তুই আমারই থাকবি part-05

0
2820

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_5
!
‘বাট তুমি এত হাইপার হচ্ছো কেন?আমি তো জাস্ট কচু’র বিষয়ে জানতে চেয়েছি।
!
-ওহহ!আমাদের বাসার ওখানে অনেক কচু বাগান আছে,বাসায় গেলে দেখিয়ে আনবো আপনাকে!
!
-ভ্রু কুঁচকে, ওকে!তুমি আমার গার্ড!
!
-পাগল! আমি কোন দুঃখে আপনার গার্ড হবো? আপনার পাপের ভাগীদার হতে?
!
-মানে?আমি কী এমন পাপ করেছি যে,আমায় পাপী বলছ?(রেগে)
!
-ওহহ…আপনি আবার ভুলেও যান?আপনি জানেন না আপনি আমার সাথে কি করেছেন?জোর করে তুলে এনে বিয়ে করেছেন,আরো কত কি কি করেছেন!আমার আব্বু-আম্মু পর্যন্ত জানে না আমি কোথায়?
!
-জানে, তোমার আম্মু-আব্বু জানে দু’দিন ধরে তুমি তোমার বান্ধবীর বাসায় আছে। সো চিন্তার কোনো কারণই নেই…..সো নেক্সট টাইম আমায় পাপী বলবা না।গট ইট!ড্যাম গার্ল!
!
-অবাক হলাম,এটা নিশ্চয় ব্যাটার নতুন কোনো কারসাজি! ব্যাটা বহুত হারামি আছে।মনে মনে একাত্তরটা গালি দিলাম…..
!
-এই খুশবু!আমার পা গুলো টিপে দাও তো,অনেক পেইন হচ্ছে!(চোখমুখ কুঁচকে)
!
-হোয়াট?আমি কেন আপনার পা টিপবো? আপনি এত ছুতো ধরেন!বাহ বাহ।আমি পারবো না আপনার পা টিপতে।তার উপর পরে আছেন সর্ট প্যান্ট। আমিতো জীবনেও ধরবো না….
!
-তুমি যদি আমার পা না টিপে দাও তাহলে এমন কামড় দিবো যে, এই আবরারের নাম সাত জন্মেও ভুলবে না।আর এই দুঃখে তুমি কচু গাছের সাথে ফাঁস লেগে মরবে…..
!
-আপনি অলওয়েজ আমাকে খাটানোর ধান্ধায় থাকবেন নাকি?যত্তসব….বলেই একরাশ বিরক্তি নিয়ে পা টিপতে গেলাম।
!
-ওনার পা টিপছি আর কপাল চাপড়াচ্ছি।কি এমন দোষ করেছিলাম যে,এমন গুন্ডা জামাই কপালে পড়লো, যে আমায় অত্যাচার করে মেরেই ফেলবে?আমিতো ছোট থেকেই চেয়েছিলাম যে,একটা সৌদি আরবের প্রবাসী বাঙালীকে বিয়ে করমু।ব্যাটা জুব্বা পড়ে, হাতে সোনালী ঘড়ি পড়ে আর মাথায় ইয়া বড় পাগড়ী পড়বে আর হাতে সারাদিন তাসবীহ থাকবে। আর কিছুক্ষণ পরপর বলবে ‘মারহাবা, মারহাবা ‘।

আর এসব চেয়েছিলাম বলেই কপালে পড়লো এই ডেঞ্জেরাস,স্টাইলিশ, গুন্ডা,মডেল বয় এই ইংল্যান্ড ফেরত আবরার আগুন চৌধুরী! নামেই আমাকে ঝলসে দিবে মনে হয়!ব্যাটা নাকি কচু চিনে নাহ!

এইসব কান্ড-কীর্তি দেখতে থাকলে শেষ বয়সে হার্ট-এট্যাক নয়তো ব্রেন স্ট্রোক করে আমি ইন্তিকাল করমু।হায়…আমার বাচ্চাকাচ্চা সব এতিম হয়ে যাবে…আমি কাকে আর আদর করমু?…..ধুর…বলেই দিলাম এক ঘুসি….
!
-আহ….আমার পা!বেড থেকে উঠে(চিৎকার করে)হোয়াট খুশবু? ডাফার গার্ল!তুমি বেশি লায়েক হয়ে গেছ?দু’টো সুইট কথা বলতেই এত মাথায় চড়ে গেছ?সেদিনের থাপ্পড়ের পানিশমেন্ট এত সহজেই ভুলে গেলা?তোমার এত বড় সাহস যে,আমার পায়ে ঘুসি মেরেছ?তুমি জানো, এতে আমার পায়ের টিস্যু গুলো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে?কোনো ধারণা আছে তোমার?ড্যাম ইট…. বলেই আমার গালে থাপ্পড় মেরে দিলো….আর আছাড় মেরে গ্লাসটা ভেঙে ফেললো!!(রেগে চিৎকার করে)
!
-আমি ভয়ে বাক্যহারা হয়ে গেলাম।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, কখন যে কাঁদতে শুরু করেছি বুঝতেই পারিনি।এটা আবার একটা রোগ আমার,কেউ অতিরিক্ত বকাঝকা করলেই এমন হয় আমার।মাথাটা ভো ভো করছে।বেশি কান্না করলেই মাইগ্রেনের ব্যাথাটা বেড়ে যায়…..
!
-কী এখন চুপ করে আছো কেন?আন্সার মি….ডাফার!(রেগে)
!
-আসলে আমি বুঝতে পারিনি।অন্যমনস্ক ছিলাম তো তাই…আমি দুঃখিত। কান্না চেপে চোখ মুছে বললাম।মুখ দিয়ে কান্না বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে, বাট অনেক কষ্ট করে আটকে রাখছি..এটাও আরেক রোগ আমার!
!
-তোমাকে এর জন্য অনেক ভুগতে হবে…..পানিশমেন্ট হিসেবে আজ তোমার লাঞ্চ,ডিনার সব বন্ধ!আর আম্মুও কোথায় বেরিয়েছে আজ ফিরবে না!সো আমার কথা মতোই সব চলবে……(রেগে)
!
-আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। এত কান্না আসছে যে বলার বাইরে।মাথাটা ভো ভো করে ঘুরছে আর প্রচণ্ড ক্ষিধেও পেয়েছে।সকালে মামানির সাথে ব্রেকফাস্ট করেছিলাম…..মাথা ঘুরলে বা ব্যাথা, টেনশন হলে আমার প্রচণ্ড ক্ষিধে পায় আর সাথে সাথে কিছু না খেলে সেন্সলেস হয়ে যাই!কিন্তু উনাকে বলবো কিভাবে? আমি মরে গেলেও উনার খাবার খাবো না। এটা নিজের কাছেই নিজের প্রমিজ!যতই হো, আত্নসম্মান তো আর খোয়াতে পারিনা এই গুন্ডার কাছে….(মনেমনে)
!
-যাও,চুপচাপ বসে থাকো! (রেগে)
!
-কিছু বললাম না।
!
-যাও এখান থেকে,আমার সামনে আসবে না।তাহলে এমন শাস্তি দিবো যে……(রেগে)
!
-উনার কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি দৌড়ে ব্যালকুনিতে চলে গেলাম।ব্যালকুনির দরজা লাগিয়ে বসে পড়লাম একটা চেয়ারে।
বেশ উজ্জ্বল রোদ উঠেছে।চারদিকে কোনো কোলাহল নেই।বেশ নীরব এলাকা।বাগানে মালীচাচা কাজ করছে।মস্তবড় টাকটা রোদে চকচক করছে।মৃদুমন্দ হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে সবকিছু। আর আমার এখন কান্না পাচ্ছে।ভীষণ ভীষণ কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে…..
এখন যদি আনিকা আমার পাশে থাকতো তাহলে বলতো,দেখেছিস আমাদের সুগন্ধি আপা কাঁদবে রে!সবাই এই অস্থির মোমেন্টটা ভিডিও করে নাও…..
!
-আর আমি কাঁদোকাঁদো চেহারা নিয়ে বলতাম,ফাজলামি পাইছোস?
!
-না, বান্ধুপি।তোমাকে হাসাইবার চেষ্টা করিতেছি!
!
-তুই হাস না, ভাল করে হাস,,,,,আমার দুঃখে কাঁদবি তা না।তুই ফাউল মজা করতাছিস..
!
-তারপর আনিকা কান্নাকাটির ভান করে আমাকে হাসাবার অবিরাম চেষ্টা করতো।আমাকে কখনো কাঁদতে দেখলে সবার সাথে ঝগড়া শুরু করে দিতো.. আর আমার মন ভালো হয়ে যেত….বেচারি..আনিকা,, খুব কিউট একটা মেয়ে…সবসময় আমার পাশে থাকে!কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন!
!
-হঠাৎ ব্যালকুনির দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করলো মিস্টার আবরার। চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে ফেলছে……’

চলবে….
হ্যাপি রিডিং??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে