একজোড়া চড়ুই পর্ব-০৫

0
1204

একজোড়া চড়ুই?️?️
#পর্ব_৫
#Writer_Afnan_Lara
?
আজকে বৌভাত শেষ হলে আর এই গন্ডার টিচারের মুখ দেখতে হবে না,আমার ৫০০টাকা নিয়ে গেলো,কি ডেঞ্জারাস ?
.
আবিদ ভাইয়া মনে হয় স্টেজে একা আছে, পিউ ভাবী তো মায়ের সাথে কথা বলতেসে মনে হয় আমি বরং যাই ভাইয়ার রাগ ভাঙ্গাই
.
ভাইয়া!
.
কি?
.
তুমি আমার সাথে রাগ করে আছো কেন?প্লিস এমন করো না
.
তুই আমার কথা শুনিস না,কতদিন মানা করসি এরকম করে কোনো লাভ নেই আর তুই আমার কথায় কানই দিচ্ছিস না
অভ্র পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে তোকে বিয়ে করতে পারেনি সেটা না তার দোষ না তোর দোষ,তাহলে এসব করে কি লাভ??
.
কিছু বলার ভাষা নেই ছোঁয়ার
তাই মন খারাপ করে চলে যেতে নিতেই আবিদ ডাক দিয়ে বললো সে ওর ফোনে এমবি দিয়েছে
ছোঁয়া তো মহা খুশি হেসে দিয়ে সে নিজের রুমের দিকে গেলো নাচতে নাচতে

আচ্ছা মিতুল আমি আজ বিকালেই নারায়ণগঞ্জ ফেরত যাওয়ার সময় তোমার বাবার সাথে দেখা করে যাবো
ঠিক আছে কিছু নিয়েও আসবো,আচ্ছা রাখতেছি এখন
.
শ্রাবণ?
.
হুম বাবা বলো
.
পিউ আর আবিদ তো আমাদের সাথে যাবে,আমরা তোর রুমে পিউ আর আবিদের থাকার ব্যবস্থা করেছি
.
ওকে সমস্যা নেই
.
হুম,এবার ধানের ফলন কম হয়েছে,রহিমকেও দোষ দিতে পারি না,বেচারা প্রচুর খাটছে,পরেরবার ভালো ফলন হলে বাড়িটা পুরে দালান করে নিবো
.
আমার তো বেতন সেই ২৪হাজারেই আটকে আছে,খাগড়াচড়ির বাসাটার ভাড়াই যায় ১১হাজার,বাকিটা খরচ
সব দিয়ে বারতি জমাতেই পারি না আমি
পরেরবছর হয়ত প্রোমোশন হবে,তখন দেখি বাড়িটা কমপ্লিট নাহয় আমিই করবো
.
সমস্যা নেই,যতদিন আমার দোকান আছে ততদিন তোর কোনো চিন্তা নেই,মন লাগিয়ে চাকরি কর আরও চাকরি খোঁজ,সংসার চালানোর ব্যাপার আমি বুঝে নিবো
.
বাবা শ্রাবণের মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলেন মায়ের কাছে
মা একবার এক সুন্দর মেয়ে দেখতেসে,সব কিছু তার পূরন হয়েছে এবার শুধু শ্রাবণের বউকে দেখার ইচ্ছে তার
আজ যদি একটা মেয়েকে পছন্দ হয়ে যায় তো কাল কথা পাকা করে পরশু বিয়েটা সেরে ফেলবে,এবার একটা পুত্রবধূ হলে ঘরটা পরিপূর্ণ হবে
শ্রাবণ এখনও মিতুলের কথা বলেনি, মাও জানে না
কি করে জানবে বছরের বেশির ভাগ সময় তো শ্রাবণ খাগড়াচড়িতেই থাকে
শ্রাবণ বাড়ি ফিরলে ফোন ঘাটাঘাটি করে না,সোজা ঢাকায় এসে দেখে যায় মিতুলকে
তাই মা ওকে সন্দেহ ও করার কোনো সুযোগ নেই
তাদের এমন একটা সম্পর্ক যেটা হাত ধরাধরিতেই সীমাবদ্ধ
শ্রাবণ ও এসব চায় না মিতুল তো একদমই না,বিয়েরপরই সব
ওদিকে ছোঁয়া ফেসবুকে ঢুকে প্রো পিক পাল্টালো তবে তার পিক না,সুলতান সুলেমানের হুররামের ছবি দিলো
নিজের ছবি সে দেয় না,বাস্তবে সবার কথা শুনতে শুনতে পেট ভরে গেসে,এবার ফেসবুকে এরকম চেহারার ছবি দিয়ে ভার্চুয়াল জগতের ফ্রেন্ড থেকে গালিগালাজ খাওয়ার শখ নাই তার
সে সুন্দর হলে হয়ত তার নিজের ছবি দিতো ইতি আপুর মতো,ইতি আপু দিনে ৫/৬টা পিক দিবেই দিবে,কোথায় গেলো,কি খাইলো,কোন রাস্তায়য় হাঁটলো,কার সাথে দেখা করলো
আর ছোঁয়া কোন বলিউডের নায়িকা পিক আপ দিসে,কয়টা দিয়ে সেগুলো সার্চ করে,ছবিটা যদি শালীন হয় তবে সেটা সে পোস্ট দিবে
নিজের না পারুক অন্যেরটা দিতে কি সমস্যা
প্রো পিকে একবার এক রাণীর পিক দেয়,কেন যেন তাদের সাজটা তার কাছে অনেক ভালো লাগে
তার বিয়ের দিন সে হুররামের মত সাজবে,হুররামের এটিটিউড আর সাজগোজ তার অনেক ভাল্লাগে
কথা হলো হুররাম অনেক সুন্দরি আর সে তুলনায় সে কিছুই না,তাই রুপ বাদে বাকি সব ফলো করে
একদিন তো হুররামের মত ঢুলে ঢুলে স্টাইল করে হাঁটতে গিয়ে কাদায় পড়ে গেসিলো
ওসব ভাবলেই হাসি পায় অনেক
.
ছোঁয়া??রিয়ান আসতেসে,জলদি করে আমার চুল বেঁধে দে
.
ছোঁয়া ইতির চিৎকারে ভয় পেয়ে হাত থেকে ফোনই ফেলে দিলো,তারপর বুকে থুথু দিয়ে বিছানা থেকে নেমে ইতির চুল বেঁধে দিতে লাগলো
.
চুল বেঁধে দিতেই ইতি গেলো রিয়ানের সাথে দেখা করতে,ছোঁয়া বাসা থেকে বেরিয়ে ওদিকে চেয়ে আছে,রিয়ান একটু খাটো তবে ইতির সাথে ভালোই মানায়,ইতিও খাটো
বড়লোক বাপের ছেলে রিয়ান,মাঝে মাঝে মনে হয় ইতি আপুকে পছন্দ করে না আবার মনে হয় ইতি আপুর মত কিউট মেয়েকে কেন পছন্দ করবে না?
আমার দিকে তো ভুলেও তাকায় না,অবশ্য আমার দিকে কেউ তাকায় না,কেন তাকায় না,আমি জোস না?
হুহ!আমার কাছে আমি জোস,এতজন তাকালো গুনাহ বাড়বে আমার
হয়ত আল্লাহ তাই আমাকে শ্যামলা বানিয়েছে,বেশি সুন্দর হলে সবাই তাকাতো,তাদেরও গুনাহ হতো সাথে আমারও,আর এখন কেউ তাকায় না,আমার ও গুনাহ কমে গেলো?
.
ইতি রিয়ানকে নিয়ে বাবা মায়ের সাথে আলাপ করাতে নিয়ে গেলো
.
ছোঁয়া বেছে বেছে চিকেন লেগ পিসের প্লেট নিয়ে নিজের রুমে বসে সুন্দরমত খেয়ে নিয়ে ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিজের রুমে এসে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো বিছানায়
কেউ তাকে পাত্তা দেয় না,সে এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে,সবাই সবাইকে নিয়ে ব্যস্ত তাকে পাত্তা দিবে কেন!
আহারে রুপ রে!!রুপ হলে মানুষ হুদাই ও কথা বলতে আসে আর রুপ না হলে কারণ থাকলেও চেয়ে দেখে না,আজব মানুষ!

বৌভাত শেষ হয়ে গেছে,আবিদ পিউকে নিয়ে সবার সাথে পিউর বাড়ির দিকে চলে গেলো,ছোঁয়া তার রুমে মরার মত ঘুমাচ্ছে,ইতি রিয়ানের সাথে একটু ঘুরতে গেছে
আর শ্রাবণ তার বাইক নিয়ে গেছে মিতুলদের বাসায়
.
নক নক!!
.
কে তুমি?
.
আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল!আমি শ্রাবণ আহমেদ
আমি আসলে!
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম
.
সালাম নিয়ে মিতুলের বাবা ব্রু কুঁচকে পিছন ফিরে তাকালো, মিতুল তার রুমের দরজার সামনে পর্দা ধরে লুকিয়ে আছে,শ্রাবণ নামটা উনি কয়েকবার শুনেছেন,ল্যান্ডলাইনে কল আসলে ধরলে বলতো শ্রাবণ, তাহলে এই সেই শ্রাবণ
.
আসো ভিতরে আসো
.
শ্রাবণ গিয়ে সোফায় বসলো,বাবা রান্নাঘরের দিকে তাকিয়ে বললেন”মিতুর মা চা নাস্তা পাঠাও!
কথাটা বলে উনি আবারও শ্রাবনের দিকে তাকালেন
শ্রাবণের পরনে খয়েরী রঙের পাঞ্জাবি,দেখতে একদম সাধারন তবে হাবভাব দেখে মনে হয় হাই লেভেলের ভদ্র
.
তা তুমি কি চাকরি করো?
.
আমি খাগড়াচড়ির একটা প্রাইভেট প্রাইমারি স্কুলের টিচার
.
প্রাইভেট?? আবার প্রাইমারি?
.
শ্রাবণ ঢোক গিলে শক্ত চোখে বললো “জি”
.
আচ্ছা,চা খাও
.
আসসালামু আলাইকুম আন্টি!
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,কেমন আছো বাবা?
.
ভালো,আপনি কেমন আছেন?
.
ভালো!
.
আন্টি এখানে মিষ্টি আর ফল আছে,আপনাদের জন্য এনেছি,এগুলো নিয়ে যান
.
এসবের কি দরকার ছিল!!
.
তা শ্রাবণ!! তোমার নিজের বাড়ি আছে তো খাগড়াচড়িতে?
.
না,ভাড়া থাকি
.
ওহ,চাকরিটা কতদিন হলো করো?
.
২বছর
.
ওহ,তাহলে তো নতুন,সরকারি চাকরি খুঁজো না?পাস কি তোমার?
.
গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট
.
গুড,সরকারি চাকরি খুঁজো তাহলে,আমি আমার মেয়েকে বেসরকারি চাকরি করা ছেলের সাথে বিয়ে দিব না,আমি নিজেও সরকারি চাকরি করি
.
শ্রাবণ হেসে বললো “আচ্ছা”
.
উঠে দাঁড়িয়ে সে মিতুলের দিকে তাকালো,মিতুল ছলছল চোখে ওর দিকে চেয়ে আছে,বাবা হুট করে এমনটা বলবে তা একদমই জানতো না সে,বললেই তো সরকারি চাকরি পাওয়া যায় না
এসব ভাবতে ভাবতে শ্রাবণ বাইকে উঠে বসলো,আসলেই এখনকার মেয়েদের বাবারা ছেলেরা কি চাকরি করে সেটার উপর দিয়েই সবটা ভাবে,এবার ছেলেটা খারাপ নাকি ভালো সেদিকে দেখেই না,তাদের মতে প্রাইভেট জব করা ছেলেদের চাকরি একটা মেয়েকে সুখী করতে যথেষ্ট নাহ!

বাবা!
.
কি?এখন এটা বলতে এসো না যে তুমি ওকে পছন্দ করো বলে আমি বিয়েতে রাজি হয়ে যেতাম
.
বাবা প্লিস বুঝার চেষ্টা করো,আমি শ্রাবণকে ভালোবাসি
.
বাবা চশমাটা মুছতে মুছতে মিতুলের পাশে এসে বসলেন,তারপর শান্ত গলায় বললেন”শুন মা,তোকে আমি যেমন হালে বড় করেছি আমি চাই তোর স্বামী ও যেন তোকে ঠিক সেই হালে রাখে,আমি আমার চেয়েও নিচের লেভেলের ছেলের সাথে কি করে তোর বিয়ে দিব??
তোর হাতখরচই তো মাসে ৮/৯হাজার,শ্রাবণ সংসার চালাবে নাকি তোর হাতখরচ দিবে,মনে রাখিস!অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায় ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়
আমি চাই না তুই ভুল করে পরে আফসোস করোস তার চেয়ে ভালো এখনই বুঝ
যদি তুই এরকম সুন্দর লাইফ না চাস,শ্রাবণের ওয়াইফ হয়ে কষ্টের জীবন কাটাতে চাস তো ফাইন!আমি রাজি,বাট একবার ভাব!ভালোবাসা বেশি নাকি ভালোজীবন বেশি?
আমি লিমনের সাথে তোর বিয়ের কথা বলেছিলাম,লিমন একজন ব্যাংকার,সরকারি ব্যাংকের,এত এত বেতন পায়
তোকে ৮/৯হাজার কেন,মাসে ১০/১৫হাজার টাকা খরচ দিবে,তার যোগ্যতা আছে
ওর নিজের বাসা আছে,নিজের গাড়ী হবে কদিন পর
এসব রেখে তুই কষ্টের লাইফ চাস?ভাব একটু,সময় দিলাম তোকে
.
শ্রাবণ বাড়ি ফিরে অনেকবার মিতুলকে ফোন করেছে,কিন্তু মিতুল ফোন ধরতেসে না,হয়ত ওর বাবা ওকে ঝাড়ি দিয়েছে,আমার জন্য ওকে কত কথা শুনতে হলো,নিশ্চয় কাঁদতেসে এখন!
.
শ্রাবণ মুখ ধুয়ে বাইরে বের হয়ে গেলো,পুকুরঘাটে এসে বসে পুকুরের মাঝখানটার দিকে চেয়ে আছে সে
আকাশের চাঁদ দেখা যাচ্ছে সেখানে,মনে হচ্ছে চাঁদ আকাশে নয়,চাঁদটা পুকুরের মাঝখানে উঠেছে
.
ছোঁয়া ছাদে এসে আকাশের দিকে তাকিয়ে চাঁদটা দেখতেসে
কারোর কাছ থেকে রিজেক্ট হলে যেমনটা লাগে দুজনেই এখন সে কষ্ট অনুভব করছে
ছোঁয়া তার চোখজোড়া বারবার মুছতে মুছতে চাঁদ দেখায় ব্যস্ত
আর শ্রাবণ না চেয়েও কেঁদে দিলো হঠাৎ করেই,কারণ মিতুলের একটা মেসেজ এসেছে,১০মিনিট আগে
সেটাতে লেখা ছিলো
শ্রাবণ?
বাবার অমতে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না,তুমি তো সরকারি চাকরি পাবা না আজকাল বা কয়েকবছরেও না,কিন্তু আমি বাসার বড় মেয়ে,আমার বিয়ে তো কাল পরশু হয়েই যাবে,লিমনকে তো চেনো বলসিলাম তার কথা,বাবা চায় আমি যেন তাকে বিয়ে করি
আমার কিছু করার নেই,আমার হাতেও কিছু নেই,ভালো থেকো
.
শ্রাবণ কাঁদতে কাঁদতে হেসে দিলো হঠাৎ করেই!
আসলেই মিতুলের দোষ নেই,ও তো আমাকে শুরু থেকেই বলতেসিলো ওর বাবা সরকারি চাকরি ছাড়া বিয়ে দিবে না
আমি তো অনেক চেষ্টা করে আপাতত এই চাকরিটা পেলাম,চেষ্টার কোনো কমতি রাখিনি,তবে ঐ যে ভাগ্য!ভাগ্য তো সহজে দেখা দেয় না,আমারও তাই
মিতুলের কথায় কষ্ট হচ্ছে খুব তাও নিজের অকর্মণ্যতায় নিজেকেই দোষ দিতে হচ্ছে,একটা ভালো চাকরির জন্য আজ আমি মিতুলকে হারালাম
আমার মত দায়িত্ববানহীন আর নেই,আমি একজনই আছি
মিতুল কি কাঁদছে?আমার মতো?ওর তো কিছু করার নেই
ওর বাবার অমতে গিয়ে ও কেন এসব করবে,পালানো তো একদমই না
.
মিতুল চাইলেই বাবাকে মানাতে পারতো কিন্তু সে একটি ভালো জীবনের স্বপ্ন দেখলো যেটা শ্রাবণ তাকে দিতে পারবে না
এসব ভেবে সে লিমনকে বিয়ে করতে হ্যাঁ বলে দিয়েছে,শ্রাবণ তা জানে না
শ্রাবণ চোখের পানি মুছে অপুর রুমে গেলো,আজ সে অপুর সাথে ঘুমাবে
অপু এতক্ষণ ফোন টিপতেসিলো,শ্রাবণকে দেখে ফোন লুকিয়ে ফেলেছে
শ্রাবণ বালিশ ঠিক করে মাথাটা রাখতেই মায়ের ডাক শোনা গেলো
উঠে বসে চোখ মুছে রুম থেকে বেরিয়ে মায়ের রুমের দিকে গেলো,রাত ১০টা বাজে তখন,মা বললেন চেয়ার টেনে বসতে
পাশেই বাবা তফসি হাতে নিয়ে চুপ করে আছেন
.
শ্রাবণ? তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?
.
শ্রাবণ চমকে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে রইলো কিছুক্ষন তারপর কঠিন গলায় বললো “হুম,তবে সে আমার হবে না,তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে”
.
কেন হবে না?
.
তার বাবা সরকারি চাকরিআলা ছেলে চায়
.
তার নাম্বার আছে তোর কাছে?
.
হুম
.
তাহলে তোর বাবাকে দে
.
তোমরা ঠিক করতে পারবা না মা!আমি আজ গেসিলাম উনার বাসায়,বাট বুঝলো না
.
সেটা তোকে ভাবতে হবে না,নাম্বারটা দে,ছোটরা কিছু করতে পারে না,যা পারে তা বড়রাই পারে
.
শ্রাবনের একটিবারের জন্য মনে হলো মিতুল তার হতে পারে,মুখে হাসি ফুটিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে বাবাকে নাম্বারটা দিলো সে
তারপর চলে যেতে নিতেই মা থামতে বললো আবার
.
কিছু বলবা?
.
মেয়েটাকে দেখাবি না আমাকে?
.
শ্রাবণ মুচকি হেসে বললো “অবশ্যই”
আবারও ফোন বের করে মায়ের পাশে বিছানায় বসে মিতুলের ছবি দেখালো সে
মা হেসে বললেন”মাশাল্লাহহ”
তবে!
.
শ্রাবণ হালকা কেশে বললো “ও কিছু না মা,চোখ ঠিক আছে”
.
আরে না এটা তো ট্যারা!
.
না মা,এই চোখ বাস্তবে অনেক সুন্দর!আমার কাছে সুন্দর লাগে
.
মায়ের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,তার বড়ছেলের বউ কিনা শেষমেষ ট্যারা?আবার ছেলে বলতেসে ও কিছু না?কেনো সমস্যা নাই?বাস্তবে ট্যারা মনে না হলেই হয়
.
হ্যালো,আসসালামু আলাইকুম,আপনি কি মিতুলের বাবা?
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,জি আমি মিতুলের বাবা,আপনি কে বলছেন?
.
আমি শ্রাবণের বাবা বলছি
.
ওহ,জি বলুন
.
আপনারা কি কাল আমাদের বাসায় আসতে পারবেন??দাওয়াত আর কি
.
কিন্তু!
.
ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে,আমাদের মনে হয় পরিবারগত ভাবে কথা বললে ব্যাপারটা সমাধান করা যেতে পারে,প্লিস মানা করবেন না, ঢাকা থেকে নারায়নগঞ্জ বেশি দূর না
.
আচ্ছা আমি জানাচ্ছি!
.
শ্রাবণ বাবার মুখের দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে আছে,বাবা ফোনটা টেবিলের ওপর রেখে মুচকি হেসে বললেন ”আসবে হয়ত,না বলেনি””
.
শ্রাবণ খুশি হয়ে নিজের রুমে চলে আসলো

দেখ ছোঁয়া এই ছবিতে অভ্রকে অনেক কিউট লাগতেসে
.
সাথে প্রিয়াও আছে?
.
না নেই
.
কথাটা শুনে ছোঁয়া উড়ে আসলো পাশের রুম থেকে,ইতির থেকে ফোন নিয়ে ছবিটা ড্যাবড্যাব করে দেখতেসে সে
.
ইতি মাথায় হাত দিয়ে ছোঁয়ার দিকে চেয়ে আছে
.
এরকম ভালোবাসিস না ছোঁয়া!তোর এরকম ভালোবাসায় হয় অভ্র মরবে নয়ত তার বউ মরবে,এটাকে বলে কুনজর
.
ছোঁয়া ফোনটা রেখে চুপ করে চলে গেলো,প্রিয়ার সাথে তার কোনো শত্রুতামি নেই,অভ্রর সাথেও না
থাক!আর দেখবো না,আমার উচিত ওরে ভুলে যাওয়া
হুম!আমার এমন নজরে যদি অভ্রর ক্ষতি হয়ে যায়?না না এটা হয় না
আমি যেমন আছি তেমনি ভালো,যে আমার নয়,আমার হয়নি কখনও হবেও না তাকে নিয়ে ভেবে বিপদ ডেকে আনা একদম ঠিক না
.
ভাবতে ভাবতে ছোঁয়া রান্নাঘরে চলে আসলো,নুডুলস বানাবে,খিধা পেয়েছে তবে ভাত খাবে না,সবসময় ভাত খাওয়ার মুড থাকে না
নুডুলস খাওয়ার মুড অলওয়েজ থাকে,মানুষ ভাত খায় কেন?
নুডুলস খেলেই হয়,আমি তো সারাদিন নুডুলস খেয়ে থাকতে পারবো!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে