একজোড়া চড়ুই পর্ব-০৮

0
1105

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_৮
#Writer_Afnan_Lara
?
কেমন পুরুষ মানে?
তোমার ইচ্ছা হইসে বলে তুমি খেতে চাইসো,সো খাও এখন!কেমনে খাবা সেটা তোমার ব্যাপার,আমার না
.
আপনাকে তাহলে নারকেল ও খেতে দিব না আমি
.
নারকেল দাও বলতেসি
.
দিব না,কি করবেন?
.
শ্রাবণ পাঞ্জাবির হাতা উঠিয়ে ছোঁয়াকে এক দৌড়ানি দিলো
ছোঁয়া দৌড়াতে দৌড়াতে দূরে গাদা করে রাখা খড় কুটোর মাঝখানে দুম করে গিয়ে পড়লো,শ্রাবণ দাঁত কেলিয়ে এসে ছোঁয়ার হাত থেকে নারকেল নিয়ে নিলো
ছোঁয়া ডাবের দিকে তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে
.
শ্রাবণের এবার মায়া হলো,ডাব হাতে নিয়ে কিছুদূর গিয়ে এদিক ওদিকে খুঁজে দোকান একটা পেলো,সেখান থেকে একটা দা নিলো,তারপর দা দিয়ে বসে বসে ডাব কেটে ছোঁয়ার হাতে এনে দিলো
.
ধন্যবাদ?
.
খালি??কত কষ্ট করলাম জানো তুমি?
.
তো এখন কি এই খুশিতে বিয়ে করে নিতাম আমি?
.
?স্টুপিড গার্ল
.
খাগড়াচড়ি আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেসে,ছোঁয়া জেদ ধরে বসে আছে সে শাপলার তরকারি খাবেই খাবে
শ্রাবণ ও বাধ্য হয়ে ওকে নিয়ে নিজের বাসায় ফিরলো
ছোঁয়া বাসার সামনে এসে বাসার দিকে তাকিয়ে আছে
৬তলার একটা বাড়ি,ওমা লিফট ও নেই,তারমানে ৬তলায় উঠতে হলে পুরোটা সিঁড়ি বাইতে হবে?
এ কেমন দালান?গাঁজা খাইয়া বানাইসে নাকি
৬তলায় উঠতে উঠতে সিঁড়িতে ধপ করে বসে গেলো ছোঁয়া
আর পারবে না সে
শ্রাবণ এক হাতে ব্যাগ নিয়ে আরেক হাতে ফোন নিয়ে কানে ধরে বাবার সাথে কথা বলতেসে
তারপর ব্যাগ ফ্লোরে রেখে পকেট থেকে চাবি নিয়ে দরজা খুলতেই মনে পড়লো ছোঁয়ার কথা,তড়িগড়ি করে কয়েক সিঁড়ি নেমে দেখলো ছোঁয়া সি্ড়িতে বসে নিজেরপা টিপতেসে
.
কি?কোলে করে আনতে হবে নাকি?
.
ছোঁয়া রাগি রাগি চোখে চেয়ে বললো “না থাক,কষ্ট করে লিফট লাগালেই পারেন”
.
বাপের বাড়ি হলে লাগাতামই,এটা আমার বাপের বাড়ি না,ভাঁড়া বাড়ি
.
ছোঁয়া কষ্ট করে উঠে দাঁড়িয়ে শ্রাবণের বাসার ভেতর ঢুকে পড়লো
শ্রাবণ হাত থেকে ব্যাগটা সোফায় রেখে রান্নাঘরের দিকে চলে গেছে
ছোঁয়া হেঁটে হেঁটে সব রুমগুলো দেখতেসে
মোট ৪টা রুম,একটা রান্নাঘর,একটা বেডরুম,একটা সোফার রুম,আরেকটা ডাইনিং
ভালোই,বারান্দা আছে একটা,বেডরুমের সাথে,ছোঁয়া সেটাতে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখলো গাড়ী আর গাড়ী,বাসাটা একদম রোডের পাশে হওয়ায় পুরো রোড দেখা যাচ্ছে
ছোঁয়া আবার ফিরে এসে শ্রাবণকে বললো বাথরুম কোনদিকে
শ্রাবণ হাত দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে আবার নিজের কাজে মন দিলো হঠাৎ কি যেন মনে পড়তেই এক দৌড় দিলো সে
ছোঁয়া ততক্ষণে বাথরুমের দরজা খুলে অর্ধেক ঢুকে পড়েছে,আন্ডারওয়ার আর আন্ডারওয়ার!!!??
ছোঁয়া মুখে হাত দিয়ে বেরিয়ে আসলো
শ্রাবণ লজ্জায় লাল হয়ে চুপ করে থেকে বাথরুম থেকে সব সরিয়ে চলে গেলো
.
ছেলেদের বাথরুম এমন হয়,ছিঃ!
.
আমি একা থাকি তো এরকম তো হবেই
.
তাই বলে এমন?জ্বীন ও তো থাকে,অন্তত তাদের কথা ভেবে এই হাল না করতেন
.
শ্রাবণ আর কিছু বললো না চুপচাপ রান্নাঘরের দিকে ফিরে গেলো
.
ছোঁয়া শ্রাবণের বেডরুমটা দেখতেছে
তারপর ফিরে আসতে নিতেই থেমে গেলো একটা ছবি দেখে,শ্রাবণ আর মিতুলের ছবি,ছোঁয়া ছবিটা হাতে নিয়ে দেখতেসে
শ্রাবণ সোফার রুমের চা বিসকিট রেখে সেদিকে খেয়াল করে বসলো সোফায় তারপর চায়েক কাপে বিসকিট ডুবিয়ে মুখে দিয়ে বললো “যত জোরে পারো আছাড় মেরে ভাঙ্গো”
.
ছোঁয়া দাঁত কেলিয়ে এক আছাড় মারলো ছবিটাকে
ওকে কেউ কিছু নিজ থেকে ভাঙ্গতে বললে ওর খুব ভাল্লাগে তাই কেন ভাঙ্গতে বললে সেটা না জিজ্ঞেস করেই ভেঙ্গে ফেললো সে
তারপর এগিয়ে এসে বাকি চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে বললো”ভাঙ্গতে বললেন কেন?”
.
সেতেন আমার এক্স!
তুমি না ভাঙ্গলেও আমি ভাঙ্গতাম
.
ওহ!ব্রেক আপ হইলো কেন?
.
টাকা,টাকাই সব এই দুনিয়াতে,তোমরা মেয়েরা টাকা পেলে পুরান কে ভুলে নতুনকে আপন করে নিতে ২দিন ও সময় নাও না
.
সব মেয়েরা এক না,আপনারা ছেলেরাও সাদা চামড়ার পিছনে দৌড়েন শুধু
.
সব ছেলেরা না,আমার তো একটা সুন্দর মন দরকার ছিল আর পেলাম কি?ফুটা কপাল আমার
এতটা বছর ধরে ভালোবেসে সব উজাড় করে দিয়ে শেষে পরিনামে শূন্য পেলাম
.
সব উজাড় মানে?কি কি করসেন!
আল্লাহ!!!
.
চুপ!হাত ধরা ছাড়া কিছু করিনি আমি,তোমার গায়ে লাগে কেন এতো?
.
কই গায়ে লাগছে(এখন বলা যাবে না উনার সাথে ইতি আপুর বিয়ের কথা চলে)
.
তাহলে এত চমকাও কেন,আমি যদি রুমডেটও করে থাকি তোমার কি?
.
হুম রাইট,আমার কি!
.
বাই দ্যা ওয়ে তুমি সাদা চামড়ার কথা বললা কেন??তোমার ও এক্স আছে নাকি?
.
সে বিরাট কাহিনী
.
শুনি
.
কেন বলবো?
.
কারণ মুফতে শাপলার তরকারি খাওয়াবো তাই
.
আচ্ছা তাহলে শুনুন,আমি অভ্রকে ভালোবাসতাম,এখনও বাসি,অনেকবার প্রোপোজ করসি সে শুধু মুচকি হাসতো
.
তারপর?
.
তারপর একদিন আমি জোর করে বললাম আমার প্রোপোজের উত্তর দিতে
.
কি বললো.?
.
বললো তার পরিবার শ্যামলা মেয়ে লাইক করবে না,সাদা চামড়া লাগবে
.
হাহাহাহাহা?
.
হাসেন?তারপর সে বিয়ে করে নিয়েছে
.
সাদা চামড়া?
.
হুম
.
তাহলে তো তোমার সাথে আমার মিল আছে
.
কি রকম?
.
আমার এক্স টাকার পিছনে চলে গেসে,আর তোমার এক্স সাদা চামড়ার পিছনে
.
হুম,তবে আমি যেমন আছি তেমনই ভালো
.
আমিও,বাট ভালো চাকরি নিয়ে দেখিয়ে দিব মিতুলকে
.
আমি সাদা হবো না তবে একটা ভালো পদে যাবো যাতে অভ্র বলে ইস এরে বিয়ে না করে ভুল করসি
.
অভ্র তোমাকে ইচ্ছে করেই বিয়ে করে নাই,দোষ দিয়েছে পরিবারের
.
কি জানি,সত্যিটা কি আমি জানতে চাইনি,তবে এখনও ওকে দেখলে বুকটা ফেটে আসে
.
এরকম চিপ মাইন্ডের মানুষের প্রেমেই কেন আমরা পড়ি??ফার্স্ট লাভ এমন হয় কেন?
.
কি জানি!তবে আপনার তো তাও চাকরি আছে,একদিন না একদিন আপনারও বিয়ে হবে
.
এভাবে বলার কি আছে,তোমার ও বিয়ে হবে,বরং আমার আগে
.
হাহা,আমাকে??কেডা বিয়ে করবে,তবে হ্যাঁ আমার আগে আপনার বিয়ে হতে পারে
.
কেন?
.
কারণ, আচ্ছা পরে জানবেন,এখন তরকারি হতে কতকাল লাগবে সেটা বলেন
.
এইতো চুলায় বসাইছি,এক চুলায় ভাত আরেক চুলায় তরকারি
.
তো বিয়েসাদি কবে করবেন?
.
কেন?আমার বিয়ে নিয়ে আপনার এত মাথা ঘামাঘামি কেন?
.
না আসলে বিয়ে খেতে মন চাচ্ছে এই আর কি
.
আমি বিয়ে করলে আপনাকে দাওয়াত দিব না অন্তত
.
কেন দিবেন না?আপনি জানেন আপনি না দিলেও আমাকে আসতেই হবে,কারণ আমি কনেপক্ষ
.
মানে?
.
মানেটা সহজ,আমার মা বাবা ইতি আপুর সাথে আপনার বিয়ে নিয়ে কথা বলতেসে
.
হোয়াট!আমি?আবার তোমার বোন ইতিকে বিয়ে করবো?আমাকে ভূতে ধরসে নাকি
.
কেন করবেন না?ইতি আপুর তো কোনো কিছুতেই কমতি নেই
.
সব আছে বাট আমি যা চাই তা নেই
.
আপনি কি চান?
.
একটা সুন্দর মন,যেটা তোমার বোনের নেই,দেমাগ দেখসো??নিজের রুপের এত বড়াই করা ঠিক না,এই রুপ তার কারণে হয়নি,আল্লাহ দিসে বলেই হইসে তাহলে অহংকার ইতির করা সাজে না
ধরো আমার জিনিস আমি তোমারে দিলাম,তুমি সেটা নিয়ে বড়াই করলে তোমাকে মানুষ বলদ ছাড়া কিছু বলবে না
তোমার বোন ও হইসে সেটা,তার এই দেমাগের কারণে আমার কাছে তাকে সবচাইতে বেশি কুৎসিত মনে হয়
.
আমার আপুকে নিয়ে আর একটা কথাও বলবেন না,হুহ!আপনি করবেন না আপনার ছোট ভাই করবে
.
অপু??ফেসবুকে অপুর ১৯/২০টা গার্লফ্রেন্ড আছে,সে করলে ওখান থেকেই করবে,অন্তত সিনিয়র কাউকে করবে না
তার বয়স সবে ১৮বছর আর সে ক্লাস ৬এর মেয়ে খুঁজতেসে প্রেম করার জন্য তাহলে ভাবো সে এখন থেকে ম্যাচিউর হয়ে গেসে,মানে তার সাথেই প্রেম করবে যার সাথে ইন ফিউচারে তার বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা আছে
আর ইতি তো ওর মায়ের সমান?
.
মোটেও না,ইতি আপুর বয়স ২২বছর
আমার ২০,দুই বছরের ছোট আমি
.
কিহ!!তার মানে তুমি
.
জি আমি এত ছোট না?যতটা আপনি ভাবসেন
.
তার মানে তুমি এত পিচ্চি! ও মাই গড!
আমার তো ২৬চলে
.
কিহহহ!?আপনি এত বুইড়া
.
এটাকে পারফেক্ট এইজ বলে বুঝলা
.
ওকে তাহলে জলদি জলদি বিয়ে করে নেন
.
তোমার কি এতো?নিজের চরকায় তেল দাও
.
হুহ!আর জীবনে আপনার মুখ দেখবো না
.
দেখিও না
.
শ্রাবণ ছোঁয়ার হাতে প্লেট দিয়ে চলে গেলো গোসল করতে
ছোঁয়া গালে হাত দিয়ে বসে আছে,একা একা খেতে পারে না সে
তাও এই পুরো বাসায় এখন নিজেকে সব চেয়ে একা মনে হচ্ছে
শ্রাবণ গোসল করে এসে দেখলো ছোঁয়া প্লেট হাতে চেয়ে আছে ওর দিকে
.
একি তুমি এখনও খাও নাই?
.
আমি একা একা খেতে পারি না
.
ওমা এটা আবার কেমন কথা!একা খেলে কি গলা দিয়ে তোমার খাবার যায় না?
.
না সেটা না,খাওয়ায় ইন্টারেস্ট থাকে না এই আর কি
.
তাহলে বসেন আমি আমার প্লেট নিয়ে আসতেসি
.
শ্রাবণ ভেংচি কেটে নিজের জন্যও খাবার নিয়ে আসলো,ছোঁয়া এবার গপাগপ সব খেয়ে শেষ করে ফেললো তারপর উঠে দাঁড়ালো যখন তখন রাত ৯টা বাজে,ফোন বের করে খালাকে কল করলো,খালা তার বড় ছেলেকে বলেছে স্টেশন আসতে
ছোঁয়া শ্রাবণকে টাটা দিয়ে হাঁটা ধরলো
.
এই দাঁড়ান
.
কেন?
.
এত রাতে আপনি আমার বাসা থেকে এতদূর একা একা স্টেশন পর্যন্ত যাবেন??
.
তো?
.
দাঁড়ান আমি চাবি নিয়ে আসতেসি,আপনাকে স্টেশন পর্যন্ত দিয়ে আসবো
.
ওকে
.
শ্রাবন ছোঁয়াকে স্টেশন পর্যন্ত দিয়ে আসলো,তারপর ছোঁয়ার খালাতো ভাই আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করলো,খালাতো ভাই ফুয়াদ আসতেই শ্রাবণ তার বাসায় ফিরে আসলো
ছোঁয়া ক্লাস সিক্সে থাকতে একবার খাগড়াচড়ি এসেছিল আজ আবার আসলো,তার এই খালামণিটা অনেক ভালো
বাসায় ঢুকতেই দৌড়ে এসে উনি ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরলেন
ছোঁয়া উনাকে ধরে ঘুরিয়ে লাফিয়ে বললো”তোমারে ছাড়ি আর যামু না”
.
যাইস না!
.
ছোঁয়ার খালার বাসার সবাই অনেক সেনসিটিভ, মানে কি তারা একদম কথা বলে না,খাবে ঘুমাবে কাজ করবে ব্যস এই টুকুই,জীবনে আর কোনো কিছু যে থাকতে পারে তা মনে হয় তারা জানে না
তো ছোঁয়া হলো শয়তানের এক শেষ
সে ভোঁ দৌড় দিয়ে খালুর রুমে ঢুকে সালাম দিয়ে চলে আসলো উনি সালাম নিলো কি নিলো না সেদিকে আর একবার নজরই দিলো না
কারণ সে জানে তার খালু এ সময়ে ঘুমাচ্ছেন??
নিয়ম রক্ষার্থে সালাম দিয়ে এসেছে যাতে পরেরদিন খালুকে বড় মুখ করে বলতে পারে তুমি আমার সালাম নাও নাই
খালামণি তো মহাখুশি,গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে ছোঁয়ার জন্য রুম গুছাচ্ছে
ছোঁয়া খালামণির বাসায় ফিরেই মা বাবাকে কল করে জানিয়েছে সে খাগড়াচড়ি পৌঁছে গেছে
.
শ্রাবণ বাসায় এসে ফটো ফ্রেমটার ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো গুলোর দিকে চেয়ে রইলো অনেকক্ষন ধরে তারপর সব উঠিয়ে ফেলে দিলো,চোখ মুছে চাদর টেনে ঘুমিয়ে পড়লো সে
সে তো ক্কোনো দোষ করেনি দোষটা তার বুঝার,সে ভুল মানুষকে এতদিন ধরে ভালোবেসেছে
পরেরদিন সকাল হতেই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো সে,নাস্তা করবে স্কুলেই,৯টার আগে স্কুলে পৌঁছাতে হয়
তার রোজ ৩/৪টা ক্লাস থাকে
টিচার রুমে আসতেই বাকি টিচারদের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো সে,অনেকদিন পর শ্রাবণকে দেখতে পেয়ে স্যার ম্যাডামরা গসিপ শুরু করে দিয়েছে
.
আসসালামু আলাইকুম
.
সালাম শুনে চমকে শ্রাবণ পিছন ফিরে তাকালো,এটা তো ছোঁয়া!!!
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,তুমি নিশ্চয় আমাদের স্কুলের নতুন আর্ট টিচার?
.
ইয়েস!
.
ও মাই গড!!যেটার ভয় পেয়েছিলাম ঠিক সেটাই হলো!
.
ছোঁয়া তার চেয়ারে হাতের ব্যাগটা রেখে শ্রাবণকে দেখতে পেলো,দেখেই চমকে উঠলো
মনে মনে ভাবলো খাগড়াচড়িতে কি আর কোনো স্কুল ছিলো না!
.
না ছিল না,এই একটাই নামকরা স্কুল এখানকার,আর তুমি সেটাতেই আসছো
.
ছোঁয়া মুখ বাঁকিয়ে চেয়ার টেনে বসে পড়লো
.
আপনারা একজন আরেকজনকে চিনেন নাকি??ওয়াও,আর আমরা তো একজন এক জেলা থেকে এসেছি
.
হাই!আমি আসলে উনার ছোট বোনের ননদ হই,আমাদের বাসা আর উনাদের বাসা বেশি দূরে না
ঢাকা টু নারায়ণগঞ্জ
কদিন আগেই আমরা আত্নীয় হলাম,এমনকি আমি ঢাকা থেকে উনার বাইকে করেই এসেছি খাগড়াচড়িতে
.
শুরু হইসে বকবক!এই মেয়ে এত কথা বলতে পারে!
.
তাই নাকি শ্রাবণ?
.
জি স্যার,সে আমার রিলেটিভ হয়
.
তারপর জানেন,আমরা আসার সময় ডাব,নারকেল আর শাপলা চুরি করসিলাম হাহা!
.
শিট!সব গোপনীয়তা ফাঁস করে দিবে এই মেয়েটা!
.
ওএমজি সত্যি?শ্রাবণ এত ভদ্রতার ভিতরে চুরিও জানে?
.
ইয়ে আসলে না স্যার
.
হ্যাঁ,ও আবার শাপলা দিয়ে নারকেল দিয়ে তরকারি রেঁধেও খেয়েছিলাম আমরা,যে মজা হইসিলো,চোরাইকৃত তরকারি
.
বাহ বাহ,কি সুন্দর নাম,চোরাইকৃত তরকারি,ইন্টারেস্টিং তোহহ
.
তারপর কি হইসে জানেন!
.
চুপ!আর একটা কথাও না
শ্রাবণ উঠে দাঁড়িয়ে ছোঁয়ার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো রুমের বাইরে
.
আরে আরে কি হলো?কথা তো বলতে দিবেন,কাল রাত থেকে একটুও কথা বলতে পারিনি,আমার সাথে আমার খালাতো বোন ছোটটা শুয়ে ছিল,ও একটুও কথা বলে না,খালি ঘুমাইসে,আমি বাসায় থাকলে ইতি আপুর সাথে কথা বলতাম,এখন এখানে এসে কথা বলার মানুষ পাইসি আর আপনি কিনা বাধা দিচ্ছেন?
.
তুমি একটু চুপ হয়ে থাকতে পারো না,কথা বলো কোনো সমস্যা নাই,আমি কি করসি না করসি সেসব বলবা না একদম
.
কেন?কেন বলবো না,বিয়ে বাড়িতে সবার সামনে আমাকে চোর বলেছেন আমি কি সেটা ভুলছি নাকি?ভুলি নাই
.
ভুলতেও হবে,আজীবন মনে রাখবা তুমি শ্রাবণের বাগানের সব ফুল চুরি করসো,বুঝলা?
.
আমি এখন গিয়ে আপনার আরেক সিক্রেট ফাঁস করবো
.
কি?
.
এখানে কেন কমু,সবার সামনে কমু
.
ছোঁয়া পিছন ফিরে হাঁটতে ধরতেই শ্রাবণ ওর হাত ধরে টেনে নিজের দিকে ফিরালো
কি বলবা সবাইকে??
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে