কে কোথায় যায়? পর্ব ১৮

0
551

কে কোথায় যায়? পর্ব ১৮
তামিম রুমে গিয়ে দেখলো শুভা বসে আছে!তামিমের গলা শুকিয়ে গেছে।মুখে জল একত্র করে সে সরু গলায় বলল,
——–‘তোর বিয়ে?’
শুভা মুখ তুলে তাকালো তামিমের দিকে!দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে বলল,
——‘হুম,কেন?’
তামিমের গলা ভার হয়ে আসলো।চোখে জল লক্ষ করা যাচ্ছে!তারপরও গলা শক্ত করে বলল,
——-‘আমার কথা মনে পড়বে না তোর?এত সেলফিশ তুই?এত জীবন তোর পিছন পিছন ঘুরলাম আর তুই কিনা এসব?ছিহ!মান ইজ্জত রাখবি না আমাদের চুন্নি বেডি?’
শুভা অবাক!ভীষণ রকমের অবাক!কাপা কাপা গলায় সে বলল,
——-‘বুঝলাম না।বুঝিয়ে বল তো!কি বলতেছিস এসব?’
তামিম সুর টেনে বলল,
——-‘মন প্রতিক্ষণ!
শুধু চায় যে তোকে!
আধারে আলোতে,
হাসিতে কান্নাতে,
বেঁচে থাকতে চাই শুধু তোমাতে!’
শুভা অবাক হলো!ঠোঠ উল্টিয়ে হাত তালি দিতে দিতে বলল,
——-‘এটা কোন গান?’
তামিম শুভার কানের কাছে এসে বলল,
——-‘গান তো না,তবে একদিন হবে অবশ্যই!’
তামিমে হাসলো।শুভা কৌতুহল নিয়ে বলল,
——-‘এটা আমাকে শুনানোর কারণটা?’
তামিমের মুখের হাসি নুইয়ে এলো নিমিষেই।নির্বিকার গলায় বলল,
——‘কিছুই বুঝিস না দোস্ত?আমি যে তোরে…’
কথাটা অসমাপ্ত রেখে দিল নীহারিকা!দৌড়ে এসে বলল,
——‘দোস্তুরা,তাত্­­­তাড়ি চল! বিরাট ধামমমমমাকা আছে।’
শুভা ও তামিম বোকা বনে রইলো!নীহারিকা দুজনের হাত ধরে টেনে টেনে উপস্থিত সকল বন্ধুমহলের কাছে নিয়ে গেল।সবার মুখে টানা টানা খুশী ও উৎসাহ!
তামিম সবার মুখের দিকে তাকালো গুরুত্ব নিয়ে, তারপর নীহারিকার চুল ধরে টান মেরে বলল,
——-‘শালি এখানে ধামাকা কই?সিরিয়াস কথা বলতেসিলাম শুভারে,তুই ভিজাই দিলি সব!’
ভোর নির্বিকার গলায় বলল,
——-‘কোথায় যাবো আমরা এবারের ট্রিপে?’
রুদ্র উৎসুক হয়ে বলল,
——‘সুন্দরবন!’
তামিম মুখ ভেংচি দিয়ে বলল,
——‘নাহ,এটা না।’
নীহারিকা বলল,
——‘সমুদ্রসৈকত?’
শুভা সরু গলায় বলল,
——‘দুটাতেই গেলে কেমন হয়?প্রথমে সমুদ্রসৈকত আর পরে অন্য কোথাও!’
তামিম সুর মিলিয়ে বলে উঠলো,
——‘হ্যাঁ,তারপর ভুটান!কেমন হপ্পে?’
নীহারিকা চুপসে গেল।মুখটা ভারি রেখে বলল,
——-‘টাকা তোর বাপ দিবে?’
রুদ্র গলা উঁচু করে বলল,
——-‘অর্ধেক মুই দিমু!’
সবাই রুদ্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ!
তামিম ধারালো কন্ঠে বলল,
——-‘রিতুরে নিমু?’
রুদ্র আগুনের হলকা হয়ে বলল,
——–‘তোর বউ শালা রিতু?টাকার পাহাড় গড়ছিস মিয়া?’
তামিম ভয় পেয়ে ছোট্ট করে বলল,
——‘নিবো না!’
রুদ্র এমন আসরে গান না গেয়ে পারে?আস্তে আস্তে গান শুরু করলো।
এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকেনা তো মন
কাছে যাবো কবে পাবো
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ।।
যুঁথী বনে ঐ হাওয়া
করে শুধু আসা যাওয়া।
হায় হায়রে দিন যায়রে
ভরে আঁধারে ভুবন
কাছে যাবো কবে পাবো
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ।।
শুধু ঝরে ঝর ঝর
আজ ভারি সারাদিন
আজ যেন মেঘে মেঘে
হলো মন যে উদাসীন।
আজ আমি ক্ষণে ক্ষণে
কি যে ভাবি আনমনে।
তুমি আসবে ওগো হাসবে
কবে হবে সে মিলন
কাছে যাবো কবে পাবো
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ!
শুভা গানের তালে তালে চোখ দুটা ঘুরিয়ে নিল তামিমের দিকে!মনে পড়লো তার অসুখের কথা!ভাবলো,সে জানে তার এই অসহ্য যন্ত্রণা একদিন কমে যাবে,তার এই সুতীব্র দীর্ঘশ্বাস কমে আসবে।তার শ্বাস প্রশ্বাস হবে ধীর আর স্বাভাবিক।তার প্রিয়তম তামিমের প্রিয়তমার তার প্রিয়তমের পাশে শুয়ে থাকবে,সে কাঁদবে!কাঁদবে কি?নিজ কষ্ট চাপিয়ে তখন শুভার কষ্টটা তামিমের কাছে বড় হবে।শুভ ক্ষমা চাইবে,একবার দুবার নয়তো শতবার।অশান্ত মন নিয়ে বেঁচে থাকা কতটা ভয়াবহ,কতটা যন্ত্রনার!
©ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে