#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction?
#Part_4
#ফারজানা
সকালে কারো স্পর্শে তিতির ঘুম ভেঙে যায় ও চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ওর সামনে অর্ণব বসে আছে আর মুখে হাসি হাসি ভাব নিয়ে…..
“তুমি এত সকালে তাও আবার আমার রুমে?”(অবাক হয়ে)
“কি আর করবো তিতির পাখি, তুমি নাকি গতকাল থেকে কিছু খাওনি তার উপর বিকাল থেকে ঘুমিয়েছো কোনো সাড়া শব্দ নেই তাই তোমার আম্মু আমাকে ফোন দিলো কি হয়েছে জানার জন্য। তোমার এই সিচুয়েশন তাই সকাল সকাল চলে আসলাম।”
“এক নম্বরের শয়তান মনে করছে আমি বুঝি নাই তার মতলব(মনে মনে) ওহ আচ্ছা তো তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ভার্সিটিতে যাই”
“ওকে। আমি বসে আছি তুমি ফ্রেশ হও”
“হোয়াট তোমার সামনে”
“তো কি হয়েছে? আমরা আমরাই তো”(ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে)
“অর্ণব তুমি ভালো ভালো যাবে নাকি আমি তোমার নাক ভেঙ্গে দিবো”
“তোমার এই বাঁশ মার্কা চেহারায় আমার মতো হিরো কে মারবে হোয়াট এ জোকস তিতি”(হাসতে হাসতে)
“তোমার জন্য আমার সময় নস্ট হয়ে যাচ্ছে। যাও আমি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে একবারে গিয়ে নাস্তা করবো যাও তুমি”
“ওকে যাচ্ছি তার আগে এত সকালে আসার জন্য তো গিফট চাই আমার তো ওই গিফট নিয়ে যাচ্ছি আমি”
“কি গিফট কোথায় গিফট?”
“আছে আছে তোমার এত টেনশন করতে হবে না আমি নিজেরটা নিজেই নিয়ে নিচ্ছি”
কথাটা বলেই অর্ণব তিতির উপরে কিছুটা ঝুঁকে পড়লো আর তিতিও পিছনে সরে পড়লো। অর্ণব তিতির পাশে রাখা ইয়া বড় একটা টেডি ওইটাকে খুলে নিয়ে কিস করতে লাগলো। তিতি এইটা দেখে একটু লজ্জা পেলো। অর্ণব টেডিটাকে কিস করতে করতে বললো…..
” তিতির পাখি তুমি কি লুচু । তুমি এই লুচু কাজ কিভাবে ভাবতে পারলে ছিঃ ছিঃ তিতি”
টেডি বিয়ারের নাক চেপে ধরে বললো অর্ণব…..
“না, আসলে তুমি যেইভাবে আসছিলে আমি ভেবছিলাম….”
“কি ভেবেছিলে তুমি?”(ইনোসেন্ট মুখ করে)
“আমি ভেবেছিলাম তুমি আমায় কিস করতে ঝুঁকেছো”
“তাই তিতির পাখি? তাহলে তো তোমার ভাবনাটা সত্যি করতে হয়”
“এই না অর্ণব”(হাত দিয়ে মুখ ঢেকে)
“আমি তো শুনবো না বেবি আমার কাজ তো আমি করেই ছাড়বো”
কথাটা বলেই অর্ণব তিতিরের হাত সরিয়ে কপালে কিস করলো। তিতি চোখ বন্ধ করে ফেললো….
“আরেকটা কিস দিবো কি তিতির পাখি?”
“এই একদম না”
কথাটা বলে তিতি দৌড়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো…..
অন্যদিকে……
“এই শালী কে কখন থেকে ফোন দিচ্ছে ফোনটা পর্যন্ত রিসিভ করছে না। একবার সামনে আয় তুই তোর মাথা আর মুন্ডু যদি আমি আলাদা না করছি তাহলে আমি ও শিশির না”
রাগে একা একা বকবক করতে লাগলো শিশির…..
“কি রে শিশির কি এত বিড়বিড় করছিস এত?”
“মাম্মী বলো না তো আর ওই যে তিতি ওই মুরগীকে কখন থেকে ফোন দিচ্ছে ধরছেই না ফোন”
“ওহহ আচ্ছা এই হলো তোর রাগের কারণ। হতে পারে তিতি বিজি বা ফোনে চার্জ নাই।”
“হুম তাও হতে পারে। দাড়াও আমি অর্ণব ভাইয়াকে ফোন দিচ্ছি ওনি হয়তো ওর খবর জানে”
শিশির ডাটা অন করে অর্ণবকে ফোন দিতে গিয়ে দেখে অর্ণবের ডাটা অফ। তাই সাথে সাথে ফোনের ডাটা অফ করে দিলো।
“শালা কি কিপ্টা মাম্মী ডাটা অফ করে রেখেছে। বলি এত টাকা কে খাবে এত কিপ্টামি করলে”
” তাহলে টাকা দিয়ে ফোন দে”
“ফোনে ব্যালেন্স থাকলে তো ফোন দিবো।”
“সিরিয়াসলি শিশির জীবনে মা কিপ্টা দেখেছি তোর মতো কিপ্টা আমি দেখি নাই। থাক মা আর ফোন দিতে হবে না। কলেজ গিয়েই কথা বলিস”
“আমি কিপ্টা না আমি মিতব্যয়ী। আর এমবি ভরার কারণ হলো এখন আর ফ্রী তে ফেসবুক ইউজ করা যায় না। তাই কম টাকা দিয়ে এমবি কিনছি। কলেজে তো আবার ওয়াইফাই আছে সমস্যা নাই।”
“মা চল এইবার খাওয়া দাওয়া সেরে কলেজ যা। তোর সাথে থাকতে থাকতে আমি ও কিপ্টা হয়ে গেছি”
শিশির কিছু বললো না। চুপচাপ মায়ের কথাগুলো শুনলো। ওর আবার কিপ্টা শব্দতে অ্যালার্জি। এখন ওর আম্মু বলায় কিছু বলে নাই অন্য কেউ বললে আজ তার খবর করে ছাড়তো ।
তিতি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে অর্ণব ওর রুমে নাই….
“যাহ বাবা গেছে আমি গিয়ে নাস্তা করে কলেজ যাই। শিশির হয়তো রেগে বোম হয়ে আছে।”
তিতি ড্রয়িং রুমে এসে দেখে অর্ণব বসে বসে ফোন টিপছে। অর্ণবকে দেখে তিতির রাগে শরীল জ্বলে যাচ্ছে।
“তুমি এখনও যাও নি অর্ণব?”
“কেনো আমি চলে গেলে কি তুমি খুশি হতে?(ফোনের দিকে তাকিয়ে)
“নাহ তা নয়। এমনি আস্ক করলাম।”
“তিতির পাখি তোমাদের বাসায় নেট এতটা দুর্বল ঠিক মতো ফোন চালাতে পারছি না। তাই ছোটো বাচ্চাদের মতো মীনা গেম খেলছি। খেলাটা কিন্তু সত্যিই ধারুন।”
“অর্ণব বাবা এইবার গেম খেলা বাদ দিয়ে খাবে আসো”
তিতির আব্বু বললো অর্ণবকে….
“ওনি আমাদের সাথে খাবে?”
“কেনো ও কি খাইনি আমাদের বাসায়? কিসব আবোল তাবোল বলছিস তিতি?”
“নাহ আম্মু কিছু না তাড়াতাড়ি খাবার দাও কলেজ যেতে হবে। ”
তিতি অর্ণব আর তিতির আব্বু আম্মু একসাথে ব্রেকফাস্ট করলো।
“তিতির পাখি চলো যাওয়া যাক”
“মানে তুমি যাবে নাকি?”
“হুম কেনো কোনো সমস্যা?”
“আমি একাই যেতে পারবো অর্ণব তুমি তোমার কাজে যাও”
অর্ণব কিছুক্ষণ তিতির পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখলো পরে তিতির কানে কানে গিয়ে বললো….
“তিতির পাখি তুমি তো চাওয়া না তোমার আব্বু আম্মুর সামনে আমি কিছু করে বসি তাছাড়া আজ তোমাকে মারাত্বক সুন্দর লাগছে বিশেষ করে পাথরের নাকফুলটায় সো আমি এখন এমন কিছু করি যা তোমার দৃষ্টিতে ভালো হবে না তুমি কি তা চাও তিতির পাখি?”
তিতি অর্ণবের কথা শুনে ঢুক গিললো পরে মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো সে এমন কিছু চায় না।
“তাহলে দাড়িয়ে না থেকে চলো আমার সাথে”
“হুম”
তিতি ও অর্ণব তিতির আব্বু আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো…..
অর্ণব গাড়ি চালাচ্ছে…..
“তিতির পাখি তোমার প্ল্যানটা বলে ফেলো তো কি প্লেন করেছো?”
“প্ল্যান কিসের, প্ল্যান করেছি আমি?”
“আমাকে কি তুমি বোকা মনে করেছো। তোমাকে আমি হারে হারে চিনি।”
“আমি চিনি না আমি তিতি”
“আই মীন চিনি মানে জানি। বলো কি প্ল্যান?”
“প্ল্যান হলো পালিয়ে যাবো পরে অন্য একছেলেকে বিয়ে করবো বিয়ের চারমাস পর প্রেগনেট হয়ে আপনার সামনে আসবো পরে আপনি আমার ডেলিভারির টাকা দিবেন(মুখ বাঁকা করে বলতে লাগলো তিতি) পরে আবার চলে যাবো পাঁচ বছর পর ফিরে আসবো পরে আপনার মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিবো তখন আমরা বিয়াই বিয়াইন হয়ে যাবো। দেখেছেন কি গুড আইডিয়া আমার”
তিতি হয়তো জানে না কোথায় কি বলছে ও ওর মতো ননস্টপ কথা বলেই যাচ্ছে আর ওইদিকে অর্ণব রাগে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিলো। তিতি হটাৎ খেয়াল করলো ওরা খুব দ্রুত যাচ্ছে তখন ভয়ে ভয়ে বললো…..
“আই অ্যাম জোকিং। অর্ণব আমি তো সিরিয়াসলি বলি নাই তুমি বলছো তাই মজা করছি অর্ণব গাড়ি থামাও আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না। তোমার ইচ্ছা থাকলে তুমি মরো আগে আমাকে গাড়ি থেকে নামাও পরে”(কান্না করে দিলো)
অর্ণব খুব জোড়ে গাড়ি ব্রেক করলো তিতি তাল সামলাতে না পেরে সামনে ঝুঁকে পড়লো ।
তিতি নিজেকে ঠিক করে দেখলো অর্ণব গাড়ির স্টায়রিং এর উপর ঝুঁকে আছে।
“বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে? যাইহোক আমি বেঁচে আছি এইটা আসল পয়েন্ট। আমি বরং নেমে যাই আর পুলিশকে গিয়ে বলি অর্ণব চৌধুরী মারা গেছে”
তিতি যেই গাড়ি থেকে নামতে যাবে তখনি অর্ণব বলে উঠলো…..
“এক পা গাড়ির বাহিরে দিলে তোমার একদিন কি আমার যতদিন। কি ভেবেছিলে আমি মরে গেছি তাই না। আমি মরলে তো তুমি স্বাধীন এইটাই ভেবেছো। মনে রাখবে আমি মরার আগে তোমাকে মারবো পরে আমি মরবো। অর্ণব চৌধুরী তোমাকে কোনোদিন মুক্তি দিবে না কথাটা মাথায় ঢুকে রেখো ওকে”
তিতি অনেক ভয় পেয়ে যায় অর্ণবের কথা শুনে….
“হুম”
অর্ণব তিতিকে আর কিছু বললো না। আবারো আগের মতো ড্রাইভ করতে লাগলো…..
???
“এখনও আসে নাই এই মেয়ে কি যে করি অফফফফ কখন থেকে একটা কথা বলবো বলে ভেবে রেখেছি এখনও আসছে না। ওই কথাতো এখন আমার পেটে ঘুরঘুর করছে সাথে পেট ও ফুলে যাচ্ছে একটু পর হয়তো কেউ এসে বলবে আপু আপনি কত মাসের গর্ভবতী। তিতি রে কই তুই তাড়াতাড়ি আয়”
শিশির একা একাই বকবক করে যাচ্ছে। আপনাদের একটা কথা বলা হয় নি শিশির প্রচুর বকবক করে। ও একটু বাচ্চা টাইপের মেয়ে।
অর্ণব গাড়ি থামালো ভার্সিটির সামনে। অর্ণব আগে গাড়ি থেকে নামলো পরে তিতি কে নামতে বললো। তিতি গাড়ি থেকে নামার পর অর্ণব কাকে যেনো ফোন দিলো আর অন্য দিকে চলে গেলো। তিতি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে শিশির গাছের সাথে কি যেনো বলছে ও শিশিরের কাছে গিয়ে শুনলো….
“তিতি মুরগি তোকে আমি এই গাছের ভিতর আটকে রাখবো এখনও কেনো আসতে পারলি না”
“শিশির বেবি আমি এইখানে”
শিশির পিছন ফিরে দেখলো তিতি দাড়িয়ে আছে তাই শিশির রাগী রাগী ভাব নিয়ে তিতির সামনে গেলো….শিশির বলার আগেই তিতি বললো….
“জানু রাস্তায় অ্যাকসিডেন্ট করেছি তাই আর কি দেরি হয়ে গেলো সরি জানু”
তিতির কথা শুনে শিশির কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে তিতি কে জড়িয়ে ধরে বললো….
“কি হয়েছে তোর ব্যাথা পাস নি তো কোথায় লাগেনি তো?”
“উহু কিছু হয়নি আমার। বাই দা ওয়ে কেমন আছিস?”
“হুম ভালো। তুই কেমন আছিস আর অর্ণব ভাইয়া কোথায়?”
“ভালো।(অর্ণবের নাম শুনে তিতিরের মন খারাপ হয়ে গেলো) শিশির তোকে কিছু বলতে চাই?”
“হুম বল”
তিতি কিছু বলতে যাবে তার আগেই অর্ণব এসে বললো…..
“এই হলো তোর ভাবী তিতি……
চলবে…….