#মেঘের_আড়ালে ২(ফিরে আসা)
#পর্ব_০৪
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা
আমিই মনে প্রথম মেয়ে যার জন্য, রোডের একপাশে তার বাবা দাঁড়ানো আর অপরপাশে প্রেমিক কি কপাল আমার। একজনের মুখে আমার জন্য এক গাল মিস্টি হাসিতো আর একজনের চোখ জোড়াতে নিজের জন্য রাগ স্পষ্ট, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো পুরো দুনিয়াতে আমাকে যদি কেউ নিসার্থ ভাবে পাগল এর মতো অতি ভালোবেসে থাকে,,, তাহলে তারা দুইজনই হবে তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই ।
.
.
আমার সামনে হঠাৎ নীল রঙ এর মিশুটা এসে থামায় ইয়াদ মাঝ পথেই টং এর দোকানেই থেমে গেলো। নিভ্রনীল চোখ জোড়াতে আমার জন্য রাগগুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে হাত মুঠো করে যা নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা আছে। হয়তো এই রাগগুলো আমাকে দেখাতে চাচ্ছে না আপাতত তাই।তার চোখে নিজের জন্য এতো রাগ দেখে আজ আর ভয় করছে না বরং ভালো লাগছে(দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে)।আমি তাকে রাগানোর জন্য কিছু বলিনি,,,, কথাগুলো আজ ইচ্ছে করেই বলেছি ইয়াদকে, হয়তো আমার কথা গুলো বলা তাকে খুব দরকার ছিলো। একসময় শত রাত জেগে ক্লাসে টপ বয়, ভালো রেজাল্ট এর জন্য, এতো পড়াশুনা করে কি লাভ হলো।যদি তাকে এখন এইসময় এসে এমন টং এর দোকানে ঘুরে বেড়াতে হবে। হয়তো তার এই অদ্ভুত পাগলামো গুলো নিতান্ত আমার জন্য করে বেড়াছে, কিন্তু আমি তো তা চাইনা,আমি চাইনা আমার জন্য তার ক্যারিয়ার নষ্ট হোক এইভাবে দিনের পর দিন কোনে এক টং এর দোকানে আড্ডায় বসে।
.
.
ভাবনার ছেদ পরলো আব্বুর হাতের ইশারাতে,,,,,,আব্বু হাতে দিয়ে ইশারা দিয়ে যাচ্ছেন মিশুর ভিতরে আসতে। আড়চোখে ইয়াদ এর দিকে একবার তাকিয়ে আমি আব্বুর পাশে মিশুতে উঠে বসলাম ।।।
.
.
ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আর পাশে আপির দিকে ভ্রু- যুগল কুঁচকে তাকিয়ে আছি। আচ্ছা প্রেমে পরলে অতি শান্তশিষ্ট স্বভাব এর মানুষগুলো ও কি এমন হুট করে চেঞ্জ হয়ে অশান্ত আর চঞ্চল হয়ে উঠে।কিজানি বাপু হয়তো হয়।।। কোনো সন্দেহ নেই,,প্রেম যে কাঠাঁলের আঠা লাগলেই ভড়ং কাউকে আর ছাড়েনা।তাইতো সব সময় আমার অতি চুপচাপ থাকা আপি তখন থেকেই হেসে হেসে মুখে লজ্জা আভাষ রেখে ফোনে এতো কথা বলে চলছে।
আপি এভার ফোন রেখে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। মুখে তার এক দুষ্ট হাসি,,,,
আমি আপির বিপরীতে বিরক্তি সুরে বলে উঠলাম,,,,,
কি হয়েছে সখিনার মা,,,এভাবে চিরল দাঁত এর এড দেখাচ্ছো কেন।।
কি হয়েছে এটাতো তুই আমাকে বলবি জরিনার মা,,,,ভ্রু নাচিয়ে।।। আমি যেতে না যেতে এতো কাহিনী রটে ও গেলো!! আর আমি টের ও পেলাম না।।
বলি,,,পাবা আর কি করে,,, যদি চ্রটগ্রামে গিয়ে বসে থাকো।।।আর কাহানী তো রটালো তোমার গুনোধর বলদ জামাই।।।
এই ইরফানকে কিছু বলবিনা।।।। বলে দিলাম।।
তো ঠিক কাকে বা কি বলবো।।। রেগে।।। তুমিই বলে দাও!!!
ইফরান কি আর জানতো তোর সাইকো আশিক দুইদিনেই গিটার এর মতো কঠিন কাজ শিখে উদ্ধার করে ফেলবো আমাদের।।।তাহলে তো আর সাধে বলতো না এমন কিছু বলতে।।।যাই হোক কি ট্রুউউউউ ভালোবাসা ভাবা যায় এইগুলা,,, আমার তো ছেলেটার জন্য চোখে পানি এসে পরলো,,,,, প্রিয়সি একবার বলল আর সে শিখে ও ফেললো, আমার তো মনে হয় ছেলেটা আসলেই তোকে ভালোবাসেরে নূর,,, তার ভালোবাসায় আর কোনো সন্দেহ নেই।।।নাহলে দুইটো বছর বিনাসার্থে তোর পিছে পরে থাকবে কেন,,শুধু দূর থেকে আড়ালে আবডালে দাঁড়িয়ে দেখার জন্য।। শত ইগনরে ‘ও’ তো,,, তোর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার ও করেনি আজ পর্যন্ত।।।বল।।।
জানিনা,,,দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে।।।
তুই এখন ঠিক কি করতে চাস!!!
এটাও জানিনা।।।
আচ্ছা তুইকি, বাই এনি চান্স সাইকো কে ভালোবেসে ফেলেছিস।।।সন্দেহ দৃষ্টিতে।।।
আপুউউউউউ।।।কাঁদোকাঁদো হয়ে।।।
আচ্ছা তোর এই সাইকোটার আশিক আবারার নাম কিরে,,,এসব ছাড়াতো এতোদিন তার কোনো নাম শুনলাম না তোর মুখ থেকে।।।আর দেখতে কেমন রে।আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাস করলো।।
তা জেনে তুমি কি করবা।।
আরে বলনা।।।
ইয়াদ।।। দেখতে অতো খারাপ না স্মার্ট আছে বটে,সব থেকে সৌন্দর্য হল তার নিভ্র চোখ জোড়া। এক সময় ২০১৬ তে টপার ছিলো কলেজের, কলেজে বোর্ডে এখনো তার নাম টপার লিস্টে উপরে আছে।।। কিন্ত এতো ভালো রেজাল্ট থাকলে কি হবে সে আবারা দের মতো ঘুরে বেড়ায়। সারাদিন খালি টইটই করে,,, আপুর দিকে তাকিয়ে,,,, কি ভাবছো,,,
হোয়াট এ কোয়েন্সিডেন্স,,, জানিস ইরফান এর ভাই এর নাম ও ইয়াদ(হেসে)।বাই এনি চান্স এই ইয়াদ আর সেই ইয়াদ যদি এক হয়,তাহলে কতো ভালো হবে বল, দুইবোন এক বাড়িতে যাব, কষ্ট করে আর দুই বাড়িতে থাকা লাগবেনা ।।। আর তুই জানলি কি করে সে টইটই করে, কিছু না জেনে কিছু বলা ঠিক না। ভ্রু কুঁচকে।।
আমি সবই জানি,,,তার ব্যাপারে নতুন করে আর কিছু জানা লাগবেনা।।। আর সপ্ন কম দেখো মেরি বেহেন।।তোমার ভাসুর মশায় একজন সম্মানিত ডিফেন্স অফিসার আর এই ইয়াদ একজন টং এর দোকানে হইহোল্লো করা মানুষ। তাই কষ্ট করে আকাশ কুসুম মিলানো চেষ্টা করো না।
আচ্ছা তোর কাছে কি, ইয়াদ এর কোনো ছবি আছে।।
হ্যা, আছে তো। আমি তো তার ছবি নিয়ে ঘুরে বেড়াই কি কথা,বার্তা তোমার।তোমার না কাল এনগেজমেন্ট যাও তার চিন্তা করো। বলেই হনহন করে ছাদ থেকে চলে গেলো নূর।
চলবে,,,