তোমার জন্য সাইকো পর্ব-০৭

0
2378

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৭
মুন আনমনে রোদের কথা ভাবছে তখন রাইমা চৌধুরী খাওয়ার জন্য ডাকে মুন নিচে এসে দেখে নিহাল চৌধুরী আর রাইমা চৌধুরী বসে আছে মুন চারিদিকে তাকিয়ে দেখে রোদ নেই ।মুন গিয়ে ওদের সাথে বসলো।একটু পর রোদ আসলো।
সবাই খাচ্ছে তখন নিহাল চৌধুরী বললো
নিহাল চৌধুরী: আমি business এর কাজে বাইরে যেতে হবে কয়েক দিন পর আসবো
রাইমা: তুমি তো আমায় আগে কিছু বলনি
নিহাল চৌধুরী: হটাৎ করে ঠিক হলো তাই বলার টাইম পাইনি কাল সকালে চলে যেতে হবে।
মুন: পাপাই তুমি আমায় ছেড়ে যাবা আমি ও তোমার সাথে যাবো (কাদো কাদু ফেস করে)
রোদ: একদম না তুমি কোথাও যাবে না খুব পাখনা গজিয়েছে তাইনা( ধমক দিয়ে)
রাইমা: আহা রোদ তুই মেয়েটাকে এভাবে বকছিস কেনো হম?
নিহাল: রোদ মামনি এর সাথে অভাবে কথা বলতে যেনো তোমাকে আর না দেখি ।মামনির ইচ্ছা হয়েছে তাই আমার সাথে যেতে চায়ছে
রোদ: ওর যদি ওতো ঘুরার ইচ্ছা তাহলে আবার থেকে আমি মিটিং এ বাইরে গেলে ওকে সাথে করে নিয়ে যাবো ( মুন এর দিকে তাকিয়ে)
মুন তো শুধু মাথা নিচু করে শুনছে
রাইমা: সে যাস কিন্ত কাল তুই আমাকে আর মুনকে শপিং এ নিয়ে যাবি আমার বান্ধবীর মেঁয়ের বিয়ে
নিহাল: কবে ঠিক হলো
রাইমা: এই তো সামনের ২৭ তারিখে আমাদের ২৩ তারিখ এ যেতে হবে
নিহাল: আমি তো যেতে পারবো না সোজা ২৭তারিখ বিয়ের দিন যাবো।
রোদ: আমি ও এতো আগে যেতে পারবো না অফিস এর কাজ আছে
রাইমা: ঠিক আছে তাহলে তুই আর মুন ২৬ তারিখ যাস
মুন: না মামনি আমি তোমার সাথে যাবো
রাইমা: তুই না বললি তোর ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস আছে?
মুন: আছে কিন্ত পরে আমি নোট করে নিবানে তোমাকে একা ছেড়ে থাকতে পারবো না
( আর এই রোদের সাথে তো মোটেই থাকবো না)
রোদ: কোনো দরকার নেই ক্লাস বাদ দেওয়ার এমনিতেই লেখা পড়ার যা অবস্থা আবার ক্লাস না করলে মুখ দেখানো যাবে না।
মুন:😒😒
নিহাল চৌধুরী: তাহলে তোমরা থাকো কাল সকালে আমাকে যেতে হবে।
রাইমা চৌধুরী: আচ্ছা আমি সব ঠিক করে রাখবো
মুন: মামনি কাল যখন পাপাই যাবে আমাকে তার আগে ডেকে দিও
রাইমা চৌধুরী: আসছ দেবো এখন যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পরো( হেসে)
মুন উঠে গেলো আর ওর পাপাই এর গালে কিস করে গেলো
নিহাল চৌধুরী: পাগলী মেয়ে একটা
রোদ: সবার সাথে কত কথা আমার আব্বুকে কিস করলো কিন্ত আব্বুর ছেলে কে কি চোখে পরে না wait দেখাচ্ছি(মনে মনে)
রোদ ও উঠে গেলো
মুন নিজের ঘরে বসে বসে রাগ ফুসছে
মুন: কি ভেবেছ নিজেকে যা খুশি তাই করে বেড়াবে হু আয়ছে উনার সাথে আমি ঘুরে বেড়াবো কোনো তো কাজ পাইনা আজাইরা সব
রোদ: হা সব আজাইরা আর তুমি খুব ভালো তাই তো।
রোদের কথায় মুন পিছনে তাকিয়ে দেখে রোদ দরজার সাথে হেলান দিয়ে পকেটে হাত দিয়ে হারিয়ে আছে ঠোঁটে বাকা হাসি
মুন: না মানে আসলে
রোদ: কি মানে আসলে করছো
(মুন এর দিকে এগিয়ে গিয়ে)
মুন তো রোদের কাছে আসতে পিছিয়ে যাচ্ছে
মুন: কি হলো আপনি এগিয়ে আসছেন কেনো
রোদ: তুমি পিছিয়ে যাচ্ছ কেনো
মুন ঝরে মামনি বলে ডাকদিবে তার আগে রোদ ঝড়ের গতিতে এসে মুন এর মুখ চেপে ধরলো
মুন: উম উম উম
রোদ: কি উম উম করছ আর একবার চিৎকার করতে গেলে গলা টিপে মেরে ফেলবো
মুন:….
রোদ: যাই হোক তুমি এত সাজো কেনো বলো তো ( কপালের চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে)
মুন: এই লোক কি পাগল কই সাজলাম কিছুই তো দিনা last কবে সেজেছি টা ও মনে পড়ছে না(মনে মনে)
রোদ: হা তুমি সাজো না কিন্ত তাও তোমাকে এত সুন্দর লাগে কেনো তোমার ঠোঁটের উপর ওই তিলটা আমাকে তোমার দিকে আর ও বেশি টানে ( মুনের কপালে কপাল লাগিয়ে)
মুন এর ঠোঁটের উপরে একটা ছোটো তিল আছে যেটি ওর খুব কাছের না আসলে বুঝা যায়না
রোদ: এখন ঘুমিয়ে পরো তোমার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে উল্টা পাল্টা কিছু করে ফেলবো তখন আবার তুমি বলব
মুন: অসভ্য লোক একটা( মনে মনে)
রোদ: হা ঠিক এটাই বলতে
মুন তো অভাগ
মুন: মনের কথা পরতে পারে নাকি (মনে মনে)
রোদ: হুম পরতে পারি শুধু ভালোবাসার মানুষের টা পারি বুজলে পিচ্ছি
মুনের নাক টেনে
মুন: আমি মোটেও পিচ্ছি না( নক ডলে)
রোদ: হা তুমি পিচ্চি আমার পিচ্ছি
এবার ঘুমিয়ে পরো অনেক রাত হয়েছে
মুনের কপালে একটা কিস করে চলে গেলো।
আর মুন বসে বসে রোদের কথা ভাবছে যা হলো সব ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে
(সত্যি বলতে একটা মানুষ আপনাকে সহ্য করতে পারে না হটাৎ যদি সে বলে আপনাকে ভালোবাসি তাহলে বিশ্বাস করাটা কষ্টকর)
মুন এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো ।

সকালে মুন তাড়াতাড়ি উঠে ওর মামনির সাথে নাস্তা বানাতে সাহায্য করছে নিহাল চৌধুরী যাবে বলে
রাইমা চৌধুরী: থাক মা আর কিছু করতে হবে না অনেক করেছিস
মুন: উফফ মামনি তুমি এমন কেনো বলো তো আমি একটু করছি পাপাই কে বলে দেবো কিন্ত
রাইমা চৌধুরী: হয়েছে আর কাউকে বলতে হবে না তুই গিয়ে এই কফিটা তোর পাপাই কে দিয়ে আয়
মুন: ওকে মামনি।
মুন নাচতে নাচতে চলে গেলো
নিহাল চৌধুরী টাই বাঁধছেন তখন মুন আসলো
মুন: পাপাই আসবো
নিহাল চৌধুরী: আরে আমার মামনি যে তোর আবার আসতে পারমিশন লাগে নাকি
মুন: না এই নাও তোমার কফি।( কফিটা এগিয়ে দিয়ে)
নিহাল চৌধুরী: তোকে কে আনতে বলছে বাড়ি কি কাজের লোকের অভাব পড়ছে
মুন: কেনো আমি কি আমার পাপাই এর জন্য আনতে পারিনা( মন খারাপ করে)
নিহাল চৌধুরী: আরে মা আমি অভাবে বলিনি আচ্ছা দে (কফিটা নিয়ে)
হুম খুব সুন্দর হয়ছে তো
মুন: হি হি আচ্ছা তুমি তাড়াতাড়ি চলে আসবা তোমাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না
নিহাল চৌধুরী: হা রে মা চলে আসবো টা তোর জন্য কি আনতে হবে সেটা বলে দিস
মুন: কিছু লাগবে না তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো
আমি যাই নিচে অনেক কাজ আছে
নিহাল: তোমাকে কোনো কাজ করতে হবে না বাড়ি লোক আছে তারাই করবে
মুন: ওকে আমি শুধু তোমার কাজে মামনি কে হেল্প করব।
বলে মুন চলে যায়
নিচে এসে ওর মামনি কে হেল্প করে ।

কিছুক্ষণ পর নিহাল চৌধুরী চলে যায়
মুন নিজের ঘরে বসে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য গুচাছিল গুছিয়ে নিচে এসে দেখে রোদ দাড়িয়ে আছে
রোদ মুনকে দেখে গাড়ির ভিতরে উঠে দরজা খুলে দেয়।
মুন ও গাড়িতে উঠে পড়ে।
গাড়িতে মুন বার বার রোদের দিকে আর চোখে তাকাচ্ছে
রোদ: আমার দিকে অভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি জানি আমি খুব সুন্দর তাই বলে বার বার আড়চোখে তাকিয়ে সেটা প্রুফ করতে হবে না
মুন: আমি মোটেও আপনার দিকে তাকাচ্ছিলাম না
রোদ: সেটা তো লোকে জানে( ড্রাইভ করতে করতে)
মুন: লোকে তো অনেক কিছু জানে কিন্ত আপনি যে আজ কাল বেশি করছেন সেটা কি আপনি জানেন?
রোদ: আমি আবার কি করলাম?
মুন: অনেক কিছু
রোদ: তোমার কাছে তো আমি সব সময় বেশি করি এখন যাও তোমার ভার্সিটি চলে এসেছে
মুন সামনে তাকিয়ে দেখে ওরা চলে আসছে মুন কিছু না বলে নেমে পরে
মুন চলে যেতে নিলে রোদ পিছু ডাকে
রোদ: কাল কি বলেছিলাম সেগুলো মনে আছে তো কথার যেনো নড়চড় না হয় আর আমি ২তাই নিতে আসবানে (বলে রোদ চলে গেলো)
আর মুন ভেংচি কেটে ভার্সিটিতে ঢুকলো
ঢুকে ওদের আড্ডা খানায় গেলো
সেখানে : লামিয়া রুমা বসে আছে।
মুন ও ওদের সাথে গিয়ে আড্ডা দিতে বসলো তখনই ওখানে অরুষ্ চলে আসলো।
মুন আরূশ কে দেখে চলে যাচ্ছিলো কিন্ত আরূশ ওকে ডাক দেয় টা ও মুন চলে যায় ।
মুনের দেখা দেখি বাকিরা ও চলে যায়।
মুন: বাড়িতে রোদ আর এখানে এই বেয়াদব কোথাও গিয়ে শান্তি নেই আল্লাহ দরি ফেলাও আমি উপরে যাবো।
লামিয়া: কিরে কি বির বির করছিস
মুন: তোর মাথা
লামিয়া: এতো রেগে যাচ্ছিস কেনো
মুন: কিছুনা চল ক্লাস এ যাই
সবাই ক্লাস এ গিয়ে ক্লাস করলো ক্লাস শেষে মুন বারান্দা দিয়ে হাটছে হটাৎ কে যেনো ওর হাত ধরে টেনে খালি রুম এ নিয়ে গেলো ।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে