সেদিন দেখা হয়েছিলো পর্ব-০৩

0
1304

#সেদিন দেখা হয়েছিলো❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ
#পর্ব- ৩

ভাবতে ভাবতে মাথাটা ব্যথা করছে। তাই ওখানে আর দেরী না করে বাড়ি চলে এলাম। রাতে বাড়ির ছাদে একা দাড়িয়ে আছি। মনটা খুব বেশী খারাপ লাগছে আজ। শুধু মাএ আমার জন্য শুভ্রর মেমোরি লস হয়েছে। সেদিন আমার উচিত হয়নি শুভ্রকে ওভাবে বলা। এগুলো ভাবতে ভাবতে অতীতে ডুব দিলাম,!

______অতীত______

নানুবাড়ি এসেছি আজকে প্রায় ১৫দিন। আজকে আর কিছুতেই আমি এ বাড়ি থাকবো না। তাই সকাল সকাল নিজের ব্যাগ প্যাক করে রেডি হয়ে বসে আছি। মামী আমাকে খাবার জন্য ডাকতে এসে। আমাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুঁচকে বললো,!

____কি ব্যাপার কোথায় যাবি?

বিছানা থেকে নেমে বললাম,!

____আমি আজকেই বাড়ি যাবো মামী। এখানে আমার আর ভাল লাগছে না। আর আমি চাই আজকে কেউ আমাকে বাধা দেবে না। যদি আজ কেউ আমাকে বাধা দাও। তাহলে আমি আর কোনদিন এই বাড়ি আসবো না,!

আমার কথা শুনে আর কেউ বাধা দিলো না। কারন সবাই জানে আমি যা বলি তাই করি। এরজন্য সবাই এটাও বলে আমি নাকি আমার বড় খালামনির মতো। কিন্তুু আফসোস এই বড় খালামনিকে আজ পর্যন্ত দেখলাম না। এখানে কেন আসেনা কেউ বলে না। অতঃপর ব্রেকফাস্ট করে আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে এলাম। ৪ঘন্টার পথ ৪ঘন্টা পর বাড়ি চলে এলাম। আহ এবার শান্তি লাগছে ভাইয়া আমাকে দেখে বললো,!

____কি রে এলি কেন?ওই বাড়িতেই থেকে যেতি,!

আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,!

____কেন তোর ভাল লাগছে না?

ভাইয়া মুখটা কালো করে বললো,!

____তোকে খুব মিস করেছি রে ব্লাক রোজ,!

আমি জানি ভাইয়া আমাকে অনেক ভালবাসে। এক দৌড়ে গিয়ে ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে বললাম,!

____তোকেও আমি খুব মিস করেছি ভাইয়া। ওরা আমাকে আসতে দেয়নি। আজও আসতে দিতে চায়নি, জোর করে এসেছি,!

ভাইয়া গাল ফুলিয়ে বললো,!

____আর কখনো একা যাবি না,!

এরমাঝে আম্মু এসে ভাইয়াকে বললো,!

____এই রোদ কার সাথে কথা বলছিস?

আম্মু এবার আমাকে দেখে বললো,!

____রোজ তুই কখন এলি?

ভেংচি কেটে বললাম, মাএ আম্মু,!

বলে হনহন করে রুমে চলে এলাম। কারন উনিই আমাকে নানুবাড়ি পাঠিয়েছিলো। ইস কতগুলো দিন কলেজ মিস গেলো। আজকেতো আর যেতে পারবো না। কালকে বরং কলেজে গিয়ে মিম আর রাহাতকে সারপ্রাইজ দেবো। এখন ঘুম পাচ্ছে খুব তাই ঘুমিয়ে পড়লাম,!

_______________________________________

পরেরদিন সকালে কলেজে চলে এলাম। আমাকে দেখে মিম দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। এরপর কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,!

____এলি তাহলে?জানিস কত মিস করেছি তোকে?

মিমকে কোনভাবে শান্ত করলাম। কিন্তুু রাহাত গাল ফুলিয়ে বললো,!

____না এলেই পারতি,!

কানে ধরে বললাম,!

____সরি দেখ আর এরকম হবে না। ওরা আসতে দেয়নি, নানুমনি, মামি কেউ না। প্লিজ তোরা রাগ করে থাকিস না প্লিজ,!

রাহাত আমার গাল টেনে বললো,!

____এবারের মতো সরি এক্সেপ্ট করলাম। বাট পরেরবার এমন হলে সরি এক্সেপ্ট করবো না, কি বলিস মিম?

মিমও তালে তাল মেলালো। ওদের বুঝিয়ে আমরা ক্লাসে চলে এলাম। রাহাত যেহেতু সিনিয়র ও ওর ক্লাসে গেলো। ক্লাস শেষ করে বাইরে এসে আমরা আড্ডা দিতে লাগলাম, হঠাৎ মিম বললো,!

____শুনলাম কালকে কলেজে শুভ্র চৌধুরী আসবে,!

আমি ভ্রু কুঁচকিয়ে বললাম,!

____কি করতে আসবে?

মিম আমার মাথায় ছোট থাপ্পর মেরে বললো,!

____তুই কি ভুলে গেলি?উনি এই কলেজের ওনার। এতদিন নাকি বিদেশ ছিলো,!

আসলেই আমি ভুলে গেছিলাম,!

কলেজে সেই কখন থেকে একা বসে আছি। আজকে ডিম বা রাহাত কারো খোজ নেই। ডিমই বলবো ডিম হয়ে নিশ্চয় খোয়ারে বসে আছে। কতক্ষণ পর দেখলাম ওনারা একসাথে আসছে। ওদের দেখে রাগে ফোস ফোস করে বললাম,!

____এতক্ষণে তোদের আসার সময় হলো?

ওরা দুজন একসাথে বললো,!

____তুই যে এতদিন ছিলি না?

ব্যাস হয়ে গেলাম কুপোকাত। চেয়ারে গিয়ে বসলাম একটুপর স্যার স্টেজে এসে বললো,!

____এখন স্টেজে আসবেন বিজনেসম্যান টাইকুন। এই কলেজের ওনার মিস্টার শুভ্র চৌধুরী,!

স্যার বলার একটুপরই স্টেজে উঠে এলো শুভ্র। শুভ্রকে দেখে আমি আর মিম হা করে তাকিয়ে আছি। আল্লাহ কি কিউট পোলা। তাকিয়ে দেখি সব মেয়েরাই চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে,!

____শুভ্র চৌধুরীকে মালা দিয়ে বরন করবে। আমাদের কলেজের ট্যালেন্টেড গার্ল নাবিলা আহমেদ রোজ,!

এবার আমি টাস্কি খেলাম। মানে আমি ওনাকে মালা পড়াবো?রাহাত আর মিম আমাকে ঠেলে স্টেজে পাঠিয়ে দিলো। এটাই ছিলো শুভ্রর সাথে আমার প্রথম দেখা। যার জন্য আজও মনে পড়ে হ্যা সেদিন দেখা হয়েছিলো,!

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে