প্রণয় প্রহেলিকা পর্ব-১৭

0
949

#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#১৭তম_পর্ব

ইকরাম ও সহমত দিলো। কিন্তু এর মাঝেই রবিন গম্ভীর মুখে বললো,
“সব রটনা, অনন্যার কথা ভুলে গেলে চলবে। আরে ফিজিক্সের টপার অনন্যা”

রবিনের কথাটা যেনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টির আকাশের বিশ্রী বজ্রপাতের মতো ঠেকলো ধারার নিকট। প্লাবনের কথায় যাও একটু স্বস্তি পেয়েছিলো। সেই স্বস্তিখানা স্থায়ী হলো না। যাও একটু শান্তির প্রহর বইছিলো হৃদয়ে সেটুকু একেবারেই নষ্ট করে দিলো সামনে থাকা চায়ের মাঝে বিস্কিট ডুবিয়ে খাওয়া মানুষটি। নিজের অনুভূতির লহর কোনো মতে আটকে আমতা আমতা গলায় ধারা বললো,
“টপার অ..অনন্যা কে?”

রবিন তখনও বিস্কিট খাচ্ছে। তার উত্তর দেবার আগেই ইকরাম মুখ বাকিয়ে বললো,
“ও, আমরা তো জানতাম ই না! তুমি জানলা কেমনে? অফ যা গা’ধা, আজাইরা। ধারা ওর কথা কানে তুলো না। অনন্যার সাথে অনলের কিছুই ছিলো না”
“নিজেকে কি অন্তিক মাহমুদ ভাবিস! খুব না একেবারে রোস্টার হয়ে গেছিস! তোরা গা’ধা। অনন্যা যে অনলের জন্য প্রতিদিন রান্না করে আনতো সেবেলা? শোনো ধারা, তোমার কষা বড় আর টপার অনন্যার কঠিন সিন ছিলো। এখন এদের কথা যদি বিশ্বাস করে আমাকে অবিশ্বাস করো সেটা তোমার ব্যাপার”

ইকরামকে সম্পূর্ণ থামিয়ে নির্লিপ্ত চিত্তে কথাখানা বললো রবিন। ধারা পড়লো মহা বিপাকে। বুকের অন্তস্থলে “সানজিদা” এর মতো ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়েছে। ভীষণ মাত্রা তার। হৃদয়ের আঙ্গিনায় সবকিছু উথাল পাতাল করে দিচ্ছে। সেই ঘূর্ণিঝড়ে কিশোরী মনে নব্য ফুটন্ত প্রণয় হারাবার ভয় উঁকি দিলো। নিকষকালো বিশ্রী ভয়। এতো কিছুর মাঝে ধারা আবারো অনুভব করলো সে সত্যিই প্রণয়ের বীজ বুনছে, অনল নামক প্রণয় বীজ। মাহির উপদেশ খানা স্মরণ করে বুকে একরাশ সাহস সঞ্চয় করলো সে। রবিনের মুখোমুখি হয়ে বললো,
“করলাম বিশ্বাস, এবার বলেন এই টপার অনন্যা কে?”
“তাহলে শোনো, ভার্সিটিতে আমি, অনল আর ইকরাম ছিলাম গণিতের ছাত্র। আর প্লাবণ ছিলো ফিজিক্সের। প্লাবণের সাথে পরিচয় হয়েছিলো অনলের মাধ্যমে। আমাদের ৪ জনের বন্ধুত্ব বেশ কড়া হলো। তখন একদিন টপার অনন্যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো প্লাবণ। অনন্যা ছিলো ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট গার্ল। মেয়েটি যেমন গুনে তেমন রুপে। আমাদের ভার্সিটির সব থেকে সুন্দরী নারী ছিলো সে। সিনিয়র, জুনিয়র, ক্লাসমেট সবাই ওর উপর ফিদা। তাহলে অনল কি জিনিস। তবুও তোমার বরের আলগা ঢং, সে প্রথমে অনন্যার সাথে কোনো কথা বলতো না। তবে অনন্যার মনে যে তার প্রতি কিছু একটা আছে সেটা ভালোই বুঝা যেতো। অনন্যা অনলের সাথে হেসে কথা বলতো, তার কাছে অহেতুক গণিত বুঝতো। সেকারণে তাদের সখ্যতাও একটু বাড়লো। তারপর এলো সেই মূহুর্ত যখন তাদের এই সখ্যতা ভালোলাগায় পরিণত হলো”
“যা ব্যাটা, যাচ্ছে তাই”

রবিনের সুন্দর গোছানো গল্পে ভেটু দিলো প্লাবণ। বিরক্তিতে তার কপাল কুচকে আছে। রবিন উলটো প্রশ্ন করলো,
“একটা কথাও কি মিথ্যে ছিলো?”
“মিথ্যা ছিলো না, তবে যেমনে বলছিস সখ্যতা ভালোলাগায় পরিণত হলো এমন কিছুই হয় নি। হয়তো অনন্যা ওকে পছন্দ করতো কিন্তু অনল নয়”
“প্লাবণ ভাই দু মিনিট একটু থামেন, রবিন ভাই শেষ করেন।”

ধারা কঠিন আগ্রহ নিয়ে প্লাবণকে থামালো। প্লাবণ মুখ ফুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। রবিন আবারো নিজেকে শ্রেষ্ঠ গল্পকারে পরিণত করলো। গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“যা বলছিলাম, তখন ইন্ট্রা ভার্সিটি একটা প্রোগ্রাম হলো। কম্পিটিশন বলতেই পারো, সেখানে আমাদের ভার্সিটি থেকে একটা টিম গেলো। সেই টিমে ছিলো আমাদের অনল, অনন্যা, সিএসসি এর একটা ছেলে আর মাইক্রোবায়োলজির একটা ছেলে। সেই কম্পিটিশনের পর যেনো সব বদলে গেলো। লাইব্রেরিতে অনল এবং অনন্যাকে দেখা যেতে লাগলো। অকারণে অনন্যা আমাদের সাথে আড্ডা দিতো। আহা! অনন্যার রান্নার কি স্কিল ছিলো! পোস্ত ইলিশ, বোয়াল মাছের তরকারি, বেগুন ভর্তা, গরুর কালোভুনা। অনলের জন্য ও রান্না করে আনতো। আর সেই উছিলায় আমরা খেতাম। ভার্সিটির সবাই জানতো এদের মাঝে কিছু তো চলছে। দুজন ই টপার, দুজন সুন্দর, একেবারে তাহসান-মিথিলা। কিন্তু ওই যে নজর, ভালো জুটি ঠিকে না। তাহসান-মিথিলার মতো ওদের জুটিও টিকলো না। ফোর্থ ইয়ারে কিছু একটা তো হলো! দুজন দুজনকে দেখেও অদেখা ভাব দিতো। অনলকে কতবার জিজ্ঞেস করলাম উত্তর দিলো না। তারপর সেমেস্টার ফাইনাল শেষ হলো। অনল আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হলো। অনন্যাও ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট৷ ভাবলাম এবার হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু হলো না! অনন্যা পাড়ি দিলো অস্ট্রেলিয়া। আর সেই সুযোগে প্লাবণ হইলো টিচার৷ নয়তো এই প্লাবণের বেল ই ছিলো না। আহারে! অনন্যার রান্না, ওদের এই ঝামেলায় শা’লা আমার পেটে লা’থি পড়লো”

রবিন আফসোসের সাথে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ধারার গোলমুখটা লম্বা থেকে লম্বাটে হচ্ছে। উজ্জ্বল মুখশ্রীতে আষাঢ়ের মেঘমেদুর জমেছে। অনন্যার বর্ণনায় সে মোটামুটি বুঝে গেছে সে ছিলো আদ্যোপান্ত কেট মিডলটন। প্রিন্স উইলিয়ামের সাথে যে তাকেই মানায়। ধারার কৃষ্ণ মুখশ্রীটা স্মৃতির চোখে পড়লো। সে এই গুমোট পরিবেশ হালকা করতে বলে উঠলো,
“রবিনের বাজে কথাগুলো শুনো না। এই যে কাহিনী ছিলো এটা ওর অলস মস্তিষ্কের বানোয়াট ছাড়া কিছু না! হতেই পারে অনন্যার সাথে অনলের খুব ভালো খাতির ছিলো। মাঝে মাঝে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। তবে সেই বন্ধুত্বকে প্রণয়ের পরিচয় দিতে হবে এটা তো ঠিক নয়। আর অনল যথেষ্ট স্ট্রেটকাট ছেলে, ওর মাঝে এই লুকোচুরি ব্যাপারটা নেই। যদি অনন্যা ভালোই লাগতো অন্তত প্লাবণ জানতো”
“হ্যা, আমি তো জানতাম। অনল আমার থেকে কিছু লুকায় না”

স্মৃতির কথায় যোগদান করলো প্লাবণ। ধারা তবুও কেনো যেনো আশ্বস্ত হতে পারলো না। অনলকে সে যতবার জিজ্ঞেস করেছে সে বিচিত্র হাসি দিয়ে এড়িয়ে গেছে। তাই তার হৃদয়ের কথাটা এখনো যে অজানা। সবার দৃষ্টি তার দিকে বিধায় খানিকটা জোরপূর্বক হাসলো সে। নরম গলায় বললো,
“আরে! আমাকে নিয়ে পড়লে কেনো! আমি তো জানি রবিন ভাই কেমন গল্প বানায়৷ ঢোপ দেওয়ায় তার উপরে কেউ নেই। আমি তো শুধু শুনছিলাম সে কতো দূর যেতে পারে৷ গল্পের সিড়ি যে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাবে এটা ভাবি নি”
“তুমিও আমাকে অবিশ্বাস করলে ধারা?”

হতাশামিশ্রিত কন্ঠে রবিন বললো। ঠিক তখন ই আগমন ঘটলো অনলের। ভ্রু কুচকে চাঁপা স্বরে বললো,
“কে অবিশ্বাস করছে তোকে?”
“তোর এই স্বার্থপর বন্ধুরা এবং তোর এই পিচ্চি বউ”
“কেনো?”
“কেনো আবার! তোর আর অনন্যার মধ্যে যে সিন ছিলো মোটেই বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না”

অনন্যার নাম শুনতেই অনলের হাসি মিলিয়ে গেলো। প্রসন্ন মুখখানা কঠিন হয়ে উঠলো মূহুর্ত। বহু বছর বাদে এই নামটা শুনবে আশা করে নি। ভ্রু জোড়া আরোও বেশি কুঞ্চিত হলো। চোখজোড়া ছোট ছোট হয়ে গেলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি প্রয়োগ করলো রবিনের দিকে। রবিন তার দৃষ্টিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করলো। কারণ অনন্যার নাম উঠলেই এই বান্দার মুখের রঙ পালটে যায়। অনল আঙ্গুলের ঢগা দিয়ে কপাল ঘষলো। তারপর শান্ত কন্ঠে বললো,
“অপ্রয়োজনীয় কথা বলাটা তোর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। স্বভাবটা বাদ দে। বয়স তো হচ্ছে, একটু বড় হ”
“কেনো, পুড়লো বুঝি!”

রবিন বাঁকা হেসে কথাটা বললো। অনল ঠোঁট চওড়া করে হাসলো। দূর্বোধ্য সেই হাসি। কেউ না বুঝলেও এই হাসির অর্থ প্লাবণ জানে। অনলের এই হাসির অর্থ “বেশি বকিস না, মা’র একটাও মাটিতে পড়বে না”। অনল ধারার পাশে বসলো। একটা ক্লিপ এগিয়ে দিয়ে বললো,
“শোন ধারা, কিছু মানুষের সব কথা বিশ্বাস্য, কিছু মানুষের অর্ধেক। আর রবিন প্রজাতির সব কথাই অবিশ্বাস্য। যা বলে এক কান দিয়ে শুনবি আর আরেক কান থেকে বের করে দিবি। চুল উড়ছে তোর, বেঁধে নে”

ধারা ক্লিপ্টা হাতে নিলো। খোলা অবাধ্য চুলগুলো খোঁপায় বাধলো। ইকরাম থমথমে পরিবেশ হালকা করতে আড্ডার মোড় ঘোরালো। আড্ডা আবারো জমলো। অনল ও তার কঠিন মুখশ্রী স্বাভাবিক করে নিলো। সন্ধ্যার চা নাস্তার পর বন্ধুমহল বিদায় নিলো। যাবার সময় প্লাবণ বরাবরের মতো ধারার হাতে দুটো ইকলেয়ারস ধরিয়ে বললো,
“রবিনের কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো জলধারা। তুমি এবং অনল আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আমি চাই তোমরা সুখী হও৷ এখন একসাথে হবে না আলাদা সেটা সম্পূর্ণ তোমাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। তবে এইসব উটকো চিন্তার জন্য নিজেদের মাঝে দূরত্ব করো না”

প্লাবণের কথার মর্মার্থ ভালো করেই বুঝতে পারলো ধারা। প্রত্যুত্তরে কেবল হাসলো সে। তবে ক্ষীণ খচখচানিটা যেনো রয়েই গেলো, হয়তো নিজ সুপ্ত প্রণয়ের মানুষটিকে হারানোর ভয় ই এই খচখচানি________

ঘড়ির কাটা দশটার ঘরে৷ ধারাদের বাসায় সাড়ে নয়টার দিকেই খাবার খাওয়ার প্রথা। জামাল সাহেব তাড়াতাড়ি খান। এবং তিনি একা খাওয়া পছন্দ করেন না। বাড়ির প্রতিটি প্রাণীর তার সাথেই বসে খেতে হবে। সেটা তার ক্ষুদা লাগুক বা না লাগুক। যদি তখন না খাওয়া হয় তবে তার খেতে হবে একা। কেউ তার জন্য অপেক্ষা করবে না। এতো বছরেও এই প্রথা বদলায় নি। আজও তাই হলো। সবার খাবার ঠিক সাড়ে নয়টায় ই শেষ। শুধু অনল বাদে। বন্ধুদের যাবার পর থেকেই বান্দা ল্যাপটপের সামনে বসে আছে। আড্ডার মাঝে ফোন এসেছিলো ভার্সিটি থেকে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে তাকে। সেটাই করছে সে। ধারা দু চার ডেকেছিলো কিন্তু বান্দা উত্তর দেয় নি। সে তার ল্যাপটপেই মাথা ডুকিয়ে রেখেছে। অবশেষে হতাশ হয়ে খেতে চলে গেলো ধারা।

খাবার শেষে প্লেট হাতে রুমে ঢুকলো ধারা। বড় মা ছেলের চিন্তায় দিশেহারা। তাই ধারার হাতেই খাবার পাঠিয়েছে। ধারাও মানা করতে পারলো। কারণ তার ও চিন্তা হয় লোকটির জন্য। রুমে প্রবেশ করতে দেখা গেলো অনল তখন ও তার কাজে ব্যাস্ত। ধারা কিঞ্চিত বিরক্ত হলো। তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো,
“ল্যাপটপটির যদি মুখ থাকতো তবে সে মানবাধিকার মা’ম’লা করতো তোমার নামে। সেই কখন থেকে এর উপর অত্যাচার চালাচ্ছো। এবার ক্ষান্ত দেও”
“কালকে এই ফাইল অফিসে জমা দিতে হবে। হেড স্যারের ফোন ছিলো। মিটিং আছে”
“অসব বুঝি না, খেয়ে নাও। বড় মা খাবার পাঠিয়েছে”
“খাইয়ে দে”

ল্যাপটপ থেকে মাথা না তুলেই নির্বিকার ভাবে কথাটা বললো অনল। ধারা অবাক চোখে তাকালো অনলের দিকে। অনলের মুখ থেকে এমন কোনো কথা অত্যন্ত আকষ্মিক ঠেকলো। সে কিছুসময় তাকিয়ে রইলো। ঘরে আবার নিস্তব্ধতা। নিস্তদ্ধতা ভেঙ্গে অনল আবার বললো,
“কি হলো, খাইয়ে দে”
“তোমার হাত নেই?”
“কাজ করছি তো ধারা”

এবার চোখ তুললো অনল। অসহায় চাহনীতে তাকালো ধারার দিকে। যেনো সে সেই ৯১ এর দুর্ভিক্ষের মানুষটি যে এখন ই না খেলে জ্ঞান হারাবে। কিন্তু তার কাজ ফেলে খাওয়াটা হবে পাপ। তাই সে নিরুপায়। ধারা কিছু বললো না, চেয়ারটা টেনে অনলের পাশে বসলো। লোকমা তুলে লোকটির মুখের সামনে ধরলো। লোকটি ও দিব্বি খেতে খেতে মনোযোগী হলো কাজে। ধারার মনে হলো সময়টা যদি থেমে যেতো তবে হয়তো মন্দ হতো না। এ যেনো অন্যরকম ভালোলাগা৷ এক অন্যরকম শিহরণ। প্রিয় মানুষটার আশেপাশে থাকতেও বোধহয় ভালো লাগে। ধারার মন আকাশে যেনো এক পশলা বৃষ্টির পর রঙ্গিন রংধনু উঠেছে। ধারা সবটুকু খাবার অনলকে খাওয়িয়ে দিলো। আর অনল বিনা অভিযোগে খেয়েও নিলো। ধারা বেশ অবাক হলো, কারণ অনল একটি বারও করলা ভাজি নিয়ে অভিযোগ করে নি। যেখানে তার অতীব অপছন্দের খাবার সেটা। ধারা যখন খাবার খাওয়ানোর পর উঠে যেতে নিলো তখন হাতখানা টেনে ধরলো অনলো। মৃদু কন্ঠে বললো,
“একটু বসবি, কিছু বলার ছিলো”………..

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে