Monday, October 6, 2025







কুহেলিকা পর্ব-১৪

#কুহেলিকা (পর্ব-১৪)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

–‘যাবো না আমি তোর বাড়ি। তুই চলে যা এখান থেকে। আমাকে নিয়ে বহু আদিখ্যেতা দেখিয়েছিস। এবার সমস্ত কিছু বন্ধ করে নিজের মতন থাকতে শিখ। আর আমায় চিরতরে ভুলে যা।’

হুট করে দিশার এমন অদ্ভুত কথাবার্তা শুনে আকাশ পুরো চমকে উঠে! সে কোনো মতেই দিশার অদ্ভুত আচরণ সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারছে না! এই তো গতরাতেও মেয়েটা ঠিক ছিল। আকাশ যখন গতরাতে দিশাকে বলে আজ দুপুরে সে তাকে নতুন বাসায় নিয়ে যাবে, তখন দিশা কতো সুন্দর হাসিখুশি কথা বলেছে। কিন্তু হুট করেই দিশার কি এমন হলো, যে সে পুরোপুরি পল্টি খেয়ে নিয়েছে। আকাশ দিশার অদ্ভুত আচরণ দেখে দিশাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘দিশা তোমার কি হয়েছে? তুমি তো গতরাতেও ঠিক ছিলে। এখন শেষ সময়ে এসে কেন এমন করছো তুমি?’

–‘তোকে এতো কিছুর উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই। তুই এখান থেকে চলে যা। অনেক দেখিয়েছিস আমার মতন মেয়েকে নিয়ে রংতামাশা। আর আমিও পাগলের মতন তোর রংতামাশায় সাড়া দিয়েছি। কিন্তু আর না, আমি আর তোর এই রংতামাশা সহ্য করবো না। তাই তুই এখান থেকে চলে যা। তোর সাথে আমি যেতে চাচ্ছি না।’

–‘দিশা কি হয়েছে সেটা তো বলবে? হুট করে তোমার এমন অদ্ভুত আচরণ আমায় বেশ অবাক করছে।’

–‘আমি তোকে আগেই বলে দিয়েছি যে আমি তোর কথার উত্তর দিতে বাধ্য না। খামোখা তুই এক প্রশ্ন এতোবার করছিস কেন?’

–‘আমি হাজার বার তোমায় প্রশ্ন করবো। যতক্ষণ না আমি উত্তর পাচ্ছি,ততক্ষণ আমি প্রশ্ন করেই যাবো।’

–‘দ্যাখ এমনিতেই মনমেজাজ ভালো নেই। খামোখা এর উপরে আরো হাজারটা প্রশ্ন করে মাথা বিগড়ে দিস না।’

–‘দিশা এবার কিন্তু বেশি হচ্ছে।’

–‘বেশি আমি নয় তুই করছিস। আমার মতন একটা পল্লীর নোংরা মেয়েকে নিয়ে তুই আদিখ্যেতা দেখাচ্ছিস, যেটা তোর দেখানো উচিৎ হচ্ছে না। কারন আমি ভোগের পাত্র ছাড়া আর কিছুই নই। সেখানে তুই আমাকে নিয়ে বাড়ি যাবি, এই করবি, সেই করবি। তোর এতো তালবাহানা আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। তাই তুই এখন এখান থেকে চলে যা। এরপর কখনো আমার সামনে আসবি না। তোকে যেনো আজকের পর আর কখনো আমি আর আমার চোখের সামনে না দেখি।’

আকাশকে দিশা এতো শক্ত ভাবে কথা বলায় তার কান্না চলে আসে। তবে সে নিজের কান্না টাকে আঁটকে ফেলে। ভিতর থেকে উগলে চোখের পানি বের হতে চাচ্ছে, তবে দিশা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে চোখের পানি টাকে বের হওয়ার আগেই আঁটকে দেয়। আকাশের সামনে চোখের পানি ফেলে দিশা তার দূর্বলতা আর স্বীকার করতে চাচ্ছে না। এমনিতেই দিশা অনেকটা অতিরিক্ত করে ফেলেছে। তাই সে নিজেকে সামলে নিয়ে শক্ত ভাবে আকাশের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। অপরদিকে আকাশের চেহারা আগুনের কুন্ডলীর মতন লালবর্ণ ধারণ করেছে। দিশাকে সে এতোবার বারণ করার পরেও দিশা তার কথার অমান্য করে নিজেকে এই পল্লীর মেয়ে বলে দাবী করেছে। রাগের তাড়নায় আকাশ নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলতে বসেছে৷ শরীরের সমস্ত রক্ত টগবগ করে খলতে আরম্ভ করছে। কি করবে সে নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না! ভাবনা-চিন্তার প্রতিফল না পেয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে দিশার গালের মধ্যে থাপ্পড় মেরে বসে। দিশা খাটের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। আকাশের হাতের থাপ্পড় খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে সোজা গিয়ে মাটির উপরে ছিটকে পড়ে। দিশার শরীরটা ফ্লোরের উপরে ছিটকে পড়লেও তার মাথাটা গিয়ে লাগে খাটের পায়ার সাথে। বাড়ি লাগার পরক্ষণেই দিশার মাথা ফেটে যায়। আর সে কান্না করতে আরম্ভ করে। কিন্তু আকাশের রাগের মাত্রা কোনো ভাবেই কমে না। ক্রমশ আরো বেড়েই চলেছে আকাশের রাগ। দিশাকে যেনো সে আস্তো গিলে খাবে। এতো জোরে থাপ্পড় মারার পরেও আকাশ গিয়ে আবার দিশার চুলের মুঠি চেপে ধরে। এরপর ভয়ানক ভাবে চেঁচিয়ে বলে,

–‘তোর সাহস কি করে হয় একই কথা মুখ দিয়ে আবারো বের করার? আমি যে তোকে এর আগে দু’বার এসবের জন্য বারণ করেছি, তারপরেও কি তোর মাথায় ঢোকেনি আমার কথা গুলো?’

দিশা আকাশের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে আরম্ভ করে। তার ভিতরটা যেনো ভয়ে দলা মোচড়া হয়ে যাচ্ছে। শুরুতে বেশ ভালোই বুকে সাহস নিয়ে সে আকাশকে অনেক কয়টা কথা বলেছে। তবে বর্তমানে আকাশের রাগ দেখে তার মুখে তালা লেগে গেছে। আকাশের কথার উত্তর দিবে, সেই সাহসটাও দিশার হচ্ছে না। দিশার চুপসে থাকা দেখে আকাশ আবারো রাগান্বিত কন্ঠে দিশাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘কিরে আমার কথার উত্তর দিচ্ছিস না যে?
আমি যে তোকে কিছু একটা প্রশ্ন করেছি, তুই সেটার উত্তর দিচ্ছিস না কেন?’

দিশা এবারো চুপ করে থাকে। এবারো দিশার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হয় না। আকাশ দিশার চুপসে থাকা দেখে আরো রেগে যাওয়ার বদলে কি ভেবে যেনো নিজেকে শান্ত করে নেয়। এরপর দিশাকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলে,

–‘ঠিক আছে তোমার উত্তর দিতে হবে না। তবে তোমার কাছে রিকোয়েস্ট করছি, তুমি তোমার অদ্ভুত আচরণের রহস্যটা আমায় বলো। দিশা বিশ্বাস করো আমি নিজের সাথে যুদ্ধ করে রাগ টাকে দমিয়ে এনেছি। প্লিজ তুমি আমার সেই রাগের মাত্রা টাকে আর বাড়িয়ে দিও না। না হয়তো পারমাণবিক বো/মা/র মতন বিস্ফোরণ ঘটবে। তখন কিন্তু আমি হাজার চেষ্টা করলেও নিজেকে আর দমাতে পারবো না। দেখা যাবে কোনো একটা খু/না/খু/নি করে ফেলেছি।’

আকাশের শান্ত ভাষায় হুমকি শুনে দিশা এবার মুখ খুলতে প্রস্তুত হয়।

–‘আমি গতরাতে পল্লীর কয়েক জনকে বলেছি আজ আমি আপনার সাথে এখান থেকে একেবারের জন্য চলে যাবো। আমার সেই কথা শুনে অনেকেই নানান বাজে কথা বলেছে। আমি নাকি আপনার টাকা পয়সার লোভে পড়ে আপনার সাথে যাচ্ছি। আমার নাকি বেশ লোভ আমার মায়ের মতন। আমার মা’ও নাকি বেশ লোভী ছিল। লোভ করতে করতেই নাকি তিনার মৃত্যু হয়েছে। আরো কতো নানান ধরনের বাজে কথা বলেছে। আবার একজন বললো আপনার মতন বড়লোকেরা নাকি জিনিস ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আপনারা নাকি জিনিস ছুঁড়ে ফেলতে ওস্তাদ। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনার সাথে যাবো না।’

–‘দিশা মানুষের কাজ হচ্ছে বাজে মন্তব্য রটানো। তুমি মানুষের কথা শুনে কি নিজের উপর থেকে বিশ্বাস হারাবে নাকি? তুমি নিজে কি জানো না তুমি কেমন? আর এতোদিন ধরে তুমি আমার সাথে চলাফেরা করেও কি বুঝো নি আমি মানুষটা কেমন?’

–‘আমি জানি আপনি ভালো। তবে আমি আপনার সাথে যেতে চাচ্ছি না। আপনি এখান থেকে চলে যান।’

–‘দিশা তোমার তো যেতেই হবে আমার সাথে।’

–‘না আমি যাবো না আপনার সাথে।’

আকাশ দিশার কথা শুনে এবার চুপ হয়ে যায়। কারন দিশাকে মানুষ বিষিয়ে তুলেছে। তাই যা করতে হবে আকাশের কাজে করতে হবে। মুখের কথায় এখন আর দিশাকে কাজে দিবে না। তাই আকাশ টুপ করে দিশাকে ফ্লোর থেকে কোলে উঠিয়ে নেয়। আকাশের এমন আচরণে দিশা হাত-পা ছুটাছুটি করতে করতে আকাশকে বলে,

–‘কি করছেন আপনি? আমি যাবো না আপনার সাথে। আপনি আমায় নামিয়ে দিন কোল থেকে।’

কে শোনে কার কথা। আকাশ দিশার হাত-পা ছুটাছুটি দেখে আরো শক্ত করে দিশাকে জড়িয়ে ধরে। এরপর কোনো কথাবার্তা ছাড়াই দিশাকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রুম থেকে বের হতেই আকাশ দেখে পল্লীর সর্দারনী রুমের বাহিরে দাঁড়ানো। পল্লীর সর্দারনীকে দেখে আকাশ জিজ্ঞাস করে,

–‘কি হয়েছে সর্দারনী?’

–‘সাহেব একজন আইসা কইলো দিশার রুম থেইকা নাকি বেশ চিল্লা চিল্লির আওয়াজ হুনন যাইতাছে, তাই আমি ছুইটা আইছি। সাহেব কি হইছে? আপনি এমন রাইগা আছেন ক্যান? তার উপরে দেখি দিশার মাথা থেইকা রক্ত পড়তাছে। আপনি ওরে এই অবস্থায় কোলে লইয়া কই যান?’

–‘আসলে মুখের বুলিতে কাজে আসেনি। তাই হাত চালাতে হয়েছে আমাকে। আর দিশাকে আমি একেবারের জন্য আমার বাসায় নিয়ে চলে যাচ্ছি। এখানে থেকে রোজ রোজ ঝামেলার হওয়ার থেকে ভালো তাকে একেবারে নিজের বাসায় নিয়ে চলে যাই।’

–‘সাহেব একদম ভালো সিদ্ধান্ত নিছেন আফনে। কারন দিশা এই হানে থাকলে রোজ রোজ নতুন ঝামেলা হইবো ওরে লইয়া। তাই আপনি নিয়া যাইতেছেন বেশ ভালোই হইলো। মাইয়াটার খেয়াল রাইখেন সাহেব।’

–‘হুম আপনি টেনশন করবেন না। আমি তার পরিপূর্ণ খেয়াল রাখবো।

–‘সাহেব আপনি নিয়া গেলে আমার আর টেনশন করবার কোনো কারন নাই। কিন্তু আপনি ওর কাপড়-চোপড় সঙ্গে লইবেন না?’

–‘না ওকে আমি এক কাপড়েই এখান থেকে নিয়ে যাবো। কোনো কাপড়-চোপড়ের দরকার নেই ওর। আগে ওকে বাসায় নিয়ে যাই। পরে সময় করে নতুন কাপড়-চোপড় কিনে আনবো নে ওর জন্য আমি।’

–‘ঠিক আছে সাহেব।’

–‘হুম এবার আমি চললাম দোয়া রাখবেন।’

পল্লীর সর্দারনীর থেকে বিদায় নিয়ে দিশাকে কোলে নেওয়া অবস্থাতেই পল্লীর পুরোটা পথ হেঁটে অতিক্রম করে এসে গাড়িতে উঠে বসে। এরপর বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মাঝপথে আকাশ একটা ফার্মেসীর সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিশার কপালের মলম পট্টি করিয়ে নেয়। ফার্মেসী ওয়ালারা দিশাকে সামান্য কিছু ঔষধ কন্টিনিউ করতে বলেছে। আকাশ ফার্মেসী থেকেই ঔষধ গুলো ক্রয় করে নিয়ে পাশের একটা বিরিয়ানির দোকান থেকে দু’প্যাকেট বিরিয়ানি নিজের সঙ্গে নিয়ে দিশা সহ গাড়িতে উঠে বসে। আকাশ গাড়ি স্টার্ট করে দিশাকে নিয়ে বাসার সামনে এসে পৌঁছেছে। গাড়ি থেকে নেমে আকাশ দিশাকে নিয়ে যেই না বাড়িতে প্রবেশ করতে যাবে, এমন সময় আকাশের অফিসের ম্যানাজারের সাথে আকাশের দেখা হয়। অফিসের ম্যানাজার একটা মোটরবাইক করে এই পথ ধরেই যাচ্ছিলো, কিন্তু সে আকাশকে দেখতে পেয়ে থেমে যায়। ম্যানাজার গাড়ি থামিয়ে আকাশকে জিজ্ঞাস করে,

–স্যার আপনি হটাৎ এখানে যে?’

–‘এটা আমার নতুন বাড়ি। আমি এখন থেকে এখানে থাকবো। কিন্তু আপনি এখানে কেন?’

–‘স্যার আমার বাসাও এই এলাকায়। ঐ তো আর একটু পরেই আমার বাসা।’

–‘বাহ বেশ ভালো তো।’

–‘শুকরিয়া। কিন্তু স্যার আপনার সাথে উনি কে?’

–‘বলতে পারেন আমার ওয়াইফ।’

–‘স্যার আপনি বিয়ে করলেন কবে?’

–‘ম্যানাজার সাহেব সেসব পরে কখনো আপনাকে বলবো। এখন একটু তাড়াহুড়োয় আছি। আর আপনি পারলে আমার একটা উপকার করুন।’

–‘কি উপকার স্যার?’

–‘আপনার কাছে টাকা আছে?’

–‘জ্বি স্যার আছে তো।’

–‘তাহলে আপনি একটু মার্কেটে গিয়ে আমায় নতুন কয়েকটা শাড়ী আর কয়েক সেট থ্রি-পিস এনে দিলে বেশ উপকৃত হবো। আমি অফিসে গিয়ে আপনার টাকাটা আপনার আপনাকে দিয়ে দিব।’

–‘স্যার এভাবে বলবেন না। আপনার বাবার জন্যই আজ আমি এভাবে জীবনযাপন করতে পাচ্ছি। স্যার আমি গিয়ে এক্ষুনি শাড়ী আর থ্রি-পিস কিনে আনছি।’

–‘আচ্ছা এখন আমি দিশাকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম। আপনি কিনে এনে আমায় ফোন করলেই হবে।’

–‘ঠিক আছে স্যার।’

ম্যানাজার আকাশের কথা মতন বাইক টেনে মার্কেটে চলে যায়। এদিকে আকাশ দিশাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে প্রবেশ করার পর আকাশ দিশার হাত-পা ধুইয়ে দিয়ে দিশাকে খাটে শুইয়ে দেয়। আর সে দিশার পাশে বসে চুপচাপ দিশার মাখায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। আকাশের পরম স্পর্শে দিশার কিছুটা ভালো লাগলেও তার মনের মধ্যে কেমন যেনো একটা অস্বস্তি কাজ করছে। মানুষটার স্পর্শ সে সব সময় পেতে চায়। তবে নতুন পরিস্থিতিটা তার কাছে কেমন যেনো অস্বস্তিকর লাগছে। আকাশ দিশার এই বিষয়টা বুঝতে পেরে দিশাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘কি হয়েছে তোমার? আমার স্পর্শ তোমার ভালো লাগছে না?’

দিশা আকাশের কথায় মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জওয়াব দেয়।

–‘তাহলে তোমার চেহারায় অস্থিরতার ছাপ দেখতে পাচ্ছি কেন?’

–‘আমার না কেমন যেনো অস্বস্তি লাগছে। মানে আমি নতুন পরিবেশ টাকে মানিয়ে নিতে পারছি না। আমার কেমন যেনো একটা লাগছে।’

–‘ঠিক আছে একটু অপেক্ষা করো। আমি তোমায় কিছু সময় পরে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো।’

দিশা আর কোনো কথা বলে না। অপরদিকে আকাশ ও চুপ করে দিশার পাশে বসে থাকে। এভাবে কিছু সময় যেতেই ম্যানাজার আকাশকে ফোন বলে সে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে আকাশের জিনিসপত্র নিয়ে। আকাশ ম্যানাজারের ফোন পেয়ে দিশাকে রেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ম্যানাজারের কাছে গিয়ে জিনিসপত্র গুলো নেয়। এরপর ম্যানাজারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাসায় ফিরে আসে। বাসায় ফিরে এসে একটা শাড়ী বের করে দিশাকে দিয়ে বলে,

–‘ওয়াশরুমে গিয়ে শাড়ীটা পড়ে এসো। এরপর তোমায় নিয়ে বের হবো আমি। আশা করি তোমার মনমানসিকতা ঠিক হয়ে যাবে সেখানে গেলে।’

দিশা কোনো কথাবার্তা ছাড়া চটজলদি আকাশের হাত থেকে শাড়ীটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। কারন আর থাকতে পারছে না এই বাড়িতে সে। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে শাড়ীটা কোনো মতে শরীরে পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে দিশা। দিশা ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই আকাশ দিশাকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। দিনের আলো নিভে গিয়ে রাত হয়ে এসেছে। আকাশ গাড়ি ড্রাইভ করে দিশাকে সঙ্গে নিয়ে বেশ কয়েকটা দার্শনিক স্থান ঘুরে দেখায়। ঘুরাঘুরির মধ্যেই রাত দশটা বেজে যায়। এরপর দু’জন মিলে একটা ব্রিজের উপরে গিয়ে হাজির হয়। দু’জনে ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আর প্রকৃতির মোলায়েম বাতাস উপভোগ করছে। কেউ কারোর সাথে কোনো কথা বলছে না। এমন সময় হুট করেই আকাশ দিশার চুল থেকে ক্লিপ টা সরিয়ে নিয়ে দিশার চুল গুলো ছেড়ে দেয়৷ দিশা আকাশের এমন আচরণে আকাশের দিকে এক পলক তাকিয়ে চুল গুলো খোঁপা করার জন্য হাত মাথার দিকে অগ্রসর করে। সেই সময় আকাশ দিশাকে টান দিয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়। এরপর দিশার চুলে মুখ গুঁজে দিয়ে বলে,

–‘চুল গুলো বাঁধার জন্য এতো তড়িঘড়ি করছো কেন? কামড়াচ্ছে নাতো চুল গুলো তোমায়?’

–‘বাতাসে চুলে জট লেগে যাবে। এমনিতেই মাথা থেকে চুল ঝড়ে পড়ছে। তার উপরে জট লাগলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।’

–‘সমস্যা নেই। আমি তোমার চুলের জট ছাড়িয়ে দিব। এখন আমাকে তোমার চুলের ঘ্রাণ নিতে দাও।’

আকাশের কথা শুনে দিশা আর কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। অপরদিকে আকাশ দিশার চুলে মুখ গুঁজে দিয়ে ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত। ঠিক সেই সময় হুট করেই ব্রিজের উপরে একটা মাইক্রো এসে দাঁড়ায়। আর তার ভিতর থেকে কয়েকজন লোক ধারালো অ/স্ত্র হাতে নিয়ে বেরিয়ে আকাশদের দিকে এগিয়ে আসে। দিশা লোক গুলোকে দেখে ভয়ে কাতর হয়ে আকাশকে খামচাতে শুরু করে। কিন্তু আকাশের কোনো হুঁশ নেই। সে দিশার চুলের ঘ্রাণ নেওয়া ব্যস্ত। লোক গুলো ধারালো অ/স্ত্র/ হাতে দিশাদের একদম নিকটে চলে আসে। নিকটে চলে আসার পর এক টান দিয়ে দিশাকে আকাশ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দিশার গলায় ছুরি চেপে ধরে তার সাথে অসভ্যমো করতে শুরু করে…

চলবে….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ