গল্প:-দুলহানীয়া পর্ব:-(০৪)

0
1046

গল্প:-দুলহানীয়া পর্ব:-(০৪)
লেখা:-AL_Mohammad_Sourav
!!
Engagement এর আংটিটা দিয়ে যান আর আপনি আপনার আংটিটা নিয়ে যান! আমি চাইনা আপনার মত একটা ছেলের কোনো স্মৃতি আমার জীবনে থাকুক। (কথাটা বলে আংটিটা আমার গায়ের উপর ছুড়ে মারছে আমি আশফির দিকে তাকিয়ে ছিলাম নিষ্পাপ চোখে। (আশফি)

আমি:- এভাবে ছুড়ে না মারলেও পারতে?

আঙ্কেল:- ছুড়ে তো মাড়ছে একদম ভালোই করছে! কথা না বলে আংটিটা ফিরিয়ে দিয়ে সোজা হেটে চলে যাও।

আমি:- নাও তোমার আংটি!

আশফি:- টেবিলের উপরে রাখে চলে যান।

আমি:- ঠিক আছে! আংটিটা টেবিলের উপরে রেখে সোজা বেড়িয়ে এসেছি। সায়লা আমার সাথে এমনটা কেনো করেছে? আমি তো সায়লার সাথে কোনো রকম খারাপ আচরন করিনি তাও কেনো এমনটা করছে? মন খারাপ করে বাড়ীতে এসেছি! বাড়ীর ভীতরে ঢুকে দেখি সবাই বসে আছে আব্বা আমাকে দেখে বসা থেকে উঠে কাছে এসেছে।

আব্বা:- আলিফ তুই এতটা ছোট মনের আমার ভাবতেও অভাক লাগছে ছিঃ।

আমি:- আব্বা আমার কোনো দোষ নেই তখনি আব্বা আমাকে থাপ্পড় দিয়েছে। আমি গাল ধরে বলতেছে আগে আমার কথাটা তো শুনবেন তখন আরেকটা থাপ্পড় দিয়েছে।

আব্বা:- এই থাপ্পড় গুলি আরো আগে দেওয়া উচিত ছিলো। আমার মান সম্মান সব ধূলুয় মিশিয়ে দিয়েছিস এখুনি আমার সামনে থেকে চলে যা বলছি।

আমি:- আম্মা তুমি তো কিছু বলবে

আব্বা:- কেও কিছু বলবেনা এখুনি তুই এই বাড়ী থেকে চলে যা বলছি।

আমি:- ঠিক আছে যাচ্ছি কিন্তু আপনাদের কোথাও একটা ভুল হয়েছে। তবে যেদিন বুঝতে পারবেন যে আমার কোনো দোষ নেই সেইদিনেও এই বাড়ীতে আসবোনা। রুমে গিয়ে কাপড় গুলি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে চলে যেতেছি বাড়ী থেকে।

ভাবি:- আলিফ কোথায় যাচ্ছো তুমি?

আমি:- বাড়ী থেকে চলে যাচ্ছি আমি এই বাড়ীতে থাককোনা।

ভাবি:- কোথাও যেতে হবেনা,, আমি তোমার জন্য অনেক সুন্দর আর ভালো মেয়ে খুঁজে আনবো।

আমি:- নাহ আমি এখন আর বিয়ে করবোনা! ভাবি গেলাম আর আসবোনা এই বাড়ীতে। আম্মা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাও সবার সামনে দিয়ে বেড়িয়ে এসেছি। বাহিড়ে এসে জুয়েলকে ফোন করেছি রিং হতেই রিসিব করেছে।

জুয়েল:- কিরে বল?

আমি:- তোর সাথে কিছুদিন থাকতে হবে কারন বাসা থেকে আমাকে বের করে দিয়েছে।

জুয়েল:- কেনো বাসা থেকে বের করছে তুকে?

আমি:- এসে বলছি! ফোনটা কেটে ওর কাছে গেলাম ও ব্যাচেলর থাকে একা রুম নিয়ে।

জুয়েল:- বল কেনো বাসা থেকে বের করেছে?

আমি:- শুন তারপর জুয়েলকে সবকিছু বলেছি। সব শুনে মন খারাপ করে বলে।

জুয়েল:- দূর বোকা দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে এখন রেস্ট নে কাল থেকে আমার কম্পানিতে জয়েন করে নিবি। আমি বস্ এর সাথে কথা বলে নেবো এর পর সময় গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

আমি:- ঠিক আছে! ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নিলাম বিকাল গড়িয়ে সন্ধা হয়ে গেছে আজকের রাতটা ছটফট করে কাটিয়ে দিয়েছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে জুয়েলের সাথে ওর অফিসে গেলাম।

বস্:- দেখুন আলিফ সাহেব আপনাকে আমি এত কিছু দিতে পারবোনা জাস্ট ১৫০০০ টাকা বেতন দিতে পারবো বাকী সব আপনার নিজের খরচ থাকবে।

আমি:- ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।

স্যার:- তাহলে আপনি মার্কেটিং সাইটে সময় দিবেন কেমন?

আমি:- ওকে স্যার! জুয়েল অনেক খুশি হয়েছে আমি এখন নতুন চাকরিটা পেয়ে গেছি। প্রথম দিনটা ভালোই কাটছে এভাবে আরো তিন চারদিন চলে গেছে দুই বন্ধু মিলে সময় পার করতেছি।

জুয়েল:- দোস্ত চল একটু ক্লাব থেকে ঘুরে আসি অনেকদিন হলো ক্লাবে যায়না।

আমি:- হ্যা চল অনেক দিন ধরে পার্টি করিনা। দুই বন্ধু মিলে গেলাম শেগুন নাইট ক্লাবে।

জুয়েল:- বল কি খাবি?

আমি:- তুই খা আমি দেখি! (তখনি পেছন থেকে কিছু কথা শুনতে পেলাম জানিস মেম তার বিয়েটা তি করে ভাংগছে! মেম আমাকে দিয়ে তার উটবির সাথে নাটক করে বিয়েটা ভাংগছে। আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি সায়লা কথা গুলি বলছে! তাহলে আমার ধারনা সঠিক হলো সব কিছু আশফির কাজ। সায়লা আরো বলতে লাগলো মেম তার মিথ্যা অপেরেশনের কথা বলে বিয়েটা আটকিয়ে এর দুইদিন পরে এই নাটকটা করেছে। তবে ছেলেটা খুব ভালো ছিলো) তখনি জুয়েল জোর করে আমাকে ড্রিংক্স করাতে চাচ্ছিলো কিন্তু আমি খাচ্ছিনা আমি সরে গেছি হঠাত চোখ আটকে গেছে একটা মেয়ের দিকে তাকিয়ে।

জুয়েল:- কিরে এমন ভাবে কি দেখছিস?

আমি:- ভালো করে তাকিয়ে দেখ।

জুয়েল:- আরে এইটা তো আশফির মত লাগে। তবে দেখে মনে হচ্ছে কোনো জামেলা হয়ছে চল গিয়ে দেখি কি সমস্যা হয়ছে।

আমি:- দূর শালা ওর যা খুশি তা হোক তাতে আমার কি? আর এখন ঐ খানে গেলে বরং আমাদের ফাসিয়ে দিবে। তার চাইতে ভালো দূর থেকে দেখি আর মজা নেই।

জুয়েল:- হ্যা কথাটা মন্দ বলিসনি তবে মনে হচ্ছে ছেলেটা জোর করে কিছু জামেলা তৈরি করছে।

আমি:- হ্যা তাই মনে হচ্ছে চল কাছে যাই! দুজনে কাছে গেছি তখনি ছেলেটা বলে আশফিকে।

তোর ঠোটে আমার ঠোটের ছোঁয়া লাগিয়ে দিবো দেখি আমাকে কে আটকায়।

আশফি:- ভালো হবেনা কিন্তু বলে দিলাম।

ছেলে:- কি করবে শুনি বলে ছেলেটা এগিয়ে যাচ্ছে আর আশফি পিছিয়ে যাচ্ছে। আর সবাই হাত তালি দিতেছে আশফির চেহারাটা একদম ছোট হয়ে যাচ্ছে ভয়ে। আমার কাছে অনেক খরাপ লাগছে যখনি ছেলেটা আশফির হাত ধরবে তখনি পেছন থেকে ছেলেটার ঘার ধরেছি।

আমি:- আরে ভাই কি করছেন? মেয়েটা ভয় পেয়ে গেছে ছেড়ে দিন।

ছেলে:- তুই আমার ঘার ধরেছিস তবেরে বলে আমাকে থাপ্পড় দিতে ছিলো আমি হাত ধরে নিয়েছি। (বাংলা মদ খেয়ে একাকার হয়ে আছে ছেলেটা)

আমি:- আমাকে থাপ্পড় দিবি মানে বলে জুড়ে ধাক্কা দিয়েছি আর ছেলেটা নিচে পড়ে গেছে। আর আশফিকে নিয়ে দৌরে বাহিরে চলে এসেছি।

আশফি:- ধন্যবাদ আপনাকে!

আমি:- তা ঠিক আছে কিন্তু আজকে তো আপনার অপেরেশন হবার কথা কিন্তু আপনি এখানে কেনো? (তখনি সায়লা এসেছে) সায়লা আপনি এখানে?

সায়লা:- স্যার আমার কোনো দোষ নেই মেম আমাকে যা করতে বলছে আমি তাই করেছি।

আমি:- তবে আপনি আমার উপকার করেছেন বটে। ওর মত একটা মেয়ে থেকে নিজেকে মুক্ত করেছি যাক এখন আমি অনেক খুশি। তখনি আশফি ওল্টা পাল্টা আচরন করছে আর ভূমি করতেছে। আবার নাটক শুরু হয়ে গেছে শালা জুয়েল কোথায় গেলো?

সায়লা:- স্যার মেম নাটক করছেনা ওনি তো ফাস্ট টাইম ড্রিংক্স করছে তাই এমন করছে।

আমি:- যা খুশি তা করুক তাতে আমার কি? আচ্ছা সায়লা তাহলে আমি যাই।

সায়লা:- স্যার মেমকে একা রেখে যাবেন?

আমি:- কেনো তুমি সাথে আছো আর আমার এখন কেও কিছু লাগেনা।

সায়লা:- আমি গাড়ী চালাতে পারিনা মেমের যে অবস্থা মনে হচ্ছে গাড়ী চালাতে পারবেনা প্লিজ একটু মেমকে বাড়ীতে দিয়ে আসেন প্লিজ।

আমি:- দরকার নেই ওর বাপ পরে আমাকে ওল্টা পাল্টা বলবে তুমি নিয়ে যাও। তখন চেয়ে দেখি আশফির ভূমি বেড়ে গেছে সায়লার কাপড় নষ্ট করে নিয়েছে। আমি আশফিকে ধরে বসিয়েছি সায়লা পানি এনে ওর মাথায় আর মুখে পানি দিয়েছে। কাপড় কিছুটা মুছে পরিস্কার করে দিয়েছে। ঠিক আছে চলো সায়লা আমি তোমাদের দিয়ে আশি।

সায়লা:- ধন্যবাদ স্যার।

আমি:- ওকে এবার গাড়ীতে উঠে বসো। আশফিকে সামনে বসিয়েছি আশফি ঘুমিয়ে আছে কিছুটা পথ যাওয়ার পরে সায়লা গাড়ী থামাতে বলে।

সায়লা:- এখানে আমার বাসা আর স্যার সরি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন আর বুঝেন তো চাকরি করলে কত রকম কাজ করতে হয়। আমার চাকরিটা চলে গেলে আমি আমার মাকে নিয়ে রাস্তায় নামতে হত তাই এমনটা করেছি।

আমি:- ঠিক আছে বাই! আমি গাড়ী চালাতে মনোযোগী হলাম রাত ১ টার দিকে আশফিদের বাড়ীতে এসেছি। গাড়ীটা সাইটে রেখে আশফিকে কোলে তুলে নিলাম! আশফি ঘুমে ভিবোর হয়ে আছে বাড়ীর কলিং বেল চাপ দিতেই আশফির বাবা দরজাটা খুলে দিয়েছে। আমাকে দেখে ওনি বলে উঠেন?

আঙ্কেল:- তুমি এখানে এত রাতে কেনো এসেছো?

আমি:- একটু নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। (ওনি আশফির দিকে তাকিয়ে বলে)

আঙ্কেল:- কি হয়ছে আমার মেয়ের কথা বলছোনা কেনো?

আমি:- কিছু হয়নি মাত্র বেশি ড্রিংক্স করার কারনে কিছুটা মাতাল হয়ে ঘুমিয়ে আছে। ওর রুমটা কোথায় বলেন শুয়ে দিয়ে যাই।

ভাবি:- আলিফ তুমি আমার সাথে আসো।

আমি:- হ্যা চলেন ওনি গিয়ে আশফির রুমটা দেখিয়ে দিয়েছে। আমি আশফিকে শুয়ে দিয়েছি। আশফির চেহারাটা মলিন হয়ে আছে আমি কিছু না বলে চলে আসতেছি।

ভাবি:- আলিফ এত রাতে যাবার কি দরকার আজকের রাতটা এখানে থেকে যাও।

আমি:- এই বাড়ীতে আমি থাকতে পারবোনা আমাকে ক্ষমা করেন ভাবি। আমি গেলাম বলে বেড়িয়ে এসেছি রাস্তায় এসে একটা সি এন জি নিয়ে রুমে আসলাম। রুমে এসে দেখি জুয়েল নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে ওকে না ডাক দিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়েছি। সকালে জুয়েলের ডাকে ঘুম থেকে উঠেছি।

জুয়েল:- কিরে আবার প্রেম জেগে উঠছে নাকী?

আমি:- আরে নাহ আশফিকে দেখলি তো কতটা নার্ভাস হয়ে গেছে তাই একটু সাহায্য করেছি। তুই বস দুই মিনিটে রেডি হয়ে নিতেছি তখনি চেয়ে দেখি আব্বা ফোন করছে। আমি রিসিব করিনি মোবাইল রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেছি। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি অনেক গুলি ফোন করছে। নাহ একবার বেক করে দেখি যেই কথা সেই কাজ ফোন বেক করেছি। আব্বা রিসিব করে বলে,,,

আব্বা:- আলিফ তুই একটু তাড়া তাড়ি বাড়ীতে আয় তোর আম্মা অসুস্থ হয়ে আছে।

আমি:- তাহলে আম্মাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

আব্বা:- হাসপাতালে নিয়ে গেছিলাম এখন বাড়ীতে এনেছি। তুকে দেখতে চাইতেছে তুই তাড়া তাড়ি বাড়ীতে আয়।

আমি:- ঠিক আছে আসতেছি। ফোনটা কেটে জুয়েলকে বলে বাইক নিয়ে তাড়া তাড়ি বাড়ীতে গেলাম যখনি ভীতরে ঢুকেছি তখনি আমি থমকে গেলাম বাড়ীর সবাই এমন ভাবে আছে কেনো আর এত মানুষ আসলো কেনো?
!!
To be continue,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে