তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৬

0
1949

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_৬
#মেঘ_বালিকা
.
.
সন্ধ্যা হয়ে গেছে এখনও ব্যালকনিতে বসে আছি আমি আর চোখের পানি ফেলছি…
হঠাৎই তাসিন কোথা থেকে এসে কিছু না বলেই আমাকে কোলে তুলে নিলো..আমিও ক্রমাগতো ছুটার চেষ্টা করছি আর নামিয়ে দিতে বলছি কোল থেকে..কিন্তু আমার কোনো কথায় ওর মধ্যে বিন্দু মাত্র পরিবর্তন ঘটলো না..ও আমাকে নিয়ে ছাদে চলে আসলো তারপর নামিয়ে দিলো…ওর থেকে ছাড়া পেয়ে চলে যেতে নিবো তখনই ও আমার হাতটা চেপে ধরলো..তারপর আমাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো… সামনে তাকিয়ে আমি রীতিমতো অবাক..শুধু অবাক না অবাক এর চরম পর্যায়…ছাদটায় হালকা লাইটিং করা..লাইটের আলোতে যা দেখতে পেলাম তাতে মনে হচ্ছে পুরো ফুসকার দোকান আমার সামনে আনা হয়েছে…এতো ফুসকা একসাথে দেখে আমার মাথা ঘুরে যাওয়ার উপোক্রম..আর কিছু না ভেবে তাড়াতাড়ি ফুসকা নিয়ে খাওয়া শুরু করে দিলাম আগে থেকেই ফুসকা গুলো তৈরি করা ছিলো…তাই আর কষ্ট করতে হয়নি…টপাটপ একের পর এক মুখে পুরে নিচ্ছি আমি..তাসিনকে একবারও খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলাম না নিজেই সব খেয়ে যাচ্ছি..ছাদে খোলা আকাশের নিচে বসে ফুসকা খাওয়ার মজাটাই আলাদা…
.
.
এদিকে তাসিন তনুর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে..একটা মানুষ এতো ফুসকা কী করে খেতে পারে সেটাই ভাবছে..আবার মুচকি মুচকি হাসছে ওর এভাবে খাওয়া দেখে…
-কেনো জানি তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারিনা আমি তনু..কি মায়ায় জড়ালে গো আমায়…তোমাকে কিছু বলে পরে আমি নিজেই তোমার থেকে বেশি কষ্ট পাই…হয়তো ভালোবাসি বলে…’তুমিই আমার প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা’…এর জন্যে তোমার উপর যতো রাগই থাকুক না কেনো তোমাকে একটু কষ্ট পেতে দেখলেই আমার বুকটা ফেটে যায়..আমি যে তোমায় সব সময়ই হাসি খুশি দেখতে চাই..কিন্তু আগের কথা গুলো মনে পরলে আমার সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়..কি দোষ করেছিলাম আমি যে তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে…কতো রাত নির্ঘুমে কাটিয়েছি আমি তার কোনো হিসাব নেই…তোমায় ছেড়ে থাকতে আমার কতোটা কষ্ট হয়েছে তা যদি তুমি বুঝতে..(মনে মনে)
এসব ভাবতেই আপনাআপনিই একটা দীর্ঘঃশ্বাস বেরিয়ে এলো….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

তাসিন যে আমাকে এভাবে সারপ্রাইজ দিবে তা আমি কখনো ভাবিনি..তাসিন যে এতোক্ষন ধরে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো আমি তা খেয়ালই করিনি..ফুসকা সামনে দেখে গপগপ করে খেয়েছি আশেপাশের কিছুই খেয়াল করিনি..ও যে আমার খাওয়া দেখে এতোক্ষন হাসছিলো তা বেশ বুঝতে পারছি কিন্তু এখন আর রাগ লাগছে না..বরং ভালোই লাগছে..তারপর আমি হঠাৎই টুপ করে ওর গালে একটা টাইট কিস দিয়ে আর এক মুহুর্তও না দাড়িয়ে দৌড়ে চলে এলাম..কেনো জানি খুব লজ্জা লাগছে তাই ওর সামনে আর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না…
.
আর বেচারা তাসিন তনুর এমন একটা কাজে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো..এটার জন্যে সে মতেও প্রস্তুত ছিলো না..সে বোকার মতো গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো…
.
রাতে সবাই একসাথে ডিনার করছি..তাসিন আমার মুখোমুখি বসে আছে..ভাবলাম ওর সাথে একটু মজা করলে কেমন হয়..তারপর টেবিলের নিচ থেকে পা দিয়ে তাসিনের পায়ে স্লাইড করতে লাগলাম..কিন্তু এতে তাসিনের মধ্যে বিন্দু মাত্র পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম না..ও ওর মতো খেয়েই চলেছে ব্যাপার কী!!এদিকে আমার শ্বাশুরি মা কেমন যেনো একটু করে উঠছে একটু পর পর..যাক বাবা যারে পা দিয়ে সুরসুরি দিচ্ছি সে নড়ে না চড়ে না আর এদিকে আমার শ্বাশুরি মা তখন থেকে কেমন একটা করে চলেছে..ব্যাপার টা নিয়ে আর বেশি মাথা ঘামালাম না…তাসিনের উপর ভীষন রাগ লাগছে ও একটাবার আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না..এইবার কিছুটা রাগ নিয়েই ওর পায়ে ভীষন জোরে একটা পাড়া দিয়ে বসলাম…আর হঠাৎই আমার শ্বাশুরি মা লাফিয়ে উঠলেন আহ করে শব্দ করে…সবাই এবার তার দিকে তাকিয়ে আছে তার এভাবে লাফিয়ে উঠাতে সবাই একটু ভয় পেয়ে গেলো…এইবার আমি ব্যাপার টা বুঝতে পারলাম এতোক্ষন আমি তার পায়েই…ছি ছি ছি শেষ পর্যন্ত আমি কিনা আমার শ্বাশুরি মায়ের…নাহ আর ভাবতে পারছি না…লজ্জায় আমার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে…আমি একটাবার খেয়ালও করলাম না….
.
মা কাউকে কিছুই বলেনি হয়তো সেও এই ব্যাপার টায় বেশ লজ্জা পেয়েছে তাই আর মুখ খুলেননি..মশা কামড়েছে বলে বিষয়টা এড়িয়ে গেছেন..বাবা কথাটা বিশ্বাস করলেও তাসিনের মুখ দেখে মনে হলো সে একদমই বিশ্বাস করেনি…সে বেশ বুঝতে পারছে তার মা কিছু একটা লুকাচ্ছে…আর তারপরই তার নজর আমার উপর পরলো..কেমন একটা সন্দেহের দৃষ্টিতে আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো..আমিও স্বভাবস্বলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে জোরপূর্বক একটু হেসে সেই স্থান ত্যাগ করলাম…বেশিক্ষন ওখানে থাকা আমার জন্যে সেভ না..তাই কেটে পরলাম…
.
রাতে দুইজন দুইদিকে মুখ করে সুয়ে আছি…হঠাৎ আমার শাড়ির নিচের উন্মুক্ত পেটে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম..বুঝতে পারলাম তাসিন..সে আমার পেটে স্লাইড করতে করতে হঠাৎই আমার পেট খামচে ধরলো..এতো টাই জোরে যে আমার মনে হলো আমার মাংস উঠে যাবে…আমি চিৎকার করতে যাব তার আগেই ও আমাকে ঘুরিয়ে নিজের দিকে করে আরেক হাত দিয়ে আমার চুলগুলো শক্ত করে ধরে আমার ঠোঁট জোড়া দখল করে নিলো…তাসিন খুব জোরে আমার ঠোঁটগুলো কামড় দিয়ে ধরেছে যার ফলে আমার চোখ দিয়ে দুই ফোটা পানি বেড়িয়ে এলো…আমি ছুটার চেষ্টা করলাম না কারন আমি জানি ওর শক্তির কাছে আমি পেরে উঠবো না..তাই চোখ গুলো খিচে বন্ধ করে নিলাম আর চোখের পানি ফেলতে লাগলাম…
.
প্রায় দশ মিনিট ইচ্ছে মতো নিজের কাজ হাসিল করে তাসিন আমায় ছেড়ে দিলো আর উল্টো দিকে মুখ করে শুয়ে পরলো..আর আমি ওর থেকে ছাড়া পেয়ে হাপাতে লাগলাম..মনে হচ্ছে ঠোঁট থেকে রক্ত বেড়িয়ে গেছে…আর পেটের ওই জায়গাটাও জ্বলছে…তাসিনের হঠাৎ হঠাৎ এমন বিহেভের মানে আমি বুঝি না..কেনো করে ও এমন..সন্ধ্যায়ও তো ঠিক ছিলো তাহলে এখন কি হলো ওর!! আমাকে কষ্ট দিয়ে কী মজা পেলো…ভাবতেই দুইগালে অঝর ধারায় পানি গড়িয়ে পরতে লাগলো…তারপর কাদতে কাদতেই ঘুমিয়ে পরলাম…
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে পাশে তাসিনকে দেখতে পেলাম না..ভালো হয়েছে ওকে আমার এখন দেখতেও ইচ্ছে করছে না..কাল রাতে যা করলো আমার সাথে..শয়তান খাটাস একটা…কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করলাম আমার পেটের ওই জায়গাটায় এখন আর ব্যাথা করছে না…কী ব্যাপার!! যেভাবে খামচি দিয়েছে তাতে তো এতো তাড়াতাড়ি ব্যাথা সারার কথা নয় তাহলে!!আমিও না কী সব ভেবে যাচ্ছি ব্যাথা সারলেই তো ভালো আমার এতো গবেষণা করে লাভ কী…তারপর উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলাম..ওয়াশরুমের আয়নার সামনে দাড়িয়ে ঠোঁটে হাত বুলাচ্ছি জায়গাটায় রক্ত জমাট বেঁধে আছে..কুত্তা বিলাই হারামি…তোরে যতোটা খারাপ ভাবছিলাম তুই তার থেকেও হাজার গুন বেশি খারাপ…আজকে আর এই অবস্থায় ভার্সিটি যাওয়া যাবে না..সবাই আমাকে এভাবে দেখলে নির্ঘাট হাসাহাসি করবে…
.
শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছি অনেকদিন পর অনলাইনে আসলাম..এই কয়দিন আসার টাইম পাইনি..তাই অনেক ম্যাসেজ নোটিফিশনস জমা হয়ে রয়েছে..ম্যাসেজ চেক করতে গিয়ে কিছু ম্যাসেজ দেখে বেশ হাসি পাচ্ছে..আমি এতোদিন অফলাইনে থাকায় কিছু মানুষ আমার বিরহে কাতর হয়ে গেছে…এখন যদি এরা জানতে পারে আমার বিয়ে হয়ে গেছে তাহলে এদের কি হবে ভেবেই হাসি পাচ্ছে…
হঠাৎ মনে হলো আমার ফোনটা হাওয়ায় ভাসছে..ভাসতে ভাসতে হঠাৎ টুপ করে ফ্লোরে পরে দ্বিখন্ডিত হয়ে গেলো..আমি বোকার মতো হা করে আমার ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি..কি হলো কিছুই বুঝতে পারছি না…তারপর ভালোভাবে খেয়াল করে দেখি আমার সামনে তাসিন রক্তচক্ষু নিয়ে দাড়িয়ে আছে..মনে হচ্ছে আমাকে এখনই পানি ছাড়াই গিলে খাবে..কিন্তু ও এখন কোথা থেকে আসলো ওর তো এখন অফিসে থাকার কথা…ওকে এভাবে দেখে শুকনো গলায় একটা ঢোক গিললাম…তাসিন রাগে ফুসতে ফুসতে চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠলো,,,,
-নির্লজ্জ মেয়ে..বিয়ে হয়ে গেছে অথচ এখনো পরপুরুষের সাথে ফুরতি করা কমে না তোর…
ওর এরূপ কথা শুনে আমি থমকে গেলাম..আমি তো কিছুই করিনি যাস্ট ম্যাসেজ গুলাই দেখছিলাম তার জন্যে তাসিন আমাকে এভাবে বললো!!!!
.
.
চলবে…..
.
.
(রাতে আর একটা পার্ট দেওয়া হবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে