তৈমাত্রিক পর্ব-২৩

0
1037

#তৈমাত্রিক
#লেখিকা; Tamanna Islam
#পর্বঃ ২৩

~🤎🦋~

.
.
.
.

মেহরাম এখনো তার বাবার বাড়িতেই রয়েছে। শশুড় বাড়িতে কুসুম বেগম আর তার বড়ো ভাই আছেন। রোজ কথা হয় সবার সাথেই। মেহরামের এখন ভর পেটে। আট মাস গড়িয়ে নয়ে পরবে পরবে এমন। একটুও ঠিই ভাবে বসে থাকতে পারে না এক জায়গায়। সারা বাড়ি দিনে কতো বার যে চক্কর দেয় তা হিসেব ছাড়া। ওদিকে তনু অন্য রুম থেকে সকাল বেলা নিজের রুমে চলে গেছে। তবে গিয়ে দেখে আয়ুশ নেই, এতে তনু কিছু টা কপাল কুচকায়। রুমের ভেতরে গেতেই দেখে আয়ুশ বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে, হয়তো ব্যাপার টা অনেক সিরিয়ায়া তাই একটু চিল্লিয়ে কথা বলছে। তনু কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তনু বের হয়ে পরে। সোজা নিচে চলে যায়। এর মধ্যে আয়ুশের সাথে তার কোন রকম কোন কথা হয় না। আয়ুশ তো ল্যাপটপের মাঝেই ঢুকে বসে আছে। এসেই দেখে কণা টেবিলে বসে খাচ্ছে আর তার শাশুড়ী রান্নাঘরে।

তনু;; মা কিছু লাগবে হেল্প করবো?

লায়লা;; না রে এইতো আমার প্রায় শেষ হয়ে গেছে সব কাজ। তুই আয় টেবিলে আয় খেতে বোস। আর আয়ুশ কই?

তনু;; না মানে মা আসলে ও তো কাজ করছে।

লায়লা;; কাল সারা রাত ঘুমায় নি। আমার কাছে কিছুক্ষণ থেকে আবার কাজ করতে বসেছে। এখন আবার। এই শুরু করলো কি। না খেয়ে না দেয়ে না ঘুমিয়ে কাজ।

তনু;; কণা কি লাগবে কিছু দিবো?

কণা;; না না ভাবি তুমি বোস কিছু লাগবে না।

তনু;; মা তুমিও বোস।

লায়লা;; হ্যাঁ বসি (ওপরে আয়ুশের রুমের দিকে তকিয়ে)

কণা;; ভাবি বলছিলাম কি!!

তনু;; কি?

কণা;; না মানে, মেহরাপুর কাছে গেলে কেমন হয়। মেহরাপুর কথা মনে পরছে।

তনু;; ওমা তাই, আচ্ছা যাবো নি বিকেলের দিকে। (হেসে)

কণা;; সত্যি?

তনু;; হ্যাঁ।

আয়ুশ;; না ছেলে টার হলো কি, কণা একটু গিয়ে দেখ না মা।

কণা;; হ্যাঁ যাচ্ছি।

কণা উঠে গিয়ে সোজা তার ভাইয়ের রুমে গেলো। দরজা টা একটু খুলে মাথা বের করে দেখে আয়ুশ নিজের সামনে ল্যাপটপ অন করে দুহাত ভাজ করে মুখের সামনে রেখে দিয়েছে।

কণা;; ভাইয়া!

আয়ুশ;; হুমম।

কণা;; তুই কি না খাওয়ার পণ করছস?

আয়ুশ;; আরে ভাই প্রজেক্টে প্রব্লেম হয়েছে অনেক বড়ো। এখন এটা কি করে সামলাবো তাই ভেবে পাচ্ছি না। কাল থেকে মাথা পুরো হ্যাং মেরে গেছে আমার আর খাওয়া দাওয়া।

কণা;; আচ্ছা বুঝলাম কিন্তু কিছু একটু খেয়ে নে।

আয়ুশ;; আচ্ছা তুই যা আমি আসছি।

কণা;; আচ্ছা

কণার চলে যাওয়ার প্রায় দশ মিনিট পর আয়ুশ নিচে নেমে আসে। তাড়াহুড়ো তে নিজের চোখের চশমা টা খুলতে ভুলে গেছে, তাই চশমা পরেই নিচে নেমে পরেছে। সোজা এসে খাবার টেবিলে বসে কিন্তু তনুর পাশে না। একাই এক জায়গায় বসে টেবিলের। আর আজ সেই সকাল থেকে আয়ুশের সব কাজ গুলো তনু বেশ তীক্ষ্ণ নজরে খেয়াল করছে।

কণা;; চাশমিশ হলি কবে থেকে ভাই?

আয়ুশ;; ওহ আরে জানিস না ল্যাপটপ চালালে চশমা পরি তাই, খুলতে ভুলে গেছি।

কণা;; দে দে আমাকে দে।

আয়ুশ;; এইই পরিস না কিন্তু হাই পাওয়ার ওয়ালা।

কণা কারো কথা শুনে না আয়ুশের চশমা নিয়ে নিজে পরে নিলো। তনুর দিকে তাকিয়ে একটা ভেটকি দিলো। তনুও মুচকি হাসে। আয়ুশ আর কিছুই না বলে খেতে লাগলো। খাওয়ার মাঝেও কোন কথা নেই, নিজের মন মতো খাচ্ছে। অবশেষে হাফ খাবার খেয়ে আয়ুশ উঠে যায়। নিজের মা কে বলে দ্রুত পায়ে বাইরে বেরিয়ে পরে। তনুর দিকে তাকায় পর্যন্ত না। সবার খাওয়া এখন শেষ। কণা আর লায়লা খাতুন নিচে থাকে তবে তনু নিজের রুমে চলে যায়। এসেই বারান্দায় চলে যায়। বারান্দার বড়ো পর্দা টা সরিয়ে দেয়। বাইরে রোদ উঠেছে কড়া তবে বাতাসও আছে। বারান্দার গ্রিল দিয়ে সাই সাই করে বাতাস প্রবেশ করছে ভেতরে। তনু গ্রিলে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পরে।

তনু;; নাহ, এভাবে সমুদ্র আর খাদের মাঝখানে ঝুলে থাকতে পারছি না আমি। মনে হচ্ছে আমি কোন কাটা যা সবার মাঝেই খোচা দিচ্ছি। এভাবে আর কতো, আমি পারবো না এভাবে থাকতে। কিছু একটা বিহিত করতেই হবে। ডিভোর্স, হ্যাঁ এটাই বেস্ট হবে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাক। আয়ুশ আয়ুশের মতো আর আমি আমার মতো। কারণ এভাবে সংসার টিকে না। কেমন এক বিষাদময় হয়ে যাচ্ছে সব কিছু। যাচ্ছে না আসলে গেছেই। আমি চলে যাবো আয়ুশের জীবন থেকে। এভাবে কেউ খুশি না। জানি না আমার এই ডিসিশনের পর কার কি অবস্থা হবে বাট হ্যাঁ আমি ডিভোর্স নিয়েই ছাড়বো। আমি আলাদা হবো ভালো লাগে না আর। তখন তো আর কোন দোটানা থাকবে না। আয়ুশের সাথে এই ব্যাপারে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কথা বলতে হবে। (মনে মনে)


আতিয়া;; মেহরু নে খা।

মেহরাম;; কি?

আতিয়া;; মাংস দিয়ে ভুনা খিচুড়ি। তোর না পছন্দের নে খা।

মেহরাম;; থাংকু চাচি, কখন বানালে?

আতিয়া;; সকালেই।

মেহরাম বসে বসে খাচ্ছে। তখনই তার মা আসে। দেখে তো মনে হচ্ছে বাইরে যাবে। তখনই মেহরাম বলে ওঠে…

মেহরাম;; মা কোথায় যাচ্ছো?

কনিকা;; এইতো বাজারের দিকে যাচ্ছি।

মেহরাম;; শপিং

কনিকা;; হ্যাঁ

মেহরাম;; আমাকেও নিয়ে যাও না!

কনিকা;; এই বাইরে রোদের মাঝে গিয়ে কি করবি। তার চেয়ে বরং এখানেই থাক।

মেহরাম;; আর কতো ঘরে থাকবো বলো। আর ভালো লাগে না একটুও তো বাইরে যেতে দাও। ও মা নিয়ে যাও না।

কনিকা;; যেতে পারবি?

মেহরাম;; হ্যাঁ হ্যাঁ পারবো।

কনিকা;; আচ্ছা চল।

মেহরাম উঠে চলে গেলো। ইদানীং মেহরাম নিজে পুরো বাচ্চা হয়ে গেছে। কিছু না দিলে জেদ করে, হুট হাট রেগে যাওয়া। আকাশ তো এমন ভাব ধরে মনে হয় মেহরাম ওর ছোট বোন আর সে বড়ো ভাই। যাই হোক মেহরাম তার আম্মুর সাথে চলে যায়।

.

কণা;; ভাবি,, ভাবি!

কণার ডাকে তনুর হুস ফিরে। পেছনে তাকিয়ে দেখে কণা হাতে কিছুর ফাইল এনে তনুর কে ডাকছে।

কণা;; ভাবি

তনু;; হ্যাঁ

কণা;; দেখো ভাইয়া তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ফাইল রেখে গেছে অফিসের। দেখে তো মনে হচ্ছে কোন প্রজেক্টের। আর আজ সকালেও ভাইয়া কি যেন এক প্রজেক্টের কথা বলছিলো। হয়তো ওইটার-ই।

তনু;; ওহহ..

কণা;; ভাবি এক কাজ করো না তুমি দ্রুত গিয়ে একটু দিয়ে আসো।

তনু;; আমি আ….

কণা;; ভাবি আমি এখন যেতে পারবো না প্লিজ তুমি একটু যাও না।

তনু;; আচ্ছা ঠিক আছে। দাও

তনু কণার কাছ থেকে ফাইল টা নিয়ে যেমন ছিলো সেভাবেই বের হয়ে পরে আয়ুশের অফিসের উদ্দেশ্যে। বেশ কিছুক্ষণ পর অফিসে এসেও পরে। হাতে ফাইল গুলো নিয়ে তনু সোজা আয়ুশের কেবিনে চলে যায়। তবে কেবিনে গিয়ে একদফা অবাকই হয়। কারণ আয়ুশের কেবিন বেশ এলোমেলো হয়ে আছে। তনু দরজা টা খুলে কপাল কুচকে ভেতরে যায়। টেবিল বেশ অগোছালো। আরো একটু সামনে গিয়ে দেখে আয়ুশ ফোনে আগ-বাবুলা হয়ে কার সাথে যেন কথা বলছে। তনু অবাক হয় কেননা আজ পর্যন্ত সে আয়ুশকে এমন ভাবে রেগে যেতে কখনোই দেখে নি। তনু এক প্রকার ভরকে যায় যে আয়ুশ কে ডাক দিবে কি দিবে না। তবুও কোন রকম করে ডাক দেয়….

তনু;; আ..আয়ুশ

আয়ুশ তনুর কথায় পেছন ঘুড়ে তাকায়। দেখে তনু।

আয়ুশ;; তুমি?

তনু;; হ্যাঁ মানে।

আয়ুশ;; তুমি আবার কেন এসেছো?

তনু;; মানে তুমি ফাইল বাসায় রেখে এসেছিলে তাই তা দিতে এসেছি। ভেবেছি তোমার ইম্পর্ট্যান্ট ফাইল তাই।

আয়ুশ;; আর ইম্পর্ট্যান্ট, প্রজেক্ট ক্যান্সেল হয়ে গেছে।

তনু;; মানে?

আয়ুশ;; মানে মিটিং ক্যান্সেল আর তাতে ঠিক কতো লাক্ষ টাকা ক্ষতি হবে হিসেব নেই।

তনু;; কি, কিন্তু

আয়ুশ;; তনু ফাইল গুলো আর লাগবে না প্লিজ তুমি যাও। আমার মাথা আজ অনেক বেশি গরম। মন-মেজাজ ভালো নেই। তুমি বাড়ি যাও।

তনু;; তোমার মন-মেজাজ ভালো নেই তাতে আমার কি আয়ুশ। অনেক হয়েছে সেই সকাল থেকে দেখে যাচ্ছি। কিভাবে ইগ্নোর করছো তুমি আমাকে। যেন আমি তোমার লাইফে কোন মেটার-ই করি না। থাকা না থাকা সব সমান। কথা বলছো না, তাকাচ্ছো না পর্যন্ত। এতোই তেতো হয়ে গেছি আমি তাই না। কই মেহরাম হলে তো ঠিকই দেখতে তুমি।

একে তো এতো বড়ো একটা প্রজেক্ট হাত ছাড়া হওয়াতে কোম্পানির এতো বড়ো একটা লস হলো আর তার ওপর তনুর এমন বাকা কথা। আয়ুশের রাগে ঘি ঢালার সমান ছিলো। সবসময় কি আর মন-মেজাজ ঠিক থাকে। আয়ুশ তো গেলো চটে।

আয়ুশ;; তনু মুখের লাগাম দাও। তুমি কোন কথা কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো। আমি বলছি অফিসের কথা আর তুমি তা টেনে মেহরামের কাছে নিয়ে যাচ্ছো। তুমি কি। যেই বোন তোমার জন্য এতো কিছু করলো আর এখন তুমি এমন বলছো।

তনু;; শোন মেহরাম আমাকে যতো ভালোবাসে আমিও ঠিক ততো টাই। বোন হয় ও আমার কিন্তু তুমি তো ওকে ভালোবাসো তাই না।

আয়ুশ;; ফর গড সেক তনু এখন এইসব বলো না, কি সব যা তা বলছো এখানে মেহরাম এলো কোথা থেকে।

তনু;; তো কি করবো আমি সকাল থেকে কোন কথা বলছো না কেন?

আয়ুশ;; কারণ আমার মন ভালো নেই। ইচ্ছে করছে না কথা বলতে।

তনু;; কিন্তু আমার সাথেই কেন?

আয়ুশ;; তনু এখন এই সব কথা আমরা অফিসে না বলে বাড়ি তে গিয়েও বলতে পারি কেমন। প্লিজ এখানে সীন ক্রিয়েট করো না তো।

তনু;; এহহ এখন আমি সীন ক্রিয়েট করছি তাই না। মানে সব দোষ আমারই।

আয়ুশ;; তুমি আসলেই খুব বেশি প্যাচালো। একটা কথা কে টেনে অনেক বেশি লম্বা বানাতে পারো।

তনু;; আমারই দোষ কোন দুঃখে যে তোমাকে বিয়ে করেছিলাম আমি।

আয়ুশ;; তো এখন ছেড়ে দাও, থাকতেও চাই না আমি তোমার সাথে।

তনু;; ঠিক বলেছো, আমাদের এখন এক সাথে থাকাই যাবে না।

তনু এই কথা বলে ফাইল টা টেবিলের ওপর রেখে সেখান থেকে এসে পরে। প্রচুর ঝগড়া হয় তার আর আয়ুশের মাঝে। আয়ুশ ফাইল টা টেনে ছিড়ে ফেলে। আর তনু সেখান থেকে কাদতে কাদতে বের হয়ে পরে। তনুর মনে এখন ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আয়ুশ এত্তো টা রুড ভাবে তার সাথে জীবনেও কথা বলে নি কিন্তু আজ। তবে তনুরও দোষ ছিলো একে তো আয়ুশের মেজাজ গরম তার ওপর হুট করেই এই কথা গুলো বলা। তনু কাদতে কাদতে অফিস থেকে বাইরে এসে পরেছে। বাড়ি যেতেও তার ইচ্ছে করছে না কেমন এক মরা মরা ভাব। তনু অফিস থেকে বের হয়ে সোজা হেটেই যাচ্ছে হেটেই যাচ্ছে। হাটতে হাটতে একদম বাইরে এসে পরেছে।

অন্যদিকে মেহরাম তার আম্মুর সাথে বাইরে এসেছে। একটা ট্রলি দাঁড়িয়ে আছে সেখানে অনেক গুলো সবজি বিক্রি করছে। মেহরামের আম্মু সেখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবজি দেখছে। সাথে মেহরাম ও। কি লাগে কি না লাগে সব কিনছে। হঠাৎ মেহরাম অন্যদিকে তাকায়। কিন্তু তাকিয়েই অবাক হয়। কেননা রাস্তার ওপাশে তনু দাঁড়িয়ে আছে। মুখ টা কেমন মলিন হয়ে আছে। চুল গুলো খানিক এলোমেলো। মেহরাম তনুকে দেখে খুশিও হয় আর সাথে অবাক ও। কারণ আরেকটু সামনে এগোলেই আয়ুশের অফিসে তা মেহরাম জানে। তবে তনু এখানে কি করছে তাই ভাবছে সে। মেহরাম তনুর দিকে তাকিয়ে আছে তখন তনুর চোখ ও মেহরামের ওপর পরে।

মেহরাম;; আম্মু দেখো তনু।

কনিকা;; তনু!

মেহরাম;; হ্যাঁ

কনিকা;; কোথায় তনু?

মেহরাম;; আরে ওইযে।

কনিকা;; ওহহ, আরে ডাক দে।

মেহরাম সেখান থেকে একটু এগিয়ে আসে। বারবার নিজের আশেপাশে দেখছে মেহরাম। কারণ এখানে গাড়ির যাতায়াত অনেক বেশি। আর অনেক দ্রুত গতিতে যাচ্ছে সব গাড়ি, যেন ঝড়। তাই খুব সাবধানে নিজের আশেপাশে দেখে কিছুটা এগিয়ে যায় মেহরাম। কনিকা এখনো সবজি দেখছে। কেন শেষ টাকা দিচ্ছে। এদিকে মেহরাম তনুকে হাত নেড়ে ইশারা করছে। কিন্তু তনুর এখন বেশ কান্না পাচ্ছে। বিনা শব্দে চোখে দিয়ে অঝোরে পানি বয়ে যাচ্ছে তার। তনুর মনে শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে যে এই সেই মেহরাম যাকে আয়ুশ পাগলের মতো ভালোবাসে। তাকে বাসে না। মেহরামের সাথে ওর বিয়ের আগে সম্পর্ক ছিলো। এই মেহরামের জন্য আয়ুশের মনের জায়গা কখনো তনুর হবে না। এই মেহরাম। তনুর মাথায় এগুলোই ঘুড়ছিলো তখনই মেহরামের ডাকে তনুর হুস আসে। তনু তার সামনে তাকিয়ে দেখে মেহরাম রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে তনুকে ইশারাতে ডাকছে।

মেহরাম;; তনু,, এই তনুউউউউ!!

তনু মেহরামের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। তারপর সামনে পা বাড়ায়। অন্য কোন দিকে হুস নেই তনুর। কেন যানি শুধু আয়ুশের কথা গুলোই কানে বেজে চলেছে। চারিদিকে শুধু গাড়ির কোলাহলের শব্দ। সাই সাই করে এক একটা গাড়ি যাচ্ছে। তনুর কোন দিকে খেয়াল নেই। সে তার মতো করে সামনে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে। মেহরামের দিকেই তাকিয়ে আছে সে। হাটতে হাটতে রাস্তার মাঝ বরাবর গেতেই একটা ট্রাক তীব্র গতিতে এসে ঠাস করে তনুর সাথে বারি খায়। ট্রাকটা তনুকে সেখান থেকে ছিটকে দূরে নিয়ে যায়। রক্ত সব জায়গায় ছিটকে পরেছে। ট্রাকের শুধু জোরে একটা শব্দ হলো। মেহরাম তার হাত খানিক ওপরে তুলে তনুকে ডাকছিলো। তনুর আসার দিকেই তাকিয়ে ছিলো সে। হঠাৎ তার চোখের সামনে থেকে এক বড়ো ট্রাক এসে সব চোখের পলকে শেষ করে দিলো। সামনে তনু নেই। শুধু রক্ত আর রক্ত। মানে সবেমাত্রই ঘটনাস্থলে কি থেকে কি হয়ে গেলো কেউই বুঝে উঠতে পারলো না। চারিদিকে ইতোমধ্যে মানুষের কোলাহল শুরু হয়ে গেছে। মেহরামের ওপরে তোলা হাত টা আপনা আপনিই নিচে নেমে আসে। মুখে যেই হাসি টা ছিলো তার রেখা ধীরে ধীরে কমে আসে। কান দিয়ে যেন কোন কথায় যাচ্ছে না। শুধু বুকের ধুকপুকানির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এমন আকষ্মিক কান্ডে সবার হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে গেছে। মেহরামের মা ও সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।

মেহরাম;; তনুউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউউ।

.

তনুর অনেক বাজে ভাবে এক্সিডেন্ট হয়েছে ট্রাক দিয়ে। আর ট্রাক তো কোন ছোট খাটো গাড়ি না। রাস্তা গুলো রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আর সেখানেই রক্তমাখা শরীর নিয়ে পরে রয়েছে তনু। ট্রাক তার ওপর দিয়ে গেছে। মুখ, নাক দিয়ে রক্ত পরে একাকার অবস্থা। এক দমকা হাওয়া এসে সব কিছু ওলট-পালট করে দিয়ে গেলো। মানুষ অনেক ভয় পেয়েছে তাই কেউ কেউ দূরে সরে যাচ্ছে। আবার কেউ হায় হায় করছে যে এটা কি থেকে কি হলো। যেই রাস্তা মানুষে ভরে ছিলো তা মূহুর্তেই একদম জন-মানব শূন্য হয়ে গেছে। গাড়িও কমে গেছে। তবে মেহরাম এটাই মেনে নিতে পারছে না যে এটা তার চোখের সামনে এটা কি হলো। তনু তার দিকে এগিয়ে আসছিলো আর সেকেন্ডেই তাকে ট্রাক এসে……….। কনিকার হাত থেকে বাজারের ব্যাগ টা নিচে পরে গেছে। মেহরামের বুক টা যেন ফেটে যাচ্ছে। মেহরাম তার পেটে হাত দিয়ে কোন রকমে পা ফেলে দ্রুত তনুর কাছে যায়। গিয়েই তনুর কাছে বসে পরে। তনুর পরনের জামা টা রক্তে লাল হয়ে গেছে। তনুর মাথা টা তুলে মেহরাম তার নিজের কোলে নিয়ে নেয়। নিয়েই একদম বুকফাটা চিৎকার করে বসে। মেহরাম হাউমাউ করে কেদে দেয়। কনিকাও দৌড়ে ছুটে আসে সেখানে।




🌱চলবে~~

#তৈমাত্রিক
#লেখিকা; Tamanna Islam
#{বোনাস পার্ট🌼}

মেহরাম তনুর মাথা টা নিজের কোলে নিয়ে হাউমাউ করে কেদে দিলো। কনিকাও ছুটে এলো তনুর কাছে।

মেহরাম;; ততনু, তনু রে তনু। চোখ খোল তনুউউ তনু চোখ খোল বোন আমার চোখ খোল। এই তনু, মা জলদি চাচি আর চাচ্চু কে ফোন দাও। তনু, কেউ এম্বুল্যান্স কে ডাকো প্লিজ। তনুউউউউউউউউ

মেহরাম তো নিজের মধ্যে আর নেই। আর সামনে এখন শুধু তনু আর তনু আছে। সে নিজের চারিদিকে শুধু অন্ধকার দেখছে। কনিকা দ্রুত তনুর বাবা মা কে ফোন করে। তনুর এমন খবর শুনে তনুর মা অজ্ঞান হবার উপক্রম প্রায়। এদিকে মেহরামের অবস্থাও ভালো না। এতো বড়ো পেট তার ওপর তনুর এই অবস্থা। কাদতে কাদতে মেহরামের অবস্থা খুব বেশি খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু তনুর কোন হুস নেই, সে রক্তাক্ত অবস্থায় মেহরামের কোলেই পরে আছে। আর এদিকে মেহরাম শুধু ছটফট করছে। আশে পাশে প্রচুর মানুষের ভীড় জমেছে। সবাই শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। অবস্থা খুব খারাপ, একদম ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ছে।

মেহরাম;; তনু তনু চোখ খোল, আমি এই তো ততনু প্লিজ চোখ টা খোলা রাখ। আমি আছি তো ততনু।

মেহরামের আহাজারি তে যেন সেই জায়গা টুকু ফেটে পরছে। এর মধ্যে কেউ হয়তো এম্বুল্যান্স কে ফোল করেছিলো। তবুও বেশ দেরি হয়েছে। এম্বুল্যান্স আসার সাথে সাথে সেখান থেকে তিনজন ওয়ার্ডবয় নেমে আসে। এম্বুল্যান্সের ভেতর থেকে বেড বের করে। ধরাধরি করে তনু কে বেডে শুইয়ে দেওয়া হয়। মেহরাম পেটের ওপরে হাত দিয়ে কোন রকম করে উঠে দাঁড়ায়। উঠেই আবার তনুর কাছে। ঘটনা টা ঘটেছে তনুর সাথে কিন্তু কষ্ট মনে হচ্ছে মেহরামেরই হচ্ছে। মেহরাম আবার উঠে গিয়ে তনুর একটা হাত ধরে। মেহরাম এক প্রকার চিৎকার করছে তনুর হাত ধরে। কনিকা তো তনুর পায়ের কাছে বসে ঢুকরে কাদছে।

মেহরাম;; তনু রে তনু কিছু হবে না তোর। আমি মরে যাবো তোর কিছু হলে। প্লিজ আমাকে আর মারিস না, আমি একদম বরবাদ হয়ে যাবো তোকে ছাড়া। আমি তো এমন কিছুই চাই নি। যা চাই নি তাই হচ্ছে। তনু বোন আমার, কথা বল। তনু রে। আল্লাহ তনুউউউউউ, তনু ওও তনু কথা বল না বোন। তনু

এম্বুল্যান্সের ভেতরে মেহরাম আর কনিকা দুজনেই উঠে বসে পরে। আর যে এম্বুল্যান্স নিয়ে এসেছিলো তিনি মেহরামের আহাজারি দেখে তাকে আসতে আর না বললেন না। এম্বুল্যান্সের ভেতরে মেহরাম তনুর হাত ধরে এখনো বসেই আছে। তনুর রক্ত মাখা হাত টা মেহরাম তার দুহাতের মাঝে নিয়ে কেদেই যাচ্ছে। আর কনিকা তনুর পাশে বসে কাদছে। মেহরাম কয়েকবার চিল্লিয়ে এম্বুল্যান্স কে দ্রুত যেতে বললো। তার প্রায় বিশ মিনিট পর হস্পিটালে আসে এম্বুল্যান্স। একে তো এমন ক্রিটিক্যাল অবস্থা তার ওপর রাস্তায় জ্যাম। সব মিলিয়ে অনেক বেশি দেরি হয়ে গেছে। হস্পিটালের সামনে নেমে দ্রুত তনু কে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। ভেতরে গেতেই ভাগ্যক্রমে ডাক্তার কে পেয়ে যায়। ডাক্তার তনুর অবস্থা দেখেই কপালে আগে হাত দিয়ে দেয়। অনেক ব্লিডিং হয়েছে। সবাই কেবিন রেডি করে দ্রুত তনু কে এডমিট করালো। এদিকে তনুর রক্তে মেহরামের জামা পুরো ভিজে একাকার হয়ে গেছে। তনুর কে ভেতরে নিয়ে গেছে কিন্তু মেহরাম তনুর কেবিনের গ্লাস দিয়ে উকি দিচ্ছে আর হিচকি দিয়ে কাদছে। এমন করতে থাকলে মেহরামের ওপর আবার প্রভাব পরবে তাই কনিকা মেহরামের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

কনিকা;; মেহরাম (কাধে হাত রেখে)

মেহরাম;; ওও মা দে দেখো না, কি.. কি থেকে কি হয়ে গেলো। ততনু

কনিকা;; কিছু হবে না, ভরসা রাখ তনু তোকে ছেড়ে যেতে পারে না। এভাবে কাদিস না ভেংগে পড়িস না সব ঠিক হয়ে যাবে।

মেহরাম;; মা তনুর কিছু হলে আমি পাগল হয়ে যাবো। তনুর কিছু হহহবে না। মা আমি পারবো না তনু আমাকে ছেড়ে,, আম.. আমি আমি মরে যাই হ্যাঁ কিন্তু তনু বেচে থাক। মা তততনু

কনিকা;; চুপ চুপ।

মেহরাম এক প্রকার পাগলামি শুরু করে দিয়েছে। কনিকা তাকে কোন রকমে শান্ত করায়। তখন হস্পিটালে দৌড়ে আতিয়া আর বিল্লাল আসে অর্থাৎ তনুর বাবা মা। তনুর মা তো তনু কে দেখে পরে যেতে ধরে আর মেহরাম সামলে নেয়। মেহরামের চাচি মেহরামকে ধরে কেদে দেয়। সবাই মিলে শান্তনা দিচ্ছে। এটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কিন্তু তখনই হুট করে মেহরামের মাথায় আয়ুশের চিন্তা আসে। আয়ুশ বা তার বাড়ির কাউকেই কিছুই বলা হয় নি। মেহরাম সেখান থেকে কিছুটা দূরে সরে আসে। এসেই নিজের ফোনে আয়ুশের নাম্বার বের করে কল দেয়।

মেহরাম;; হ্য হ্যা হ্যালো আয়ুশ।

আয়ুশ;; কি হয়েছে এভাবে ফুপাচ্ছো কেন?

মেহরাম;; তনুর, তনুর এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে।

আয়ুশ;; কিহহহহহ, কি সব যা তা বলছো। না এটা কি করে। ও একটু আগেই আমার অফিস থেকে বের হয়েছে।

মেহরাম;; আয়ুশ আমি এখন হস্পিটালে আছি। তনুর অবস্থা খারাপ। অনেক ব্লিডিং যাচ্ছে। তুমি এসো।

আয়ুশ;; না না তনুর কিছুই হবে না, হবে না। আর আমি আসছি এখনই। (তড়িঘড়ি করে বের হয়ে)

মেহরাম ফোন টা কেটে দেয়। এদিকে আয়ুশের মাথায় চিন্তার ভর করে বসলো। নরমাল ভাবে লাইফ কেউই লিড করতে পারছে না একটার পর একটা ঝামেলা লেগেই থাকে। আয়ুশ সোজা গাড়িতে উঠে বসে। সে ড্রাইভ করছে আর বারবার তনুর চেহারা টা তার চোখের সামনে ভাসছে। তনুর চিল্লিয়ে কথা বলা, হাসা আবার মেহরামের জন্যও মাঝে মাঝে রেগে যাওয়া। সব, সবই যেন এখন আয়ুশের চোখের সামনে এসে দাড়াচ্ছে। কিছুই ভালো লাগছে না আয়ুশের। খানিক সামনে গেতেই আবার জ্যামে আটকে যায় আয়ুশ। রাগের বশে গাড়ির স্টেয়ারিং-এ জোরে বারি দিয়ে বসে। এদিকে মেহরাম দুহাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরে বসে আছে। এভাবেই সময় যাচ্ছে। মেহরাম কণা আর তার শাশুড়ি মা কেও ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে। তারা এক প্রকার ছুটে আসে তনুর খবর শুনে। হস্পিটালে এক ইলাহি কান্ড বেধে গেছে। তার প্রায় বেশ সময় পর আয়ুশ আসে। এসেই দেখে সবাই পাথর হয়ে গেছে। আয়ুশ তনুর মাকে সামলায়। একদম কেদে একাকার হয়ে গেছে। মেহরাম তনুর কেবিনের দিকে তাকিয়ে আছে শূন্য দৃষ্টিতে। মনে হচ্ছে তার মাঝে কোন ফিলিংস নেই। অনুভূতি শূন্য হয়ে গেছে তার। তার মাথায় শুধু একই কথা আসছে যে তনুর কিছু হলে সে পাগল হয়ে যাবে, ঠিক থাকবে না। পুরো দুই ঘন্টা পর ডাক্তার কেবিন থেকে বের হয়। মেহরাম উঠেই সোজা ডাক্তারের সামনে যায়। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে না ডাক্তার কে কারণ ডাক্তার জানে যে সবাই তাকে কি জিজ্ঞেস করতে পারে।

ডাক্তার;; দেখুন, মেয়েটর অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। খুব বাজে ভাবে যখম হয়েছে। আমরা ব্লাড একদম পরিষ্কার করে দিয়েছি। অক্সিজেন লাগবে তার ব্যাবস্থাও করে দিয়েছি। তবে উনার ব্লাড লাগবে,

মেহরাম;; তনু, তনুর ব্লাড গ্রুপ A+..

ডাক্তার;; আপনাদের মধ্যে কারো A+ আছে?

কনিকা;; আম..আমার আছে। আপনি নিয়ে নিন।

ডাক্তার;; জ্বি আপনি তাহলে আসুন।

কনিকা ডাক্তারের সাথে চলে যায়। মেহরামের মাথা টা খানিক চক্কর দিয়ে উঠলে সে আবার সীটে গিয়ে বসে পরে। মেহরাম আবার না অসুস্থ হয়ে যায় তাই আতিয়া তাকে ধরে রেখেছে। তবে আয়ুশ কেবিনের গ্লাস দিয়ে তনুর দিকে উকি দেয়। খারাপ লাগছে আয়ুশের। আয়ুশের কাছে লাগছে যে হয়তো এটার জন্য সে নিজেই দায়ি। কিন্তু আসলে না, সেখানে তো মেহরামের কথা টা তনুই তুলেছিলো। আয়ুশের মন তখন ভালো ছিলো না এর মধ্যে তনুর এইসব কথা বলা আরো যেন রাগিয়ে দিয়েছিলো তাকে। আর হুট করেই ডিভোর্সের কথা বলায় আয়ুশের মাথা একদম শূন্য হয়ে গিয়েছিলো। তাই রাগ করে ফেলেছে। আর তনু মন মরা হয়েছিলো আর তখনই এই……………………………!! আয়ুশ তার হাত টা কেবিনের গ্লাসের ওপরে রাখে। কিন্তু এই এক্সিডেন্টের পেছনে কারোর হাত নেই। যা হওয়ার ছিলো তা হয়েছে। আয়ুশ তার পেছনে তাকিয়ে দেখে মেহরাম বসে আছে কিন্তু তার জামা তে লেগে আছে তনুর তরতাজা রক্ত। মেহরামের ওপর দিয়ে এখন কি যাচ্ছে তা একমাত্র মেহরাম আর আল্লাহ জানে। ততক্ষণে ডাক্তার আর কনিকা এসে পরেছেন। পুরো দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। হয়তো পরর্বতীতে আরো লাগলে লাগতে পারে। এভাবেই থাকতে থাকতে রাত হয়ে যায়। মেহরাম ওই যে এক জায়গায় বসেছে এখনো ওই একই জায়গায় বসেই আছে। পাগলের প্রলাপ বকছে মেহরাম। তাকে নিয়ে কোন রকমে বাসায় যাওয়া হয়। কনিকা হস্পিটালেই থেকে গেলো। মেহরাম তার চাচির সাথে বাসায় এসে পরে। বাসায় এসে মেহরাম এখনো তার চাচির সাথে তনুর কথাই বলে যাচ্ছে। আতিয়া কোন রকমে মেহরামের পরনের জামা টা পালটে নিলো। আতিয়া মেহরামকে রুমে রেখে একটু বাইরে গিয়েছিলো। খানিক পরে রুমে এসে দেখে মেহরাম তার রক্তমাখা জামা টা বুকে জড়িয়ে ধরে কাদছে, যেখানে তনুর রক্ত লেগেছিলো। আতিয়া এখন নিজেই কেদেই দেয়। কোন রকমে মেহরামকে ধরে ঠিক করে। তখন মেহরাম আবার তনুর কাছে যাওয়ার জন্য জেদ ধরে বসে। আতিয়া বুঝে যে এখন যদি মেহরামকে হস্পিটালে তনুর কাছে না নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে হিতে বিপরীত হবে। তারা হস্পিটালে চলে যায়। মেহরাম গিয়ে দেখে আয়ুশ কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে গ্লাসের ভেতর দিয়ে তনু কে দেখছে। কারো আসার শব্দ শুনে আয়ুশ পেছন ঘুড়ে তাকায়। দেখে মেহরাম। মেহরামকে দেখে আয়ুশ কিছু শুকনো ঢোক গিলে। ডাক্তার সময় দিয়েছে দুইদিন। এই দুইদিনের মাঝে যখন তখন তনুর জ্ঞান ফিরে আসতে পারে।

🤍চলবে~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে