তোমার জন্য সাইকো পর্ব-০৯

0
2263

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৯
মুন চেয়ে চেয়ে রোদের পাগলামি দেখছে শপিং করতে সবাই আসছে মামনি নিজের মতো শপিং করছে আর মুন কিছু কিনতেই পারছে না রোদ মুনকে কিনতেই দিচ্ছে না সব নিজের মতো করে কিনছে মুনের পছন্দের কোনো দাম নেই। এইটা পছন্দ করছে ওই টা করছে আর মুনকে সেগুলো পরে দেখাতে হচ্ছে ।
মুন: উফফ রোদ আমার আর ভালো লাগছে না তুমি যা যা কিনতে ইচ্ছা হয় কিনে নাও আমি গেলাম( বিরক্তি ভাব নিয়ে)
রোদ: চুপ চাপ এখানে দাড়িয়ে থাকি এখান থেকে এক পা ও নোরলে পা কেটে হাতে ধরিয়ে দেব ( চোখ গরম করে)
মুন কিছু বললো না
রোদ: তোমার ড্রেস কিনা সব শেষ এবার সারী
মুন: পাগল নাকি আমি কি সারী পরি যে সারী কিনছেন
রোদ: আমার উপর কথা বলতে এসো না যা বলছি তাই কর
মুন চুপ করে গেলো
একটু পর রাইমা চৌধুরী আসলো
রাইমা চৌধুরী: কিরে তোদের কি শেষ হল তাড়াতাড়ি কর
মুন: হা মামো…
মুনকে কিছু বলতে না দিয়ে
রোদ: হা আম্মু শেষ আর একটু আছে
রাইমা চৌধুরী: তাড়াতাড়ি কর
রোদ এবার মুনের কিছু সারী কিনে। নিজের জন্য ও শপিং করে নিল
মুন শপিং মলে হাঁটছিলো হটাৎ একটা ছেলে মুনকে ফলো করছে রোদ শপিং করতে ব্যাস্ত তাই খেয়াল করেনি মুন ওর জন্য একটা গাউন দেখছিল তখন ছেলেটা এসে মুন এর কোমরে যেই হাত দিতে যাবে ওমনি রোদ ছেলেটার হাত মুচড়ে ধরে ছেলেটা ব্যাথায় কুকরে উঠে মুন পিছনে তাকিয়ে দেখে রোদ একটা ছেলের হাত ধরে আছে ।
ছেলেটা: ছাড়ুন আমার হাত আমার লাগছে
রোদ: কি করতে যাচ্ছিল আমার কলিজায় হাত দিতে গিছিলী তোর এত সাহস
ছেলেটা: ছাড়ুন আমার হাত লাগছে
রোদ: হা উপর থেকে ছেড়ে দি যাতে নিচে পরে আবার উপরে যেতে পারিস(চোখ লাল করে)
ছেলেটা: ছাড়ুন বলছি
এবার রোদ ছেলেটাকে মারতে লাগলো
রোদ: তোর সাহস কি করে হয় আমার কলিজায় হাত দেওয়ার তুই জানিস ও কে ও আমার would be wife তুই রোদ আহমেদ চৌধুরীর কলিজায় হাত দিতে গিছিস আরে এখানে মিয়েদের জীবন নষ্ট না করে পটিতলায় যা যারা কিছু টাকার বিনিময়ে তোকে সর্বোচ্চ দেবে এভাবে মেয়েদের জীবন নষ্ট না করে তোদের মতো কিছু ছেলেদের জন্য সব ছেলেদের দোষ হয় (মারতে মারতে)
সবাই ভিড় করে দাড়িয়ে দেখছে কারোর কিছু বলার নেই কারণ রোদ তো ভুল কিছু বলছে না
শপিং মলের সব ম্যানেজার এসে রোদ কে টেনে নিয়ে গেল
রোদ : আমাকে টানছে কেনো তখন কোথাও ছিলেন যখন ও আমার কলিজার গায়ে হাত দিতে গিয়েছিলো।
ম্যানেজার: সরি স্যার আমরা ব্যাপারটা দেখছি
রোদ ওদের সাথে কিছু কথা বলে মুনের কাছে আসে
মুন তো একদম পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছে রোদ এসে মুন এর কাঁধে হাত রাখলো
রোদ: তোমাকে বলেছিলাম যে আমার থেকে দূরে যেও না তাও কেনো গেলে আমার কথা কি তোমার কানে যায়না আজ যদি আমি না থাকতাম তো কি হতো বুঝতে পারছো
(চোখ লাল করে)
মুন পাথর হোয় দাড়িয়ে আছে রোদ বুঝতে পারলো যে মুন খুব ভয় পেয়েছে তাই কিছু না বলে মুন কে বুকে জড়িয়ে নিলো
রোদ: কিছু হয়নি আমি আছি তো যতক্ষণ তোমার রোদ তোমার সাথে আছে ততক্ষণ তোমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না কারোর সাহস নেই ভয় পেয় না
মুন: আমি বাড়ি যাবো ( ভয়ে ভয়ে)
রোদ: হা যাবো তো চলো কিছু খেতে হবে তো সেই কখন খেয়েছ বলে মুনকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ওর মামনির কাছে গেলো
রাইমা চৌধুরী ওর এক পড়ানো বান্ধবীর সাথে দেখা হলে তার সাথে কথা বলছিল তাই ওতো খেয়াল করেনি যে কি হসছিল ।
মুন আর রোদ রাইমা চৌধুরী কাছে গিয়ে ডাক দেয়
রোদ: আম্মু এভাবে চলো অনেক দেরি হচছে চলো কিছু খেয়ে বেরিয়ে যাই
রাইমা চৌধুরী: হা রে বাবা চল
তারপর ওরা কিছু খেয়ে বাড়ি চলে গেলো ছাড়া রাস্তা মুন কোনো কথা বলিনি
মুন বাড়ি এসে ফ্রেশ হয় নেইয় পরে বসে বসে আজকের কথা ভাবতে থাকে
তখনই লামিয়া আর রুমা গ্রুপ কল আসে মুন মুচকি হেসে কল ধরে
লামিয়া: কি ব্যাপার বাড়িতে কি সব বলছিস
মুন: আমাকে কিছু বলতে হবে না রোদ সব মেনেজ করে নেবে
রুমা: যাক ভালো জিজু যে তোকে খুব ভালোবাসে সেটা ত জানি
তারপর মুন আজকে শপিং মিলের সব কথা বলে
রুমা লামিয়া শুনে তো অবাগ
রুমা: জিজু তো দেখছি পরাই ভিলেন
লামিয়া: ঐই সালা ভিলেন হবে কেনো বল মুনের হিরো
মুন: হিরো না তো ছাই একদম সাইকো
লামিয়া: হা তোর সাইকো
মুন: চুপ হারামী
লামিয়া: কেনরে হারামির কি করলাম
রুমা: তোর যদি জিজু পছন্দ না হয় তো আমাকে দিয়ে দে
এমনিতেই এই করনার মধ্যে বোফ্ পাওয়া খুব কষ্টের
লামিয়া: হূ ঠিক কয়ছস
রুমা: আমি আল টাইম ঠিক বলি
মুন: চুপ বেয়াদব আমার জামাইকে নিয়ে কথা বলতে লজ্জা করে না
রোদ: বাহ তোমার জামাই আবার বলো শুনতে খুব ভালো লাগছে
মুন কথা শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখে রোদ দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে ঠোঁটে সব সময়ের জন্য পাগল করা হাসি
মুন: তাড়াতাড়ি কল টা কেটে দিল
মুন: আপনি কখন এলেন
রোদ: যখন তুমি ওদের কে তোমার জামাই মানে আমার কথা বলছিলে
রোদ অনেকক্ষণ আগে এসেছে মুন ফোন বেস্ত ছিল বলে বুঝতে পারেনি
মুন: মোটেই ও আপনি আমার জামাই না আমি তো অন্য কে
আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই রোদ ঝড়ের গতিতে এসে মুনকে খাটের সাথে চেপে ধরলো
রোদ: আজ যা বলেছ বলেছ নেক্ট টাইম যেনো তোমার মুখে আমি অন্য ছেলের কথা না শুনি (চোখ লাল করে)
মুন শুধু রোদের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে
রোদ নিজেকে কন্ট্রোল করে
রোদ: যা বলতে আচ্ছিলাম আম্মু রাজি হয়ে গেছে তুমি আমার সাথে ২৬তারিখ যাবা আর আম্মু কাল সকালে চলে যাবে
মুন:…
রোদ: এখন তো খুশি
আর তোমার ড্রেস গুলো দিয়ে গেলাম কাল ওর মধ্যে একটা পরে আমার সাথে বের হবা কাল ভার্সিটির পর তোমাকে একটা জয়াগায় নিয়ে যাবো
মুন: কোথায়?
রোদ: আবার কথা তোমাকে কয়ফিয়ত দিতে আমি বাধ্য নই (রাগী ভাবে)
নেক্সট টাইম আমাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করবে না
মুন মাথা নিচু করে নিল
রোদ: এই আমার দিকে তাকাও
মুন : ….
রোদ: কি বলছি আমি
মুন: ….রোদ: উফফ এই মেয়ে কে তো
বলে মুনের থুতনী ধরে মুখটা উচু করলো
মুন রোদের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে
রোদ: খুব ভালোবাসি তোমায় কেনো আমাকে রাগিয়ে দাও বলো তো যখনই ভাবি তোমার সাথে আর রাগ করবো না তখনই এমন কিছু করো যাতে আমার রাগ উঠে যায় । তোমার সব ছোটো ছোট ভুল আমি ক্ষমা করে দিচ্ছি তাই বলে এই না যে যা খুশি তাই করবে নিজের লিমিট এ থাকবা এমন কিছু করবা না যাতে আমাকে তোমার সাথে খারাপ কিছু করতে হয়
কথাটা মাথায় রাখবা
বলে কপালে একটা কিস করে চলে যায়
মুন: হু আয়ছে উনার কথা সব শুনতে হবে কোথাকার কোন হরিদাস পাল সাইকো একটা শুনবো না তোর কথা তুই যদি সাইকো হোস তো আমি ও সাইকো queen দেখিয়ে দেবো তোকে হূ
তখনই মুনের ফোনটা বেজে উঠে মুন ফোন হাতে নিয়ে দেখে নাহিল চৌধুরি ফোন করেছে মুন মুচকি হেসে ফোন রিসিভ করে
মুন: হ্যালো শেষে আমার কথা মনে পড়লো
নাহিল: আমি কি আমার মামনি কে ভুলতে পারি
মুন: কেমন ভুলতে পারো সে দেখা আছে
নাহিল : আরে মামনি তুমি শুধু রাগ করছো আমি তো ব্যাস্ত ছিলাম আর তুমি ও তো ব্যাস্ত ছিলে
মুন: হি আর বলতে হবে না
নাহিল: আচ্ছা মামনি সরি দেখো কান ধরছি
মুন: হি হি হি থাক কান ধরতে হবে না তুমি ঠিক আছো তো?
নাহিল: হা মামনি তোমার কি অবস্থা কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো
মুন: না পাপাই
নাহিল: কোনো সমস্যা হলে রোদকে বলবে
মুন: ওই তো সব থেকে বড় সমস্যা ( বির বির করে)
নাহিল: কিছু বললে মামনি
মুন: না কিছুনা আচ্ছা তুমি ঘুমিয়ে পরো অনেক রাত hoyche
নাহিল: হা তুমি ও গুড নাইট মামনি
মুন: গুড নাইট
মুন ফোনটা কেটে দিয়ে লামিয়া আর রুমা কে মেসেজ দিয়ে রাইমা চৌধুরী ঘরে যায়
মুন গিয়ে দেখে রাইমা চৌধুরী শুয়ে আছে ।মুন গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো
মুন: মামনি
রাইমা চৌধুরী: কি ব্যাপার মুন তুই এত রাতে ভয়
করছে
মুন: না মামনি এমনি আসলাম
রাইমা চৌধুরী: ওহ
মুন রাইমা চৌধুর কোলে শুয়ে পরলো
রাইমা চৌধুরী মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে
মুন: আচ্ছা মামনি আকাশে আব্বু আম্মু আমায় মিস করছে?
মুনের এমন কথায় রাইমা চৌধুরী বুজে গেলেন যে মুন ওর বাবা মার কথা মনে পড়ছে
রাইমা: হা রে মা তোর আব্বু আম্মু খুব মিস করছে তোকে তুই যে ওদের সব ছিলি
মুন: একটু ও না যদি সত্যি তাই হতো তাহলে আমাকে একা ফেলে চলে যেত না
রাইমা : আল্লাহ ডাক পরলে কি কেউ কিছু করতে পারে আমাদের সবাই কে একদিন যেতে হবে
মুন: তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না
রাইমা: না রে মা কোথাও যাবো না আল্লাহ ডাক পরলে তো আর কিছু করার নেই
রোদ: বাহ আমার আদর তো সব নিয়ে নিলে এটা তো হতে দেওয়া যায় না
মুন আর রাইমা চৌধুরী তাকিয়ে দেখে রোদ দাড়িয়ে আছে
রাইমা: তুই এত রাতে
রোদ কিছু না বলে রাইমা চৌধুরী কোলে শুয়ে পড়ে
রোদ: বারে আমি আমার আম্মু ঘরে আসতে পারিনা
মুন: মামনি তোমার ছেলেকে উঠতে বলো।
রোদ: আমি আমার আম্মুর ঘরে অচ্ছি তোমার তাতে কি হুম?
মুন: মামনি
রাইমা চৌধুরী: চুপ করতো ঘুমা
রোদ কিছু না বলে মুনের হাত ধরলো
মুন চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে ।
২জন দজনের দিকে তাকিয়ে ঘুমিয়ে পরলো আর রাইমা চৌধুরী ওদের ঠিক করে শুয়িয়ে নিজে ওদের মাজখানে শুয়ে পরলো।
সকালে
মুন ঘুম থেকে উঠে দেখে মামনি নেই পাশে রোদ ওর হাত বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে মুন এক নজরে রোদকে দেখছে
রোদের ও ঘুম ভেংগে যায় তাকিয়ে দেখে মুন ওর দিকে তাকিয়ে আছে
রোদ: আমি জানি আমি সুন্দর তাই বলে এভাবে চোখ দিয়ে গিলে খাবে
রোদের কথায় মুনের ধেন ভেঙ্গে
মুন: মোটেও আমি আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম না
রোদ: সে লোকে জানে
মুন কিছু না বলে উঠে যায় ।
রোদ মুচকি হেসে উঠে যায়

রাইমা চৌধুরী চলে যায় ।

রোদ আর মুন ও বেরিয়ে পরে
রোদ মুনকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় ।

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে