আজব প্রেমের কাহিনী part : 4

0
1831

আজব প্রেমের কাহিনী
part : 4
writer : Mohona

সকালে…..
নীড় ঘুম থেকে উঠলো। দেখলো যে মেরিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ভোরের আলো মেরিনের গোলাপী চোখে পরে ১অন্যরকম চমক সৃষ্টি করেছে। যা নীড়ের মুখে হাসি ফোটালো।
মেরিন: আপনারা মানুষরা কতো ঘুমান?? ??।
নীড়:তাই বুঝি…..?
মেরিন: হামম।
নীড় টেনে মেরিনকে নিজের ওপর নিলো। নীড় এমন কেন করছে নিজেও জানেনা। মেরিন সামনে থাকলে ও কি করবে দিশা পায়না।
মেরিন: আম্মুগো….. আমাকে কি আপনার গিদু গিদু বাবু মনে হয়??? যে খালি কোলে নেন।
নীড়: what গিদু গিদু বাবু?
মেরিন: ছোট বাবু।
নীড়: oh my god…. আচ্ছা তুমি এতো সুন্দর কেন?
মেরিন:???। আমরা আর কতোক্ষন এখানে থাকবো। আমার ক্ষুধা পেয়েছে। মিষ্টি খাবো।
নীড়: তোমার মিষ্টি খুব পছন্দ?
মেরিন:হামম। ☺️☺️☺️।
নীড়: চলো তোমাকে আজকে অন্যরকম মিষ্টি খাওয়াই।
মেরিন: সত্যি????।
নীড়: হামম।
বলেই নীড় মুখটা মেরিনের কাছে নিতে লাগলো। কিন্তু ঠিক তখনই কৃষক চলে এলো। নীড় মেরিনকে ছেরে দিলো। ২জন ক্ষেত থেকে বেরিয়ে সূর্যদের সেই বাগান বাড়িতে গেলো। ওখানে গিয়ে দেখলো বন্ধুরা সব বিরিয়ানি পার্টি করছে। নীড়ের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।

.

নীড়: সারারাত আমরা বাসায় নেই আর তোরা পার্টি করছিস?????।
আকাশ : করবোনা মামমা….. আমাদের নীড় ১টা মেয়েকে নিয়ে সারারাত বাইরে ছিলো। তাও ১টা রূপসী মেয়ের সাথে।
নীড়: চুপ বে…. ফালতু কথা বন্ধ কর। আর এই যে তুমি…. যাও গিয়ে fresh হয়ে নাও।
মেরিন:…..
নীড়: কি হলো যাও…..
সূর্য: পিছে ঘুরে দেখ…..
নীড় ঘুরে দেখলো মেরিন দারিয়ে দারিয়ে ঘুমাচ্ছে।
নীড়: উফফ….. মেরিন….. ???।
মেরিন জেগে গেলো।
মেরিন: কককি হলো?
নীড়: ১টা মানুষ দারিয়ে দারিয়ে কিভাবে ঘুমাতে পারে?????।
মেরিন: আমি তো মানুষই না।???।
নীড়: shut up…. আকাশ আমার রুমে ৩-৪টা ব্যাগ আছে। যা নিয়ে আয়।
আকাশ নিয়ে এলো। নীড় ওগুলো হাতে নিয়ে মেরিনকে দিলো।
নীড়: নাও ধরো।
মেরিন: কেন আমি ধরবো কেন?
নীড়: কাল তোমার জন্য আমি কিছু শাড়ি online এ shopping করেছি। যাও গিয়ে এগুলো পরে আসো।
মেরিন: online কি ? আর শাড়ি ক….
নীড়: কোনো কথা না। যাও shower করে এরমধ্যে থেকে যেকোনো ১টা শাড়ি পরে আসো।
মেরিন: আরে… নীড়: যাও…..
মেরিনকে ধাক্কিয়ে নীড় ভেতরে পাঠালো।
নীড়: আর তোরা…. আবার বিরিয়ানি বসা। i m hungry …. shower নিয়ে এসে যেন ready দেখি….
রাব্বি: তা না হয় হবে… তার আগে বলতো তুই এসেই shower এর পিছে পরলি কেন???????
নীড়: ???।
সবাই:??।
নীড় রুমে গেলো।

.

নীড় fresh tresh হয়ে বেরিয়ে এলো।
নীড়: কি রে বিরিয়ানি কতোদূর?
ইমান: almost done…
নীড়: মেরিন বের হয় নি এখনো?
আকাশ : হলেতো দেখতেই পেতি।
ইমান: কালকে হয়েছিলো টা কি???
নীড় সব বলল।

.

ওদিকে….
মেরিন গোসল টোসল করে ব্লাউস পেডিকোট পরে শাড়ি নিয়ে গবেষনা শুরু করলো।
মেরিন: এটা কি?
এরপর শাড়ির সাথে যথারীতি যুদ্ধ শুরু করলো।
মেরিন: উফফ আমি এতো কষ্ট করছি কেন? i m the fairy ….. fairy princess ……

✨??

এই জঘন্যতম ভয়ংকরী পোশাকটা আমার শরীরে পরা হয়ে যাক।
ইলি গিলি ফুস।

✨??।

শাড়িটা দরির মতো করে মেরিনের গায়ে পেচিয়ে গেলো। আর এত শক্ত করে পেচালো যে মেরিন দমটাও নিতে পারছেনা।
মেরিন: আআ…..
মেরিনের চিৎকার শুনে ওরা দৌড়ে এলো। এসে লজ্জায় পরে গেলো। নিজের চোখ সরিয়ে নিলো। কেউ চোখ বন্ধ করে ফেলল। নীড় বন্ধুরা বেরিয়ে গেলো। নীড়ও। কোনো বন্ধুই কারো সাথে নজর মেলাতে পারছেনা।

.

১৫মিনিটপর…..

নীড় চেচিয়ে বলল: মেরিন তোমার হয়েছে?
মেরিন:কি হবে?
নীড়: শাড়ি পরা।
মেরিন: না…. আমি পেচিয়েই আছি। please আমাকে একটু এটা থেকে বের করে দিননা। আসুন না।
বন্ধুরা মুখ টিপে হাসতে লাগলো।
নীড়: shut up…. নিজে চেষ্টা করো।
মেরিন: পারছি না তো। আপনি বা আপনারা কেউ একটু ভেতরে আসুননা।
বন্ধুরা:????।
নীড়: চুপ। কেউ ভেতরে আসতে পারবেনা।
মেরিন: তাহলে আমিই বাইরে আসছি।
নীড়: এইনা। wait……
আমি আসছি।
নীড় ভেতরে গেলো।
মেরিন: তারাতারি আমাকে মুক্ত করুন না।
নীড় অন্যদিকে তাকিয়ে পেচানো শাড়িটা ১টানে খুলল।
নীড় অন্যদিকে তাকিয়েই বলল:হয়েছে…. নাও এখন শাড়িটা পরে ফেলো।
মেরিন: কিন্তু আমি তো এটা পরতে পারিনা।
নীড়: what??? শাড়িও পরতে পারোনা?
মেরিন: আমি তো এটার নামও জানিনা। পরিয়ে দিননা।
নীড়: পারবোনা।
মেরিন: তো কি আমি এভাবে থাকবো? ???।
নীড়: উফফ। কেন যে শাড়ি order করতে গেলাম? দেখি শাড়িটা দাও।

.

নীড় শাড়ির মাথাটা হাতে নিলো। নিজে চোখ বন্ধ করে নিলো।
নীড়: শাড়ির এই মাথাটা বা দিকে গুজে দাও।
৩-৪মিনিট হয়ে গেলো তবুও মেরিন নীড়ের হাত থেকে শাড়ির মাথাটা নিলোনা।
নীড়: কি হলো? কি করছো?

মেরিন: শাড়িটার মাথা খুজছি। কিন্তু পাচ্ছিনা। ??।
নীড়ের বেহুশ হওয়ার মতো অবস্থা। তাই
নীড়:???।
মেরিন:একি ??আপনি কান্না করছেন কেন? ????।
নীড়: খুশির ঠ্যালায়। ???।
মেরিন: মানুষ বুঝি খুশি হলে কান্না করে? মজার তো….
নীড়: মেরিন ১টা কথা বলি?
মেরিন: হামম।
নীড়: আমার হাতে কি আছে?
মেরিন: শাড়ি।
নীড়: good… আমি শাড়ির যতোটুকু ধরে রেখেছি ততোটুকু হাতে নাও। এই নাও।
মেরিন নিলো।
নীড়: এখন এটা বা দিকে গুজে দাও।
মেরিন দিলো।
এরপর নীড় খুব সাবধানে মেরিনকে ঘুরিয়ে আগে মেরিনের গায়ে আচলটা দিয়ে নিলো। এরপর চোখ খুলে কুচি দিতে লাগলো। নীড় মাথা নিচু করে কুচি দিচ্ছে। আর মেরিন দেখছে। ওর মনে হচ্ছে এটা ১টা খেলা। নীড় কুচি দিয়ে মেরিনের হাতে ধরালো। এরপর নিচে ঠিক করলো।
নীড়: এবার কুচি গুলো গুজে দাও।
মেরিন: কুচি কি?
নীড়: তোমার হাতে যেগুলো আছে। ???।
মেরিন: ok……
মেরিন গুজলো। কিন্তু এমন বিদঘুটে ভাবে গুজলো তা বলার বাইরে। নীড়কে আবার কুচি করতে হলো। তবে মেরিন আবার একইভাবে গুজলো। শেষে বাধ্য হয়েই নীড়ই কুচি গুজে দিতে গেলো। নীড় কুচি গুজতে গেলে মেরিনের পেটে হাত লাগলো। মেরিন কেপে উঠে ১ কদম পিছে চলে গেলো। আর নীড়ের shirt এর হাতা খামছে ধরলো। যা নীড়ের বুকে ভূমিকম্প শুরু করলো। খুব কষ্টে নিজেকে সামলে নীড়
বলল: বাকী কাজ complete করে বাইরে এসো।
বলেই নীড় ঝড়ের বেগে রুম থেকে বেরিয়ে বুকের ওপর হাত রেখে বড় বড় নিঃশ্বাস নিলো।

.

২মিনিট পর মেরিন বের হলো। আর সবার চোখ চরকগাছ। কারন মেরিন কালো রঙের শাড়ি পরেছে। নীড় মুগ্ধ নয়নে দেখছে। সব ঠিক থাকলেও কেন যেন গোলাপী টিপটা ওর কাছে বড্ড বেমানান লাগছে।
মেরিন: আমম। কি রান্না করেছো? কি দারুন ঘ্রাণ। আমার তো আরো ক্ষুধা লেগে গেলো। ক….
আর বলতে পারলো না। কারন নীড় ওর একেবারে সামনে চলে এসেছে। নীড় মেরিনের কপালের টিপটা খুলে ওরই চোখের কাজল নিয়ে ওর কপালে টিপ পরিয়ে দিলো।
নীড়: now you r looking perfect ….
ইমান এটারও ছবি তুলে নিলো। এরপর সবাই খেতে বসলো। সবাই বললে ভুল হবে। কারন মেরিন একাই সবারটা খেয়ে নিলো।
সবাই:???।

.

২ঘন্টাপর নীড়
মেরিনকে নিয়ে police station এ গেলো। তবে ওকে রেখে আসার সময় দেখলো যে inspector বাজেভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। যা দেখে নীড়ের রাগ উঠে গেলো। অন্য কোনো মেয়ে হলেও উঠতো। আর এখানে তো মেরিন। ইচ্ছা মতো পিটালো inspector কে। সেই সাথে ওকে suspended ও করালো। মেরিন তো মারামারি দেখছে।। ওর ভীষন মজা লাগছে। নীড় মেরিনকে police station এ নিয়ে গেলো। বাগান বাড়িতে পৌছাতে পৌছাতে মেরিন গাড়িতেই ঘুমিয়ে গেলো। নীড় গিয়ে বন্ধুদের সবটা বলল।

.

ইমান: এখন কি করবি?
নীড়: ১টা মেয়েকে কিভাবে বিপদে ফেলে যাই বলতো…..
আকাশ : আমাদের বাসায় নিয়ে গেলে হয় আমাদের খারাপ মনে করবে না হয় ওকে। typical family …
সূর্য : নীড় তোদের family ই একমাত্র non typical …. ওরা বুঝবে মেরিনকে। ভালোওবাসবে।
নীড়: সেই সাথে মহা impress হয়ে আমাকে ধরে ওর সাথে বিয়েও দিয়ে দিবে। আমার যে dramabaaz মা। দেখেই একে ছেলের বউ বানানোর কথা বলে ফেলবে।
ইমান: ভালো তো ভালো না। তুই ও তো এটাই চাস। ??
নীড়: তুই ই বাকি ছিলি। ভাইয়ার বিয়ে হয়নি। ভাইয়ার সাথে এমন ১টা ঘটনা ঘটে আছে। এর মধ্যে……
রাব্বি: girls hostel এ….
নীড়: মাথা খারাপ…. পাগলা গারত বানিয়ে ফেলবে।
ইমান: i have an idea…. নীড় ১টা flat নিতে হবে। যেখানে মেরিন থাকবে। ওর সাথে ২-৩টা female servant ও থাকবে। যতোদিন ওর সম্পর্কে তথ্য না জানা যায়।
নীড়: ঠিক আছে। কিন্তু ওর সাথে থাকতে দেয়ার risk কোন servant এর ওপর ফেলবো??????।

.

পরদিন….
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। আজকে ও অন্য ১টা নতুন জায়গাতে। যেনতেন ভাবে ১২দিনকেটে গেলো। নীড় রোজ মেরিনকে নিয়ে বাইরে বের হতো। কিন্তু মেরিন তো মেরিন। ওর কি আর এমন চার দেয়ালে ভালো লাগে। মেরিন চলে যেতে চায় বলে নীড় দরজা জানালা সব গুলার পাশে কুকুর বিড়াল বানর ইত্যাদি পাহাড়া দিয়ে রেখেছে। জেনে গেছে যে মেরিন ভয় পায়। মেরিন আসলেই ভয়ে বের হতে পারেনি। magic করতে গেলে আরো বিপদে পরেছে।

.

১২দিনপর…..
মেরিন: আজকে তো আমি যাবোই যাবো।

✨??

আমি এই কয়েদখানা থেকে পালিয়ে এখান থেকে দুরে কোথাও যেতে চাই।
ইলি গিলি ফুস।

✨??।

মেরিন অবশেষে এই বাড়ি থেকে বের হতে পারলো। কিন্তু গেলো কোথায়?

.

চৌধুরী বাড়িতে…..
সবাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে। নীড়ের আবার ঘুমাবার আগে কফি খাওয়ার অভ্যাস। আজও তাই হলো। কিন্তু কিছুটা কফি ওর ওপরে পরলো। কেমন চিপচিপে হয়ে গেলো।
নীড়: ধ্যাত তেরিকি। shower ই নিয়ে নেই।
নীড় shower এর নিচে দারিয়ে আছে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘের ডাক শুনে নীড়ের মেরিনের কথা মনে পরলো। এই ১২টা দিনে মেরিন নীড়ের অভ্যাস হয়ে গেছে। ৩দিনআগে এমনই বৃষ্টিতে মেরিনকে ভিজতে দেখেছে। নাচতে দেখেছে। গান গাইতে শুনেছে।
নীড়: তুমি আসলেই পরী। হয়তো ভালোবেসেফেলেছি তোমায়।
তখন মেরিন সেই washroom এ উপস্থিত হলো।
মেরিন: আরে আমি এখানে কিভাবে এলাম…. এটা কোথায়?
নীড় আয়নায় মেরিনকে দেখলো।
নীড়: এখন কল্পনাতেও তুমি……
মেরিন দেখলো নীড় দারিয়ে আছে।
মেরিন: হায় হায়….. আমি তো দেখি এই মানুষের কাছে চলে এলাম। কি যেন নাম….? হ্যা নীড়……

.

তখন আয়নার মধ্যে
নীড়-মেরিনের চোখাচোখি হয়ে গেলো।
মেরিন:hi…???
নীড়:h…..

নীড় সাথে সাথে পিছে ঘুরলো।
নীড়: মেরিন….
আআআ…
???
নীড়ের চিৎকার শুনে মেরিনও: আআআ
???

.

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে