তুই শুধু আমার পর্ব-৩৪+৩৯

0
1470

#তুই শুধু আমার
#Writer_মারিয়া
#Part : 38+39

সাইফ একটা কফি শপে বসে আছে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কারো জন্য। চারিদিকে নিরিবিলি পরিবেশ। হঠাৎ একটা মেয়ে সামনে এসে দাড়াতেই সাইফ উঠে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” জেরিন?”

–” হুম!”
হ্যা, সাইফ এতো সময় জেরিনের জন্য অপেক্ষা করছিলো। জেরিনের দিকে তাকিয়ে সাইফ বলে ওঠে,
–” বসো।”

–” হুম!”
জেরিন বসতেই সাইফ আবার বলে ওঠে,
–” কি অর্ডার দিবো, বলো?”

–” কিছুই নাহ। আসলে আপনি আমাকে গতকাল ফোন দিয়ে একটা কাজের কথা বলেছিলেন। বিগ এমাউন্টের।”

–” হ্যা! শুনলাম তোমার হাসবেন্ড নাকি হসপিটালে এ্যাডমিট এন্ড তোমার হাসবেন্ড এর ট্রিটমেন্টের জন্য প্রতিদিন অনেক টাকা দরকার হয়।”

–” হুম! গত বছর একটা এক্সিডেন্টের পর থেকে এই অবস্থা।”

–” তোহ ডক্টর কি বললো?”

–” বললো ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যেতে। তার জন্য তোহ অনেক টাকা লাগতেছে। যাহ যাহ ছিলো বিক্রি দিয়ে এই পর্যন্ত ট্রিটমেন্ট করছি। এখন আমার অনেক টাকা লাগবে। তাই আপনি যখন বললেন কাজ আছে। তাই আমি এলাম।”

–” হুম! তোমার স্বামীর ট্রিটমেন্টের সব টাকা আমি দিবো। যদি তুমি আমার কাজ করে দাও।”

–” কি কাজ?”
সাইফ একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” আমান কে চেনো?”

আমানের কথা শুনতেই জেরিন চমকে সাইফের দিকে তাকায়। আর কম্পিত কণ্ঠে বলে ওঠে,
–” আপনি আমানকে কি করে চিনেন?”

–” সেইটা তোমার জানার বিষয় নাহ। তোমাকে জাস্ট যেইটা বলবো তুমি সেইটায় করবা। আন্ডারস্টান্ড।”

–” হুম! কিন্তু কাজ টাহ কি?”
সাইফ জেরিন কে সব বুঝিয়ে বলে দেয়, যে কি করতে হবে। কথা গুলো শুনতেই জেরিনের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে।

★★★
রাহুল বারান্দায় ডিভানে বসে সকালের আবহাওয়া উপভোগ করছে। ইয়াশ এসে রাহুলের পাশে বসে বলে ওঠে,
–” রাহুল!”

–” হুম বল!”

–” এখানে বসে বসে কি ভাবছিস?”

–” সেহেরের কথা। আচ্ছা যাই হোক, একটা কথা বলতো, তুই সেহেরকে কিভাবে চিনিস? আগে তোহ বলিস নি আমাকে? আর সেহেরই বাহ তোকে কিভাবে চিনে? তুই সেহেরের কি ক্ষতি করতে গিয়েছিলি?”

–” সে অনেক কথা।”

–” শুনবো। বল।”
ইয়াশ রাহুলকে সব কথা বলে দেয়। রাহুল পুরো হতভম্ব হয়ে যায় ইয়াশের কথা শুনে। রাহুল অবাক হয়ে ইয়াশের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তুই সেহেরকে রেপ করতে চেয়েছিলি?”

–” জিদের বসে ছিলাম। তাই এমনটাহ করতে গিয়েছিলাম।”

–” তোকে বড্ড অচেনা লাগছে ইয়াশ।”

–” I am sorry dost! আমি আর কখনো এইসব করবো নাহ। বিশ্বাস কর। আমি একদম ভালো হয়ে যাবো।”

–” তোকে একটা কথা বলার আছে?”

–” কি কথা?”

–” আমরা কাল রাতে লন্ডন চলে যাবো। অলটাইমের জন্য লন্ডন সেটেল হয়ে যাবো। আর তুইও যাবি আমার সাথে। আর এই বিডি তে আসবো নাহ। বিষাক্ত হয়ে গেছে বিডি আমার জন্য। শোন কাল রাত ১১ টায় ফ্লাইট। সব কিছু গুছিয়ে নে। বিদেশটায় আমার জন্য বেস্ট। বুঝলি?”

–” হুম!”
রাহুল বারান্দা থেকে ভেতরে চলে যায় আর ইয়াশ মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” আমাকে কালকের আগে সেহেরের সাথে একবার দেখা করে সব ভুল ভাঙিয়ে দিতে হবে। নাহলে রাহুল বিদেশে গিয়েও শান্তি পাবে নাহ। আমাকে সেহেরকে বলতে হবে সবটাহ। যে করেই হোক সবটাহ বলতে হবে।”

★★★
আরসাল একটা কাজে বাইরে যাওয়ার জন্য আয়নার সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছিল। হঠাৎ দরজায় আওয়াজ পেয়ে সেহের এসেছে ভেবে তাকাতেই দেখে নেহা দাড়িয়ে আছে। নেহাকে এখন এইসময় এখানে দেখে আরসালের মুখ বিরক্তিতে ভরে যায়। আরসাল নেহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” নেহা? তুমি এখন এইসময় এখানে?”

–” হুম! আসলে তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো তাই।”

–” সাট আপ নেহা। ঠিক করে কথা বলো। কারন ভুলে যেও নাহ, তুমি যে অধিকারে এই বাসায় এসেছো, সেই অধিকারে আমি তোমার ভাসুর হই। So, mind your language.”
কথাটাহ বলেই আরসাল চলে যেতে নিলেই, নেহা বলে ওঠে,
–” আরসাল তুমি খুব ভালো করেই জানো, আশফি কে বিয়ে করার কারন কি?”

নেহার কথা শুনে আরসাল নেহার দিকে তাকাতেই, নেহা আবার বলে ওঠে,
–” কিহ, তুমি কি জানো নাহ? তোমার ভাইকে আমি কেনো বিয়ে করেছি?”

আরসাল কিছু বলার আগেই পেছন থেকে কেউ বলে ওঠে,
–” শুধু আরসাল ভাইয়া একা কেনো, আমিও জানি।”

আরসাল আর নেহা তাকিয়ে দেখে সেহের মুচকি হাসি দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আরসালেরও মুখে হাসি ফুটে উঠে সেহেরকে দেখে। সেহের একবার আরসালের দিকে তাকিয়ে আবার নেহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” নেহা! সময় এবং সুযোগ কিন্তু বার বার আসে নাহ। তাই যাকে বিয়ে করেছো সে তোমাকে অনেক ভালোবাসে। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিতে শেখো। নাহলে নিজের হাত কামড়ানোর মতো দশা হবে।”

আরসাল সেহেরর দিকে এগিয়ে এসে সেহেরের মুখ ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে ওঠে,
–” আমি আসি জান!”

সেহের মুচকি হাসি দিতেই, আরসাল সেহেরের কপালে একটা চুমু একে দেয়। যাহ দেখে নেহা রেগে নিজের রুমে চলে যায়। আরসাল আর সেহের নেহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে জোরে হেসে দেয়।

★★★
আশা বিছানা গুছিয়ে রাখছিলো। হঠাৎ আশার মাথা ঘুরিয়ে বমি আসলে, তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে চলে যায় আশা। কয়েকদিন ধরে আশার শরীর টাহ একদম ভালো যাচ্ছে নাহ। প্রায় মাথা ঘোরায়, বমি আসে। একবার আমান কে বলতে চেয়েছিলো, কিন্তু পরে আর বলা হয় নি। পরে আবার ভেবেছে নিজে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আসবে কিন্তু আর যাওয়াও হয় নি। আজকাল ব্যাপার টাহ বেড়েছে, এইবার ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে চলে যায়। নিচে মিসেস. আখিকে বলে ডাক্তারের কাছে চলে যায় আশা।
ডাক্তার শায়লার সামনে বসে আছে আশা। ইনি আশাদের সবার সাথে অনেক দিনের পরিচিত। বাড়ির সবার চিকিৎসা ডক্টর শায়লা করে থাকেন। কিছু সময় পর ডাক্টর শায়লা বলে ওঠে,
–” আশা!”

–” জি আন্টি।”

–” আমি কাল কিছু কাজে একটু বাহিরে যাচ্ছি। আমি নিজে তোমার টেস্ট রিপোর্ট বানাতে চাই। তাই আমি পরশু এসে তোমার রিপোর্ট বানিয়ে তোমাকে কল দিবো। ওকে!”

–” ওকে আন্টি! বাট সিরিয়াস কিছু হয়ছে কি?”

–” নাহ আবার হ্যা ও বলা যায়।”

–” মানে?”

–” মানে টাহ আমি এখনও বলবো নাহ। আগে আমি রিপোর্ট বানাই, সিওর হই, তারপর বলবো। ওকে। বাট টেনশনের কোনো কারন নাই। ওকে?”

–” ওকে আন্টি। আমি আসি তাহলে?”

–” হুম!”

★★★
সেহের কিছু কাজে বিকালের দিকে লাইব্রেরীতে এসেছিলো। এখন বাইরে দাড়িয়ে আছে। ড্রাইভার কে ফোন দিয়েছে, ড্রাইভার আসছে বললো। হঠাৎ সেহেরের সামনে এসে একটা গাড়ি থামতেই সেহের একটু সরে পাশে দাড়ায়। গাড়ি থেকে ইয়াশকে নেমে আসতে দেখতেই সেহের অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ইয়াশের দিকে। ইয়াশ সেহেরের সামনপ আসতেই সেহের একটু পিছিয়ে যেতেই ইয়াশ বলে ওঠে,
–” আমি তোমার কোনো ক্ষতি করতে আসি নি সেহের। কিছু কথা বলতে এসেছি। খুব ইম্পর্টেন্ট।”

–” আমার আপনার কোনো কথা শোনার ইচ্ছা নাই।”

–” সেহের কাল রাত ১১ টায় ফ্লাইট। আমি আর রাহুল সারাজীবনের জন্য এই বিডি ছেড়ে বিদেশে চলে যাচ্ছি।”
কথাটাহ শুনতেই সেহের অবাক হয়ে ইয়াশের দিকে তাকাতেই ইয়াশ বলে ওঠে,
–” প্লিজ সেহের। কিছু সময় কথা বলবো। প্লিজ! লাস্টবারের মতো একবার বিশ্বাস করো। প্লিজ।”

সেহের আর ইয়াশ একটা কফিশপে বসে আছে। সেহের ইয়াশের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” বলো কি বলবে?”

–” সেহের ফাস্টেই তোমাকে সরি বলি! সেইদিনের জন্য। সেইদিনের ইয়াশ আর আজকের ইয়াশের মাঝে অনেক পার্থক্য। প্লিজ, আমাকে ক্ষমা করে দেও।”

–” It’s ok! তুমি যে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছো এইটায় বেশি।”

–” Thanks! সেহের, তোমাকে একটা সত্যি কথা বলার আছে।”

–” কি কথা বলো।”

–” সেহের সেইদিনের রিসোর্টে যে আগুন লেগেছিলো সেইটা রাহুল নাহ আমি লাগিয়েছিলাম।”
ইয়াশের কথা শুনে সেহের চমকে ইয়াশের দিকে তাকাতেই ইয়াশ আস্তে আস্তে সেহেরকে সব বলে দেয়। রাহুল সেহেরকে কতটা ভালোবাসে, বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর রাহুলের অবস্থা, রাহুলের এই অবস্থা সইতে নাহ পেরে ইয়াশের নিজের রাগের বশে রিসোর্টে আগুন লাগানো, রিসোর্টে আগুন লাগার কথা শুনে রাহুলের অবস্থা, সেহের রাহুলকে ভুল বুঝে চলে যাওয়ার পর রাহুলের অবস্থা, আর আজ সকালে রাহুলের বিদেশে চলে যাওয়ার কথা, সব বলে দেয় ইয়াশ সেহেরকে। সেহের যেনো থমকে গেছে ইয়াশের কথা শুনে। ইয়াশ মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” Rahul is best person in my life. জানো সেহের, রাহুলের আম্মু মানে আমার ফুপ্পি রাহুল হওয়ার সময় মারা যায়। রাহুল কখনো ওর মায়ের ভালোবাসা পায় নি। মায়ের ভালোবাসা কি তাই বুঝে নি। তাও কখনো বখে যায় নি। আমি ছোটবেলা থেকেই রাহুলের সাথে থাকতে খুব পছন্দ করতাম। আমাকে অনেক ভালোভাবে গাইড করতে পারে। সমবয়সী হলে ও একটু ম্যাচিওর ছেলে ছিলো অলটাইম। আমাকে অনেক সুন্দর করে ম্যানেজ করতে পারতো। ছোট বেলা থেকেই ওকে খুব ভালোবাসি। ওর কোনো কথা যেনো ফেলতে পারি নাহ। ওকে আমি দেখেছি, ও কোনো মেয়ের দিকে তাকাতোই নাহ। সেখানে আমি তোহ একটা প্লেবয়। বাট ও একদম আলাদা। কোনো মেয়ের সাথে কথাও বলতে চাইতো নাহ। সেই রাহুল কি নাহ একটা মেয়েকে এতো ভালোবাসে। ভাবতেও পারি নাহ বিষয় টাহ। যাই হোক, তুমি প্লিজ রাহুলের উপর রাগ করে থেকো নাহ। ও, তোমাকে অনেক ভালোবাসে সেহের। ও, চাই তুমি সুখী হও। আরসালের সাথে সুখী হও।”
সেহের কিছু নাহ বলে কফিশপ থেকে বেরিয়ে আসে। ইয়াশ সেহেরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেরিয়ে আসে কফিশপ থেকে।

★★★
আশা সোফায় বসে বসে টিভি দেখছিলো। কলিংবেলের আওয়াজে দরজা খুলে দেখে আমান। আমানকে দেখে আশা একটা মুচকি হাসি দেয়। আমান ভেতরেই ঢুকতেই আমানের পেছন পেছন একটা মেয়ে আসতেই আশা অবাক হয়ে আমানের দিকে তাকায়। আশা আমানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আমান ওনি কে?”

–” ওর নাম জেরিন।”
জেরিন নাম শুনতেই আশা চমকে তাকায় আমানের দিকে। মিসেস. আখি এগিয়ে এসে বলে ওঠে,
–” আরে আমান এই মেয়েটা কে?”

–” আম্মু ও জেরিন। আজ থেকে এই বাসায় কয়েকদিন থাকবে।”

–” ওহ আচ্ছা!”
আশা যেনো এখনো চমকে আছে। আমান ওর প্রাক্তন প্রেমিকাকে বাসায় নিয়ে এসেছে আবার বলছে বাসায় থাকবেও। আশা যেনো ব্যাপার টাহ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে নাহ। আশা একবার আমানের দিকে তাকিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। আমান আশার যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে, একজন সার্ভেন্ট কে জেরিন কে গেস্ট রুম দেখিয়ে দিতে বলে নিজের রুমে চলে আসে।
আশা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। আমান আশার পিছনে দাড়াতেই আশা টের পায় আমান পিছে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু আশা কিছু বলে নাহ। আমান বলে ওঠে,
–” আশা আমার কথাটা শোন।”

আশা পিছন ফিরে নাহ৷ সেইভাবেই দাড়িয়ে থাকে। আমান আবার বলে ওঠে,
–” আশা প্লিজ। আমার কথাট শোন। জেরিন অনেক বিপদে আছে। তাই আমি নিয়ে আসছি। অন্য কোনো কারন নাই।”

আমান আশাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে দেখে আশার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে। আমান আশার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
–” এই পাগলী তুই কাদছিস কেনো?”

–” তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাহ তোহ? আমি তোমাকে ছাড়া কিন্তু বাঁচতে পারবো নাহ।”

–” কি বলছিস তুই এইসব? আশা, জেরিন চমার অতীত। কিন্তু তুই তোহ আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত। আমার জীবনে এখন শুধু তুই।”
আশা আমানকে জড়িয়ে ধরলে আমানও আশাকে জড়িয়ে ধরে। আর ওদের এইসব দেখে জেরিন শয়তানি হাসি দিয়ে মনে মনে বলতে থাকে,
–” আহারে, বেচারী আশা। আফসোস হচ্ছে তোনার জন্য। তোমার এই সুখের সংসার বেশি দিনের নাহ। সাইফ তোমাকে পেতে চাই নাহ, শুধু তোমার সংসার ভাংতে চাই আর আরসালের ক্ষতি চায়। আর আমি এসেছি তোমার সংসার ভাংতে।”

★★★
নেহা নিজের রুমে বসে বসে ফোন চালাচ্ছে। আশফি মাত্র অফিস থেকে এসে ফ্রেশ হলো। আশফি আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছে, হঠাৎ একজোড়া হাত আশফিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতেই আশফির বুঝতে দেরি হয় নাহ, মানুষটাহ তার ভালোবাসার মানুষ নেহা। আশফি পেছনে ঘুরে নেহার টিশার্টের নিচে হাত দিয়ে চেপে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। নেহার আশফির মুখ ধরে আশফির কপালে একটা চুমু দিতেই আশফি মুচকি হাসি দেয়। আশফিও নেহার কপালে একটা চুমু একে দেয়। নেহা আশফির দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আশফি, তুমি বিশ্বাস করো তো আমি তোমাকে ভালোবাসি?”

–” কি বলছো তুমি এইসব?”

–” আশফি, বলো বিশ্বাস করো তোহ?”

–” চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি তোমাকে।”

–” I love you Ashfi.”

–” I love you too my jan.”
নেহা আশফিকে জড়িয়ে ধরলে আশফিও নেহাকে জড়িয়ে ধরে। নেহা শয়তানি হাসি দিয়ে মনে মনে বলতে থাকে,
–” কাল তোমাকে প্রথম ডোজ দিবো আশফি। Arsal! Wait and watch for your surprise.”

আশফি অফিস যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। নেহা আশফির পেছনে এসে বলে ওঠে,
–” আশফি!”

–” হুম।”

–” বলছি যে, তোমাদের অফিসের এম ডি কে?”

–” বড় আব্বু, বাট আরসাল ভাইয়া কে দায়িত্ব দেওয়া হবে।”

–” ওহ! তাহলে তোমার কাজ কি?”

–” মানে?”

–” মানে, তোমার কি হবে এই অফিসে কাজ করে? ভবিষ্যত কি তোমার?”

–” নেহা তুমি কি বলতে চাচ্ছো আমি বুঝতে পারছি নাহ। ক্লিয়ারলি বলো।”

–” দেখো, আশফি! কি পেয়েছো তুমি? আরসাল বিদেশ থেকে হায়ার স্টাডি করে আসছে। আর তুমি? বিডি তে স্টাডি করেছো। আরসাল এতোদিন বিদেশে ছিলো অথচ দেশে এসেই এখন কম্পানির এম ডি হয়ে যাচ্ছে। আর তুৃমি কি পেলে? এতোদিন অফিসে কাজ করে এখন আরসালের গোলামি খাটবে?”
নেহার কথা শুনে আশফি মুচকি হেসে বলে ওঠে,
–” অবশেষে নেহা কে আমি চিনলাম।”

–” মানে?”

–” তোমাকে যেইদিন বিয়ে করে আমি এই বাড়িতে এনেছিলাম। পরের দিন আমার গুরুর উক্তি ছিলো, আমি নাকি নিজের অজান্তেই আগুনে ঝাপ দিয়েছি।’

–” গুরু? কে তোমার গুরু?”

–” পারবে তোহ নামটা সহ্য করতে?”

–” মানে?”

–” মানে হলো আমার গুরুর নাম আরসাল চৌধুরী।”
নেহা আশফির দিকে অবাক হয়ে তাকালে আশফি মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” নেহা, তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। আমি কি পেয়েছি তাই নাহ? আমি আরসাল চৌধুরীর কাছের থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। আরসাল ভাইয়া নিজের ইচ্ছেতে বিদেশে যায় নি। জোর করে পাঠানো হয়েছিলো। চাইলে আমিও যেতে পারতাম। কিন্তু আমি কখনো যেতে চাই নি। আমাদের বিজনেসের এমডি আমাকেই বানাতে চেয়েছিলো ভাইয়া, কিন্তু আমি হতে চাই নি। কারন, তুমি বুঝবে নাহ। বাট আমি আমার লাইফে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। যেটা আরসাল ভাইয়া নিজেও পাই নি।”

নেহা আশফির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আশফি নেহার দিকে তাকিয়ে আবার বলে ওঠে,
–” জানো নেহা, আমি লাইফে আরসাল ভাইয়া কে নাহ জানিয়ে যতবার নিজে একা একা কাজ করেছি ততবার বিপদে পড়েছি বাহ কাজটাহ আমার ভুল হয়েছে। আর সেইটার আবারও প্রমান পেলাম, তোমাকে বিয়ে করে।”

আশফির কথা শুনে নেহা চমকে উঠে। আশফির দিকে তাকিয়ে আছে নেহা। আশফি মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” তুমি যদি ভেবে থাকো আমি কিছুই জানি নাহ, তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। তুমি আমাকে, আমার ভালোবাসাকে দাবার গুটি হিসাবে সাজিয়েছো। নেহা তোমার একবারও কেনো মনে হলো নাহ যে, আমি কেনো তোমাকে স্পর্শ করি নাহ? কারন এই মুহূর্তে তোমাকে ভালোবাসি ঠিকই, কিন্তু তুমি আমার ভালোবাসাকে অপমান করেছো। আমার ভালোবাসাকে ঘোড়া বানিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাচ্ছো। কি হবে নেহা এইসব করে? আমার ভাইয়াকে ভালোবাসাে, কিন্তু আমার ভাইয়া তোহ তার সবটুকু দিয়ে সেহেরকে ভালোবাসে। কি হবে সেহেরের ক্ষতি করে, পাবে তোহ আরসাল চৌধুরীকে? কিন্তু একটা কথা নেহা, তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী, তোমার খেয়াল আমি রাখবো ততোদিন, যতদিন তুমি আমার পরিবারের কোনো ক্ষতি করবে নাহ। বাট আমার পরিবারের কারো উপর এতোটুকু আচ আসলে আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো নাহ। তোমার আর আমার সম্পর্ক এখন শুধু বিয়ের, আশফির ভালোবাসা তুমি হারিয়েছো।”

কথাগুলো বলেই আশফি চলে যায়। নেহা বিছানার উপর ধপ করে বসে পড়ে। আশফির কথাগুলো যেনো ঠিক মেনে নিতে পারছে নাহ নেহা। আশফি ওকে যে ভালোবাসার কথা বলছিলো সব শুধু নিজেকে লুকিয়ে রাখতে। আজ নেহা আরসালকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলো, কিন্তু এখন নিজেই সারপ্রাইজ পেয়ে গেলো। প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে নেহার, আশফি কে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করছে নেহার।

★★★
আরসাল নিজের অফিসে কাজ করছিলো। হঠাৎ ফোনে কারোর কলের আওয়াজে তাকিয়ে দেখে আমানের ফোন। আরসাল ফোন রিসিভ করে বলে ওঠে,
–” হ্যা! আমান বল।”

–” দোস্ত তোকে একটা কথা বলার ছিলো।”

–” হুম বল!”

–” জেরিন কে আমি আমাদের বাসায় নিয়ে আসছি।”

–” মানে? কিন্তু কেনো? আর কবে?”

–” গতকাল। ও বলছিলো ও অনেক বিপদে আছে। ওর হাসবেন্ড নাকি ওর উপর অত্যাচার করে। তাই কয়েকদিনের জন্য আশ্রয় চাচ্ছিলো। তাই আমি নিয়ে আসছি।”

–” তোরা নাহ এমন এক একটা কাজ করিস, যে আমি কি করবো বুঝতে পারি নাহ। আচ্ছা ওয়েট! আমি তোর সাথে পরে এই ব্যাপারে কথা বলছি।”

–” ওকে!”
আরসাল ফোন কেটে দিয়ে কিছু সময় চুপ করে বসে থেকে কাউকে ফোন দিয়ে বলে ওঠে,
–” আমি একটা ফটো পাঠাচ্ছি। আর ফটো টার মেয়েটার নাম জেরিন। ওর সমস্ত ডিটেইলস আমার চাই।”

বলেই আরসাল ফোন কেটে দিয়ে আশফির কেবিনে গিয়ে দেখে আশফি চুপচাপ বসে বসে কিছু একটা ভাবছে। আরসাল আশফির অপোজিট চেয়ারে বসে বলে ওঠে,
–” কি ভাবছিস এতো?”

কারোর আওয়াজে আশফির ধ্যান ভাঙলে সামনে তাকিয়ে দেখে আরসাল। আশফি আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ভাবছি, আমার লাইফ টাই ভুলের উপর দিয়ে গেলো। আজ পর্যন্ত একা একা নিজের জন্য একটা বেস্ট ডিসিশন নিতে পারলাম নাহ। এমন কি লাইফের সবচেয়ে বড় ডিসিশন টাহও নাহ।”

–” নেহার কথা ভাবছিস?”

–” তাছাড়া আর কি? এরকম একটা মেয়েকে এতো ভালোবাসলাম। নাহ পারছি, ওকে লাইফ থেকে বের করতে, আর নাহ পারছি ওর কাছে যেতে।”

–” আশফি, তোদের বিয়ে হয়েছে ৪ ৫ দিন হলো। আমি ভেবেছিলাম বিষয়গুলো তোকে বলবো নাহ। তুই নিজেই বুঝে যাবি। বাট পরে আবার ভাবলাম, তোকে আগে থেকে বলে দেওয়া উচিত। কারন নেহা অনেক রকম চাল চালতে পারে, তাতেহ আমাদের পরিবারেই ভাঙন লেগে যেতে পারে। তাই তোকে আগে থেকেই বলে দেওয়াটায় বেটার।”

–” তুই ঠিক করেছিস। আজ ও এরকম একটা কাজ করতে গিয়েছিল। তারপর আর সহ্য করতে নাহ পেরে ওকে সব বলে দেয়, যে আমি সব জানি। ও আমার ভালোবাসাকে অপমান করেছে, দাবার গুটি বানাতে চেয়েছে। সব বলে দিয়েছি।”

–” ভালো করেছিস। চিন্তা করিস নাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।”
আরসালের কথা শুনে আশফি আরসালের দিকে তাকালে আরসাল একটা মুচকি হাসি দিতেই আশফি যেনো এক অজানা শান্তি অনুভব করে।

★★★
রাহুল আর ইয়াশ এয়ারপোর্টে চলে এসেছে। রাহুল আর ইয়াশের সব চেকিং কমপ্লিট। ওরা ভিতরে চলে যাবে, কিন্তু তার আগেই কেউ “রাহুল ভাইয়া” বলে ডেকে উঠে। গলার আওয়াজ পেতেই পেছনে তাকিয়ে দেখে আরসাল আর সেহের দাড়িয়ে আছে। রাহুল যেনো বিশ্বাসই করতে পারছে নাহ। সেহের এগিয়ে এসে রাহুলের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আমাকে নাহ বলেই চলে যাচ্ছো।”

–” সেহের তুমি?”

–” তুমি তোহ আমাকে জানালে নাহ। আমার সাথে একবার দেখা করতেও গেলে নাহ। তাই আমি এলাম তোমার সাথে দেখা করতে।”

–” তুমিই তোহ বলেছিলে, আমার মুখ দেখতে চাও নাহ।”

–” তুমি কেনো আমার ভুলটাহ ভাঙিয়ে দিলে নাহ?”

–” সরি!”

–” তুমি কেনো সরি বলছো? সরি তোহ আমার বলা উচিত। কারন অন্যায় টাহ তোহ আমি করেছি।”

–” আমি চাই নাহ তুমি সরি বলো। কারন সরি আমরা তখনই বলি যখন কেউ কারো কাছে অন্যায় করে। কিন্তু তুমি তোহ কোনো অন্যায় করো নি। আর রইলো কথা সেইদিনের ব্যাপার টাহ? ভাগ্যিস তুৃমি ঐদিন ওরকম করেছিলে, তাই আমি আরও খাঁটি হয়ে গেছি।”

–” আচ্ছা, সে কথা যাক। তুমি কি সত্যিই আর দেশে আসবে নাহ? একেবারে চলে যাচ্ছো আমাদের ছেড়ে।”

–” ভেবেছিলাম একেবারেই চলে যাবো। বাট এখন বলছি, আমি আবারও আসবো, বাট সেইদিন আসবো, যেইদিন আমি এসে চাচ্চু ডাকটা শুনতে পাবো।”
রাহুলের কথা শুনে সেহের লজ্জা পেয়ে যায়। সেহেরকে লজ্জা পেতে দেখে আরসাল, রাহুল আর ইয়াশ হেসে দেয়। রাহুল আরসালের সামনে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” আসি, ওর দিকে খেয়াল রেখো। ও অনেক মিষ্টি একটা মেয়ে। আর সত্যি সত্যি মন থেকে দোয়া করছি, বিশ্বাস করো, একদম মন থেকে দোয়া করছি, তোমরা খুব সুখী হও।”

আরসাল, রাহুলকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে,
–” তাড়াতাড়ি বিডি তে ব্যাক করো।”

–” তাহলে তাড়াতাড়ি আমাকে চাচ্চু বানাও। আমি তাহলে তাড়াতাড়ি ব্যাক করবো।”
রাহুলের কথা শুনে আরসাল হেসে দেয়। এনাউন্সমেন্ট দিতে থাকে সবাইকে প্লেনে উঠার জন্য। রাহুল আর ইয়াশ হাত নাড়িয়ে ওদের বিদায় দিয়ে ভিতরে যেতে থাকে। আরসাল আর সেহেরও ওদের বিদায় জানিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে আসে। সেইদিন ইয়াশের কাছে সবাটাহ শুনে বাসায় এসে সেহের আরসালের কাছে অনেক কান্না করলে আরসাল সেহেরকে এয়ারপোর্টে এসে রাহুলকে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে। তাই ওরা আজ এয়ারপোর্টে এসেছিলো।
বাসায় আসতে আসতে প্রায় রাত ১১ঃ৩০ বেজে যায়। আরসাল আর সেহের রুমে আসতেই নেহা তাড়াতাড়ি ওদের রুমে এসে বলে ওঠে,
–” আরসাল আশফি এখনো বাসায় আসে নি।”

–” তাতে তোমার কি?”

–” আরসাল প্লিজ! আমার খুব চিন্তা হচ্ছে। প্লিজ আরসাল বলো নাহ, আশফি কোথায়?”

–” আমি জানি নাহ।”

–” আমি হাত জোর করছি আরসাল। আমি আশফির সাথে থাকতে চাই। ভালোবাসতে চাই ওকে। ও অনেক কষ্ট পেয়েছে। প্লিজ আরসাল। আমি ক্ষমা চাচ্ছি তোমার কাছে।”

–” আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে কি হবে? যার সাথে অন্যায় করেছো। যার ভালোবাসাকে অপমান করেছো তার কাছে ক্ষমা চাও।”

–” আশফি আমার ফোন টায় তুলছে নাহ।”

–” এইবার তুলবে। যাও ফোন দেও।”
আরসালের কথা শুনতেই নেহা দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়। আরসাল সেহেরের দিকে তাকিয়ে দেখে সেহের মুচকি হেসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আরসাল দুই হাত বাড়িয়ে সেহেরকে কাছে আসতে ইশারা করতেই সেহের এগিয়ে এসে আরসালকে জড়িয়ে ধরে। আরসালও সেহেরকে জড়িয়ে ধরে টাইট করে।

★★★
নেহা নিজের রুমে এসে আশফিকে ফোন দিতেই আশফি কল রিসিভ করলে নেহা কান্না করে দিয়ে বলে ওঠে,
–” আশফি কোথায় তুমি? এতো রাগ আমার উপর। I sorry Ashfi. আমি এখন শুধু তোমাকে চাই। তোমাকে নিয়ে সংসার বাঁধতে চাই। ভালোবাসতে চাই তোমাকে। বলতে চাই, #তুমি_শুধু_আমার। প্লিজ আশফি চুপ করে থেকো নাহ, কিছু তোহ বলো?”

–” আমাকে তোমার কি দরকার? তুমি অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলে ঐ বাসায় থাকার জন্য, পেয়ে গেছো। চেয়েছো তোহ আরসাল ভাইয়া কে, তাকে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাও। দেখো পারো কি নাহ? যদি চেষ্টা করার পর আরসাল ভাইয়াকে নাহ পাও, আমাকে জানিয়ো, তখন আমি তোমার কাছে আসবো। কারন তুমি আমার ভালোবাসাকে দাবার গুটি সাজালেও, আমি যে তোমাকে ভালোবাসি।”

–” আশফি প্লিজ। আমার আর কাউকে চাই নাহ। আমার শুধু তুমি হলেই চলবে। সকালে যে নেহাকে দেখে তুমি বাসা থেকে বের হয়েছো, সেই নেহা তোমার সকালের বলা কথায় খাটি সোনা হয়ে গেছে। আমার আর কাউকে লাগবে নাহ। আমার তোমাকে চাই। প্লিজ বাসায় আসো। হ্যালো! হ্যালো! আশফি?”
ফোন কেটে দিয়েছে আশফি নেহা জোরে জোরে কান্না করতে থাকে। কিছু সময় পর রুমে কারো আওয়াজ পেয়ে নেহা সামনে তাকিয়ে দেখে আশফি দাঁড়িয়ে আছে। নেহা দৌড়ে আশফিকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। কিন্তু আশফি ধরে নাহ নেহাকে। নেহা কান্না করতে করতে বলে ওঠে,
–” I am sorry. প্লিজ, আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আর কখনো আমি এমন করবো নাহ। প্লিজ, আশফি আমাকে ক্ষমা করে দেও।”

আশফি আস্তে আস্তে নেহার মাথায় হাত রেখে বলে ওঠে,
–” ঠিক আছে, আর কান্না করতে হবে নাহ। তুমি হয়তো জানো নাহ, তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারি নাহ। So, don’t cry.”

নেহা আশফির থেকে সরে এসে আশফির দিকে তাকিয়ে থাকে। আশফি নেহার চোখ মুছে দিয়ে বলে ওঠে,
–” স্মাইল করো।”

–” তুমি এখনো আমাকে স্মাইল করতে বলছো?”

–” হুম! কারন ভালোবাসি যে।”
নেহা আবার আশফিকে জড়িয়ে ধরলে, আশফিও নেহাকে জড়িয়ে ধরে।

★★★
সকালবেলা আরসালের ফোনে একটা কল আসলে আরসাল ফোন টাহ রিসিভ করে যাহ শোনে, তাতে আরসালের ঠোঁটে বাকা হাসি ফুটে উঠে। এইবার আরসালের বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আরসাল আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে, বেরিয়ে যায় রুম থেকে।

চলবে…………….🌹

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে