Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"গ্যাংস্টার Gangstarগ্যাংস্টার_Gangstar পর্বঃ11 (শেষ)

গ্যাংস্টার_Gangstar পর্বঃ11 (শেষ)

গ্যাংস্টার_Gangstar পর্বঃ11 (শেষ)
#লেখা_রওনাক_ইফাত_জিনিয়া
.
.
.

আমিঃ রাতুল আমি স্বীকার করছি প্রথমে আমি বাচ্চা চাইনি কিন্তু… এটা কিছুতেই হতে পারেনা।আল্লাহ্ এত বড় শাস্তি আমায় দিতে পারেনা।

রাতুলঃ নীলা আমার কথাটাতো শুনবে আগে নাকি?দেখ আমাদের বাচ্চারা বেঁচে আছে।আল্লাহ্ নিজে হাতে আমাদের বাচ্চাদের বাঁচিয়েছে তবে চাপ লাগার জন্য ওরা একটু অসুস্থ আরকি তাই ওদের আলাদা রাখা হয়েছে।

আমিঃ তুমি সত্যি বলছো?আমি ওদের দেখতে চাই রাতুল।

রাতুলঃ তুমি একটু সুস্থ হও তারপর দেখবে।
.
.একুশদিন পর বাসায় আসলাম নিহিতকে(আমাদের ছেলে) নিয়ে।রাতুল সেদিন মিথ্যে বলেছিল আমায়।আমাদের সন্তানেরা সুস্থ ছিলনা।হ্যাঁ ঐ দূর্ঘটনায় আমরা আমাদের মেয়েটাকে হারিয়ে ছিলাম।আমার অবস্থাও ভাল ছিলনা আর অতিরিক্ত চাপ লাগায় আমাদের মেয়েটাও মারা গিয়েছিল।অনেক কষ্টে ডাক্তার আমাদের ছেলেটাকে বাঁচাতে পেরেছিল।ঐ দূর্ঘটনায় আমি ভেঙ্গে পড়েছিলাম।যখনই আমি নিহিতকে দেখতাম তখনই নীরাকে(রাতুল আমাদের মেয়েটার নাম নীরা ঠিক করে রেখেছিল) হারানোর ব্যাথা আমাকে আরো বেশি করে ঘিরে ধরত।নিহিতকে আমি এক মুহূর্তের জন্যেও নিজের থেকে আলাদা করতাম না।অন্য কেউ কোলে নিয়ে একটু চোখের আড়ালে গেলেই মনে হতো এই বুঝি হারিয়ে গেল।খাওয়া ঘুম কিছুই ঠিকমত করতাম না সারাক্ষন শুধু নিহিতকে নিয়েই পড়ে থাকতাম।
.
.দেখতে দেখতে তিনমাস হয়ে গেলো নিহিতের আর আমিও ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক হলাম।এই তিনটা মাস রাতুলও ছায়ার মত আমার পাশে ছিল।নাহিদ ভাই বাসায় একেবারেই আসতনা।সে নিজেকে দোষী ভাবত।কতবার বলেছি ভাই ভাগ্যে ছিল এটা আমার তাই হয়েছে এতে আপনার কোন দোষ নেই।নিহিতকেও কোলে নেয়নি বলেছে “নীলা আমার কাছে নিয়ে এসোনা তবে এরও ক্ষতি হয়ে যাবে।”
এই তিনমাসেও আমরা কেউ বুঝতে পারলাম না সেদিন সিঁড়ির পাশে তেল কোথা থেকে এসেছিল যার ফলে ঐ দূর্ঘটনা ঘটেছে?

দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল তবে রাতুল গ্রুপ থেকে রাতুল চলে আসার পর ঐ গ্রুপের লিডার নাহিদ ভাই হয়।এখন রাতুল এসবে জড়িত না থাকলেও এসব তার পিছু ছাড়েনি।একের পর এক সমস্যা হয়েই যাচ্ছিল।তিনবার রাতুলের উপর অ্যাটাক হয় আর তিনবারই কোন রকমে রাতুল বেঁচে যায়।নাহিত ভাইয়ের সাথে কথা বললে সে বলেছিল এটা বিরোধী গ্রুপের কাজ।আসলে অপরাধ জগতে একবার পা রাখলে সেখান থেকে ফিরে আসার কথা ভাবাও কঠিন আর এখানেতো রাতুল আমাকে আর নিহিতকে নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চাইতেছে।আসলে রাতুল সত্যিকারেই ভালো হতে চেয়েছে তাইতো সবকিছু ছেড়ে শুধু আমাদের নিয়ে বাঁচতে চাচ্ছে।এভাবেই যাচ্ছিল দিনগুলো।একসময় পড়াশুনা করে বড় চাকুরির ইচ্ছে থাকলেও এখন আমি রাতুল আর নিহিতকে নিয়েই বেঁচে আছি।সবমিলে ভালই আছি কারন এখন এরাই আমার সবকিছু।
.
.আর মাত্র কয়েকটাদিন তারপর নিহিতের পাঁচমাস পূর্ণ হবে।দেখতে দেখতে সময়গুলো কিভাবে যেন পার হয়ে যাচ্ছে বুঝাই যাচ্ছেনা।সবাইকে নিয়ে বেশ ভালই আছি।রাতুলের পৃথিবী বলতে এখন শুধু ওর মা,বোন,আমি আর নিহিত।রাতুল ঠিকই বলেছিল একদিন আমি ওকে খুব ভালবাসবো।এখন আসলে রাতুল আর নিহিতকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালবাসি।
রাত দশটা বেজে গেল অথচ রাতুল এখনও আসছেনা।এত দেরী ওর হয়না আর দেরী হলে ওই কল করে জানিয়ে দেয়।অথচ আজ আমি ফোন দিচ্ছি কিন্তু ওর ফোন বন্ধ তাই বেশি চিন্তা হচ্ছে।রাত এগারটা বাজে আমি নিহিতকে খাওয়াচ্ছিলাম হঠাৎ ফোন এল গিয়ে দেখি নতুন একটা নাম্বার তাই রিসিভ করিনি।ঐ নাম্বার থেকে পরপর চারবার কল আসল দেখে আমি রিসিভ করলাম।

আমিঃ হ্যাঁলো কে বলছেন?

–আপনি কি নীলা বলছেন?

আমিঃ জ্বী।আপনি কে?

–আমাকে চিনবেন না।আপনি এক্ষুনি একবার City Hospital এ চলে আসুন আসলে রাতুল..

আমিঃ কি হয়েছে রাতুলের?কি ব্যাপার আপনি বলছেন না কেন কি হয়ছে রাতুলের?ওই ঠিক আছেতো?

–আসলে একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে।please আপনি চলে আসুন যতদ্রুত পারেন।
.
.লোকটা ফোন কেটে দিল আর আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।আল্লাহ্ জানে রাতুল এখন কেমন আছে।আমি,রিমা আর মা হাসপাতালে গেলাম।যাওয়ার পথে নিরব ভাইকে ফোন দিলাম কারন আমরা তিনজনেই মহিলা তাই একজন পুরুষের দরকার।

হাসপাতালে গিয়ে ঐ নাম্বারে ফোন দিতেই একটা লোক এল।দেখে বুঝলাম লোকটা ডাক্তার।রাতুলের কথা জানতে চাইলে লোকটা বলল অপারেশন চলছে।লোকটা আরো জানালো রাতুলকে কিছু লোক খুব আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে।ভাগ্যিস ডাক্তার রাতুলের পূর্ব পরিচিত থাকায় আমার নাম্বার সংগ্রহ করতে বেশি সমস্যা হয়নি।মাথায় আঘাত পাওয়ায় তার অপারেশন করা হচ্ছে।এখন রাতুল কেমন আছে আমি জানতে চাইলে লোকটা বলল অপারেশন করার পর জ্ঞান ফিরলে বলা যাবে।এর আগে কিছু বলা যাচ্ছেনা।চতুর্থবারের মত রাতুলের উপর আক্রমন করা হল এটা।আর রাতুলকে মেরে ফেলাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।

আমরা যাওয়ার প্রায় দুঘন্টা পর রাতুলের অপারেশন শেষ হল।ততক্ষনে বাবা আর নিরব ভাই দুজনেই চলে এসেছে।ডাক্তার বলল অপারেশন সফল হয়ছে তবে রাতুলের জ্ঞান ফিরলে বুঝা যাবে।দুঘন্টা পর রাতুলের জ্ঞান ফিরল।নার্স এসে বলল “উনি এখন ঠিক আছেন।নীলা কে?আপনি ভেতরে যান উনি আপনাকে ডাকছেন।খেয়াল রাখবে উনি যেন বেশি কথা না বলেন আর উনাকে উত্তেজিত করবেন না বা এমন কিছু বলবেন না।”

আমি নিহিতকে কোলে নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম আর রাতুলের পাশে গিয়ে বসলাম।রাতুলের মাথা ব্যান্ডেজ করা।আমি পাশে বসলাম আর নিহিতকে ওর পাশে শুইয়ে দিলাম।রাতুল একটা হাত অনেক কষ্টে তুলে নিহিতের মাথায় রাখল।রাতুলের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।সত্যি বলতে এই দৃশ্য দেখে আমারও বুকটা ফেটে যাচ্ছে কিন্তু রাতুলের সামনে আমায় দূর্বল হলে চলবেনা শক্ত হতে হবে।আমি রাতুলের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললাম

আমিঃ কাঁদছো কেন তুমি?কিছুই হয়নি তোমার।দেখবে কয়েক দিনের মাঝেই একদম সুস্থ হয়ে যাবে।

রাতুলঃ আমি ভেবেছিলাম আমি বুঝি আর বাঁচবোনা

আমিঃ ভুলেও এসব উল্টাপাল্টা কথা বলবেনা আর একদম কাঁদবেনা। কান্নাকাটি বাদ দিয়ে দ্রুত সুস্থ হও নিহিতের সাথে খেলতে হবেনা?জানোই তো তোমাকে ছাড়া ওই একদম ভাল থাকেনা।

রাতুলঃ নিহিতের মা বুঝি ভাল থাকে?

আমিঃ থাকে নাতো।একদম ভাল থাকেনা।তাইতো তোমাকে দ্রুত সুস্থ হতে হবে।

রাতুলঃ নীলা জানো আজ আমায় কে মেরে ফেলতে চেয়েছিল?

আমিঃ কে?তাকে তুমি দেখেছ?

রাতুলঃ হুম দেখেছি।নাহিদ

আমিঃ কি?অসম্ভব এটা কিভাবে হতে পারে?তুমি ঠিক দেখেছ এটা নাহিদ ভাইই ছিল?

রাতুলঃ হুম নীলা ওটা নাহিদই ছিল।কতগুলো গুন্ডা দিয়ে মারার পর নিজে দেখতে এসেছিল আমি মরেছি কিনা।

আমিঃ কি বলছ তুমি এসব আর নাহিদ ভাইতো তোমার ছোটভাইয়ের মত আর আমাকেও সে বোনের মত ভালবাসে সে কোন তোমাকে মেরে ফেলতে চাইবে?

রাতুলঃ জানিনা।আমিতো

রাতুল কথাটা শেষ করার আগেই নার্স এসে বলল আর কথা না বলতে।আমি রাতুলের পাশে থাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু নার্স বের করে দিল।আমি বেরিয়ে সবাইকে সব খুলে বললাম।মাতো বিশ্বাসই করতে পারছিল না বলছিল আমি কখনও নাহিদ আর রাতুলের মাঝে পার্থক্য করিনি আর নাহিদ কিভাবে করতে পারল এটা আর কেন করল?মায়ের মত আমারও একই প্রশ্ন ছিল কিন্তু কোন উত্তর ছিলনা।

আগে হলে নাহিদ ভাইকে জানাতাম রাতুলের দূর্ঘটনার ব্যাপারে কিন্তু এখনতো আরো লুকিয়ে রাখতে হচ্ছে।আমরা বাসা পরিবর্তন করলাম আর রাতুলের ব্যাপারে খুব ঘনিষ্ঠ ছাড়া কাউকে জানালাম না।ডাক্তার শফিক আমাদের অনেক সাহায্য করল।বলতে গেলে প্রায় তিনটা মাস আমরা লুকিয়ে ছিলাম।লুকিয়ে থাকার কারন হল রাতুলকে বাঁচানো।কারন রাতুল অসুস্থ ছিল আর নাহিদ ভাই এখন নাহিদ গ্রুপের লিডার।অনেক ক্ষমতা তার আর রাতুল অসুস্থ থাকায় ওরে সুস্থ করাটাই ছিল প্রধান লক্ষ্য।ওই সুস্থ হলে পরে জানা যাবে নাহিদ ভাই কেন এমন করেছিল আর কি এমন শত্রুতা ছিল তার রাতুলের সাথে?তবে আগে রাতুলকে সুস্থ করাই আসল।চারমাস পর রাতুল অনেকটা সুস্থ হল।

সেদিন আমি কিছু দরকারে আমার বাবার বাসায় গিয়েছিলাম তখনই রাতুলের ফোন।

আমিঃ হা বল।

রাতুলঃ নাহিদ আমাকে কল দিয়েছিল।

আমিঃ সে তোমার নতুন নাম্বার কোথাই পেল?

রাতুলঃ জানিনা।আমি ওর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি অনেক হিসাব মেলানোর আছে।

আমিঃ তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?ভুলে গেছ সে তোমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল?

রাতুলঃ সব মনে আছে তাইতো যাচ্ছি দেখা করতে।

আমিঃ তুমি একা যেওনা আমিও যাব তোমার সাথে দাড়াও আমি আসছি।

রাতুলঃ চিন্তা করোনা আমি আজ তৈরি হয়েই যাব।যে অস্র আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম আজ তা সাথে নিয়েই যাব।এভাবে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়।আমি আমার নিহিতকে লুকিয়ে থাকতে নয় স্বাধীনভাবে চলার পথ করে দিতে চাই।

আমিঃ তুমি একা যেওনা রাতুল তোমার কিছু হলে আমি বাঁচব কিভাবে আর আমাদের নিহিতে কি হবে?

রাতুলঃ চিন্তা করোনা আমার কিছুই হবেনা।ভুলে যেওনা নদী মরে গেলেও নদীর যেমন দাগ থাকে ঠিক তেমনি আজও আমি যদি বন্দুক হাতে নিই চার পাঁচজনে আমার কিছুই করতে পারবে।তোমার ভাষাতে আমিতো গ্যাংস্টার ভেবোনা এত সহজে তোমার এই গ্যাংস্টারের কিছুই হবেনা।

আমিঃ কোথায় যেতে বলেছে?

রাতুলঃ পোড়া বাড়িতে।আমি যাচ্ছি তুমি তোমার আর নিহিতের খেয়াল রেখ।

আমিঃ যেওনা রাতুল কেন বুঝতে পারছোনা এটা তার চাল?তোমার কিছু হলে..

রাতুলঃ আরে তুমি একদম ভয় পাইও না আমার কিছুই হবেনা।
.
.রাতুল আমার কোন কথা না শুনেই ফোনটা কেটে দিল।নিহিতকে মার কাছে রেখে আমিও পোড়া বাড়ির দিকে রওনা হলাম।রাতুল আগে একবার বলেছিল আমায় এই বাড়ির কথা এটা ওদের একসময় গোপন ঢেরা ছিল।আসার সময় প্রতিটা মুহূর্তে ভেবেছি নাহিদ ভাই এমন কেন করল?নিজের বোনের মত ভালবাসত আমায় আর আমিও তো তাকে নিজের ভাইয়ের থেকে বেশি ভালবেসেছি।রাতুলের কাছেও নিজের আপন ভাইয়ের মত ছিল তবে কেন করল এমন?
.
.আমি যখন পৌঁছলাম গিয়ে দেখি রাতুল আর নাহিদ ভাই দুজন দুজনের মাথায় বন্দুক ধরে রয়েছে।আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম।

আমিঃ নাহিদ ভাই দয়াকরে গুলি করবেন না।বলুন না রাতুলের সাথে আপনার কি এমন হয়েছে যে আমি ওর জান নেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন?

নাহিদ ভাইঃ ও তুমি এসেছ ভালই হয়েছে।আস আস তোমার অপেক্ষাতেই ছিলাম।

রাতুলঃ তুমি এখানে কেন এসেছ নীলা তোমাকে না মানা করেছিলাম আসতে?

আমিঃ আমি নাহিদ ভাইয়ের…

নাহিদ ভাইঃ এই সাবধান ভাই বলবানা।আমি তোমার ভাই না।তুমি জানো তোমার ওই ভাই ডাকটা শুনলেই আমার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে পড়ে।

আমিঃ এসব কি বলছেন?আপনিতো আমায় ছোটবোনের মত ভালবাসেন আর আমি আপনাকে বড় ভাই মনে করি।

নাহিদ ভাইঃ আমি তোমার কোন ভাই না শুধু নাহিদ।একটা সত্যি কথা বলবে এই রাতুলের মাঝে কি এমন আছে যা আমার মাঝে নেই?কেন তুমি আমাকে ভালবাসোনা?জানো আমি এই রাতুলেও থেকেও অনেক বেশি তোমাকে ভালবাসি?

আমিঃ আপনার মাথা ঠিক আছেতো?কি সব বলছেন আপনি?আপনি আমাকে ভালোবাসেন?

নাহিদ ভাইঃ যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই তোমাকে পছন্দ করেছিলাম।তোমাকে বাঁচানোর জন্য সেদিন মুখের তালে এই রাতুলের নাম ব্যবহার করেছিলাম।আমি ভেবেছিলাম রাতুলের কোন মেয়ের প্রতি আগ্রহ নেই তাই তোমার কথা ওরে বললেও ওই কিছু করবেনা।আর আমি পরে তোমাকে আমার ভাল লাগার কথা জানাব।কিন্তু সেটাই আমার জীবনের চরম ভুল ছিল।এই রাতুল তোমাকে দেখেই তোমাকে বিয়ে করার কথা ভেবে নেয়।তখনও আমি সত্যিটা বলতে পারিনি তাই রাতুলের সবকিছু নিরবে সহ্য করতে হয়।কোন উপায় না পেয়ে রাতুলের ল্যাপটপে যখন তোমার আইডি থেকে লগ ইন দেখলাম তখন রাতুলের তোলা ছবিগুলোর কথা মনে হল।তাই ছবিগুলো আপলোড করি।ভেবেছিলাম এই কাজের পর তুমি রাগে কখনই ওরে বিয়ে করবেনা কিন্তু সেখানেও আমি ভুল ছিলাম।তোমাদের বিয়ের পর যখন দিয়াকে নিয়ে তোমার মনে সন্দেহ জাগল ভাবলাম দিয়াকে দিয়ে তোমাদের আলাদা করব কিন্তু না সেখানেও ব্যর্থ হলাম।এতকিছুর পরও আমি কিছুটা স্বঃস্তিতে ছিলাম আশায় ছিলাম কারন তোমার মাঝে সম্পর্ক নেই নেই এটা জানতাম।কিন্তু যখন জানলাম তুমি মা হতে যাচ্ছ তখন পায়ের নিচের মাটি সরে গেল।তোমাদের একত্রে দেখলে মরে যেতে ইচ্ছে করত তাই দূরে সরে থাকতাম।কিন্তু তোমাকে ছেড়ে আমার পক্ষে থাকা অসম্ভব ছিল তাই শেষ চেষ্টা করলাম তেল ফেলে বাচ্চা নষ্ট করার।প্রতিবারের মত ভাগ্য এখানেও আমাকে ধোঁকা দিল।শেষে রাতুলকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করেছি তবে এখন ভেবে দেখলাম রাতুলকে সরালেও কোন লাভ নেই সব জানার পর তুমি কখনও আমার হবেনা।আর না আমি পারব তোমাকে অন্য কারো সাথে সুখে থাকতে দেখতে।তাই এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতুলকে নয় আগে তোমাকে মারব পরে নিজে মরব।

(আমি কাদতে কাদতে বললাম)

আমিঃ আমি সবসময় আপনাকে ভাইয়ের চোখেই দেখেছি।এক মুহূর্তের জন্যেও আপনাকে নিয়ে আমার মনে অন্য কোন চিন্তা আসেনি।আর সেই আপনি আমাকে ভালবাসেন?আপনি যদি আমাকে ভালোই বাসতেন তবে কখনই আমার সন্তানকে মারতে পারতেন না। ভাইবোনের পবিত্র সম্পর্ককে আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।আপনার মনে যদি আমার জন্য ভালবাসাই ছিল তবে তা আমাকে প্রথমে বলতে পারতেন।রাতুলকে তো আমি তখন ভালই বাসতাম না হয়ত তখন অন্য কিছু হতেও পারত তবে এখন আমার জীবনের এক বড় অংশ জুড়ে রাতুলের বাস।আমাকে মেরে ফেললেই যদি সব সমাধান হয় নিন মেরে ফেলুন আমায়।

রাতুলঃ তুই একটাবার আমায় বলতি তুই নীলাকে ভালবাসস তবে আমি কখনই তোদের মাঝে আসতাম না।নিজের ভাইয়ের মত ভালবেসেছি তোকে তুই চাইলে নিজের জীবনটাও দিতে রাজী ছিলাম সেই আমাকে কেন তুই বললিনা তোর নীলাকে চাই?

নাহিদ ভাইঃ তখন ভেবেছিলাম মেনে নিতে পারব কিন্তু আমি এসব আর মেনে নিতে পারছিনা।তোর সাথে আর নীলাকে আমি কিছুতেই দেখতে পারবনা তাই নীলাকে মেরে নিজেও মরব তবেই শান্তি।
.
.আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।নাহিদ ভাই এমন কিছু ভাবতে পারে আমাকে নিয়ে তা আমার মাথাতেও কখনও আসেনি।আমার প্রতি তার ভালবাসাটা আমি বোনের প্রতি ভাইয়ের ভেবেই নিয়েছিলাম।যে নাহিদ ভাই আমার চোখে পানি দেখলে সহ্য করতে পারত না আজ সে বন্দুক ধরেছে আমার বুকে মেরে ফেলার জন্য।নাহিদ ভাই যেই গুলি করতে যাবে অমনি রাতুল আমায় টান দিল আর গুলিটা আমার হাতের মাংস ছিড়ে বেরিয়ে গেল।সাথে সাথে রাতুল তাকে গুলি করল আর আমার চোখের সামনে নাহিদ ভাইয়ের দেহটা পড়ে গেল।
.
.রাতুল দ্রুত আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এল।আমি একদিন ঠিকই শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে গেলাম তবে মনে একটা দাগ ঠিকই রয়ে গেল যা কোনদিন যাবেনা।নাহিদ ভাইকে খুনের অপরাধে রাতুলের চৌদ্দ বছরের জেল হল কিন্তু ক্ষমতার প্রয়োগ করে রাতুল আটবছর পড়েই বেরিয়ে গেল।
.
.তারপর নিহিতকে নিয়ে আমাদের নতুন পথ চলা শুরু হল।নতুনভাবে আমরা শুরু করলেও জীবনে এই ঘটনা আমরা কখনও ভুলতে পারব না।নাহিদ ভাইয়ের একটা ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের তিনজনের জীবনটা এলোমেলো করে দিল আর তাকে এই পৃথিবী ছাড়তে হল।সত্যি বলতে নাহিদ ভাইয়ের প্রতি আমার কোন রাগ বা অভিযোগ নেই বরং খুব কষ্ট লাগে তার জন্য।সে যদি তার মনের কথা প্রথমে প্রকাশ করতে পারত তবে আজ তার জীবনটা হয়ত অন্যরকম হত।আসলে সবই নিয়তির খেলা।এখানে মানুষের কিছুই করার থাকেনা।আল্লাহ্ যার ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন তাই হবে।।।
(সমাপ্ত)
.
.
[দুঃখিত! অসুস্থ থাকায় গল্পটা যেভাবে ভেবে শুরু করেছিলাম সেভাবে শেষ করতে পারিনি।আসলে আমার সুস্থ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে তাই এই গল্পটা দ্রুত শেষ করে দেয়া।সময় অপচয় করে এতদিন ধৈর্য ধরে গল্পটা পরার জন্য ধন্যবাদ।]

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ