Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তোর শহরে ভালোবাসা পর্ব~২

তোর শহরে ভালোবাসা পর্ব~২

#তোর_শহরে_ভালোবাসা??
………{সিজন-২ }
#ফাবিহা_নওশীন

পর্ব~২

??
সামান্তাকে নিশি সকালে নাস্তার টেবিলে নিয়ে এলো।সামান্তা কেমন সংকোচ করছে।কেননা নাস্তার টেবিলে আরো অনেকে থাকতে পারে।তাই কিছুটা অস্বস্তি লাগছে ওর।

নিশি বুঝতে পেরে বললো,
—–সামু বি ইজি।
সামু প্রতিউত্তরে মুচকি হাসলো।

সামু নিশির সাথে নাস্তার টেবিলে গিয়ে দেখে নিশির মা আর একজন মধ্যবয়স্ক লোক।সামান্তা অনুমান করতে পারছে ইনি নিশির বাবা।
সামান্তাকে দেখে নিশির মা বললো,
—–শুভ সকাল।এসো বসো।

সামান্তা মুচকি হেসে শুভ সকাল বলে চেয়ার টেনে বসে পড়ল।সার্ভেন্ট এসে নাস্তা দিলো।নিশির মা নিশির বাবাকে সামুকে দেখিয়ে বললাম,
—–ওর নাম সামান্তা।আমার স্কুল ফ্রেন্ডের মেয়ে।

সামান্তা সালাম দিলো।উনি মুচকি হেসে উত্তর দিলো।ওর কপালে ব্যান্ডেজ দেখে বললো,
—–ওর কপালে…

নিশির মা উত্তর দিলো।
—–আসার সময় ছোট্ট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে।

—–ওহ,গেট ওয়েল সুন ডিয়ার।
তা তোমার কোন ফ্রেন্ডের মেয়ে?(নিশির মাকে উদ্দেশ্য করে)

নিশির মা আমতা আমতা করে বললো,
—-আমার স্কুল ফ্রেন্ড তুমি চিনবে না।আমার ওই ফ্রেন্ড মারা গেছে।তোমাকে পড়ে সব বুঝিয়ে বলবো।

—–ওহ আচ্ছা।

নিশি বললো,
—–বাবা সামু খুব মিষ্টি একটা মেয়ে।একদিনেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।

—–তাই নাকি!!বেশ ভালো।আমার মেয়ে সঙ্গী পেয়েছে।

.

রাত।
আদির মা আদির বাবার সাথে কথা বলছে।
—–শুনো,সামুকে নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।

—–হ্যা বলো।

—–ওর মা মারা গেছে।ওর বাবা ওর প্রতি কেয়ার ফুল না।মেয়েটা খুব একা।তবে খুব ভালো একটা মেয়ে।আমি ওকে আমার কাছে রাখতে চাই।তুমি…

—–অবশ্যই কেন নয়?রেখে দেও।আমাদের সাথেই থাকুক।কোনো প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবে।

—–থ্যাংকিউ।থ্যাংকিউ ভেরি মাচ।

.

কেটে গেছে একমাস।সামুকে এখানেই রেখে দিয়েছে।সামুর হাজার অনিচ্ছার বিপক্ষে ওকে রেখে দিয়েছে।ওকে ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিয়েছে।নিশি আর সামুর অনেক ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে।
কোনো এক বিকেলে ওরা গার্ডেনে ব্যাটমিন্টন খেলছে।
খেলতে খেলতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।আদি ছাদে রেলিঙ ধরে দাড়িয়ে আছে।হটাৎ করে ওর চোখ গেলো গার্ডেনে।দুজন খেলছে।গার্ডেনের আলোয় দেখা যাচ্ছে অপর পাশে ওর বোন কিন্তু এ পাশের জন কে?পেছনটা দেখা যাচ্ছে।লেডিস টাওজার আর লেডিস টিশার্ট পড়া।হেয়ার রাবার দিয়ে চুলগুলো উঁচু করে ঝুটি বাধা।
আদি অনেকবার উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো।

তারপর নিজেকে নিজে বললো,
—–আদি,হোয়াটস হ্যাপেন্ড টু ইউ?
আরে এই মেয়ে যে খুশি হোক তাতে তোর কি?কত মেয়ে তোকে দেখার জন্য পাগল ভুলে যাচ্ছিস?হবে হয়তো নিশির ফ্রেন্ড।

আদি নিজের কাজে মন দিলো।আর তখনই নিচে থেকে চিতকার আর হাসির শব্দ এলো।আদি ফোন রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে চমকে গেলো।একজন আরেকজনকে কাতুকুতু দিচ্ছে আর দুজন হেসে যাচ্ছে।
সামু জিতে গেছে আর সেটা সেলিব্রেট করছে।নিশিকে কাতুকুতু দিচ্ছে।নিশিও দিচ্ছে কিন্তু দুষ্ট মেয়ে সামুর সাথে পারছেনা।নিশি হাসতে হাসতে মাটিতে বসে পড়েছে।
আদি উপর থেকে দেখে হাসছে।ওরা বাচ্চাদের মতো বিহেভ করছে।সামুর হাসির শব্দ ওকে পাগল করে দিচ্ছে।বেচারা উপর থেকে সামুর চেহারা দেখতে না পারার দুঃখ নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।

সামু আর নিশি বের হচ্ছে।ওরা শপিংয়ে যাচ্ছে।নিশি সামুর হাত ধরে যেতে যেতে বললো,
—–মা আমরা যাচ্ছি লেট হবে ফিরতে।

সামু আর নিশি শপিংমলে ঢুকে নিজেদের প্রয়োজন মতো জিনিসপত্র কিনে নিলো।নিজেদের কেনাকাটা শেষে নিশি বয়েজ স্টলে ঢুকলো।

সামান্তা নিশিকে জিজ্ঞেস করলো,
—–নিশিপু আমরা বয়েজ স্টলে কি করছি?

—–সামু বয়েজ স্টলে কি করে?

সামান্তা দুষ্ট হাসি দিয়ে বললো,
—–ওয়ে হয়ে…জিজুর জন্য কেনাকাটা করবে?

নিশি ব্লাশিং হতে লাগলো।সেটা দেখে সামান্তা বললো,
—–ইশশ আপু আমার জয় ভাইয়ার কথা শুনে লজ্জা পাচ্ছে।চেহারা চাদের আলোর মতো ঝলমল করছে।আহা আজ একটা বয়ফ্রেন্ড নেই বলে।(আপসোসের ভংগীমায়)

নিশি বললো,
—–হয়েছে!! এতো ঢং করতে হবেনা।আমি বেচারির বয়ফ্রেন্ড কত দিন পর দেশে ফিরেছে।ওর জন্য কিছু কিনবোনা।গিফট ছাড়া দেখা করতে যাবো।ইম্পসিবল!!

সামু ভ্রু কুচকে বললো,
—–তাই বলো।এইসব হুট করে শপিংয়ে আসা তাহলে জয় ভাইয়ার জন্য?

—-হুম।আমাদের শপিং তো অযুহাত।

সামু আর নিশি একসাথে টিশার্ট দেখছে।সামু একটা টিশার্ট টান দিলো।অপর পাশ থেকে আরেকজন সেটা টান দিলো।টান পড়ায় সামু আরেকটু জোরে টান দিলো।আর তখন ওপাশে একটা ছেলেকে দেখতে পেলো।ওরা দুজন বুঝতে পারলো যে এক টিশার্ট এতোক্ষণ দুজন ধরে টানাটানি করছিলো।

সামু বললো,
—–দেখুন এটা আমি আগে ধরেছি।সো…

ছেলেটি বললো,
—-একদমই না।এটা প্রথমে আমি ধরেছি আর আপনি তখন টান দিয়েছেন।এটা আমার।
ছেলেটা জোরে টান মেরে টিশার্ট টি নিয়ে নিলো।সামুও ছাড়ার মেয়ে নয়।ও দৌড়ে ওপাশে গিয়ে টিশার্ট ধরে টান দিলো।

তারপর বললো,
—–অদ্ভুদ মশাই আপনি।আস্ত একটা বেয়াদব।কেড়ে নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

ছেলেটি বললো,
—–আমি নাহয় বেয়াদব কিন্তু আপনি? আপনি এতো ভদ্র একটা মেয়ে হওয়া স্বত্তেও আমার কাছ থেকে টিশার্ট কেড়ে নিলেন?হু?

সামু নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে আমতাআমতা করছে।নিজের কথায় নিজেই ফেসে গেছে।ছেলেটার দিকে তাকালো।ছেলেটার মুখে হাসি।অদ্ভুৎ রহস্যময় হাসি।
কিন্তু সামু দমে যাওয়ার পাত্র নয়।ও বললো,
—–সেটা আপনি কেড়ে নিয়েছেন তাই।

পাশ থেকে আরেকটা ছেলে বললো,
—–রাজ কি হয়েছে?

সামু বুঝতে পারলো ছেলেটার নাম রাজ।
রাজ বললো,
—–দেখনা মেয়েটা আমার পছন্দ করা টিশার্ট নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে।

সামু ছেলেটির দিকে চেয়ে কিছু বলতে যাবে তখনই টাস্কি খেলো।ছেলেটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে।সামুর এভাবে চেয়ে থাকা ওরা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছেনা।ছেলেটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ছে।
রাজ বললো,
—–এক্সকিউজ মি…কিউট হ্যান্ডসাম ছেলে এর আগে দেখেননি?
আমার ভাইকে গিলে খাচ্ছেন।

সামু রাজের দিকে চেয়ে কটাক্ষ দেখিয়ে বললো,
—–শাট আপ মি.ডট ডট।আমি ছেলে দেখেছি কিন্তু জিজুকে বাস্তবে দেখেনি।

দুজনে একসাথে অবাক হয়ে বললো,
—–মানে!!!

সামু বললো,
—–ওয়েট।
নিশিপু…নিশিপু এদিকে এসো প্লিজ।

ওরা দুজনে বললো,
—–নিশি!!

নিশি সামুর ডাক শুনে সামুর দিকে আসছে।আর তখনই ওদের সাথে জয়কে দেখতে পেলো।নিশি জয়কে দেখে আবেগে আপ্লূত।কতদিন পরে দেখছে।জয়ও অবাক হয়ে নিশিকে দেখছে।ওদের মিট করার কথা ছিলো আগামীকাল কিন্তু তার আগেই দেখা হয়ে গেলো।

জয় পড়াশোনা শেষ করে গতকাল দেশে ফিরেছে।জয় নিশির বয়ফ্রেন্ড।
নিশি আর জয় নিজেদের উপর কন্ট্রোল রাখতে না পেরে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো।সুপ্ত অনুভূতিরা আলোড়িত হচ্ছে।
সামু উল্টো পথে হাটা দিলো।রাজ কেশে বললো,
—–কাবাব মে হাড্ডি না হয়ে ঘুরে আসি।

সামু অন্য স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছে।
—–এই যে বিয়াইনসাহেবা….

সামু ঘুরে দেখলো রাজকে।তারপর আবার ঘুরে ওর কাজে মন দিলো।রাজ বললো,
—–বেয়াইন সাহেবা রাগ করেন কেন?এই নিন টিশার্ট আপনার।আপনাকে দিয়ে দিলাম তবুও রাগ করে থাকবেন না প্লিজ।

সামু ওর টিশার্ট ওকে ফেরত দিয়ে বললো,
—–আপনার টিশার্ট আপনি রাখুন।আমি ছেলেদের টিশার্ট মাথায় দেবো?

—–আরে আপনিই তো নিচ্ছিলেন?

—–জ্বি নট।আমি জাস্ট দেখছিলাম।আর কিছু না।

রাজ চোখ বড়বড় করে বললো,
—–তাহলে এতো কাড়াকাড়ি অযথা করলেন?

সামু ভ্রু কুচকে বললো,
—–কাড়াকাড়ি তো আপনি করলেন আমি কই করলাম?

রাজ মিনমিন করে বললো,
—–এরা যতই দোষ করুক,জীবনেও নিজেদের দোষ স্বীকার করবেনা।সব দোষ ছেলেদের।

সামু ওর কথা শুনতে না পেয়ে বললো,
—–কিছু বললেন?

রাজ দাত কেলিয়ে বললো,
—–না কিছুই বলিনি।

সামু সন্দেহের দৃষ্টিতে রাজকে দেখছে।

ওরা চারজন একসাথে এক রেস্টুরেন্টে বসে আছে।
নিশি জয়কে বললো,
—–তুমি এখানে কি করছিলে?অদ্ভুত কাকতালীয় ভাবে…

—–উহু একচুয়ালি কাকতালীয় কিছুনা।তুমি ফোন বাড়িতে রেখে চলে এসেছো।তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি।ফোন তুলোনি তাই তোমার বাসার নাম্বারে ফোন করি আর জানতে পারি তুমি শপিংয়ে এসেছো।আর তুমি শপিং করতে যে এখানেই আসবে সে তো আমার জানা।তাই চলে এলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় তোমাকে খোজে পাচ্ছিলাম না।তাই হাল ছেড়ে টুকটাক কেনাকাটা করছিলাম আর তখন এরা(সামু,রাজ) দুজন ঝগড়া করছিলো।

সামু বাচ্চাদের মতো ফেস করে বললো,
—–জিজু আপনি এটা বলতে পারলেন?আমি বাচ্চা একটা মেয়ে ঝগড়া করতে পারি?ঝগড়া তো উনি করছিলেন।উনি।

জয় বললো,
—–আরে তুমি ঝগড়া করছিলে সেটা কে বললো আমি তো বললাম রাজ ঝগড়া করছিলো।তোমাকে দেখে মনেই হয়না তুমি ঝগড়ার ঝ জানো।কত কিউট একটা মেয়ে।

সামু খুশি হয়ে গেলো।নিশি মুখ টিপে হাসছে।
রাজ মিনমিন করে বললো,
—–গিরগিটিও এতো তাড়াতাড়ি রং পাল্টায়না।

জয় ফিসফিস করে বললো,
—–ভাই হজম করে নে।

যাইহোক সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।
—–এ হচ্ছে রাজ।আমার কাজিন ব্রো।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।

নিশি হায় দিলো।সামু টেডি স্মাইল দিলো।নিশি তারপর সামুকে পরিচয় করিয়ে দিলো।
—–এ হচ্ছে সামান্তা।আম্মুর ফ্রেন্ডের মেয়ে।আমার ছোট বোনের মতো।বোন কম ফ্রেন্ড বেশি।ও এবার ভার্সিটিতে এডমিশন নিয়েছে।

রাজ হাত বাড়িয়ে দিলো।সামান্তা হাত দিচ্ছেনা দেখে রাজ বললো,
—–এখনো রেগে আছেন?সরি বলেছি তো।

সামু হাসি প্রসারিত করে হাত মিলিয়ে বললো,
—–রাগ করিনি।একচুয়ালি ওটা ঝগড়া ছিলো জাস্ট কিডিং।আ’ম সরি টু।

রাজ মুচকি হেসে বললো,
—–ইটস ওকে।তাহলে সব মিটমাট।ভাবির ফ্রেন্ড আমারও ফ্রেন্ড।

নিশি মজা করে বললো,
—–আমার তো বোনও তাহলে আপনারও বো….

—–নো নো ভাবি…ফ্রেন্ড ঠিক আছে।নট বোন।

সবাই হোহো করে হেসে দিলো।

.
.
সামু ভার্সিটি শেষে কোচিং করে বাড়ি ফিরছে।কিন্তু ট্যাক্সি,ক্যাব কিছুই পাচ্ছেনা।তাই হাটা শুরু করলো।সন্ধ্যা হয়ে আসছে।
“আরে সামু এভাবে হেটে তুই আজ আর বাড়ি যেতে পারবিনা।একটু হেটেই পা ব্যথা হয়ে গেছে।কারো গাড়িতে লিফট নেওয়ার চেষ্টা করি।”

সামু দাঁড়িয়ে গেলো।লিফট নেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু যারা লিফট দিতে চাইছে তাদের সুবিধার ঠেকছেনা।

আদি ড্রাইভ করছে আর তখনই একটা মেয়েকে সামনে দেখতে পেলো।আর সেদিনের এক্সিডেন্টের কথা মনে পড়ে গেলো।তাড়াতাড়ি গাড়ি থামিয়ে গ্লাস খোলে মেয়েটিকে দেখলো।
একটা মেয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।পড়নে মেরুন রঙের টপস,ব্লাক জিন্স,গলায় স্কাপ।আঁকাবাকা লালচে চুলগুলো খোলা।

আদি মেয়েটাকে দেখে বললো,
—–এই মেয়ে মরার হয় তো অন্য গাড়ির নিচে যাও।আমার গাড়ির সামনে কেন এসেছো?

সামান্তা আদির কথা শুনে আশ্চর্যের সপ্ত আসমানে।
আদির সামনে গিয়ে দাড়ালো।তারপর মুখ বাকিয়ে বললো,
—–কারণ ভাবলাম মরবো যখন একটা দামী গাড়ির নিচে মরি।যত্তসব।
কাউকে দেখেছেন মরতে এসে হাত দিয়ে গাড়ি থামায়।মরার হলে চুপ করে মাঝরাস্তায় দাড়িয়ে থাকতাম।লাইক সিরিয়াসলি এটুকু কমন সেন্স নেই?

আদি রাগে ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছে।দাতে দাত চেপে বললো,
—–এই মেয়ে তুমি এইসব ফালতু কথা বলার জন্য মাঝরাস্তায় আমার গাড়ি থামিয়েছো?

সামু দমে গেলো।আর মনে মনে বলছে,
—–সামু রিলেক্স।এভাবে ঝগড়া করলে কেউ তোকে লিফট দিবেনা।লিফটটা তোর খুব প্রয়োজন।একটু স্মাইল দিয়ে সুন্দর করে কথা বল।

সামু আদিকে ভালো করে দেখে নিলো।
“সামু ছেলেটাকে দেখে তো ভালোই মনে হচ্ছে কিন্তু তবুও একটু বাজিয়ে নেই।যদি খুব সহজে লিফট দেয় তবে ভাববো গিরিঙ্গি আছে।”
সামু বললো,
—–না,মানে আমার একটু লিফট প্রয়োজন।

আদি তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,
—–লিফট তোমাকে?হুহ,,ইম্পসিবল।

সামু বললো,
—–দেখুন বিপদে পড়েই লিফট চাইছি নয়তো…

—–বিপদে পড়লেই মানুষ হেল্প চায় কিন্তু আমি কাউকে হেল্প করিনা।

সামু কথা না বাড়িয়ে গাড়ির দরজা খোলে পেছনে বসে পড়ল।

—–এই মেয়ে কি করছো?নামো বলছি।

সামু চোখ ছোট ছোট করে বললো,
—–চেচামেচি করে লাভ নেই।একবার উঠে গেছি ব্যাস।এখন গাড়ি চালান নয়তো চিতকার করে বলবো আপনি আমাকে কিডন্যাপ করছেন।

—–কি!! কি সাংঘাতিক মেয়ে।

—–জ্বি প্রচুর।আপনার ধারণার বাইরে।উল্টো পাল্টা কিছু করবেন তো…

—–তো কি?ধমকি দিচ্ছো?(ক্ষেপে গিয়ে)

—–দেখুন এতো রাগারাগি না করে গাড়িটা চালালেই পারেন।তাহলে আপনার টাইম ওয়েস্ট হবেনা আমারও না।

—–আমাকে তোমার ড্রাইভার মনে হচ্ছে? এমন ভাব করছো যেনো তোমার গাড়ি আর আমি তোমার ড্রাইভার।

—–আমি ভাব কখন করলাম?
প্লিজ গাড়িটা স্টার্ট দিন।প্লিজ।(হাত জোর করে)

আদি কিছু একটা ভাবলো।তারপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বললো,
—–ধরো তোমাকে সত্যি সত্যিই কিডন্যাপ করলাম।তখন?

সামু কিছুটা ভয় পেলেও মুখে প্রকাশ করলো না।চেহেরায় সাহস ফুটিয়ে বললো,
—–তা সম্ভব না।কারণ আমি সেল্ফ ডিফেন্স করতে পারি।কেরাতে জানি।চেহারার হাল থাকবে না।
(সামু দিলি তো একটা বড় ঢপ)

আদি বাকা হাসছে।বুঝতে পারছে ঢপ দিচ্ছে।
—–তা মেম যাবেন কোথায়?

আদির মুখে মেম কথাটা শুনে সামু মুখ বাকালো।
তারপর রাস্তা বলছে।আদি ওর বিবরণ শুনে বুঝতে পারলো ওদের এলাকায় থাকে মেয়েটি।আদি নিজের মতো গাড়ি চালাচ্ছে।
সামু চুলগুলো খোপা করে নিলো।তারপর বললো,
—–এসির পাওয়ারটা বাড়ান তো।

আদি এসির পাওয়ার বাড়িয়ে বললো,
—–মেম আর কিছু?

সামু রেগে গিয়ে বললো,
—–এতো ঢং করছেন কেন?

—–কেন ঢং কি একা মেয়েরাই করতে পারে?

—–দেখুন….
সামু থেমে গেলো।ঝগড়া করতে চাইছেনা।চলে এসেছে।
সামু বললো,
—–দুটো বাড়ির পরে যে বাড়িটা ওখানে থামাবেন।

আদির হার্ট এটাক আসবে মনে হচ্ছে।ওকে ওর বাড়ির ঠিকানা বলছে।আদি কৌতুহল নিয়ে বললো,
—–কার বাড়ি এটা?আপনার কি হয়?

সামু ভ্রু কুচকে বললো,
—–কেন??চুরিডাকাতি করার ইচ্ছে আছে?

—–হায় আল্লাহ!! আমার বাড়িতে নাকি আমি চুরিডাকাতি করবো(মনে মনে)

—–না এমনি জিজ্ঞেস করলাম।লিফট দিলাম আর এটুকু জানতে পারি না?

সামু ভেংচি কেটে বললো,
—–আমার শ্বশুর বাড়ি।

আদির কাশি উঠে গেলো সামুর কথা শুনে।তারপর অবাক হয়ে বললো,
—–শ্বশুরবাড়ি?

—–হ্যা শ্বশুর বাড়ি।আপনার কোনো সমস্যা?
থামান চলে এসেছি।আদি গেইটের সামনে গাড়ি থামালো।
সামু গেইটের সামনে নেমে আদিকে বললো,
—–ধন্যবাদ।অনেক কষ্ট দিলাম।এখন যেতে পারেন।
তারপর বাড়ির ভিতরে চলে গেলো।

আদি মাথা চুলকে বললো,
—–এটা কি হলো?
আমার বাড়ি আমার ঘর,আর আমাকে বলে সর।
এই মেয়ে কে?শ্বশুর বাড়ি!!এই বাড়িতে আমি ছাড়া আর কোন ছেলে আছে?
এমন তো নয় আমার আরেকটা ভাই আছে।দূরর কি ভাবছি।তাহলে কি দাড়ায় আমার একটা বউ আছে বাট আমিই জানিনা??
বাড়িতে গিয়ে তো দেখতে হয়,কাহিনি কি।
উফফ যাচ্ছিলাম কই আর এখন যেতে হবে বাড়িতে।

চলবে…..

[বিঃদ্রঃএই সিজন নতুনরুপে।আগের সিজনের সাথে লিংক নেই।]

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ