তোমার জন্য সাইকো পর্ব-০৮

0
2287

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৮
মুন হাত ছাড়িয়ে সামনের মানুষটাকে দেখে ওর মাথায় রক্ত উঠে গেলো। নিজেকে শান্ত করে ও বললো
মুন: আপনি আমায় এভাবে টেনে কেনো আনলেন আপনার সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার নিজেকে কি ভাবেন একদিন বাঁচিয়েছেন বলে যা খুশি তাই করবেন আমার উপর অধিকার খাটাবেন আমার উপর কারোর অধিকার খাটবে না বুঝছেন(অনেকটা রেগে)
আরুশ: কি হয়েছে তুমি এভাবে রেগে গেছে কেনো আমি তো just তোমাকে কথা বলার জন্য নিয়ে এসেছি।
মুন: কিসের কথা আমার সাথে আপনার হা কিসের এত কথা বুঝিনা ভেবেছেন
আরুশ: দেখো তুমি কিন্ত বেশি করছো একটু হাত ধরলে কি হয় ?
মুন: কার কি হয় আমি জানিনা কিন্ত আমার সহ্য হয় না।
আরুশ: আমি তো তোমাকে থামাতে ধরেছিলাম
মুন: আল্লাহ পরে রোদ ছাড়া আমাকে কেউ থামাতে পারবে না ওয়ার্নিং দিচ্ছি আমার থেকে দূরে দূরে থাকবেন নাহলে ফল ভালো হবে না
আরুশ: আচ্ছা আমি ও দেখি তুমি কি করতে পরো( এই বলে মুনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর মুন পিছিয়ে যাচ্ছে )
মুন: এই আপনি এভাবে এগিয়ে আচ্ছেন কেনো পিছিয়ে যান বলছি
আরুশ: না দেখি তুমি কি করতে পারো
মুন: আমি কিছু করবি না আপনি সরুন
আরুশ: ওকে যা বলতে আচ্ছি কাল কিছু না বলে চলে গেলে কেনো আর একটু আগে কোন ছেলের নাম নিলে কে ও তোমার মুখে যেনো আর কখনো কোনো ছেলের নাম না শুনি তমি শুধু আমার বুঝছো আমি তোমাকে ভালোবাসি ইজ that’s clear
মুন: না আমি আপনাকে ভালোবাসি না মাত্র কয়েক দিনের পরিচয়ে ভালোবাসা কি করে হয়
আরুশ: ওসব আমি বুজিনা আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি আর তোমাকে ও বাসতে হবে
কথাটা বলে আরুশ চলে গেলো
আর মুন হা করে তাকিয়ে আছে।
মুন: ছেলেটা কি পাগল ছোটো বেলায় maybe pore গিয়েছিলো আহারে কি কষ্ট ।সব কষ্ট বের হয়ে যাবে যদি রোদ জানতে পারে জানিনা তো কে রোদ একটা সাইকো ।আল্লাহ সব পাগল ছাগল কি আমার কপালে জুটে
বির বির করতে করতে মুন ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
আরুশ ক্লাস রম্ম থেকে সিষ বাজাতে বাজাতে বের হয়ে যাচ্ছে আর মনে মনে ভিলেনি হাসি হাসছে
আরুশ: রোদ তাইনা যদি রোদই না থাকে তো মুন ….

এদিকে রোদ অফিস এ বসে কাজ করছিল ঠিক সেই সময় ওর ফোন এ একটা ফোন আসে
ফোনটা ধরে কানে দিলো
রোদ: হুম কোনো সমস্যা
ওপাশ থেকে….
রোদ: গুড এখন রাখছি খেয়াল রেখো
রোদ: পিপীলিকার পাখা ওরে মরিবার তোরে জানে না তো কর কলিজার দিকে নজর দিচ্ছে আমি সাইকো মুন এর সাইকো
বলে কোর্ট টা পড়ে বেড়িয়ে গেলো

মুন আনমনে হাটছে আর আরুশ এর কথা ভাবছে তখনই লামিয়া আর রুমা আসলো
লামিয়া: কিরে ফইন্নি কই গিছিলি
রুমা: খুদা লাগছিল
লামিয়া: তোর শুধু খাওয়ার চিন্তা রাক্ষসী
মুন: তোরা চুপ কর তো ভালো লাগছে না
রুমা: কি হয়ছে তোর
মুন: কিছু না
লামিয়া: বলবি কি না
তারপর মুন আরুশ এর সব কথা বলে দিলো
লামিয়া: চিন্তা করিস না বেটাকে আমরা দেখে দিবো
রুমা: ছেলেটা কিন্ত খুব কিউট
লামিয়া: রাখ তোর কিউট ওর থেকে আমার বাধু খুব ভালো( বাঁধন)
মুন: ভালোবাসা জাগছে নাকি
বলে ২জন হাসতে লাগলো
লামিয়া: ভালোবাসা শেষ হলে তো নতুন করে জাগবে
বলে ৩জন চলে গেলো হেড স্যার সবাইকে ডেকেছে
এদিকে লামিয়ার কথাটা অন্য কেউ শুনে মুচকি হেসে চলে গেলো।
( সবাই বুঝতে পারছেন অন্য কেউ ছেলেটা বাঁধন)
হেড স্যার: প্রতিবছর আমাদের ভার্সিটিতে একটা অনুষ্ঠান করা হয় আর সব স্টুডেন্ট অংশ গ্রহণ করে যে যা খুশি নিতে পারে আজ থেকে practise স্টার্ট হবে।
হেড স্যার যা বলছে তাতে সবাই খুব খুশি শুধু মুন বাদে কারণ ও থাকতে পারবে না
মুন এর মন খারাপ দেখে লামিয়া বললো
লামিয়া: কিরে তোর মন খারাপ কেনো
মুন: আমি থাকতে পারবো না
রুমা: থাকতে পারবিনা মানে কি
মুন: মামনির বান্ধবীর মেয়ের বিয়ে সেখানে যেতে
রুমা: মামনির বান্ধবীর বিয়ে তোর তো আর না
মুন: বান্ধবীর মেয়ের বিয়ে
রুমা: ওই হলো তোর তো না
মুন: আমাকে যেতে হবে তো
লামিয়া: বিয়ে কবে
মুন: ২৭ তারিখ
লামিয়া: আর ফাংশন ১তারিখ তার আগে তো চলে আসবি
মুন: সে ঠিক আছে কিন্ত প্রাকটিস তো করতে পারবো না কালকে যেতে হবে
লামিয়া: তুই তো গান নিমি তোর প্রাক্টিস করা লাগবে না ওই কয়দিনে হবে
রুমা: কিন্ত আমি তো ওর নাম নাচে ও দিছি
মুন লামিয়া: বিপদ তো ঘরে বাইরে কি দেখবো
রুমা: আমায় তোরা বিপদ বলতে পারলি( কাদ কাদ ফেস করে)
মুন: না রে আচ্ছা বাদ দে পরে দেখা যাবে এখন আমাকে যেতে হবে দেখি মামনি কে বুঝতে পারি কি না
লামিয়া: ওকে বাই রাতে কথা হবে
মুন: হুম বাই

মুন বাইরে এসে দেখে রোদ গাড়িতে বসে আছে
মুন কিছু না বলে গাড়িতে উঠলো।
রোদ মুনকে দেখে দরজা খুলে দিল
রোদ: তো আজকের দিন কেমন কাটলো?
মুন: হুম ভালো
মামনি কে বলার থেকে রোদকে বলি ও হয়তো আমাকে বুজবে ( মনে মনে)
রোদ আর চোখে মুনের দিকে তাকিয়ে দেখছে মুন কি যেনো ভাবছে
রোদ: কি এতো ভাব সারাদিন
মুন: না কই কিছু না তো
রোদ: সত্যি
মুন: হা
তারপর ২জনের মধ্যে কিছুক্ষণ নিরবতা ছিল
মুন: রোদ
রোদ: হুম ( বাহ আজ ম্যাডাম নিজে থেকে ডাকছে)
মুন: কিছু বলতাম
রোদ: বলো শুনছি
মুন: আমাদের ভার্সিটিতে ফাংশন হবে
রোদ: হা তো
মুন: আসলে
রোদ: তুমি অংশ গ্রহণ করতে চাও
মুন: হা
রোদ: তো করো বারন করেছে কে কিন্ত ছেলেদের সাথে না
মুন: আরে না আমি শুধু গান নিবো কিন্ত
রোদ: কিন্ত কি
মুন: মামনির সাথে যেতে হবে আর প্রাক্টিস
রোদ: ওকে আমি দেখে নিবনে
তুমি চিন্তা করো না (এই তো সুযোগ পেয়েছি তোমার সাথে কাটানোর)
মুন: সত্যি
রোদ: হা
মুন খুশিতে রোদ কে জড়িয়ে ধরে পরে হুশ আসলে ছেড়ে দেয়
রোদ: এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে আর একটু হলে অ্যাকসিডেন্ট হয়ে যেতো ( রাগী গলায়)
মুন: আসলে আমি বুঝতে পারিনি ( মাথা নিচু করে)
রোদ কিছু না বলে এক হাত দিয়ে মুনকে জড়িয়ে ধরলো মুন ও কিছু বললো না
কিছুক্ষণ পর ওদের বাড়িতে চলে আসলো মুন ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো নিচে সবাই এক সাথে নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লো শপিং করতে

এদিকে
আরূশ মুনকে ভার্সিটিতে খুঁজে না পেয়ে ওর বান্ধবীদের কাছে যায়
অ্যারুশ: এই তোমরা মুনকে দেখছ সেই কখন থেকে ওকে খুঁজছি কোথাও পাচ্ছি না
লামিয়া: মুন বাড়ি চলে গেছে
আরুশ: বাড়ি চলে গেছে কিন্ত কেনো
রুমা: আপনাকে কেনো বলবো কে আপনি।
আরুশ: আমি তোমাদের দুলাভাই এখন থেকে জিজু বলে ডাকবে আর আমার জানের খেয়াল রাখবে বুঝছো
বলে চলে গেলো ওর বন্ধুদের কাছে
লামিয়া: সত্যি এ পাগল আয়চে আমাদের জিজু হতে
রুমা: হুই আমাদের জিজু যার হাওয়ার সে এমনিতেই হবে
লামিয়া: বাদ দে তো নে শরু কর
আরুশ ভাবছে কি করে মুনকে নিজের করে পাওয়া যায় শেষে একটা বুদ্ধি মাথায় আসে আর একটা ভিলেনী হাসি দিয়ে চলে যায়

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে