বক্ষ পিঞ্জর পর্ব-২০+২১

0
857

#বক্ষ পিঞ্জর
#Anaisha_Ehmat
#পর্বঃ২০+২১

“দেখেছো আম্মু আমার বোন টা কতো বড় হয়ে গেছে! মা হতে চলেছে! আর আমি হবো মামা তাই না আম্মু! আবির বলল।”

“হুম ঠিক বলেছিস বাবা। আবিরের মা বলল। ”

“ইয়েস আমি চাচ্চু হবো। কি মজা। ধুর! কি বলছি আমিতো ওই পুচকির ডেডি হবো হুহ! রাত ভাইয়া পর ডেডি হবে আর আমি আপন ডেডি। রায়াফ এর এই কথা শুনে লিভিং রুমে বসা সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা।”

“রাত সবার সামনে কিছু বলতে পারছেনা তাই রাত্রি বলল, ভাবি তুমি রুমে যাও ভাইয়া খুব আকুল হয়ে আছে যাও। কানে কানে বলল আভাকে।”

“রুমে আসতেই রাত আভাকে জড়িয়ে ধরলো আর বলল, ধন্যবাদ আভা। আজ আমি খুব খুশি জানো! আগে কেনো বলোনি আমাকে। তোমাকে কি বলে যে বুঝাবো আমার ভাষা নেই আমি বাবা হবো আভা ভাবতেই অবাক লাগছে। আই লাভ ইউ আমার বাবুর আম্মু। ”

“আই লাভ ইউ টু বাবুর আব্বু। আমিও অনেক খুশি আপনাকে বাবা হবার সুযোগ দিতে পেরে।”

“রাত্রি রুমে চলে গেলো। রায়াফ ও আবিরকে নিতে রাত্রির রুমে গেলো। দুষ্টু রায়াফ বাইরে থেকে দরজা আটকে দিলো নিজে বেরিয়ে। রাত্রি আবির দুজনেই ভড়কে গেলো। রাত্রি শব্দ করে নিঃশ্বাস ফেলল তারপর আবিরকে বলল, বেলকনিতে যাই আসুন।”

“হুম চলো।”

“আবির রাত্রিকে জড়িয়ে ধরলো পেছন থেকে। রাত্রি কেপে উঠলো আর বলল, শুনছেন।”

“হুম বলো।”

“আমি কবে মা হবো!”

“আচমকা এমন কথা শুনায় আবির শকড হলো আর বলল, তোমার তো এখনো বিয়েই হয়নি। অপেক্ষা করো।”

“পারবোনা অপেক্ষা করতে। মন খারাপ করে বলল।”

“এতো ধৈর্য হারা হলে হবেনা এইচ এস সি শেষ করো তারপর বিয়ে তারপর মেডিকেল এ বা ভার্সিটি যে টাই চান্স পাও সেখানে পড়ো ১-২ বছর তারপর বেবি। ”

“এতো সময়! চোখ বড় বড় করে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলল।”

“হুম মাই কুইন এতো সময় নয় খুবই অল্প সময়। দেখতে দেখতে চলে যাবে।”

“হয়েছে আর বুঝ দিতে হবেনা।”

“আবির রাত্রির নাকে নাক ঘষে বলল, এতো অভিমান করলে হয় নাকি হুম। কথায় কথায় এতো অভিমান কোথা থেকে আসে।”

“জানিনা! ছাড়ুন আমাকে। সব সময় খালি পড়া আর পড়া। খেলবোনা আপনার সাথে।”

“ঠিক আছে খেলতে হবেনা। আমিও সময় পাইনা খেলার অফিসের চাপ থাকে। মুচকি হেসে বলল আবির।”

“মজা নিচ্ছেন তাই না! ”

“আবির রাত্রিকে আর একটু কাছে টেনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল, বিয়ে করে যখন এতোগুলা ভালোবাসা দিবো তখন যায়গা করে নিতে পারবে তো!”

“না পারার কি আছে।”

“দেখা যাবে।”

“তারপর রাতে ডিনার করে আবির রা তাদের বাসায় চলে গেলো৷

” ফয়সাল ইভা কে রাতে কল করেছে দুজনে ভিডিও কলে কথা বলছে। বেশ খুশি এখন দুজনে। কল কে’টে ফয়সাল বেলকনিতে দাঁড়িয়ে অস্ফুট সুরে বলতে লাগলো খুব ভালোবেসে ফেলেছি তোমায় ইভা। কখনো ভাবিনি তোমার মায়ায় জড়িয়ে যাবো অন্য জনের মায়া কাটিয়ে। তবে ভালো হয়েছে অনেক। আমি অতীতের টান আর রাখতে চাইনা। আমি তোমাকে নিয়েই বাকিটা জীবন পার করতে চাই। অপেক্ষায় থেকো পাগলি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যাবো তোমার কাছে। ”

“চলে গেলো আরও ৫ মাস রাত্রির এক্সাম শেষ হয়ে গেছে আরও আগেই আজ তার মেডিকেলের রেজাল্ট দিবে তাই বাসার সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে আছে। আভা ৬ মাসের পেট নিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে বেড়াচ্ছে। তার ও টেনশন হচ্ছে। ”

“আরে ভাবি তুমি বসে থাকো তো আমার বেবিটার কষ্ট হচ্ছে এভাবে হাঁটছো যে! রায়াফ বলল। ”

“১ ঘন্টা পর রেজাল্ট বের হলো রাত্রি ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। সবাই খুশিতে মেতে উঠলো। রাত আবির তাদের বাবা রা অফিসে খবর শুনে তারাও খুশি হলো। ”

“সন্ধ্যা বেলায় আবির আভা কে কল দিলো আর বলল, কংগ্রাচুলেশন মাই কুইন। আমি খুব খুশি হয়েছি। আ’ম প্রাউড অফ মাই কুইন। আই লাভ ইউ।”

“আই লাভ ইউ টু মাই কিং।”

“কি করছো এখন।”

“কথা বলছি আপনার সাথে।”

“হুম ভালো। তো কিছু ভাবলে কি!”

“কি ভাববো!”

“এবার কি বিয়েটা করে ফেলবো নাকি একবারে পুরো ডাক্তার হওয়ার পর করবো।”

“একবারে পুরো ডাক্তার হওয়ার পর করলেই ভালো হবে।”

“রাত্রির এমন কথায় আবির বিষম খেলো আর মনে মনে বলল, কি ব্যাপার যে মেয়ে বেবির চিন্তা করে ফেলেছিলো আর সে কিনা এখন বলছে আরও পরে বিয়ে। মাথা কি ঠিক আছে? শব্দ করে বলল, দেরিতে কেনো এখন। তুমি তো আরও আগেই করে নিতে চেয়ে ছিলে। এখন ডিসিশন চেঞ্জ কেনো?

” ইচ্ছে হয়েছে তাই। আমি আরও পড়তে চাই বিয়ে করবো না।”

“রাত্রি কি বলছো ভেবে বলছো তো!”

“একদম ভেবে বলছি। আপনার মতো লাউ কে বিয়ে করার চেয়ে কুমারি থাকা ভালো।”

“হুয়াট! লাউ! আমি লাউ কেনো হতে যাবো?
ব্রু কুচকে বলল আবির।”

“তা নইতো কি! লাউ একটা নিরামিষ আপনিও তাই। যখন আমি বলতাম বিয়ে করবো তখন আপনি শুধু পড়া পড়া করতেন। এখন আমি বলছি আমি পড়বো আমি বিয়ে করবোনা।”

“আচ্ছা তাই! দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা ওয়েট করো ৫*৬ দিন। আমাকে নিরামিষ বলা লাউ এর সাথে তুলোনা করা তাইনা। আবির খান কে অপমান করছো তো একটা শোধ তুলবো দেখে নিয়ো।”

“ঘোড়ার ডিম করবেন আপনি।”

“সেটা তো পরেই দেখা যাবে। ঘোড়ার ডিম করি নাকি মুরগির ডিম করি।”

“৫ দিন পর আবিরদের বাসায় গিয়ে রাত্রি আর আবিরের বিয়ে ঠিক করা হলো। আগামী শুক্রবারই বিয়ে। আবিরের ইচ্ছে এতো ঝাক ঝমক অনুষ্ঠান হবেনা। শুধু আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হবে বাসায় আর কাজি বাসায় এনে বিয়ে পড়ানো হবে।”

“রাতে আবিরকে কল দিয়ে বলল রাত্রি, এই যে মি. বিয়ে ঠিক করলেন কেনো হুম। বলেছি না বিয়ে করবোনা।”

“একদম রগ বাকা কথা বলবানা কুইন। রগ সোজা করে দিবো। ”

“হুহ পারবেনই তো তাই করতে।”

“হুম জাস্ট ওয়েট আন্ড ওয়াচ। কি করি দেখে নিও। বাকা হেসে বলল আবির।”

“আগামী শুক্রবার প্লান মতোই দুজনের বিয়ে সম্পন্ন হলো রাত্রিদের বাসায়। কম বেশ সব মেহমানরা উপস্থিত ছিলো। ”

“রাত আভা আজকে আবিরদের বাসাই চলে আসছে আবিরের জোড়াজুড়ি তে।”

“বিয়ে কম রিচুয়াল মেনে হলেও আবির তাদের বাসর ঘর অনেক সুন্দর করে ডেকুরেট করিয়েছে বাইরের লোকজন দিয়ে৷ ”

“আভা রাত্রি কে আবিরের সাজানো রুমে বসিয়ে দিয়ে বলল, আমার ভাইয়া টাকে খুব ভালোবেসো পরি৷ সেই ছোট বেলা থেকে ভাইয়া আমার এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করছে। আজ আমার ভাইয়া স্বার্থক হলো। কখনো দুজনে ভুল বুঝা বুঝি করোনা প্লীজ। খুব ভালোবেসো দুজন দুজনকে। আর খুব তাড়াতাড়ি আমাকে ফুপি হওয়ার স্বাদ দিয়ো। বলেই আভা শব্দ করে হেসে চলে গেলো।”

“বা বা এই নিরামিষ টা দেখি খুব সুন্দর করে রুম টা সাজিয়েছে। বাহ ভালোই৷ ”

“রাত্রির ভাবনার মাঝেই আবির রুমে এসে ডোর লক করে দিলো। বিছানায় বসে পড়লো। রাত্রি সালাম দিলো। আবির উত্তর দিলো। তারপর দুজনে নামাজ পড়ে নিলো। তারপর আবার দুজনে বেডে বসে রইলো। ”

“আবির বলল, কুইন চোখ বন্ধ করো তো।”

“কেনো?”

“আবার কেনো! বন্ধ করতে বলেছি করো।”

“রাত্রি চোখ বন্ধ করলে আবির রাত্রির হাতে একটা গোল্ড রিং পড়িয়ে দিলো। আর বলল, এটা তোমার জন্য আমার সামান্য গিফট।”

“রাত্রি মুচকি হেসে ধন্য বাদ দিয়ে আবিরকে জড়িয়ে ধরলো। ”

“বেলকনিতে যাবে কুইন।”

“হুম চলুন।”

“বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আবির বলল, খুব সুন্দর লাগছে তোমায়। জানো রাত্রি আজ আমি সব চেয়ে বেশি আনন্দিত। আমি এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম এতোগুলো বছর। বলেই রাত্রিকে জড়িয়ে ধরলো। রাত্রিও জড়িয়ে ধরলো। ভালোবাসি বউ।”

“আমিও ভালোবাসি।”

“রাত ৩ টা বাজে এতক্ষন দুই মানব মানবী বেলকনিতে দাঁড়িয়ে তাদের ভালোবাসা উপভোগ করছিলো। আবির বলল, অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবেনা?”

“না ঘুমাবোনা। ”

“কেনো? ”

“এইযে আপনার বুকে আছি এখানেই আমার ভালো লাগছে।”

“আচ্ছা রুমে চলো আমি তোমাকে বুকে নিয়েই ঘুমাবো।”

“শুনুন না! ”

“কি বলো।”

“ভাবি বলে গেছে তাকে যেনো ফুপির স্বাদ দেই খুব তাড়াতাড়ি। আমিও চাই ভাবির মতো মা হতে। প্লীজ না করবেন না।”

“আবির বলল, বললাম না একবারে ডাক্তার হয়ে যাও তারপর। ”

“রাত্রি আর কথা বাড়ালোনা মন খারাপ করে শুয়ে পড়লো অপরপাশ ফিরে।”

“আবির বেডে শুয়ে রাত্রিকে জড়িয়ে ধরে বলল, রাগ করে থেকোনা কুইন । খুব তাড়াতাড়ি তুমি মা হবে কিন্তু তার জন্য তোমাকে আমি আরও কিছুদিন সময় দিতে চাই। এর জন্য তুমি আপসেট থেকোনা প্লীজ।”

“আচ্ছা। বলেই আবির রাত্রি দুজনে ঘুমিয়ে পড়লো।”

“কে’টে গেলো আরও ২ মাস। আজ রাত্রিকে ঢাকা চলে যেতে হবে। আবির দের ঢাকার অফিসে আবির স্যাটেল হয়েছে। রাত্রি যেহেতু ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে সেহেতু ওকেও ঢাকা চলে যেতে হবে। ”

“আবির রাত্রি তাদের পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিলো ঢাকার উদ্দেশ্যে। আবিরের বাবা ঢাকা তে আবিরকে ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছে। আবির নিজের গাড়ি করেই চলল গন্তব্যে। যেতে যেতে প্রায় ৩ টা বেজে গেলো।”

“রুমের তালা খুলে দিলো দাড়োয়ান চাচা। ভিতরে ঢুকে রাত্রি অবাক হলো যে যায়গায় ধুলাবালি থাকার কথা সে যায়গায় এতো পরিপাটি করে সাজানো সব কিছু! এইযে বলছিলাম কি এতো সুন্দর করে কে সাজিয়েছে?”

“পছন্দ হয়েছে কিনা তোমার সেটা বলো।”

“হুম খুব ভালো লেগেছে।”

“ফ্ল্যাট টাই ৩ টা রুম একটা বেডরুম একটা গেস্ট রুম আর একটা লিভিং ডাইনিং একসাথে। পাশা পাশি কিচেন রুম রয়েছে। বেডরুম এ একটা ওয়াশ রুম আর একটা এটাচ ওয়াশরুম।”

“আবির বলল, যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার অর্ডার করছি। বলেও আবির সোফায় বসে পড়লো। সব ফার্নিচার আগে থেকেই আনা ছিলো বিদাই আবির কে আর হয়রানি হতে হয়নি।”

“রাত্রি ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পড়ে বের হলো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো ঝেরে শাড়িটা ঠিক ঠাক করে রুমের বাইরে গেলো। প্রতি দিনকার মতো আজও আবির এক ধ্যানে রাত্রি কে দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।”

“রাত্রি সোফায় আবিরের পাশে বসে বলল, আপনার বউ ই তো কেও নিয়ে যাবেনা সব সময় এভাবে দেখতে হবে না। রাত্রির কথায় আবিরের হুশ ফিরলো আর রাত্রিকে টেনে নিজের কুলে বসিয়ে কোমর চেপে ধরে বলল, আমার কুইন কে প্রতিদিন নতুন রূপে দেখতে আমার ভালো লাগে তাই এভাবে আমি আমার কুইন এর দিকে তাকিয়ে থাকি তাতে তোমার কি।”

“আপনার সাথে কথায় পেরে উঠবোনা আমি। উঠুন শাওয়ার নিয়ে আসুন।”

“তাহলে একটু আদর করে দাও!”

“ঢং তো খুব ভালোই শিখেছেন দেখছি। তারপর মৃদু সুরে হেসে আবিরের কপালে ঠোঁটের স্পর্শ দিলো। হয়েছে এবার যান।”

“আবির রাত্রিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন বসে উঠে চলে গেলো শাওয়ার নিতে।”

“রাত্রি এই সময় টায় বেডরুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো। আবির ফ্রেশ হয়ে বের হলো পড়নে একটা হালকা লেমন কালার টাওয়েল। ওখানে কি করছো কুইন।”

“রাত্রি পেছন ফিরে বলল, এইতো দেখছিলাম এখানকার পরিবেশ টা। ”

“তো কেমন লাগছে দেখতে?”

“হুম ভালো।”

“তারপর আবির একটা টাওজার আর টি-শার্ট পড়ে লিভিং রুমে গেলো কলিং বেল এর শব্দ শুনে। ডোর খুলে বিল পরিশোধ করে সিগন্যাচার করে খাবার প্যাকেট গুলো হাতে নিয়ে ডেলিভারি মেনকে ধন্যবাদ দিয়ে আবার ডোর লক করে চলে এলো ডাইনিং এ। কুইন এদিকে এসো। জোরে ডাক দিলো রাত্রিকে।”

“হুম আসছি! ”

“বসে পড়ো খেয়ে নাও। ”

“আপনি বসুন আমি সার্ভ করছি।”

“পারবে!”

“ইনশাআল্লাহ। শিখে এসেছি তো একটু একটু কাজ করে নিবো। ”

“আচ্ছা পাগলি ঠিক আছে। ”

“তারপর দুজনে খেয়ে নিলো। খাবার শেষে আবির রাত্রি দুজনে একসাথে শুয়ে কয়েক ঘন্টা ঘুমিয়ে নিলো।”

“সন্ধ্যার পর আবির রাত্রিকে বলল, কুইন রেডি হয়ে নাও তো আমরা একটু বাইরে বের হবো।”

“কোথায় যাবো!”

“চলো যাওয়া যাক কোথাও ঘুরে আসি। হানিমুনে যাওয়া হয়নি তো কি হয়েছে এই শহর টাই না হয় ঘুরবো তোমায় নিয়ে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে।”

“গেইট এর কাছে দুজন দাঁড়িয়ে আছে। রাত্রি বলছে আমি রিক্সা কিরে ঘুরবো। ”

“গাড়ি থাকতে রিক্সা কেনো?”

“না না আপনি ড্রাইভ করলে আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরতে পারিনা। তাই আমরা রিক্সা করে ঘুরবো। ”

“আচ্ছা চলো।”

“তারপর আবির রাত্রি রিক্সায় চড়ে বসলো। রাত্রি আবিরকে পাশে বসে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। মাঝে মাঝে রাত্রি আঙ্গুল নাড়িয়ে এটা ওটা দেখাচ্ছে। ”

“ফুচকা ক্যাফে নেমে রাত্রিকে ফুচকা খাওয়ালো। ”

“এভাবে অনেক্ষন ঘুরাঘুরির পর বাসায় ফিরে দুজনেই টায়ার্ড।”

“পরদিন রাত্রিকে মেডিকেলে এডমিশন দেওয়া হলো। আর আবির অফিসে চলে গেলো। এইভাবেই চলতে থাকলো তাদের মিষ্টি ভালোবাসার সম্পর্ক। ”

“এক রাতে আবির সোফায় বসে অফিসের কাজ করছিলো ল্যাপটপ এ। রাত তখন ১ টা বাজে আবিরের সেই খেয়াল হারিয়েই গেলো। এতো রাত হয়ে গেছে! কুইন মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। শুয়ে পড়ি বাকি কাজ না হয় সকালে করে নিবো। কাল তো ফ্রাইডে এতো চাপ নেওয়ার ই বা কি দরকার ছিলো। বলেই আবির রুমে ঢুকলো। বিছানার দিকে তাকাতেই আবির থমকে থেকো। বেশামাল অবস্থায় রাত্রি শুয়ে আছে চিত হয়ে। উন্মুক্ত পেট, হাত পা ছড়ানো। শাড়িটা হাটুর উপরে উঠে গেছে। এতোদিন হলো বিয়ের আজ অব্দি আবির এমন ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেনি। এর আগেও তো অনেকবার এমন দেখেছে কই তার তো এমন অসস্থি হয়নি। তবে আজ কেনো সব কিছু এতো এলো মেলো লাগছে। কেনো অবাধ্য হচ্ছে চোখ দুটো। অবাধ্যই বা বলছি কেনো শি ইজ মাই ওয়াইফ ওর প্রতি সব রকমের চাওয়া পাওয়া আছে। দায় দায়িত্ব আছে তাহলে আমার ভাবনা গুলো ও এমন কেনো হচ্ছে। এসব ভাবছে আর রিতীমত ঘামছে আবির। কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে গেলো বিছানার দিকে। হাটু গেড়ে ফ্লোর এ বসে শাড়িটা নিচে নামিয়ে দিলো হাটুর উপর থেকে। উন্মুক্ত পেট টা ঢেকে দিলো। শরীরে কাথা জড়িয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে চলে গেলো বেলকনিতে । বেলকনিতে গিয়ে হাত দুটো দিয়ে চুল চেপে ধরে নিজেই নিজেকে বলতে লাগলো কন্ট্রোল ইউর সেল্ফ আবির৷ অনেক সময় পড়ে আছে এতো বেসামাল হলে হবেনা। পেছন থেকে কারও হাতের স্পর্শ পেতেই আবির চমকে পেছন ফিরে তাকালো। আর বলল, কুইন তুমি! ”

“হুম আমি। কি করছেন এখানে এতো রাতে। আর কি সব বলছেন!”

“ক কই কিছুনা তো। তুমি উঠলে যে! ঘুমাও নি! ”

“না আমি ঘুমায়নি। আপনি জেগে থেকে কাজ করছিলেন আমি কি ঘুমাতে পারি নাকি। আপনার বক্ষ-স্থল ছাড়া তো আমার ঘুম হয়না এখন জানেন না! ”

“হুম তাও ঠিক। তুমি তো আমার বক্ষ_পিঞ্জর এর পাখি।”

“এক মিনিট এক মিনিট বক্ষ_পিঞ্জর এই নাম টা আমি আগেও কোথাও শুনেছি।”

“এই রে কি বললাম এখন তো বুঝে যাবে যে ওকে মেসেজ গুলো আমি করতাম। যে গা’লি দিয়েছিলো বাবা আজীবন মনে থাকবে। মনে মনে বলল আবির।”

“হ্যাঁ! মনে পড়েছে। মেসেজ! তার মানে আপনি আমাকে মেসেজ করতেন!”

“ইয়ে মানে হ্যাঁ। ”

“ইশ! আগে বললেন না কেনো। কি ব’কা দিয়ে ফেলেছিলাম ইশ! সরি ক্ষমা করে দিবেন।”

“ইট’স ওকে। পাগলি সরি বলতে হবেনা। ঘুমাওনি যে এতোক্ষন কি তাহলে জেগেই ছিলে।”

“হুম। বলেই রাত্রি আবিরকে জড়িয়ে ধরলো।”

“রাত হয়েছে যাও ঘুমিয়ে পড়ো আমি আসছি।”

“এতো কেপে কথা বলছেন কেনো? নার্ভাস ফিল করছেন কোনো কিছু নিয়ে।”

“না যাও না কুইন ঘুমিয়ে পড়ো।”

“কিছু কি হয়েছে আপনার?”

“না কিছু হয়নি। বললাম না যাও রুমে। একটু জোরেই বলল আবির।”

“রাত্রি আবিরকে ছেড়ে মাথা টা ভয়ে নিচু করে ফেলল। পেছন ফিরে চলে যেতে লাগলো। ওমনি আবির হেচকা টান দিয়ে রাত্রিকে নিজের বুকে চেপে ধরলো। রাত্রির থুতনিতে তর্জনী আঙ্গুল টা রেখে উপরে তুলল মুখটা। আর বলল, সরি কুইন ক্ষমা করে দাও পারছিনা আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে। চেয়েও পারছিনা নিজেকে তোমার থেকে দূরে রাখতে। নাও আই নিড ইউ কুইন! বলেই রাত্রির পেটের পাশে বাম হাত চেপে ধরলো, ডান হাত ঘাড়ে গুজে দিলো আর নিজের প্রান্ত যুগল রাত্রির প্রান্তরে চেপে ধরলো। রাত্রি চোখ বন্ধ করে দুই হাতে আবিরের টি-শার্ট জোরে আকড়ে ধরলো।”

“বেশ কিছুক্ষন পর আবির কে ছেড়ে ওকে তুলে নিলো। তারপর বেডে শুইয়ে দিলো। নিজেও রাত্রির উপর শুয়ে পড়লো। রাত্রির গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। আবিরের উষ্ণ নিঃশ্বাস এ রাত্রি চোখ বন্ধ করে আবিরের ভালোবাসা টুকু অনুভব করতে লাগলো। হারিয়ে গেলো দুজনে এক অজানা দুর্গে। এবার আর কিছু লিখতে পারবোনা আপনারা মন মতো সাজিয়ে নিয়েন। ”

“নতুন দিনের সূত্র পাত হলো। ভোরের পাখিরা জানান দিচ্ছে প্রভাত শুরু হলো বলে। শহরের অলিগলিতে মানুষের হাক ডাক আনাগোনা চলছে। রাত্রি আড়মোড়া ভেঙে চোখ মেলে তাকালো। নিজের দিকে তাকিয়ে রাতের কথা গুলো মনে পড়তেই আনমনে ঠোঁটের কোণে মিষ্টি তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো রাত্রির। পাশে তাকিয়ে দেখতে পেলো আবির রাত্রিকে জড়িয়ে ধরে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। রাত্রি আবিরের পাশ ফিরলো। আবিরকে জড়িয়ে ধরে আবিরের চুলে হাত বুলাতে থাকলো। আবির চোখ মেলে তাকিয়ে রাত্রির মিষ্টি হাসি মাখা মুখটা দেখতে পেলো। আবির বলল, সু-প্রভাত মাই কুইন। ”

“সু-প্রভাব। ঘুম ভাঙলো তবে!”

“হুম। তুমি কখন উঠেছো? ”

“এইতো মাত্রই উঠেছি।”

“ওহ আচ্ছা।”

“হুম। আচ্ছা উঠুন অনেক বেলা হয়ে গেছে।”

“আজ ফ্রাইডে ওকে নো প্যারা সো চুপচাপ ঘুমিয়ে থাকো। বলেই আবির রাত্রিকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।”

“হচ্ছে টা কি হুম। উঠুন! ”

“না উঠবোনা। প্লীজ শুয়ে থাকোনা?”

“রাত্রি আর কিছু না বলে শুয়ে রইলো কিছুক্ষন এরই মাঝে আবির আবারও ঘুমিয়ে গেলো। রাত্রি আবিরের কপালে ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে উঠে চলে গেলো বেশ কিছুক্ষন পর শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে কিচেনে চলে গেলো। নাস্তা তৈরি করে দুই মগ কফি নিয়ে আবিরের কাছে এলো। এখনো ঘুমন্ত পুড়িতে আছে সে। এই যে শুনছেন!”

“হুম বলো। ঘুম ঘুম নেশাক্ত সুরে বলল আবির।”

“১১ টা বাজে উঠুন না! কতো বেলা হয়ে গেছে এখনো ঘুমাচ্ছেন।”

“আবির আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো। ”

“এই যে নিন ধরুন। কফির মগটা আবিরের দিকে দিয়ে বল।”

“বিপরীতে মুচকি হেসে কফির মগটা হাতে নিল আবির।”

“রাত্রি কফিতে চুমুক দিলো। আবির বলল এক মিনিট!”

“কি! বিস্ময়ের সাথে তাকালো আবিরের দিকে।”

“তোমার কফির মগটা এদিকে দাও তো।”

“কেনো?”

“কুইন তোমার কি কেনো রোগ আছে?”

“মানে! এটা আবার কেমন রোগ! ব্রু কুচকে বলল। ”

“তুমি সব সময় সব কিছুতে এতো কেনো কেনো করো কেনো হুম? যা বলছি তাই করো। ”

“হুম জানি তো প্রতি দিনকার মতো আমার টা নিজে খাবেন। আর আপনার টা আমাকে দিবেন। আমি দিবোনা আজ।”

“আচ্ছা দিবেনা! তাই! ”

“হুম তাই ”

“আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে দিতে হবেনা আমিই নিয়ে নিবো সময় বুঝে। বলেই আবির নিজের কফির মগটা টি-টেবিলে রেখে ঠুস করে রাত্রির অধর জোড়া গুলো নিজের অধরে একত্রিত করলো। রাত্রি অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেলো। হুট করে এমন কিছু করবে রাত্রির ধারনা ছিলোনা। এই ফাকে আবির রাত্রির হাত থেকে কফির মগটা নিমিষেই হাওয়া করে দিলো। মানে নিজের হাতে নিয়ে নিলো। তারপর রাত্রিকে ছেড়ে দিয়ে ভদ্র ছেলের মতো কফিতে একের পর এক চুমুক দিতে থাকলো। ”

“রাত্রি হুশে ফিরে বলল, এটা কি হলো?”

“যা উপলব্ধি করেছো তাই হয়েছে। রোমান্স হয়েছে বুঝোনা! বাকা হেসে বলল আবির।”

“হুহ রোমান্স নাকি চিটারি হুম! এমন করে তো ঠিকি আমার কফির মগটা নিয়ে নিলেন। চালাকি খুব শিখে গেছেন।”

“কি করবো বলো তো কুইন! তুমি তো সোজা পন্থায় দিতে রাজি হচ্ছিলে না তাই একটু বিপরীত পন্থা অবলম্বন করলাম আর কি। মুখ টিপে হেসে বলল।”

“হুম হুম হয়েছে ড্রামা কিং এবার শাওয়ার নিয়ে জলদি আসুন আমি নাস্তা তৈরি করে রেখে এসেছি।”

“বা’ব্বাহ! আমার কুইন তো দেখছি খুব বড় হয়ে গেছে, অনেক সংসারী হয়ে গেছো তাই না! ”

“হুম তা তো হতেই হবে।”

“আচ্ছা শুনো।”

“কি?”

“ড্রেসিং টেবিলের সেকেন্ড ড্রয়ারে পেইন কিলার ট্যাবলেট আছে এটা খেয়ে নাও।”

“কেনো? আর এটা কখনই বা আনলেন?”

“বলেছি তাই খাবে কোনো বাড়তি কথা নয় মনে থাকে যেনো। এটা রক্তিম ভাইয়ার বউ আসার সময় ঠাট্টা করে দিয়ে দিয়েছিলো। মানে মামাতো ভাই এর বউ। ”

“কিন্তু! বলেই রাত্রি থেমে গেল। রাত্রিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবির ওয়াশ রুমে চলে গেলো। ”

“রাত্রি ঔষধ টা বের করে বেলকনিতে গিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো একটা ট্যাবলেট। পেইন কিলার খাবো আমি তাই না! খাবোনা আমি মেডিসিন ফেলে দিয়েছি এবার বুঝবেন কি করে আমি খেয়েছি নাকি খায়নি। হুহ কতো আশা নিয়ে বাসা বুনতেছি আর ওনি আসছে আমাকে পেইন কিলার খাওয়াবে যত্তসব! বলেই রাত্রি ডাইনিং টেবিলে বসে অপেক্ষা করছে আবিরের জন্য। দুই গালে দুই হাত রেখে দুই হাতের তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে দুই গালে টপা টপ করছে।”

“আবির ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে ড্রেসিং টেবিল এর সামনে যেতেই দেখতে পেলো পেইন কিলার এর পাতা টা উপরে রাখা তার থেকে একটা মেডিসিন খালি। আবির মনে বলল, এতো সহজে ও এটা খেয়ে নিলো! তারপর আবির ডাইনিং এ গিয়ে বসলো। রাত্রি আড়চোখে আবিরকে দেখে মুখ টিপে হাসলো আবির সেটা খেয়াল করেনি। দুজনে নাস্তা করে সোফায় বসে রইলো। আবির ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়লো অফিসের কাজ করতে। রাত্রি আবিরের দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙছি কে’টে মনে মনে বলল, সারা দিন খালি কাজ আর কাজ। ভেবে পাইনা এতো কাজ আসে কোথা থেকে ওনার কাজ মার্কা হাব্বি পাইছি একটা মা’ইরি। ”

“সন্ধ্যা বেলা রাত্রিদের বাসা থেকে কল এলো আভার ডেলিভারি হয়েছে ছেলে বাবু হয়েছে। এটা শুনে রাত্রি অনেক খুশি হলো। পরক্ষনে মন টা খারাপ করে ফেলল। আবির বলল, কি হয়েছে খুশিই তো হয়েছিলে তাহলে আবার মুড অফ কেনো হয়ে গেলো?”

“জানিনা! কপট রাগ দেখিয়ে বলল রাত্রি।”

“এটা কি হলো! রেগে গিয়েছো কেনো?”

“বলতে বাধ্য নই আপনাকে। বলে লাভ আছে কোনো? লাভ নেই। সো আপনাকে সব কিছু বলার প্রশ্নই আসেনা। সরুন সামনে থেকে আর হ্যাঁ কাল সকালে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রওনা দিবো মনে থাকে যেনো। বলেই রাত্রি ফোন টা সোফায় ঢিল মেরে ফেলে রুমে চলে গেলো।”

“যাক বাবা হটাৎ কি হলো? এতো গরম কেনো হয়ে গেলো বুঝলাম না। মেয়েরা পারেও বটে এই খুশি তো এই বেজার। রাত্রি টাও না যে কি বুঝিনা একেক সময়। কই আগে তো এমন করতে দেখিনি তবে আজ কি হলো? এগুলো ভাবতে ভাবতে আবির ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। আবার বলল, নাহ যাই দেখে আসি কি করে রাগের তো আবার সীমা নেই। আমি লং টাইম এইসব রাগা রাগি সহ্য করতে পারবোনা। বলেই আবির রুমে গিয়ে দেখলো রাত্রি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, কি হয়েছে রাগ করেছো কেনো?”

“নিশ্চুপ রাত্রি।”

“কথা বলছোনা কেনো কুইন? তুমি রাগ করে থাকলে যে আমার ভালো লাগেনা। বড্ড অসহায় মনে হয় নিজেকে। প্লীজ কথা বলো।”

“বলবোনা কথা ছাড়ুন আমাকে।”

“কি হয়েছে সেটা তো বলো আগে।”

“এবার আর রাত্রি থাকতে পারলোনা ফুপিয়ে কেঁদে দিলো। আবিরকে সামনে ফিরে জড়িয়ে ধরে বলল, ভাবির তো বেবি হয়ে গেলো আমারও একটা বেবি চাই প্লীজ। আপনি কেনো নিষেধ করেন আমি বুঝিনা। আমাইও যে চাই খুব তাড়াতাড়ি আমাদের একটা ছোট্ট মণি আসুক যে আমাদের সুখের সংসার গড়তে অনেকটা সাহায্য করবে। ”

“আবিরকে চুপ করে রাত্রি কে জড়িয়ে ধরে মৃদু সুরে বলল, ওকে ফাইন! হবে বেবি ঠিক আছে! এখন কান্না বন্ধ করো প্লীজ। আমার কুইন এর কথায় এখন শিরধার্য রইলো এখন খুশি!”

“রাত্রি চ’ট করে মাথা উঠিয়ে বলল, সত্যি!”

“হুম সত্যি।”

“রাত্রি পা উঁচু করে ঠুস করে আবিরের ঠোঁট এ চুমু দিয়ে দিলো। ”

“ওরে বাবা! এতো আদর চলে আসছে এখন! যেই না বলেছি বেবি হবে ওমনি ভালোবাসা বেড়ে গেছে তাইনা!”

“হুম। হালকা শব্দ করে হেসে বলল।”

“তাহলে তো আমি ডাবল আদর দিবো এখন। ”

“তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই।”

“তাই না!”

“হুম”

“তারপর আবির ও রাত্রিকে শক্ত করে পেচিয়ে ধরে অধর যুগল একত্রিত করে রাখলো দীর্ঘক্ষন। রাত্রিও রেসপন্স করলো। কিছু সময় পর আবির বলল, পারবে তো বেবিকে সামলাতে?”

“হুম পারবোনা কেনো! রান্না করা শিখেছি এতো কষ্ট করে। আর বেবি লালন পালন করা তেমন কি। না পারলে তো বেবির পাপা আছেই তাইনা!”

“হুম বেবির পাপা তো আছেই ওনিই করবে সব তাইনা!”

“হুম একদম ঠিক বলেছেন।”

“পাগলি মেয়ে। ”

“আচ্ছা আপনার ছেলে বেবি লাগবে নাকি মেয়ে বেবি?”

“আল্লাহ যে টাই দান করবেন সেটা তেই আমি খুশি। তবে সব চেয়ে বেশি খুশি হবো আমার কুইন এর মতো একটা প্রিন্সেস হলে। রাত্রির নাক টেনে বলল।”

“মুচকি হাসলো রাত্রি।”

“পরদিন সকালে তারা রওনা হলো। ”

“এই পিচ্চি আমাকে ডেডি বলে ডাকবে তুমি ঠিক আছে। যদি না ডাকো তাহলে তোমাকে আবার তোমার মায়ের পেটে পাঠিয়ে দিবো। আদর করবোনা একদম, চিপস, চকলেট কিনে দিবোনা। রায়াফ আভার ছেলেকে হাতের আঙুল ধরে এসব বলছে। রাত এর আম্মু আব্বু রুমা আভা রাত সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে রায়াফ এর কথায়।”

“এই তোমরা হাসছো কেনো হুম?”

“রায়াফ তুই এতো অল্প বয়সে ডেডি হয়ে গেলি ভাবতেই অবাক লাগছে তাই হাসছি আমরা। রাত বলল।”

“হুহ তুমি তো পারোনি এতো বড় হয়েও ডেডি হতে। আমি পেরেছি। দেখেছো কত্ত সুন্দর আমার ছেলে। তোমার থেকে বেশি সুন্দর। এই ভাই আমার ছেলে যদি কালো হয়ে যায় আমাকে বলো কেমন ক্রিম মাখিয়ে আবার সুন্দর করে দিবো। বেশি বেশি দুধ ডিম খাওয়াবা যেনো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায় আর আমার সাথে স্কুলে যেতে পারে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে মহাশয়। আভা বলল।”

“এরই মাঝে কলিং বেল এর চাপ পড়লো আভার আম্মু আব্বু আসছে। তার ১ ঘন্টা পর রাত্রি আবির পৌঁছালো বাসায়। রাত্রি এসে ফ্রেশ হয়ে বেবিকে কুলে নিয়ে খাটে বসে পড়লো। এই পুচকি কথা বলো। তাকিয়ে দেখো কে এসেছে তোমার ফুপি চলে এসেছে তোমায় দেখতে। রাত্রি বেবিটাকে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে আর আবির তাকিয়ে ভাবছে মেয়েটা এতো দিওয়ানা একটা বেবির জন্য আর আমি কিনা ওকে দূরে দূরে রেখেছি। যাই হোক এখন আর তা হবেনা খুব শিঘ্রই আমাদেরও বেবি হবে কুইন। ঠিক তোমারই মতো হবে আমাদের প্রিন্সেস।”

“৭ দিন পর রাত এর ছেলের আকিকা করে নাম রাখা হলো রিয়ান। অনুষ্ঠানের কিছুদিন পর আবির রাত্রি আবার ঢাকায় ফিরে গেলো। বেশ চলছে সবার সুখ ময় জীবন। একদিন সকালে আবির অফিসে চলে যাওয়ার পর রাত্রির খুব শরীর খারাপ করতে লাগলো ওয়াশরুম এ যেতেই বমি করে দিলো। ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে ভাবলো আবির কে কল করবে। না না ওনি তো মনে হয় কাজ করছেন এখন ওনাকে বিরক্ত করা ঠিক হবেনা। এগুলো ভেবে রাত্রি আর আবিরকে কল করেনি ”

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে