#MR AND MRS WHATEVER
পর্ব:2+3
#লেখিকা-Arshi khan
রোদের আলোয় ঘুমিয়ে থাকা বেশ মুশকিল। এই পর্দা গুলো এই সকালে খোলার কোন মানে হয়!আম্মুর এই অভ্যাস টা আমার বেশ বিরক্তর কারণ।সকাল সাতটার পর পুরো ফ্লাট এর সব পর্দা জানালা খুলে না দিলে তার নাকি দম বন্ধ লাগে।আমি অবশ্য বালিশ খানা মাথার উপর দিয়ে আরো ঘন্টা খানেক ঘুমিয়ে নেই।কিন্ত আজকে আর তা হবে বলে মনে হচ্ছে না।কারণ আম্মুর রাগ হলে সে রান্নাঘরের সব কিছু জোরে জোরে বারি দেয় আর কাজ করে।এতে আমার আর আব্বুর ঘুম একেবারেই চলে যায়।আসলে কালকে আব্বুর এক্স কে এমন খালি হাতে ফিরতে হল,সে আমাকে ঐদিন খুব পছন্দ করেছিল। তাইতো অনেক খুজে আমাদের ঠিকানা বের করেছে।কিন্ত আমার কালো মেকাপ দেওয়ার কারণে আর তার ছেলের সাথে খারাপ ব্যবহার এর কারণে তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেনি।এতে আব্বুর মেজাজ খুব এই খারাপ। তাই আমি যাওয়ার পর নাকি আম্মুর সাথে রাগারাগি করেছে।এই নিয়ে আম্মুর মন বিষণ খারাপ। তাই আজকে এমন করছে।যে কোন মেয়ে মানুষ বলতেই তার হাজবেন্ড, বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ইনসিকিউর থাকবেই সে যতো বুড়ো এই হোক না কেন!আর আম্মু জানে আব্বুর আর ঐ আন্টির ভালোবাসার খবর।
যাইহোক আমি উঠে বসে চুল গুলো পনিটেল করে নিলাম। রাতে এসেই কোনরকম চেঞ্জ করেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি মাত্র সকাল সাতটা সতের মিনিট।এই সকালে উঠে কি করব তাই ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুম চলে আসলাম। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে রুম থেকে বের হয়ে ছাদে চলে আসলাম। এত্ত সকালে সাধারণত কেউ ছাদে আসে না।ছাদে গিয়ে ও শান্তি নাই।কাকেরা কা কা করে মাথা খেয়ে ফেলার উপক্রম। বেশ বিরক্ত নিয়ে আবার নিচে চলে আসলাম। পাচঁতালা বাড়ির চারতালায় থাকি।তাই ছাদ উপরের তালায় হওয়ার সুবিধার্থে কিছুক্ষণ পর পর ছাদে চলে যাই।আর বাড়ির মালিক হল আমার আব্বুর ফ্রেন্ড হয়।তাই ছাদের চাবি আর বাড়ির দ্বায়িত্ব আমাদের উপর দিয়ে আঙ্কেল চট্রগ্রাম এ থাকে।প্রতি মাসের ভারা তুলে আব্বু বিকাশে পাঠিয়ে দেয়।আমি এসে মুখটা ধুয়ে রান্নাঘরের দিকে অগ্রসর হলাম।
আম্মু কি কর?(রিতা বেগম এর উদ্দেশ্য নুসরাত)
ওমা নাচতাছি দেখস না!(দাঁতে দাঁত চেপে রিতা বেগম )
ও আচ্ছা ভাল নাচ একটু বেশি করে নাচ তাহলে শরীর টা জদি একটু কমে।কালকে দেখেছ মরিয়ম বেগম কে এখন ও কত্ত ফিট আছেন দেখতে পুরো হিরোইনদের মত।(মজা করে নুসরাত)
যা তুই আর তোর বাপ দুইজন মিলে ওদের মা ছেলের কাছে চলে যা।আমার মত মোটা কালো মানুষের সাথে থাকতে হবে না!(হঠাৎই কান্না করে রিতা বেগম)
আই এম সরি আম্মু আমিতো মজা করছিলাম। তুমি দেখতে যেমন এই হোও আমার কাছে তুমি দেখতে সব চাইতে সুন্দর ও বেস্ট আম্মু। প্লিজ কান্না করোনা আমি সত্যি মজা করে বলেছি।(রিতা বেগম কে জড়িয়ে নুসরাত)
আচ্ছা বাদ দেতো এসব কথা।এখন বল কি খাবি পরোটা নাকি অন্য কিছু ?(চোখ মুছে রিতা বেগম)
খুদের বৌউয়া আর ভর্তা করে দাও।অনেক দিন খাইনা।আজকে যেহেতু জলদি উঠেছি আমি ভর্তা বানাই তুমি বৌউয়া রান্না করে দেও।(নুসরাত মুচকি হেসে)
আচ্ছা আমি এই করছি তুই বরং পড়তে বস।(রিতা বেগম চালের বক্স নামাতে নামাতে)
আহ আমার এখন পরীক্ষার চাপ নেই। আমি ভর্তা বানাবো।তুমি বৌউয়া বানাও।
তারপর আমি আমার মতো সব গুছিয়ে চার পদের ভর্তা বানিয়ে নিলাম। তারপর হাত ধুয়ে রুমে এসে একটা ফ্রেন্ড কে কল করলাম। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হাবিবা ওর আবার আম্মুর হাতের বৌউয়া খুব পছন্দের। আজকে আমরা কলেজ যাব তাই জিজ্ঞেস করলাম খাবে কিনা তাহলে নিয়ে আসব।ও সাথেসাথেই হ্যা বলে দিল।আমি আবার রান্নাঘরে এসে খাবার বক্সে ভরে তারপর আমার জন্য বেড়ে ডাইনিং রুমের সোফায় বসে টিভি অন করে টম এন্ড জেরি দেখছি আর খাচ্ছি। আমাদের দুই বেড রুমের ফ্লাট। এক রুমে আমি অন্য রুমে আব্বু আম্মু থাকে।ডাইনিং রুমে শুধু সোফা আছে ।ডাইনিং টেবিল রাখার জায়গা নেই।তাই কেনা হয়নি।ডাইনিং রুমের সাথেই ওয়াশরুম আর রান্নাঘর।আমার রুমে ছোট একটা বারান্দাও আছে।আব্বুর দেখা কালকের থেকেই পাইনি।বেশ রেগে আছে বলা বাহুল্য। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার আমার উপর আব্বু রাগ করলেন।নাহলে আব্বুর মতো ভাল ফ্রেন্ড হয়না।প্রথম বার আমি RJ এর জব করার কারণে রাগ করেছিল।কারণ এত্ত রাতে মেয়ে মানুষ হয়ে চলা ফেরা আব্বুর ভয়ের কারণ ছিল। কিন্ত আমার আর আম্মুর কথাতে পুরো এক সপ্তাহর রাগের পর আব্বু আমার সাথে কথা বলেছিল।আর এইবার এর রাগ টা আগের বারের থেকে দশগুন বেশি।তবে এইবার আমি রাগ ভাঙ্গানোর কোন চেষ্টা করব না।কোন মতেই না!খাওয়ার পর ওয়াশরুম গিয়ে শাওয়ার নিয়ে নিলাম। এখন বাজে সকাল নয়টার কাছাকাছি।কলেজ শুরু দশটার দিকে।তাই ভাবলাম একটু আগেই যাই ফ্রেন্ড দের সাথে আড্ডা দেওয়া যাবে।যেই ভাবা সেই কাজ রেডি হয়ে আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্য রওনা হলাম। আমি অনার্স ফাইনাল ইয়ার এর স্টুডেন্ট। আমার আবার মন পড়ার মধ্যে বসতেই চায়না।আমি মোটামুটি স্টুডেন্ট বলা চলে।পরীক্ষার আগের দিন পড়ে টেনে টেনে পাশ করি আরকি। তাই নিয়ে আব্বুর চিন্তা হয় খুব। তার ইচ্ছে ছিল আমি কোন নামিদামি চাকরী করি যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার ।কিন্ত আমি এসব হওয়ার জন্য পড়ালেখা করেনি।আমি কমার্স নিয়ে পড়লেও এখন সাচিবিক বিদ্যা নিয়ে পড়া লেখা করছি।আব্বুর মতে সচিবালয়ে চাকরি করার ও কোন যোগ্যতা আমি অর্জন করতে পারিনি।আমি আসলে পড়ালেখা করি প্রতিদিন কলেজ এসে ফ্রেন্ড দের সাথে গল্প করার জন্য। নাহলে এই ছাতার মাথা পড়া আমি পড়তে একটু ও ইচ্ছুক নই।কলেজ এসে হাবিবাকে খুজতে খুজতে আমার মাথার রগ গুলো দাড়িয়ে যাচ্ছে রাগে।এই ছেমরি কোথায় গেল রে!দূর মরা আর খুজবো না তাই ভেবে মাত্র মাঠের কাছে ছোট বেঞ্চ এ বসেছি। ওমনি দৌড়ে দৌড়ে হাবিবা এসে আমার পাশে বসে পড়ল।
এই ছেমরী তোর সমস্যা কি তোর জন্য আমি কত্তক্ষন পুরো কলেজ এ ঘুরেছি যানিস তুই?বেয়াদব ছেমরী যা তোরে আমি খাবার দিমু না।(নুসরাত রাগি সুরে হাবিবার পিঠে কয়েকটা থাপ্পর মেরে)
ফকির কোথাকার তুই দিবি সাথে তোর দেবর ও দিবে।আমার খাবার খাওয়াবি বলে কলেজ আসছি নাহলে আজকে আসতাম না আমি!আর এখন তুই বলিস আমাকে দিবি না!একেবারে তোর চুল ছিড়ে শাক রেধে খেয়ে ফেলব।দে আমার খাবার জলদি দে আমি ব্রেকফাস্ট না করে এসেছি।(নুসরাত এর ব্যাগে হামলা করে হাবিবা)
আস্তে আস্তে ছেমরী দিবতো।নে তোর ভাগের টা নে।আর শোন নেক্সট টাইম জদি আমাকে এমন ঘুরাইছোস তো তোর খবর আছে।(নুসরাত হাবিবার হিজাব টেনে)
আরে ফকির রাখ তোর রাগ তোর ব্যাগে ভরে।আমি জলদি খেয়ে নেই নাহলে আরো ফকির গুলা ভাগ বসাবে।(হাবিবা বলেই খাবার এ মনোযোগ দিল)
হাবিবার খাওয়ার পর আমরা ক্লাস রুমে আসলাম। আমাদের তেমন ফ্রেন্ড নেই ।তবে ক্লাস ফ্রেন্ড আছে।আমি আর হাবিবাই বেস্ট ফ্রেন্ড। সেই ক্লাস সিক্স থেকে একি ক্লাসে পড়ছি।ভাগ্য ভাল বলে দুইজন এর রোল পাশাপাশি পরে।ক্লাস করার সময় প্রিন্সিপাল এসে সামনের সপ্তাহের পিকনিক এর কথা বলে গেল। আর মাত্র ছয়দিন পর পিকনিক। আর যেইদিন পিকনিক ঐদিন আর পরের দিন আমার সো থাকে।সপ্তাহের দুইদিন মঙ্গল ও বুধবার আমার সো থাকে।কিন্ত আমার সব ফ্রেন্ড চাইছে আমি যেন যাই।তবে আমি যে RJ তা শুধু হাবিবাই যানে।তাই ও ফ্রোস করছেনা।তবে ওর যাওয়ার খুব ইচ্ছে। আমি না গেলে ও যাবে না।তাই আমি ভাবছি আজকে একটু এমডির সাথে কথা বলে সামনের সপ্তাহের জন্য ছুটি নিব।আমার জায়গাতে RJ প্রিয়া কে রিপ্লেস করার কথা ও ভাবছি ঐ দুইদিন এর জন্য। এখন এমডি আর প্রিয়া মানলেই চলে।আমার এই শো খুব হিট হওয়ার কারণে এমডি আমাকে ছুটি দিতে চায়না।অসুস্থ হলেও আমার বাড়ির মধ্যে বসে সো করতে হয়।যাইহোক বেশ আনন্দের মধ্যেই কাজটা করলেও মাঝে মধ্যেই খারাপ লাগে ছুটিপাইনা বলে!(নুসরাত মনে মনে মন খারাপ করে)
*********(চলবে)*******
পর্ব:3
সকাল ছয়টার দিকে ঘুম থেকে উঠে জগিং করতে গেছিলাম। জগিং শেষে বাড়িতে আসতেই শুনতে পেলাম আম্মু নতুন কোন মেয়ের সন্ধান করছে।এইবার যেভাবেই হোক আমার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে ।কারণ যেই ভাবে বিয়ের জন্য উঠে পরে লেগেছে আম্মু মনে হচ্ছে আমার গলায় একটা মেয়েকে ঝুলিয়েই ছাড়বে।আমি আমার রুমে চলে আসলাম। বিয়ের ব্যাপার এ আমার তেমন কোন মতামত নেই বললেই চলে।পড়ালেখা শেষ করে আব্বুর বিজনেস না দেখে একটা প্রাইভেট কোম্পানির জন্য কাজ করাতে আব্বু আমার উপর ক্ষিপ্ত। এতে আমার কি?আম্মুর এতে গর্বের শেষ নেই।মাস শেষে পঞ্চাশ হাজার টাকার বেতন পেয়ে সবটাই আম্মুর হাতে তুলে দেই আর আগেও বলেছি আমি আম্মুর অনুগত সন্তান। তাই আমার মতামত আর আম্মুর মতামত সর্বদাই সেম হয়।তবে কালকের থেকে কেন জানি একটা বিষয় মানতে পারছিনা!একটা মেয়ে এত্তটা সুন্দর হয়েও আমাকে বিয়ে না করার জন্য কালো মেকাপ করে নিল।যে কিনা একজন অপরিচিত মানুষকে সাহায্য করে সেই আবার আমার সাথে খারাপ ব্যবহার ও করে।নাকি অন্য কোন কারণ ছিল যার জন্য সে বলেছিল আমাকে তার পছন্দ হলেও আম্মুর জন্য আমাকে তার পছন্দ না!আচ্ছা কি এমন করেছে আম্মু যার কারণে ওর আম্মুর প্রতি এত্ত রাগ?জানার চেষ্টা করব নাকি!না একদম না পরে ও মেয়ের প্রেমে পরে গেলে উঠতে পারবিনা!(বারান্দায় বসে আশরাফুল মনে মনে)
আজকে কলেজ থেকে ফিরে বেশ মন খারাপ লাগছে।হঠাৎই কেন এমন হল বুঝতে পারছিনা !তবে মনটা বেশ ভার লাগছে।বারান্দায় বসে মন ঠিক করার জন্য অনেক কিছুই করছি কিন্তু মন তো মানতেই চাইছেনা কিছু।আম্মু এসে ঢেকে গেলে খাবার খাওয়ার জন্য। আমি আম্মুর কাছে সব শেয়ার করলেও মন খারাপ এর ব্যপার গুলো শেয়ার করিনা।এতে আম্মুর টেনশন হয়।আমি কোনরকম খেয়ে এসে একটা ঘুম দিলাম ।রাত আটটার দিকে আম্মু এসে ডাক দিল।সো তে যাওয়ার জন্য। আমি উঠার পর কেন যানি আরো মনটা খারাপ লাগছে।মন চাচ্ছে না স্টুডিও তে যাই।কিন্ত কিছু করার নেই তাই রওনা হলাম স্টুডিও এর উদ্দেশ্য। আজকে শো করতে করতে মনটা খুব ভাল হয়ে গেল।
আজকের কাপল গুলো ছিল বেশ সুন্দর। তাদের ভালোবাসার গল্প শুনে নিজের সিঙ্গেল লাইফকে কয়েকটা বকা দিয়েছি মনে মনে।গল্পটা একটু সংক্ষিপ্ত করে শুনাই।(মেয়েটার বয়স ছিল আটবছর।সেই সময় নাকি ওর এক মামাতো ভাই ওকে রেপ করার চেষ্টা করে।তবে ওর আম্মুর কারণে ও বেচেঁ যায়।কিন্ত ছেলেদের কে খুব ঘৃণা করতে শুরু করে ও।পড়ালেখা ছেড়ে সারাদিন ঘর বন্ধি থাকতে শুরু করে।ওর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে ওদের ঘর থেকে বের করে দেয়।ওর আম্মু ওকে নিয়ে ওর মামার বাড়ি উঠতে চায় কিন্ত ওর মামাতো ভাইয়ের কথা ভেবে পড়ে একজন দূর সম্পর্কের আত্মীয়র বাড়িতে থাকতে শুরু করে।ওর আম্মু গার্মেন্টস এ কাজ শুরু করে নিজেদের ভরন পষোন এর জন্য। ওর বয়স যখন পনের এলাকার লোকদের ওর উপর নজর পরে।কারণ মেয়েটা দেখতে ছিল অনেক সুন্দরী। তাই ওর আম্মু ওকে বিয়ে করানোর ব্যবস্থা করে।বিয়ের একমাস পর ও জানতে পারে ঐ লোকের একটা বউ ও তিনটা বাচ্চা ও আছে।এটা ও মানতে পারেনা।ও ঐ বাড়ির থেকে ওর আম্মুর বাড়ি চলে আসে।ওর হাজব্যান্ড ওকে ফিরত নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে ।ওর আম্মুর কথায় ওকে আবার ওর হাজব্যান্ড এর কাছে ফিরত আসতে হয়।পরে ও যানতে পারে ওর বউ অসুস্থ তাই জন্য ওর তিন বাচ্চাদের জন্য ওকে বিয়ে করে এনেছে।পরে ওদের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।এখন ওরা সাত ছেলে ও এক মেয়ের পিতা মাতা।মাত্র আঠারো বছরের সংসার ওনাদের।আগের ঘরে আর ও একটা ছেলে হয়।সব মিলিয়ে ওরা দশ ভাই দুই বোন।নাম গুলো গোপন রেখে গল্প টা শেয়ার করলাম।(সত্য ঘটনার অবলম্বনে।আমার খুবই আপন একজনের ফেমেলির গল্প লেখিকার)
রাত সাড়ে এগারোটার দিকে আমি বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। আজকে আমার মন চাইছিল আব্বুর আর আম্মুর ভালোবাসার গল্প টা ও জদি শেয়ার করা যেত খুব ভাল হতো।কিন্ত আব্বু কোনদিন রাজি হবেনা।তাই ভেবে ও লাভ নেই।বাড়ির প্রায় কাছে চলে এসেছি হঠাৎই দেখি মিস্টার দেড় ব্যাটারি একটা বাইকে হেলান দিয়ে বসে আমার রুমের বারান্দার দিকে তাকিয়েই আছে।এত্ত রাতে এখানে কি করে এই বেটা?থাক গে বসে আমি চুপচাপ স্কুটি নিয়ে বাড়ির ভেতর চলে আসলাম। স্কুটি পার্ক করে আমি উপরে এসে কলিং বেল চেপে দাড়িয়েই আছি।গেট খোলার কোন নাম নেই।হঠাৎই খেয়াল করে দেখি গেটে তালা ঝুলছে।এত্ত রাতে তালা দিয়ে গেল কোথায় আজিব?ব্যাগ থেকে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি আম্মুর ফোন থেকে 220কল।আমার সো এর সময় ফোন সাইলেনট থাকে তাই বলে শুনতে পাইনি।আমি তো ভয়ে নেই কি হল !ভাবতে ভাবতেই আম্মুর ফোনে কল করলাম। একবার রিং হতেই।
হ্যালো আম্মু কোথায় তোমরা?এত্ত গুলো কল করেছ কেন?(উদ্বিগ্ন কন্ঠে নুসরাত)
আশরাফুল নিচে তোর জন্য অপেক্ষা করছে এখনি তুই ওর সাথে সালাউদ্দিন হসপিটাল এ চলে আয়।(কান্না করে রিতা বেগম)
কি হয়েছে বলবে তো?(উদ্বিগ্ন কন্ঠে নুসরাত)
এত্ত কথার সময় নেই।এখনি তুই চলে আয়।(বলেই কল কেটে দিলাম রিতা বেগম)
আমি ভয়ে এবং অবাক হয়ে কিছুক্ষণ দাড়িয়েই রইলাম। হঠাৎই আম্মুর কথা মনে পড়ল তাই দৌড়ে বাড়ির নিচে চলে আসলাম।দেখি দেড় বেটারি দাড়িয়ে হাতের নখ কামরায় তেছে।
চলুন মিস্টার। (আশরাফুল এর সামনে এসে নুসরাত)
আপনি কে?(শকড হয়ে আশরাফুল)
আপনি কাকে নিতে আসছেন সেই আমি।এখন চলুন জলদি। আর বলুন কি হয়েছে আমার আব্বুর কিছু হয়নিতো?(নুসরাত কান্না সিক্ত নয়নে)
আরে আপনি নুসরাত কিভাবে বুঝবো! এমন ভাবে চোখ মুখ ঢেকেছেন মনে হচ্ছে কোন ডাকাত বা চোর হবেন।(আশরাফুল মুচকি হেসে)
দুত তোর দেড় ব্যাটারি কোথাকার?মজা না করে জলদি হসপিটাল এ চলুন তো।(রাগি সুরে নুসরাত)
আচ্ছা।
বলেই আমি বাইকে বসে পড়লাম। আর উনি বেশ কিছুক্ষন দ্বিধা দ্বন্দ্ব করে আমার বাইকে উঠে বসল।আমি বাইক স্টার্ট করলাম হসপিটাল এর উদ্দেশ্য(আশরাফুল)
হসপিটাল পৌঁছে দৌড়ে আমি উপরে চলে আসলাম কিছু না জিজ্ঞেস করেই।আবার মিস্টার দের ব্যাটারি আসল তারপর আমি তার সাথে কেভিনে আসলাম।এসে এমন কিছু দেখব ভাবতেই আমার খুবই খুবই খারাপ লাগছে!!!!!!(শকড হয়ে নুসরাত)
***********((চলবে)********