বড়_বেশি_ভালোবাসি part : 11

0
1775

বড়_বেশি_ভালোবাসি
part : 11
writer : Mohona

.

মেরিন সব ঠিকই শুনলো।
মেরিন মনে মনে : তারমানে সত্যি উনার জীবন কেউ আছে? ?। আমি উনাকে ভালোবেসে জীবনে আর কাউকে ভালোবাসলামনা… আর উনি… তারমানে উনি কখনো আমাকে ভালোইবাসেনি…. না বাসুক আমার বাপের কি? আমিও প্রেম করবো। পরকীয়ায় প্রধানমন্ত্রী হবো huh…
মেরিন খাওয়া অর্ধেক রেখেই উঠে গেলো।
দীদা: কি গো স্বতীন … উঠে গেলে যে….
মেরিন: আর খাবোনা দীদা….
নিহাল: কিছুই তো খেলেনা মামনি…
মেরিন : আর খাবোনা…
মেরিন রুমে চলে গেলো।

.

একটুপর…
নিশা: আসবো অাপুমনি….
মেরিন: আরে আপু যে । আসো আসো। তোমার আবার জিজ্ঞেস করতে হয়?
নিশা ঢুকলো।
নিশা: কেন জিজ্ঞেস করতে হবেনা কেন?
মেরিন: কারন না তো আমি কারো রুমে কখনো নক করে যাই আর না কেউ আমার রুমে নক করে আসে। ?।
নিশা: পাগলি… আচ্ছা তখন উঠে এলে যে…
মেরিন: এমনিতেই…
নিশা: আমাকে মিথ্যা বলবে….? তখন আমার কথাটা শুনে ফেলেছিলে তাইনা? বুঝি বুঝি… আমিও তো কারো স্ত্রী… আমি বুঝি …
মেরিন : মানে?
নিশা: মানে নিজের স্বামী অন্যকারো দিকে তাকালেও সহ্য হয়না। তারওপর নীড়….
মেরিন: !!!???
নিশা: আসলে নীড় ১টা মডেলের প্রেমে পরেছে। বেয়াদব ১টা মেয়ে। কি জাদু করেছে কে জানে… পরিবারের কেউ ওই মেয়েটাকে পছন্দ করেনি। কিন্তু নীড়… অনেক কষ্টে দাদুভাই emotional blackmail করে বিয়েতে রাজী করিয়েছে। সবাই মনে করেছে যে হয়তো তুমি এলে ও ভুলে যাবে ওই মেয়েটাকে। কিন্তু কেন যেন আমার হচ্ছে আজকে নীড় ওই মেয়েটার সাথেই দেখা করতে গিয়েছে।
মেরিন : ….
নিশা : থাক মন খারাপ করোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে। অনেক কথা বলে ফেললাম।আসছি।
নিশা চলে গেলো। মেরিনের কি করতে ইচ্ছা করছে সেটা ও নিজেই জানেনা।

.

ওদিকে নীড় full volume এ গান বাজিয়ে full speed এ গাড়ি চালাচ্ছে। সেই সাথে কোনো এক জায়গার cctv এর live telecast দেখছে। আর বাকা হাসছে। তখন ১টা call এলো। নীড় গাড়ি সাইড করলো। এরপর ফোন ধরলো।
নীড় : hello dear…
….
নীড়: কাজটা খুব ভালোভাবেই করেছো… lots of love …. উম্মাহ।

নীড়: আচ্ছা রাখছি…. এখন তোমার জানকে আমি শান্তি দিবো।
নীড় আবার drive করতে লাগলো।

.

রাত ১১টা…
নীড় বাসায় ফিরলো।

নিহাল: এটা কি বাসায় ফেরার সময় নীড়?
নীড়: কাজ ছিলো বাবা।
নিহাল: আমাকে কাজও দেখিও না আর ওকালতিও দেখিওনা… ২০বছর ধরে ওকালতি করেছি। ১০ বছর ধরে জজমেন্ট করছি। তাই আমাকে বাজে অজুহাত দিওনা।
নীড়: আরে…
নিহাল: আমার কথা শেষ হয়নি। উরা বন্ধ করো… বিয়ে হয়েছে। এবার। যাও রুমে যাও।
নীড় রুমে গেলো। গিয়ে দেখলো যে মেরিন রুমে নেই । উকি দিয়ে দেখলো যে মেরিন বারান্দায়।
নীড় :
???
চ্যান হো চ্যান হো
মেরে দিলকা…
সির্ফ তুম সি্ফ তুম সির্ফ তুম…
???

গাইতে গাইতে নীড় washroom এ গেলো। বেরিয়ে বারান্দায় গেলো। গিয়ে দেখলো যে মেরিন মুচকি মুচকি হাসছে আর ফোনে কথা বলছে। নীড় চুপচাপ মেরিনের সামনে গিয়ে বসলো। মেরিন যেন নীড়কে দেখেইনি। ও কথা বলতে ব্যাস্ত।
নীড়: কথা বলতে হলে যে কারো number dial করতে হয় সেটা বোধহয় the মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী ভুলে গেছে….?।
মেরিন মনে মনে: এইরে জানলো কি করে…
মেরিন : shut up…
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো। নীড় হাহা করে হাসতে লাগলো।

.

রুমে গিয়ে দেখে মেরিন শুয়ে পরেছে। হয়তো ঘুমও। অথচ মেরিন রুমে এসেছে
৫মিনিটও হয়নি….
নীড় : ৮ম আশ্চর্য।

.

একটু পর…
ঘুমের মধ্যে মেরিন বুঝতে পারলো ওর দম ছারতে কষ্ট হচ্ছে। চোখ মেলে দেখে যে নীড় ওকে kiss করছে।
মেরিন: আমম…
আমম… নীড়ের ছারার নাম নেই। মেরিন বাধ্য হয়ে নীড়ের ঠোটে কামড় দিলো। কিন্তু এতে কোনো লাভ তো দূরের কথা আরো ক্ষতি হলো।

.

একটুপর….
মেরিন: আপনার সমস্যা টা কি?
নীড় : তুমি।
মেরিন: মানে??।
নীড়: তুমি আমার বাসায় থাকছো খাচ্ছো ঘুমাচ্ছো অথচ আমি বাইরে থেকে এসেছি কোথায় একটু সেবা করবে। খাবার বেরে দিবে। খাইয়ে দিবে । তা না করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছো।
মেরিন: আমি মো…
নীড়: shut up… আমার কথা কি শেষ হয়েছে? তুমি জানো আমার কতো ক্ষুধা লেগেছে?
মেরিন: গিয়ে খাননা।
নীড়: কেন? বউ আছে কি করতে?
মেরিন: আমি আপনার বউ না।
নীড় : সেটা তো আমার মন জানে যে তুমি আমার বউ না। কিন্তু মস্তিষ্ক তো না।
মেরিন: মানে?
নীড়: তোমার মাথা ঢেড়শ মার্কা। মন থেকে তো আমি আমার মোহকে ভালোবাসি। ওকেই বউ মানি। but মস্তিষ্ক তো খালি লজিক খোজে। আর logically , legally তো unfortunately তুমি আমার বউ… ওই হারামজাদাকে কিভাবে বোঝাবো?
মেরিনের ইচ্ছা করছে নীড়ের মাথার সব চুল ছিরতে। যেই ভাবা সেই কাজ।
মেরিন নীড়ের চুল টানতে দিয়ে
বলল: ওই এই রাত দুপুরে আমার ঘুম নষ্ট করে এই ফালতু পেচাল বন্ধ না করলে তোরে আমি ঠাকমারঝুলির টেকো বউ করে দিবো… শালি কেশবতী ছোটবউ….
মেরিনের চুলটানে নীড়ের চুল তো চুল মনে হচ্ছে নীড়ের কল্লাটাই শরীর থেকে খুলে আসবে। মেরিন যে এমন তরো হামলা করবে তা নীড় বুঝতেই পারেনি।

.

নীড় কোনোরকমে নিজেকে ছারিয়ে হালকা করে মেরিনের চুল হালকা করে ধরলো।
নীড়: দেবো টান…
মেরিন: আ.?…
মেরিন চিল্লানো complete করতে পারলোনা। তার আগেই নীড় মেরিনের মুখে chocolate ঢুকিয়ে দিলো।
নীড়: এতো চিল্লাও কেন? ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। যদি ৫মিনিটের মধ্যে খাবার না দাও তাহলে এক্ষন তোমাকে খেয়ে ফেলবো।
নীড় এতো কিছু বলল মেরিন তার কিছুই শুনতে পায়নি। কারন ও chocolate খেতে ব্যাস্ত ছিলো।
মেরিন: yummy…?..
এখন নীড়ের ইচ্ছা করছে নিজেরই চুল ছিরতে…
নীড় : ওই…
মেরিন : কি?
নীড়: চুপচাপ ৫ মিনিটের মধ্যে আমার খাবার serve করো। না হলে আমি তোমাকে খাবো।
মেরিন: পারবোনা… আমি ঘুমাবো।
নীড় : তুমি যাবে না আমি তোমাকে খাবো। go fast….
মেরিন গেলো। খাবার বারলো। নীড় দেখলো যে মাংস জমে গেছে। তাই দেখে বুঝলো যে বাকী খাবারগুলোও ঠান্ডা। যার মানে খাবার গুলো ফ্রিজ থেকে বের করা হয়েছে।
নীড়: তোমার কি মনে হয় যে আমি এই খাবারগুলো খাবো?
মেরিন : কেন খাবেননা কেন? অনেক মজা হয়েছে।
নীড়: মজা না?
মেরিন: হামম। ?।
খান,,
নীড় : চুপচাপ খাবার গরম করে আনো…
মেরিন: কি বললেন আপনি? আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।
আপনি আমাকে , মেরিন বন্যা খানকে খাবার গরম করতে বলছেন?
নীড় : হামম। বলছি। ভাললোভাবে বলছি। তাই ভাললোমতো কাজ করো। তা না হলে কপালে মহামারী আছে। আর তাছারাও তুমি এখন মেরিন বন্যা খান নও। মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী…
মেরিন : যা পারেন করেন…
নীড়: romance করবো কিন্তু…
মেরিন: করেন…
নীড়: ভেবে বলছো…?..
মেরিন মনে মনে : একে দিয়ে বিশ্বাস নেই… গরম করে দে মেরিন…. কিন্তু কিভাবে করবো? ?
মেরিন খাবার নিয়ে গেলো ।

.

চুলা কিভাবে জালাবে। আগুনে মেরিনের অনেক ভয়।
মেরিন : কি করি করি….
১০হাত দূর থেকে গ্যাস অন করতে যাচ্ছে ভয়ে ভয়ে। যা দেখে নীড় হেসে গরাগরি খাচ্ছে।
মেরিন : আপনি কি কোনো সারকাসে এসেছেন যে এতো হাসছেন?
নীড় : তুমি নিজেই তো ১টা জীবন্ত চলন্ত সারকাস। ?।
মেরিন নীড় ১০১টা বকা দিয়ে খাবারগুলো ওভেনে ঢোকালো। এরপর বের করলো। ধাপধুপ করে টেবিলে রেখে চলে যেতে নিলে নীড় টেনে কোলে বসালো।
মেরিন: ছারুন আমাকে….
নীড়: পারবোনা।
মেরিন: ধুর ঘুমের জ্বালায় তাকাতে পারছিনা।
নীড়: তোমার কি মনে হয়যে গুতাগুতি করে উঠতে পারবে?
মেরিন চুপ করে রইলো।
নীড় : শোনে।
মেরিন: কি?
নীড় : খেয়েছো?
মেরিন : হ্যা।
নীড় : কেমন বউগো তুমি… যে বর খাওয়ার আগেই খেয়ে ফেললা।
মেরিন : আমি কি আর তেমন আদিম ডাইনোসর মার্কা বউ যে জামাই তাও আবার আপনার মতো জামাইর জন্য না খেয়ে বসে থাকবো….
নীড় : ? ভালো করেছো। এখন আমাকে খাইয়ে দাও…
মেরিন : কার দুঃখে?
নীড়: আমার দুঃখে।
মেরিন : আপনার মোহ পাখির কাছে।
নীড়: হামম। তার কাছেই তো ছিলাম। breakfast & lunch ২টাই ওর নরম হাতে করেছি।
মেরিন : ডিনার বাকী রাখলেন কেন?
নীড় : ভাবলাম মোহ পাখিকে কতো খাটাবো। তুমি আছো কি করতে আমার বউউউ…. দেখি
খাইয়ে দাও।
মেরিন : পারবোনা।
নীড় :হামম।
বলেই নীড় মেরিনকে সুরিসুরি দিতে লাগলো। আর তাতে মেরিন সাপ, ব্যাঙ, কাঙ্গারু , খরগোশ সবকিছুর মতো লাফাতে লাগলো।
মেরিন : please please থামুন… হাহাহা।। আম্মু… হাহাহা।
নীড় :খাইয়ে দিবে বলো…
মেরিন: হাহাহা…. দিবোহ…
নীড় : good বউ।
মেরিন নীড়কে খাইয়ে দিতে লাগলো…. নীড় খাবারের থেকে বেশি মেরিনের হাত খেতে লাগলো।

.

একটুপর….
নীড় মনের সুখে গত ৩দিনের মতো মেরিনের তিলটাকে ধরেছে।
মেরিন: আপনি আমার তিলটাকে কি মনে করেন বলবেন?
নীড় : আমার সম্পত্তি।

.

১০দিনপর…
বিকালে…
মেরিন মনের সুখে ঘুড়ি উরাচ্ছে । তখন call এলো। মেরিন ২৫বস্তা রাগ নিয়ে ধরলো।
মেরিন: hello.. ?…
ওপাশ থেকে : hello…. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী বলছেন…
মেরিন: হামম।??।
ওপাশ থেকে : ম্যাম আমি রুহুল…
মেরিন : তাতে আমার বাপের কি?
রুহুল :!!! ম্যাম আমি আপনাকে hire করতে চাই।
মেরিন : কাকে খুন করতে? দেখুন আমি খুন টুন করতে পারিনা। পারলে আমার জামাইটারেই কবে করতাম।
রুহুল: না না ম্যাম খুন না। আমি আপনাকে ১টা case লড়ার জন্য hire করতে চাই।
মেরিন : ভালো কথা । তাহলে কোনো lawyer hire করুন। আমাকে ফোন করলেন কেন?
রুহুল : ম্যাম আপনিও তো ১জন lawyer…?…
মেরিন: ও হ্যা তাইতো। মনে পরেছে। এখন বলেন তো বলেন কি নাটক…
রুহুল : ম্যাম দেখা করে কথা বলতে চাই?
মেরিন: কেন আমি কি কোনো filmstar….
রুহুল: না মানে ম্যাম…
মেরিন :বলে ফেলেন।
রুহুল বলল।
মেরিন : আচ্ছা লরবো। ?।
রুহুল: ম্যাম টাকা পয়সা….? কতো নিবেন?
মেরিন : টাকা লাগবেনা। তার বদলে chocolate দিবেন। ২৫কেজির বেশি। dairy milk, kitkat, flake , galaxy ,,, dark chocolate ,, chocolate গুলো। snicker ভুলেও দিবেন না। আর কোনো chocolate এ যদি বাদাম থাকে আপনার আমি বাদাম গাছে উল্টা লটকাবো। got it….
লোকটা আর কি বলবে…. অজ্ঞান হয়ে গেলো।

.

রাতে…
নীড় এলো। দেখলো মেরিন ব্যাগ গোছাচ্ছে। ভিডিও কলে মেঘের instruction অনুযায়ী। ব্যাগ ভরা শেষ।
নীড় : আপনি কি যুদ্ধে যাচ্ছেন ম্যাম? মেরিন : হ্যা। সমস্যা? নীড় : তো আপনার টিম কে জেতাতে যাচ্ছেন না হারাতে?
মেরিন: mind your own business ….
নীড় : হামম।
শুনলাম কেউ নাকি হাতে ১টা case পেয়েছে।
মেরিন : হ্যা তো…
নীড় :আহারে….
মেরিন: আহারে বললেন কেন?
নীড়: ওই লোকটার জন্য। ? বেচারার কপালে যে কি আছে?
মেরিন : ওই লোকটার future টা ব্রাইট…
নীড়: good jokes ..
মেরিন : আপনার কথার মানে টা কি সন্দেহ যে আমি জিত তে পারবো কি পারবোনা….
নীড় : জিত? সেটা তো দূরের কথা। আগে investigate তো আগে করো। দেখা যাবে case শেষ হতেহতে বেচারাই শেষ… হাহাহাহা…
মেরিন রেগে মেগে দিলো নীড়ের হাতে কামড়।

.

পরদিন…
নীড়ের ১টা জরুরী কাজ থাকায় নীড় ভোরে দিকেই চলে যায়। বেলা ১০টা বাজে। মেরিনের ফোনটা ট্যা ট্যা করে উঠলো। ৩৫বার বাজার পর মেরিন ঘুমঘুম চোখে ফোন ধরলো। আর ধরে যা বুঝতে পারলো যে এটা রুহুল। যার সাথে ওর সাড়ে ১০টায় মিটিং ছিলো। আর case investigation আর এখন ১২টা। মেরিন দিলো ১টা চিল্লানি। কোনরকমে fixed জায়গায় গেলো। আর গিয়ে দেখলো….

.

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে