তুই শুধু আমার পর্ব-২১+২২

0
1591

#তুই শুধু আমার
#Writer_মারিয়া
#Part : 21+22

মোমবাতি, হালকা কিছু ফুল, বেলুন দিয়ে সাজানো একটি বাসর ঘরে বসে আছে আশা। এই রুম টাতে আগেও অনেক বার এসেছে। আগে এসেছিলো অন্যভাবে, আর আজ অন্যভাবে। আগে এইরুমের উপর কোনো অধিকার ছিলো নাহ আশার, কিন্তু এখন এই রুমের উপর সম্পুর্ন অধিকার আছে আশার। আর রুম টাহ হলো আমানের। হ্যা, আমানের সাথে আশার বিয়ে হয়েছে। কিছু সময়ের মধ্যেই পুরো জীবনটায় ঘুরে গেছে আশার। আশা চোখ বন্ধ করে ফেলে আর ভাবতে থাকে সেই সময় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো=

সাইফ বিয়ে করতে পারবে নাহ শুনে জিহাদ চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়েন। জিহাদ চৌধুরী কে এরকম করতে দেখে আশা এগিয়ে এসে জিহাদ চৌধুরীর সামনে বসে বলে ওঠে,
–” বড় আব্বু তুমি এমোন করছো কেনো? আর তুমি তোহ আমাদের শিখিয়েছো যা হবে ভালোর জন্যই হবে। তাহলে আজ তুৃমি কেনো ভেঙে পড়ছো?”

–” তোর জীবনটাহ শেষ হয়ে যাবে মা। একটা বিয়ে ভেঙে যাওয়া মেয়ের যে অনেক বদনাম হয়।”
কেয়া চৌধুরী উঠে এসে আশার পাশে বসে আশাকে জড়িয়ে ধরে কান্না কান্না করতে করতে বলে ওঠে,
–” এখন কি হবে আমার মেয়ের? সবাই তোহ আমার মেয়েকে দোষারোপ করবে। আমার মেয়ের জীবন শেষ হয়ে গেলো।”

–” কিছুই শেষ হয় নি।”
কথাটা শুনে সবাই তাকিয়ে দেখে আরসাল। আরসাল আবার বলে ওঠে,
–” আশার জীবন এভাবে নষ্ট হতে দিবো নাহ। আজ, এক্ষুনি, এখানে, আশার এই সাজেই আশার বিয়ে হবে।’

আরসালের কথা শুনে কবির চৌধুরী বলে ওঠে,
–” কিন্তু কার সাথে আরসাল?”

আরসাল কবির চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে মিসেস. আখির সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” আন্টি আশাকে তোহ আপনি ছোট বেলা থেকেই চিনেন। আপনি খুব ভালো করেই জানেন আশা কেমন মেয়ে। আশাকে আপনার বাড়ির বউ বানানো যায় নাহ?”

আরসালের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাকায় আরসালের দিকে। আশা চমকে তাকায় আমানের দিকে। আমান একবার আশার দিকে তাকিয়ে আরসালের দিকে তাকায়। আরসাল মিসেস. আখির সামনে থেকে এসে আমানের সামনে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” বিয়ে করবি আমার বোন টাহ কে?”

–” আরসাল!”

–” হুম বল।”

–” তুই তোহ সব জানিস। তারপরও।”

–” হ্যা, আমি সব জানি। তারপরও বলছি।”

–” কিন্তু আরসাল!”
হঠাৎ মিসেস. আখি আমানের সামনে এসে বলতে শুরু করে,
–” আমি বাসায় চলে যাচ্ছি। বউমা বরন করার জন্য সব গুছিয়ে রাখতে।”

–” আম্মু!”

–” আমান বউমা কে নিয়ে তাড়াতাড়ি আই। আমি অপেক্ষা করছি।”
মিসেস. আখি আশার সামনে গিয়ে, আশার মুখে হাত দিয়ে বলে ওঠে,
–” তাড়াতাড়ি আমার ঘর আলো করতে চলে আই। আমি অপেক্ষা করবো তোর পা কখন আমার ঘরে পড়বে তার জন্য।”

কথাটা বলেই মিসেস. আখি রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে আসেন বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। আরসাল আমানের কাধে হাত রেখে বলে ওঠে,
–” চল রেডি হয়ে নিবি।”

বিয়ে হয়ে যায় আমান আর আশার অপ্রত্যাশিত ভাবে। আশা যাহ কখনো ভাবেই নি তাই হয়ে যায় আশার সাথে।
হঠাৎ দরজায় কারোর আওয়াজে বাস্তবে ফিরে আসে আশা। দেখে আশিকা এসেছে। আশিকা এগিয়ে এসে আশার দিকে একটা শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
–” আশা আপু, ওফ সরি। এখন তোহ তুমি আমার ভাবি। আচ্ছা ভাবি শোনো এখানে দুইটা শাড়ি আছে। আসলে আমরা তোহ এখনো তোমার জন্য কিছু কিনতে পারি নি। কিন্তু আম্মু আসার সময় এই দুইটা শাড়ি কিনে নিয়ে আসছে তোমার জন্য। এখন একটা পরো, কাল সকালে একটা পরো কেমন। আর কাল দুপুরের আগেই তোমার সব ড্রেস ওরা ডেলিভারি দিয়ে যাবে। আম্মু অর্ডার করে দিয়ে আসছে।”

–” আচ্ছা।”

–” আমি আসি তাহলে, বাই, গুড নাইট।”
আশিকা চলে যায়। আশা শাড়ির প্যাকেট টাহ ছোট্ট রাউন্ড টেবিলের উপর রেখে বারান্দায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।

★★★
আরসাল আমানদের বাসার রুফটপে দাড়িয়ে রাতের আকাশ দেখছে। হঠাৎ কাঁধে কারো হাতের ছোয়া পেয়ে পিছনে ফিরে দেখে আমান দাড়িয়ে আছে। আরসাল আমানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আরে! তুই এখানে কেনো? রুমে আমার বোনকে একা রেখে তুই এখানে কেনো? দেখ আমাকে তোর বাসায় তুই একেতোহ জোর করে এনেছিস। আবার এখন এখানে তুই। যাহ রুমে যা।”

–” হুম যাবো। কিন্তু তার আগে তোর সাথে কথা আছে। আর কথাগুলো নাহ শুনে আমি কোথাও যাবো নাহ।”

–” আচ্ছা। এখন বল কি বলবি?”

–” কি করেছিস তুই?”

–” মানে! আমি আবার কি করলাম?”

–” আমিও সেইটায় জানতে চাচ্ছি কি করছিস তুই? সাইফ আশাকে বিয়ে করতে চাইলো নাহ কেনো? আর কেউ কিছু বুঝুক বাহ নাহ বুঝুক। আমি খুব ভালো করেই জানি এর পিছে তোর হাত আছে। এখন আমাকে এইটা বল কি করেছিস তুই?”

–” হুম। তুই ঠিকই ধরেছিস। আমিই করেছি এইসব। আর তুই এইটা জানতে চাস যে কি করেছি আমি, তাইতো? ওকে তাহলে শোন।”

Flashback………….

আরসাল বিয়ের দিন বিকালে সাইফকে ফোন দেয়। ওপাশ থেকে সাইফ ফোন তুলে বলে ওঠে,
–” হ্যালো! কে বলছেন?”

–” আরসাল।”

–” ওহ! ভাইয়া আপনি? সরি ভাইয়া। আসলে আপনার নাম্বার টাহ আমার সেভ করা নেই। তাই বুঝতে পারি নি।”

–” It’s ok. সমস্যা নেই। আমি তোমাকে একটা কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছি।”

–” জি ভাইয়া বলেন।”

–” সাইফ! তুমি সবাইকে বলে দাও যে তুমি আশাকে বিয়ে করতে পারবে নাহ।”

–” মানে?”

–” মানে। তুমি আশাকে বিয়ে করবে নাহ।”

–” Are you mad? কি বলছেন আপনি এইসব? আপনি জানেন, আমি এখন বিয়ে করতে নাহ আসলে আশার কতো বড় ক্ষতি হয়ে যাবে?”

–” সেইটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে নাহ। তোমাকে যেইটা বললাম সেইটায় করো।”

–” কখনোই নাহ। আমার আশাকে পছন্দ হয়েছে। আর আমি নিজের ইচ্ছেতে ওকে বিয়ে করছি। তাই আপনার এই কথা আমি কখনোই রাখবো নাহ। আর এই বিয়েটাহ হয়ে গেলে আপনার এই কথা আমি সবাইকে বলে দিবো।”

–” ভালো কথার আর দাম নাই। এইবার আমার নাম্বার টাহ সেভ করে রাখো। কাজে লাগবে। বাই।”
আরসাল ফোন টাহ কেটে একটা বাকা হাসি দেয়।

১ ঘন্টা পর,
সাইফ রেডি হবে এমন সময় একটা ফোন আসে। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে অফিস থেকে কল আসছে। সাইফ ফোন টাহ রিসিভ করে বলে ওঠে,
–” হ্যালো!”

–” স্যার, আমি প্রিতম বলছি।”

–” হ্যা প্রিতম বলো। কিন্তু তোমার গলা এমোন শোনাচ্ছে কেনো? Are you ok?”

–” No sir, I am not ok.?”

–” কি হয়েছে।”

–” স্যার, হঠাৎ করেই আমাদের সব ডিল ফ্লপ হয়ে যাচ্ছে। অলরেডি ৩০ লাখ টাকা লস হয়ে গেছে৷ এমন অবস্থা মনে হচ্ছে আজ রাতের ভেতর কোটি টাকার উপর লস হয়ে যাবে।”

–” মানে! হঠাৎ, এমোন হওয়ার কারন কি?”

–” জানি নাহ। কিছুই বুঝতে পারছি নাহ।”
সাইফের হঠাৎ আরসালের কথা মাথায় আসে। আর সাইফ এইটাও বুঝে যায়, কার জন্য কি হয়েছে। ওদিক থেকে প্রিতম বলে ওঠে,
–” স্যার, কিছু তোহ বলুন।”

–” আমি দেখছি।”
সাইফ ফোন কেটে দিয়ে নিজের চুল আকড়ে ধরে বসে পড়ে। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ফোন টাহ হাতে নিয়ে আরসাল কে কল করে। আরসাল কল রিসিভ করে বলে ওঠে,
–” আরে মি. সাইফ। আপনার কল আমার ফোনে এই সময় কেনো? কিছু টাইম পর তোহ আপনি আসছেন এখানে, তাহলে এইসময় আপনার কল, বুঝলাম নাহ।”

–” আমি জানি নাহ কেনো আপনি এমন করলেন।”

–” কি করেছি আমি?”

–” জেনেও নাহ জানার ভান করবেন নাহ প্লিজ। নিজের বোনের এতো বড় ক্ষতি করতে কেনো চাইছেন জানি নাহ। কিন্তু।”

–” ঐ ঐ স্টপ। আমি জানি আমার বোনের কিসে ভালো হবে। কিসে সুখী হবে আমার বোন। সেইটা তোমার নাহ ভাবলেও চলবে।”

–” যাই হোক। আমি এই বিয়ে ক্যানসেল করে দিচ্ছি। আপনি আমার বিজনেস ঠিক করে দিন।”

–” আমার কানে যখন পৌছাবে সাইফ বিয়ে ভেঙে দিয়েছে। তখনই তোমার বিজনেসও ঠিক হয়ে যাবে। বাই।”
ফোন কেটে দেয় আরসাল। সাইফ কি আর করবে, ভেঙে দেয় বিয়ে। কিন্তু কাউকে বলে নাহ বিয়ে ভাঙার আসল কারন টাহ কি।

Present……….

আমান আরসালের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে ওঠে,
–” এইসব কেনো করতে গেলি তুই?”

–” কারন আজ যদি সাইফের সাথে আশার বিয়ে হতো তাহলে নাহ তুই আর নাহ আশা, কেউ সুখী হতি নাহ। কারন তোর মনে আমার বোন একটু হলেও জায়গা বানিয়ে নিয়েছে। তাই তোহ এতো অস্থির অস্থির ছিলি এই কয়েকদিন। আশার পাশে আর কাউকে মানতে পারছিলি নাহ।”
চুপ করে থাকে আমান। আরসাল আবার বলে ওঠে,
–” আমার বোনটাহ কিন্তু তোর জন্য অপেক্ষা করছে। যাহ, আর শোন অনেক কিছু করে তোর কাছে আমার বোনটাহ কে দিয়েছি। আমার বোনের চোখে যেনো পানি নাহ দেখি।”

আমান কিছু নাহ বলে রুফটপ থেকে নিচে চলে যায়। আরসাল আমানের যাওয়ার তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে,
–” আমি জানি আমান, আমার বোন টাহ তোকে অনেক ভালোবাসে। আর আমার বোন টাহ তোর কাছেই সুখী হবে। তুই পারবি ওরে সুখে রাখতে। সেই বিশ্বাস আছে আমার তোর উপর।”

★★★
আশা বিছানার উপর বসে আছে। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে তাকিয়ে দেখে আমান ভেতরে এসে দরজা বন্ধ করছে। আশার যেনো কেমন লজ্জা লজ্জা করছে। আমানের বউ সে, ভাবতেই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। আমান দরজা বন্ধ করে বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখে আশা বসে আছে। এখনো সেই ভারি সাজে রয়েছে। আশাকে সত্যিই আজ একটা পুতুলের মতো লাগছে। আমান বিছানার দিকে এগিয়ে আসতেই আশা নিচে নেমে আমানকে সালাম করতে যায়। আমান আশার হাত ধরে থামিয়ে দিয়ে আশার মুখে এক হাত রেখে বলে ওঠে,
–” তুই আমার পায়ে হাত দিবি নাহ। তোর স্থান আমার পায়ে নাহ, তোর স্থান তোকেই বানিয়ে নিতে হবে। যাই হোক, এইসব ভারি সাজ খুলে ফ্রেশ হয়ে নে।”

–” হুম।”
আশা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে গহনা খুলতে থাকে। একটা নেকলেস খুব বাজে ভাবে আটকে আছে। বার বার চেষ্টা করছে আশা কিন্তু কোনোভাবেই খুলতে পারছে নাহ। হঠাৎ কারো ছোয়া পায় হাতে, আয়নায় তাকিয়ে দেখে আমান। আশা আস্তে আস্তে হাত নামিয়ে নেয়। আমান নেকলেস টাহ খুলতে চেষ্টা করে। একসময় দাত দিয়ে খোলার জন্য নেকলেসে মুখ দিতেই আশার কাঁধে আমানের ঠোঁটের ছোয়া লাগে, আর আশা কেঁপে উঠে। এই প্রথম আমানের ছোয়া পেলো আশা। চোখ কুচকে বন্ধ করে রেখেছে। আমান নেকলেস টাহ খুলে আয়ানায় তাকিয়ে দেখে আশা চোখ কুচকে বন্ধ করে রেখেছে। আমান আয়নায় আশার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ডান! ফ্রেশ হয়ে নে।”

আশা চোখ খুলে আয়নায় তাকিয়ে দেখে আমান তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমান একটা মুচকি হাসি দিয়ে বারান্দায় চলে যায়। আশা একটা হালকা গোলাপি কালারের শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আমান বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে,
–” আমি পারবো তো আরসালের বিশ্বাস রাখতে? পারবো তোহ আশাকে সুখী করতে? কিন্তু আমি যে জেরিন কে এখনো ভুলি নি। নাহ, ও থাক আমার মনে। জেরিন আমার অতীত, আর আশা আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। একটু সময় লাগবে কিন্তু আশা সুখী হবে আমার কাছে।”

আমান কথাগুলো ভেবেই ভেতরে এসে সামনে তাকিয়ে যেনো থমকে যায়। আশা মাত্র শাওয়ার নিয়ে আসলো। হালকা গোলাপি কালারের শাড়ি, মুখে হালকা পানি, চুলের পানিতে শাড়ি কিছুটা ভিজে গেছে, আশা চুল মুছতে মুছতে আমানের দিকে চোখ যায়। আমান আশার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে, এতে যেনো আশার একটু অসোয়াস্তি লাগে। আমান আস্তে আস্তে আশার দিকে এগিয়ে যায়। আশা আমানকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ঘাবড়ে যায়, আর পিছিয়ে যেতে থাকে। আশা পেছতে পেছতে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়। আমান এগিয়ে এসে এক হাত দেওয়ালে রেখে আশার দিকে একটু ঝুকে। আমানের নিশ্বাস আশার মুখে আছড়ে পড়ছে। আশার পুরো শরীর কাপতে শুরু করে। আমান আশাকে ঘুরিয়ে নিয়ে নিজের বুকের সাথে আশার পিঠ মিশিয়ে নিয়ে, আশার ভেজা চুলে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ঘ্রান নিতে থাকে। আশার পুরো শরীর শিউরে উঠে আমানের ছোয়ায়। কিছু সময় পর আমান আশাকে ছেড়ে দিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। আশা আমানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
কিছুসময় পর আমান ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে আশার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” এই কয়েকদিন অনেক প্রেসার গেছে শুয়ে পড়।”

–” হুম।”
আশা শুয়ে পড়ে। লাইট অফ করে দিয়ে কিছুটা দুরত্বে আমানও শুয়ে পড়ে। দুইকজনের মাঝেই অনেক রকম অনুভূতি, কথা লুকিয়ে আছে। কিন্তু কেউ কিছুই প্রকাশ করে নাহ।

আশা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে আমানকে জড়িয়ে ধরে আছে। আমানের একটা হাত আশার কোমরে আর এক হাত আশার মাথার নিচে। আশা আমানের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়, শাওয়ার নিয়ে নিচে এসে কিচেন রুমে চলে যায়। কিচেন রুমে মিসেস. আখি রান্না করছেন সাথে সার্ভেন্টা রাও আছে, যারা মিসেস. আখি কে সাহায্য করছেন। আশাকে কিচেন রুমে দেখে মিসেস. আখি এগিয়ে এসে মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” কিরে মা, তুই এখানে কেনো?”

–” আসলে আন্টি।”

–” আন্টি কি হ্যা। আমি নাহ তোর শাশুড়ী। আর শাশুড়ী হলো আর একজন মা। আজ থেকে আমাকে মা বলে ডাকবি। আর যদি আমি আন্টি ডাকতে শুনি তাহলে খুব করে বকা দিবো কিন্তু।”

–” ঠিক আছে মা।”

–” আচ্ছা, এখন বলতো এখানে কেনো তুই। কিছু লাগবে?”

–” নাহ, আমি তোহ তোমাকে হেল্প করতে এসেছিলাম।”

–” বউ হয়ে এসেছিস জন্য এতো দায়িত্ব পালন করার দরকার নাই। তুই এই বাড়ির মেয়ে। শুধু আমার ছেলের খেয়াল রাখলেই হবে বুঝলি।”
মিসেস. আখির কথায় আশা লজ্জা পেয়ে যায়। তখনি দরজায় বেল বেজে উঠে। মিসেস. আখি আশার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” দরজা খুলে দেখ।”

আশা গিয়ে দরজা খুলে দেখে সেহের, সাথী আর আশফি দাড়িয়ে আছে। আশা সেহেরকে জড়িয়ে ধরে। তারপর ওদের ভেতরে নিয়ে আসে। আরসাল, আমান আর আশিকাও নিচে নেমে আসে। মিসেস. আখি এগিয়ে এসে বলে ওঠে ,
–” কখন ফোন দিয়েছি এখন এলি তোরা। ৫মিনিটের রাস্তা তাও এতো লেট।”

আশফি গিয়ে মিসেস. আখিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে,
–” আন্টি আমার কোনো দোষ নাই। দোষ সব এই সেহেরের। ঘুম থেকে উঠানোই যায় নাহ। কুম্ভকর্ণ একটা।”

–” এই কি বললা তুমি আমাকে? আশা।”
আশা আশফির দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আহা, ভাই। থামো তোহ। সেহের তুই আই তোহ।”

–” বাহ, সকাল সকাল আমার ড্রইংরুমে তোহ দেখি চাঁদের হাট বসেছে।”
মি. আশরাফ সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে বলেন।
মিসেস. আখি বলে ওঠে,
–” হুম। আচ্ছা গল্প পরে হবে আগে সবাই ব্রেকফাস্ট করতে বসো।”

সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট শেষ করে নেয়। মি. আশরাফ, আরসাল, আমান আর আশফি একসাথে বসে কথা বলছেন। মি. আশরাফ বলে ওঠেন,
–” আমান আর আশার জন্য একটা বড় অনুষ্ঠান করা দরকার। কারন আমাদের কেউ তোহ আর এই বিয়ের কথা জানে নাহ।”

আমান বলে ওঠে,
–” ওকে বাবা। কিন্তু তুমি কবে করতে চাও?”

–” আগামীকাল।”

–” ওকে।”

★★★
রাতের বেলা সেহের নিজের রুমে বসে ফোন চালাচ্ছে। হঠাৎ আরসালের একটা ম্যাসেজ আসে “এতো রাতে অনলাইনে কি করিস” ম্যাসেজ টাহ দেখে সেহের তাড়াতাড়ি ফোন অফ করে দিয়ে বলতে শুরু করে,
–” জল্লাদ একটা। শান্তিতে একটু ফোনও চালাতে পারি নাহ। ইচ্ছা করে মেরে হাড্ডি ভেঙে দেয়।”
আরসালকে বকতে বকতে সেহের ঘুমিয়ে যায়।

Reception party……..

সেহের নিজের রুমে রেডি হচ্ছে। আজ আমান আর আশার রিসিপশন পার্টি। সেহেরকে একটা পরির মতো দেখাচ্ছে। সেহের একটা সাদা গর্জিয়াস গাউন পরেছে, চুলগুলো সামনে পাফ করে উচু করে খোপা করে স্টোনের ক্লিপ লাগানো, চোখে কাজল, ঠোঁটে লিপবাম, কানে সাদা টপ, পুরাই এঞ্জেল। সেহের একবার ভালো করে আয়নায় নিজেকে দেখে বেরিয়ে আসে। আরসাল রেডি হয়ে নিচে নেমে আসতেই একজনের উপর চোখ আটকে যায়। সেহের আশফির সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। আর আরসাল একভাবে তাকিয়ে আছে। কিছু সময় পর সবাই আমানদের বাসায় চলে যায়। আশা আর আমান স্টেজে বসে আছে।
আস্তে আস্তে পার্টিতে সবাই চলে আসে। চারপাশে কাচের গ্লাসের আওয়াজে ভরে গেছে। হালকা সফ্ট মিউজিকে ভরে আছে চারিদিকে। এমন সময় আশিকা স্টেজে উঠে বলতে শুরু করে,
–” Hello everyone. আজ এই সুন্দর সময়ে একটা মজা। আর সেইটা হলো কাপেল ডান্স। এখানে সিঙ্গেল মিঙ্গেল সবাই জয়েন্ট করবে। কিছু সময় পর পর পার্টনার এক্সচেঞ্জ করা হবে। সো সবাই রেডি এন্ড লেটস গো।”

নেহা এসে আরসালকে টেনে নিয়ে যায়। যাহ দেখে আশফির খারাপ লেগে উঠে। কিন্তু পার্টনার এক্সচেঞ্জ হবে এইজন্য সেও জয়েন্ট করে। রাহুল এসে সেহেরের দিকে হাত বাড়াতেই সেহের আরসালের দিকে তাকিয়ে দেখে আরসাল নেহাকে সাথে নিয়ে ড্যান্স করছে। সেহেরও রেগে রাহুলের হাতের উপর হাত দেয়। আর যাহ দেখে আরসালের মারাত্মক রাগ উঠলেও চুপ করে থাকে।
শুরু হয় নাচ। নেহা একভাবে আরসালের দিকে তাকিয়ে থাকে। দেখে যে আরসাল কোনো একদিকে তাকিয়ে আছে। নেহাও সেদিকে তাকাতেই দেখে সেহের আর রাহুল একসাথে নাচছে। নেহা মনে মনে বলে ওঠে,
–” আবার সেই সেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যে আরসাল এইভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। অসহ্য, তুমি শুধু আমার আরসাল, শুধু আমার।”

হয়ে যায় পার্টনার এক্সচেঞ্জ। আশফির কাছে নেহা, আরসালের কাছে সেহের, রাহুলের কাছে আশিকা, আমান আর আশা সবার মিডলে নাচছে, ওরা আজ চেঞ্জ হবে নাহ। আরসাল সেহেরকে নিয়ে নাচতে নাচতে চাপা রাগী গলায় বলে ওঠে,
–” রাহুলকে খুব ভালো লাগে তাই নাহ?”

–” হ্যা, লাগে তাতে তোমার কি?”
সেহেরের কথা শুনে আরসাল সেহেরের কোমরে হালকা জোরে চাপ দেয়। সেহের হালকা ব্যাথা + শিউরে উঠে। আরসাল আবার বলে ওঠে,
–” তোকে যেনো আর ঐ রাহুলের সাথে নাহ দেখি।”

–” কেনো? আমি তোমার কোনো কথা শুনবো নাহ।”
আরসাল আবার চেপে ধরে সেহেরের কোমর। সেহেরে ব্যাথা পেয়ে বলে ওঠে,
–” কি করছো? ব্যাথা পাচ্ছি।”

–” কথা নাহ শুনলে আরও বেশি পাবি।”
সেহের আর কোনো কথা বলে নাহ। চুপচাপ নাচতে থাকে৷ আরসাল আর সেহেরকে নাচতে দেখে নেহার রাগে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আশফি একভাবে তাকিয়ে আছে নেহার দিকে।

★★★
পার্টি শেষ হয়ে গেছে। আশা বিছানায় বসে ফোন চালাচ্ছে। এর মাঝে আমান রুমে এসে ওয়াশরুমে চলে যায়। আমান বেরিয়ে আসলে আশা আমানের দিকে তাকায়। আমান কে আশার কাছে একটু অস্বাভাবিক লাগছে, অসুস্থ মনে হচ্ছে আমানকে, আশা আমানের দিকে এগিয়ে এসে বলে ওঠে,
–” তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে?”

–” মাথায় প্রচন্ড পেইন হচ্ছে।”

–” হঠাৎ।”

–” জানি নাহ।”

–” আচ্ছা তুমি এখানে শুয়ে পড়ো।”
আমান বিছানায় শুয়ে পড়ে। আশা লাইট অফ করে দিয়ে আমানের পাশে আধশোয়া হয়ে মাথা চেপে দিতে লাগে। আমানও আরাম পেয়ে আশাকে জড়িয়ে ধরে।

★★★
কেটে যায় আরও কিছু দিন। কেটে যায় মানুষের জীবন। সময় চলছে তার নিজ গতিতে। এগিয়ে যায় সবার জীবনের গতি, ভালোবাসা, অভিমান।

সেহের ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে আসছিলো। হঠাৎ কেউ সামনে আসায় একটু কেঁপে উঠে সামনে তাকায় সেহের। তাকিয়ে দেখে ইয়াশ। সেহেরের মুখটাহ বিরক্তিতে ভরে যায়। ইয়াশ বলে ওঠে,
–” কেমন আছো সেহের?”

–” ভালো।”

–” হুম। আজ রাতে আমার বাসায় বার্থডে পার্টি আছে।”

–” কার বার্থডে?”

–” আমার।”

–” ওহ, Happy birthday.”

–” Thanks. কিন্তু আজ আমি তোমার কাছে একটা রিকোয়েস্ট করতে চায়।”

–” কি রিকোয়েস্ট?”

–” আমি চাই, আজ আমার বার্থডে পার্টিতে তুমি আসো।”

–” আসলে, আমি জানি নাহ আমি আসতে পারবো কি নাহ। কিন্তু আমি ট্রাই করবো।”

–” প্লিজ সেহের।”

–” আমি চেষ্টা করবো, আসছি।”
চলে আসে সেহের। ইয়াশ সেহেরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
অনেকবার ইয়াশের ফোন দেওয়া হয়ে গেছে। সেহেরের শুধু আরসালের ভয় করছে। কারন বাড়ির বাকি সবাই যেতে দিলেও আরসাল কখনোই যেতে দিবে নাহ। রাতে বাড়ির বাইরে বাড়ির মানুষ ছাড়া একা একা সেহেরকে বা আশাকে কখনোই বাইরে যেতে দিতো নাহ আরসাল। সেহের কিছুক্ষণ রুমে পায়চারি করে মায়া চৌধুরীর রুমে চলে যায়। মায়া চৌধুরীর রুমে দরজার সামনে দাড়িয়ে নক করলে মায়া চৌধুরী ভেতরে যেতে বলে। মায়া চৌধুরী একটা বই পড়েছিলেন। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে সেহের এসেছে। সেহেরকে দেখে মায়া চৌধুরী বলে ওঠেন,
–” সেহের মা, কি হয়েছে?”

–” বড় আম্মু, আমার এক ফ্রেন্ডের আজ বার্থডে। আমাকে অনেকবার ফোন করেছে। আমি যেতে চাই বড় আম্মু।”

–” কিন্তু সেহের।”

–” প্লিজ বড় আম্মু।”

–” আচ্ছা শোন। আরসাল বাসায় নেই। কোন একটা ফাংশনে গেছে। তুই যাহ আর তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস। আরসাল আসার আগেই। জানিসই তোহ আরসাল রাতে মেয়েদের একা একা বাইরে যাওয়া পছন্দ করে নাহ।”

–” তুমি চিন্তা করো নাহ বড় আম্মু, আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো।”
সেহের খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হতে চলে যায়।
সেহের রেডি হয়ে ইয়াশের বলে দেওয়া পার্টি সেন্টারে চলে আসে। এসেই ইয়াশ কে ফোন দিয়ে বলে যে সে চলে এসেছে। ইয়াশ বাইরে এসে সেহেরকে দেখে বলে ওঠে,
–” সেহের তুমি আসলা তাহলে। আমি তোহ বিশ্বাসই করতে পারছি নাহ। O my god.”

–” সত্যি কথা বলতে আমি আসতাম নাহ। শুধু আপনার বার্থডে আর এতোবার কল দিচ্ছিলেন তাই আসলাম।”

–” Thank you. Thank you so much.”

–” welcome. এখন কি ভেতরে যাওয়া যাবে?”

–” Sure. Come.”
ইয়াশ সেহেরকে ভেতরে নিয়ে এসে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগে সবার সাথে। সেহেরের এইসব ভালো লাগছিলো নাহ, তাও ইয়াশের বার্থডের জন্য সব মেনে নিচ্ছে। কিছু সময় পর সেহেরকে একজন লোকের সামনে এনে দাড় করিয়ে ইয়াশ বলে ওঠে,
–” এখন আমি আমার একজন ফ্রেন্ডের সাথে ইন্ট্রোডাক করাবো তোমাকে। দোস্ত!”

লোকটা উল্টো দিকে ঘুরে ছিলো। ইয়াশের ডাকে লোকটা ঘুরে দাড়ায়। সেহের লোকটার দিকে তাকাতেই যেনো সেহেরের মাথায় বাজ পড়ে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে আর লোকটাকে দেখেই সেহেরের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। লোকটা তার দিকে অবাক + অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর সেহেরের সামনে থাকা লোকটি হলো আরসাল। ইয়াশ আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আরসাল, লুক দোস্ত। She is Seher. My friend. আর সেহের এ হলো আমার ফ্রেন্ড আরসাল। আরসাল চৌধুরী।”

আরসাল সেহেরের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে ওঠে,
–” Hello! Miss Seher.”

সেহের আরসালের দিকে একবার তাকিয়ে তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়। ইয়াশ সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” সেহের কেক কাটার টাইম হয়ে গেছে। Let’s go.”

সেহের কি করবে বুঝতে পারছে নাহ। তাও ইয়াশের সাথে চলে যায় সেহের। ইয়াশ কেক কেটে সেহেরের মুখের সামনে ধরে। সেহের আরসালের দিকে তাকিয়ে দেখে আরসালকে খুব শান্ত দেখাচ্ছে। কিন্তু এই শান্ত রুপের ভয়াবহতা সেহের খুব ভালোভাবেই জানে। সেহের কি আর করবে ইয়াশের হাতে হালকা কেক খেয়ে নেয়।
পার্টি চলছে তার মতো করে। আরসাল ড্রিঙ্কস সাইডে বসে হালকা ড্রিঙ্কস করছে। ইয়াশ সেহেরের কাছে এসে বলে ওঠে,
–” সেহের!”

–” হুম।”

–” চলো একটা জিনিস দেখানোর আছে।”

–” কি আর কোথায় যাবো?”

–” উপরে।”

–” কিন্তু!”

–” কোনো কিন্তু নাহ। প্লিজ কাম।”
ইয়াশ সেহেরকে অনেকটা জোর করে নিয়ে যায়। আরসাল হঠাৎ চারপাশে তাকিয়ে দেখে সেহেরকে কোথাও দেখা যাচ্ছে নাহ। আরসাল বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে চারপাশ দেখতে লাগে। কিন্তু কোথাও সেহের বা ইয়াশ কে দেখা যাচ্ছে নাহ। আরসাল ইয়াশকে খুব ভালো করেই চিনে। আরসাল তোহ এইটায় বুঝতে পারছে নাহ, সেহেরের সাথে ইয়াশের বন্ধুত্ব কিভাবে পসিবেল। আরসাল আশেপাশে তাকিয়ে ওদের খুজতে থাকে।

এইদিকে……

ইয়াশ সেহেরকে একটা রুমে নিয়ে আসে। সেহের চারিদিকে একবার তাকিয়ে ইয়াশের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কি দেখাবেন এখানে?”

–” Seher, I love you.”

–” What, are you mad?”

–” সেহের বিশ্বাস করো আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি।”

–” কিন্তু আমি বাসি নাহ।”
বলেই সেহের রুম থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ইয়াশ সেহেরের হাত ধরে বিছানার উপর ফেলে দিয়ে বলে ওঠে,
–” এতো দিন তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাট কিছুতেই বুজছো নাহ। সরি সেহের, আজ আমি তোমার এমন অবস্থা করবো যে এরপর থেকে আমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারবে নাহ।”

–” মানে!”

–” মানে!”
কথাটা বলেই ইয়াশ হেসে দিয়ে নিজের ব্লেজার খুলে শার্টের বাটন খুলতে শুরু করে। যাহ দেখে সেহের ভয় পেয়ে যায়, আর কাঁপা কন্ঠে বলে ওঠে,
–” কি কি করছেন কি আপনি?”

সেহেরের কথা শুনে ইয়াশ হেসে দিয়ে নিজের শার্ট খুলে ফেলে দিয়ে সেহেরের দিকে আগাতে শুরু করে। সেহের ইয়াশকে আগাতে দেখে বসা অবস্থায় পেছনে যেতে যেতে কান্না করতে করতে বলে ওঠে,
–” দেখুন আমার কাছে আসবেন নাহ বলে দিলাম। খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।”

–” আচ্ছা তাহলে দেখি কি কি খারাপ হয়।”
কথাটা বলে সেহেরকে চেপে ধরে বিছানার সাথে। সেহের চেচাচ্ছে আর কান্না করছে। হঠাৎ ইয়াশ কে কেউ লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। সেহের তাকতেই দেখে আরসাল। আরসাল সেহেরের দিকে তাকাতেই সেহের আরসালকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে ওঠে,
–” ভাইয়া, আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো।”

আরসাল তাকিয়ে দেখে সেহেরর জামার হাতের কাছে ছিড়ে গেছে সাথে নখের আঁচড়ের দাগ দেখা যাচ্ছে। ইয়াশ আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” Arsal, are you mad?”

–” তোর সাহস কি করে হয় ওর দিকে চোখ দেওয়ার?”

–” মানে কি? কে হয় ও তোর?”

–” আমার জীবন।”
কথাটা বলেই আরসাল ইয়াশকে মারতে শুরু করে। ইয়াশ কে মারতে মারতে একদম আধমরা বানিয়ে দেয় আরসাল। সেহের ভয় পেয়ে যায়, গিয়ে আরসাল কে থামিয়ে দিতেই সেহেরের হাত ধরে রুম থেকে বেরিয়ে আসে আরসাল।

চলবে……………..🌹

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে