কুহেলিকা পর্ব-০৫

0
699

#কুহেলিকা (পর্ব-৫)
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ

–‘আপনি আমার মধ্যে কি পেয়েছেন বলেন তো?
আপনি আমার উপরে আক্রমণ করে কেন আমায় আপনার প্রতি এভাবে দূর্বল করছেন?’

দিশার কথার উত্তরে আকাশ খুব জোরে একটা শ্বাস নিয়ে দিশাকে বলে উঠে,

–‘আমি জানিনা!’

–‘আমি তো শেষ হয়ে যাচ্ছি আপনার মাদকতায়।
এই জীবনের প্রথম কাউকে এভাবে নিজ থেকে কাছে টেনেছি।’

–‘জানো আমারো না খুব অস্বাভাবিক একটা অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেনো তুমি আমার বিয়ে করা বউ। তোমার সাথে আমি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আর তুমি আমায় অধিকার খাঁটিয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়েছো। আচ্ছা তুমি কি আমার জীবন সঙ্গিনী হতে পারো না?’

আকাশের কথা শুনে দিশার শরীরের শিহরণ আরো বেড়ে যায়। সে এক কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেছে। তার সারা শরীর মাদকতার রেষ বহন করছে। এরমধ্যে আবার আকাশ তাকে আকাশচুম্বী স্বপ্নের রাজ্য বিচরণ করাতে নিয়ে যেতে চাইছে। সে মুহূর্তের জন্য হারিয়ে গেছে নিজের কল্পনার জগতে, কিন্তু সেই জগতে তার বেশি একটা সময় ঠাঁই হয় না। কারন স্বপ্ন আর বাস্তবার তফাৎ আকাশ-পাতাল। সে চাইলেও নিজের পরিচয় মুছে ফেলে আকাশের সহচর হতে পারে না। তাই সে নিজেকে সামলে নিয়ে আকাশকে বলে,

–‘আপনি হয়তো মাদকতার কারনে নিজের হুঁশ-জ্ঞান হারিয়ে বসেছেন। দেখুন আপনার কথা গুলো জ্বরের মুখে প্রলাপ করার মতন। মানুষের যখন অতিমাত্রায় জ্বর হয়, তখন অনেকেই অনেক কিছু বকতে আরম্ভ করে। আপনার বেলাতেও এমনটা হয়েছে। অবশ্য আপনার অতিমাত্রায় জ্বর হয়নি, কিন্তু আপনি মাদকতায় এটা সেটা বকতে আরম্ভ করেছেন। তাই আমি বলি কি আপনি আমার সাথে যা ইচ্ছে হয় করুন, কিন্তু এসব আকাশচুম্বী স্বপ্নকে বাস্তব করার চিন্তা-ভাবনা প্লিজ মাথায় আনবেন না।’

–‘দিশা আমার হুঁশ-জ্ঞান ঠিক ঠাক মতোই আছে। আর শুনো আমাকে একদম জ্ঞান দিতে আসবা না। আমি তোমার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে শুরু করেছি।’

–‘কিসের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন শুনি?’

–‘পেয়েছি অনেক কিছুই। সেসব তোমায় পরে কোনো এক সময় বলবো। কিন্তু তোমায় নির্লজ্জের মতন একটা কথা বলি। দিশা তুমি জানো তুমি একটা নৈষাক্তময় গাছ? দিশা তুমি জানো তোমার মধ্যে দুনিয়ায় সব চাইতে দামী খাজনা লুকিয়ে আছে? দিশা আমি কোনোদিন কোনো নারীর কাছে যাইনি। এই জীবনের প্রথম আমি কোনো নারীকে স্পর্শ করেছি। হয়তো আমার অভিজ্ঞতা বাকিদের মতন এতোটা উন্নত নয়। তবে তার পরেও আমার বিশ্বাস তোমার পেটের পরতে দুনিয়ার সমস্ত মাদকতা লুকিয়ে আছে। তোমার শরীরে যেই পরিমাণ মাদকতা দেখেছি আমি, আমার মনে হয় না এতোটা মাদকতা দুনিয়াতে আর অন্য কোনো নারীর মাঝে আছে। তোমার এই মাদকতার কাছে পুরো দুনিয়ার সমস্ত কিছু ফিকে পড়বে। আমি চাইনা তোমায় হারাতে। তুমি অলিখিতভাবে আমার হয়ে যাও দিশা।’

–‘আমায় লিখিত ভাবেও মানুষ নিজের কাছে রাখবে পারবে না, সেখানে আপনি অলিখিত ভাবে আমায় নিজের কাছে রাখতে চাইছেন? বলুন তো সম্ভব এটা কখনো? আপনার পরিবার আর উন্নত সমাজ এই বিষয়টাকে কোন চোখে দেখবে একবার ভেবে দেখেছেন আপনি?’

–‘দিশা আমি কোনো কিছু ভাবতে চাই না। আর আমার তোমার মতন এতো আজাইরা ভাবনা করার সময় নেই।’

–‘সময় না থাকলেও আপনাকে ভাবতে হবে। না ভেবে হুটহাট যেটা মুখে আসে সেটা বলে দিলেই হয় না। আপনি যতোটা সহজ ভাবে এই বিষয়টাকে মনে করছেন, ততোটা সহজভাবে যদি সমাজ ও মেনে নিতো, তাহলে পল্লীর নারীকে মানুষ কোনো দ্বিধাবোধ ছাড়াই বিয়ে করে সমাজের সামনে স্বকৃীত দিতো।

–‘দিশা সমাজ আমায় খাওয়ায় না পড়ায় ও না। আমার নিজের সমাজ আমার নিজের মধ্যে। আমি যেটাতে কম্ফোর্ট ফিল করবো আমি সেটাই করবো। আমি বর্তমানে তোমায় নিয়ে কম্ফোর্ট ফিল করছি। এখন সমাজ আমায় নিয়ে কি বলবে সেটা দেখার সময় আমার নাই। কিন্তু তুমি অন্তত চুপ থাকো। বাকি আট-দশটা মানুষের মতন তুমি অন্তত আমায় জ্ঞান দিও না। আমি কিছু সময় আগে তোমার মাঝে পুরোপুরি হারিয়ে গিয়েছিলাম। তবে তুমি আমায় সেখান থেকে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসলে। দিশা তোমার আচরণে বেশ কষ্ট লাগলো। কতো সুন্দর একটা মুহূর্তকে তুমি আজেবাজে কথা বলে নষ্ট করে দিলে। ধ্যাৎ দুনিয়ার সমস্ত মানুষজন এই নোংরা। কারোর ভালো কেউ দেখতে পারে না। কেউ নিজেকে ভালো রাখার জন্য একটু খানি আশ্বাস পেলে সেই আশ্বাস কি ভাবে কেঁড়ে নেওয়া যায় সবার মাঝেই এই চিন্তাই বিরাজমান। আমি আর কাউকেই বিশ্বাস করি না। উঠে গেলাম তোমার কোল থেকে। লাগবে না আর আমার মানসিক প্রশান্তি। জিএফ অন্য লোককে নিয়ে পল্লীতে ঘুরে শান্তির খোঁজ করে বেড়ায়। আর আমি সময় এবং টাকা নষ্ট করে অশান্তি খুঁজে নিলাম।’

আকাশ দিশাকে এসব বলে চোখ-মলিন করে দিশার কোল থেকে উঠে যায়, কিন্তু আকাশ পুরোপুরি উঠার আগেই দিশা আকাশের মাথা ধরে তাকে জোরপূর্বক আবার নিজের কোলে শুইয়ে দেয়। নিজের কোলে শুইয়ে দেওয়ার পর শাড়ীর কিছুটা অংশ দিয়ে আকাশের মুখমন্ডল ঢেকে কিছুটা রাগান্বিত ভঙ্গিমায় আকাশকে বলে,

–‘কোল থেকে উঠবার চেষ্টা করলে একদম গলা টিপে মেরে ফেলবো। একদম উঠবেন না কোল থেকে বলে দিলাম। চুপচাপ কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকুন। আর আমি ক্ষমাপ্রার্থী আপনাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলার জন্য। এবারের মতন ক্ষমা করে দিন। আগামীতে কখনো আর এমনটা হবে না।’

–‘দিশা আমার জোর করে শুইয়ে দিলেই তো মনের কষ্ট দূর হবে না তাই না?’

–‘আমি জানি আপনার মনের কষ্ট দূর হবে না, তবে আপনি চাইলে যে কোনো পায়তারা করতে পারেন নিজের কষ্ট দূর করার জন্য। আমি আপনার মুখমন্ডল শাড়ী দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। কেউ এখন আর আপনাকে দেখবে না। আপনি অগণিত চুমু খান আমার পেটের পরতে। আপনি আপনার ঐ গোলাপি ঠোঁট আমার পেটের পরতে লেপ্টে দিন। আমি আপনাকে না আর কিছু বলবো, না আর ছেড়ে যাওয়ার কথা বলবো। ধরে নিন আমি আপনার। ধরে নিন আমি আপনার বিয়ে করা বউ। যা ইচ্ছে হয় করুন আমার সাথে। আপনাকে এই বিষয় নিয়ে আর কেউ বাঁধা দিবে না। যতো ইচ্ছে হয় চুমু খান। যা খুশি হয় করুন আমার সাথে। আমিও এটা ধরে নিব আমি আপনার বউ। আর আমার স্বামী আমায় স্পর্শ করছে।’

–‘আমার মন রক্ষার্থে সাময়িক বউ সেজে লাভ কি?’

–‘সাময়িকের জন্য নয়, সারাজীবন আমি আপনার বউ হয়ে থাকবো। আমার উপরে শুধু আপনার অধিকার থাকবে। সমাজ যাক জাহান্নামে, কিন্তু আমি চাই না আপনি আমার জন্য কোনো কষ্ট পান।’

–‘দিশা আমি জানি তুমি আমার কষ্ট দূর করার জন্য এসব বলছো, কিন্তু পল্লীতে ফিরে গেলে তখন তো টাকার জন্য অন্য লোকের কাছে যাবে।’

–‘বাহ আপনি আমায় এই চিনলেন? আমার যদি এতোই টাকার প্রতি লোভ হতো, তাহলে আমি আপনার বিনাকারণে দেওয়া টাকাটা খাবলা দিয়ে আপনার থেকে নিয়ে নিতাম। শুনুন আমার মধ্যে এসবের কোনো লোভ নেই। আমি নিজের প্রাণ বাঁচানোর পাশাপাশি মাথা গুঁজবার একটা স্থানের জন্য এই পল্লীতে রয়ে গেছি। না হয়তো আমি বহু আগেই এখান থেকে চলে যেতাম।’

–‘যাবে না তো অন্য পুরুষের কাছে আর?’

–‘মরে গেলেও যাবো না। যেই পুরুষ আমায় দুনিয়ায় সব চাইতে মাদকতাময় নারীর খেতাব দেয়, আমি তার মনে আঘাত দিয়ে অন্য পুরুষের কাছে কি করতে যাবো বলেন? আমি যাবো না আর কারোর কাছে। আমি শুধু আপনার। আমার পুরো দেহ আপনার পার্সোনাল প্রোপার্টি। কেউ আপনার এই প্রোপার্টিতে দখলদারি করতে পারবে না। আপনি আমার উপরে বিশ্বাস রাখুন। আমি নিজের সব টুকু দিয়ে আপনার আমানত হেফাজত করবো। কিন্তু একটা কথা,

–‘কি কথা?’

–‘কোনো টাকা ওয়ালা হিংস্র পশুর কবলে পড়লে হয়তো আমি হাজার চাইলেও বাঁচতে পারবো না। কারন পল্লীর একটা নিয়ম আছে। পল্লীতে থাকতে হলে সেই পল্লীর সর্দারনীর কথা শুনতে হয়। সর্দারনী যদি মোটা অংকের টাকার জন্য আমায় অন্য লোকের কাছে শপে দেয়, তাহলে তখন আমার আর কিছুই করার থাকবে না।’

–‘তোমার সর্দারনীর ব্যবস্থা আমি করবো। তার মুখে টাকার বান্ডিল ছুঁড়ে মেরে তোমায় নিজের নামে লিখিত করে নিব। তাহলে সে আর তোমায় জোর করতে পারবে না।’

–‘তাহলে আমি আর কারোর কাছেই যাচ্ছি না। আমি আপনার আছি আপনারই থাকবো। এবার গুমরো মুখে হাসি ফুটিয়ে আপনার নৈশ্বর্যের রাজ্যে ডুব দিন।’

দিশার এমন কথা শুনে আকাশকে আর কে আঁটকে রাখে। আকাশ দিশার শাড়ীর অভ্যন্তরে থেকে অকপটে দিশার শরীরে চুমু খেতে থাকে। এভাবে আধঘন্টা খানিক আকাশ দিশাকে নিয়ে ডুবে থাকে। আধঘন্টা পর আকাশ দিশাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসে। দিশার চেহারা লজ্জায় লাল হয়ে আছে। শাড়ীর অভ্যন্তরে থেকে আকাশ কি অত্যাচারটাই না দিশাকে করেছে। আকাশ উঠে যাওয়ার পর দিশার কপালে একটা চুমু একে দেয়। দিশা লজ্জায় আরো লাল হয়ে যায়। তখনি আকাশ দিশাকে বলে,

–‘দিশা মনি লজ্জা পেয়ে লাভ নেই। আমি তোমায় মাঝের মধ্যেই এমন লজ্জায় ফেলবো। তুমি এখন থেকে এসবের প্রাকটিস করে নাও। আর এখন চলো আমার সাথে। পার্কের বাহিরে কোনো একটা রেস্টুরেন্টে বসে দু’জন খাবার খাবো। তারপর তোমায় পল্লীতে পৌঁছে দিয়ে আসবো।’

–‘আচ্ছা।’

আকাশ দিশাকে নিয়ে পার্ক থেকে বেরিয়ে একটু রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে গিয়ে দু’জন খাওয়া দাওয়া করে। খাওয়া দাওয়া শেষে আকাশ বিল পে করে দিয়ে দিশাকে নিয়ে এসে গাড়িতে বসে। এরপরেই আকাশ দিশাকে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট করে পল্লীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পল্লীতে পৌঁছে আকাশ গাড়ি থেকে নেমে দিশাকে বলে তাকে পল্লীর সর্দারনীর কাছে নিয়ে যেতে। দিশা আকাশের কথা মতন তাকে পল্লীর সর্দারনীর কাছে নিয়ে যায়। পল্লীর সর্দারনী থাকে দু’তালা একটা বাড়ির সেকেন্ড ফ্লোরে। দিশা আকাশকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে সোজা সর্দারনীর কাছে পৌঁছায়। আকাশের কাছে কেমন যেনো দম বন্ধ হয়ে আসছে নিষিদ্ধ নগরীতে ঢোকার পর থেকেই। কিন্তু দম বন্ধ হলেও কিছু করার নেই। দিশাকে তার নিজের নামে করতে হবে। পল্লীর সর্দারনী দু’জনে দেখে দিশাকে প্রশ্ন করে,

–‘কিরে কতো দিয়া কাস্টমার ধরলি?
হবে নাকি পাঁচ-ছয় হাজার?’

দিশা সর্দারনীর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে আকাশের দিকে তাকায়, তখনি আকাশ সর্দারনীকে বলে উঠে,

–‘আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।’

–‘কি কথা কইবেন কন।’

–‘আমার এই মেয়েকে পার্মানেন্ট লাগবে। আপনি এই মেয়েকে আর কারোর কাছে দিতে পারবেন না। আমি তার জন্য আপনাকে টাকা পে করবো।’

–‘সাহেব ক্ষমা করবেন আমারে। আমার পক্ষে এইডা সম্ভব না। কারন আমাগোর ধান্দার একটা উসুল আছে। যে যতো বেশি টাকা দেয় আমরা তার পছন্দ মতোই মাইয়া তারে দেয়। কিন্তু আপনি কইতাছেন তারে আপনার পার্মানেন্ট লাগবো। সাহেব এইডা কহনোই সম্ভব না। আপনার পাঁচ- দশ হাজার টাকার লাইগা এই মাইয়ারে আমি আপনার লাইগা বহায় রাখুন নাকি। সাহেব আমি ধান্দা করতে বইছি। আপনার কথা হুনলে আমার ধান্দা বন্ধ হইবো। দ্বিতীয়ত উসুলের খেলাফ হইবো। আমাগো ধান্দায় কোনো মাইয়ারেই পার্মানেন্ট কারোর লাইগা রাখা হয় না। যে টাকা দিব আমার মাইয়া তার লগেই শুইবো।’

–‘সবই ঠিক আছে, কিন্তু কে বলেছে আমি আপনাকে পাঁচ-দশ হাজার টাকা দিব?’

–‘তো কতো দিবেন স্যার?’

–‘পুরো পাঁচ দিব।’

–‘মানে বুঝলাম না স্যার?’

–‘মানে পুরো পাঁচ লাখ টাকা দিব। কিন্তু এই মেয়েকে আমার লাগবেই।’

আকাশের কথা শুনে পল্লীর সর্দারনী থতমত খেয়ে যায়! সর্দারনী আকাশের কথা শুনে আকাশের দিকে চোখ বড় বড় করে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকে। তখনি আকাশ পল্লীর সর্দারনীকে আওয়াজ দিয়ে বলে,

–‘ও সর্দারনী কথা বলছেন না যে?

আকাশের কথায় সর্দারনীর হুঁশ ফিরে আসে। হুঁশ ফিরে আসার পর সর্দারনী আকাশকে বলে,

–‘সাহেব এতো টাকার লাইগা আমি হাজারটা উসুল ভঙ্গ করতেও রাজি আছি। আমার দরকার টাকা। আপনি আমারে পাঁচ লাখ টাকা দিলে শুধু দিশা ক্যান দিশার মতন আরো একটারে আইনা আপনার সামনে হাজির করমু।’

–‘নাহ আমার শুধু দিশাকেই চাই।’

–‘ঠিক আছে সাহেব আপনার যেমন ইচ্ছা।’

–‘হুম এবার আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার দিন।’

সর্দারনী আকাশের কথা মতন তাকে ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার দেয়। আকাশ তৎক্ষনাৎ এই পাঁচ লাখ টাকা সর্দারনীর একাউন্টে ট্রান্সফার করে। টাকা বুঝে পাওয়ার পর সর্দারনী আকাশকে বলে,

–‘টাকা আসছে আপনি দিশারে লইয়া যান।’

–‘নাহ আমি ওকে নিয়ে যাবো না। সে এখানেই থাকবে।’

–‘সাহেব দিশা তো এহন আপনার। তাইলে ওর ভরনপোষণের দায়িত্ব ক্যান আমরা নিমু?’

–‘সেই দায়িত্ব আমিই নিব। আপনি ওর ভালোমন্দ দেখভাল করবেন। আর প্রতিমাসে ওর পিছনে যতো টাকা খরচ হবে সব টাকা আমি আপনাকে মাস শেষে পাঠিয়ে দিব।’

–‘তাইলে ঠিক আছে।’

–‘হুম এবার আমি চললাম। আপনি ওর ভালো করে খেয়াল রাখবেন।’

–‘সাহেব ওসব নিয়া আপনি টেনশন করবেন না। আমি ঠিকঠাক ভাবে ওর দেখাশোনা করুম।

–‘হুম এবার আমি চললাম। আর দিশা তুমি আমায় পল্লীর মুখ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসো। কারন এখানের পরিবেশ দেখে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আর তাছাড়া রাস্তায় আবার কোন মেয়ে আমায় ধরে বসে তার কোনো ঠিক নেই।’

আকাশের কথা শুনে দিশা পল্লীর দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে আকাশকে পল্লীর মুখ পর্যন্ত এগিয়ে দেয়। এখন আকাশের গাড়ি করে চলে যাওয়ার পালা। কিন্তু আকাশ না গিয়ে দিশাকে জড়িয়ে ধরে তার কপালে কয়েকটা চুমু একে দেয়। দিশাও আকাশের স্পর্শ চুপচাপ অনুভব করে। আকাশ চুমু খাওয়া শেষ করে দিশাকে বলে,

–‘নিজের খেয়াল রেখো। আমি চললাম। আবারো তোমার সাথে আমার দেখা হবে।’

–‘আপনিও নিজের খেয়াল রাখবেন।’

এরপর আকাশ দিশাকে ছেড়ে দিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। পরে গাড়ি স্টার্ট করে বাসায় এসে পৌঁছায়। বাসায় আসার পর গাড়ি পার্কিং করে যখনি বাড়ির মেইন দরজায় আসে, তখনি দেখে বাড়ির মেইন দরজার সামনে প্রভা দাঁড়িয়ে আছে….

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে