#মনোহরা
#পর্বঃ১৬
#লেখিকাঃনির্মলা
শানঃ খুব খুশি না বাড়ি যাবার কথা শুনে
আমি উনার গলার আওয়াজ পেয়ে পিছনে ঘুড়লাম দেখলাম উনি বুকে দুই হাত গুজে আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। সেটা দেখে আমি আবার সামনে তাকিয়ে নিজের কাজে মনযোগ দিতে দিতে বললাম
ইশাঃ তা হবো না কতদিন পর বাড়িতে যাচ্ছি
শানঃ তাই তা ঠিক কত দিন পর (ঠেস মেরে)
ইশাঃ দেখুন আমি জানি আপনি আমাকে ঠেস মেরে এসব বলছে।কিন্তু কি বলুন তো আমরা তো মেয়ে তো আমাদের কাছে একদিন মানে ১ মাস। আর আমি কোনদিন বাবা মাকে ছাড়া থাকিনি।
এসব বলতে বলতে দেখলাম উনি আমার পাশে এসে দাড়িয়ে আমার ব্যাগের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সেটা আড় চোখে দেখে বললাম
ইশাঃ কি দেখছেন এমন ভাবে
শানঃ কি আবার যেভাবে ব্যাগ গুছিয়েছো তাতে মনে হয় ওখানে ১ মাসের জন্য যাচ্ছো।
ইশাঃ কি যা তা বলছে এখানে ২ সপ্তাহে কাপড়। ২ সপ্তাহ থাকবতো নাকি।
শানঃ hello মেডাম স্বপ্নের দুনিয়া থেকে বেড়িয়ে আসুন। শশুড় বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি ।যাবো এক দিন থাকবো পরের দিন চলে আসবো।
আমি উনার মুখ থেকেএকম কথা শুনে বললাম
ইশাঃ মানে কি
শানঃ মানে কিছু না ব্যাগ থেকে অধেক কাপুড় বেড় করো আর তারপর কাবার্ড থেকে আমি আমার কাপড় দিচ্ছি সেগুলো রাখো
বলেই শান কাবার্ড এর কাছে যেতে লাগলো সেটা দেখে ইশা অবাক হয়ে বলল
ইশাঃ মানে!!!! আমরা একদিন থাকবো
শান ইশার কথায় থেমে গিয়ে পিছনে তাকিয়ে বলল
শানঃ হ্যাঁ
ইশা এবার রেগে গিয়ে বলল
ইশাঃআপনি একদিন থেকে চলে আইসেন।আমি ওখানে কিছু দিন থাকবো।
এই কথা শুনে উনি আমার দিকে তেড়ে এসে আমার দুই বাহু চেপে ধরে রাগি দৃষ্টিতে বললেন
শানঃ দেখো আমাকে রাগিও না ইশা
আমি বুঝতে পারছি না এতে এত রাগার কি
আছে। উনি আবারও বলে উঠলেন
শানঃ আমি যেটা বলবো সেটা করার চেষ্টা করবে
ইশাঃ আচ্ছা আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেন (অসহায় ভাবে)
শানঃ তুমি আমার থেকে কখনও দূরে যাবার কথা বলবে না।আর হ্যাঁ আমরা ওখানে ১ দিনই থাকবো বুঝতে পেরেছো তুমি ( জোরে চিৎকার করে বললো)
আমি উনার চিৎকার শুনে কেঁপে উঠেতেই। উনি সেটা দেখে আমাকে ছেড়ে দিয়ে। কাবার্ড থেকে নিজের শার্ট প্যান্ট এনে আমার কাছে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। আমি বুঝতে পারি না মাঝে মাঝে উনার কি। আমি উনাকে কখনও বুঝতে পারবো না নাকি???? উনার এত রাগের কেনো আল্লাহ জানে।
আমি ব্যাগের থেকে আমার কিছু জামাকাপড় সরিয়ে রেখের উনার গুলো রাখলাম।তারপর বিছানার দিকে যেতেই নিলেই ঘড়ির দিকে তাকালাম। দেখলাম ১২টা বাজে। কিন্তু উনি এখনও রুমে এলেন না।আমি একবার ভাবলাম রুমের বাহিরে গিয়ে দেখবো। তারপর ভাবলাম এত রাতে একা বাহিরে যেতে পারবো না আমি কারন আমার আবার ভূতের ভয় অনেক তাই বেড় হলাম না বিছানায় শুয়ে পড়লাম।শুয়ে পড়কেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম
ইশা ঘুমার পর পরই শান রুমে আছে। এসে দেখে ইশা ঘুমিয়ে আছে।শানের অনেক ইচ্ছা করছিলো ইশার কাছে যেয়ে ক্ষমা চাইতে একটু আগের ব্যবহারের জন্য সে তো ইশাকে ছাড়া থাকতে চায় না।গত দুইবছর ইশার থেকে দূরে ছিলো।আর সে চায় না ইশার থেকে দূরে থাকতে তাই তো ইশার ওবাড়িতে কিছুদিন থাকার কথা শুনে রেগে গিয়েছিল। একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে washroom পা বাড়ালো শান। fresh হয়ে বিছানার আর এক পাশে গিয়ে ইশাকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে ইশার ঘুমন্ত মুখের দিকে কত সময় তাকিয়ে ইশার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো তারপর ঘুমিয়ে গেলো।
সকালে……
সকাল ৮টার দিকে ইশা আর শান ইশাদের বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো।প্রায় আধ ঘন্টা হয়ে গেছে তারা বেড় হয়েছে।তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কারও সাথে কথা বলে নি।ইশা বারবার শানের দিকে আড়চোখে দেখতে লাগলো সে কি করছে। সে দেখলো শান এক মনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে ইশার দিকে এক বারও তাকাচ্ছে না।ইশার সেটা দেখে রাগ হতে লাগলো।কারন শান তো তাকে বকা দিয়েছে রাগ করে থাকার কথা তার তবে শান কেনো রেগে আছে। ইশা শানকে একটা মুখ ভেংচি কেটে বাহিরের দিকে তাকালো।ইশা চোখ সরাতেই শান ইশার দিকে তাকালো আর মনে মনে ভাবলো
শানঃ কি হলো বাহিরে তাকিয়ে আছে কেনো কালকের জন্য রাগ করেছে নাকি। একবার কি sorry বলবো।
আমি বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে একটু আগে বৃষ্টি হয়েছিলো।এখন অবশ্য হচ্ছে না তবে বৃষ্টি হবার পর প্রকৃতি যেনো তার রূপ খুলে দেয় চারি পাশে অন্যরকম লাগে।আপাতত সেই দৃশ্য উপভোগ করছিলাম।
ঠিক তখন উনি বলে উঠলেন
শানঃ sorry
কথাটা শোনা মাএ আমি উনার দিকে তাকালাম।আমি চারপাশে একটু তাকিয়ে দেখার ভাব করে বললাম
ইশাঃ এটা কি আপনি আমাকে বলেন
শানঃ আর কি কেউ আছে নাকি??
ইশাঃ না মানে এটা আপনার মুখ থেকে শুনতে অভ্যস্ত নই তো তাই আর কি
উনি আমার থেকে চোখ সরিয়ে গাড়ি চালানোয় মন দিলেন।
আমি আবারও জানালার দিকে মন দিলাম।কিছুসময় পর আবারও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করলো তা দেখে আমি উনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম
ইশাঃগাড়ির কাঁচটা নামিয়ে দিন না
উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলেন আমি সেটা দেখে বললাম
ইশাঃ ওভাবে তাকানোর কি আছে
শানঃ তো কি করবো তুমি দেখতে পারছো না বাহিরে বৃষ্টি পড়ছে
ইশাঃ সেই জন্যই তো বললাম দিন না
শানঃ না একদমই না
আমি এবার রেগে গিয়ে বললাম
ইশাঃ ঠিকাছে দিতে হবে না।
উনি আমার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে গাড়ির জানালার কাঁচ খুলতে খুলতে বললেন
শানঃ দিন দিন জেদি হয়ে যাচ্ছো
আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম
ইশাঃ আজকাল আপনার বাতাস আমার গায়ে লাগছে তো তাই
শানঃ বড্ড কথা বলো আজকাল।তোমার সাহস বেড়ে যাচ্ছে দিন দিন।
আমি আর কথা না বারিয়ে জানালার দিকে তাকালাম।জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস ভেতরে ডুকছে।বাতাস তার সাথে একটা মিষ্টি সুগন্ধ
নিয়ে আসছে।এটা অবশ্য সবাই পায় না যারা অনুভব করতে পারে শুধু তারাই বলতে পারবে।
দেখতে দেখতে ইশাদের বাড়ির গেটের সামনে শান গাড়ি থামালো।গাড়ি থামতেই ইশা গাড়ি দরজা থেকে নেমে দাড়াতেই দেখলো তার মা, বাবা, জিসান, রিয়া,আর নিতু দাড়িয়ে আছে।ইশা দ্রুত পায়ে গিয়ে তার বাবাকে জোরিয়ে ধরলো।ইশাকে দেখে রিয়া আর নিতু ইশার কাছে গিয়ে ইশাকে জোরিয়ে ধরলো আর বলল
রিয়া আর নিতুঃ আপুনি কেমন আছিস
ইশাঃ তোরা কেমন আছিস
রিয়া আর নিতুঃ ভালো, চলো ভেতরে চলো
ইশাকে দুইজন টেনে নিয়ে গেলো
জিসান গেলো শানের কাছে। শান গাড়ি থেকে বেড়িয়ে জিসানকে দেখে জোরিয়ে ধরে বলল
শানঃ কেমন আছেন শালা বাবু
জিসানঃ ভালো আপনি
শানঃ তোর বোন যেভাবে রেখেছে ঠিক সে ভাবে
জিসানঃ এ কথা বললি কেনো ইশা কিছু করেছে………
[[[লেখায় ভুল হতে পাড়ে একটু বুঝে পড়বেন ধন্যবাদ]]]
চলবে………