‘মডেল মিফতা’পর্ব : ৬

0
1704
‘মডেল মিফতা’পর্ব : ৬ গল্পবিলাসী – Nishe -‘আপনি কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাকে? ‘ -‘ চলো আগে ফ্রেশ হবে ভেজা ড্রেসে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে। ফ্রেশ হয়ে বলছি। ‘ -‘ না এখন বলবেন। আর নাহলে এখনি বাস ধরে আমি চলে যাবো।’ -‘ তাই? যাও না করছে কে? ‘ মিফতা এগিয়ে যেতে নিলেই হাতটা টেনে -‘ সুইটহার্ট ইটস নট ইউর বাংলাদেশ ওকে? ‘ -‘ বাংলাদেশ না মানে? কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাকে? ‘ -‘ এটা গোয়া। আমরা এখন সাউথ গোয়াতে আছি যেখানে বিয়ের পর মানুষরা হানিমুনে আসে ‘ -‘ ইন্ডিয়া? ‘ -‘ ইয়েস ইন্ডিয়া।মডেল মিফতা আপনি বাংলাদেশে এখানে না সো এখানে তাই হবে যা আমি চাই বলেই কোলে তুলে হাটতে লাগলাম। -‘আরে আরে আপনি’ -‘এবার কিন্তু সত্যিই ফেলে দিবো।’ সব কেমন স্বপ্ন মনেহচ্ছে। নিরব এতো নরমাল তাও আমার সাথে আনবিলিভএবল -‘ আপনাকে একটা চিমটি কাটি? ‘ -‘ হোয়াট? চিমটি কেনো? ‘ -‘ আমি এগুলো বিশ্বাস করতে পারছিনা মনেহচ্ছে প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে আছি ঘুম ভাঙলে ফুসসস। ‘ এবার উচ্চস্বরে হেসে উঠলো নিরব -‘ হাসছেন কেনো? কাটি? ‘ হাসতে হাসতে -‘তারমানে তুমি প্রতিদিন আমাকে নিয়ে নিয়ে স্বপ্ন দেখো? আমি তোমাকে কোলে নিয়ে ঘুরি আর কি কি দেখো শুনি? ‘ -‘ কতোকিছু।আমিতো এটাও দেখি রাতে যখন আমি ঘুমিয়ে থাকি আপনি কিরকম আমাকে আদ ‘ -‘ কি হলো থামলে কেনো? ‘ -‘ কিককিছুনা! বলেই মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছি ( সর্বনাশ! একি করতে যাচ্ছিলি মিফতা তুই?)। মিফতাকে কোলে নিয়েই হোটেলে ঢুকে পরলাম।মিফতাকে দুহাতে ধরে আছি হোটেলের ম্যানেজার আমাদের দেখে হাসছে আমিও ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কার্ড এগিয়ে দিতেই মিফতার দিকে তাকালাম মিফতা ঘুমিয়ে গেছে। আরে এক্ষনি তো চিমটি কাটতে চাইছিলো এক্ষনি ঘুম কেমনে সম্ভব?এখন কার্ডটা কিভাবে নিবো? ইচ্ছে করছে এখানেই ফেলে দেই মেয়েটা ঘুমানোর আর সময় পেলোনা। আমার অসহায় অবস্থা দেখে ম্যানেজার বলে উঠলো -‘স্যার চলুন আমি আপনাকে হেল্প করছি।’ লিফটে উঠে তাকিয়ে আছি মিফতার দিকে। ছোট ছোট চুলগুলো কপালে পরে আছে বড় চুলগুলো নিচে ঝুলছে। এই মেয়েটাকে আমি এতো কষ্ট দিলাম শুধু নিজের একটু ভূল ধারনার জন্য ভেবেই নিজের উপর রাগ হচ্ছে। ম্যানেজার আমাদের রুম পর্যন্ত এসে কার্ডটা পাঞ্চ করে দিয়েই চলে গেলো। এখন কি করবো? এই ভেজা ড্রেসেই ঘুমাবে? যদি ফিভার হয় তখন? মিফতা মিটমিট হাসছে এবার বুঝো মজা হঠাৎ মিফতার দিকে তাকিয়ে হাসছে -‘ তুমি ঘুমাওনি? ‘ -‘ ঘুঘমিয়েছিলাম তো এক্ষনি উঠলাম।’ -‘ লজ্জাবতী! আমি আপনার হাজব্যান্ড ওকে? আর আপনি আমার কোলেই চড়েছেন এখানে এতো ঢং করার কি আছে’?চিল্লিয়ে বলে উঠলো নিরব। ভয় কেঁপে উঠে মিফতা।কিছুক্ষন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে পা বাড়িয়ে দিলো ওয়াশরুমে। নিরব মোবাইল চার্জে দিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।রাগটাকে আজকাল কন্ট্রোল করা খুব কষ্টকর হয়ে উঠছে তারপক্ষে। গ্রামের মেয়ে সেতো এমনিই লাজুকলতা শহুরে মেয়েদের মতো এতো মর্ডান না যে এইসব নরমাললি ভাববে। এইভাবে রিয়েক্ট করাটা ঠিক হয়নি এইভাবে তো কোনো সলভ হবেনা বরং মিফতার মনটা বিষিয়ে যাবে বরং হিতে বিপরীত হবে । বেলকনির দরজার পাশেই ওদের ট্রলি ব্যাগের উপর চোখ আটকে যায় ব্যাগটা এখনো লক করাই আছে। মিফতা তো ড্রেস নেয়নি পা বারিয়ে রুমের কাছে আসে নিরব। ওয়াশরুমে আসতেই বুক ফেটে কান্না পেলো মিফতার । বরাবরই এই রাগারাগি জোড়ে কথা বলা ভিষন ভয় পায় সে। ব্যাথটেবে বসে আছে চুপচাপ। -‘ মিফতা!মিফতা! হলো তোমার? ড্রেস নাও। ‘ অপরপ্রান্ত থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ভয় পেয়ে যায় নিরব। -‘ মিফতা! আর ইউ ওকে? ‘ বারবার নক করে যাচ্ছে দরজায় তাই নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক রেখে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এসে -‘ আমার পাসপোর্ট দিন আমি বাড়ি যাবো। ‘ -‘আম সরি তোমার সাথে এভাবে রিয়েক্ট করা আমার মোটেও ঠিক হয়নি সরি।আর এমন হবেনা এই নাও ড্রেস ফ্রেশ হয়ে এসো মিফতাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে একরকম ধাক্কিয়ে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো নিরব। -‘ যাস্ট ফাইভ মিনিটস হারি আপ। ‘ -‘ শুনবো না কোনো কথা আপনার আমি।’ বলেই চেঁচিয়ে উঠলো মিফতা। -‘ শুনবো না কোনো কথা শুনতে পাচ্ছেন আপনি? কোন সাহসে নিয়ে এসেছেন আমাকে এখানে? আমাকে নিয়ে আসার কোনো রাইট নেই আপনার আমি এক্ষনি বাড়ি যাবো ‘ নিরব হাসতে হাসতে মিফতার কাছে এগিয়ে এলে -‘ একদম কাছে আসবেনা না। ‘ -‘ কি করবে আসলে? চেঁচাবে? চেচাঁও কেউ আসবেনা। আমি জানি আমি যে অপরাধ করেছি তা এতো ইজিলি কেউ আমাকে মাফ করবেনা আর তাইতো এখানে নিয়ে আসতে হলো। ‘ -‘ ওহ তারমানে এখন আপনার ইচ্ছে হয়েছে আমাকে কাছে পেতে। অবশ্য হবে নাইবা কেনো এখন তো আমার মিফতার কথার মধ্যেই -‘শাট আপ। যাস্ট শাট আপ। তোমাকে কোনো কথা বলতে বলিনি যাও চেঞ্জ করে আসো রাইট নাও। মিফতা ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো। -‘ প্লিজ মিফতা! শরীর খারাপ করবে যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। ‘ মিফতা কাপড় ফেলে বারান্দায় যেতে নিলে দরজায় দাড়ায় নিরব। সেখান থেকে ফিরে আসতে নিলে নিরব হাত টেনে -‘ মহারানী! করতে হবেনা আপনার চেঞ্জ বলেই হাত টেনে কাছে নিয়ে আমার বুকের সাথে মিফতার পিঠ ঠেকিয়ে দেয়ালে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। মিফতা ছুটে যাওয়ার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মিফতাকে শান্ত করতে ঘাড় থেকে চুলগুলো সরিয়ে ঠোঁটের আলতো ছোয়া দিতেই জমে গেলো মিফতা। ‘ নীল কুয়াশার কোনো এক রাতে যখন জোৎস্নারা ঝরে পড়বে দিঘির জলে। উড়ো হাওয়ায় একমুঠো ভালোবাসা দিও। চুপচাপ নিরবের বলা কবিতা শুনে যাচ্ছে মিফতা। কবিতার প্রতিটা শব্দ যেনো তাকে বলা হয়েছে। চাতক যেমন বৃষ্টির পানে চেয়ে কাটিয়ে দেয় পুরো বছর তেমনি হাজার প্রহর কাটিয়ে দিবে একটু ভালোবাসার জন্য। কিছুক্ষন থেমে থেকে নিরব আবারো বলতে শুরু করলো, আমিও তোমার চোখের কাজলে, কিছু অগোছালো কাগজে লিখে দেবো, ভালোবাসি। আমি তোমার কাছে হয়তো প্রস্ফুটিত পদ্ম কিংবা গোলাপ নই, তিক্ত নিমের পাতা। তোমার চক্ষুশূল। আমি অবহেলা, ডাস্টবিনের নোংরা কীট। নয়তোবা, অচেনা থেকেও অচেনা কেউ। হিজিবিজি, পাগলা, ভীন কিসিমের লোক। তারপরেও একদিন পরিচিত থেকে আরো পরিচিত হয়ে, হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারি। ভালো লাগা থেকেই কেবল ভালোবাসা হয় না। রাগ, ঘৃণা, অবহেলাও কখনো সখনো হয়ে ওঠে ভালোবাসা। ♥ মিফতা আমাদের ভালোবাসাটাও না হয় রাগ ঘৃণা থেকেই শুরু হোক মন্দ কি তাতে। মিফতা চুপচাপ হয়ে আছে। ভেজা কাপড়গুলো গায়েই শুকিয়ে গেছে। মিফতার কাধেঁ মুখ।বাবা, মা, দাদুমণি আর ছোট ফাহিমাকে নিয়েই আমার ফেমিলি। বাবা ছিলো আমার সবচেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড আমাকে বুঝতো আমার চাওয়া পাওয়া গুলো চাওয়ার আগেই দিয়ে দিতো।ফ্রি মাইন্ডেড ফেমিলি যেখানে বাবার এক্স গার্লফেন্ড্রের কাহিনীও আমাদের জানা দাদাভাই দাদুমণির প্রেমের গল্প সবকিছু। খুব হ্যাপি ফেমিলি ছিলো আমাদের।আমাদের ফেমিলি ট্যুর মানেই দেশেবিদেশে বেড়ানো। এসএসসি পরিক্ষার পর অবসর সময় পার করছিলাম। আমার ছোট চাচ্চু আমেরিকা থাকে তাই চাচ্চুর বাসায় চলে গেলাম। সেখানে পুরো দুইমাস ঘুরেফিরে কাটিয়েছি গ্রেন্ড ক্যানিয়ন, ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যান, ম্যানহাটন, নায়াগ্রা জলপ্রপাত কোনোটাই বাকি রাখিনি। হঠাৎ একদিন চাচ্চু বললো আজকেই সবাই বিডিতে যাচ্ছে। কিছুই বললাম না সব গুছিয়ে নিয়ে চলে এলাম। এসে যে এতো বড় একটা ধাক্কা খাবো কখনো ভাবিনি। আমার সবচেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ডটাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। বাবাকে কেউ মেরে ফেলেছে আমার সামনে শুইয়ে রেখেছে আমার বাবাকে। ‘ নিরবের কথা শুনে হা হয়ে আছি নিরবের দিকে তাকাতে খুব একটা জোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে কপালে থাকা চুলগুলোকে কানের নিচে গুঁজে দিয়ে আবারো বলতে শুরু করলো ‘খুব দুর দুর সম্পর্কের সব রিলেটিভসস এসেছিলো বাবাকে দেখতে কিন্তু আসেনি মেজো চাচ্চু। বাবা মায়ের বিয়ের দিন যে বেড়িয়ে গেছে বাড়ি থেকে আর আসেনি। কারন, আমার মায়ের বাড়ি ছিলো পাশের গলিতে। কোনোভাবেই হয়তো মাকে বিয়ের আগে দেখেছিলো চাচ্চু। মেজো চাচ্চুর আমার মাকে খুব পছন্দ করতো কিন্তু আমার মা ছিলো খুব ভিতু যার ফলে সে রিলেশনে জড়ায়নি চাচ্চু খুব পছন্দ করতো মাকে। একদিন হঠাৎ করেই দাদাভাই বাবাকে বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসে। সবাই মেনে নিলেও মেজো চাচ্চু মানতে পারেনি কারন তার ভালোবাসা ছিলো মা। সেদিন থেকে বাবাকে শত্রু মনে করে মেজো চাচ্চু। বেড়িয়ে যায় বাসা থেকে কোনো যোগাযোগ করেনি। বাবার মৃত্যূতে দাদুমণির সন্দেহ হয় চাচ্চুকে। কারন চাচ্চু নিজের চাওয়া পাওয়ার জন্য যা খুশি করতে পারে তাই দাদুমণির সন্দেহ হয়। লোকের মাধ্যমে তাকে খবর পাঠানো হয় কিন্তু আগে যেখানে থাকতেন তখন ওনি সেখান থেকে অন্য কোথায় চলে গিয়েছিলেন। তাই সন্দেহটা আরো বেশি হয়।ছোট চাচ্চুর কথায় দাদুমণি এইসব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিলো।এক্সিডেন্ট বলে চাপা দিয়ে দিলো পুরো ব্যাপারটা। স্বাভাবিক হয়ে গেলো সব। বাবাকে হারিয়ে মা, ফাহিম দাদুমণিকে নিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছিলাম।প্রায় ছয়মাস পর ইন্টারে ক্লাস করছি। মেজো চাচ্চু এলো। সে বললো লোকের মাধ্যমে বাবার মৃত্যূর কথা শুনেছে। মাকে বিয়ে করতে চায়। দাদুমণি তখন না করেনি মা না চাইলেও মাকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়ে বিয়েটা হয়। তখন আমার সন্দেহ আরো বেশি হয় ওনি নিজের ভালোবাসা পেতে বাবাকে খুন করে দিয়েছে। ওনি খুব দায়িত্ববান হয়েই ফেমিলি চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু আমার শুধু এইটাই মনে ঘুরতো ওনি আমার বাবার খুনি। সবসময় ওনি যা বলতো তার উল্টোটা করতাম।এইচএসসি কমপ্লিট করেই আমেরিকা চলে যাই। সেখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি চাচ্চুর বিজন্যাস দেখতে দেখতে বিজন্যাসের সবকিছুই খুব দ্রুত বুঝে গিয়েছিলাম তারপর চাচ্চুর অফিসেই বসতাম। চাচ্চু বাবার বিজন্যাসটাও দেখতেন। মায়ের চিল্লাচিল্লিতে দেশে এসে বাবার অফিস দেখছি। ওনি চাইছিলো আমি ওনার সাথে বিজন্যাস করি কিন্তু না আমি আমার বাবার বিজন্যাস নিয়েই ছিলাম।হাসিখুশি থাকা সেই ছেলেটা রাগী বদমেজাজি একরোখা টাইপের ছেলে হয়ে গেলাম। ধীরে ধীরে ফাহিম বড় হয়ে উঠে। ফাহিমা আমাকে অনেক বুঝিয়েছে যে বাবার মানে মেজো চাচ্চুর কোনো দোষ ছিলোনা বাবার মৃত্যূতে। কিন্তু আমি শুনিনি। এইগুলো নিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই তোমার সাথে বিয়ে ঠিক করে ফেলে ওনি। ওনাকেই আমি সহ্য করতে পারিনা তার ওপর ওনার পছন্দ করা মেয়ে ছিলে তুমি তাও গ্রামের। একটা গ্রামের মেয়ে কখনো আমার সাথে ম্যাচ করবেনা। মা কসম কেটেছিলো যদি তোমাকে বিয়ে না করি তাহলে মা মরে যাবে। তাই বাধ্য হয়েছিলাম তোমাকে বিয়ে করতে যাকে বিয়ে করেছি তার মুখটা পর্যন্ত দেখার প্রয়োজন মনে করিনি। কিছুতেই এক্সেপ্ট করতে পারছিলামনা তোমাকে। বিয়ের রাতেও অনেক বার ভেবেছি কিন্তু পারিনি আমি। অফিস নিয়েই কাটিয়ে দিলাম পুরো দু বছর। মাঝেমধ্যে ফাহিম আর মায়ের সাথে কথা হতো। কথার মধ্যে নাইন্টি পার্সেন্ট কথা ছিলো তোমাকে মেনে নেয়ার কথা তাই রাগারাগি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। কিন্তু সেদিন যখন বাড়ি গিয়েছিলাম তার কিছুদিন আগে আমার অফিসের কাজের চাপ অনেক কমে গিয়েছিলো যার ফলে বিকালে একটু ঘুরাফিরার সুযোগ হতো। তখন কিছু কাপলকে চোখে পরে। ওদের কনভার্সন গুলো শুনে কেমন যেনো ফিল হয়। নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনেহয়। মনটা ছটফট করছিলো তোমাকে দেখতে। কিছুতেই কাজে মন দিতে পারছিলাম না। মনে হয়েছিলো তুমিই আমার মনের অশান্ত ঝড়টা থামিয়ে দিতে পারবে।ছুটে গিয়েছিলাম তোমার কাছে। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো বারান্দায় দাড়িয়ে তোমার মায়ের সাথে তোমার কথাগুলো শুনে নিজেকে আরো বেশি অপরাধী মনে হয়েছিলো। ভেবেছিলাম ওনার জন্য অন্য একটা মেয়েকে কেনো শাস্তি দিবো মেনে নিবো তোমাকে। তোমাকে নিয়ে একটা সুখের সংসার গড়বো। কিন্তু সম্ভব হয়নি হঠাৎ করে তোমার এই অবস্থা হাত পা কেটে একাকার আর তখনই কানাডার প্রজেক্টটা আমার হাতে আসে পাগল হয়ে ছুটে ছিলাম প্রজেক্টটা পাওয়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার তখনই এলো যখন আমি তোমার সাথে সম্পর্ক ঠিক করতে গিয়েছিলাম তোমাকে ওই অবস্থায় রেখে ছুটে এসেছিলাম ওই প্রজেক্টটার জন্য। একটাই স্বপ্ন সেটা ছিলো আমার বাবার। ছোট চাচ্চু বলেছিল আমাকে, বাবার নাকি অনেক স্বপ্ন ছিল কানাডা প্রজেক্টটা নিয়ে তাই ছুটে গিয়েছিলাম বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে। পরদিন প্রজেক্ট পেলাম কিন্তু সেখানেই থাকতে হলো কিছু ইম্পরট্যান্ট কাজের জন্য কারণ কাজটা ছিল মেজো চাচ্চুকে নিয়ে। সেখানে গিয়ে আমাদের পরিচিতো এক চাচ্চুর সাথে দেখা হয়। তার থেকেই জানতে পারি চাচ্চু কানাডাতে ফেমিলি নিয়ে থাকতেন। তাই ওনার থেকেই চাচ্চুর সব ইনফরমেশন নিতে শুরু করলাম। বাবা মায়ের বিয়ের পর মেজো চাচ্চু নাকি কানাডায় ছিলো। খবর নিলাম তার সম্পর্কে। যেদিন বাবা মারা যায় সেদিন ওনি সুইজারল্যান্ড চলে গিয়েছিলো। চাচ্চু কানাডা থাকাকালীন অবস্তায় বাবা মায়ের বিয়ের উনিশ বছর পর বিয়ে করেন সুইজারল্যান্ডের এক মেয়েকে। বাবা যেদিন মারা যায় তাদের প্রথম সন্তান সেদিন পৃথিবীরে আসতে চলছে। চাচ্চী সুইজারল্যান্ড থেকে গেলেন।চাচ্চুও সেখানে চলে গেলেন মিরাক্কেলীয় ভাবে সেদিনই চাচ্চী এবং বাচ্চাটা মারা যায় থেকে যায় সেখানে। মেয়ে আর বউকে হারিয়ে একা হয়ে পরেছিলেন ওনি। প্রায় ছয়মাস পরেই বিডিতে ফিরে আসে। তারপর মাকে বিয়ে করে নেয় দাদুমণির কথায়। সেদিনই আমার ধারনা পাল্টে যায়। অনেক কষ্ট হয়েছিলো এই খবর গুলো বের করতে। প্ল্যান করলাম এবার এসেই মেজো চাচ্চুর কাছে ক্ষমা চেয়ে তোমাকে নিয়ে সবাইকে নিয়ে নতুন ভাবে সব শুরু করবো। বিডিতে আসতে আসতে প্রায় রাত বারোটা তাই নিজের ফ্ল্যাটেই যাই। আর টিভিতে তোমার টকশো দেখি তারপরের সবটা কাহিনী খুলে বললো মিফতাকে। মিফতা তাকিয়ে আছে নিরবের দিকে। মিফতার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে দেবী, সন্ধ্যায় ভেজা চুলে জানালায় চোখ রেখো। আমি একমুঠো ভালোবাসার রঙ মেখে তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে বলবো ভালোবাসি। ♥ চলবে,,,,,,,,,


( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।)
Facebook Id link ???
https://www.facebook.com/nishe.ratri.9809

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে