একজোড়া চড়ুই পর্ব-০৬

0
1223

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_৬
#Writer_Afnan_Lara
?
শ্রাবণ সেই কখন থেকে বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,মিতুল ও তার পরিবারের অপেক্ষা করে যাচ্ছে,এর ভিতরে মাঝে মাঝে গিয়ে মায়ের হেল্প করে আসছে যেমন বাজার করা,মুরগীকে খাবার দেওয়া, পুকুর থেকে পানি এনে দেওয়া
বড় ছেলেরা এসব করেই,ছোট গুলো তো হয় নবাবজাদা
অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো,মিতুল, তার বাবা মা আর তার ছোট ভাই বোন আসতেসে
মিতুল আজ হলুদ রঙের একটা থ্রি পিস পরেছে,বরাবরের মতই অনেক সুন্দর লাগছে ওকে,শ্রাবণের কাছে তো অপ্সরী
শ্রাবণ সালাম দিলো মিতুলের বাবা মাকে,উনারা সালাম নিয়ে শ্রাবণকে রেখে ওদের বাসার দিকে তাকালেন
উপরে টিন তবে সাইড ওয়ালের বাড়ি,আর পাশের দুটো রুমের উপরে ছাদ আছে,মিতুলের বাবার মুখটাই ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,তারপর আশেপাশে তাকিয়ে ভিতরে ঢুকলেন,শ্রাবণের বাবা এগিয়ে এসে সালাম দিয়ে উনার হাত ধরলেন হাসিমুখে,তারপর সোফায় এসে বসলেন সবাইকে নিয়ে
তারা সবাই যে রুমে বসেছে সে রুমে সোফা আছে একপাশে লম্বা করে,সোফার সামনে ডাইনিং টেবিল চেয়ার
আর রুমের শেষ কোণায় একটা সিঙ্গেল বেড
দেয়াল ঘড়িটা সুন্দর আবার হাতের কাজের কিছু দেয়াচিত্র ও আছে,এগুলা পিউ নিজের হাতে বানিয়েছিল
.
মিতুলের বাবা সবকিছু ভালো মতন দেখে শক্ত গলায় বললেন
“আমরা বেশিক্ষণ থাকবো না,আমার আবার অফিসে যেতে হবে,আপনারা যা বলার একটু তাড়াতাড়ি বলার চেষ্টা করুন”
.
শ্রাবণের বাবা হালকা কেশে বললেন”শ্রাবণ যে চাকরিটা করে সেটাও খারাপ না”
.
আমি তো খারাপ বলিনি,শুধু বলসি বেতন কম আবার প্রাইভেট,সব দিক দিয়ে কম হলে তো চলবে না
.
আপনার মেয়ে তো শ্রাবণকে ভালোবাসে আর শ্রাবণ ও
.
হুম,বাসতো,তবে এখন বাসে না
.
মানে?
.
শ্রাবণ অবাক হয়ে মিতুলের দিকে তাকালো,মিতুল নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
.
মিতুল আপনার ছেলেকে ভালোবাসে না,আপনার ছেলে মিতুলের যোগ্য নয় সেটা মিতুল এখন বুঝতে পেরেছে বলেই আমাকে জানিয়েছে,কেন মিতুল কি শ্রাবণকে জানায়নি সে কেন লিমনকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে?
.
মিতুলের নিরবতা ওর বাবার প্রতিটা কথাকে সম্মতি দিচ্ছে
সব বুঝতে পেরে শ্রাবণ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তারপর ভার ভার গলায় বললো”আপনাদের এতদূর ডেকে আনার জন্য দুঃখিত,আপনারা এখন আসতে পারেন,ধন্যবাদ আসার জন্য,সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে গেলো
.
হুম,ভালো হয়েছে তুমি বুঝতে পারছো কোনো ঝামেলা করো নাই,আল্লাহ হাফেজ!
আজ আমরা আসি
.
শ্রাবণের বাবা টেবিল থেকে পানি এক গ্লাস নিয়ে খেয়ে মসজিদের দিকে চলে গেলেন যোহরের নামাজ পড়তে
শ্রাবণ নিজের রুমে বসে আছে চুপ করে,আবিদ পিউকে নিয়ে মার্কেটে গেছে
দরজার পাশেই মা দাঁড়িয়ে আছেন
আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে কিছুক্ষন দূর থেকেই শ্রাবণকে দেখেছেন,শ্রাবণ নিজেই নিজেকে সামলাতে পারবে তা জানেন তিনি তবে এখন হয়ত উনার শ্রাবণকে শান্তনা দেওয়া উচিত
শ্রাবণের কাছে এসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন তিনি তারপর শান্ত গলায় বললেন”বাবা চিন্তা করিস না,জীবনে সব সঠিক হয় না,কিছু বেঠিক ও হয়,আর একটা কথা মনে রাখিস আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে”
.
মা আমি একটু আসতেসি,কাফির সাথে ঘুরতে যাবো
.
আচ্ছা,তাড়াতাড়ি ফিরিস বাবা
.
হুম

তোমার কাছে শ্রাবণকে কেমন লাগে?
.
বেশ ভালোই,ভদ্র অনেক,কদিন হলো দেখলাম আমার কাছে ভালোই লেগেছে
.
আমাদের ইতির জন্য কেমন হবে?
.
ইতি?
.
হুম,কেন কি হয়েছে?আবিদকে শ্রাবণের বোনের সাথে বিয়ে দিতে পেরেছি আমরা
ইতিকে শ্রাবনের সাথে দিতে পারবো না?আমার তো শ্রাবণকে বেশ লেগেছে
.
ইতি তো রিয়ানকে ভালোবাসে,এসব কি বলতেসো তুমি??
.
আরে ঐ ছেলেকে ইতি আজ কতদিন ধরে বলতেসে বিয়ের কথা বলতে ছেলে তার পরিবারকেই জানাচ্ছে না তোমার কি মনে হয় ঐ ছেলে ইতিকে বিয়ে করবে?
.
হুম তাও তো কথা!
.
ইতি লুকিয়ে সব শুনতেসে
হিহি মা বাবা দেখি আমাকে সেই শ্রাবণ ছেলেটার সাথে বিয়ে দেওয়ার কথা বলতেসে,এটা নিয়ে তো কিছু একটা করতে হবে,সেদিন আমাকে বাইকে না উঠিয়ে ছেলেটা অনেক ভাব দেখিয়েছিল,বিয়ের কথা শেষ পর্যন্ত আসলে আমি মুখের উপর বলে দিব আমি তাকে বিয়ে করবো না,ব্যস হয়ে গেলো,টিট ফর ট্যাট!
.
কিরে আপু কি বলতেছিস?
.
ঐ গাধা শ্রাবণের সাথে আমার বিয়ে নিয়ে মা বাবা কথা বলতেসিলো
.
আল্লাহ!!!
ঐ টিচারকে বিয়ে করিও না আপু,তোমার জীবন ত্যানাত্যানা বানাই দিবে
.
কে কার জীবনের ১২টা বাজাবে সেটা তো পরেই দেখা যাবে

শ্রাবণ!! আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না মিতুল এমনটা করতে পারে
.
কাফি শুন বিশ্বাস তো আমার ও হচ্ছিলো না কিন্তু যখন শুনলাম ও ইচ্ছাকৃত ভাবে বিয়েটা ভেঙ্গেছে তখন খারাপ লাগলো,বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম আমি
.
থাক ভাই বাদ দে,চা খাবি চল
.
হুম
.
হুম কি?তোর বিয়েটা কবে খাবো??আমার তো বউ প্রেগন্যান্ট হতে চললো আর তুই এখনও বিয়ে করিস নাই,জলদি বিয়ে কর
.
মিতুলকে ভুলে আরেকজনকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নাহ
.
তুই এখন আবার ফিল্মি নায়কের মত হয়ে যাইস না,মিতুল তোর সাথে যেমনটা করেছে তুইও তেমন কর,তুই ভালো থাকবি অন্তত
.
তাহলে আমার আর ওর মধ্যে কোনো তফাৎ রইলো না
.
আরে ধুর,তাই বলে কি তুই আজীবন কুমারই থেকে যাবি??
.
বাদ দে,ভাল্লাগতেছে না
.
একটা ধানিলঙ্কা মেয়ে দেখে বিয়ে করিস,তোর মাথায় মিতুলের “ম “অক্ষর ও আসতে দিবে না
.
ধানিলঙ্কা??জীবনটা কি কম বিষাদময় নাকি যে আরও বিষাদময় করতে খাল কেটে কুমির আনাবো??
আমি একটু শান্তি চাই ব্যস!আমি আপাতত নিজেকে নিজেই সময় দিতে চাই,বিয়ে টিয়ে বাদ,যেদিন নিজেকে শক্ত করতে পারবো সেদিন দেখা যাবে,কাল পরশুর দিকে খাগড়াচড়ি ফেরত যাবো আবার
.
তোর যা খুশি কর যা!আমার আর এ জীবনে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে খাওয়া হলো না,আমার বাচ্চারা নাহয় খাবে
.
চুপ! তুই বিয়ে নিয়ে পড়ে আছিস কেন বলতো?
.
শুন!সব মানুষই চায় তার সাথে তার বেস্ট ফ্রেন্ডেরও যাতে বিয়েটা হয়ে যায়,আমার তো হলো কিন্তু তোর হলো না যা ভাবলাম মিতুলের সাথে হবে সেটাও আর হলো না

ইতি!
.
হুম বাবা বলো
.
তুই রিয়ানের সাথে কথা বলেছিস বিয়ের ব্যাপারে?
.
বাবা আমি বুঝি না ওকে বিয়ের কথা বললেই ও বলে পরে,কেন বলে সেটাও বুঝি না,এমনকি ওর পরিবারের সাথেও আমাকে যোগাযোগ করতে দেয়না
.
আমার মনে হয় এই ছেলে ফাউল
.
মা এসব কি বলো,ইতিকে কেউ চিট করার আগে ২০০বার ভাববে,রিয়ান এসব করবে না কখনও,হি লাভস মি লট
.
দেখা যাবে!ছোঁয়া কোথায়?
.
সে তো একটা অনুষ্ঠানে গেছে,আর্ট করছিল যে সেটার প্রতিযোগিতা চলে সেটাতে গেছে
.
আমার মেয়েটা এবারও ফার্স্ট হবে দেখিও তোমরা
.
ফার্স্ট হয়েও গেছে!!
.
সত্যি??
.
হু?
.
মা দৌড়ে এসে ছোঁয়াকে জড়িয়ে ধরলো,ছোঁয়া তার পার্স থেকে ৫হাজার টাকা বের করে বাবার হাতে তুলে দিলো সাথে সাথে
বাবা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে,ছোঁয়া সোফায় বসে বললো”আরেকটা গুড নিউজ আছে!”
.
মা তো ছোঁয়াকে ধরে ওর কপালে চুমু খেয়ে ওর পাশে বসে পড়লেন,বাবাও এসে পাশে বসলেন কিন্তু কান্নার জন্য কিছু বলতে পারছেন না,তার ছোট মেয়ে কিনা উপার্জন করে তাকে টাকা দিলো একজন বাবার কাছে এর চেয়ে খুশির কিছু হতে পারে না
.
বল না কি খুশির খবর!
.
আমার একটা চাকরিও হয়ে গেছে?
.
কি চাকরি!!
.
আর্ট টিচার! কিন্তু সমস্যা আছে,আমাকে ৩টা এরিয়া থেকে একটা এরিয়া চুজ করতে হবে যেটার স্কুলে আমি আর্ট শিখাবো
.
কি কি?
.
বরিশাল /কুমিল্লা /খাগড়াচড়ি
.
ওমা সব তো দূরে দূরে
.
হুম আমি তাই মানা করে দিয়েছি
.
ছোঁয়া মানা কেন করছো?খাগড়াচড়ি তে নিতে পারো,তোমার রুনা খালামণির বাসা সেখানে,সেখানে থেকেই তো তুমি জবটা করতে পারো
.
আরে হ্যাঁ তাই তো,রুনার কথা তো ভুলেই গেসিলাম
.
বাবা আমি তোমাদের ছাড়া থাকতে পারবো না,প্লিস
.
এমন করিস কেন?নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ সব মেয়েরা পায় না বুঝলি??
.
আচ্ছা দেখি কি করা যায়,বেতন কিন্তু ১৬হাজার
.
কিহহহহহ!
.
ছোঁয়া,মা আর বাবা ইতির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,এমন জোরে চিৎকার করলো সে সবাই তো ভূত দেখার মতো চেয়ে আছে
.
ইতি ব্রু কুঁচকে হালকা কেশে বললো”আমার ও জব হবে কদিন বাদে,আমি তো ছোঁয়ার চেয়ে বেশি শিক্ষিত!
.
আসবো নাকি আপা?
.
আরে তিয়াসা আপা যে,আসুন আসুন,কি মনে করে?
.
শুনলাম তোমার ছোট মেয়ে নাকি চাকরি পেয়েছে?
.
হুমম,সত্যি শুনলেন
.
তাহলে ছোঁয়া এখন তোমার নিজের একটু খেয়াল রাখতে হবে,বেশি বেশি ফেসিয়াল করতে হবে তোমার!বুঝলা??
কি করবো আমি তোমাকে নিয়ে,তুমি আমার একটা টিপস ও নাও না
আরেহহ ইন্টার্ভিউ তে একটু সুন্দর না লাগলে টিকবা না
আমি বলি শুনো—হলুদ আর লেবু দিয়ে মুখে ঘষবা বেশি বেশি
দেখবা ৭দিনে কেমন চকচক করে তোমার ফেস
.
ছোঁয়া রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে আছে,চাকরিটা পেয়েছে সেলিব্রেট করবে গরম গরম নুডুলস পাকোড়া দিয়ে,আহা আহা কি মজা আহা,কিন্তু এই তিয়াসা আন্টির থেকে রেহায় কি করে পাবো কে জানে
সবসময় এসেই শুরু করে দেয় তার লেকচার
.
তারপর শুনো ইন্টার্ভিউর দিন সাদা জামা পরে হিজাব বেঁধে যাবা একদম ভদ্র লুক নিয়ে…..!
.
ঠিক তখনই ছোঁয়ার ফোন বোজে উঠলো”অভদ্র হয়েছি আমি তোমারই প্রেমে!!!তাই!!কাছে আসো না আরও কাছে আসো না”
তিয়াসা আন্টি মুখের কথা মুখেই রেখে হা করে চেয়ে আছেন
ছোঁয়া দাঁত কেলিয়ে কলটা কেটে উঠে দাঁড়িয়ে বললো”হিহি,সরি আন্টি,আসলে আমার আর্ট শো টা নিয়ে মানুষ বারবার কল করতেসে,আমি একটু কথা বলে আসি আর হ্যাঁ ইন্টার্ভিউ কিন্তু লাগেনি,আমি চাকরিটা পেয়ে গেছি অলরেডি,রুপের গুনে না আমার মগজের গুনে,আসি কেমন!
.
আজকালকার মেয়েদের ফোনের রিংটোন ও নাকি এমন হয়!
.
মা বাবা দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে উনার দিকে
.
ইতি ঠাস করে পানির গ্লাস এনে উনার সামনে রেখে চলে গেছে
এসব পাশের বাসার আন্টিদের দুচোখে দেখতে পারে না ইতি
আর এই তিয়াসা আন্টি তো দিনে ১০/১২বার আসবেই আসবে,উফ এর কি বাসায় কাজ নাই,আজাইরা পিপলস!
.
ছোঁয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গলার থেকে আইডি কার্ড খুলে ফেললো,তারপর মুচকি হেসে বললো “মিস ছোঁয়া ম্যাম!!আর্ট টিচার!!
আহা কি কিউট,, নিজের একটা পরিচয় হলো আমার,জীবন থেকে যা পাইনি তা অবশেষে পেলাম
আল্লাহ তোমার কাছে আমার আর কোনো চাওয়া নেই,তুমি আমাকে রুপ দাওনি বলে অনেক কষ্ট পেয়েছি ভাবতাম আমার সাথেই কেন এমনটা হলো
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে একজন রুপসী যা পারে না আমি তা পারি?
ছোঁয়া ইউ আর এ রকস্টার ?

শ্রাবণ?? বাবা খেতে আয়,মা তোর পছন্দের খিচুড়ি বানিয়েছি,দুপুর থেকে কিছুই মুখে দেসনি,আয় না বাবা,

মা আমার খিধে নেই,প্লিস জোর করিও না
.
ঠিক আছে,আমিও খাবো না,ঘুমাতে যাই আমি
.
শ্রাবণ বিছানা থেকে নেমে মায়ের কাছে গিয়ে বসলো,মা হেসে দিয়ে নিজের হাতে ওকে খাইয়ে দিচ্ছে,তারপর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন” ভুলে যা বাবা,তোর জন্য আরও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে”
শ্রাবণ মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে চলে গেলো অপুর রুমের দিকে
আবিদ আর পিউ শ্রাবণকে নিয়ে কথা বলছে
.
শুনলাম বাবা নাকি ইতির সাথে শ্রাবনকে বিয়ে দিতে চায়
.
তাই নাকি??তাহলে তো ভালো,কিন্তু শ্রাবণ ভাইয়া মনে হয় রাজি হবে না
.
হুম,আর ইতিও না,ইতি রিয়ানকে পছন্দ করে
.
তবে আমার কাছে ছোঁয়াকে বেশি ভালো লাগে,শ্রাবণ ভাইয়ার সাথে ওকেই ভালো মানাবে
.
ছোঁয়া?তোমার মাথা তো ঠিক আছে?ছোঁয়া আর শ্রাবণের যে ঝগড়া লেগেছিলো আমাদের বিয়ের দিন তা ভুলার মতন না আর ছোঁয়া অভ্র বলতে অজ্ঞান ও জীবনেও বিয়েতে রাজি হবে না,শ্রাবণের সাথে তো কখনওই না
.
দুজনেই একই নৌকার মাঝি কথা হলো মিলন হয় কিনা সেটা,তবে আমার মনে হয় মিললে এদেরই মিলবে
.
তোমার মাথা পুরা গেছে পিউ
.
হ্যাঁ আপনার তো ঠিক আছে তাই না?
.
?অবশ্যই!

পরেরদিন ভোরবেলা শ্রাবণ জামাকাপড় ভর্তি ব্যাগ নিয়ে বাড়ির সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লো
বাইক চালিয়ে ঢাকা থেকে খাগড়াচড়ি যাওয়া টাফ তবে শ্রাবণের হেভিট হয়ে গেছে,তার কলিজা হলো এই বাইক,বাইকটা ছাড়া সে কোথাও যায় না
ওদিকে ছোঁয়াও ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে,বাবা বাসস্টপ পর্যন্ত এগিয়ে দিতে এসেছে ওকে
মা কে বিদায় জানালো,ইতি আপু ঘুমাচ্ছে,ভোর ৫টা বাজে এসময়ে তাকে টেনেও তুলা যায় না,ছোঁয়া ইতির গালে চুমু দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়েছে,এখন হলো এক বিপদ!
আর সেটা হলো বাস ছেড়ে দিয়েছে ভোর ৪টা ২০মিনিটে
বাবা কয়েকমাস আগে ৫টার বাসে গিয়েছিল বলে আন্দাজ করে এসময়ে এসে ভাবলো বাস পাবে কিন্তু বাসের টাইমটা চেঞ্জ হবে তা তারা জানতো না আর খাগড়াচড়িতে যাওয়ার বাস আছে সকাল ১১টায়
ছোঁয়া গালে হাত দিয়ে যাত্রীদের বসার সিটে বসে আছে,প্রথমদিনই এরকম হবে একদমই বুঝতে পারেনি সে
ভোরবেলার ঢাকা দেখতেসে আর ভাবতেসে কি করা যায়
বাবা তো বললেন বাসায় ফিরে যেতে,কি সমস্যা!! ধুর
বাসা কি কাছে নাকি??বাসা থেকে আসতেই তো ১ঘন্টা লাগছে,বেশি জার্নি আবার ছোঁয়ার ভাল্লাগে না,বমি আসে
একদম খাগড়াচড়ি যাবোই না,চাকরি যাক গে আমার কি!!
পরে আবার ভাবলো এখনই নিজেকে গুটিয়ে নিলে চলবে না
জীবনে পথ চলার সময় অনেক বাধাবিপত্তি আসবেই
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে