তোমার জন্য সাইকো পর্ব-০৬

0
2429

তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_৬
রোদ কিছু পরার আওয়াজে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে মুন দাড়িয়ে আছে রোদ ফোন টা কেটে দিয়ে তাড়াতাড়ি মুনের কাছে গেলো মুন তো পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছে রোদ মুনকে বললো
রোদ: কি ব্যাপার তুমি আমার ঘরে কাপ টা পরলো কি করে দেখে চলতে পারো না (ব্যাস্ত হয়ে )
রোদ তাড়াতাড়ি মুনকে নিয়ে খাটে বসলো তারপর ওর পায়ের কাছে বসে মুন এর পা টা নিজের হাঁটুর উপর রাখলো
আর খুব সাবধানে দেখতে লাগলো।
গরম কফি পড়াতে মুনের পায়ে লাগে আর ব্যাথা ও পায় কিন্ত মুনের সেদিকে খেয়াল
নেই মুন তো একটু আগে রোদের কথা শুনে ভয়ে আছে
মুন: রোদ ওটা কি বললো কাকে বললো যে জানে মেরে ফেলতে ওর জানের দিকে তাকানোর জন্য চোখ উপড়ে ফেলতে ।কাকে বলেছিলো ( মনে মনে )
রোদ: কি এতো ভাবছো পায়ের দিকে কি খেয়াল আছে কত খানি লেগেছে।
রোদ এমন ভাবে বলছে যেনো ব্যাথা ও পাসছে
মুন এক দৃষ্টিতে রোদের দিকে তাকিয়ে আছে
একটু আগের রোদ আর এখনকার রোদের মধ্যে মিল পাচ্ছে না আগের রোদটা ছিল
হিংস্র আর এখনকার রোদকে একদম বাচ্চা মনে হচ্ছে কতটা যত্নে পায়ে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে।
রোদ: (তুরি বাজিয়ে) কি এতো ভাবছো খুব কি ব্যাথা করছে (করুন চোখে)
মুন: আমি ঠিক আছি
রোদ: কেমন ঠিক আছো টা তো দেখছি একটু সাবধানে চলতে পারো না আর আমার ঘরে আজ হটাৎ কেনো( ভূ কুচকে)
মুন: আসলে মামনি আসতে বলেছিলো ওই কফি
রোদ:মামনি কফি দিতে বলেছিলো না ফেলে দিতে বলেছিলো কোনটা
মুন: না কফি দিতে বলেছিলো কিন্ত
রোদ: কিন্ত কি কতখানি লেগেছে দেখেছো ওষুধ লাগিয়ে দিছি ব্যাথা কুমে যাবে আর পরে বরফ লাগিয়ে নিও
মুন: হাম
হটাৎ রোদের টেবিল এর দিকে নজর পরতে দেখলো পকোড়া রাখা
মুন ঘরে এসে পকোড়া টা টেবিলে রেখে কফি দিতে গিয়েছিল।
রোদ পকড়ার বাটিটা হাতে নিয়ে খেতে গেলে
মুন: ওটা আপনার জন্য না ওটা আমার
রোদ: তোমার তো কি হয়েছে আমি কফিটা তো নষ্ট করে দিলে এখন তোমার পকোড়া আমি খাবো
রোদ জানে যে মুনের পকোড়া খুব পসন্দের আর মুন এটার ভাগ কাও কে দিতে চায়না
মুন: আমি আপনার কফি এনে দিচ্ছি আপনি আপনার পকোড়া ফেরত দিন
রোদ: (গালে পুরে) এটা এখন আমার
মুন তো রাগ ফুসছে
মুন: আপনি আপনার পকোড়া কেনো খেলেন কেনো আপনি মামনির কাছ থেকে তো নিতে পারতেন? ( রাগী গলায়)
রোদ: আমার ভালো লাগছে তাই খায়ছি তোমার তাতে কি?
মুন: আপনার পেট খারাপ করবে ।হজম হবে না আমি মামনি কে বলে দেবো(ঠোঁট উল্টিয়ে)
মুন চলে যেতে নিলে রোদ মুন এর হাত ধরে
নিজের কাছে নিয়ে আসে তারপর মুন এর গালে হাত দিয়ে অন্য হাত দিয়ে পকোড়া মুন এর গালে পুড়ে দেয় আর বলে
রোদ: তোমার সব কিছুর উপর শুধু আমার অধিকার সেখানে এই পকোড়া তো সামান্য।
যতটুকু ভালোবাস পকোড়া তার একটু ভালোবাসা আমায় দিলে খুব কি ক্ষতি হতো ।
মুন গালে পকোড়া থাকার কারণে কিছু বলতে পারছে না ।রোদ আবার বললো
রোদ: একটু ভালোবেসে দেখো আমায় কোনো দিন ছেড়ে যাবো না
মুন রোদের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে সেখানে শুধু মুন এর জন্য ভালোবাসা
রোদ মুনের থেকে সরে আসলো ।
মুন পকরার বাটিটা নিয়ে চলে আসতে গেলে রোদ বলে
রোদ: কখনো কারোর পার্সোনাল কথা লুকিয়ে শুনতে নেই নেক্সট টাইম থেকে খেয়াল রাখবা এখন নিজের ঘরে যাও।
মুন ও চলে গেলো আর রোদের কথা ভাবছে আর পকোড়া খাচ্ছে।

এদিকে অ্যারুস ওর বন্ধুদের সাথে একটা পার্কে ঘুরতে গেলো সেখানে লামিয়া আর ওর বোন গেছে ।
লামিয়া তো বাধনকে দেখে সেই ক্ষেপা খেপছে
বাঁধন এর ও একই অবস্থা
লামিয়া: আমি যেখানে যাবো সেখানে কি তোকে যাওয়া লাগবে ছেচরা ছেমরা ( রাগী ভাবে)
বাঁধন: ওরে আয়ছে রনি মূখাজী যে উনি যেখানে যাবে আমায় ও সেখানে যেতে হবে
লামিয়া: রাখ তোর মূখাজি ফুখাজি তুই এখানে আসলি কেন সেটা বল
বাঁধন: এটা কি তোর বাপের জায়গা যে আমি আসতে পারবো না
লামিয়া: ওই কুত্তা বাপে যাবি না সালা হারামী লজ্জা করে না তোর মেয়েদের সাথে ঝগড়া করতে
বাঁধন: তোর লজ্জা করে না
লামিয়া: নারে করে না তোর সাথে প্রেম করে সব চলে গেছে।
(আসলে লামিয়া আর বাঁধন রিলেশনশিপ এ ছিল কিন্তু ওদের মধ্যে ঝোগড়া লেগে ভেঙ্গে যায়
Bt ২জন একে অপরের খুব ভালোবাসে শুধু সামনে বলে না)
ওদের ২জন এর ঝগড়া বাঁধন এর বন্ধুরা সহ পার্কের সবাই দেখছিল
বাধনকে ওর বন্ধুরা কোনো রকম ওখানে থেকে টেনে নিয়ে আসে টা ও বাঁধন বলে যাচ্ছে
বাঁধন: তোকে দেখে নেবো
লামিয়া: এতো দিন এ ও দেখতে পাসনি whatapp এ পিক পাঠিয়ে দেবো
বাঁধন: তোর পিক তুই খা
লামিয়া আর ওর বোন চলে আসলো।

রাতে রোদ জানলার পাশে দাড়িয়ে মুনের কথা ভাবছিল এমন সময় রাইমা চৌধুরী ঘরে আসলো
রাইমা চৌধুরী: কার কথা ভাবছিস মুনের নাকি
রাইমা চৌধুরী কথায় রোদ পিছনে তাকিয়ে দেখে
রোদ: ওর কথা ছাড়া কার কথা ভাববো ও ছাড়া কে আছে
রাইমা চৌধুরী: অতই যখন ভালবাসিস তাহলে কষ্ট দিস কেনো মেয়েতাকে
রোদ: কষ্ট তো দিতে চাইনা কিন্ত ও আমায় বাধ্য করে( বিছানায় বসে)
রাইমা চৌধুরী: তুই ওর পকোড়া খেয়েছিস আর মাকে নালিশ করেছে( হেসে)
রোদ ও হেসে দিল
রোদ: ও আর বড়ো হলো না ( মায়ের কোলে মাথা রেখে)
রাইমা চৌধুরী: বাচ্চা তো তাই
রোদ: ওকে ছাড়া যে আমার কিছুই ভালো লাগে না এই জায়গা টা খালি খালি লাগে(বুকে হাত দিয়ে)
রাইমা চৌধুরী ছেলের কথা শুনছে কি করে একটা মানুষ এত টা ভালোবাসতে পারে মুন যদি কখনো হারিয়ে যায় তাহলে তো আমার ছেলেটা পাগল হোয়ে যাবে
রাইমা চৌধুরী রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

মুন নিজের ঘরে বসে বসে ফেসবুকিং করছে আর পকোড়া খাচ্ছে হটাৎ রোদের কথা মনে পরতে একটা মুচকি হাসি দিল।

আড়ুশ ওর মায়ের ছবির সামনে দাড়িয়ে বলছে
আড়ুষ: জানিনা মা এটা কেমন অনুভূতি কিন্ত আমার ওর কথা ভাবতে খুব ভালোলাগে এটাই কি ভালোবাসা বলো না মা( কান্না জনিত কণ্ঠে)

৩জন তাদের অনুভূতি নিয়ে আছে কার ভাগ্যে কি আছে কেউ জানে না ।ভালোবাসার এই পরীক্ষায় কে জিতবে আর কে হারবে সেটা শুধু সময় বলে দেবে

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে