Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"মিসেস চৌধুরী পর্ব-১৫

মিসেস চৌধুরী পর্ব-১৫

#মিসেস_চৌধুরী
#Part_15
#Writer_NOVA

সন্ধ্যার আবছা আলো চারিদিকে ছরিয়ে পরছে।যদিও সন্ধ্যা হতে এখনো ঢের বাকি।আগ্রাহায়ন মাসের শেষ দিকে শীত তার প্রভাব ফেলাতে শুরু করে।হালকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে আশপাশ।যার কারণে মনে হচ্ছে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ফিহা অনিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে। অনি মুখে থাকা চুষনি দিয়ে খেলা করছে।টেবলেট আনিস চৌধুরীর সাথে আছে।আজ সারাটা দিন শ্বশুর ও মেয়ের সাথে সময় কাটিয়ে মনটা অনেক ফুরফুরে লাগছে ফিহার।আজ তো মনটা শান্ত আছে।কিন্তু গতকাল কিরকম ছটফট করছিলো।

ফিহাঃ কাল রিয়ানা আমার কেবিনে কি করছিলো?হঠাৎ করে ওর আগমণ আমার ঠিক মনে হলো না।কিছু তো একটা ঘাপলা ছিলো।আমার মন বলছে রিয়ানা আমার মেয়ের ক্ষতি করতে এসেছিলো।মেয়েটাকে আমি অপমান করেছিলাম।এত সহজে আমাকে ছেড়ে দিবে বলে মনে হয় না।নিশ্চয়ই এর বদলা ও নিয়েই ছারবে।আমাকে আরো সাবধানে থাকতে হবে।আমি থাকতে আমার মেয়ের কোন ক্ষতি হতে দিবো না। (অনিয়ার দিকে তাকিয়ে) চিন্তা করো না অনি মা-মণি। তোমার মা থাকতে কেউ তোমার ক্ষতি করাতো দূরে থাক তোমার চুলও কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।

ফ্লাসব্যাক……….

টেবলেট যখন দেখলো রিয়ানা ফিডারে থাকা দুধের সাথে কিছু একটা গোলালো।তখন এক মুহূর্ত দেরী না করে ছুট লাগালো হল রুমের দিকে।হল রুমে মিটিং শুরু করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এখন সবাই বক্তব্য দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

আবদুলঃ এখন আমাদের মাঝে বক্তব্য রাখবে আমাদের কোম্পানির নতুন ওনার মিসেস চৌধুরী। ছোট বউমা এবার তুমি কিছু বলো?

ফিহাঃ জ্বি, চাচা।কোম্পানিটা যেহেতু আমার তাই আমাকে তো অবশ্যই কিছু বলতে হবে।প্রথমে সবাইকে আমি সালাম জানাই।আসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন।আজকে আমাদের বক্তব্য হলো খুবাই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে। আর সেটা নিশ্চয়ই সবাই জানেন।তারপরও আমি—–

পরের কথাগুলো বলার আগেই টেবলেট ছুটে হল রুমে চলে এলো।এসে দিকপাশ না তাকিয়ে ফিহার শাড়ির আঁচল মুখে নিয়ে দরজার দিকে টানতে লাগলো।টেবলেটের এরকম কান্ড দেখে উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে গেলো।একজন ক্লায়েন্ট তো বলেই ফেললো।

—-কি এসব মিসেস চৌধুরী? এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং চলছে।আর এখানে কোথা থেকে এই কুকুর চলে এলো।মিটিং -এর মধ্যে এসব এলাউ না আপনি জানেন না মিসেস চৌধুরী??

আদিয়াতঃ কি রে আকশি, কি হয়েছে রে?হঠাৎ টেবলেট ফিহার আঁচল মুখে নিয়ে টানছে কেন?
আকশিঃ আমিও তো বুঝতে পারছি না। (নিচুস্বরে)

ফিহাঃ কি হয়েছে টেবলেট? তুই শাড়ির আঁচল টানছিস কেন?কি হয়েছে বল আমায়?

টেবলেটের চোখে পানি টলমল করছে।সে বার বার ফিহাকে আঁচল টেনে দরজার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। কিন্তু ফিহা বুঝতে পারছে না। কয়েকজন বিরক্ত হয়ে ফিহাকে বললো।

—দেখুন মিসেস চৌধুরী আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে কথা বলছি।এখন আপনার কুকুর যদি আমাদের ডিস্টার্ব করে তাহলে আমাদের কোটি কোটি টাকার টেন্ডার লস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।আপনি দয়া করে এটাকে বাইরে রেখে আসুন।

—-আমরা এখানো কোন লাইভ সো দেখতে আসিনি।অলরেডি আমাদের ১০ মিনিট দেরী হয়ে গেছে। এখন কি আপনি এই কুকুর বিদায় করে বিজনেসের কথা বলবেন।আপনার কোন কাজ না থাকতে পারে কিন্তু আমাদের এখনো বহু কাজ আছে।

—-এ কিরকম ওনার ভাই?উনি এখানে কুকুর নিয়ে তামাশা শুরু করে দিয়েছেন।এদিকে যে আমাদের মিটিংয়ে দেরী হয়ে যাচ্ছে সে খেয়াল নেই। আনিস সাহেব কার হাতে নিজের অফিস তুলে দিলো?যার কিনা সময়ের ব্যাপারে সামান্য কোমন সেন্স নেই।

—আনিস চৌধুরী বা কেমন মানুষ? এমন একটা মেয়ের হাতে পুরো কোম্পানির দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন।এতো বোকা মানুষ হয় নাকি।এখন তো আনিস চৌধুরীর ওপর আমার রাগ হচ্ছে।

নানাজন ফিহাকে নানা কটু কথা শুনাতে লাগলো।অন্যদিকে টেবলেট এসব তোয়াক্কা না করে ফিহার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। টেবলেটের চোখে হাজার আকুলতা।আকশির মাথা ইতিমধ্যে গরম হয়ে গেছে। ফিহা ও নিজের বাবার নামে এসব বাজে কথা সে মেনে নিতে পারছে না। ফিহার চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেছে। আকশি যখনি রেগে কিছু বলতে যাবে তখনি ফিহা সকলের উদ্দেশ্য চেঁচিয়ে উঠলো। ফিহার ধমকে সবাই টাসকি খেয়ে গেল।

ফিহাঃ এনাফ ইজ এনাফ।অনেক বাজে কথা শুনেছি আমি।আপনাদের যদি এতই সমস্যা হয় তাহলে আপনারা চলে যেতে পারেন।আমাদের কোম্পানিতে আপনাদের মতো ক্লায়েন্ট না থাকলেও চলবে।খবরদার আমার শ্বশুরকে নিয়ে যদি আরেকটা বাজে কথা বলেন তাহলে আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলবো না।আর টেবলেট ও আমার ব্যাপারে খারাপ মন্তব্যও আমি একসেপ্ট করবো না।আমার টেবলেট যথেষ্ট ভদ্র কুকুর। অন্য দশটা রাস্তার কুকুরের মতো নয়।(রেগে)
(একটু ভেবে) অনিয়ার কিছু হয়নি তো😳😳।

অনিয়ার কথা মনে হতেই দরজার দিকে দৌড় দিলো ফিহা। পিছনে পিছনে টেবলেট, আকশি,আদিয়াত ও আবদুল আজিজ সাহেব।ফিহার বুকের ভেতর দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। সামন্য জায়গাটুকু দৌড়ে মনে হচ্ছে অনন্ত কালের রাস্তা। শেষ হচ্ছে না।বুকের ভেতর ঢিপঢিপ শব্দ হচ্ছে। এই ভয়টাই সে পাচ্ছিলো।

🌿🌿🌿

অন্য দিকে রিয়ানা ঘুমের ঘোরে অনিকে ফিডার মুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু অনির পেট ভরা থাকায় ফিডারের চুষনি মুখে দিচ্ছে না।ঘুমের ঘোরে বারবার হাত দিয়ে ধাক্কা মেরে ফিডার সরিয়ে ফেলছে।

রিয়ানাঃ এই মেয়েটা ফিডার মুখে নিচ্ছে না কেন?কেউ এসে পরলে সমস্যা হয়ে যাবে।অথচ এই বিচ্ছু মেয়েটা চুষনি মুখে নিচ্ছে না।একটু মুখে দে নারে বেবি।এখন আমার ইচ্ছে করছে গলা টিপে ধরতে।ফাজিল মেয়ে কোথাকার?এসব বাচ্চা-কাচ্চা আমার এই জন্যই পছন্দ না।যত্তসব উটকো ঝামেলা।
(বিরক্তির সুরে)

বারবার চেষ্টা করছে রিয়ানা।কিন্তু অনি ফিডারের চুষনিতে মুখও লাগায়নি।সাধারণত বাচ্চাদের পেট ভরা থাকলে ঘুমের মধ্যেও মুখে কিছু দেয় না।জোর করে খাইয়ে দিতে গেল হাত ঝারা মেরে সেটা সরিয়ে দেয়।এখন অনিও ঠিক সেম কাজটা করছে।সবচেয়ে বড় কথা আল্লাহ মায়ের দোয়া কবুল করে নিয়েছে।ফিহা তখন মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিল যাতে ওর মেয়ের কোন ক্ষতি না হয়।আল্লাহ সেটা কবুল করে নিয়েছে। এখন হাজার চেষ্টা করেও ওর ক্ষতি কেউ করতে পারবে না।যেখানে অনির রক্ষক স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা।সেখানে সামান্য মানুষ ওর কি ক্ষতি করবে।রিয়ানা মুখ চেপে যেই অনির মুখে চুষনি
দিতে যাবে তখনি ফট করে দরজাটা খুলে যায়।রিয়ানার চোখ দুটো ভয়ে গোল গোল হয়ে গেছে।

ফিহাঃ কে তুমি এখানে কি করছো?আমার মেয়ের দোলনার সামনে কি করো তুমি? এদিকে ঘোরো তো।এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি?এদিকে ঘুরছো না কেন?আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি তোমাকে?আমার কথার উত্তর দিচ্ছো না কেন?

রিয়ানা উল্টো দিকে ঘুরে থাকার কারণে কেউ ওর মুখ দেখতে পারছে না।টেবলেট দৌড়ে রিয়ানার সামনে গিয়ে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো।রিয়ানা ভয়ে, আতংকে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো।হাতে থাকা ফিডারটা কি করবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে গেলো।

রিয়ানাঃ এখন কি করবো আমি?ফিডারটা কোথায় ফেলবো?আমার টেনশনে হাত পা ঘামছে।এখন ধরা পরে গেলে তো আমি শেষ। কি করি, কি করি?ই-উ-রে-কা পেয়ে গেছি।

আবদুলঃ এই মেয়ে কে তুমি?আমাদের অনি দিদিভাইয়ের সামনে কি করো?ওর কোন ক্ষতি করতে আসো নি তো।তোমাকে তো সুবিধার মনে হচ্ছে না।

ফিহাঃ সিকিউরিটি, সিকিউরিটি। এই গার্ডগুলো লোথায় গেলো?অচেনা, অজেনা মানুষ আমার কেবিনে কি করে ঢুকলো?(জোরে চেঁচিয়ে)

আবদুলঃ বউমা তুমি ব্যস্ত হয়ো না।আমি দেখছি ব্যাপারটা।(শান্ত কন্ঠে)

ফিহাঃ এই সিকিউরিটি কোথায় গেলো?কাজের সময় একটাকেও পাওয়া যায় না। সবাই কি অফিসে এসে ঘাস কাটে নাকি।(রেগে)

ওদের কথার ফাঁকে রিয়ানা হাতে থাকা ফিডারটাকে দোলনার নিচে ফেলে দিলো।তারপর পা দিয়ে ঠেলে ফিডারটা দোলনার কোণার দিকে পাঠিয়ে দিলো।এখন দুই হাতে আঙুল মোচরাতে লাগলো রিয়ানা।আবদুল আজিজ সাহেব বাইরে চলে গেল সিকিউরিটি ডাকতে।

রিয়ানাঃধরাতো পরে গেলাম। এবার কি বলবো?এই মেয়ে যা ডেঞ্জারাস।আমাকে কি না কি করে?ধূর, ভালো লাগে না।যত দোষ ঐ কুকুরটার।এটাকে একদিন পেলে আমি নিশ্চয়ই বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবো।শয়তান কুকুর।

ফিহা এগিয়ে এসে রিয়ানার কাঁধে হাত রেখে জোরে সামনের দিকে ঘুরালো।কিন্তু রিয়ানার মুখ নিচু করে রাখায় সামনের কাটা চুলগুলো দিয়ে মুখ ঢেকে আছে।ফিহা রিয়ানাকে না দেখে বললো।

ফিহাঃ কান দিয়ে কি বাতাস ঢুকে না।আমি কখন থেকে বলছি আমার দিকে তাকাতে।চুলগুলো সরাও।তোমার সাহস কি করে হয় এখানে আসার?কোন সাহসে তুমি আমার কেবিনে ঢুকছো?ডেম ইট।উত্তর দিচ্ছো না কেন?

আদিয়াতঃ এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম বড় নয়।এতো সিকিউরিটি গার্ড থাকতে তুমি অনুমতি না নিয়ে ভেতরে ঢুকেছো?

আকশিঃ এখন মুখের ভাষা কোথায় হারিয়ে গেছে। মাথা নিচু করে রেখেছো কেন?মুখ তোলো।কি জন্য এসেছো এখানে?বাচ্চাটার কোন ক্ষতি করতে আসো নি তো।

রিয়ানাঃ আশ্চর্য, কারো ব্যাপারে না জেনে এতগুলো কথা বলে ফেললেন।
ফিহাঃ মিস রিয়ানা আপনি??(অবাক হয়ে)
রিয়ানাঃ কেন আমি আসতে পারি না?

🌿🌿🌿

আকশি ও আদিয়াত ভ্রু কুঁচকে রিয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে। অবশ্য রিয়ানা ওদের ছদ্মবেশে থাকায় চিনে নি।আদিয়াত আকশির কানের সামনে মুখ নিয়ে নিচুস্বরে বললো

আদিয়াতঃ দোস্ত এই রিয়ানা চুরেল এখানে কি করে?

আকশিঃ এই মেয়ে মোটেও সুবিধার নয়।যেখানে যায় সেখানেই কোন না কোন ভেজাল করে থাকে।

ফিহাঃ আপনি এখানে কি করছেন?(রেগে)

রিয়ানাঃ হেই ইউ। কি ভাবো তুমি নিজেকে?দেশের প্রেসিডেন্ট নাকি?আমার যখন ইচ্ছে হবে তখনি এই অফিসে আসতে পারবো।কেন এসেছি তার কৈফিয়ত তোমাকে দিবো নাকি।এটা আমার আকশির অফিস।তাছারা আমার বাবার বন্ধুর অফিসে আমি যখন খুশি তখন আসবো।তোমার অনুমতি নিবো নাকি?(রেগে)
ফিহাঃ আগে আপনার বাবার বন্ধুর অফিস ছিলো।কিন্তু এখন আমার। তাই এই,অফিসে আসতে এবং আমার কেবিনে ঢুকতে হলে আপনাকে অবশ্যই আমার অনুমতি নিতে হবে।

রিয়ানাঃ যাস্ট শেট আপ।ইউ রাস্কেল।তোমার মতো একটা থার্ড ক্লাস মেয়ের থেকে এই রিয়ানা অনুমতি নিবে।কিভাবো তুমি নিজেকে?

দুই কদম এগিয়ে রিয়ানা হাত তুললো ফিহাকে চড় মারার জন্য। ফিহা চোখ বন্ধ করে ফেললো।কিন্তু কোন চড় মারার শব্দ পেলো না।ফিহা পিটপিট করে চোখ খুলে দেখলো ওর পেছন থেকে একটা হাত এসে রিয়ানার হাতটাকে মুচরে ধরে রেখেছে। ফিহাকে থাপ্পড়ের হাত থেকে বাঁচানোর মালিকটা কে সেটাতো আমরা সবাই জানি।আমাদের নায়ক আকশি😜।

রিয়ানাঃ তোমার সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার?রিয়ানার হাত ধরে অনেক ভূল করলে তুমি। তোমাদের সবাইকে আমি দেখে নিবো।আমি কাউকে ছারবো না।

রেগে গজগজ করতে করতে রিয়ানা বেরিয়ে গেলো।যদিও কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে সে এবার বেঁচে গেলো।বাইরে এসে একটা শয়তানি হাসি দিলো রিয়ানা।কারণ এতখন মিথ্যে রাগের ভান করে সে বেঁচে গেছে। মুচকি হাসতে হাসতে অফিস থেকে বেরিয়ে গেল।কিন্তু দোলনার নিচে দুধের ফিডারের কথা তিনি একবারে ভূলে গেছে। যেটা তার জন্য অনেক বড় বিপদ নিয়ে আসবে।

ফিহাঃ থ্যাংন্কস, বাঁচানোর জন্য।
আকশিঃ দিস ইজ মাই বিজনেস। আমার বউয়ের গায়ে কেউ হাত তুলবে আর তাকে আমি ছেড়ে দিবো নাকি।(বিরবির করে)
ফিহাঃ হোয়াট??কিছু বললেন নাকি?
আকশিঃ কিছু না। কিছু না।(আমতা আমতা করে)
আবদুলঃ কি হলো বউমা?রিয়ানাকে দেখলাম কেবিন থেকে বেরিয়ে যেতে।
ফিহাঃ কিছু হয়নি চাচা।চলুন মিটিংয়ে ফিরে যেতে হবে।টেবলেট কি খুঁজছিস তুই?

🌿🌿🌿

অনেক সময় ধরে টেবলেট নাক দিয়ে কিছু একটা শুঁকছে। সারা রুমে কি জানি খুঁজছে? কিন্তু সে খুঁজে পাচ্ছে না।সবাই বেরিয়ে গেলো।কিছু দূর গিয়ে ফিহা থেমে গেল।
আদিয়াতঃ কি হলো মিসেস চৌধুরী?
আকশিঃ আপনি থেমে গেলেন কেন?
আবদুলঃ মিটিংয়ে দেরী হয়ে যাচ্ছে। চলো বউমা।
ফিহাঃ আপনারা যেতে থাকেন আমি আসছি।

কথাটা বলে ফিহা উল্টো দিকে দৌড় দিয়ে নিজের কেবিনে ঢুকে গেল।অনির দোলনার সামনে গিয়ে ওর দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো।তারপর হুট করে কোলে তুলে নিয়ে টেবলেট কে ডাকতে লাগলো।

ফিহাঃ রিয়ানা নিশ্চয়ই আমার কলিজার টুকরো অনির কোন ক্ষতি করতে এসেছিলো।তবে আজ যদি টেবলেট না থাকতো তাহলে কোন দূর্ঘটনা ঘটে যেত।
কোন প্রমাণ না থাকায় আমি কিছু বলতেও পারলাম না।টেবলেট চল আমার সাথে। আজকের মিটিংয়ে তুই ও অনিয়া আমার সাথেই থাকবি।আজ থেকে তোরা দুজন আমার সাথে অলটাইম থাকবি।অনিয়াকে আমি আর এক মূহুর্তের জন্যও আমার চোখের আড়াল করবো না।

ফিহা ঘুমন্ত অনিয়াকে কোলে তুলে এবং টেবলেটকে সাথে নিয়ে হল রুমের দিকে হাঁটতে লাগলো।

আবদুলঃ বউমা দিদিভাই ও টেবলেটকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো তুমি?(অবাক হয়ে)

ফিহাঃ আমি ওদের নিয়েই মিটিং করবো।আমি আর কখনও এক মিনিটের জন্যও আমার মেয়েকে চোখের আড়াল হবো না।আমার বিশ্বাস আজ যদি ঠিক সময় আমরা না পৌঁছাতাম তাহলে অনির নিশ্চয়ই কোন ক্ষতি হয়ে যেত।আমি মা হয়ে আমার মেয়ের কোন ক্ষতি একসেপ্ট করতে পারবো না।

আবদুলঃ কিন্তু ক্লায়েন্টরা তো বাজে মন্তব্য করবে।

ফিহাঃ কে কি বললো আই ডোন্ট কেয়ার। আমি আমার কাজ করে যাবো।আমি নিশ্চয়ই আমার সন্তানের অমঙ্গল মেনে নিবো না।

আকশিঃ কিন্তু আপনার তো কষ্ট হবে।

ফিহাঃ আমার মেয়ে আমার সাথে থাকলে কোন কষ্ট হবে না।বরং আমি খুশি মনে কাজ করতে পারব।কিন্তু আমার মেয়ে আলাদা থাকলে আমার মনের অশান্তি বেড়েই যাবে।যাতে করে আমি কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারবো না।আর আমার মেয়ে যথেষ্ট ভদ্র ও শান্ত। আমাকে ছারা অন্য কাউকে বিরক্ত করবে না।তাই আপনারা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।

ফিহার কথা শুনে আবদুল সাহেবে,আকশি ও আদিয়াত মুগ্ধ চোখে ফিহার দিকে তাকিয়ে আছে। সত্যি পৃথিবীতে মায়ের থেকে বড় কেউ নেই।পুরো মিটিং অনিকে কোলে নিয়ে এবং টেবলেটকে পাশে নিয়ে কমপ্লিট করেছে ফিহা।

ফ্লাসব্যাক এন্ড…………

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। দূর মসজিদে মাগরিবের আজান হচ্ছে। গতকালের কথা ভাবতে ভাবতে এত দেরী হয়ে গেছে সেটা ফিহা বুঝতে পারে নি।হুশ ফিরে আসতেই জলদী করে ফিহা রুমে ঢুকে গেল।বারান্দার দরজা আটকে রুমের লাইট জ্বালালো।টেবলেটকে ডেকে অনির পাশে বসে খেলতে বললো ফিহা।অনি ও টেবলেট একটা ছোট বল নিয়ে খেলতে লাগলো।ফিহা ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে নামাজ পরার জন্য ওজু করতে ওয়াস রুমে ঢুকে পরলো।

#চলবে

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ