Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"কোথাও হারিয়ে যাবকোথাও হারিয়ে যাব পর্ব-১১+১২

কোথাও হারিয়ে যাব পর্ব-১১+১২

#কোথাও_হারিয়ে_যাব
#রূবাইবা_মেহউইশ
পর্ব-১১

সকাল সকাল ঝড়বৃষ্টি মাথায় করে বাড়িতে পা রাখলো রিদওয়ান। অফিস টাইমে এখনো অনেকটা বাকি তবুও সে গোসল সেরে দ্রুত তৈরি হলো অফিসের জন্য৷ রান্না ঘরে এখনো নাশতার আয়োজন হয়নি তাই নিচে নেমেই রিদওয়ান মাকে বলল, ‘ইজি টু রেডি কিছু হবে খাওয়ানো জন্য? ‘

-এত জলদি কেন?

-কাজ আছে।

-‘দাঁড়া’ বলেই রায়না বেগম ফ্রিজ থেকে পিনাট বাটার আর পাউরুটি-বিস্কুট এগিয়ে দিলেন। রাতে দুধ জ্বাল করে রেখেছিলেন পুডিংয়ের কিন্তু মন ভালো না থাকায় বানানো হয়নি৷ এক গ্লাস দুধও এগিয়ে দিলেন ছেলের দিকে। রিদওয়ান ব্যস্ত হাতে পাউরুটি দুধে ভিজিয়ে খেয়ে নিলো৷ দু পিস রুটি আর গ্লাসের বাকি দুধটুকু খেয়ে মায়ের কাছে জানতে চাইলো আব্বু কোথায়? রায়না অমনোযোগী আর খুব বেশিই চিন্তিত থাকায় সময়ের খেয়াল করলেন না। ছোট করে জবাব দিলেন, অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছেন বোধহয়।

রিদওয়ান এবার বাবা-মায়ের ঘরের দিকে পা বাড়ালো। দরজায় দাঁড়িয়ে নক করলো বার দুয়েক কিন্তু কোনো সাড়া পেলো না। বাধ্য হয়েই ভেজানো দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো। বাশার সাহেব ঘুমিয়ে আছেন বা কাত হয়ে তাই দরজা থেকেই মুখটা স্পষ্ট চোখে পড়ছে। ঘুম এখনো গভীর বুঝতে পেরে সে আর ডাকলো না বাবাকে। বাবার ঘর থেকে বেরিয়ে দোতলায় নিজের ঘরে ঢুকে অফিসের ফাইলপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। রিদওয়ান চলে যাবার প্রায় ঘন্টাখানেক পর রিমন এলো নাশতার জন্য তখন রায়না বেগম খেয়াল করলেন বড় ছেলের অফিসে যাওয়ার ব্যাপারটা। তারপর আবার মনে হলো রিদওয়ান তো সবসময়ই বাবা আর ভাইয়ের এক ঘন্টা আগে উপস্থিত হয় অফিসে তাদের চেয়েও নিচু পদে আছে বলে। কথাটা ভবতেই ভেতর থেকে প্রলম্বিত শ্বাস বেরিয়ে এলো তাঁর। রিমন লক্ষ্য করলো মায়ের উদাসীনতা।

-কি হয়েছে আম্মু?

-কিছু না তো! পরোটা বানাইনি পাউরুটি খেয়ে যেতে পারবি না?

– তুমি বোসো তো এখানে তোমাকে চিন্তিত লাগছে।
রিমন মায়ের হাত ধরে বসিয়ে দিলো নিজের পাশের চেয়ারটাতে।

-তুই তো নিজের জন্য একজনকে পছন্দ করেছিস তা কি তোর বাবা জানে?

-হঠাৎ এই কথা!

-বল না তোর বাবা কি জানে? মেনে নিয়েছে সব?

-আম্মু, তুমি আমাদের ভাই-বোনদের সব খবরাখবর জানো বলে কি আব্বুও জানবে নাকি! আব্বু কেমন তা জানো না, নাজনীনের কথা এখনই বলা যাবে না। তুমি কি এই নিয়েই চিন্তত!

রায়না বেগম জানেন তার তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র রিদওয়ানটাই উদাসীন জগৎ-সংসারের হিসেব-নিকেশে কিন্তু মনের জগতে সে-ই সবচেয়ে সৎ আর ধনী। রিমন কিংবা বৃষ্টি কখনোই বৈষয়িক ব্যাপারগুলোতে এক চুল ছাড় দেয়ার মানুষ নয় আবার মনের দিক থেকেও তাদের একই নীতি কিন্তু রিদওয়ানটা বড্ড বেশিই সৎ। মনের খোরাকের জন্য সে কখনোই না বাবার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করবে আর না বৈষয়িক কোন ব্যাপারে মনোযোগী হয়ে নিজেকে এগিয়ে নেবে! রায়না বেগম জবাব দেন না রিমনের কথার। রিমনও আর কিছু জানতে না চেয়ে নাশতা শেষ করে৷ অফিসে যেতে এখনো অনেক দেরি তবুও তাড়াতাড়ি বের হচ্ছে আজ এক বন্ধুর সাথে দেখা করার কথা। সন্ন্যাসী বাবুর জন্য শেষ একটা উপকার আজই করবে সে তারপর আর কোন হেল্প সে করবে না। যার দায় সে উঠালে অন্যরা ঠিকঠাক আগাতে পারে না। সে তো রিদওয়ানকে কালই টাটকা ভিডিও পাঠিয়েছিলো কই এখন অবধি নো রেসপন্স। এমন নির্লিপ্ত মানুষের উপকার করে মজা নেই! রিমনও নাশতা শেষে বেরিয়ে পড়লো। এত সকালে দুই ছেলে কোথায় গেল মা রায়না নিজ ভাবনায় তা খেয়াল করল না৷ তিনি এখনো রাতের সেই ঝগড়ার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। সংসার জীবনের ত্রিশ বছরে কাল প্রথম তিনি স্বামীর মুখে মুখে তর্ক করেছেন। করতে বাধ্য হয়েছেন।

_____________

চমৎকার এক সকাল হবে আজ এমন ভেবে ভেবে রাতের ঘুম হারাম করেছিল নুপুর৷ কিন্তু এ কি হলো ঘুম ভাঙতেই বৃষ্টি! সকাল সকাল বৃষ্টি মানেই দিনটা কাটবে বিশ্রী…. স্বগোতক্তির মত করে বলল সে।বিছানা ছেড়ে বাথরুমে ঢুকতে গিয়ে টের পেল দরজা বন্ধ। বাবা-ছোট মায়ের বাথরুম রুমের ভেতর এ বাথরুম শুধুই দু ভাই-বোন আর ছুটা কাজের বুয়া আর মেহমান এলে ব্যবহার করে। প্রয়োজনের সময় তৎক্ষনাৎ বাথরুমে ঢুকতে না পারার মত যন্ত্রণা বোধহয় বিশেষ দিনগুলোতেও হয় না। নুপুরের মনে হলো বাথরুমে নিশ্চয়ই বুয়াই হবে তোতন তো এখন স্কুলে আছে।

-খালা জলদি বের হন আমার অবস্থা সিরিয়াস।

কাতর কণ্ঠে বার দুয়েক ডাকলো নুপুর। মিনিট পাঁচেক পর ঘড়ঘড় আওয়াজ তুলে কুলকুচির আওয়াজ এলো ভেতর থেকে। সেই আওয়াজ শুনেই নুপুরের তীব্র চাপের কথাও মনে রইলো না। সে দরজা থেকে সরে দাঁড়ানোর আগেই বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো জাকির।

– চাপ কি বেশি পড়ছে তোমার?

দাঁত কেলিয়ে বাজেরকম হেসে প্রশ্ন করলো জাকির৷ তার এই ছোট্ট প্রশ্নটার ধরণ শুনেই রাগে গা রি রি করতে লাগলো নুপুরের৷ পারতপক্ষে কখনোই কথা বলে না সে জাকিরের সাথে তাই এখনো চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু না অসভ্য, বেজাত লোকটা তার স্বভাব থেকে বেরিয়ে চলার মানুষ নয়। পুনরায় বলে উঠলো, আরে যাও কই তোমার না চাপ পড়ছে বললা! যাও যাও খালি হয়ে আসো নইলে আবার ঘরেই না….. হে হে।

– মুখ সামলে কথা বলবেন জাকির ভাই। সবাই আপনার ঘরের বউ না তাই মুখ খোলার আগে ভেবে নিবেন কি বলতেছেন।

-চাইলেই তো হইতে পারো ঘরের….. জাকির এরপর আর কোন শব্দ উচ্চারণ করতে পারেনা৷ নুপুর তার ঠিক মুখের সামনেই হাত তুলে দাঁড়িয়েছে । না, থাপ্পড় সে দেয়নি। অন্তত এমন নোংরা লোকের গায়ে হাত ছোঁয়ানোর কথা সে স্বপ্নেও ভাবে না। নুপুর নিজের ঘরে গিয়ে দড়াম করে দরজা আটকে দেয়। জাকির সেখানেই দাঁড়িয়ে আবারও হেসে বিড়বিড় করে, ফাঁক পাইতে দাও সোনা আর কয়টা দিন। আগে তো ভোগ আমিই করমু তোমারে তহন ভাঙমু তোমার এই ভাবের দুয়ার হে হে……।

চলবে

#কোথাও_হারিয়ে_যাব
#রূবাইবা_মেহউইশ
পর্ব-১২

বৃষ্টি থেমে গেছে অনেকক্ষণ সেই সাথে শেষ হয়েছে নুপুরের সাজগোজ। এখন পর্যন্ত অর্নিতা সাতবার কল করে ফেলেছে তাকে। মজার ছলে কাল অর্নিতার দাদীকে বলেছিল আজ সে যাবে তাদের ওখানে কিন্তু আজ সত্যিই দাদী তার অপেক্ষায় অস্থির হবেন বুঝতে পারেনি। এদিকে বাবাকে না জানিয়ে কোথাও যাওয়া হয় না নুপুরের। এক টিউশন আর কলেজ এ দুইয়ের বাঁধা রুটিন বাবার জানা কখনো শপিং করতে গেলেও ফোনে লোকেশন জানিয়ে রাখে৷ কিন্তু আজ বাবার সাথে কথা বলার সুযোগ একদমই মিলল না। জাকির ভাই সেই যে এসেছে এখনো কি এত জরুরি কথা বলছে বাবার সাথে! নুপুরের সেজেগুজে থাকা মুখটাতেও ভাসলো দুশ্চিন্তার ছাপ৷ গত কয়েকদিনে সে জানতে পেরেছে জাকির ভাই একটা বিয়ের প্রস্তাব এনেছিল তার জন্য। কোনভাবে কি সেটা নিয়ে বাবাকে উস্কাতে চাইছে? তার ভাবনার মাঝেও আরও একবার কল এলো অর্নির নাম্বার থেকে। নুপুর কল রিসিভ না করেই ব্যাগটা নিয়ে বাড়ি থেকে চুপচাপ বেরিয়ে পড়লো। এখন বাবাকে বলতে যাওয়া মানেই ওই বদমাশটারও কণ্ঠও শুনতে হবে। বাড়ির গেট পেরিয়ে রাস্তায় উঠতেই রিকশা পেল নুপুর কিন্তু রিকশাওয়ালাকে ঠিকানা বলতেই লোকটা জানালো অতদূর যাবে না। ওখানকার বাজার পর্যন্ত হলে যেতে পারে। একা একা অতদূর রিকশা বদল করে যাওয়াটা একটু ভয়ের লাগল। অর্নির খালার বাড়ি চেনা তার সেখানে হলে স্কুটি নিয়ে চলে যেত কিন্তু উল্টো পথে অর্নিদের বাড়ি তারপর রাস্তা তার চেনা নেই৷ কিন্তু অত ভেবেও কাজ নেই এখন বেরিয়ে যখন পড়েছেই আল্লাহ ভরসা। রিকশায় বসে অর্নিতাকে কল করল সে।

– এখনো রওনা দিসনি?

-দিয়েছি কিন্তু রিকশা তো বাজার পর্যন্ত যাবে সেখান থেকে কি করে যাব?

-আরে তুই… এক মিনিট।

নুপুরকে লাইনে রেখেই অর্নিতা ভাইকে ডাকল, ভাইয়া!

বুকের মাঝে ধুকপুক শুরু হলো নুপুরের৷ অর্নিতা তার ভাইকে ডাকছে কেন?
অর্ণব বাজারে যাচ্ছে কাজের লোককে নিয়ে।বৃষ্টি থামতে দেরি দাদীর শুরু হয়েছে আম নিয়ে আয় আচার বানাব। জৈষ্ঠ্যমাস ফুরিয়ে গেছে আচার বানায়নি এখনো এদিকে আবার ইলিশ, খিচুড়ির বায়নাও আছে তাই বাধ্য হয়েই এক প্রকার সে নিজে বাজারে যাচ্ছে। অর্নিতার ডাক শুনে পিছু ফিরল অর্ণব।

-বল

-দাদী নুপুরকে দাওয়ত করছে।

-তো!

– ও যে রিকশায় আছে বাজার পর্যন্ত আসবে।

-ওহ

– এখানকার রাস্তা ও চেনে না তুমি কি কাউকে পাঠাতে পারবে?

-দেখছি।

অর্ণব চলে গেল। মুখে বলল দেখছি মনে মনে বলল, পুচকে মেয়ে একাই বেরিয়ে পড়ে সব জায়গায়!

অর্ণবের বাজার করা শেষ হবার আগেই নুপুর পৌঁছে গেল বাজারের মোড়ে। রিকশা ভাড়া মিটিয়ে সে আবার কল করলো অর্নিকে। অর্নিও পুনরায় ভাইকে কল করে বান্ধবীর অবস্থান জানিয়ে দিলো। আম কেনা বাকি ছিল বলে অর্ণব বাজারের ব্যাগ নিজের হাতে নিয়ে কাজের লোক রিপনকে টাকা ধরিয়ে বলে দিলো কাচা আম কিনে বাড়ি ফিরতে। সে এগিয়ে গেল অর্নির বলে দেওয়া জায়গায়। মিনিট খানেক সময়ের মাঝেই অর্ণব বাজার ছেড়ে রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়ালো ঠিক নুপুরের সামনে। মেঘলা দিনেও ঘামে ভেজা টি শার্ট আর গম্ভীর মুখো অর্ণবকে দেখে থমক গেল নুপুরের মুহূর্ত। চোখের পলকে রিকশা ডেকে ইশারা করল অর্ণব তাকে রিকশায় চড়তে। হৃৎপিণ্ডের ধকধকানি কি একটু বেশিই হচ্ছে! বুঝতে পারছে না নুপুর তবে সামনের মানুষটার ইশারা বুঝে সে আর দেরি করেনি রিকশায় উঠতে। সেকেন্ড না গড়াতেই অর্ণবও যখন বাজারের ব্যাগসুদ্ধ নিজেও চড়লো রিকশায় তখন নুপুরের অবস্থা পটল তুলল বলে! সে ভেবেছিল অর্ণব তাকে রিকশা করে ঠিকানা বলে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু একি! মানুষটা যে স্বশরীরে তারে পাশেই উঠে বসল। হৃদযন্ত্রের এমনিতেই তো বিকল অবস্থা এখন কি তবে কবরস্থ করে ছাড়বে! এত সুখ সুখ যন্ত্রণা সইবে কেমন করে? মাতাল মাতাল লাগছে তার অর্ণব এমন নির্বিকার বসে আছে কি করে? সে তো পারছে ন স্থির থাকতে। হাত, পা ঝিমঝম করছে, বুকের ভেতর আকাশসম আনন্দের অনুভূতি তাকে শেষ করে দিচ্ছে তারওপর পাশের মানুষটার গা থেকে কেমন আদুরে এক ঘ্রাণ এসে লাগছে নাকে। রিকশা চলছে মহল্লার রাস্তায়। রাস্তার দু পাশে গাছ আর উঁচু দালানকোঠা। কোথাও কোথাও বৃষ্টিতে ভিজে কৃষ্ণচূড়ায় ছেয়ে আছে রাস্তা। নুপুরের মনে হচ্ছে এ যেন আষাঢ়ে চলছে বসন্তের উৎসব। এতসব ভাবনা আর বুকের ভেতর প্রজাপতির ফড়ফড়, ধড়ফড় আনন্দের মাঝে তার নজর আটকে গেল অর্ণবের কোলের ওপর হাতে। পশমভর্তি চন্দনরঙা হাতদুটো দেখে তৎক্ষনাৎ আবার চোখ রাখলো থ্রী কোয়ার্টার স্লিভের বাইরে নিজের শ্যামলা হাতে। এক মুহূর্তে মনে হলো আকাশ-পাতাল তফাৎ তাদের গায়ের রঙে। একটা পুরুষ মানুষের উজ্জ্বল হাতের পাশে শ্যামলা মেয়েলি হাত বড্ড বেমানান। এতক্ষণের সকল উত্তেজনা এক লহমায় বদলে গিয়ে মেঘময় হয়ে উঠলো নুপুরের মন। ভালোবাসতে রূপ লাগে এমনটাই ভেবে মন খারাপ হতে থাকল তার। পাশাপাশি বসা অর্ণব তখনো নিশ্চুপ বসে তাকিয়ে ছিল সামনে। হঠাৎই তার মনে হলো পেছনে একটা বাইক আছে। আকস্মিক ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই দেখলো সত্যিই পেছনে একজন বাইক নিয়ে আসছে। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিল এই লোকটা আগেও তাকে ফলো করেছে। একবার মনে হলো রিকশা থামিয়ে ধরা যাক পরমুহূর্তেই ভাবনা বদল হলো পাশে বসা মেয়েটির জন্য। পরের মেয়েকে বিপদে ফেলার কোন মানেই হয় না! রিকশা এসে বাড়ির সামনে থামলে অর্ণব ভাড়া মিটিয়ে নুপুরকে বলল ভেতরে যেতে। হাতের ব্যাগ দারোয়ানকে দিয়ে ভেতরে পাঠিয়ে নিজে কাউকে কল করলো সেই সাথে দেখলো আশেপাশে বাইকারটা আছে কিনা!
_________________

-একটা মাইয়া ছিল সাথে।

-ওর সাথে মেয়ে কে থাকবে? প্রেমিকা আছে বলে তো জানতাম না।

-বাড়িতে নিয়া আসছে স্যার।

-বয়স কেমন হবে?

-বেশি না। স্কুল নইলে কলেজে পড়ে এমন বয়সী।

-ওহ তার বোন হবে তাহলে।

-না স্যার মাইয়া অন্য জায়গা থাইকা আসছে। ওই পোলায় বাজার কইরা আসার সময় নয় আইছে।

-ওর বোনই হবে তাহলে। বোন নিজের বাড়িতে বেড়াতে আসে এমনিতে খালার বাড়ি থাকে সে।

অনেকটা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলল সারোয়ার। সে জানতেই পারলো না তার দেওয়া তথ্যটা ভুল। আর এই একটা ভুল সামনে তাকে আরও কত ভুলে জড়িয়ে নেবে সে আন্দাজটাও রইলো না তার। ঝড়ো হাওয়ায় উলোটপালোট হয় যেমন করে খড়ের ছাউনি তেমন করেই পালটে যাবে এবার পাশার দান, কারো জীবনের ছক আর কারো জীবন বাতিটাই ধ্বংস হবে।
_____________

-অবশেষে এলি তুই!

– আসব না মানে? দাদীজান এত করে ডাকলেন আর আমি আসব না তা কি করক হয়! আর জল্লাদ ব্যাটাকেও তো দেখার ছিল….. শেষের বাক্যটা বিড়বিড় করে বলল নুপুর। বাইরে বৃষ্টি নেই আবার রোদও ছিল না তবুও ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে নুপুর। সারাটা পথ তার হাত পায়ের ঝিমঝিমানি একটুও কমেনি উল্টো ভুলবশত অর্ণবর বাহুতে তার বাহু ঠেকতেই কেমন শিউড়ে উঠেছিল! নুপুর যেন এখনো অনুভব করছে সে স্পর্শ। চোখ বুঁজে বড় করে নিঃশ্বাস নিতেই কানে এলো দাদীর কণ্ঠ, ‘ কি খবর রঙ্গ বানু কখন আইলা?’

-মাত্রই আসছি দাদী দেখেন হাতর ব্যাগটাও রাখতে পারিনি। আপনার নাতনি আমাকে ঠিকঠাক ঘরে ঢুকতেই দিচ্ছে না।

ছটফটিয়ে জবাব দিয়েই নুপুর সোফায় গিয়ে বসলো। দাদীও ততক্ষণে বসেছেন সোফায় তার পাশেই অর্নিতা এসে দাঁড়ালো। হাতে তার সবজি কাটার ছুড়ি। আজ ভুনা খিচুড়ি, ইলিশ ভাজা আর ঝাল করে মুরগির মাংস রাঁধবে বলে আয়োজন চলছে। অর্ণব বাইরে থেকে ঘরে ঢুকতেই দেখতে পেল সোফায় বসা দুই জেনারেশনের তিনজনকে৷ হঠাৎ কেমন মনে হলো এরা সবাই তার আপনজন। নিজের ভাবনাতে নিজেই চমকে গেল সে। এরা সবাই আপনজন! নুপুর কে? মন -মস্তিষ্কের ভাবনাগুলো আজকাল জট পাকিয়ে যায় কেবল। চারদিকে হাজারো ঝামেলা, বিপদ-আপদ সারাক্ষণ মাথায় ঘুরছে চরকির ন্যায়৷ তাই বোধহয় এমন উল্টাপাল্টা ভাবছে সে। বসার ঘরের বড় ঘড়িটাতে চোখ বুলিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল দোতলায়। অফিসে আজ যাবে দুপুরের পর। উকিল সাহেব আজও ডেকেছেন গুরুত্বপূর্ণ কোন কথা বলবে বলে। দোতলায় পা রাখার পরই অর্ণব চেঁচিয়ে ডাকলো রুজিনা খালাকে।

‘খালা নাশতা দিয়েন একটু পরই বের হতে হবে।’

চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ