Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তাহার উম্মাদনায় মত্ততাহার উম্মাদনায় মত্ত পর্ব-৩৫ এবং শেষ পর্ব

তাহার উম্মাদনায় মত্ত পর্ব-৩৫ এবং শেষ পর্ব

#তাহার_উম্মাদনায়_মত্ত
#লাবিবা_আল_তাসফি

৩৫.(শেষ-প্রথম খন্ড)
শীতের চাদর চিড়ে এক খন্ড সূর্যের আলো এসে পড়েছে অন্তির রুমে। টেবিলে ধোঁয়া ওঠা কফির মগ। মাত্রই পারু এসে রেখে গেছে। অন্তি কফির মগে লম্বা চুমুক দিয়ে তৃপ্তির শ্বাস ফেলে। ফোন হাতে তুলে তন্নিকে কল করে। কল একবার বাজতেই ওপাশ থেকে তন্নি কল রিসিভ করে। কাঁদো গলায় বলে,

‘অভশেষে তোর আমায় মনে পড়লো! এমন কেমনে পাড়িশ? রাত থেকে না ঘুমিয়ে ফোন হাতে বসে আছি। চিন্তায় চুল পড়ে টাক হয়ে যাওয়ার জোগাড়। হয়তো জ্বর ও চলে এসেছে। আর তুই কিনা পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস?’

‘ঘুমের সাথে নো কম্প্রোমাইজ বেব। চিন্তা চিন্তার জায়গায় আর ঘুম ঘুমের। একের জন্য অন্যকে ছাড়তে পারবো না আমি।’

অন্তির কথার পিঠে তন্নি জবাব দিলো না। তার দুচোখ ভরা ঘুম। যখন তখন ঝড়ে ভেঙ্গে পড়া গাছের মতো ঢুলে পড়বে সে। তন্নি গা ঝাড়া দিয়ে সোজা হয়ে বসে। নিভু গলায় বলে,

‘আপডেট বল। শুনে ঘুম দিব। খারাপ সংবাদ হলে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমাবো আর ভালো হলে আগামীকাল দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।’

অন্তি দারুন করে হাসে। হাসির তালে সাদা দাঁত গুলো সূর্যের আলোয় ঝিলিক দিয়ে ওঠে।

‘আজকের সকালটার মতো সতেজ সংবাদ। সামান্য বিষাদ ও রয়েছে। মা খুব রেগে আছে আমার উপর। তাছাড়া সব ঠিকঠাক। শাশুড়ি আম্মু সব ঠিক করে রেখে গেছেন।’

‘আলহামদুলিল্লাহ। কংগ্রাচুলেশন এবং টাটা।’

ফোন কাটলে অন্তি লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে। তার আবারো ঘুম পাচ্ছে খুব। মন ভালো থাকলে ঘুম ভালো‌হয়। অন্তি গলা উঁচু করে পারুকে ডাকে।

‘আমার ঘুম না ভাঙা পর্যন্ত এ রুমে আসা মানা। আজকের জন্য আমার রুমের সকল কাজ থেকে তোকে ছুটি দেওয়া হলো।’

অন্তি ঘুমিয়ে যাওয়ার আগে আরো একটা কাজ করলো। দিহানের নম্বরে ছোট করে একটা টেক্সট পাঠালো,

‘Congratulations! you’re gonna get me।’

________________

সময়টা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। হুট করেই ভিষণ শীত নেমেছে। অন্তির‌ রুমের বাতি অফ। কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে। আজ দিহানের সাথে ঝগড়া হয়েছে তার। ঝগড়া বলতে মন কষাকষি। লোকটাকে দুটো কড়া কথা শোনাতে পারলে দারুন হতো। কিন্তু সে তা পারেনি। কিছু বলতে নিলেই তার বুকে ভালোবাসার ঢেউ উথলে ওঠে। আর কিছু বলা হয়না। তবে সে সহ্য ও করতে পারছে না। এমন পাথুরে মানবের সাথে কিভাবে সংসার করবে সে? দুটো মিষ্টি কথা যার মুখ থেকে বের হয়না তাকে নিয়ে কোন সাগরে ভেসে যাওয়ার স্বপ্ন দেখবে সে? অন্তির মাথার মধ্যে রাগটা চড়া দিয়ে ওঠে। শোয়া থেকে উঠে বসে বড় করে শ্বাস ফেলে। বালিশের পাশ থেকে ফোন বের করে দিহানকে কল করতে। কিন্তু তার পূর্বেই দিহানের কল আসে। অন্তি কলের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। হঠাৎ এই ব্যস্ত মানবের তার কথা মনে পড়লো কেন?

‘ছাদে আসো।’

‘এই মুহূর্তে……’

ছোট বাক্যটা শেষ হতেই টুট টুট করে কল কেটে গেলো। অন্তির জবাব শোনার অপেক্ষা করলো না সে। অন্তি চোখ বন্ধ করে বড় শ্বাস নেয়। আজ এই লোককে সে নিজ হাতে খু*ন করবে।
বাহিরে বেশ ঠান্ডা বাতাস। অন্তির শরীরে পাতলা জামা কেবল। রাগের আগুনে তার ঠান্ডা লাগছে না বোধহয়। দিহান দাঁড়িয়ে আছে রেলিংয়ের পাশ ঘেঁষে। তার নজর ছাদের লোহার দরজা থেকে উঠে আসা অন্তির দিকে। ভ্রু গুলো সামান্য কুঁচকে তাকিয়ে আছে। অন্তি কাছে এসে দাঁড়ালে দিহান তার জ্যাকেট খুলে অন্তির গায়ে জড়িয়ে দেয়। গম্ভীর গলায় বলে,

‘আমার উপরের রাগ নিজের শরীরের উপর কেন দেখাচ্ছো? এতটুকু শরীরে এত রাগ কোথায় থাকে?’

অন্তি পুরো কথাকে এড়িয়ে যেয়ে কাঠকাঠ গলায় বলে,

‘কেন এসেছেন?’

‘তোমায় দেখতে।’

এই অতি সামান্য কথায় অন্তির জমে থাকা রাগ গলে পানির ন্যায় তরল রূপ ধারণ করে। চোখ ছলছল করে ওঠে। অভিমান গুলো জল আকাড়ে ঝড়ে পড়তে নিলে দিহান তা আঙুলের ছোঁয়ায় মুছে দেয়।

‘আপনি আমায় একটু বেশি বেশি ভালোবাসতে পারেন না?’

‘কাঁদে না। এখন থেকে বাসবো।’

‘আপনি আমায় ভালোবাসতে ভুলে যান। শুধু ব্যস্ত থাকেন। দেখা করেন না। এমন করলে আমি আপনায় আর ভালোবাসবো না।’

কথাটা বলে অন্তি নাক টানে। দিহান অন্তির ঠোঁটে আঙুল ছুঁয়ে বাঁধা দেয়। নরম গলায় শাসন ভঙ্গিতে বলে,

‘এমনটা যেন কখনো না হয়। কিছু কাজে ব্যস্ত থাকছি আজকাল। কাজটা শেষ হলেই তোমায় অনেক সময় দিবো। তখন বিরক্ত হলে চলবে না। তবে তোমার কাজ এই আমাকে ভালবাসা কেবল। আমাকে ভালোবাসতে ভোলার মতো ভুল কখনো করবে না জান। এই ভুলের মাফ নেই যে!’

অন্তি গোল চোখে তাকিয়ে থাকে। আকাশে একখন্দ চাঁদ আলো ছড়াচ্ছে। সেই মিষ্টি আলোয় দিহানের মুখটা জ্বলজ্বল করছে। ঝিরিঝিরি বাতাসে কপালে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো দোল খাচ্ছে। অন্তিকে ছেড়ে দিহান বুকে দু হাত বেঁধে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশে অন্তি চুপটি করে দাঁড়িয়ে। কথা না হলেও পাশাপাশি নিরবে দাঁড়িয়ে থাকাটা খুব করে অনুভব করছে সে। দিহানের চোখ বন্ধ। অন্তি দূরত্ব ঘুচিয়ে কিছুটা কাছে দাঁড়ায়। নিচু গলায় বলে,

‘শুনুন?’

‘শুনছি।’

‘আপনার বুক থেতে হাত নামান প্লিজ।’

‘কেন?’

অন্তি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। সে এখন কিভাবে বলবে যে সে একটু দিহানের বুকে মাথা রাখতে চায়? সে বোঝে না? এত অবুঝ কেন? অন্তির মন খারাপ হয়। মলিন হেসে বলে,

‘না কিছু না।’

অন্তি সরে দাঁড়াতে নিলে দিহান তার হাত টেনে ঘুড়িয়ে আঁকড়ে ধরে। হঠাৎ এমন হওয়ায় খানিক চমকে যায় অন্তি। নড়েচড়ে ওঠে অল্প। খানিক বাদে শান্ত হয়ে লেপ্টে থাকে। দিহানের শরীরের কড়া গন্ধ নাকে ধাক্কা খায়। অন্তি চোখ বুঝে সেই গন্ধ নেয়। দিহান ফিসফিস করে বলে,

‘এর থেকে বেশি আর কিছু চেওনা রূপ। আর কিছুদিন মাত্র।‌ সব ভালোবাসা তোমার মুঠোয় এনে দিবো। আমি তোমায় হালাল ভাবে ছুঁতে চাই।‌ বুঝেছ মেয়ে?’

___________

মার্চ মাসের প্রথম শুক্রবার। আকাশে একখন্ড আগুনের গোলার মতো জ্বলজ্বল করছে সূর্য। শীতের প্রোকোপ খানিক কমে এসেছে। হুটহাট করে গা কাঁপিয়ে ঠান্ডা নামে। কখনো বা সূর্যের তেজে গা গড়িয়ে ঘাম ঝড়ে। আর কিছুদিনের মাঝেই শীত বিদায় নিবে হয়তো। অন্তি বারান্দায় মেঝেতে গোল হয়ে বসে আছে। টুলে বসে সাবিনা অন্তির চুলে তেল লাগিয়ে দিচ্ছে।‌ অন্তি বারবার না করা সত্তেও সাবিনা চুপচুপে করে তেল লাগিয়ে দিচ্ছে। খসখসে কিন্তু মিহি গলায় বিলাপ করে বলছে,

‘তেল হচ্ছে চুলের পুষ্টি। তেল না দিতে দিতে চুলের কি সাংঘাতিক অবস্থা হইছে আল্লাহ! আমার ভাইয়ের বউটাও বলিহারি, মাইয়ার দিকে কোনো নজর নেই। একটা মাত্র মাইয়া তাই এই অবস্থা। আমাদের মতো চার পাঁচটা পোলাপান হইলে কেমনে মানুষ করতো?’

চুলের প্রসঙ্গ থেকে ভাইয়ের বউয়ের প্রসঙ্গে চলে যাওয়ার ব্যাপারটায় অন্তি খুব একটা অবাক হলো না। এটা সে ছোট থেকে দেখে আসছে। তারা কোনো ভুল করলে দোষটা সর্বদা মা চাচিদের উপর থেকে চলে যায়।
সাবিনার কথা হয়তো নাহারের কান পর্যন্ত পৌঁছেছে। দরজার সামনে থেকে উত্তর দেয়,

‘আমার মেয়েকে আমার আদর যত্নে বড় করতে হয়নি আপা। একা একাই এতবড়ো হয়েছে। আরো পাঁচ ছয়টা ছেলে মেয়ে থাকলেও এভাবেই বড়ো হয়ে যেত।’

এ কথা সাবিনার ভিষণ রকম গায়ে লাগলে তিনি অন্তিকে বলেন,

‘তোর মায়ের কথা শুনেছিস? কেমন মুখে মুখে জবাব দেয় দেখ। আমি যে বড় তার কোনো সম্মান দেয় সে? ভাইয়ের বাড়িতে দুটো দিন মন ভালো করতে এসে কেমন বেজ্জতি হতে হচ্ছে! এই দিন দেখার জন্যই আল্লাহ আমাকে বাঁচায়ে রাখছে। আজ আসুক সাহেদ। ওর বউকে ও শিক্ষা না দিলে আমি এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাব।’

নাহার মুখ বাঁকিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়। আজ বাসায় অনেক মেহমান আসবে। একমাত্র মেয়ের আকদ বলে কথা। এই দিনে ঝগড়ায় জড়ানোটা ভালো হবেনা। তাই সাবিনাকে ছেড়ে দিলেন তিনি। নয়তো প্রতিটা কথার ভলো জবাব দিয়ে আসতেন।

অন্তির পাশে তন্নি গালে হাত দিয়ে বসে আছে। অন্তির বাসায় সে খুব সকাল সকাল চলে এসেছে। ব্রাশটাও সে এবাড়িতে এসে করেছে। এত বড় একটা দিনে সে আসতে লেট করবে এমনটা কখনোই হবে না। গালে হাত রেখে তন্নি ভিষণ ভাবুক চিত্তে বললো,

‘দোস্ত তোর বিয়ে হয়ে গেলে তো তুই অন্যের বউ হয়ে যাবি তাই না?’

‘হুহ।’

তন্নি গাল থেকে হাত নামিয়ে বিজ্ঞদের মতো মাথা নাড়ায়। যেন সে বিশাল কোনো ধাঁধার সমাধান করে ফেলেছে। অতঃপর নিজের মনের লুকায়িত কথাখানা প্রকাশ করে।

‘বলছিলাম দিহান ভাইকে বলনা নুহাশকে যেন একটু বিয়ের ব্যাপারে বুঝায়। তোর বিয়ে হয়ে গেলে আমি একা কুমারী হয়ে বসে থেকে কি করবো? তার থেকে দুজনই বউ হয়ে গেলে কিন্তু ব্যাপারটা দারুণ হয়। হয় না?’

অন্তি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,

‘তোর হিটলার বাপকে ম্যানেজ করলেই তো পারিস।’

‘আমার বাপকে হিটলার বলবি না একদম। আমার বাপ হিটলারের থেকেও ভয়ানক।’

_____________

ঘরোয়া ভাবে বিয়ের আয়োজন করা হলেও লোক সংখ্যা মোটেও কম নয়। বাড়ি ভরতি লোক গমগম করছে। সাহেদ বাড়ির পেছনে বাবুর্চি আনিয়ে রান্নার ব্যবস্থা করেছে। বিয়েতে বাড়িতে কোনোরকম সাজসজ্জা হবেনা এমনটাই বলেছিল শাহিন। কিন্তু সকাল হতেই দেখা গেছে তিনি ডেকরেটের লোক আনিয়ে পুরো বাড়িতে মরিচবাতি সেট করেছেন। তাজা ফুল দিয়ে গেট সাজিয়েছেন। তা দেখে বাড়ির সকলে মিটি মিটি হাসছেন।
বাড়ির আনাচে কানাচে হাসির শব্দে ভরে উঠেছে। ছোট ছেলেমেয়েদের কান্না আর চিৎকারের শব্দ বাতাসে ধাক্কা খেয়ে প্রতিফলিত হচ্ছে। এত কিছুর মাঝে অন্তির মনে শান্তি নেই। চুলে দুইবার শ্যাম্পু করার পরও তার মনে হচ্ছে চুল থেকে তেল কাটেনি। রাগে দুঃখে তার কান্না পাচ্ছে। এই ফুপিটা তার সবসময় দু চার লাইন বেশি বুঝে।তার বিয়ের দিনে কিনা সে চুপচুপে তেল মাথায় ঘুরবে! এটা কোনো কথা? তার দুঃখের সঙ্গি হয়েছে তন্নি। অন্তির কষ্ট মানেই তার কষ্ট। তার প্রাণটার আজ বিয়ে আর এই বিয়েতে কিনা তার প্রাণটা মন খারাপ করে থাকবে। কিছুটা দুঃখ নিয়ে তন্নি বলে,

‘তোর ফুপি বোধহয় প্রতিশোধ নিয়েছে দোস্ত।’

‘কিসের?’

‘আন্টির উপরের প্রতিশোধটা তোর উপর থেকে নিয়েছে। সিরিয়ালে দেখিস না মায়ের উপরের প্রতিশোধ মেয়ের উপর নেয়? ওমন ঘটনা ঘটেছে।’

অন্তি কিছু বলার আগেই অন্তির কাজিনরা তার রুমে চলে আসে। এখন মেহেদী দেওয়া হবে। বিয়ের কনের হাত ফাঁকা মানায় না। যদিও এ ব্যাপারে অন্তির তেমন আগ্রহ ছিলো না। কিন্তু নাহার গরম গলায় বলেছেন,

‘বিয়ের দিন হাত ফাঁকা থাকবে এ কেমন কথা? অল্প করে হলেও মেহেদী লাগাও।’

অন্তি মায়ের কথা মেনে নিয়েছে। নাহার এই দু তিন মাস তার সাথে মেপে মেপে কথা বলে। বয়টা বিষণ কষ্টের। অন্তি অনেক চেষ্টা করেছে মায়ের রাগ ভাঙাতে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে প্রতিবার। অন্তি হাল ছেড়ে দিয়েছে। মায়ের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকা ব্যতীত কিছুই বলেনা সে আজকাল।

চলবে…………

#তাহার_উম্মাদনায়_মত্ত
#লাবিবা_আল_তাসফি

শেষ খন্ড
অন্ধকারে আচ্ছন্ন এক বদ্ধ কামরায় হাত মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে পড়শ। শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। বোঝাই যাচ্ছে বেশ অক্ষত অবস্থায় রাখা হয়েছে তাকে। চোখ খোলা থাকলেও এই অন্ধকার হাতড়ে বোঝার উপায় নেই ঠিক কোন জায়গায় আছে সে। অন্ধকারে তার চেখগুলো আরো শিটিয়ে আসছে। অক্ষত থেকেও মনে হচ্ছে সে তার জীবনের শেষ সময় গুনছে। ঘড়ির কাটার প্রতিটা সেকেন্ড তার জীবনের সমাপ্তিকে এগিয়ে আনছে। এর থেকে যদি তার উপর জুলুম করা হতো তাহলে হয়তো একটু হলেও বাঁচার সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু এরা কেন তাকে আঘাত করছে না? কি চাচ্ছে দিহান? পড়শের বুক পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। ভাবতে পারেনা বাকিটা। দিহান প্লান ছাড়া কাজ করেনা। নিশ্চই তার বড় কোনো প্লান রয়েছে। পরশের হৃদরোগ বাড়াতে সেখানে হাজির হলো দিহান।‌ পড়নে খয়েরী রঙের শেরওয়ানি। অন্যদিনের মতো এলোমেলো হয়ে কপালে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো আজ সুন্দর করে সেট করা। মুখে এটে আছে নিদারুণ কঠিনতা। দিহানের সাথে নুহাশকেও দেখা গেলো। তার মুখ হাসি হাসি। যেন ভিষণ আনন্দে আছে সে। দিহান এক পলক পরশকে দেখে পাশে ছেলেটাকে বলে,

‘ওকে উঠিয়ে বসা। চেয়ার কোথায়?’

‘জ্বি ভাই আনছি।’

দুটো ছেলে পরশকে চেয়ারে বসিয়ে বেঁধে ফেলে। দিহান ইশারা করলে মুখের বাঁধন খুলে দেয়। পরশের বুক ধুকপুক করছে। দিহানকে যে ছেলেগুলো মেরেছিলো সবার অবস্থা ভিষণ খারাপ। কেবল প্রাণটা বেঁধে আছে শরীরে। তার কি অবস্থা হতে পারে ভাবতেই ভেতর আত্মা কেঁপে উঠছে।
আসার পর থেকে দিহান কোনো কথা বলেনি। চেয়ারে পা তুলে বসে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে পরশের দিকে। আশপাশের সকলে নিশ্চুপ। এই নিশ্চুপতা পরিবেশকে আরো গম্ভীর করে তুলেছে।

‘কিছু বলার আছে? আজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন। তবুও সব রেখে আমি তোর কথা শুনতে এসেছি। কিছু বলার থাকলে জলদি বল। আমার সময় কম।’

দিহান হাতের ঘড়ির দিকে তাক করে কথি গুলো বললো পরশকে। পরশ ভিষণ আকুতি নিয়ে বললো,

‘আমাকে বাঁচতে দে প্লিজ। আর কিছু না। শুধু বাঁচতে দিলেই হবে।’

‘আচ্ছা।’

‘সত্যি?’

‘অবশ্যই।’

কথাটা বলে দিহান বাকা হাসে। চেয়ার থেকে উঠে যাওয়ার পূর্বে পরশের হাতের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে একটা ছেলেকে বলে,

‘ওর হাতের নক গুলো দেখতে বিদঘুটে। তুলে ফেল। খারাপ জিনিস না থাকা ভালো।’

‘জ্বি ভাই।’

দিহান আর অপেক্ষা করলো না। নুহাশের সাথে বেরিয়ে এলো পুরোনো গুদামঘর থেকে। গাড়িতে ওঠার পূর্ব মুহূর্তে শুনতে পেলো পরশের গগনবিদারী চিৎকার। দিহানের মুখ শক্ত হয়ে আসে। এটা তো কেবল শুরু। বাঁচিয়ে রেখে সে ওকে জাহান্নাম দেখিয়ে আনবে।

____________

অন্তির পরনে লাল বেনারসি। গহনা বলতে গলায় ছোট একটা হার, কানে দুল আর হাতে সোনার মোটা বালা। অল্প পরিসরে গালে মেকাপের প্রলেপ টানা হয়েছে। ঠোঁটে লাগানো হয়েছে টকটকে লাল রঙ। টানা চোখদুটো ভর্তি কালো কাজল। আর গাল? সেখানে রয়েছে লালচে আভার মিশ্রণ। এ যেন এক লাল টুকটুকে নববধূ। দরজা থেকে নাহার মেয়ের মুখের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। তার মেয়েটাকে কেমন বড় বড় লাগছে। কোই কখনো তো সে লক্ষ করেনি। হুট করেই মেয়েটা যেন একটু বেশিই বড় হয়ে গেছে। অভিমান করে মেয়ের সাথে দুটো কথা না বললেও তির ভেতরটি জ্বলে যাচ্ছে। নিজ ছায়ায় আগলে রাখা মেয়েটাকে ছেড়ে কিভাবে থাকবে সে? সকাল হলে যখন রুমটা ফাঁকা পড়ে থাকবে তখন সে কি করবে? তার ঘরটা যে একদম শান্ত হয়ে যাবে। অন্তি নামক পাখিটার কিচিরমিচির শব্দে বিরক্তি হতে হবে না। নাহারের চোখ ছলছল করে ওঠে। কিন্তু মেয়ের সামনে সে নরম হতে চায় না। ভারী অভীমান জমেছে তার। এত দ্রুত তার অভিমান ভাঙবে না।
বর এলো যখন তখন দুপুর। ঘোমটার আড়ালে থাকা মুখটি ক্রমশ লাল হয়ে ওঠে বর এসেছে, বর এসেছে ধ্বনিতে। বুকের কোনো এক অংশ কেঁপে ওঠে সহসা। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে। আর মাত্র কিছু মুহূর্ত, তারপর মানুষটা পুরোপুরি তার হয়ে যাবে! ভাবা যায়? অন্তি কিছু ভাবতে পারছে না। তার ভাবনার কোঠা শূন্য পড়ে আছে। মস্তিষ্ক শুধু একটা কথাই বলছে, “সে আমার হতে চলছে।”

চোখের পলকেই তিন কবুলের মাধ্যমে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে শপথ নিয়ে নিলো তারা। সামান্য তিন শব্দের এত জোর! অন্তির চোখ ভর্তি পানি। তার কোনো কষ্ট নেই। এটা তার সুখের জন্য। এই মানুষটাকে পাওয়ার জন্য কত কিছুই না সে করেছে। আজ সে তার। এইতো সে পরিপূর্ণ।

শহর জুড়ে সন্ধ্যা নেমেছে। বিয়ে বাড়ি যেন আঁধার নামা মাত্রই চঞ্চল হয়ে উঠেছে। ঝাঁক ঝাঁক লালা নীল মরিচবাতি জ্বলে উঠেছে। বাহির থেকে ঝলমলে মনে হলেও বাড়ির ভেতরের পরিবেশ থমকে আছে। সাহেদ, শাহিন গম্ভীর মুখ করে সোফায় বসে আছেন। পাশেই অসহায় মুখ করে রেজওয়ান মির্জা বসে। বারবার সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ছেলেকে দেখছেন। দিহান অবশ্য এসবে থোরাই কেয়ার করছে। সে নিশ্চিন্ত মনে সোফায় গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। বিয়ে করা ভিষণ কষ্টের কাজ। সে না করলে হয়তো কখনো বুঝতেই পারতো না। এখান থেকে বের হতে পারলেই কিছুটা স্বস্তি মিলবে।

‘বেয়াই। এমনটা তো কথা ছিলো না। আমার মেয়েটা ছোট। এত দ্রুত তুলে দিতে চাইনি আমরা। তাছাড়া কথা তো হয়েছিল বছর দুয়েক পরে তুলে নেওয়া হবে।’

সাহেদের কথায় কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছেনা রেজওয়ান। এসব কিছুই তার মনে আছে। কিন্তু ছেলের জন্য তো পারছেন না। এমন নির্লজ্জ একটা ছেলে তারই কেন হতে হলো? মান সম্মানের কিছু থাকছে না। রেজওয়ান দিহানের দিকে তাকিয়ে দাঁত কাটে। অভদ্রটা ঝামেলা পাকিয়ে এখন চোখ বন্ধ করে আছে। কোনো উপায় না পেয়ে তিনি বললেন,

‘ভাই বুঝতে পারছি। অন্থি না হয় এখানে প্রায়ই আসবে। দিহান কিংবা আমি দিয়ে যাব ওকে। আবার ওর মঞ চাইলে নিয়ে যাব।’

এ পর্যায়ে শাহিন গম্ভীর গলায় বলে,

‘আমরা এখন আমাদের মেয়েকে দিতে চাচ্ছি না। বিয়ে হয়েছে ঠিক আছে। আপনারা আসবেন যাবেন। কিন্তু মেয়ে আমাদের কাছেই থাকবে।’

রেজওয়ান মির্জা খুবই অস্বস্তি অনুভব করছে। কিছু বলার মতো পাচ্ছে না। দিহান এবার চোখ মেললো। সোজা হয়ে বসে বললো,

‘বিয়ের পর একটা মেয়ের দায়িত্ব পুরোপুরি ভাবে তার স্বামীর হাতে। সেটা হোক ধর্মীয় রীতি কিংবা সামাজিক রীতি। আমি চাচ্ছি আমার বউকে আমার সাথে নিয়ে যেতে, আশা করি এখানে দ্বিমত করার মতো কিছু নেই। আমার বউ কোথায় থাকবে কি থাকবেনা এটুকু সিদ্ধান্ত নেওয়ার যথেষ্ট অধিকার রয়েছে আমার।’

দিহানের কথার পিঠে কেউ কোনো উত্তর না করলেও সকলে যে ভয়ংকর রেগে গেছে এটা সে বুঝতে পেরেছে। শাহিনের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। তার এক কথায় এ বংশের সকলে ওঠে বসে। আজ কিনা তার কথাকে সামান্যতম মর্জাদা দেওয়া হলো না। এমন অসভ্য ছেলে তার বাড়ির জামাই ভাবতেই ভিষণ বুক ব্যাথা করছে। নাহার আগেই বুঝেছিলো এমন কিছু হবে। তাই সে খুব একটা অবাক হয়নি।

বিদায়বেলা নাহার নিজের অভিমান ধরে রাখতে ব্যর্থ হলো। অন্তিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। এতদিন বাদে মায়ের স্নেহস্পর্শ পেয়ে আবেগী হয়ে ওঠে অন্তি। সে এক স্পর্শকাতর দৃশ্য। মা মেয়ের হৃদয় স্পর্শক পুনর্মিলনের পর বিদায়ের ঘন্টা বেজে ওঠে। গাড়িতে শক্ত করে দিহানের হাত আঁকড়ে ধরে হেঁচকি তুলে কাঁদতে থাকে অন্তি। দিহান ওকে বাঁধা দেয় না। কাঁদতে দেয় নিজের মতো। কাঁদলে মন শান্ত হয়। আজ সে মেয়েটাকে কাঁদতে দিচ্ছে তবে এরপর আর নয়। এটাই শেষ।
বেশ সময় নিয়ে শান্ত হয় অন্তি। গাড়ি তখনো ছুটে চলছে। অন্তিদের বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে দিহানদের বাড়িতে পৌঁছাতে পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় দরকার হয়। সেখানে প্রায় আধঘন্টা হতে চললো। কান্নার জন্য এতক্ষণ ব্যাপারটা না বুঝলেও এখন মাথায় আসতেই সে মাথা ঘুরিয়ে দিহানের পানে তাকায়। গলায় কৌতুহল নামিয়ে বলে,

‘কোথায় যাচ্ছি আমরা?’

দিহান তার হাত দ্বারা অন্তির কোমর টেনে কাছে আনে। ছোট করে বলে,

‘সিলেট।’

‘ওখানে কেন?’

‘চা বাগানে হানিমুন করতে।’

অন্তি লজ্জা পায়। আর কিছু বলে না। আস্তে করে দিহানের শরীরে নিজের ভর ছেড়ে দেয়। মাথা এলিয়ে দেয় দিহানের বুকে। দিহানের কপাল কুঁচকে আসে। অন্তির মাথায় হাত রেখে বলে,

‘ঠিক আছো? শরীর খারাপ করছে?’

‘উহু।’

‘ক্ষুধা লেগেছে?’

‘উহু।’

‘তাহলে?’

‘অনেক দিন পর শান্তিতে ঘুম পাচ্ছে। একটু ঘুমাই?’

দিহান মুচকি হাসে। মাথা নামিয়ে অর্ধাঙ্গিনীর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ায়। ভালোবাসায় ভরে ওঠে চোখ দুটো। এই ছোট মেয়েটা কতটা গভীর ভাবে ভালোবাসে তাকে ভাবতেই বুকটা প্রশান্তিতে ভরে ওঠে। দিহান অন্তির অনামিকা আঙ্গুলে ভিষণ যত্নে একটা আংটি পরিয়ে দেয়। পরপর আলতো ঠোঁট ছুঁয়ে দেয় হাতে। অন্তি কেঁপে ওঠে। তবে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় মিষ্টি হাসি। গভীর হয় হাতের বন্ধন। দিহান নিচু গলায় বলে,

‘এভাবেই ঘুমাও। আমি মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছি।’

______________

নুহাশ বসে আছে তন্নিদের বসার ঘরে। সামনেই তন্নির পিতা মহাশয় পায়ের উপর পা তুলে পেপার পড়ছেন। নুহাশ অস্বস্তি নিয়ে বসে আছে। ভদ্রলোক তাকে ডেকে পাঠিয়ে পেপার‌ পড়ছেন ব্যাপারটা ভিষণ অস্বস্তিকর। পেপার তো অন্যসময়ও পড়া যাবে। এখনই কেন? কিন্তু নুহাশ এসব প্রশ্ন ভদ্রলোককে করতে পারছে না। অত্যন্ত শান্ত ভঙ্গিতে বসে আছে সে। আরো কিছুটা সময় পার হলে তিনি পেপার থেকে মুখ তুলে তাকান। পরক্ষণে বাসার কাজের মেয়েটাকে ডেকে চা দিতে বলেন। চশমার উপর থেকে নুহাশকে দেখে প্রথমে যে প্রশ্নটা করেন তা হলো,

‘তুমিই সে যে রাস্তা থেকে আমার মেয়ের বারান্দায় উঁকি ঝুঁকি দাও?’

নুহাশ চট করে কিছু বুঝতে না পেরে বলে,

‘জ্বি।’

‘কেন?’

‘মানে?’

‘কেন উঁকি ঝুঁকি দেও?’

‘ইয়ে মানে….’

‘বাড়িতে কে কে আছেন?’

‘মা ,ছোট ভাই আর আমি।’

‘বাবা নেই?’

‘জ্বি না।’

‘তোমার মা কে একদিন আসতে বলো। তার সাথেই নাহয় বিস্তার আলাপ করবো।’

‘জ্বি আচ্ছা।’

‘বসো। চা খেয়ে যাও।’

‘জ্বি।’

‘চায়ে চিনি কেমন খাও?’

‘মিডিয়াম।’

‘চিনি খাবে না। কড়া চা উইদাউট সুগার। শরীরকে স্ট্রং রাখবে।’

‘আচ্ছা।’

‘আমি রুমে যাচ্ছি। চা দিয়ে গেলে খেয়ে তারপর উঠবে কেমন?’

‘জ্বি।’

ভদ্রলোক চলে গেলেন। নুহাশ দাঁত কামরে তার দিকে তাকিয়ে রইল। এই লোক তার শ্বশুর হবে ভাবতেই আত্মা শরীর ছেড়ে বের হয়ে যেতে চাইছে। কেবল তন্নির বাবা বলে সে চুপ করে আছে। নয়তো বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে গোসল করিয়ে আনতো‌।

_____________

অন্তি দিহানের সময় বেশ সুন্দর কাটছে। তারা এখনো সিলেটে রয়েছে। দিহানের নিজস্ব একটা ভিলা রয়েছে এখানে। এটার সম্পর্কে কেউ জানতো না। ছোট ভিলা হলেও আশপাশের সৌন্দর্য সবসময় তাদের মুগ্ধ করে রাখে। অন্তি আর দিহান বাদে দুজন কাজের লোক রয়েছে। অন্তি টুকটাক রান্না শিখেছে। মাঝে মাঝেই সে দিহানের জন্য রান্না করে। সে রান্না করেছে শুনলে দিহান খুব করে বকা দেয়। যদি হাত কেটে যেত? যদি হাত পুড়ে যেত? এসব মিষ্টি বকা অন্তির ভালো লাগে। ব্যাপারটা আরো ভালো লাগে যখন বকবকি শেষে দিহান তৃপ্তি করে তার রান্না খায়।
বিয়ের পর অন্তি‌ দিহানকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেছে। মানুষটা এত কথা বলতে পারে! অন্তিকে কখনো একা অনুভব করতে দেয় না মানুষটা। বিকেল হলেই ঘুরতে যাওয়া। রাত জেগে খোলা বারান্দায় গল্প করা আরো কত কি! অন্তি বারবার অবাক হয়। মানুষটা সত্যিই অন্যরকম। ভিষণ যত্নশীল। ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখার মতো। সে তার ভালোবাসার পরিধি আরো বিস্তার করবে। যা দিহান সাঁতরে পার হতে পারবে না। তার ভালোবাসার বিশাল সমুদ্রে তলিয়ে রাখবে মানুষটাকে। আর সে? সে তো মানুষটার উম্মাদনায় সেই কবেই মত্ত হয়ে আছে।

সমাপ্ত

(দীর্ঘ সময় নিয়ে শেষ করলাম গল্পটা। ভুল ত্রুটি সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ