আজ আমার বিয়ে পার্ট ২৯

0
2266

আজ আমার বিয়ে পার্ট ২৯
লেখা আশিকা জামান

ভাইয়া অনেক্ষন ব্যাপারটা নোটিশ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
— কিরে অরিন?? তুই এত চুপচাপ কেন?? কি কিছু কি হইছে তোমাদের??
ইভান আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলে,
— আরে না ভাইয়া। কি আর হবে ওতো বরাবরই এমন। ওর মনে হয় ঘুম পাইছে।
— এই তুমি না বেশি কথা বলো। আমার মোটেও ঘুম পায় নি।
— সে পরে দেখা যাবেনি।
বলেই ইভান লজ্জায় জিব্বাহয় কামড় দেয়।
আমি বিস্ময়ে ওর দিকে তাকাই।
অনন্ত ভাইয়া ব্যাপারটা সামলে নিয়ে পরে আমাদের দিকে তাকিয়ে বলে,
— অরিন তোকেতো বলাই হয়নি। এখানে আসার আরেকটা কারণ আছে। লেট করে বলার জন্য আগেই সরি।
আমি বিদেশে থাকাকালীন মা-বাবা আমার জন্য মেয়ে দেখেন। তারপর ওই মেয়ের সাথে আমার ফেসবুকে, ফোনে কন্ট্রাক্ট হয়। আমার মেয়েকে ভালোই লেগেছে। এখন সবায় চায় যাতে এইবার বিয়েটা করে ফেলি।
— কি??

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


আমি তোমাকে মেরেই ফেলবো এত কিছু হয়ে যাওয়ার পর এখন বলছো।
— আগেই বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তখন তোরোতো মেন্টাল কন্ডিশন ভালো ছিলো না।
আচ্ছা কোনভাবেইই কি মাফ করা যায় না।
— হুম মাফ করলাম তাও আমার ভাবীজীর জন্য। তুই যে এতদিন পর বিয়ের পিড়িতে বসছো এতেই আমি খুশি। আচ্ছা মেয়ের ডিটেইলসতো কিছুই বললা না??
— ও হ হ মেয়ে একটা বেসরকারি মেডিকেল পড়ে। নাম অর্পিতা চৌধুরী । বাসা ওই মিরপুর ১০ এর ওইদিকে। কালকে আমার তার সাথে প্রথম মিট কি গিফট নিলে ভালো হবে একটু আইডিয়া দে। খুব নার্ভাস লাগছে।
আমি আর ইভান হেসে কুটিকুটি হচ্ছি ও কথা বলতে বলিতেই কেমন ঘাবড়ে যাচ্ছে।
— আচ্ছা তোরা কি আমার শত্রু নাকি বোন, বোন জামাই আমি বুঝতে পারছি না।
কোন আইডিয়াতো দিচ্ছিস না উলটা হি হি শুরু করে দিছিস।
আমি ইভানের মাথার সাথে মাথা ঠেকিয়ে আবার হাসতে লাগলাম।
— ওয়েট এইভাবেই থাক তোদের দুজনের একটা পিক তুলি, খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।
আমাদের একটা রোমান্টিক পিক তুলে দিলো ভাইয়া আমিতো পিক দেখেই পুরাই মুগ্ধ।
ভাইয়া ফোনটা বেজে উঠলো।
— এই তোরা এখন রুমে যা।
ইভান আমার দিকে তাকিয়ে বলে।
— অরিন তোমার ভাইয়েরতো এখন আমাদের দরকার নাই। ভাবী এসে গেছে না। চল চল
আমাকে টানতে টানতে রুমে নিয়াসলো।
— এটা কি হলো?? ভাইয়া কি ভাববে??
— তোমার ভাই কচু ভাববে। তোমার ভাই এখন তার হুবু বউ এর সাথে কথা বলবে বুঝওনা তুমি??
— নাহ, তুমিই সব বোঝ।
— হুম বুঝি আর তুমি বুঝেও না বুঝার ভাব করে থাকো। এইগুলা আর এখন থেকে চলবে না।
— ও তাহলে এখন কি চলবে??
— লেট নাইট শো।
ইভান আমার দিকে তাকিয়ে ফিক করে একটা হাসি দিলো।
— এই প্লিজ তুমি এমন অসভ্যের মত হাসবা না।
— হুম আমি অসভ্য। আর অসভ্যতা কত প্রকার কি কি তা আমি তোমাকে আজকেই বুঝিয়েই ছাড়বো।
— এই নাহ, প্লিজ…
ইভান আমার দিকে এগুতে থাকি। আর আমি হুঠ করে পিছাতে গিয়ে পড়ে যেতে লাগলে ও আমার পিঠে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে ফেলে।
আমার কপালের সামনের চুলগুলো সরিয়ে ইভান আমার কানের পিছে হাত রাখে।
একদম আমার ঠোটের কাছে ইভানের ঠোট।
আমি চোখ বন্ধ করেই বলতে থাকি,
— প্লিজ তুমি সরো। বিকেলে তুমি আমাকে অনেক ব্যাথা দিছো। সরো…
ও ওর নেশাভরা কন্ঠে বলে উঠে,
— আবার দেই, একদম ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
আমি লজ্জায় ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে অন্যপাশে যেতে লাগলে , আমার হাত ধরে ফেলে। পিছন থেকে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে।
আমার চুল্গুলো সরিয়ে ঘাড়ের একপাশে চুমো দেয়।
আমি কেপে উঠি।
— আমাকে কালকে সারারাত না ঘুমাতে দেয়ার পানিশমেন্ট তোমাকে পেতে হবে।
আমি ওর দিকে ঘুরে তাকালাম।
ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আমি ওর বুকে কয়েকটা কিল দেই।
— আউচ, মরে গেলাম। এত জোড়ে।
ওর নাকের দিকে হাত মুষ্টি করে উচিয়ে নিয়ে বলি,
— ঘুশি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দিবো। তোমাকে কি আমি ঘুমুতে না করেছিলাম।
আমার গাল চেপে দিয়ে বলে,
— তো কি করেছিলে তুমি?? কেন বলে গিয়েছিলে যে তুমি এখানে থাকো আমি পড়া শেষ হলেই চলে আসবো। তুমি বলতে পারলে না আমি ওখানেই ঘুমাবো, তুমি ঘুমাও। দোষটা কার এইবার??
আমি নিচে তাকাই ফেললাম। আসলে দোষতো আমারি।
আমার থুতনি ধরে ইভান আমার মুখটা উপরে তুললো।
— উহু মুখ লুকালে হবে না পানিশমেন্ট পেতেই হবে।
কি?? যা পানিশমেন্ট দিবো মাথা পেতে নিবেতো??
— না
— তাহলে ওই প্রবাদটাই মিথ্যা
“মেয়েদের না মানে হ্যা”।
— না।
ইভান হি হি করে হেসে উঠলো। ওর কথার ধাচ না বুঝেই আমি না বলে দিয়েছি। এতক্ষনে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমিও একটা মুচকি হাসি দিয়ে ওর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে বললাম,
— জানি না।
— জানাচ্ছি। বলেই ইভান আমাকে কোলে তুলে বিছানার দিকে যেতে লাগলো।আমিও আমার দুই হাত দিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরলাম।
ও একদম বিছানায় আমাকে শুইয়ে দিয়ে নিজেও আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো।
আমি নড়াচড়া করে সরে যেতে থাকলে ও আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
— বিকেলবেলাতো ঠিক কাছে এসেছিলে। এখন এমক্নএমন কিচিরমিচির করছো কেন??আজকে শুধু ভালবাসা বাসি হবে নো হাংকি পাংকি।
ঠিক পিচ্চি সোনা।
আমি আর ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি নি। নিজের সবকিছু ওকে দিয়ে আদিম উন্মাদ প্রেমলীলায় দুজন ভেসে যেতে থাকলাম। হয়তবা এটাই ভালবাসার সর্বোচ্চ স্তর।
পরদিন সকালে আমরা দুজনেই লেট করে ঘুম থেকে উঠি। ভাইয়া তখনো বেঘোরে ঘুমুচ্ছিলো। আমি কোন রকম নাস্তা রেডি করে ওকে খেতে ডাকলাম কিন্তু সে কিছুতেই রাজি হচ্ছে না। সেই এক কথা অফিসে লেট হয়ে যাবে।
আমি ওর কথায় পাত্তা না দিয়েই স্যান্ডুইচ নিয়ে ওকে বাচ্চাদের মত করে খাওয়াতে লাগলাম। ও রেডি হতে হতে খাওয়া শেষ করে ফেললো।
— এখন কি হলো??
খুবতো না না করছিলে।
— হুম লাভ ইউ সোনা পাখি। আমার লক্ষি বউ।
আমার কপালে একটা চুমো দিয়ে অফিসে চলে গেল।
ও যাওয়ার পর আমি আর অনন্ত ভাইয়া ব্রেকফাস্ট করলাম। আমরা দুই ভাইবোন মিলে অনেক মজা করলাম। ভাইয়া একটু পর তার উড বি ওয়াইফ এর সাথে মিট করতে যাবে এ নিয়ে অনেক হাসাহাসি করলাম। দিনটা ভালোই কাটলো। কিন্তু সন্ধ্যার সময় ভাইয়া ফিরে বাসায় যেতে চাইলো। কিন্তু আমরা দুজন কিছুতেই যেতে দিতে রাজি হলাম না। তাই অগত্যা সে থেকে গেল।
কিন্তু পরদিন সকালেই শুরু করলো যাওয়ার বাহানা। ওইদিন আবার অফ ডে ছিলো তাই ইভান ভাইয়াকে এগিয়ে দিতে গেল।
আমি তত ক্ষনে আমার কাজ গুছাতে লাগলাম। আজকে দিনটা স্পেশাল করার জন্য আমি আর ইভান বাহিরে ঘুরতে যাবো।অনেক মজা করবো, কালকে অনেক প্ল্যানিং করেছি। সো খুব এক্সাইটেড।
চলবে।।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে