তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে ২ পর্ব-০১

0
1760

#তুমি_নামক_সপ্তর্ষি_মন্ডলের_প্রেমে💖
#দ্বিতীয়_খন্ড [ কার্টেসিসহও কপি করা নিষেধ ]
#সূচনা পর্ব.( Another Pair )

~ মিফতা তিমু

মুখে আঁচল চাপা দিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে ছেলে তাহরীমের দিকে তাকিয়ে আছেন রহিমা বেগম।আজ সে অসহায়, মা হয়েও পারলো না ছেলেকে বাঁচাতে। তাহরীমের বাবা তাহরীমের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছেন তবুও প্রতি নিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিজের চোখের অশ্রুগুলো আটকে রাখতে কিন্তু অশ্রুজল যে বাঁধা মানতে নারাজ।টুপ করে গড়িয়ে পড়লো তার চোখ বেয়ে।

‘ আমার মনে হয় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে অফিসার।আমার ভাই এরকম একটা ঘৃণিত কাজ করতেই পারেনা।আমরা সকলে জানি তাহরীম ওর ওয়াইফ আফরিন কে কত ভালবাসে,সেখানে আফরিনের মৃত্যুর পিছনে তাহরীমের হাত কি করে থাকতে পারে? কারোর নয়নে পুলিশ অফিসারের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলল তাহসান।

‘ দুনিয়ায় কত মানুষ আছে যে লোকের সামনে বউয়ের প্রতি অনেক ভালোবাসা দেখায় আর আড়ালে বউ কে মারারi ষড়যন্ত্রই করে।আপনার ভাইও তাদের মধ্যেই একজন।অথবা নিজের অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্যই হয়তো উনার প্রাণপ্রিয় স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে কেননা উনার স্ত্রী জেনে গিয়েছিলেন উনার অবৈধ সম্পর্কের ব্যাপারে। ‘ মুখে পান ঢুকিয়ে লাল দাতগুলো বের করে ফিচেল হাসি দিয়ে কথাগুলো বললেন অফিসার রৌনক।

ভাইয়ের বিরুদ্ধে এত আপত্তিকর কথা শুনে তাহসানের গা বিষিয়ে উঠলো কিন্তু আপসোস কিছু করতে পারলো না কারণ এরা আইনের লোক।এদের চাইলেই কিছু করা যায়না।এদের হাতে রাখার জন্য ক্ষমতা আর টাকা থাকা লাগে।টাকা তো আছে কিন্তু ক্ষমতা নেই।

তাহরীমকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আর এটা দেখে এপার্টমেন্টের সকলে তাহরীমের অগোচরে তাহরীমকে নিয়েই বিভিন্ন রসালো গল্প বুনছে আর সেগুলো হাসি ঠাট্টা করছে তবে ওসবে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তাহরীমের। ও আছে ওর আপন খেয়ালে। ও এখন পরবর্তী পরিকল্পনার ছক কষতে ব্যস্ত।

উফফ বাইরে যা গরম পড়েছে! মনে হচ্ছে একটু বাইরে থাকলেই সিদ্ধ হয়ে ডিম পোজ হয়ে যাবে দিশা।এই প্রথম তার বাংলাদেশে আসা তাই বাংলাদেশের আবহাওয়া কিরকম তার সঙ্গে ওর কোনো ধারণাই ছিল না।তবে বাংলাদেশে পা রাখতেই প্রচন্ড গরমে সিদ্ধ তো হয়েছেই তার সঙ্গে এখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে তার ধারণা হয়ে গেছে।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভাইয়ার বিয়েটা হলেই এখান থেকে পগার পার হতে হবে দিশার নয়তো এই হালকা শীতকালেই ওর এই অবস্থা,গরম কালে তার কি অবস্থাই না হবে।

ফ্যানটা ছেড়ে দিয়ে জানালার দিকে এগিয়ে গেলো দিশা।এই ঘরটা এই ভর দুপুর বেলাতেও এত অন্ধকার কেন?অন্ধকার ঘর আবার দিশার একেবারেই পছন্দ না তাই ও জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিল।সঙ্গে সঙ্গে বেডের কাছ থেকে এক পুরুষালি কণ্ঠ ভেসে এলো ‘ হোয়াট দা হেল…কে পর্দা সরালো?

পুরুষালি কণ্ঠ কানে আসতেই দিশা পাশ ফিরে তাকালো।রুমটা নেহাত বড় আর দুই ভাগে বিভক্ত বিধায় অপর পাশে কেউ থাকলেও বোঝার কোনো উপায় নেই। দিশার চোখ গেলো রুমের দ্বিতীয় ভাগে থাকা বিছানায় আধো চোখ খুলে আসান ধরে বসে থাকা আলভির উপর।

আলভী কে একটু জ্বালাতে দিশা ওখানেই দাড়িয়ে চুপ করে থাকে। কারোর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আলভী রেগে যায়।
‘ কি বলছি সেটা কি কানে যাচ্ছে না? কে ওখানে ? ‘ আলভী আবারও প্রশ্ন করলো।

‘ এত কথা না বলে বেড সাইড টেবিল থেকে চশমাটা নিয়ে চোখে দিয়ে দেখলেই তো পারো। ‘ আলভির দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে বললো দিশা।

দিশার কথা শুনে আলভী বেড সাইড টেবিল থেকে চশমাটা নিয়ে চোখে দিলো।চশমা চোখে দিয়ে নিজের ললাটে লেপ্টে থাকা চুলগুলো হাত দিয়ে খানিকটা ঠিক করে এবার সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটার দিকে চোখ দিলো। মানুষটা যে দিশা সেটা বুঝতে পেরে বললো,
আলভী: ও… দিশা তুই…. আমি ভাবলাম কে না কে….
দিশা: তোমার ঘরে একমাত্র আমি ছাড়া আর কার আসার সাহস আছে ভাইয়া? কার মাথায় দশটা মাথা যে যেচে যেচে নিজের বিপদ ডাকতে আসবে। অবশ্য আমি এই ঘরে ঢোকার আগে জানতাম না যে এটা তোমার ঘর।আমি তো শুধু একটু রেস্ট নিতে এসেছিলাম।মামুনি বললো আপাতত কাল অব্দি আমরা যেন এখানেই থাকি কারণ আমাদের বাড়ি পরিষ্কার করা এখনও বাকি আছে।তোমাদের তো সুবিধাই হলো।তোমরা তো আমাদের আগে চলে এসেছিলে…

আলভী: তোদের আগে এসেছিলাম কিন্তু আমাদেরও ঘর পরিষ্কার করার মত ঝামেলা পোহাতে হয়েছে কারণ আফটার অল এটা ইন্ডিয়া,লন্ডন নয়।
দিশা: সেই…এটা বাংলাদেশ বলেই এখন থেকে নিজের জিনিস নিজে গুছাতে শিখো। লন্ডনে যেমন তেমন করে রাখতে ঘরের অবস্থা কিন্তু এখন আর সেটা করা যাবে না কারণ সবসময় তোমার ঘর গুছিয়ে রাখার জন্য আমি থাকবো না।

দিশার কথা শুনে আলভী চরম পর্যায়ে অবাক হলো। অবাক হয়ে বললো,
আলভী: কেন তুই কোথায় যাবি?
দিশা: বারে আমি বুঝি বিয়ে করবো না? আমারও তো বিয়ে শাদী করতে হবে নাহলে তো সারাজীবন সিঙ্গেল থাকতে হবে।
আলভী: থাকলে থাকবি…দরকার পরে সারাজীবন তোকে বিয়ে না দিয়ে রেখে দিবো আমার কাছে তবুও আমার সবকিছু তোকেই করে দিতে হবে।

‘ সেটা বললে তো চলে না।একদিন না একদিন আমার তো যেতেই হবে।আমি তো ভাইয়ার বিয়ে হলেই লন্ডন ফিরে যাবো। ‘ অসহায় ভঙ্গিতে বললো দিশা।

‘ সে তুই যাবি কিনা পরে দেখা যাবে।আগে একটু আয় তো। তোকে আমি আমার বইগুলো দেই।এই বইগুলো কলেজে তোর কাজে লাগবে। ‘ দিশা কে উদ্দেশ্য করে বলে বিছানা থেকে নেমে নিজের ডেস্কের দিকে এগিয়ে গেলো আলভী।

‘ কেন? তোমার বই দিয়ে আমি কি করবো?আমি তো এখানে কয় দিনের জন্য আছি।ভাইয়ার বিয়ে হয়ে গেলেই লন্ডন চলে যাব। ‘ আলভির কথা শুনে হুরহুর করে দিশা কথাগুলো বলল।

দিশার কথা শুনে আলভী এক পলক দিশার দিকে তাকালো তারপর বললো,
আলভী: ওখানে থাকতে পারবি?
দিশা: না পারার কি আছে?আমরা তো এতদিন ওখানেই ছিলাম।
আলভী: এখানে থাকলে কি সমস্যা?
দিশা: এখানে এত গরম যে আমি বাসা থেকে বের হলেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাবো।কেন তুমি চাও না আমি যাই… মাসুম চেহারা করে আলভির দিকে তাকিয়ে বললো দিশা।

দিশার কথা শুনে কিছুক্ষণ দিশার দিকে তাকিয়ে রইলো আলভী।তারপর আলতো হেসে দিশার কাধে হাত রেখে বলল,
আলভি: তুই চলে গেলে মামণি,আঙ্কেল,মা,বাবা,আরাফাত, অলিভ সবাই কষ্ট পাবে কিন্তু আমি চেষ্টা করবো ওদের মানাতে যেন তোকে যেতে দেয়।

আলভির কথা শুনে সরল মনেই হঠাৎ দিশা প্রশ্ন করে বসলো,
দিশা: সবাই কষ্ট পাবে,কেন আমি গেলে তুমি কষ্ট পাবে না?
দিশার কথা শুনে ক্ষণিকের জন্য আলভী এক দৃষ্টে দিশার দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর আলতো হেসে বললো,
আলভি: হুম…হুম…
দিশা: কি হুম হুম করছো? বলো না লাগবে কিনা?
আলভি: হুম লাগবে তো তবে ইট্টু খানি… হাতের আঙ্গুল দেখিয়ে বললো আলভী।

আলভির কথায় দিশা মুচকি হেসে বলল,
দিশা: তুমি এত ভালো কেন আলভী ভাইয়া?
আলভি দিশার কথা শুনে বই ঘাটতে ঘাটতে বললো,
আলভি: সেটা আমি কি করে জানবো?আল্লাহ আমাকে বানিয়েছে একমাত্র আল্লাহই জানে আমাকে কেন ভালো বানিয়েছে? প্রত্যেকটা মানুষের একটা না একটা উদ্দেশ্য থাকে পৃথিবীতে আসার জন্য।আল্লাহ হয়তো আমাকে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য ভালো বানিয়েছে।নামাজ পড়েছিস?

‘ আমি তোমারও এক ধাপ আগে… আযান দিতেই পড়ে নিয়েছি।এখন শুধু তুমি বাকি। ‘ ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো দিশা।

দিশা ঠোঁট বাঁকানো দেখে আলভী দিশার দিকে সরু চোখে তাকালো তারপর দিশার মাথায় একটা গাট্টা মেরে বাথরুমে চলে গেল ওযু করতে।এইদিকে দিশার মাথায় গাট্টা মারাতে দিশা মাথায় হাত দিয়ে হা করে বাথরুমের দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।আলভি ওর মাথা গাট্টা মেরেছে দেখে ও মুখ ফুলিয়ে আলভির বিছানার ধারে পা উঠিয়ে আসান ধরে বসলো।

সবেমাত্র ওযু সেরে বেরিয়েছে আলভী। বাথরুম থেকে বেরিয়ে দিশা কে মুখ ফুলিয়ে বিছানায় বসে থাকতে দেখে কিছুই বললো না। চুপচাপ আলমারি থেকে টাওয়েল বের করে হাত মুখ মুছে টাওয়েল টা দিশার মুখে ছুড়ে মারলো।টাওয়েল দিশার মুখের উপর পড়তেই ডিশা ঝামটা মেরে মুখের উপর থেকে টাওয়েল সরিয়ে দিয়ে বললো,
দিশা: আলভি ভাইয়া তুমি এটা কী করলে?
আলভী জামার হাতা ঠিক করে মাথায় টুপি পড়তে পড়তে বললো,
আলভি: একটু বারান্দায় মেলে দে না….

আলভির এত আকুল আবেদন দিশা আর আলভির বিপরীতে কিছু বলতে পারলো না।আলতো হেসে ঊঠে গিয়ে বারান্দায় টাওয়েল টা মেলে দিলো।টাওয়েল মেলে বারান্দা থেকে ঘরে এসে দেখলো আলভী নামাজে দাড়িয়ে গেছে। দিশা আবার বারান্দায় ফিরে গেলো।আলভির পছন্দের সুইং চেয়ারে বসলো।

দিশা সুইং চেয়ারে বসে বারান্দা থেকে ঢাকা শহর দেখছে।এই প্রথম ও ঢাকা শহর দেখছে।এর আগে যখন বিদেশে ছিল তখন কখনোই এই দেশে আসার সুযোগ হয়নি।দিশা আর আরাফাত ওদের দুজনের জন্মই বিদেশে হয়েছিল যার কারণে এই দেশের ব্যাপারে দিশার কোনো ধারণা নেই তবে আরাফাতের মোটামুটি ধারণা আছে বলা যায়।আরাফাত দিশাদের আসার অনেক আগেই এখানে এসেছে।

নিজের মনে মনে ভাবনার জাল বুনতে বুনতে কখন যে আলভী দিশার পাশে এসে বুঝতেই পারেনি দিশা।ওর হুস হলো যখন আলভী বললো,
আলভি: কি এত ভাবছিস?
দিশা আলভির গলার আওয়াজ পেয়ে আলভির দিকে ফিরে তাকালো তারপর বললো,
দিশা: ও আলভি ভাইয়া তুমি! আমি ভাবছিলাম ঢাকা শহর তেমন একটা খারাপও না তবে গরম বেশি এই যা।
আলভি: তাই! তাহলে থেকে যা…

আলভির কথায় দিশা আলতো হেসে ‘ দেখা যাক ‘ বলে আলভির কাধে মাথা রাখলো।আলভি মুচকি হেসে ব্যস্ততম নগরীর দিকে তাকালো।প্রিয়তমার সঙ্গে বসে এই ব্যস্ততম নগরী দেখাও যেন হাতে চাঁদ পাওয়ার মত।লন্ডন থাকতে এই সুযোগগুলো হয়ে উঠেনি তেমন কারণ ছোটোবেলায় ওরা এক সঙ্গে থাকলেও যত বড় হয়েছে ততই নিজেদের পড়ালেখা ক্যারিয়ার বিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

পশ্চিমে সূর্য অস্ত যাচ্ছে।বিকেল বেলাতেও হালকা লাল আভা ফুটে উঠেছে আকাশে।এই লাল আভা তখনই ফুটে উঠে যখন আকাশে রামধনু ফুটে উঠে।আলভি এক মনে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।আকাশে রামধনু ফুটে উঠতেই আলভী দিশা কে দেখাতে চাইলো কিন্তু দিশা বেচারি আলভির কাধে হেলান দিয়েই ঘুম দিয়েছে। আসলে অনেকটা জার্নি করে এসেছে।

‘ ফিরোজা আজ একটু পাঁচ রকমের ভাজা করতো।আজ আমার মনটা অনেক ফুরফুরে।আজ আমি জমিয়ে বেগুনী খাবো। ‘ সোফায় বসে বসে খবরের কাগজ ঘাটতে ঘাটতে বললো আনসারী।

স্বামির হঠাৎ স্বতস্ফূর্ত ভাব দেখেই ফিরোজার সন্দেহ হলো। ও রান্নাঘর থেকে কপালে লেগে থাকা আটাগুলো মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো। তীক্ষ্ণ নজরে আনসারীর দিকে তাকালো।আজকাল আনসারীর উপর বড্ড সন্দেহ হয়। আনসারী যে কতটা খারাপ মানুষ সেটা ও এত বছরে অনেক আগেই বুঝে গেছে, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ওর নিজের মেয়েকে মারতেও হাত কাপবে না।এমন নয়তো ঐ আফরিন কে মেরেছে শুধুমাত্র তাহরীম কে কষ্ট দেওয়ার জন্য।

আজকাল আফরিনের কথা ফিরোজা বেগমের খুব মনে পড়ে।মেয়েটা থাকতে বুঝেনি কিন্তু এখন বুঝতে পারছে মনের কোথাও না কোথাও সেও আফরিন কে নিজের মেয়ের জায়গা দিয়েছিল। আনসারীর দিকে তাকিয়ে তীক্ষ্ণ গলায় বললো ফিরোজা,
ফিরোজা: আফরিন কে মেরে তাহরীমকে কষ্ট দিতে পেরে খুব ভালো লাগলো তাইনা?খবর দেখলাম তাহরীমকে আফরিনের মৃত্যুর দায়ে গ্রেপ্তার করিয়েছেন।ওদের আলাদা করতে পেরে খুব ভালো লাগছে তাইনা?

মুহূর্তেই আনসারীর মুড চটকে গেলো।মাত্রাতিরিক্ত রাগ উঠলো তবে নিজেকে যথা সম্ভব শান্ত রাখলো।এখন কিছুতেই মাথা গরম করা যাবেনা।ভালো মুডটা রাগারাগি করে খারাপ হোক সেটা আনসারী কিছুতেই চায়না। ও নিজেকে শান্ত রেখে মুচকি হেসে বলল,
আনসারি:তোমার কেন মনে হলো তাহরীমকে আফরিনের থেকে আলাদা করার জন্য আমি আমার মেয়েকেই মেরে ফেলবো? এতটা খারাপও নই আমি।

‘ আপনি যে কত বড় অমানুষ সেটা আমি এত বছরে ঠিকই বুঝে গেছি। যেই মানুষ তার নিজের মেয়ের সামনে ভালো সেজে থাকে সারাদিন আর রাতের আঁধার ঘরে বউকে পিটাতে পারে তাও আবার মদ খেয়ে তার থেকে অমানুষ আর কাপুরুষ কেউ হতে পারে না।আপনার সঙ্গে বিয়ে হয়ে আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে।আপনার কারণে আমি আফরিন কে দেখতে পারতাম না কারণ আফরিন আপনার প্রথম বউয়ের মেয়ে যাকে ভালোবেসে আজ অব্দি আপনি আমায় ভালোবাসেন নী।আরে ভালোবাসা তো দূর আপনি আমাকে একটা মানুষ হিসেবেই ট্রিট করেন নী।আপনার মত অমানুষ যেন আর কেউ স্বামী… ‘

আর কিছু বলতে পারলোনা ফিরোজা কারণ তার আগেই আনসারী ওর গাল চেপে ধরেছে।এতক্ষণ ফিরোজার কথা গোগ্রাসে গিলছিল নিজেকে সামলে কিন্তু শেষের কথাগুলো আর সহ্য করতে পারলনা আনসারী।রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফিরোজার দিকে তেড়ে গেলো।ফিরোজার গাল চেপে ধরে বলল,
আনসারি: বড্ড সাহস বেড়ে গেছে তাইনা? তাহরীমের সঙ্গে আফরিনের বিয়েটা দিয়ে তুমি যেই ভুলটা করেছিলে তার জন্য কিন্তু তুমি কম শাস্তি পাওনি। এরপরও তুমি সাহস করে বড় গলায় আমায় এসব বলছো।তুমি জানত আমি কে? আমি হলাম কাজী আনসারী, যে জীবনে শুধু দুটো জিনিসকে ভালোবেসেছে।এক হলো তুবা ( আফরিনের মা ) আর আরেক হলো…

~ চলবে ইনশাল্লাহ্

( পেটে বেশি রহস্য জমা হয়ে গেলে যা হয় আর কি আমারও তাই হয়েছে।এত রহস্য ধরে রাখতে পারছিলাম না তাই বাধ্য হয়ে দিতে হলো।সব রহস্য উদঘাটন করে দশ পর্বের মধ্যেই গল্প শেষ হবে। পরে কোনোদিন সুযোগ হলে তাহরীম আর আফরিনের দাম্পত্য জীবনের কাহিনী নিয়ে আবারও ফিরে আসবো। )

তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে সিজন-০১ পড়তে লেখাটি উপর ক্লিক করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে