কুহেলিকা পর্ব-১৩

0
537

#কুহেলিকা (পর্ব-১৩)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

–‘আকাশ তুমি যেখানেই থাকো না কেন দশ মিনিটের ভিতরে তোমাকে আমার চোখের সামমে দেখতে চাই। না হয়তো পুরো বাড়ি আমি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিব।

আকাশ ফোন রিসিভ করার পর তার বাবার এমন ভয়ানক বার্তা শুনে চমকে উঠে! হটাৎ তার বাবার এভাবে রেগে যাওয়াটা আকাশের বেশ অদ্ভুত লাগে। তাই সে সাথে সাথেই তার বাবাকে জিজ্ঞাস করে কি হয়েছে। কিন্তু আকাশের বাবা আকাশের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে মুখের উপরে ফোন কেটে দেয়। আকাশের এবার আরো বেশি অবাক লাগে! হুট করে তার বাবা তার উপরে এভাবে ফায়ার হয়ে গেছে কেন। কোনো কিছুই আকাশের মাথায় ঢুকছে না। অস্থিরতায় আকাশের চেহারার ধরণ পাল্টে গেছে। পাশ থেকে দিশা আকাশের ব্যাকুলতা দেখে আকাশকে জিজ্ঞাস করে,

–‘কি হয়েছে জনাব? আপনার চেহারার ধরণ হুট করেই এমন হয়ে গেলো কেন? এই তো একটু আগেও তো স্বাভাবিক ছিলেন, কিন্তু ফোন আসার পর আপনার চেহারার ভাবমূর্তিই যেনো পাল্টে গেছে। কি হয়েছে বলবেন কি আমায়?’

–‘দিশা কি হয়েছে সেটা আমারো অজানা। আমি বাসায় গেলেই বুঝতে পারবো কি হয়েছে।’

–‘ওহ আচ্ছা। কিন্তু কে ফোন দিয়েছে?’

–‘বাবা ফোন করেছে।’

–‘ঠিক আছে তাহলে আপনি জলদি বাসায় চলে যান। হয়তো বাসায় কোনো সমস্যা হয়েছে।’

–‘হুম আমি বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হচ্ছি, তুমি নিজের খেয়াল রেখো।’

–‘আমায় নিয়ে আপনার একদম টেনশন করতে হবে না। আপনি আগে নিজের ব্যাকুলতাকে দূর করুন।’

–‘আচ্ছা চললাম।’

এরপর আকাশ দিশাকে রেখে পল্লী থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসে গাড়ি স্টার্ট করে। আকাশের গন্তব্য হচ্ছে বাড়ি। বেশ জোরে গাড়ি ড্রাইভ করছে আকাশ। আধঘন্টার পথ আকাশ বারো-তেরো মিনিটেই পাড়ি দিয়ে বাসায় পৌঁছেছে। বাসায় পৌঁছে দেখে আকাশের মা-বাবা এবং তার ছোট বোন আকাশের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আকাশ যেনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না কি হয়েছে! ধীরে ধীরে কদম বাড়িয়ে আকাশ তার বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর আকাশ কিছু জিজ্ঞাস করতে যাবে তার বাবাকে, তখনি আকাশের বাবা আকাশের মায়ের উপরে রেগে গিয়ে বলে,

–‘আকাশের মা তোমার ছেলের সমস্যাটা কোথায় একটু জিজ্ঞাস করো। দু’দিন হয় নি এখনো ভালো করে অফিস আদালত তার নামে করিয়ে দিয়ে সম্মানের মুকুট পড়িয়েছি তার মাথায়। কিন্তু তোমার ছেলে তার সেই সম্মান নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সে নিজে তো নিজের সম্মান নষ্ট করছেই, সাথে আমাদের টাও খাবে।’

আকাশের মা আকাশের বাবার কথা শুনে আকাশকে প্রশ্ন করে,

–‘কিরে বাবা কি করেছিস তুই? তোর বাবা তোর উপরে এতো রেগে আছে কেন? তোর বাবা তো আমাদের ও কিছু বলছে না। বাবা তুই বল তো কি হয়েছে?’

–‘মা আমারো অজানা বাবা কেন এতোটা রেগে আছে আমার উপরে। তুমি নিজেই বাবাকে জিজ্ঞাস করো কি করেছি আমি।’

–‘ওগো আকাশের বাবা বলো না গো কি হয়েছে? আকাশ তো বলছে সে নিজেও জানে না তোমার রাগের কারন।’

–‘এখন কিছুই জানবে না সে। ভোলা রোগে ধরেছে তাকে। তাই আমিই মনে করিয়ে দিচ্ছি কি করেছে সে। তোমার ছেলে পতিতা পল্লীর মেয়েকে নিয়ে রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। আবার সেই মেয়ের সঙ্গে নাকি নিষিদ্ধ নগরীর ভিতরেও সময় কাটায়। এবার তোমার ছেলেকে জিজ্ঞাস করো তার মনে পড়েছে কিনা। আর আমার কথা গুলো সত্যি কিনা।’

–‘কিরে আকাশ তোর বাবা যা বলছে তা কি সত্যি?’

আকাশ তার মায়ের কথায় চুপসে থাকে। কারন সে কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। আকাশের চুপসে থাকা দেখে আকাশের মা তাকে আবারো জিজ্ঞাস করে,

–‘আকাশ তোর বাবার বলা কথা গুলো কি সত্যি নাকি?’

এবার আকাশ উত্তর দিবে বলে ঠিক করে। কারন সে যতো চুপসে থাকবে ততোই সমস্যা। যেহেতু বাসার মানুষ তার ব্যাপারে জেনেই গেছে, তাই সে মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তার ছোট বোনকে নিয়ে। তার সামনে আকাশ এসব বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে চাচ্ছে না। সেজন্য আকাশ তার ছোট বোনকে আদর করে ডেকে বলে,

–‘ছুটকি তুই একটু নিজের রুমে যা। আমার কিছু কথাবার্তা আছে বাবা-মায়ের সাথে।’

–‘ঠিক আছে ভাইয়া আমি নিজের রুমে যাচ্ছি।’

আকাশের ছোট বোন নিজের রুমে চলে যেতেই আকাশ তার মা’কে বলে,

–‘হ্যাঁ মা বাবার কথা সত্যি। আমি পল্লীর একটা মেয়েকে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। আর তার সাথে সময় কাটাই।’

–‘কেন রে আকাশ? দুনিয়ায় কি তোর মেয়ের অভাব পড়েছে? আর তাছাড়া তোর তো একটা সম্পর্ক আছে। আমি যতদূর জানি তোর সম্পর্কটা প্রভার সাথেই। তাহলে তুই এসব করে নিজের মানসম্মান কেন নষ্ট করছিস, আর নিজের সম্পর্কটার সাথেও কেন প্রতারণা করছিস? তুই জানিস তোর এই আচরণ সম্পর্কে সমাজ জানতে পারলে কি কেলেঙ্কারিটা হবে?’

–‘মা দুনিয়াতে মেয়ের অভাব নাই, কিন্তু আমাকে বুঝবার মতন মেয়ের ঠিকই অভাব। মা আমি কিন্তু সেই পল্লীতে এমনিতে এমনিতে যাই নি। আর সেই মেয়ের সাথেও কিন্তু এমনিতে এমনিতে ঘুরে বেড়াই নি। আমি সেই পল্লীতে যাই মানসিক শান্তি খুঁজতে। আর সেই শান্তিটা আমি পল্লীর একমাত্র মেয়ে দিশার কাছেই খুঁজে পাই। তোমরা আবার ভেবোনা না যেনো আমি শারীরিক তৃপ্তির জন্য এসব কথাবার্তা বলছি। মা আমার এসবের শুরুটা কিন্তু প্রভাই করে দিয়েছে। না হয়তো এই দিশার খোঁজ আমি কোনোদিন এই পেতাম না। আর পল্লীতে গিয়ে দিশার সাথে আমার মেশাও হতো না।’

–‘প্রভা এসবের শুরু করে দিয়েছে মানে কি?’

–‘মানে হলো শুরুতে প্রভাই আমাকে ধোঁকা দিয়ে অন্য একটা ছেলের সাথে সেই নিষিদ্ধ নগরীতে গিয়ে মেলামেশা করেছে। আমি গত দুই-তিন দিন আগে প্রভাকে সেই পল্লীতে একটা ছেলের সাথে প্রবেশ করতে দেখি। তখন আমি প্রভার পিছু নিয়ে তার নোংরামো সম্পর্কে জানতে পারি। প্রভা আমাকে প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিচ্ছে মা। আর এই দিশা নামক মেয়েটা আমাকে বাঁচিয়েছে সবার হাত থেকে।’

–‘কি বলিস এসব? আর দিশা নামক মেয়েটা তোকে কি ভাবে বাঁচিয়েছে?’

–‘প্রভার পিছু নিয়ে যখন পল্লীতে প্রবেশ করি, তখন পল্লীর রমণীরা আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু এই দিশা তখন আমার সঙ্গ দিয়ে সবার হাত থেকে বাঁচিয়েছে।’

আকাশের কথা শুনে আকাশের বাবা বলে উঠে,

–‘সে তোকে বাঁচিয়েছে ভালো কথা, কিন্তু তার জন্য কি তুই তার সাথে চলাফেরা করবি নাকি? আর এমন মেয়ে তো টাকার জন্য হাজারো পুরুষকে সঙ্গ দেয়।’

–‘বাবা তোমার ধারণাটা একদম ভুল। আমি তাকে টাকার প্রলোভন দেখানোর পরেও সে টাকা নেয়নি। আর আমি কিন্তু তার সাথে অল্পতেই মেলামেশা করিনি। আমি মেয়েটার মনুষ্যত্ব দেখে তার সাথে চলাফেরা করেছি। প্রভা নিজের শারীরিক চাহিদার জন্য আমায় ধোঁকা দিয়েছে। সেখানে পল্লীর এই দিশা নামক মেয়েটা, যে কিনা টাকার জন্য সব করে, সে আমার টাকাকে প্রত্যাখ্যান করে আমায় গুরুত্ব দিয়েছে। আমার কষ্টকে সে নিজে উপলব্ধি করেছে। আমি এজন্যই তার সাথে মেলামেশা করি। প্রভা আমায় ভালোবেসেও প্রতারণা করেছে। আর এই মেয়ে পতিতা হওয়া সত্বেও নিজের কাজকর্ম ফেলে রেখে আমায় প্রতিনিয়ত সামলাচ্ছে। তার না আছে কোনো টাকার লোভ। না আছে কোনো বাজে চাহিদা। সে আমায় আগলে রাখা টাকে বেশ উপভোগ করে। তাই আমি তার সাথে মেলামেশা করি।’

–‘প্রভা তোর সাথে খারাপ আচরণ করেছে ভালো কথা, কিন্তু তুই ও কম করিস নি এসব করে। নিজের মানসম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছিস। তাই নিজের কষ্টকে ভুলতে এই কয়দিন যা করেছিস করেছিস, কিন্তু আগামীতে যেনো ঐ মেয়ের আসেপাশে তোকে যেতে না দেখি।’

–‘বাবা তোমার কথাটা আমি রাখতে পারবো না। যেই মেয়ে আমায় সামলে রাখার চেষ্টা করছে, আমি তার থেকে দূরে সরে নিজেকে বিরহের দাবানলে পুড়াতে চাচ্ছি না।’

–‘তার মানে তুই সেই মেয়ের কাছে আবারো যাবি?’

–‘আমি সেই মেয়ের কাছে আবারো যাবো না খালি, তাকে আমি আজীবন নিজের কাছেই রাখতে চাই। এতে তোমরা যা খুশি করতে পারো।’

আকাশের কথা শুনে আকাশের বাবার রাগের মাত্রা যেনো আরো বেড়ে যায়। তাই তিনি আকাশের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়ে আকাশের মা’কে বলে,

–‘তোমার ছেলেকে বলার মতন কোনো ভাষা আমার নেই। তবে আকাশের মা তোমায় আমি একটা কথা স্পষ্ট ভাবে বলে দেই, তোমার ছেলের সাথে আগামীতে সেই মেয়ের কোনো সংযোগ থাকলে বা তোমার ছেলে সেই মেয়েকে নিয়ে জীবন কাটাতে চাইলে তাকে এই বাড়ি ত্যাগ করতে হবে। কারন মানসম্মান ওর না থাকলেও আমাদের আছে। আমি চাই না আমার কথার অমতে গিয়ে কেউ কিছু করার পর আবার আমার চোখের সামনে এসে ঘুরে বেড়াক। তাই তোমার ছেলের কাছো দু’টো অপশন আছে। হয় সে ঐ মেয়ের অধ্যায় শেষ করে আমাদের সাথে থাকবে। না হয় সে এই বাড়ি ছেড়ে দিয়ে নিজের মন-মানি করবে।’

–‘আকাশের বাবা তুমি প্লিজ রাগ করো না। দেখো তোমার ছেলের সুখ-শান্তি টাই হচ্ছে বড় জিনিস। তোমার ছেলে যাকে নিয়ে ভালো থাকতে পারে থাকুক। কারন সংসার টা তো সে করবে। তাই খামোখা ওর সাথে এভাবে রাগ দেখিয়ে লাভ আছে বলো?’

–‘আকাশের মা আমি তোমার কোনো কথাই শুনবো না। আমি একবার যেটা মুখ দিয়ে বের করেছি সেটাই ফাইনাল। কারন আমি দ্বিতীয়বার আর এইসব ঝামেলায় পড়তে চাই না। বহু কষ্টে সম্মান জুড়িয়েছি। আকাশের মা তোমার মনে আছে, যখন তোমায় আমি বিয়ে করি তখন লোকে নানান কথা বলেছিল তোমায় নিয়ে?’

–‘হুম বেশ ভালো করে মনে আছে। আমি সেই সময় গুলোর কথা কখনোই ভুলবো না। তবে তুমি তো পরবর্তীতে নিজের নাম বানিয়ে সবাইকে সঠিক জওয়াব দিয়েছো। তাহলে এখন এতোটা ভয় পাচ্ছো কেন?’

–‘আকাশের মা তুমি সঠিক থাকার পরেও মানুষ তোমায় নিয়ে কি কি রটিয়েছিল। আর তোমার ছেলে তো সত্যিকারত্বে একটা প্রস্টিটিউটের সাথে সারাজীবন থাকতে চাইছে। তাহলে ভাবো কতো কি হতে পারে। তাই আমি কখনোই আকাশের সাথে ঐ মেয়েকে মেনে নিব না। তোমার ছেলে সেই মেয়ে বাদে আমাদের সাথে সম্মানের সহিত থাকতে পারে। না হয়তো সম্মান খোয়ানোর হলে অন্য কোথাও গিয়ে খোয়াতে বলো। আমার ঘরে তার জায়গা নেই। আমি আর দ্বিতীয় বার সম্মানের জন্য লড়াই করতে পারবো না।’

–‘ঠিক আছে তাহলে সে তোমার দেওয়া নতুন বাড়িটায় থাকুক। কিন্তু আমি চাইনা তুমি এসব নিয়ে কষ্ট পাও। আর আমি তোমার ছেলেকে সাপোর্ট করার কারন হচ্ছে, সে কষ্টে আছে। আমি চাইনা সে ঐ মেয়েকে ছেড়ে দিয়ে কষ্টের বোঝা আরো প্রসার করুক। সে যদি ঐ মেয়ের মধ্যে নিজের অস্তিত্বকে খুঁজে পায়, তাহলে সে থাকুক সেই মেয়ের সঙ্গে। এতে আমরা আপত্তি করে কোনো লাভ নেই।’

–‘তোমাদের যেমন খুশি তোমরা করো। আমি চললাম নিজের রুমে। তোমার ছেলের ব্যাপারে আমার কথা বলতে জাস্ট ঘৃণা হচ্ছে।’

আকাশের বাবা রাগ দেখিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। তখনি আকাশের মা আকাশকে বলে,

–‘আমি তোর বাবাকে গিয়ে শান্ত করার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু যাওয়ার আগে একটা কথা বলে যাই। যা করবি বুঝে শুনে করবি। কিন্তু দয়া করে নিজের পরিবারের সম্মান ডুবাস না।’

–‘মা তুমি আমার উপরে ভরসা রাখো।’

–‘তোর উপরে আমার ভরসা আছে। আচ্ছা শোন আমি গেলাম। তুই এখুনি নতুন বাসায় চলে যা। কারন তোর বাবা তোকে এই বাসায় দেখতে পেলে পরবর্তীতে আবারো রাগারাগি করতে পারে।’

–‘আচ্ছা।’

আকাশ তার মায়ের কথায় তখনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে নতুন বাসায় চলে যায়। এরপর সমস্ত জিনিসপত্র অর্ডার করে সেসবকে মানুষ দিয়ে সাজিয়ে ঘর টাকে রাতারাতি থাকার উপযুক্ত করে তোলে। রাত হয়ে এসেছে। আকাশ ঘরের কাজকর্ম শেষ করে গাড়ি টেনে দিশার সাথে এক ফাঁকে দেখা করতে পল্লীতে চলে যায়। পল্লীতে গিয়ে দিশার সাথে দেখা করে দিশাকে বলে,

–‘আগামীকাল তোমায় আমি আমার নতুন বাসায় নিয়ে যাবো। এরপর থেকে তুমি আর আমি দু’জনে মিলে সেই বাড়িতেই থাকবো। তুমি কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রেডি হয়ে থেকো। আমি অফিস শেষ করে চারটা নাগাদ এসে তোমায় সঙ্গে করে নিয়ে যাবো।’

–‘আচ্ছা জনাব আমি রেডি হয়ে থাকবো।’

–‘হুম এখন আমি চললাম। কাল দুপুরে আসবো তোমায় নিয়ে যেতে।’

–‘আচ্ছা।’

দিশা আকাশের কথা শুনে মনে মনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। কারন তাকে আকাশ আগামীকাল এই পল্লী থেকে একেবারে নিয়ে চলে যাবে। তাই সে আকাশ আর নতুন জীবনকে ঘিরে কল্পনা করতে থাকে। অপরদিকে আকাশ দিশার সাথে কিছুটা সময় কথা বলে পল্লী থেকে বেরিয়ে গাড়ি করে তার নতুন বাড়িতে ফিরে আসে। পরেরদিন আকাশ অফিস শেষ করে দিশাকে আনতে পল্লীতে চলে যায়। পল্লীতে গিয়ে দেখে দিশা রেডি না হয়ে স্বাভাবিক ভাবে বসে আছে। দিশাকে স্বাভাবিক অবস্থায় দেখতে পেয়ে আকাশ দিশাকে জিজ্ঞাস করে,

–‘কি হলো তুমি এখনো রেডি হও নি যে? কখন যাবে তুমি আমার সাথে?’

আকাশের কথার প্রতিত্তোরে দিশা অদ্ভুত ভাবে রেগে দিয়ে আকাশকে বলে,

–‘যাবো না আমি তোর বাড়ি। তুই চলে যা এখান থেকে। আমাকে নিয়ে বহু আদিখ্যেতা দেখিয়েছিস। এবার সমস্ত কিছু বন্ধ করে নিজের মতন থাকতে শিখ। আর আমায় চিরতরে ভুলে যা।’

হুট করে দিশার এমন অদ্ভুত কথাবার্তা শুনে আকাশ পুরো চমকে উঠে! সে কোনো মতেই দিশার অদ্ভুত আচরণ সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারছে না! এই তো গতরাতেও মেয়েটা ঠিক ছিল। আকাশ যখন গতরাতে দিশাকে বলে আজ দুপুরে সে তাকে নতুন বাসায় নিয়ে যাবে, তখন দিশা কতো সুন্দর হাসিখুশি কথা বলেছে। কিন্তু হুট করেই দিশার কি এমন হলো, যে সে পুরোপুরি পল্টি খেয়ে নিয়েছে….

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে