গহীনে তুমি পর্ব-০২+০৩

0
915

#মন গহীনে তুমি
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ২+৩
আদ্রিশ মেয়েটার কথামত পার্কে আসলো। অনেকখন হয়ে গেলো কিন্তু মেয়েটা আসলো না৷ আদ্রিশের রাগ হলো অনেক। ওকে আসতে বলে এভাবে অপেক্ষা করানোর কোন মানেই হয়না৷ মেয়েটা বলেছিলো গুরুত্বপূর্ণ কিছু তাই আদ্রিশ এসেছে৷

এখন দেখলো এসে ভুলই করেছে। মেয়েটা হয়তো ওকে এভাবে অপেক্ষা করানোর জন্যই ডেকেছে। আদ্রিশ ভাবলো, এখানে আর অপেক্ষা করা ঠিক হবেনা। আদ্রিশ যখনই চলে যেতে যাবে তখনই মেয়েটা সামনে এসে বললো, এত তাড়া কিসের শুনি?

– আপনি তাহলে অনেক আগেই এসেছেন। আমাকে শুধু শুধু এখানে অপেক্ষা করালেন কেন?

– আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই

– আপনার ইচ্ছেমত তো আর সবকিছু হবেনা। আপনি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলবেন তাই আমি এসেছি৷ নতুবা আসতাম না। আমাকে আসতে বলে আপনি ইচ্ছে করে এভাবে আমাকে অপেক্ষা করাবেন এটা কোন ভদ্রতা না।

– আমাকে আপনার ভদ্রতা শেখাতে হবেনা। আপনার মত অভদ্র আমি না এটা খুব ভালোভাবেই জানি। মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাও জানেন না। আপনার কথা শুনে এত রাগ হয়েছিলো যে মন চাচ্ছিলো থা*প্প*র মারি। বাসায় ছিলাম বলে অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত করেছি৷

– তো এখন কি আপনি প্রতিশোধ নিতে এসেছেন? দেখুন আমি কোন কিছু নিয়ে কনফিউশান পছন্দ করিনা৷ যার সাথে আমার বিয়ে হবে, সারাজীবন একসাথে থাকতে হবে তার ব্যাপারে সবকিছু ক্লিয়ারলি জানার অধিকার নিশ্চয়ই আমার আছে৷ আর আমি আপনার সাথে কিন্তু শান্তভাবেই কথা বলেছিলাম। আপনিই উচ্চস্বরে কথা বলেছিলাম।

– আপনি যা বলেছিলেন তাতে আরও অনেক কিছু বলার কথা ছিলো। আমি ভদ্রতা জানি বলেই নিজেকে শান্ত রেখেছি। কিন্তু আপনার মধ্যে ভদ্রতার ছিঁটেফোঁটাও নেই তা বুঝতে পারছি।

– আমি শুধু আপনার ব্যাপারে ক্লিয়ারলি জানতে চেয়েছি। আমি কোন কিছু কিনতে গেলেও তার গুনাগুন ভালোভাবে যাচাই করে নেই৷ সেখানে আমি যাকে বিয়ে করবো তার ব্যাপারে সবকিছু জানার অধিকার আমার আছে৷

– তাই বলে আপনি কোন মেয়েকে,” আপনি কি ভা*র্জি*ন* “? এটা বলতে পারবেন না৷ এমন প্রশ্ন করা অভদ্রতা আর অপরাধও। মেয়েদের অসম্মান করা হয় এমন কোন শব্দ আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না৷ আমার সম্পর্কে জানার জন্য আপনি অন্য ভাবেও প্রশ্ন করতে পারতেন৷
– আপনি অযথাই এটা নেগেটিভ ভাবে নিচ্ছেন। আজকালকার ভালোবাসাটাই এমন। রিলেশন মানেই গভীর সম্পর্ক। সেই ধারনা থেকেই আমি প্রশ্নটা করেছি। যদি জিজ্ঞেস করতাম, আপনি কি রিলেশন করেন বা করছেন কখনও? তাহলে হয়তো আপনি হ্যা বা না বলতেন। কিন্তু তাতে আমার কনফিউশান দূর হত না৷ বিয়ের পর আমাকে এটা আরও চিন্তিত করতো৷ আমি ডিপ্রেশনে থাকতাম। তাই আমি আগে থেকেই এটা নিয়ে নিশ্চিত হতে চেয়েছি৷ যাতে বিয়ের পর এটা নিয়ে কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
আমি প্রশ্নটা স্বাভাবিক আর পজেটিভ মাইন্ডেই করেছি৷ কিন্তু আপনি এটা নেগেটিভ নিয়েছেন৷

– নিজে অভদ্রের মত কথা বলবেন আর রিয়্যাক্ট করলে বলবেন নেগেটিভ নিয়েছি৷ আপনারা ছেলেরা এমনই। আপনি নিজের কনফিউশান দূর করার জন্য তো একটা মেয়ের সাথে অভদ্র আচরন করতে পারবেন না৷ তাকে অসম্মানজনক কথা বলার অধিকার আপনার নেই। আমি চাইলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবো আমাকে এরকম কথা বলার জন্য কিন্তু আমি তা করবো না৷ এটা এখানেই শেষ হবে৷

– আপনি আমাকে যা খুশি ভাবতে পারেন। আমি শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে কোন কিছু করিনা৷ আমার পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে আমি সঠিক।

কায়রার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে কিন্তু পাবলিক প্লেসে তাই কিছু বলতে পারছেনা৷ রাগ কন্ট্রোল করে বললো, আপনার জন্য আমি যে ঝামেলায় পড়েছি আপনাকেই তা থেকে উদ্ধার করতে হবে। আপনি আমাকে রিজেক্ট করে দিলেই আর এই ঝামেলা হত না৷

– এমন ভাবে বলছেন যেনো আমি আপনাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে আছি৷ আমাকে কিছু বলার সুযোগই তো তারা দিলোনা৷ আমরা রুম থেকে বের হওয়ার পরই তো তারা বিয়ের তারিখ ঠিক করা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলো৷

– আপনাকে হাসতে কে বলছিলো? না হেসে যদি তাদের বলে দিতেন, ” আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি “। তাহলেই তো হত।
– সেটা তো আপনিও করতে পারতেন৷ আপনার কেন হাসি দিতে হবে? আমি না হয় সামাজিকতা রক্ষার জন্য একটু হাসার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু আপনার কেন হাসতে হবে৷ আপনি না হাসলে তো তারা বিয়ের তারিখ ঠিক করতো না। আমাকে ধন্যবাদ দিন কারন আমিই কিন্তু বিয়ের তারিখ ঠিক করা থেকে বিরত রেখেছি সবাইকে৷

– ধন্যবাদ কখনই দিবোনা৷ আপনি আমার সাথে যে অভদ্র আচরন করেছেন তারজন্য সরি বলবেন আগে৷ আপনার মত অভদ্র মানুষ আমি আর কখনও দেখিনি হয়তো দেখবোও না।

– দেখুন কথায় কথায় আমাকে অভদ্র বলবেন না৷ যেকোন মানুষের কোন কিছু নিয়ে কনফিউশান থাকেই। আমার ভয় হয় বিয়ের পর আমার স্ত্রী তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে পালিয়ে যাবে৷ আর আজকাল রিলেশন মানেই গভীর সম্পর্ক তাই তারা একে অপরের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হয়। এর জন্য আপনাকে জিজ্ঞেস করেছি আপনি ভা*র্জি*ন কিনা। আমি কখনও রিলেশনে যাইনি৷ প্রেম- ভালোবাসা এসব থেকে দূরে থেকেছি সবসময়। আমার সব ভালোবাসা আমার ভবিষ্যত স্ত্রীকে নিয়ে৷ তাকে নিয়ে আমি খুবিই সিরিয়াস। আমি কোনভাবে ধোঁকা খেতে চাইনা। আমি যেমন কোন রিলেশনে জড়াইনি তাই আমার স্ত্রী যে হবে তারও তেমন হতে হবে। যদি বিয়ের পর কোনভাবে জানতে পারি আমার স্ত্রী ভা*র্জি*ন ছিলোনা। এটা আমাকে ডিপ্রেশনে ফেলতো৷ আমি লাইফে অনেক বড় একটা ধাক্কা খেতাম। সবার থেকে একা হয়ে যেতাম। জবে মন দিতে পারতাম না। আমি ভবিষ্যতের সমস্যা গুলোর কথা ভেবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার দিক থেকে আমি সঠিক৷ এখন এর জন্য যদি সবাই আমাকে খারাপ ভাবে তারপরও কিছু যায় আসবেনা কারন ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কোন অশান্তি হবেনা৷ আমাকে কখনও চিন্তা করতে হবেনা৷ আমি আমার স্ত্রীকে নিঃসার্থ ভাবে ভালোবাসতে পারবো।

কায়রা আদ্রিশের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সেই সাথে রাগও হচ্ছে অনেক৷ কায়রা ভাবতেছে, পাগল নাকি মানুষ বর্তমানে কি করবে সেটা নিয়ে ভাবে আর সে ভবিষ্যতে কি হতে পারে, হবে কিনা তার ঠিক নেই সেটা নিয়ে পরে আছে৷ অদ্ভুত এক মানুষ।

কায়রা বললো, এরকম চিন্তাভাবনা থাকলে বিয়ে না করলেই পারেন৷ তাহলে আর এরকম ভয় থাকবেনা৷ আর ডিপ্রেশনে পরারও ভয় থাকবেনা৷ আপনি না শিক্ষিত, ভালো একটা জব করেন তাহলে এরকম চিন্তাভাবনা কেন?

– আমি সবসময় ভবিষ্যত নিয়ে ভাবি। বর্তমানে কোন সমস্যা হলে সেটা নিয়ে আমরা ভাবতে পারি৷ সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি কিন্তু ভবিষ্যতে এরকম সমস্যা আসলে তখন আর ভাবার সময় থাকেনা৷

– রিলেশন থাকলেই যে সে গভীর সম্পর্কে থাকবে এটা আপনাকে কে বললো? প্রকৃত ভালোবাসা মানে শা*রি*রীক সস্পর্ক না। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস।

আমি লাকি যে এরকম একজন আমার পাশে আছে। আর সবসময় থাকবে৷

আদ্রিশ অবাক হয়ে কায়রাকে জিজ্ঞেস করলো, আপনি রিলেশনে আছেন?

– হ্যা

– তাহলে এই বিয়েতে কেন রাজি হলেন? আপনার বাবাকে কেন সত্যিটা বললেন না?

চলবে—–

#মন_গহীনে_তুমি
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৩
বাবাকে বলিনি তার পিছনে অবশ্যই কোন কারন আছে কিন্তু তা আপনাকে বলতে আমি বাধ্য নই৷

আদ্রিশ বললো, তাহলে আপনি নিজেই আপনার বাবাকে বলতে পারতেন যে, আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন। শুধু শুধু আমাকে এত প্যাড়া দিচ্ছেন কেন? বাবার কাছে ভালো থাকবেন কিন্তু আমাকে খারাপ বানাবেন৷

– আপনাকে খারাপ বানানোর কিছু নেই আপনি অলরেডি খারাপ আছেন৷

– তাহলে আপনি নিজেই আপনার বাবাকে গিয়ে বলেন৷ আমি তো খারাপ আপনার বাবার কাছে আর খারাপ হতে পারবো না।
– আপনি বলবেন৷ আমি নিজে থেকে কিছু বলতে পারবো না৷ আর আমি আপনাকে এসব বলতে বলেছি তাও বাবাকে বলবেন না।

– আচ্ছা যদি আমি আপনাকে পছন্দ করতাম। বিয়ের তারিখ ঠিক করা হত তখন কি করতেন?

– তখন আপনাকে বলে দিতাম, আমার আপনাকে পছন্দ না৷ আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। এসব শোনার পর নিশ্চয়ই আপনি বিয়েটা করতেন না।

– ঝামেলায় শুধু আপনি একা নন আমিও আছি। কিভাবে বিয়েটা ভাঙবো সেটাই ভাবতেছি। আমার একা দুই পরিবারের বিরুদ্ধে যেতে হবে৷

– দরকার হলে যাবেন৷ আপনার জন্য এসব কোন ব্যাপারই না৷ অভদ্রের মত আচরন তো করতে পারেন। যা করার তাড়াতাড়ি করবেন৷

– আপনি কথায় কথায় আমাকে অভদ্র বলা বন্ধ করুন৷

– যা সত্যি সেটাই বলছি৷

– আপনার সাথে কথা বলাই বেকার৷ আপনার গুরুত্বপূর্ণ কথা শেষ হলে আমি কি যেতে পারি এখন?

– হুম যান৷

———–

আদ্রিশ ভাবতেছে, এই মেয়ের থেকে দূরে থাকতে হবে৷ তার জন্য আগে বিয়েটা ভাঙতে হবে। পরিবারের সবাই যেভাবে বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছে, কেনাকাটাও শুরু করে দিয়েছে। এখন কিভাবে তাদের বলবো সেটাই ভাবতেছি৷ বিয়েটা ভাঙতে হলে আমাকে অনেকগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে৷ মেয়েটার তো কোন চিন্তা নেই সে নিজে থেকে কিছু বলবেনা। আমারই সবাইকে বলতে হবে। কি এক ঝামেলায় পরলাম৷ মেয়েটাকে পছন্দ না এটা বলার জন্য ও আমাকে ভাবতে হচ্ছে।

আদ্রিশ বাসায় আসার পর দেখলো, সবাই কেনাকাটা করতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেখানে বিয়েটাই হবেনা সেখানে এরা কেনাকাটা করতে ব্যস্ত। এদেরকে এখন কিভাবে বুঝাবো৷

আদ্রিশ বললো, বিয়ের তারিখ এখনও ঠিক হয়নি আর তোমরা শপিং নিয়ে আছো৷ আগে বিয়ের তারিখ ঠিক হউক তারপর শপিং নিয়ে ভাবা যাবে।

– তারিখ তো ঠিক হয়েই আছে

আদ্রিশ ভয় পেয়ে গেলো। ওর অজান্তে এরা বিয়ের তারিখ ঠিক করে রেখেছে। আদ্রিশ বললো, তারিখ ঠিক হয়েছে মানে?

” একপ্রকার তো ঠিক হয়েই আছে। তোর অফিসের কাজ শেষ হলেই তারিখ ঠিক করাটা শুধু বাকি। এমন সময় তোর অফিসের কাজ পরে গেলো। তোর স্যারকে বলে দ্রুত কাজ শেষ কর৷

আদ্রিশ ভাবতেছে, এদেরকে কিভাবে বলবে বিয়েটা ও করতে চায়না৷ কেন যে তখন হাসতে গেলাম। সামান্য হাসি এখন আমার গলায় কাঁটার মত আটকে গেছে৷

মেয়েটা তো সবকিছু আমার উপরে ছেড়ে দিয়ে নিজে ঠিকই শান্তিতে আছে৷ সে তার বাবার কাছে, আমার পরিবারের কাছে সবার কাছে ভালো থাকবে৷ মাঝখান থেকে আমি তাদের চোখে খারাপ হয়ে যাবো। ইচ্ছে করতেছে মেয়েটার সব কুকীর্তি সবাইকে বলে দেই৷

তখন তো মেয়েটার পরিবার ভাববে, আমি মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাইনা তাই এসব ছড়াচ্ছি। কি একটা ঝামেলায় পরলাম। সত্যি বললেও সমস্যা আর মিথ্যা বললেও। এখন এদেরকে শপিং করা থেকে কিভাবে আটকাবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।

সবাই আমাকে বলতেছে,

” তুই রেডি হসনি কেন এখনও? তাড়াতাড়ি যা সময় নেই একদমই। মেয়ে পক্ষ কিন্তু আমাদের আগে চলে আসবে।

– কথাটা শুনে মনে হলো যেনো কারেন্টের শ*ক খেয়েছি একটা৷ আমি বললাম, মেয়ে পক্ষ আসবে মানে? কোথায় আসবে?

” আসলেই তুই একটা গা*ধা। দুই পরিবার সবার পছন্দমত একসাথে শপিং করবো। তারা এসে পরবে তুই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে৷ তারা আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে কেমন দেখায় বল।

” ভাইয়া ভাবিও আসবে৷ ভালো করে রেডি হয়ে নাও। বিয়ের আগেই ভাবি তোমাকে যা কেয়ার করে বিয়ের পর কি হবে কে জানে। তবে যাই বলো ভাবি কিন্তু মাশাআল্লাহ। সবার মন মত।

– কি বলবো বুঝতে পারছিনা৷ আমরা চাচ্ছি বিয়েটা ভাঙতে আর তারা সবাই শপিং নিয়ে আছে। এককিছুর পর তো বিয়েটা ভাঙা মুশকিল হয়ে যাবে। তখন তো সবাই বলবে আগে কেন বলিনি। তাদেরকে যে বলবো বলার মত সিচুয়েশন পাচ্ছিনা। আমার রিলেটিভরা সবাই আছে। যখনই বাসায় আসি তখনই দেখি তারা বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত। কিছু বলার সুযোগ পাচ্ছি না৷ আমার পরিবারকে আগে বলতে হবে তারপর মেয়েটার পরিবারকে৷

———-

আমরা শপিং মলে যাওয়ার সাথে সাথে মেয়েটা আর ওর পরিবারও এসে পরেছে। মেয়েটা আমার দিকে রাগীভাবে তাকিয়ে আছে।

সবাই আমাদের বললো, আমাদের পছন্দের সাথে তো তোমাদের পছন্দ মিলবেনা৷ তাই আমরা আমাদের মত শপিং করি তোমরা তোমাদের মত পছন্দ করো যাও।

ইচ্ছে না থাকা সত্যেও মেয়েটার সাথে যেতে হলো৷ মেয়েটা বলে দিলেই পারতো দরকার নেই। কিন্তু সে তো তার বাবার ভালো মেয়ে হয়ে থাকতে চায়।

” মেয়েটা আমাকে রাগী কন্ঠে বলতেছে, আপনাকে বলেছিলাম বিয়েটা ভাঙতে আর আপনি তাদেরকে নিয়ে শপিং করতে চলে আসলেন। আপনাকে যে কি করতে ইচ্ছে করতেছে।

– দেখুন ক্ষতি কিন্তু আমারই হচ্ছে। শপিং কিন্তু ছেলে পক্ষ ই করবে। যখন শুনলেন কেও শপিং করাবে ওমনি নাচতে নাচতে চলে আসলেন৷ বিয়েটা হউক বা না হউক আপনার তো শপিং করা লাগবে। আপনাদের জন্য যা খরচ হবে তার সবটা আমাকে দিতে হবে বলে দিলাম।

– আর আমার বাবা বুঝি কিছু দিবেনা। আপনারাও দিবেন আমরাও দিবো সমান।

– দিবে তো শুধু একটা শেরওয়ানি, পান্জাবি,জুতা আর আমাদের তো কত কিছু দিতে হবে আপনার সাজ-সরঞ্জামেই তো এর থেকে বেশি খরচ যাবে। তারপর কত দামের শাড়ি দিতে হবে মনে হলেই আমার মাথা ঘুরে। আমরা যা দিবো সবকিছু আলাদা করে রাখবেন। একটারও প্যাকেট খুলবেন না। সবকিছু আমি ফেরত নিবো৷

– সত্যিই আপনি একটা অভদ্র সেই সাথে অনেক ছোট মনের মানুষও

– আমি কি যাকাত দিচ্ছি নাকি যে আমাকে বড় মনের হতে হবে। যাকাত যাদের দেওয়া উচিত তাদের দিবো৷ আপনাদের না৷

কায়রার মন চাচ্ছে ঘু*ষি মেরে তার নাকটা ফা*টি*য়ে দিতে৷ নিজেকে শান্ত রেখে বললো, আপনি তাদেরকে শপিং করাতে কেন নিয়ে আসলেন?

কায়রার মোবাইলে কল আসলো। আদ্রিশ বললো যান যান বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে আসুন৷

চলবে—–

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে