বর্ষন ছোঁয়ায় মিষ্টি রোদ পর্ব-৭+৮

0
1144

#বর্ষন_ছোঁয়ায়_মিষ্টি_রোদ💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
পর্ব-০৭
ছোঁয়া আর মিষ্টি বাসায় চলে আসে।
ছোঁয়া বাসায় এসে গোসল করে পড়তে বসে।
বর্ষন এর পড়া করতে হবে।
নাহলে মাইর একটাও মাটিয়ে পরবে না।
সব পিঠে।
ছোঁয়া পড়া শেষ করে খেয়ে নেয়।
খেয়ে ভিশন ঘুম পাচ্ছে।
–উফ এখনি ত চলে আসবে ভাইয়া কিন্তু আমার যে ভিশন ঘুম আসতেছে।
নাহ একটু ঘুমাই আসলে উঠবো।
ছোঁয়া বিছনার এক পাশে শুয়ে পরে।
কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুম চলে আসে ছোঁয়ার।
★★
কারোর আলতো স্পর্শ গালে পরতে চোখ টা হালকা খোলার চেষ্টা করে ছোঁয়া।
কিন্তু ঘুম এতোই যে চোখ খুলার উপক্রম নাই।
–ছোঁয়া।
–হুম।। —
–উঠো।
–হুম।
–কি হুম উঠো ছোঁয়া।
–একটু পরে না মাত্র ঘুমালাম।
–পড়তে হবে না ছোঁয়া।
–হুম একটু পরে।
–ছোঁয়া (রেগে চিল্লিয়ে)
বর্ষন এর চিল্লানো শুনে ছোঁয়া লাফ দিয়ে উঠলো,
–হ্যাঁ চোর কোথায় কোথায় চোর।।
ছোঁয়ার কথায় বর্ষন এর মুখের ভঙ্গি কিছুটা (কেয়া লাড়কি হে ইয়ার 🤦‍♂️)
–চোর নাই উঠো পড়তে হবে।
–আপনি কখন এলেন বর্ষন।
–একটু আগে উঠো এবার।
–চোর এসেছে না।
–ছোঁয়া (দাঁতে দাঁত চেপে)
–না যাচ্ছি সরি।
ছোঁয়া উঠে ফ্রেশ হতে যায়।
আর বর্ষন হেঁসে দেয়।
–পাগলি এটা
ছোঁয়া এসে পড়তে বসে।
মন দিয়ে পড়া করে।
বর্ষন আর যাই হোক পড়ালেখা নিয়ে ভিশন স্ট্রেট।
সব সময় চায় ছোঁয়া সব কিছুতে ভালো থাকুক।
পড়া শেষে।
–ছোঁয়া । –
–জি।
–চলো ঘুরতে যাই।
–কোথায়?
–নৌকায়।
–নৌকা ভ্রমণ (খুশি হয়ে)
–মজা হবে চলেন যাই।
–হুম যাবো।
–কবে যাবো?
–আজি।। —
–আজি ও মা কি মজা রে।
–হুম মিষ্টি ও জাবে।
—-আচ্ছা সমস্যা নাই মিষ্টি খুব মিষ্টি।
–বাবা এক দিনে বন্ধু হয়ে গেলা।
–হুম ও কুব মিষ্টি
–আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি তালে আসি।। –
–মাকে বলবেন না?
–হুম আম্মুকে বলেছি আগেই।
তুমি রেডি হয়ে থেকো।
–কি পরবো বলেন ত?
–শাড়ি পরবে আজ।
–শাড়ি।
অনেক প্যারা।
–আচ্ছা তোমার যা ইচ্ছে তাই পরো।
–আচ্ছা ওকে।
দুপুরে খাবার খেয়ে ছোঁয়া তার মায়ের রুমে চলে গেল।
–মা।
–কি হয়েছে মা।
–আমায় একটা সুন্দর শাড়ি দিবা।
–কেন?
–পরবো।
–শাড়ি পরবি?
–হুম।
–কেন?
–নৌকায় উঠবো না ছবি তুলবো।
–আচ্ছা আয় দেখি কি শাড়ি পড়ানো যায় আমার মেয়েটাকে।
–দাঁড়াও মা তার আগে একটা কাজ আছে।
ছোঁয়া মিষ্টিকে ফোন করে,
–হ্যালো মিষ্টি।
–হ্যাঁ ছোঁয়া বল।
–মিষ্টি আজ শাড়ি পর প্লিজ।
–শাড়ি।
–হ্যাঁ।। –
–আচ্ছা ফুপিকে বলি।
–আচ্ছা শুন।
–কি।
–বর্ষন ভাইয়াকে বলিস না।
–আচ্ছা।
,
,
বিকালে,
ছোঁয়া একটা সাদা রঙের শাড়ি পরেছে।
হাতে সাদা রেসমি চুড়ি।
চুল গুলো মাঝ সিতি করে ছেড়ে দেওয়া।
কপালে সাদা টিকলি।
ছোঁয়া অপেক্ষা করছে বর্ষন আর মিষ্টির।
ওদিকে,
–মিষ্টি বের হ বোন।
–আসছি বর্ষন ভাইয়া।
মিষ্টি বের হয়।
মিষ্টি একটা লাল রঙের শাড়ি পরেছে
হাতে লাল চুড়ি।
কপালে টিকলি।
দুজনের সাজ প্রায় এক কিন্তু খালি শাড়ির কালার আলাদা।
–কিরে মিষ্টি মিঠাই তুই যে শাড়িতে?
–আরে দাদা নৌকায় যাবো শাড়ি না পরলে হয়।
–আচ্ছা তাই নাকি।
–হ্যাঁ এখন চলো।
বর্ষন মিষ্টি বেরিয়ে আসে।
ছোঁয়াদের বাসায় এসে মিষ্টি ভেরতে যায়৷
ছোঁয়া কে দখে মিষ্টি ভিশন খুশি হয়।
–মস আল্লাহ কারোর নজর না লাগে।
–আল্লাহ তোরও বেব।। –
–চল বর্ষন ভাইয়া নিচে।
আন্টি আসি।
–আচ্ছা এসো৷।
বর্ষন গাড়িতে বসে আছে।
গ্লাস টা নামাতে দেখতে পেল একটা সাদা পরি।
ছোঁয়াকে দেখে বর্ষন এর দুনিয়াটা হটাৎ করে থমকে গেল।
নিরব হয়ে গেল সব কিছু।
আসমানের হুর
এটা ত বর্ষন এর পরি।
বর্ষন চোখ সরাতে পারছে না।
কিভাবে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
ছোঁয়া গিয়ে সামনে বসে বর্ষন এর পাশে
ছোঁয়া বর্ষন কে তাকিয়ে থাকতে দেখে তুড়ি বাজায়,
–কি হলো?
এবার বর্ষন এর ধ্যান আসে,
–কিছু না।
–একটু বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে নাকি আমায়।
–মোটেই না ডাইনি।
–কি।
বর্ষন হেসে গাড়ি চালাতে শুরু করলো।
কিছু সময় পর তারা নদীর কাছে পৌঁছে যায়।
ছোঁয়া আর মিষ্টি নামে।
বর্ষন তাদের পেছন পেছন আসে।
সেখানে এসে হটাৎ রোদের আগমন।
রোদ দুর থেকে মিষ্টি কে দেখে এগিয়ে আসে।
মিষ্টিকে দেখে রোদের হৃৎস্পন্দনের গতি কেমন বেড়ে গেছে।
মেয়েটাকে চজ বড্ড বেশি মিষ্টি লাগছে।
–আরে ছোঁয়া তোমরা এখানে।
ছোঁয়া রোদ কে দেখে হাসি মুখে উত্তর দিলো,
–নৌকা ভ্রমণে এসেছি।
–বাহ ভালোই ত আমরাও এসেছি ঘুরতে।
আমি আর আমার একটা বন্ধু এসেছিলাম বাট ওর মাত্র একটা কজ পরে গেছে ও চলে গেছে।
–ওহ,
–তুমি আমাদের সাথে জয়েন হতে পারো (বর্ষন)
বর্ষন এর কথা শুনে ছোঁয়া যেন আকাশ থেকে পরলো।
বর্ষন রোদ কে থাকতে বলছে বিশ্বাস করার মত নয়।
–স্যার আপনিও আছেন দেখি।
–হ্যা ওদের একা একা কি করে ছাড়বো।
–স্যার আপনি যখন অনুমতি দিলেন তখন বিকাল টা আপনাদের নামেই করি।
(মিষ্টির দিকে তাকিয়ে বলল রোদ)
চলবে,

#বর্ষন_ছোঁয়ায়_মিষ্টি_রোদ💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
পর্ব-০৮
একটদ নৌকা বর্ষন আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিল।
সেই নৌকাতে সবাই উঠে পরে।
ছোঁয়ার সাথে কিছু ছবি তুলে নেয় বর্ষন৷
আর এদিকে মিষ্টির ছবি তুলে দিতে বলে রোদকে,
রোদ মিষ্টির ছবি তুলে দিচ্ছে,
বর্ষন ছোঁয়ার খুব কাছে এসে দাঁড়ায়,
–তুমি যে বলেছিলে শাড়ি পরবে না তাহলে
–মুখে যা বলা হয় তা কি সব সময় করতে হয় নাকি।
–তোমায় আজ ভিশন সুন্দর দেখাচ্ছে।
–প্রেমিকের চোখে প্রেমিকাকে ভালো লাগাটা সাধারণ নয় কি।
বর্ষন হেসে বলল,
–তুমি যে শুধু প্রেমিকা নউ তা কি জানো বউ।
–এখনো হয়ে পারলাম না।
–খুব জলদি।
–আচ্ছা।
–ছোঁয়া ছবি তুললে আসো ছবি তুলে দিচ্ছি।
ছোঁয়া এগিয়ে গেল।
বিকাল টা সত্যি খুব মজায় কাটলো।
নৌকা থেকে নেমে বর্ষন দু’জন কে ফুচকা ও আইসক্রিম ট্রিট দিলো।
পরে বাসয় নিয়ে এলো,
ছোঁয়া বাসার কাজ করে শুয়ে পরে।
ছোঁয়ার ফোনে হটাৎ ম্যাসেজ,
–কি করে আমার বউ?
ছোঁয়া ভিশন অবাক হয় ছেলেটা যে এতো রোমান্টিক তা জানা ছিল না ছোঁয়ার।
–শুয়ে পরছে ঘুমাবে।
–আচ্ছা আমার সাথে না কথা বলে।
–হ্যাঁ ঘুমাই যেত ত।
–কি বললে।
–ইয়ে মানে কি করেন?
–কিছু না তোমার কথা ভাবছি দেখো কি সুন্দর ছবি।
ছোঁয়া আর বর্ষন এর ছবি দেয় বর্ষন ছোঁয়াকে।
ছোঁয়া ছবি গুলো দেখে।
সামনে একটা সোনালী ভবিষ্যৎ খুঁজে পায়।
বর্ষনের মধ্যে।
ছোঁয়া হাসে।
–খুব মিষ্টি দেখাচ্ছে না ছবি গুলো (বর্ষন)
–হুম আপনায় আমার পাশে থাকার জন্য একটু বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে।
–বাহ কি প্রেম তাই না।
–হুম।
একটা কথা বলি।
–হুম বলো।
–রাগ করবেন না তো।
–না রাগ করবো না বলো।
–সত্যি রাগ করবেন না তো।
–আরে বাবা রাগ করবো কেন?
–ভালুপাসি।
বর্ষন হেসে দিলো।
ফোনের মাঝেই ছোঁয়ার গালে চুমু একে দিতে মন চাইছে বর্ষন এর।
মেয়েটা এতো মায়াবী কেন।
কেন এতো মধূ তার কন্ঠে।
বর্ষন আজো বুঝতে পারে না।
–কি হলো চুপ হয়ে গেলেন কেন(ছোঁয়া)
–আমিও খুব বেশি ভালুপাসি বুঝলে।
–হুম বুঝি।
–কি বুঝো।
–আপনাকে।
–আমাকে কি বুঝো।
–এই যে খুব ভালোবাসি।
–তুমি এতে মায়াবী কেন ছোঁয়া
–ওই যে বললাম প্রেমিকের চোখে প্রেমিকা কখনো খারাপ হয়ে পারে না।
–জানি কিন্তু তুমি।।
–যে কোন মানুষ কে ভালোবাসার চোখ দিয়ে দেখে দেখবেন সে এমনি সুন্দর হয়ে যাবে।
–হুম সত্যি বলেছো।
ভালোবাসার চোখ কিন্তু সবার উপর আসে না।
–হ্যাঁ খুব ভাগ্যবান হয় তারা জাদের কাছে আপনার মতো একজন আছে।
–হ্যাঁ রে ছোঁয়া রানি।
বর্ষনের রানি।
ছোঁয়া হাসে।
আজ চেনা সেই বর্ষন বড্ড অচেনা।
বর্ষনের মায়াবী ডাক মায়াবী চোখ সব কিছুই আজ নতুন।
,
,
এদিকে,
মিষ্টি শুয়ে পরেছে সব কাজ সেরে রাতের।
হটাৎ তার ফোনে ফোন আসে।
অচেনা কোন নাম্বার থেকে,
মিষ্টি ফোনটা পিক করে বেডে শুয়ে পরে,
–হ্যালো আসসালামু আলাইকুম।
–ওয়া আলাইকুম সালাম। কেমন আছো?
–জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো কিন্তু চিনলাম না।
–এতো জলদি রোদ কে ভুলে গেলে হবে।
–ও রোদ আপনি।
সরি।। —
–ইটস ওকে।
–নাম্বার কই পেলেন?
–তুমি ত দিলে।
–ওহ ভুলে গেছিলাম।
–আচ্ছা ভুলে কি করে গেলে।
–এই মনে না থাকার কারনে।
–হাহা মিষ্টি তুমি ভিশন মিষ্টি।
–হুম ছোঁয়া এই কথাটা বলে।
–ছোঁয়ার অবেক ক্লোজ নাকি তুমি?
–না আগে ও তেমন কথা বলত না।
কেন জানি না এখন বেশ মিশুক।
অবশ্য হয়ত সুযোগ হয় নি।
–ওহ তা তোমার বাসায় কে কে থাকে?
–আমার বাসায় আমি মা বাবা আর ছোট ভাই।
–কোথায় তোমাদের বাসা ময়মনসিংহ।
–ওহ ভালো করেছো ঢাকা এসে।
–হুম মামা বলল আসতে।
–আচ্ছা।
ত মিষ্টি আজকের বিকাল টা সুন্দর ছিল না।
–হুম ভিশন সুন্দর ছিল।
রোদ হাসলো।
রোদ মিষ্টিকে তাদের কিছু ছবি দিলো।
রোদ হলুদ ফর্সা একটা ছেলে উচ্চতা মাসআল্লাহ ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি।
মিষ্টি রোদের কাছে থেকে নিজের ছবি গুলো দেখে ভিশন খুশি হলো।
অজানা এক ভলোলাগা কাজ করগে লাগলো মনের মাঝে।
,
–ঘুমাবেন না?
–তোমার সাথে কথা বলতে কেন জানি না ভালো লাগছে।
তোমার লাগছে না?
–সত্যি বলব/
–হুম।
–ঘুম পাচ্ছে।
–ওহো পাগলি ঘুমাও তাহলে।
,–ওকে রাখি।
–আল্লাহ হাফেজ।
–ওকে।।
,
,
,
–বর্ষন ঘুমান৷। —
–তুমি না ভিশন পাজি ছোঁয়া।। –
–ও মা কি করলাম।
–কাছে থাকলে খালি যাই যাই করো কেন।
–কই যাই যাই করলাম আমি একটু ক্লান্ত।। –
–আচ্ছা ঘুমাও গুড নাইট৷। –
–গুড নাইট।।
,
,
,।
সকালে,
ভার্সিটি শেষ করে চলে আসে ছোঁয়া বাসায়।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসে।
পড়া শেষ করে খেয়ে নেয়।
–মা।
–হ্যাঁ।
–মা চলো না হাঁটতে যাই।
–বর্ষন পড়াতে আসবে ত।
–হ্যাঁ আসবে কিন্তু এই বৃষ্টিতে আসবে না।
–আসবে ওর গাড়িতে করে আসতে সমস্যা হবে না।
–মা তুমি আর তোমার বর্ষন।
–হুম ওটা আমার ছেলে তা ওর কাজে বোঝা যায়।
–হ্যাঁ।
–হ্যাঁ আর তুই তোর শুধু খালামনির মতোই শুধু।। —
–এই খালামনি না তোমার বড়ো।
–হ্যাঁ ।
–বড়ো দের সম্পর্কে এমন বলো কেন।
–কেমন বললাম।
–বলে দিবানি।। —
–হয় যা।
চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে