আজ আমার বিয়ে পার্ট ২৮

0
2264

আজ আমার বিয়ে পার্ট ২৮
লেখা আশিকা জামান

— হ্যালো অরিন কেমন আছিস??
— এইতো ভালো ভাইয়া। তুমি কেমন আছো?? কবে আসছো?? এতদিন পরে ফোন করলে?? কি তুমি??
— আরে পিচ্চি এত প্রশ্ন একবারে করলে কি উত্তর দিবো??

আমি গত পরশু আসছি। আর তোর ফোন নাম্বারতো আগেরটা অফ। মামনির কাছ থেকে পরে এইটা নিয়াসছি। আচ্ছা জামাই কেমন আছে??
— এইতো দাঁড়াও দিচ্ছি।
আমি দৌড়ে গিয়ে ফোনটা ইভানকে কাছে নিয়ে গেলাম। ওর কানে ধরলাম..
— কে??
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


— অনন্ত ভাইয়া।
— হ্যালো। স্লামালেকুম, ভাইয়া কেমন আছেন??
— এইতো ভালো, তোমার কথা কি জিজ্ঞাস করবো??
আমার বোনতো খুব দস্যি তোমাকে নিশ্চিত জ্বালিয়ে মারে।
— না ওই আরকি। আআচ্ছা অষ্ট্রেলিয়াইকি সারাজীবন থেকে যাবেন?? দেশে আসেন বিয়ে থা করেন, আমরাও আনন্দ স্ফূর্তি করি।
— হুম। তা যা বলেছো। আমি গত পরশু আসছি। এইবার মনে হয় তোমাদের মনের আশা পুরন হবে। হা হা হা!!
— ও গ্রেট। তাহলে আমাদের এখানে কবে আসছেন??
— আসতে তো হবেই। অরিন কে সব কিছু না শেয়ার না করা অব্দি তো আমি শান্তি পাই না। অরিনো পায় না। তাই ভাবছি আজকেই আসবো।
— আচ্ছা আসেন। ভাইয়া কিছু না মনে করলে অরিনের সাথে কথা বলেন আমি আসছি আবার অফিসে লেট হয়ে যাচ্ছে।
— ওকে আচ্ছা আচ্ছা যাও।
অরিন ফোন্টা ধরো বলেই ইভান চলে গেল।
— হ্যা ভাইয়া বলো।
— কিরে শেষমেশ বড় আব্বু বিয়েটা কিভাবে দিলো সেটাইতো শোনা হলো না।
— সে অনেক কাহিনী। তুমি আগে আসো।
— হুম আসতেতো হবেই। এইবার বাসায় এসে আর শান্তি পাচ্ছি না তুই নেই, নওরিন নেই। পুরা বাসা ফাকা।
— হুম। আচ্ছা ছোট মা, আর চাচ্চু কেমন আছে??
— সবাই ভালো আছে। আচ্ছা তুই মনে হয় ইভানকে খুব জ্বালাস নারে..
— মোটেই না আমি কেমন লক্ষি তুমি জানো না।
— হুম জানিতো তুমি যে কি দুষ্টুরে বাবা।
আচ্ছা এখন রাখছি। মামনী ডাকছে।
— আচ্ছা রাখছি। আর তাড়াতাড়ি চলে এসো।
— ওকে বনু।
ভাইয়ার সাথে কথা বলে মনটা খুব ফুরফুরে লাগছে।
কিন্তু ইভান যে আমার উপর রাগ করছে এখন কি হবে??
ওর রাগ কি করে ভাংগাবো??
একটা না একটা উপায় হবেই।
আমি পুরা ঘর আজকে সুন্দর করে গোছালাম। তারপর কিচেনে গিয়ে অনন্ত ভাইয়া আর ইভানের প্রছন্দের আইটেম রান্না করলাম।
গোসল, খাওয়া শেষ করে একটা ফ্রেস ঘুম দিলাম।
কারণ বিকেলে ইভান আসলে ওর রাগ ভাংগাতে যে অনেক কাঠ খড় পোহাতে হবে সেটা আমি আগেই বোঝে গেছি।
একটা চরম ঘুম দিলাম। ওদিকে বিকেলে ইভান কলিংবেল চাপতে লাগলো অনেক্ষন ধরে। আমি বেহুশের মত ঘুমুচ্ছি।
পরে ও আমাকে ফোন করে ফোনের শব্দে আমার ঘুম ভাংগে। ঘুমঘুম চোখে ফোন্টা রিসিভ করে বলি,
— হ্যালো আমি ঘুমুচ্ছি।
ফোন রাখো…
— তাহলে আমি কি দরজার সামনে দাড়াই থাকবো।
এইটা বলার সাথে সাথে আমি বিছানা থেকে লাফ দিয়া নামি। আজকে আমার খবর আছে।তাড়াতাড়ি দরজার সামনে গিয়ে দরজা খুলি।
ইভান রাগে গজগজ করতে করতে রুমে ঢুকে।
আমি ওর পিঠে হাত দিতেই হাতটা সরিয়ে দেয়। তারপর টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেতে থাকে।
আমি ঠাই দাঁড়িয়ে থাকি। কি করবো বুঝতেছিনা।
ও ওর টাই আর শার্ট এর বোতাম খুলতে খুলতে রুমে ঢুকে। বিছানায় শার্ট, ফ্লোরে টাই ছুড়ে মারে। আমি ওর পিছে পিছে রুমে ঢুকে। আমাকে দেখেই ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। তারপর ফ্রেস হয়ে এসে বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে পড়ে।
আমি কাপড় চোপড় গুলো ঠিক করে গুছিয়ে রাখি। তারপর একদম ওর বুকের কাছে গিয়ে শুয়ে পড়ি।
কপালের উপর হাতটা রেখে চোখটা বন্ধ করে ফেললো।
আমি ওর আরেকটা হাত আমার নিজের দিকে টেনে নিয়ে গেলাম। ও বারবার হাতটা সরিয়ে নয়ে যাচ্ছিলো আমিও নাছোড় বান্দা হাতটানতেই ছিলাম।
— তোমার সমস্যা কি?? বারে বারে হাত টানতেছো কেন??
— কিছুই না।
— তাহলে। সরো আমি এখন ঘুমাবো।
— না তুমি ঘুমাবা না।
— কেন?? তুমি বললেই আমার শোনা লাগবে।
— হু শোনা লাগবে। আমি তোমার বউ তাই আমার কথা শুনতে তুমি বাধ্য।
— এই তুমি সরোতো…
ইভান আমাকে সরিয়ে দিয়ে উঠে যেতে লাগলে, আমি ওর টিশার্ট এর কলার ধরে একদম ওর কাছে চলে যাই। একদম ওর নাক বরাবর আমার নাক, ঠোটের কাছাকাছি চিরচেনা সেই ঠোট…
ওর নিঃশ্বাসের শব্দ আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
এক অজানা ভালোলাগা আমাকে ছুয়ে যাচ্ছে। মোহময় সেই অনুভুতিটা অদ্ভুত সম্মোহনে ওর দিকে আমাকে টানছে। আমি বেশামাল হয়ে ওর নাকে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম।
ইভান উহু করে উঠলো।
আমি ওর ঘাড়ে হাত রেখে ওর ঠোটে আমার ঠোট ছোঁয়াতে লাগ্লাম।
ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই।
আমি অভিমানে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে ফেলি।
— মন থেকে যা আসে না । অভিনয় করে তা করতে যেও না।
আমিকি সত্যিই অভিনয় করছিলাম?? আমিতো সত্যি ওর কাছে এসেছি সমস্ত দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে। আর ও…..
নাহ আর না…
আমার চোখে যে কখন জল গড়িয়ে পড়েছে আমি খেয়ালই করিনি।
আমি উঠে আসতে চাইলে,
ও আমার হাত টান দিয়া ধরে। তারপর
আচমকা ইভান ঝড়ের বেগে এসে আমার দুই কানের পিছের চুলে দুই হাত দিয়ে আমার ঠোটে উথাল-পাথাল চুমো খেতে থাকে। অনেক্ষন ধরে। আমাকে যখন ও ছেড়ে দেয় তখন আমার ফিল হয় আমার ঠোট অনেক ফুলে গেছে, অনেক জ্বলছে বোধ হয় কতখানে ছড়ে গেছে। ও যে ইচ্ছে করে আমার ঠোট কামড়ে দিয়েছে সেটা আমি এতক্ষনে ভালোভাবেই বুঝে গেছি।
আমি ওর দিকে তাকাতেই
ঠোট মুছতে মুছতে ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকায়।
ঘরে শুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। কেউ বাইরে থেকে বুজতেই পারবে না এখানে কেউ আছে কিনা।
কলিংবেলের শব্দে নিরিবতা ভাংগে। ইভান তড়িঘড়ি করে দরজা খুলতে যায়।
আমি ড্রেসিংটেবিলের আয়নায় নিজেকে দেখে লজ্জায় মরে যাচ্ছি। কি করে কারো সামনে যাবো আমি??
— অরিন বাহিরে আসো দেখো কে আসছে।
আমি ধীরপায়ে ড্রইংরুমে এসে দেখি অনন্ত ভাইয়া।
আমাকে দেখেই বসা থেকে উঠে পড়লো,
— অরিন তুই এইরকম ভাবলেশহীন ভাবে তাকিয়ে আছিস ক্যান?? খুশি হস নাই আমাকে দেখে??
— ধুর খুশি হবো না কেন?? অনেক খুশিতো। আচ্ছা পথে কোন অসুবিধা হয় নাইতো।
— না ভালোভাবেই এসেছি।
— অরিন, ভাইয়াকে নাস্তা দাও..
— হুম যাচ্ছি।
— অরিন ব্যাগটা দেখ তোর জন্য কি কি আনছি।
আমি দৌড়ে গিয়া ব্যাগটা খুলে দেখি আমার প্রছন্দের সব জীনিস আনছে।
— ও মা ভাইয়া তুমিতো দেখি পুরা বাজারটাই নিয়াসছো। এত কিছু কেন আনছো??
ভাইয়া মৃদু হাসলো। তারপর তার ব্যাগ থেকে দুইটা ফোনের বক্স বের করলেন।
— ধর এই ফোন দুটো তোদের দুজনের জন্য আনছি। বিয়েতেতো আসাই হলোনা। আচ্ছা আর এই ব্যাগটা নে এইখানে কিছু কস্মেটিকস আছে। নে ধর..
আমিতো এত কিছু পেয়ে খুব খুশি।
তারপর সব গুছিয়ে ভাইয়াকে ফ্রেস হতে বলি।
তারপর একসাথে হালকা নাস্তা করি।
কিচেনে টুকটাক কাজ ছিলো ওইগুলাই করতেছিলাম। তখন অবশ্য ওরা রেস্ট নিচ্ছিলো।
রাতে খাবার পর আমরা সবাই মিলে আড্ডা শুরু করে দিলাম। আমি একটা বিষয় নোটিশ করলাম ইভান খুব, সুন্দর সাবলীলভাবে ভাইয়ার সাথে মিশে গেছে যদিও এইটা তাদের ফ্রাস্ট মিট। আমি চুপচাপ ওদের কথা শুনছিলাম। আমার বিকেলের কাহিনীটা এখনো চোখে ভাসছে।
চলবে।।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে